Ajker Patrika

২২ বছরের অপেক্ষা শেষে ভারতকে হারাল বাংলাদেশ

আনোয়ার সোহাগ, ঢাকা
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৪১
শেখ মোরসালিনের গোলে ভারতকে ১-০ গোলে হারাল বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শেখ মোরসালিনের গোলে ভারতকে ১-০ গোলে হারাল বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবশেষে এল সেই মুহূর্ত। রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই গ্যালারিতে ছড়িয়ে পড়ল আনন্দ। হামজা চৌধুরী লুটিয়ে পড়লেন মাটিতে। শমিত শোম জড়িয়ে ধরলেন কিউবা মিচেলকে। এমন জয়ের তৃপ্তি পেতে কত বছরের অপেক্ষা করতে হয়েছে, তা নিশ্চয়ই জানেন। তারপরও বলে দিই—অপেক্ষাটা ২২ বছরের।

২০০৩ সালে মতিউর মুন্নার গোল্ডেন গোলে এসেছিল সর্বশেষ। জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ মুন্নার আত্মা যেন ভর করেছিল শেখ মোরসালিনের ওপর। তাঁর গোলেই যে ভারতকে ২২ বছর পর ১–০ ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ‘সি’ গ্রুপ থেকে মূলপর্বে যাওয়ার সম্ভাবনা আগেই শেষ হয়ে যায় হাভিয়ের কাবরেরার দলের। আগের ৪ ম্যাচে দুটি ড্রয়ের বিপরীতে একটিতেও আসেনি জয়ের দেখা। তবু সংবাদ সম্মেলনে জয়ের নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন কাবরেরা। যা বলেছিলেন তা করেও দেখালেন। এই জয় পাহাড়সম বোঝাও যেন নামিয়ে দিল তাঁর কাঁধ থেকে। হামজা–শমিতকে নিয়ে জিততে না পেরে কতশত সমালোচনাই না শুনতে হয়েছিল তাঁকে। তবু বিশ্বাস হারাননি।

বিশ্বাস হারাননি হামজা–শমিতরাও। আরেকজনের কথা আলাদাভাবে না বললেই নয়। নেপাল ম্যাচে তিনি খেলতে পারেননি চোটের কারণে। ভারত ম্যাচের আগে পুরোদমে অনুশীলন করতে পেরেছেন দুবার। সেই মোরসালিন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সময় নেন ১১ মিনিট। নিজেদের অর্ধে তাঁর কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে ছুটতে থাকেন রাকিব হোসেন। আকাশ মিশ্রকে গতিতে পরাস্ত করে আড়াআড়ি পাসে মোরসালিনের দিকে বাড়ান তিনি। মোরসালিনও চতুরতার সঙ্গে তাঁর প্রথম স্পর্শে ভারতীয় গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধুর দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল পাঠান জালে। পুরো স্টেডিয়াম ফেটে উল্লাসে বাংলাদেশের জার্সিতে ২১ ম্যাচে এটি তাঁর সপ্তম গোল।

ব্যবধানটা আরও বাড়তে পারত শুরুতেই। ১৪ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে রাকিবের বাড়ানো ক্রস মোরসালিনের কাছে পৌঁছানোর আগেই তালুবন্দী করেন সান্ধু। বাংলাদেশের জন্য ছোটখাট এক ধাক্কা হয়ে আসে তারিক কাজীর চোট। ২৭ মিনিটে তাই তাঁকে তুলে নিয়ে শাকিল আহাদ তপুকে নামান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা।

৩১ মিনিটে গোলরক্ষক মিতুল মারমার বিপদে ফেলতে বসেছিলেন বাংলাদেশকে। হামজা চৌধুরী না থাকলে সেখানে সমতায় ফিরতে পারত ভারত। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ডান কর্নার ফ্লাগে কাছে গিয়ে লো বিল্ডআপে গড়বড় করে ফেলেন মিতুল। তাঁর হাফ ক্লিয়ারেন্সের লং বল গিয়ে পড়ে লালিয়ানজুয়ালা চাংতের কাঁছে। বক্সের বাইরে থেকে তাঁর নেওয়া শটে বাধা হয়ে দাঁড়ান হামজা। হেড করে কর্নারের বিনিময়ে বাংলাদেশকে গোলহজমের হাত থেকে বাঁচান তিনি।

এরপরই খানিকটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মাঠে। শোল্ডার চ্যালেঞ্জের পর থ্রো করতে যাওয়া বিক্রম প্রতাপকে বাধা দেন তপু বর্মণ। তাতে তাঁর দিকে তেড়ে আসেন নিখিল প্রভু ও ম্যাকারটন নিকসন। জটলা মধ্যেই মোরসালিন ধাক্কা মেরে বসেন নিখিল। তাই তপু ও নিখিল দুজনেই দেখেন হলুদ কার্ড।

ভারতের কয়েকটি আক্রমণ সামলে ৪৪ মিনিটে সুযোগ আসে হামজার কাছে। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তাঁর ভলি অবশ্য লক্ষ্য খুঁজে পায়নি। তা বাদ দিলে প্রথমার্ধে একেবারেই নির্ভুল ছিলেন হামজা। মাঠের সবক্ষেত্রে প্রতিটি চ্যালেঞ্জ বেশ সফলতার সঙ্গে কাটিয়ে ওঠেন লেস্টার সিটিতে খেলা এই মিডফিল্ডার। বাংলাদেশও তাই বিরতিতে যায় এগিয়ে থাকার স্বস্তি নিয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে ভারত। একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে। স্বাগতিকেরাও সেভাবে গুছিয়ে খেলতে পারছিল না। ৪৯ মিনিটে সুরেশ সিংয়ের বাঁকানো ফ্রি কিকে রাহুল ভেকের হেড পোস্টের অনেকটা বাইরে দিয়ে চলে যায়। চার মিনিট মহেশ সিংয়ের ভলিও একই পরিণতি পায়।

মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারত প্রায় কোণঠাসা করে রাখছিল বাংলাদেশের রক্ষণ। গোলদাতা মোরসালিনকে আর রাখার প্রয়োজন না করায় ৭১ মিনিটে বদলি করান কাবরেরা। মাঠে নামান শাহরিয়ার ইমনকে। ৭৯ মিনিটে হঠাৎই আক্রমণের দৃশ্যপটে আসেন শাকিল। কিন্তু বক্সের বাইরে থেকে তাঁর নেওয়া শট সান্ধু তালুবন্দী করেন সহজেই। দুই মিনিট পরই ইমনের ক্রসে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের হেড সন্দেশ ঝিঙ্গনের ঘাড়ে না লাগলে হয়তো গোলের দেখা পেত বাংলাদেশ।

সময় যত ঘনিয়ে আসছিল, ততই বাড়তে থাকে হৃদস্পন্দন। ভারতের একের পর এক হৃদয় কাঁপিয়ে দেওয়া আক্রমণ শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল। ভারতের কাছেই তো ২২ বছরে কতবার তীরে এসে তরি ডোবাতে হয়েছে কতবার। না, এবার মিতুল তা হতে দেননি। শুরুর ভুল শুধরে শেষ মুহূর্তে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান গোলপোস্টে। অক্ষত রাখেন জাল। তাঁর শেষের এই পারফরম্যান্স সুযোগ করে দেয় জয়গান গাওয়ার। ২২ বছর পর ভারতকে হারিয়ে ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ স্লোগানে তৃপ্তি নিয়ে সমর্থকদের বাড়ি ফেরার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বৃথা গেল মেহেদী হাসান রানার হ্যাটট্রিক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৫
হ্যাটট্রিক করেও নোয়াখালী এক্সপ্রেসকে জেতাতে পারলেন না মেহেদী হাসান রানা। ছবি: বিসিবি
হ্যাটট্রিক করেও নোয়াখালী এক্সপ্রেসকে জেতাতে পারলেন না মেহেদী হাসান রানা। ছবি: বিসিবি

হার দিয়ে বিপিএল শুরু করা দুই দলের লড়াইয়ে নোয়াখালী এক্সপ্রেসকে হারিয়ে জয়ে ফিরেছে সিলেট টাইটানস। উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় মেহেদী হাসান রানার হ্যাটট্রিকের পরও সিলেট জিতেছে ১ উইকেটে। গতকাল সিলেটে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৪৩ রান তোলে নোয়াখালী। জবাবে ৯ উইকেট হারিয়ে জয়ের প্রয়োজনীয় রান তুলে ফেলে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি সিলেটেরও। দলীয় ৩৪ রানে সিলেট হারিয়ে ফেলে তিন ব্যাটারকে। এরপরই অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে পারভেজ হোসেন ইমনের প্রতিরোধ। চতুর্থ উইকেটে ৬৬ বলে ৮৩ রানের জুটি গড়েন তাঁরা। যখন তাঁরা উইকেটে ব্যাট করছিলেন, তখন মনে হয়েছিল সহজ জয়ই পেতে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু এরপরই ঘটে বিপত্তি। ৬টি চার ও ২টি ছয়ে ৪১ বলে ৬০ রান করে ইমন আউট হয়ে যান। এরপর মিরাজ, নাসুম (০) ও খালেদ আহমেদকে (০) ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক করেন মেহেদী হাসান রানা। বিপিএলের ইতিহাসে নবম হ্যাটট্রিক, সিলেটের মাটিতে প্রথম।

রানার হ্যাটট্রিকের পর জয়ের পাল্লা হেলে পড়ে নোয়াখালীর দিকে। কিন্তু শেষ দিকে ১৩ বলে ইথান ব্রুকস ১৬ রান করে দলকে জয়ের দুয়ারে ঠেলে দেন। লেগবাই থেকে আসে সিলেটের জয়সূচক রান।

এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাট করে নোয়াখালী ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৩ রানের বেশি তুলতে পারেনি। দলীয় ৯ রানে মাজ শাদাকাত, হাবিবুর রহমান সোহান ও হায়দার আলীকে হারিয়ে দুঃস্বপ্নের শুরু হয়েছিল নোয়াখালীর। তিনজনের কেউই ব্যক্তিগত রানের খাতা খুলতে পারেননি। এরপর বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের প্রতিরোধ। চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সৈকত আলী (২৪), সাব্বির হোসেন (১৫) ও জাকের আলী অনিককে (২৯) নিয়ে ৩২, ২৯ ও ৬৬ রানের জুটি গড়েন। এক প্রান্ত আগলে রেখে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৫১ বলে ৬৬ রান করে অপরাজিত থাকেন। ১টি চার ও ৩টি ছয়ে সাজানো তাঁর ইনিংস। সিলেটের হয়ে বেশি স্ট্রাইকরেটের ইনিংসটি খেলেছেন জাকের; ৪টি চারে ১৭ বলে করেছেন ২৯ রান। স্ট্রাইকরেট—১৭০.৫৮।

বল হাতে সবচেয়ে সফল পেসার খালেদ আহমেদ; ২৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিয়াবাতের পেনাল্টি মিস, কিংসকে হারাতে পারেনি আবাহনী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২-২ গোলে ড্র হয়েছে কিংস-আবাহনী ম্যাচ। ছবি: বাফুফে
২-২ গোলে ড্র হয়েছে কিংস-আবাহনী ম্যাচ। ছবি: বাফুফে

পুলিশের কাছে হারের বেদনা ভুলে বসুন্ধরা কিংসের শুরুটা ছিল দারুণ। ১৬ মিনিটের ব্যবধানে এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। ম্যাচের তখনো অনেকটা পথ বাকি। আবাহনী লিমিটেডও তাই হাল ছাড়েনি। সমতা ফিরিয়ে জয়েরও খুব কাছাকাছি ছিল তারা। কিন্তু নায়ক হতে গিয়ে বরং খলনায়কই হয়ে গেলেন সুলেমান দিয়াবাতে। তাঁর পেনাল্টি মিসে ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে আবাহনী।

বাংলাদেশ ফুটবল লিগে আজ চার ম্যাচের তিনটিরই পরিণতি হয়েছে ড্র। কিংস অ্যারেনায় এগিয়ে যেতে ৫ মিনিট সময় লাগে কিংসের। মাঝমাঠে ইয়াসিন খানের ভুল পাস চলে যায় দোরিয়েলতন গোমেসের কাছে। ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডের দেওয়া থ্রু পাস কাজে লাগিয়ে জাল কাঁপান রাকিব হোসেন।

১৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এমানুয়েল সানডে। এবারও গোলের জোগানদাতা দোরিয়েলতন। তাঁর কাছ থেকে ফাঁকায় পাওয়া বল জালে পাঠাতে কোনো অসুবিধা হয়নি সানডের। জোড়া ধাক্কার পর গা ঝারা দিয়ে ওঠে আবাহনী। ১৯ মিনিটে বক্সের ভেতর মিরাজুল ইসলাম ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় তারা। সফল স্পট কিকে লক্ষ্যভেদ করেন দিয়াবাতে।

বিরতির পর সমতায় আসে আকাশি-নীলরা। ৫০ মিনিটে মোরসালিনের সঙ্গে ওয়ান টু করে দিয়াবাতে পান দ্বিতীয় গোলের দেখা। মালির এই স্ট্রাইকের হ্যাটট্রিকের কাছেও ছিলেন। ৭০ মিনিটে আবারও পেনাল্টি পায় আবাহনী। কিংসের ডিফেন্ডার এমানুয়েল টনি অদ্ভুত এক ভুল করে বসেন। অফসাইড ভেবে বক্সের মধ্যেই বল হাত দিয়ে ধরে ফেলেন! পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু দিয়াবাতের শট এবার ফিরিয়ে দেন কিংস গোলরক্ষক আনিসুর রহমান। তাতে এগিয়ে যাওয়া হয়নি আবাহনীর।

ফলে ৮ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রয়েছে কিংস। ১০ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আবাহনী। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এনিয়ে টানা ৩ ম্যাচ জয়হীন থাকল তারা। ২৪ মিনিটে সলোমোন কিংয়ের পাস থেকে রহমতগঞ্জ এগিয়ে যায় অভিষেক লিম্বুর গোলে। বিরতির পর মোহামেডানকে সমতায় ফেরান স্যামুয়েল বোয়াটেং। ৯ পয়েন্ট নিয়ে সাদা কালোরা আছে ছয়ে। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রহমতগঞ্জ।

গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে পিডব্লিউডি স্পোর্টস ক্লাবকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাব। ২০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে তাদের এগিয়ে দেন বেন ইব্রাহিম। ৪৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আরিয়ান হোসেন। বিরতির পর উত্তাপ ছড়ায় ম্যাচে। ৫০ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন ফকিরেরপুলের শিহাব মিয়া। ৮০ পেনাল্টি থেকে মিনহাজুল স্বাধীন ব্যবধান কমালেও পিডব্লিউডির হার এড়াতে পারেননি।

মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও ফর্টিস এফসি। ২১ মিনিটে মোলতাজিম আলম হিমেলের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাদার্স। বিরতির পর ৬৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ফর্টিসকে সমতায় ফেরান পা ওমর বাবু।১৫ পয়েন্ট কিংসের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে ফর্টিস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাকির জানাজায় অঝোরে কাঁদলেন মুশফিক-শরিফুলরা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৫
দীর্ঘ দিনের অভিভাবক হারালেন ক্রিকেটাররা। ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ দিনের অভিভাবক হারালেন ক্রিকেটাররা। ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু থেকে মাহবুব আলী জাকিকে পাশে পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারের সঙ্গে জাকির সম্পর্কটাও ছিল দারুণ। স্বাভাবিকভাবে তাঁর মৃত্যু একটু বেশিই ছুঁয়ে গেছে মুশফিককে। তাঁর অঝোরে কান্না যেন সেটারই প্রমাণ দেয়।

জাকির মৃত্যুসংবাদ যখন আসে, তখন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকার বিপক্ষে ব্যাট করছে রাজশাহী। ম্যাচ চলায় ক্রিকেটারদের অনুভূতি প্রকাশের সুযোগ ছিল না। কিন্তু ম্যাচ শেষ হতেই ঢাকা ও রাজশাহীর ক্রিকেটাররা নিজেদের আবেগ প্রকাশ করতে শুরু করেন।

অসুস্থ হওয়ার পর জাকিকে মাঠে কিছুক্ষণ সিপিআর দিয়ে সিলেটের আল হারামাইন হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরই আসে মৃত্যুসংবাদ। এরপর লাশ আনা হয় সিলেট স্টেডিয়ামে। জাকির চলে যাওয়ার দিনে রাজশাহীকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা। দুই দলের ম্যাচ শেষে মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় মুশফিককে। কেঁদেছেন শরিফুল ইসলামসহ অন্য ক্রিকেটাররাও। জাকির সঙ্গে মুশফিকের সম্পর্কটা ২৫ বছরের। অনূর্ধ্ব ১৯ দল, হাই পারফরম্যান্স (এইচপি), একাডেমি থেকে জাতীয় দল—সব জায়গাতেই প্রয়াত এই কোচ ছিলেন মুশফিকের অভিভাবকের মতো। দেশের নামকরা সব ক্রিকেটারের বিপদের দিনে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জাকি। এবার তিনি সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন।

জাকির মৃত্যুতে মাতম চলছে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। ভিন্ন ভিন্ন বার্তায় শোক প্রকাশ করেছেন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেনরা। শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং ঢাকা ক্যাপিটালস।

রাজশাহীর বিপক্ষে জয় জাকিকে উৎসর্গ করেছে ঢাকা। ম্যাচ শেষে দলটির অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন বলেন, ‘আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের খবর। জাকি স্যার মারা গেছেন। তাঁর পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা ও দোয়া রইল। তবে একটি ভালো জয়। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটি ক্ষতি। তিনি আমাদের কাছে অনেকটা বাবার মতো ছিলেন। আমি মনে করি, এটি আমাদের জন্য অনেক বড় ক্ষতি। আমরা যখনই কোনো ম্যাচ খেলি, জেতার জন্যই খেলি। এই জয় আমি জাকি স্যারকে উৎসর্গ করছি। ইনশা আল্লাহ, আল্লাহ তাঁকে জান্নাত দান করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যবসায় ক্ষতি, সিরিজ জিতেও খুশি নয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দুই দিনে শেষ হয়েছে মেলবোর্ন টেস্ট। ছবি: এএফপি
দুই দিনে শেষ হয়েছে মেলবোর্ন টেস্ট। ছবি: এএফপি

একটি টেস্ট ম্যাচের জন্য বরাদ্দ থাকে ৫ দিন। অথচ অ্যাশেজে ৪ টেস্টের ইতি ঘটল মাত্র ১৩ দিনেই। এর মধ্যে দুটি টেস্ট দুই দিনের বেশি টিকতে পারেনি। সর্বশেষ মেলবোর্ন টেস্ট শেষ হলো আজ দ্বিতীয় দিনেই। ক্রিকেটের বাণিজ্যিক দিক থেকে তা লোকসানেরই বটে। তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

প্রথম তিন টেস্ট জিতে অস্ট্রেলিয়া আগেই সিরিজ নিশ্চিত করে রেখেছে। তবুও মেলবোর্নে প্রচুর পরিমাণ টিকিট বিক্রি হয় প্রথম তিন দিনের। প্রথম দিনে রেকর্ড ৯৪,১৯৯ হাজার দর্শকের উপস্থিতির কারণে পুরো বক্সিং ডে টেস্টে দর্শকসংখ্যার নতুন রেকর্ড গড়ার আশা করা হয়েছিল । কিন্তু দুই দিনে টেস্ট শেষ হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। পার্থে প্রথম টেস্টও দুই দিনে শেষ হয়।তাতে প্রায় ৫০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৪১ কোটি টাকা) ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।

দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরুর আগে এক দিনে ২০ উইকেট পড়ার ঘটনা বাড়াবাড়ি কি না, জানতে চাওয়া হয়েছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গের কাছে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘ছোট করে বললে, হ্যাঁ (বাড়াবাড়ি)। একজন ভক্ত হিসেবে এটি দেখতে যতটা মন্ত্রমুগ্ধকর, আকর্ষণীয় এবং আনন্দদায়ক ছিল, আমরা স্পষ্টতই চাই টেস্ট ক্রিকেট আরও দীর্ঘ সময় ধরে চলুক।’

গ্রিনবার্গ বলেন, ‘সহজভাবে বলতে চাই— ছোট টেস্ট ম্যাচ ব্যবসার জন্য ক্ষতিকর। এর চেয়ে সরাসরি কথা আর হতে পারে না। তাই আমি ব্যাট এবং বলের মধ্যে আরও ভারসাম্য দেখতে চাই। আমার মনে হয় গতকালের খেলায় বল কিছুটা সুবিধা পেয়েছে। এর জন্য ব্যাটারদেরও কিছুটা দায় আছে, সবকিছু পিচের ওপর ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না; তবে আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।’

সাবেক অনেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার প্রথম দিনে মেলবোর্নের উইকেট নিয়ে সমালোচনা করেছেন। বোলারদের জন্য অতি সহায়ক তা। সংক্ষিপ্ত টেস্ট এড়াতে পরবর্তী উইকেট বানানোর ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দিলেন গ্রিনবার্গ। তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্যগতভাবে আমরা উইকেট তৈরির ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলি এবং মাঠকর্মী, আবহাওয়া ও মাটির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অনুযায়ীই পিচ তৈরি হতে দিই। কিন্তু যখন খেলার ওপর—বিশেষ করে বাণিজ্যিকভাবে এর প্রভাব দেখবেন, তখন এতে জড়িয়ে না পড়াটা আরও বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।’

গ্রিনবার্গ আরও বলেন, ‘আমি বলছি না যে আমরা গিয়ে মাঠকর্মীদের সঙ্গে কথা বলব, তবে পুরো গ্রীষ্মজুড়ে আমাদের প্রত্যাশা কী— সে বিষয়ে সতর্ক নজর রাখতেই হবে। গত রাতে আমি ভালোভাবে ঘুমাইনি। কিন্তু আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো— এই অভিজ্ঞতাগুলো যেন দিন দিন অব্যাহত রাখা যায়। সেটাই আমাদের সবার জন্য চ্যালেঞ্জ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত