Ajker Patrika

৫০ বছরে কোথায় দাঁড়িয়ে আমাদের ক্রীড়াঙ্গন

তানভীর মাজহার ইসলাম তান্না
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৫৯
৫০ বছরে কোথায় দাঁড়িয়ে আমাদের ক্রীড়াঙ্গন

তানভীর মাজহার ইসলাম তান্না স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ম্যানেজার ছিলেন। পরে দেশের ক্রিকেট-ফুটবলের একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রথম বিশ্বকাপ যাত্রায়ও ম্যানেজার হিসেবে ছিলেন তিনি। সব্যসাচী এই ক্রীড়া সংগঠক ফিরে দেখলেন, গত ৫০ বছরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সাফল্য-ব্যর্থতা এবং চোখ রাখলেন ভবিষ্যতেও। 

৫০ বছরে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। শুরুতে সবকিছু ভালোভাবে চললেও এখন কিছুটা মন্থর হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ক্রিকেটে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। অন্য খেলায় খুব বেশি যদিও এগোতে পারিনি। খেলাগুলো অবশ্য হচ্ছে। এখন হকির টুর্নামেন্ট হচ্ছে। তবে এগুলো মাঝেমধ্যে হচ্ছে। খেলাধুলায় কিছু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা লাগে। কিন্তু এখানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার পরেও কিছু হচ্ছে না। 

আমি যখন ক্রিকেট বোর্ডে ছিলাম, আমাদের পরিকল্পনা বিভাগ ছিল। আমরা লম্বা সময়ের জন্য পরিকল্পনা করতাম। আমরা স্কুল ও কলেজকে টার্গেট করেছিলাম। এর বাইরে ঢাকা লিগ, চট্টগ্রাম লিগও ছিল। এমন নয় যে আমরা শুধু খেলোয়াড়দের ওপরই মনোযোগ দিয়েছি, আমরা আম্পায়ারদেরও প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এমনকি জাতীয় দলের খেলোয়াড়দেরও আম্পায়ারিংয়ের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। মনি (এনামুল হক), নাদির শাহ এরা পরে ভালো আম্পায়ার হয়েছে। এসব করতে লম্বা সময়ের পরিকল্পনা লাগে। খেলাটা যেভাবে চলছে, সেটা যথেষ্ট ভালো নয়। এখন সেখানে চুরি চলে এসেছে। এখানে যে লিগের খেলা হয়, সেটা ক্রিকেট বলেন কিংবা ফুটবল, আমার কাছে যে খবর আসে তাতে বলা হয় বেশির ভাগ ম্যাচই পাতানো। আমি নিশ্চিতভাবে বলছি না, তবে এ রকম শুনেছি। এখন প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগের খেলা যদি এ রকম পাতানো হয়, তবে সেই মানের খেলোয়াড় কখনো পাবেন না। 

এখানে ক্রিকেট বোর্ডের দোষ আছে। বোর্ড বিষয়টাকে ভালোভাবে দেখভাল করছে না। শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে তাদের আরও কঠোর হওয়া উচিত। তাদের আরও দৃঢ়চেতা লোক দরকার সিদ্ধান্ত নিতে, যারা স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারবে। নিচের স্তরে যদি শৃঙ্খলা না থাকে, তবে ওপরের স্তর কখনো ভালো হবে না। যেমন একজন খেলোয়াড় আজ সেঞ্চুরি করল, আমি সেটা পত্রিকায় দেখছি কিন্তু খেলার মধ্যে তো দেখছি না। খেলার মধ্যে এলবিডব্লু দিচ্ছে কি দিচ্ছে না, রানআউট দিচ্ছে কি দিচ্ছে না, ক্যাচ আউট দিচ্ছে কি দিচ্ছে না, আমরা দেখছি না। খেলার মাঠে এ রকম অনেক কিছুই ঘটছে। আমরা টেস্ট মর্যাদা পেয়েছি আরও অনেক আগে—এই বিষয়গুলো আরও স্বচ্ছ হওয়া জরুরি ছিল। 

আপনি ভারত বা ইংল্যান্ডের দিকে তাকান, সেখানে যে লিগ খেলা হয় তা কিন্তু খুব সুন্দরভাবে খেলা হয়। এগুলো এমনই হওয়া উচিত। এখানে কেউ চুরির ভেতর নেই! কেউ কাউকে চুরি করে চ্যাম্পিয়ন বানাচ্ছে না। এগুলো খুব বাজে জিনিস। 
সবকিছু বিবেচনা করে আমার মনে হয় পরের ১০ বছর কী হবে এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। এটা করতে হলে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলে ফেডারেশনকে করতে হবে। কীভাবে আম্পায়ার বের করবেন, কীভাবে কোচ বের করবেন যোগ্য লোককে সঙ্গে নিয়ে, এগুলো ঠিক করতে হবে। এই ভিত্তিগুলো যদি না থাকে তবে আপনি কখনোই ওপরে যেতে পারবেন না। 

ফুটবলে আন্তস্কুল খেলা নিয়ে আরও মনোযোগী হতে হবে। কিছু কিছু স্কুল বাছাই করে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। ১০-১২ বছরের বাচ্চাদের নিয়ে কীভাবে বল ধরতে হবে, কীভাবে বল ছাড়তে হবে এগুলো শেখাতে হবে। এভাবেই সঠিক ছেলেটিকে খুঁজে বের করতে হবে। আপনার তো রেফারিও দরকার। তাদেরও অনুশীলন দরকার। কোচদেরও প্রশিক্ষণ দরকার। এগুলো হচ্ছে মাস্টারপ্ল্যান। এগুলো কিন্তু মুখে মুখে বললে হবে না। পরিকল্পনা করে করতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে করলেও হবে না। 

আলাদাভাবে খেলাগুলোকে শিক্ষা ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই কাজগুলো করতে হবে। অ্যাথলেটিক, শুটিং, আর্চারি সবগুলো খেলা এভাবে চলবে। সবাইকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। ঠিকঠাক বাজেটও করতে হবে। নির্দিষ্ট কাঠামো মেনেই আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। একবার করে ভুলে গেলে হবে না। এটা নিয়মিতভাবেই চালিয়ে যেতে হবে। আগামী ১০ বছরে কী করবেন, ২০ বছরের কী করবেন, ৩০ বছরে কী করবেন, সেটা ঠিক করতে হবে। এভাবে না করলে এখন যেভাবে চলছে সেভাবেই সব চলবে। কখনো হয়তো ভালো করবে, আবার কিছুদিন খারাপ করবে। কোনো বিকল্প তৈরি হবে না। হঠাৎ একটা মোস্তাফিজ বেরোবে, হঠাৎ সাকিব আল হাসান বেরোবে—সে জন্য আপনাকে অপেক্ষা করে থাকতে হবে। কিন্তু সেটাতে কোনো লাভ হবে না। সামগ্রিকভাবে কোনো লাভ হবে না। পরিকল্পনা নেই বলেই আমরা এগোতে পারছি না। আপনাকে মৌলিক বিষয়গুলো ঠিকঠাক করতে হবে। 

তানভীর মাজহার ইসলাম তান্নাপূর্ব পাকিস্তানের সময় ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল। পূর্ব পাকিস্তানে তখন তিন-চারটা ক্লাব ছিল। মোহামেডান, ভিক্টোরিয়া, ওয়ান্ডারার্স—এই ক্লাবগুলো এশিয়ান পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করত। ইরানের সঙ্গে তখন একটা প্রতিযোগিতা হতো, তাদেরও হারানোর মতো দল ছিলাম। 

আমাদের খুব ভালো দল ছিল। যুদ্ধের পরও সেটা থেকে গিয়েছিল। এরপর তো স্বাধীন বাংলা দল হলো। ওই সময় আমাদের পাঁচ-ছয়টা খেলোয়াড় ছিল, যারা পাকিস্তান দলে খেলত। পরে আবার সালাউদ্দিন ভাই, এনায়েত ভাই, তসলিম ভাইয়েরা আসল। এরা সবাই অসাধারণ খেলোয়াড় ছিল। সমর্থকদেরও অনেক সমর্থন ছিল। 

২০০০ সালের পর আবার ক্রিকেটের সঙ্গে বেশি যুক্ত হই। আমার যেটা মনে হয়, পরে যারা ফুটবলে এসেছে তারা ঠিক করে নেয় যে, ফুটবলারদের নির্দিষ্ট টাকার বেশি দেব না। আমি শেষবার ২০০০ সালে মুন্নাকে ২০ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। অন্য অনেককে ১২ লাখ, ১৩ লাখ টাকা করে দিয়েছি। বেতন বাড়ছিল, এখানে জনসমর্থনও ছিল। পরে যারা আসল তারা এটা কমাতে শুরু করে। পাঁচ-ছয় বছর পর সেটা ২ লাখ টাকায় নেমে আসে। এরপর বিএনপির সময় খেলাই বন্ধ ছিল। সে সময় আমি ক্রিকেটেই বেশি ব্যস্ত ছিলাম। 

বিপরীতে এই সময়ের মধ্যে ক্রিকেটে আমরা শক্তি অর্জন করলাম। আইসিসিও আমাদের নিয়ে ইতিবাচকভাবে ভাবতে শুরু করে। কোচিংয়ের দিকে আমরা মনোযোগ দিলাম। লিগ ম্যাচেও আমরা বাইরে থেকে ভালো খেলোয়াড়দের নিয়ে আসা শুরু করি। লিগ ম্যাচেও ঢাকা স্টেডিয়াম দর্শকে ভর্তি ছিল। আইসিসি ট্রফিতে ভালো করলাম। তারপর টেস্ট স্ট্যাটাস পেলাম। স্বীকৃতি পাওয়ার আগে আমরা তিন, চার দিন বা পাঁচ দিনের ম্যাচ নিয়মিত করতাম। কিন্তু এরপর যারা এল তারা এদিকটায় মনোযোগ দিল না। এখন ভালো করতে হলে আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতেই হবে। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে বেশি জোর দিতে হবে। নয়তো হবে না। ১০-২০ জন খেলোয়াড় দিয়ে তো হবে না, অনেক খেলোয়াড় বের করে আনতে হবে। কিন্তু এগুলো কিছুই হচ্ছে না। টেস্ট ম্যাচে জোর দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু এটাই আসল খেলা। পরিকল্পনা তাই খুব দরকার। 

অন্য ফেডারেশনগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। আমাকে ৫০ লাখ টাকা দিয়ে ফেডারেশন চালাতে বলবেন, সেটা হয় না। সবকিছুর জন্য সঠিক পরিকল্পনা ও কোচিং দরকার। সঠিক বাজেট নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বকাপে ব্রাজিলের আরেক চ্যালেঞ্জের নাম ‘ভ্রমণ ঝক্কি’, স্বস্তিতে আর্জেন্টিনা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৮
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দীর একটি ম্যাচ। ছবি: এক্স
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দীর একটি ম্যাচ। ছবি: এক্স

২০২৬ বিশ্বকাপ ড্রয়ের পর কাগজে-কলমে আর্জেন্টিনার গ্রুপকে সহজ না বলে উপায় কী! ‘জে’ গ্রুপে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রিয়া, আলজেরিয়া ও জর্ডান। সেদিক থেকে ‘সি’ গ্রুপে তুলনামূলক কঠিন প্রতিপক্ষ পেয়েছে ব্রাজিল। সেরা বত্রিশে যেতে সেলেসাওদের খেলতে হবে স্কটল্যান্ড, মরক্কো ও হাইতির বিপক্ষে।

হাইতি সহজ প্রতিপক্ষ হলেও স্কটল্যান্ড ও মরক্কোর বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষা দিতে হতে পারে ব্রাজিলকে। মরোক্কানদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের কথা তো সবারই জানা। সবাইকে চমকে দিয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছে অ্যাটলাস সিংহরা। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে মরক্কো এবং স্কটল্যান্ড ছাড়াও বাড়তি আরেকটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে ব্রাজিলকে। লাতিন আমেরিকান জায়ান্টদের এই চ্যালেঞ্জের নাম ভ্রমণ। সেদিক থেকে বেশ স্বস্তিতেই থাকছে আর্জেন্টিনা।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো যৌথভাবে ২০২৬ বিশ্বকাপের আয়োজক। আগামী ১১ জুন মেক্সিকোর আজতেকা স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ হবে। ব্রাজিল নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ১৪ জুন মরক্কোর বিপক্ষে। ম্যাচটির ভেন্যু নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়াম। ২০ জুন ফিলাডেলফিয়াতে হাইতির বিপক্ষে খেলতে নামবে তারা। গ্রুপ পর্বে ব্রাজিলের শেষ ম্যাচ ২৫ জুন। সেদিন মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে তারা। গ্রুপ পর্বের এই তিন ম্যাচ খেলতে ১ হাজার ৯৪ মাইল ভ্রমণ করতে হবে বিশ্ব ফুটবলের সফলতম দলটিকে।

ব্রাজিলের অর্ধেকের কম ভ্রমণ করে গ্রুপ পর্ব শেষ করবে আর্জেন্টিনা। সাকল্যে ৪৬১ মাইল ভ্রমণ করতে হবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। ১৭ জুন মিজৌরির কানসাস সিটিতে আলজেরিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। ২২ জুন তাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রিয়া। ম্যাচটির ভেন্যু টেক্সাসের আর্লিংটন স্টেডিয়াম। সে ম্যাচের পর আর অন্য শহরে যেতে হবে না লিওনেল মেসিদের। একই ভেন্যুতে ২৮ জুন জর্ডানের বিপক্ষে খেলতে নামবে তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কোন ভুলে অলরাউন্ডার গ্রিন আইপিএলে শুধুই ‘ব্যাটার’

ক্রীড়া ডেস্ক    
ক্যামেরুন গ্রিন। ছবি: এক্স
ক্যামেরুন গ্রিন। ছবি: এক্স

আগামী ১৬ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ২০২৬ এর মিনি নিলাম হবে। তার আগে আলোচনায় বেশকিছু ক্রিকেটার। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ২ কোটি রুপি ভিত্তিমূল্যের ক্যাটাগরিতে থাকা ক্যামেরুন গ্রিন। অদ্ভুত কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অস্ট্রেলিয়ার এই তারকা ক্রিকেটার।

গ্রিন একজন ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও বেশ কার্যকরী তিনি। জাতীয় দল কিংবা বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে বহুবার নিজের বোলিং সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন। তবে আইপিএলের পরবর্তী আসরের নিলামে শুধু ‘ব্যাটার’ ক্যাটাগরিতে আছে তাঁর নাম। যেটা নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা।

অনেকের ধারণা ছিল, হয়তো ফিটনেসের কারণে শুধু ব্যাটার ক্যাটাগরিতে নাম নিবন্ধন করেছেন গ্রিন। ইনজুরি কাটিয়ে গত জুনে কেবল ব্যাটার হিসেবে ক্রিকেটে ফেরেন তিনি। তবে চলমান অ্যাশেজের প্রথম দুই টেস্টের অলরাউন্ডারের ভূমিকাতেই দেখা গেছে গ্রিনকে। অ্যাডিলেডে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের আগে জানালেন, ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, নিলামের নিবন্ধনের সময় ভুল বাক্সে টিক দিয়েছেন তাঁর ম্যানেজার।

গ্রিন বলেন, ‘আমি বোলিংয়ের জন্যও তৈরি আছি। হয়তো আমার ম্যানেজার মন খারাপ করতে পারে। বাস্তবতা হলো তাঁর জন্যই এই ঝামেলাটা হয়েছে। সে ‘ব্যাটার’ বোঝাতে চায়নি। আমার ধারণা, সে দুর্ঘটনাবশত সে ভুল বক্স নির্বাচন করে ফেলেছে। পুরো ব্যাপারটা যেভাবে হয়েছে তা বেশ মজার। কিন্তু ভুলটা ম্যানেজারের ছিল।’

নিলামে কী হয় সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন গ্রিন, ‘কয়েকজনের সঙ্গে আমি আইপিএলের নিলাম দেখতে চাই। এটা দেখা সবসময়ই খুব মজার। অনেকটা লটারির মতো। কোন দলে যাব, আমার দলে আর কে কে থাকছে–এসব দেখতে বেশ মজা পাই।’

বেশকিছু ভারতীয় এবং অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমের দাবি, আইপিএলের নিলামে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হতে পারেন গ্রিন। এমনকি তিনি ঋষভ পন্তের ২৭ কোটি রুপির রেকর্ড ভেঙে দিতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে। এর আগে ২০২৩ সালের আইপিএলে তাঁকে সাড়ে ১৭ কোটি রুপিতে কিনেছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রত্যাবর্তনে রেকর্ড গড়ে কী বললেন সালাহ

ক্রীড়া ডেস্ক    
একটি গোলে অবদান রেখেছেন সালাহ। ছবি: এক্স
একটি গোলে অবদান রেখেছেন সালাহ। ছবি: এক্স

জানুয়ারির দলবদলে লিভারপুল ছাড়তে পারেন মোহাম্মদ সালাহ–গত কয়েকদিন এই আলোচনা শোনা গেছে বেশ জোরেসোরেই। বিবর্ণ পারফরম্যান্স, কোচের সঙ্গে বিরোধ, স্কোয়াডে অনিয়মতি হয়ে পড়া; সব মিলিয়ে অ্যানফিল্ডে মিশরীয় তারকার শেষ দেখে ফেলেছিলেন সবাই। তবে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটির সঙ্গে সালাহর বরফ গলতে শুরু করেছে এরই মধ্যে।

লিভারপুলের হয়ে সালাহ সবশেষ পুরো ৯০ মিনিট খেলেছেন গত ২৭ নভেম্বর; উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে পিএসভি আইন্দহোভেনর বিপক্ষে। সে ম্যাচে হতাশাজনক পারফরম্যান্সে ওয়েস্ট হামের বিপক্ষে স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েন। সান্দারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামেন বদলি হিসেবে। এরপর লিগে লিডস ইউনাইটেড এবং ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের স্কোয়াডেও জায়গা হয়নি তাঁর।

দলে অনিয়মিত হয়ে পড়ায় প্রধান কোচ আর্নে স্লটকে ইঙ্গিত করে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সালাহ। তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। তবে সব বিতর্কের সমাপ্তি টানেন স্লট। গত শুক্রবার তারকা ফরোয়ার্ডের সঙ্গে আলোচনায় বসেন এবং ব্রাইটনের বিপক্ষে লিগ ম্যাচের স্কোয়াডে ফেরান। স্কোয়াডে ফিরলেও শুরুর একাদশে জায়গা হয়নি লিভারপুলের ইতিহাসের সেরা ফুটবলারদের একজনের। ২৬ মিনিটে জো গোমেজ চোট পাওয়ায় বদলি হিসেবে মাঠে নামেন সালাহ।

অ্যানফিল্ডে ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যাচটি লিভারপুল জিতেছে ২-০ ব্যবধানে। দুটি গোলই করেন হুগো একিতিকে। ৬০ মিনিটে তাঁর দ্বিতীয় গোলে সহায়তা করেন সালাহ। তাতেই প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে কোনো একক দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭৭ গোলে অবদানের রেকর্ড গড়লেন তিনি। ১৮৮ গোল এবং ৮৯ অ্যাসিস্ট করে সালাহ ছাড়িয়ে গেলেন ওয়েইন রুনিকে। ২৭৬ গোলে জড়িয়ে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি ফুটবলারের নাম। এদিন অ্যানফিল্ডের গ্যালারিতে সালাহকে নিয়ে স্লোগান দিয়েছেন ভক্তরা। গোল না করলেও তাই তাঁর প্রত্যাবর্তনটা হয়ে থাকল স্মরণীয়।

ম্যাচ শেষে সালাহ বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ পর আমার মনে হলো ভাগ্য আমাদের সঙ্গে ছিল। ম্যাচে আমরা যে মানসিকতা দেখিয়েছি এবং আমাদের যে চোটের সমস্যা আছে, তাতে হয়তো এমন কিছু আমাদের প্রাপ্য ছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কলকাতায় অরাজকতা হলেও সুশৃঙ্খল হায়দরাবাদ দেখলেন মেসি

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৫
হায়দরাবাদে দারুণ সময় পার করেছেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। ছবি: এক্স
হায়দরাবাদে দারুণ সময় পার করেছেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। ছবি: এক্স

ভারতের লিওনেল মেসির সফরটা তিন দিনের। এশিয়ার দেশটিতে প্রথম দিনই ভিন্ন অভিজ্ঞতা হলো বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলারের। নানা অব্যবস্থাপনায় তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে কলকাতা ছাড়লেও হায়দরাবাদে সুশৃঙ্খল পরিবেশ পেলেন ইন্টার মায়ামি তারকা।

কলকাতার বাজে অভিজ্ঞতা সঙ্গে করে গতকাল দুপুরে হায়দরাবাদের বিমানে চড়েন মেসি। বিকেল ৫টায় হায়দরাবাদে পা রাখেন। এরপর রাত ৮টায় শহরের উপল স্টেডিয়ামে হাজির হন। তখন মাঠে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ চলছিল। ম্যাচ শেষে মাঠে নামেন মেসি এবং তাঁর দুই সতীর্থ রদ্রিগো দি পল ও লুইস সুয়ারেজ। সঙ্গে ছিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। মেসিকে পেয়ে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে গোটা গ্যালারি। হাত নেড়ে ভক্তদের অভিবাদনের জবাব দেন এই ফরোয়ার্ড।

মাঠে রেবন্ত এবং শিশুদের সঙ্গে পাসিং খেলেছেন মেসি। বেশ কয়েকবার বল শট দিয়ে গ্যালারিতে পাঠান। তাতে দর্শকদের আনন্দ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। মাঠ প্রদক্ষিণও করেছেন তিনি। প্রদর্শনী ম্যাচের জয়ী দলের হাতে ‘গোট কাপ’ ট্রফি তুলে দেন মেসি। একপর্যায়ে মেসি ও সুয়ারেজকে সম্মাননা স্মারক উপহার দেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

যুবভারতীতে মেসি মাঠে নামতেই কয়েক শ মানুষ তাঁকে ঘিরে ধরে। বিশৃঙ্খলা শুরু সেখানেই। এদিক থেকে ব্যতিক্রম ছিল হায়দরাবাদের আয়োজন। উপল স্টেডিয়ামে মেসির কাঁছে ভিড়তে পারেনি কেউ। দূরত্ব বজায় রেখে ছবি তোলার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিমানবন্দর থেকে মাঠ কিংবা হোটেল—সব জায়গায় ছিল কঠোর নিরাপত্তা।

এর আগে গতকাল হোটেলের কার্যক্রম শেষ করে যুবভারতী স্টেডিয়ামে যান এলএমটেন। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। মাঠে গাড়ি থেকে নামতেই তাঁকে ঘিরে ধরেন সাবেক ফুটবলার, বিভিন্ন সেলিব্রিটি এবং রাজনৈতিক নেতারা। তাতে মেসি নিজেও বেশ বিরক্ত হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি খারাপ দেখে দ্রুত মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক।

কথা ছিল পুরো মাঠ ঘুরবেন মেসি। তাঁকে একনজর সামন থেকে দেখার জন্য এদিন কানায় কানায় পূর্ণ ছিল যুবভারতীর গ্যালারি। সবাইকে খরচ করতে হয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ। কিন্তু আয়োজকদের অব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত সময়ের আগেই মাঠে ছাড়তে হয়েছে মেসিকে। ফুটবলের মহাতারকাকে দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দর্শকেরা। স্টেডিয়ামে ভাঙচুর করা হয়। কয়েকজন আগুন লাগানোর চেষ্টা করেছে। ভাঙা হয়েছে সীমানা প্রাচীর, খেলোয়াড়দের টানেল। সব মিলিয়ে ধ্বংস্তূপে পরিণত হয় যুবভারতী। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মেসি এবং দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত