আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের জীবনের মৌলিক উপাদান—ডিএনএ—সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরির জন্য শুরু হয়েছে এক ‘বিতর্কিত’ প্রকল্পের কাজ। এত দিন এ ধরনের গবেষণা ছিল নিষিদ্ধ বা সীমিত। কারণ অনেকের আশঙ্কা ছিল—এটা একদিন ‘ডিজাইনড বা নকশাকৃত’ শিশু তৈরি বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথ খুলে দিতে পারে।
তবে এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় মেডিকেল দাতব্য সংস্থা ‘ওয়েলকাম ট্রাস্ট’ এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১ কোটি পাউন্ড অনুদান দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, এই প্রকল্প ক্ষতির চেয়ে উপকারই বেশি করতে পারে। বিশেষ করে যেসব রোগ এখনো নিরাময়যোগ্য নয়, সেগুলোর চিকিৎসা আরও দ্রুত উন্নত হতে পারে।
এই প্রকল্পে যুক্ত যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের এমআরসি ল্যাবরেটরি অব মলিকুলার বায়োলজির ড. জুলিয়ান সেল বিবিসিকে বলেন, এই গবেষণা জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পরবর্তী বিশাল অগ্রগতি। তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার সম্ভাবনার কোনো শেষ নেই। আমরা এমন চিকিৎসার দিকে এগোচ্ছি, যা মানুষের বার্ধক্যে পৌঁছানোর পর জীবনকে আরও ভালো করবে। বুড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা রোগ কম হবে।’
ড. জুলিয়ান আরও বলেন, ‘আমরা এমন রোগ প্রতিরোধী কোষ তৈরি করতে চাই, যেগুলোর সাহায্যে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গ—যেমন লিভার, হার্ট বা এমনকি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও—পুনর্গঠন করতে ব্যবহার করা যাবে।’
তবে সমালোচকদের আশঙ্কা, এই গবেষণার সুযোগে অসাধু গবেষকেরা তথাকথিত ‘উন্নত বা পরিবর্তিত মানুষ’ তৈরি করতে পারে। ‘বিয়ন্ড জিএম’—নামের একটি ক্যাম্পেইন গ্রুপের পরিচালক ড. প্যাট থমাস বলেন, ‘আমরা ভাবতে চাই, সব বিজ্ঞানী ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করেন। কিন্তু এই প্রযুক্তি অপব্যবহার করে ক্ষতি করা কিংবা যুদ্ধের জন্যও কাজে লাগানো যেতে পারে।’
এই প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য বিবিসিকে জানানো হয়েছে মানব জিনোম প্রকল্পের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে। সেই প্রকল্পে মানব ডিএনএ-এর সব উপাদান শনাক্ত করা হয়েছিল। আর এর পেছনেও বড় অর্থায়ন করেছিল ওয়েলকাম ট্রাস্ট।
আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে থাকে ডিএনএ নামের একটি উপাদান, যেটিতে থাকে আমাদের জিনগত তথ্য। এই ডিএনএ তৈরি হয় মাত্র চারটি ছোট উপাদান—এ (A), জি (G), সি (C) ও টি (T) দিয়ে, যেগুলো বিভিন্ন কম্বিনেশনে বারবার পুনরাবৃত্তি হয়। এই ডিএনএ-তেই আমাদের শারীরিক গঠন ও পরিচয়ের পুরো নির্দেশনা লুকিয়ে আছে।
মানব জিনোম প্রকল্পের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ—কে বারকোডের মতো পড়তে সক্ষম হয়েছিলেন। নতুন যে গবেষণা শুরু হচ্ছে, সেটির নাম ‘সিনথেটিক হিউম্যান জিনোম প্রকল্প।’ এটি সেই জায়গা থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এবার শুধু ডিএনএ পড়াই নয়, বরং ডিএনএ-এর অংশবিশেষ এমনকি একদিন হয়তো পুরো ডিএনএ-ই নতুনভাবে তৈরি করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞানীদের প্রথম লক্ষ্য হলো ধাপে ধাপে বড় আকারের মানব ডিএনএ ব্লক তৈরি করা। চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো কৃত্রিমভাবে মানব ক্রোমোজোম তৈরি করা। ক্রোমোজোমের মধ্যেই থাকে আমাদের বিকাশ, চিকিৎসা ও শরীরের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী জিন। এরপর এগুলো নিয়ে গবেষণা করা যাবে, বোঝা যাবে কীভাবে আমাদের শরীরের কার্যক্রমে ডিএনএ ও জিন কাজ করে।
ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ম্যাথিউ হার্লস বলেন, ‘ডিএনএ শুরু থেকে তৈরি করলে আমরা আসলেই জানতে পারব, ডিএনএ কীভাবে কাজ করে এবং নতুন নতুন তত্ত্ব পরীক্ষা করতে পারব। এখন যা সম্ভব শুধু বিদ্যমান জীবিত কোষে সামান্য পরিবর্তন এনে।’
প্রকল্পের সব কাজই হবে পরীক্ষাগার ও পেট্রি-ডিশে। কেউ জীবন্ত কৃত্রিম মানুষ তৈরি করার চেষ্টা করবে না। তবে প্রযুক্তিটি মানব জীবনের ওপর নজিরবিহীন নিয়ন্ত্রণের সুযোগ এনে দেবে। যদিও প্রকল্পের উদ্দেশ্য চিকিৎসা উন্নয়ন, কিন্তু এটি অসাধু বিজ্ঞানীদের হাতে পড়লে প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে পারে। যেমন—জৈব অস্ত্র তৈরি, ‘উন্নত’ মানুষ তৈরি, এমনকি এমন জীব তৈরি করা, যাদের শরীরে মানুষের ডিএনএ থাকবে।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক বিজ্ঞানী অধ্যাপক বিল আর্নশ বলেন, ‘এই প্রযুক্তির দৈত্য বোতল থেকে বেরিয়ে পড়েছে। এখন কিছু নিয়মকানুন করা সম্ভব, কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ঠিকমতো যন্ত্রপাতি জোগাড় করে এই ধরনের কিছু তৈরি করতে শুরু করে, তাহলে থামানোর উপায় নেই।’
এদিকে ড. প্যাট থমাস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে চিকিৎসা সংস্থাগুলো কেমনভাবে ব্যবহার করবে তা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা কৃত্রিম মানুষ তৈরি করতে পারি, তাহলে প্রশ্ন ওঠে—এদের মালিক কে? এবং এসব থেকে যে তথ্য বের হবে, তার মালিকানা কার?’
এই প্রযুক্তি একদিন আসবেই, তাই আগে থেকেই তা দায়িত্বশীলভাবে করার লক্ষ্যেই ওয়েলকাম ট্রাস্ট অর্থায়ন করেছে বলে জানান ড. টম কলিন্স। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা নিজেদের প্রশ্ন করেছি—এখন কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকার খরচ কত? এই প্রযুক্তি একদিন না একদিন আসবেই, তাই এখনই শুরু করলে অন্তত দায়িত্বশীলভাবে করা যাবে। নৈতিক ও সামাজিক প্রশ্নগুলো খোলামেলাভাবে মোকাবিলা করা যাবে।’
এই প্রকল্পের সঙ্গে সমান্তরালে একটি সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণাও চলবে, যা নেতৃত্ব দেবেন ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক জয় ঝাং। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানী এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে সাধারণ মানুষের মতামত নিতে চাই—তারা এই প্রযুক্তিকে কীভাবে দেখেন, এতে কী উপকার পাবেন এবং তাদের উদ্বেগ বা প্রশ্নগুলো কী।’

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের জীবনের মৌলিক উপাদান—ডিএনএ—সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরির জন্য শুরু হয়েছে এক ‘বিতর্কিত’ প্রকল্পের কাজ। এত দিন এ ধরনের গবেষণা ছিল নিষিদ্ধ বা সীমিত। কারণ অনেকের আশঙ্কা ছিল—এটা একদিন ‘ডিজাইনড বা নকশাকৃত’ শিশু তৈরি বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথ খুলে দিতে পারে।
তবে এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় মেডিকেল দাতব্য সংস্থা ‘ওয়েলকাম ট্রাস্ট’ এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১ কোটি পাউন্ড অনুদান দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, এই প্রকল্প ক্ষতির চেয়ে উপকারই বেশি করতে পারে। বিশেষ করে যেসব রোগ এখনো নিরাময়যোগ্য নয়, সেগুলোর চিকিৎসা আরও দ্রুত উন্নত হতে পারে।
এই প্রকল্পে যুক্ত যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের এমআরসি ল্যাবরেটরি অব মলিকুলার বায়োলজির ড. জুলিয়ান সেল বিবিসিকে বলেন, এই গবেষণা জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পরবর্তী বিশাল অগ্রগতি। তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার সম্ভাবনার কোনো শেষ নেই। আমরা এমন চিকিৎসার দিকে এগোচ্ছি, যা মানুষের বার্ধক্যে পৌঁছানোর পর জীবনকে আরও ভালো করবে। বুড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা রোগ কম হবে।’
ড. জুলিয়ান আরও বলেন, ‘আমরা এমন রোগ প্রতিরোধী কোষ তৈরি করতে চাই, যেগুলোর সাহায্যে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গ—যেমন লিভার, হার্ট বা এমনকি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও—পুনর্গঠন করতে ব্যবহার করা যাবে।’
তবে সমালোচকদের আশঙ্কা, এই গবেষণার সুযোগে অসাধু গবেষকেরা তথাকথিত ‘উন্নত বা পরিবর্তিত মানুষ’ তৈরি করতে পারে। ‘বিয়ন্ড জিএম’—নামের একটি ক্যাম্পেইন গ্রুপের পরিচালক ড. প্যাট থমাস বলেন, ‘আমরা ভাবতে চাই, সব বিজ্ঞানী ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করেন। কিন্তু এই প্রযুক্তি অপব্যবহার করে ক্ষতি করা কিংবা যুদ্ধের জন্যও কাজে লাগানো যেতে পারে।’
এই প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য বিবিসিকে জানানো হয়েছে মানব জিনোম প্রকল্পের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে। সেই প্রকল্পে মানব ডিএনএ-এর সব উপাদান শনাক্ত করা হয়েছিল। আর এর পেছনেও বড় অর্থায়ন করেছিল ওয়েলকাম ট্রাস্ট।
আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে থাকে ডিএনএ নামের একটি উপাদান, যেটিতে থাকে আমাদের জিনগত তথ্য। এই ডিএনএ তৈরি হয় মাত্র চারটি ছোট উপাদান—এ (A), জি (G), সি (C) ও টি (T) দিয়ে, যেগুলো বিভিন্ন কম্বিনেশনে বারবার পুনরাবৃত্তি হয়। এই ডিএনএ-তেই আমাদের শারীরিক গঠন ও পরিচয়ের পুরো নির্দেশনা লুকিয়ে আছে।
মানব জিনোম প্রকল্পের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ—কে বারকোডের মতো পড়তে সক্ষম হয়েছিলেন। নতুন যে গবেষণা শুরু হচ্ছে, সেটির নাম ‘সিনথেটিক হিউম্যান জিনোম প্রকল্প।’ এটি সেই জায়গা থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এবার শুধু ডিএনএ পড়াই নয়, বরং ডিএনএ-এর অংশবিশেষ এমনকি একদিন হয়তো পুরো ডিএনএ-ই নতুনভাবে তৈরি করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞানীদের প্রথম লক্ষ্য হলো ধাপে ধাপে বড় আকারের মানব ডিএনএ ব্লক তৈরি করা। চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো কৃত্রিমভাবে মানব ক্রোমোজোম তৈরি করা। ক্রোমোজোমের মধ্যেই থাকে আমাদের বিকাশ, চিকিৎসা ও শরীরের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী জিন। এরপর এগুলো নিয়ে গবেষণা করা যাবে, বোঝা যাবে কীভাবে আমাদের শরীরের কার্যক্রমে ডিএনএ ও জিন কাজ করে।
ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ম্যাথিউ হার্লস বলেন, ‘ডিএনএ শুরু থেকে তৈরি করলে আমরা আসলেই জানতে পারব, ডিএনএ কীভাবে কাজ করে এবং নতুন নতুন তত্ত্ব পরীক্ষা করতে পারব। এখন যা সম্ভব শুধু বিদ্যমান জীবিত কোষে সামান্য পরিবর্তন এনে।’
প্রকল্পের সব কাজই হবে পরীক্ষাগার ও পেট্রি-ডিশে। কেউ জীবন্ত কৃত্রিম মানুষ তৈরি করার চেষ্টা করবে না। তবে প্রযুক্তিটি মানব জীবনের ওপর নজিরবিহীন নিয়ন্ত্রণের সুযোগ এনে দেবে। যদিও প্রকল্পের উদ্দেশ্য চিকিৎসা উন্নয়ন, কিন্তু এটি অসাধু বিজ্ঞানীদের হাতে পড়লে প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে পারে। যেমন—জৈব অস্ত্র তৈরি, ‘উন্নত’ মানুষ তৈরি, এমনকি এমন জীব তৈরি করা, যাদের শরীরে মানুষের ডিএনএ থাকবে।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক বিজ্ঞানী অধ্যাপক বিল আর্নশ বলেন, ‘এই প্রযুক্তির দৈত্য বোতল থেকে বেরিয়ে পড়েছে। এখন কিছু নিয়মকানুন করা সম্ভব, কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ঠিকমতো যন্ত্রপাতি জোগাড় করে এই ধরনের কিছু তৈরি করতে শুরু করে, তাহলে থামানোর উপায় নেই।’
এদিকে ড. প্যাট থমাস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে চিকিৎসা সংস্থাগুলো কেমনভাবে ব্যবহার করবে তা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা কৃত্রিম মানুষ তৈরি করতে পারি, তাহলে প্রশ্ন ওঠে—এদের মালিক কে? এবং এসব থেকে যে তথ্য বের হবে, তার মালিকানা কার?’
এই প্রযুক্তি একদিন আসবেই, তাই আগে থেকেই তা দায়িত্বশীলভাবে করার লক্ষ্যেই ওয়েলকাম ট্রাস্ট অর্থায়ন করেছে বলে জানান ড. টম কলিন্স। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা নিজেদের প্রশ্ন করেছি—এখন কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকার খরচ কত? এই প্রযুক্তি একদিন না একদিন আসবেই, তাই এখনই শুরু করলে অন্তত দায়িত্বশীলভাবে করা যাবে। নৈতিক ও সামাজিক প্রশ্নগুলো খোলামেলাভাবে মোকাবিলা করা যাবে।’
এই প্রকল্পের সঙ্গে সমান্তরালে একটি সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণাও চলবে, যা নেতৃত্ব দেবেন ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক জয় ঝাং। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানী এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে সাধারণ মানুষের মতামত নিতে চাই—তারা এই প্রযুক্তিকে কীভাবে দেখেন, এতে কী উপকার পাবেন এবং তাদের উদ্বেগ বা প্রশ্নগুলো কী।’
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের জীবনের মৌলিক উপাদান—ডিএনএ—সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরির জন্য শুরু হয়েছে এক ‘বিতর্কিত’ প্রকল্পের কাজ। এত দিন এ ধরনের গবেষণা ছিল নিষিদ্ধ বা সীমিত। কারণ অনেকের আশঙ্কা ছিল—এটা একদিন ‘ডিজাইনড বা নকশাকৃত’ শিশু তৈরি বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথ খুলে দিতে পারে।
তবে এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় মেডিকেল দাতব্য সংস্থা ‘ওয়েলকাম ট্রাস্ট’ এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১ কোটি পাউন্ড অনুদান দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, এই প্রকল্প ক্ষতির চেয়ে উপকারই বেশি করতে পারে। বিশেষ করে যেসব রোগ এখনো নিরাময়যোগ্য নয়, সেগুলোর চিকিৎসা আরও দ্রুত উন্নত হতে পারে।
এই প্রকল্পে যুক্ত যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের এমআরসি ল্যাবরেটরি অব মলিকুলার বায়োলজির ড. জুলিয়ান সেল বিবিসিকে বলেন, এই গবেষণা জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পরবর্তী বিশাল অগ্রগতি। তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার সম্ভাবনার কোনো শেষ নেই। আমরা এমন চিকিৎসার দিকে এগোচ্ছি, যা মানুষের বার্ধক্যে পৌঁছানোর পর জীবনকে আরও ভালো করবে। বুড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা রোগ কম হবে।’
ড. জুলিয়ান আরও বলেন, ‘আমরা এমন রোগ প্রতিরোধী কোষ তৈরি করতে চাই, যেগুলোর সাহায্যে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গ—যেমন লিভার, হার্ট বা এমনকি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও—পুনর্গঠন করতে ব্যবহার করা যাবে।’
তবে সমালোচকদের আশঙ্কা, এই গবেষণার সুযোগে অসাধু গবেষকেরা তথাকথিত ‘উন্নত বা পরিবর্তিত মানুষ’ তৈরি করতে পারে। ‘বিয়ন্ড জিএম’—নামের একটি ক্যাম্পেইন গ্রুপের পরিচালক ড. প্যাট থমাস বলেন, ‘আমরা ভাবতে চাই, সব বিজ্ঞানী ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করেন। কিন্তু এই প্রযুক্তি অপব্যবহার করে ক্ষতি করা কিংবা যুদ্ধের জন্যও কাজে লাগানো যেতে পারে।’
এই প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য বিবিসিকে জানানো হয়েছে মানব জিনোম প্রকল্পের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে। সেই প্রকল্পে মানব ডিএনএ-এর সব উপাদান শনাক্ত করা হয়েছিল। আর এর পেছনেও বড় অর্থায়ন করেছিল ওয়েলকাম ট্রাস্ট।
আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে থাকে ডিএনএ নামের একটি উপাদান, যেটিতে থাকে আমাদের জিনগত তথ্য। এই ডিএনএ তৈরি হয় মাত্র চারটি ছোট উপাদান—এ (A), জি (G), সি (C) ও টি (T) দিয়ে, যেগুলো বিভিন্ন কম্বিনেশনে বারবার পুনরাবৃত্তি হয়। এই ডিএনএ-তেই আমাদের শারীরিক গঠন ও পরিচয়ের পুরো নির্দেশনা লুকিয়ে আছে।
মানব জিনোম প্রকল্পের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ—কে বারকোডের মতো পড়তে সক্ষম হয়েছিলেন। নতুন যে গবেষণা শুরু হচ্ছে, সেটির নাম ‘সিনথেটিক হিউম্যান জিনোম প্রকল্প।’ এটি সেই জায়গা থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এবার শুধু ডিএনএ পড়াই নয়, বরং ডিএনএ-এর অংশবিশেষ এমনকি একদিন হয়তো পুরো ডিএনএ-ই নতুনভাবে তৈরি করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞানীদের প্রথম লক্ষ্য হলো ধাপে ধাপে বড় আকারের মানব ডিএনএ ব্লক তৈরি করা। চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো কৃত্রিমভাবে মানব ক্রোমোজোম তৈরি করা। ক্রোমোজোমের মধ্যেই থাকে আমাদের বিকাশ, চিকিৎসা ও শরীরের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী জিন। এরপর এগুলো নিয়ে গবেষণা করা যাবে, বোঝা যাবে কীভাবে আমাদের শরীরের কার্যক্রমে ডিএনএ ও জিন কাজ করে।
ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ম্যাথিউ হার্লস বলেন, ‘ডিএনএ শুরু থেকে তৈরি করলে আমরা আসলেই জানতে পারব, ডিএনএ কীভাবে কাজ করে এবং নতুন নতুন তত্ত্ব পরীক্ষা করতে পারব। এখন যা সম্ভব শুধু বিদ্যমান জীবিত কোষে সামান্য পরিবর্তন এনে।’
প্রকল্পের সব কাজই হবে পরীক্ষাগার ও পেট্রি-ডিশে। কেউ জীবন্ত কৃত্রিম মানুষ তৈরি করার চেষ্টা করবে না। তবে প্রযুক্তিটি মানব জীবনের ওপর নজিরবিহীন নিয়ন্ত্রণের সুযোগ এনে দেবে। যদিও প্রকল্পের উদ্দেশ্য চিকিৎসা উন্নয়ন, কিন্তু এটি অসাধু বিজ্ঞানীদের হাতে পড়লে প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে পারে। যেমন—জৈব অস্ত্র তৈরি, ‘উন্নত’ মানুষ তৈরি, এমনকি এমন জীব তৈরি করা, যাদের শরীরে মানুষের ডিএনএ থাকবে।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক বিজ্ঞানী অধ্যাপক বিল আর্নশ বলেন, ‘এই প্রযুক্তির দৈত্য বোতল থেকে বেরিয়ে পড়েছে। এখন কিছু নিয়মকানুন করা সম্ভব, কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ঠিকমতো যন্ত্রপাতি জোগাড় করে এই ধরনের কিছু তৈরি করতে শুরু করে, তাহলে থামানোর উপায় নেই।’
এদিকে ড. প্যাট থমাস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে চিকিৎসা সংস্থাগুলো কেমনভাবে ব্যবহার করবে তা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা কৃত্রিম মানুষ তৈরি করতে পারি, তাহলে প্রশ্ন ওঠে—এদের মালিক কে? এবং এসব থেকে যে তথ্য বের হবে, তার মালিকানা কার?’
এই প্রযুক্তি একদিন আসবেই, তাই আগে থেকেই তা দায়িত্বশীলভাবে করার লক্ষ্যেই ওয়েলকাম ট্রাস্ট অর্থায়ন করেছে বলে জানান ড. টম কলিন্স। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা নিজেদের প্রশ্ন করেছি—এখন কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকার খরচ কত? এই প্রযুক্তি একদিন না একদিন আসবেই, তাই এখনই শুরু করলে অন্তত দায়িত্বশীলভাবে করা যাবে। নৈতিক ও সামাজিক প্রশ্নগুলো খোলামেলাভাবে মোকাবিলা করা যাবে।’
এই প্রকল্পের সঙ্গে সমান্তরালে একটি সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণাও চলবে, যা নেতৃত্ব দেবেন ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক জয় ঝাং। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানী এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে সাধারণ মানুষের মতামত নিতে চাই—তারা এই প্রযুক্তিকে কীভাবে দেখেন, এতে কী উপকার পাবেন এবং তাদের উদ্বেগ বা প্রশ্নগুলো কী।’

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের জীবনের মৌলিক উপাদান—ডিএনএ—সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরির জন্য শুরু হয়েছে এক ‘বিতর্কিত’ প্রকল্পের কাজ। এত দিন এ ধরনের গবেষণা ছিল নিষিদ্ধ বা সীমিত। কারণ অনেকের আশঙ্কা ছিল—এটা একদিন ‘ডিজাইনড বা নকশাকৃত’ শিশু তৈরি বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথ খুলে দিতে পারে।
তবে এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় মেডিকেল দাতব্য সংস্থা ‘ওয়েলকাম ট্রাস্ট’ এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১ কোটি পাউন্ড অনুদান দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, এই প্রকল্প ক্ষতির চেয়ে উপকারই বেশি করতে পারে। বিশেষ করে যেসব রোগ এখনো নিরাময়যোগ্য নয়, সেগুলোর চিকিৎসা আরও দ্রুত উন্নত হতে পারে।
এই প্রকল্পে যুক্ত যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের এমআরসি ল্যাবরেটরি অব মলিকুলার বায়োলজির ড. জুলিয়ান সেল বিবিসিকে বলেন, এই গবেষণা জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পরবর্তী বিশাল অগ্রগতি। তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার সম্ভাবনার কোনো শেষ নেই। আমরা এমন চিকিৎসার দিকে এগোচ্ছি, যা মানুষের বার্ধক্যে পৌঁছানোর পর জীবনকে আরও ভালো করবে। বুড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা রোগ কম হবে।’
ড. জুলিয়ান আরও বলেন, ‘আমরা এমন রোগ প্রতিরোধী কোষ তৈরি করতে চাই, যেগুলোর সাহায্যে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গ—যেমন লিভার, হার্ট বা এমনকি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও—পুনর্গঠন করতে ব্যবহার করা যাবে।’
তবে সমালোচকদের আশঙ্কা, এই গবেষণার সুযোগে অসাধু গবেষকেরা তথাকথিত ‘উন্নত বা পরিবর্তিত মানুষ’ তৈরি করতে পারে। ‘বিয়ন্ড জিএম’—নামের একটি ক্যাম্পেইন গ্রুপের পরিচালক ড. প্যাট থমাস বলেন, ‘আমরা ভাবতে চাই, সব বিজ্ঞানী ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করেন। কিন্তু এই প্রযুক্তি অপব্যবহার করে ক্ষতি করা কিংবা যুদ্ধের জন্যও কাজে লাগানো যেতে পারে।’
এই প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য বিবিসিকে জানানো হয়েছে মানব জিনোম প্রকল্পের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে। সেই প্রকল্পে মানব ডিএনএ-এর সব উপাদান শনাক্ত করা হয়েছিল। আর এর পেছনেও বড় অর্থায়ন করেছিল ওয়েলকাম ট্রাস্ট।
আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে থাকে ডিএনএ নামের একটি উপাদান, যেটিতে থাকে আমাদের জিনগত তথ্য। এই ডিএনএ তৈরি হয় মাত্র চারটি ছোট উপাদান—এ (A), জি (G), সি (C) ও টি (T) দিয়ে, যেগুলো বিভিন্ন কম্বিনেশনে বারবার পুনরাবৃত্তি হয়। এই ডিএনএ-তেই আমাদের শারীরিক গঠন ও পরিচয়ের পুরো নির্দেশনা লুকিয়ে আছে।
মানব জিনোম প্রকল্পের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ—কে বারকোডের মতো পড়তে সক্ষম হয়েছিলেন। নতুন যে গবেষণা শুরু হচ্ছে, সেটির নাম ‘সিনথেটিক হিউম্যান জিনোম প্রকল্প।’ এটি সেই জায়গা থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এবার শুধু ডিএনএ পড়াই নয়, বরং ডিএনএ-এর অংশবিশেষ এমনকি একদিন হয়তো পুরো ডিএনএ-ই নতুনভাবে তৈরি করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞানীদের প্রথম লক্ষ্য হলো ধাপে ধাপে বড় আকারের মানব ডিএনএ ব্লক তৈরি করা। চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো কৃত্রিমভাবে মানব ক্রোমোজোম তৈরি করা। ক্রোমোজোমের মধ্যেই থাকে আমাদের বিকাশ, চিকিৎসা ও শরীরের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী জিন। এরপর এগুলো নিয়ে গবেষণা করা যাবে, বোঝা যাবে কীভাবে আমাদের শরীরের কার্যক্রমে ডিএনএ ও জিন কাজ করে।
ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ম্যাথিউ হার্লস বলেন, ‘ডিএনএ শুরু থেকে তৈরি করলে আমরা আসলেই জানতে পারব, ডিএনএ কীভাবে কাজ করে এবং নতুন নতুন তত্ত্ব পরীক্ষা করতে পারব। এখন যা সম্ভব শুধু বিদ্যমান জীবিত কোষে সামান্য পরিবর্তন এনে।’
প্রকল্পের সব কাজই হবে পরীক্ষাগার ও পেট্রি-ডিশে। কেউ জীবন্ত কৃত্রিম মানুষ তৈরি করার চেষ্টা করবে না। তবে প্রযুক্তিটি মানব জীবনের ওপর নজিরবিহীন নিয়ন্ত্রণের সুযোগ এনে দেবে। যদিও প্রকল্পের উদ্দেশ্য চিকিৎসা উন্নয়ন, কিন্তু এটি অসাধু বিজ্ঞানীদের হাতে পড়লে প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে পারে। যেমন—জৈব অস্ত্র তৈরি, ‘উন্নত’ মানুষ তৈরি, এমনকি এমন জীব তৈরি করা, যাদের শরীরে মানুষের ডিএনএ থাকবে।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক বিজ্ঞানী অধ্যাপক বিল আর্নশ বলেন, ‘এই প্রযুক্তির দৈত্য বোতল থেকে বেরিয়ে পড়েছে। এখন কিছু নিয়মকানুন করা সম্ভব, কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ঠিকমতো যন্ত্রপাতি জোগাড় করে এই ধরনের কিছু তৈরি করতে শুরু করে, তাহলে থামানোর উপায় নেই।’
এদিকে ড. প্যাট থমাস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে চিকিৎসা সংস্থাগুলো কেমনভাবে ব্যবহার করবে তা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা কৃত্রিম মানুষ তৈরি করতে পারি, তাহলে প্রশ্ন ওঠে—এদের মালিক কে? এবং এসব থেকে যে তথ্য বের হবে, তার মালিকানা কার?’
এই প্রযুক্তি একদিন আসবেই, তাই আগে থেকেই তা দায়িত্বশীলভাবে করার লক্ষ্যেই ওয়েলকাম ট্রাস্ট অর্থায়ন করেছে বলে জানান ড. টম কলিন্স। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা নিজেদের প্রশ্ন করেছি—এখন কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকার খরচ কত? এই প্রযুক্তি একদিন না একদিন আসবেই, তাই এখনই শুরু করলে অন্তত দায়িত্বশীলভাবে করা যাবে। নৈতিক ও সামাজিক প্রশ্নগুলো খোলামেলাভাবে মোকাবিলা করা যাবে।’
এই প্রকল্পের সঙ্গে সমান্তরালে একটি সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণাও চলবে, যা নেতৃত্ব দেবেন ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক জয় ঝাং। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানী এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে সাধারণ মানুষের মতামত নিতে চাই—তারা এই প্রযুক্তিকে কীভাবে দেখেন, এতে কী উপকার পাবেন এবং তাদের উদ্বেগ বা প্রশ্নগুলো কী।’

২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং...
৭ দিন আগে
নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে
১০ দিন আগে
সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না।
১২ দিন আগে
মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মঙ্গল গ্রহে প্রথমবারের মতো বজ্রপাত শনাক্ত করার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, লাল গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপ ধরা পড়েছে, যা ইঙ্গিত দেয়—মঙ্গলেও পৃথিবীর মতো বজ্রপাত হতে পারে।
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং থেকে বিজ্ঞানীরা এবার বৈদ্যুতিক ঝলক শনাক্ত করেছেন।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, ফ্রান্সের একদল গবেষক নাসা রোভারের সংগৃহীত দুই মঙ্গল বছর—অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে ১ হাজার ৩৭৪ দিনের মোট ২৮ ঘণ্টার অডিও রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, এই বিদ্যুৎ চমক সাধারণত মঙ্গলের ডাস্ট ডেভিল বা ধুলিঝড়ের সামনের অংশে দেখা যায়। ডাস্ট ডেভিল মূলত উত্তপ্ত বায়ু ওপরে উঠতে উঠতে ছোট ঘূর্ণিবাতাস তৈরি করে, যার অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণ বৈদ্যুতিক চার্জ সৃষ্টি করতে পারে।
বৈজ্ঞানিক দলটির প্রধান লেখক ড. ব্যাপ্টিস্ট চিদে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এই বিচ্ছুরণগুলো একটি বড় ধরনের আবিষ্কার, যা মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু, সম্ভাব্য বাসযোগ্যতা এবং ভবিষ্যতের রোবটিক ও মানব অনুসন্ধানের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী—এই আবিষ্কারের মাধ্যমে পৃথিবী, শনি ও বৃহস্পতির সঙ্গে মঙ্গল গ্রহ সেই তালিকায় যুক্ত হলো—যেসব গ্রহে ইতিমধ্যেই বায়ুমণ্ডলীয় বজ্রপাতের কার্যকলাপ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে সন্দেহের জায়গাও রয়েছে। পার্টিকল ফিজিসিস্ট ড. ড্যানিয়েল প্রিটচার্ড নেচার সাময়িকীতে লিখেছেন—অডিও রেকর্ডিংগুলো ধুলোর ঘর্ষণে সৃষ্টি হওয়া বিচ্ছুরণের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিলেও দৃশ্যমান প্রমাণ না থাকায় কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাঁর মতে, এ ক্ষেত্রের দীর্ঘ ইতিহাস বিবেচনায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও কিছুদিন চলবে।
এর আগে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মঙ্গল গ্রহের কিছু শিলায় অদ্ভুত দাগ আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। ‘লেপার্ড স্পট’ ও ‘পপি সিড’ নাম দেওয়া এসব দাগে এমন কিছু খনিজ পাওয়া গেছে, যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি এবং এই কার্যকলাপ প্রাচীন জীবাণুর উপস্থিতিরও ইঙ্গিত দিতে পারে। তবে সেগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভূপ্রক্রিয়ায়ও জন্ম নিতে পারে। যদিও নাসা বলছে—এগুলো এখন পর্যন্ত মঙ্গল গ্রহে জীবনের সবচেয়ে জোরালো সম্ভাব্য চিহ্ন।
বর্তমানে মঙ্গল গ্রহ শীতল ও শুষ্ক মরুভূমি। কিন্তু বিলিয়ন বছর আগে গ্রহটিতে ঘন বাতাস, নদী-নালা ও হ্রদের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। সেই কারণেই মঙ্গলের জেজেরো ক্রেটারে পারসিভিয়ারেন্সের অনুসন্ধান বিজ্ঞানীদের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

মঙ্গল গ্রহে প্রথমবারের মতো বজ্রপাত শনাক্ত করার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, লাল গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপ ধরা পড়েছে, যা ইঙ্গিত দেয়—মঙ্গলেও পৃথিবীর মতো বজ্রপাত হতে পারে।
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং থেকে বিজ্ঞানীরা এবার বৈদ্যুতিক ঝলক শনাক্ত করেছেন।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, ফ্রান্সের একদল গবেষক নাসা রোভারের সংগৃহীত দুই মঙ্গল বছর—অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে ১ হাজার ৩৭৪ দিনের মোট ২৮ ঘণ্টার অডিও রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, এই বিদ্যুৎ চমক সাধারণত মঙ্গলের ডাস্ট ডেভিল বা ধুলিঝড়ের সামনের অংশে দেখা যায়। ডাস্ট ডেভিল মূলত উত্তপ্ত বায়ু ওপরে উঠতে উঠতে ছোট ঘূর্ণিবাতাস তৈরি করে, যার অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণ বৈদ্যুতিক চার্জ সৃষ্টি করতে পারে।
বৈজ্ঞানিক দলটির প্রধান লেখক ড. ব্যাপ্টিস্ট চিদে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এই বিচ্ছুরণগুলো একটি বড় ধরনের আবিষ্কার, যা মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু, সম্ভাব্য বাসযোগ্যতা এবং ভবিষ্যতের রোবটিক ও মানব অনুসন্ধানের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী—এই আবিষ্কারের মাধ্যমে পৃথিবী, শনি ও বৃহস্পতির সঙ্গে মঙ্গল গ্রহ সেই তালিকায় যুক্ত হলো—যেসব গ্রহে ইতিমধ্যেই বায়ুমণ্ডলীয় বজ্রপাতের কার্যকলাপ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে সন্দেহের জায়গাও রয়েছে। পার্টিকল ফিজিসিস্ট ড. ড্যানিয়েল প্রিটচার্ড নেচার সাময়িকীতে লিখেছেন—অডিও রেকর্ডিংগুলো ধুলোর ঘর্ষণে সৃষ্টি হওয়া বিচ্ছুরণের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিলেও দৃশ্যমান প্রমাণ না থাকায় কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাঁর মতে, এ ক্ষেত্রের দীর্ঘ ইতিহাস বিবেচনায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও কিছুদিন চলবে।
এর আগে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মঙ্গল গ্রহের কিছু শিলায় অদ্ভুত দাগ আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। ‘লেপার্ড স্পট’ ও ‘পপি সিড’ নাম দেওয়া এসব দাগে এমন কিছু খনিজ পাওয়া গেছে, যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি এবং এই কার্যকলাপ প্রাচীন জীবাণুর উপস্থিতিরও ইঙ্গিত দিতে পারে। তবে সেগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভূপ্রক্রিয়ায়ও জন্ম নিতে পারে। যদিও নাসা বলছে—এগুলো এখন পর্যন্ত মঙ্গল গ্রহে জীবনের সবচেয়ে জোরালো সম্ভাব্য চিহ্ন।
বর্তমানে মঙ্গল গ্রহ শীতল ও শুষ্ক মরুভূমি। কিন্তু বিলিয়ন বছর আগে গ্রহটিতে ঘন বাতাস, নদী-নালা ও হ্রদের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। সেই কারণেই মঙ্গলের জেজেরো ক্রেটারে পারসিভিয়ারেন্সের অনুসন্ধান বিজ্ঞানীদের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের জীবনের মৌলিক উপাদান—ডিএনএ—সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরির জন্য শুরু হয়েছে এক ‘বিতর্কিত’ প্রকল্পের কাজ। এত দিন এ ধরনের গবেষণা ছিল নিষিদ্ধ বা সীমিত। কারণ অনেকের আশঙ্কা ছিল—এটা একদিন ‘ডিজাইনড বা নকশাকৃত’ শিশু তৈরি বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথ খুলে দিতে পারে।
২৬ জুন ২০২৫
নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে
১০ দিন আগে
সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না।
১২ দিন আগে
মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে ৯, ৩২, ৬৬ ও ৮৩ বছর বয়সে।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণাটিতে ৪ হাজার মানুষের ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত মস্তিষ্কের স্ক্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, মস্তিষ্ক আজীবন পরিবর্তনশীল হলেও এই পরিবর্তন কোনো সরলরেখার মতো ঘটে না, বরং আলাদা আলাদা পাঁচটি ‘মস্তিষ্ক-পর্বে’ তা রূপ নেয়।
গবেষণায় চিহ্নিত পাঁচটি পর্ব হলো—১. জন্ম থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত ‘শৈশব’। ২. বয়স ৯ থেকে ৩২ বছর পর্যন্ত ‘কৈশোর’। ৩. বয়স ৩২ থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত ‘প্রাপ্তবয়স্ক’। ৪. বয়স ৬৬ থেকে ৮৩ বছর পর্যন্ত বার্ধক্যের প্রাথমিক পর্যায়। ৫. বয়স ৮৩ থেকে পরবর্তী যেকোনো সময় বার্ধক্যের শেষ পর্যায়।
এর মধ্যে শৈশবে তথা জন্ম থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের মস্তিষ্কের আকার দ্রুত বাড়ে। পাশাপাশি জীবনের শুরুতে যেসব অতিরিক্ত ‘সিন্যাপস’ বা মস্তিষ্কে বার্তা আদান-প্রদানের সেতু তৈরি হয়েছিল, সেগুলো ছাঁটাই হওয়া শুরু করে। ফলে মস্তিষ্ক অনেকটা এলোমেলোভাবে কাজ করে—ঠিক যেমন একটি শিশু পার্কে হাঁটতে হাঁটতে দিক হারিয়ে ফেলে।
কৈশোর যখন শুরু হয়, অর্থাৎ ৯ বছর বয়স থেকে হঠাৎ করে মস্তিষ্কের সংযোগগুলো অতি দক্ষ হয়ে ওঠে। গবেষকদের মতে, মানুষের জীবনে এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। এ সময় তাই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে মনে করা হতো, কিশোর বয়স শুধু ১৮-১৯ বছর বয়স পর্যন্ত। কিন্তু পরে বোঝা যায়, এই বয়স ২০–এর কোঠায়ও থাকে। নতুন গবেষণাটি বলছে, মস্তিষ্কের অ্যাডোলেসেন্স বা কৈশোর পর্যায় শেষ হয় ৩২ বছরের কাছাকাছি সময়ে। এ সময়ে মস্তিষ্কের দক্ষতা শীর্ষে পৌঁছায়।
৩২ থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত মস্তিষ্ক তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকে। পরিবর্তনের গতি ধীর হয়ে আসে। এ সময়কে গবেষকেরা বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্বের স্থিতিশীলতার সঙ্গে যুক্ত করেছেন।
৬৬ বছর বয়সের পর মানুষের মস্তিষ্কের কাজের ধরন একসঙ্গে সমন্বিত থাকার বদলে আলাদা আলাদা অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায়। যেন একটি ব্যান্ডের সদস্যরা নিজেদের একক ক্যারিয়ার শুরু করেছে। এই বয়স থেকেই উচ্চ রক্তচাপ ও ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক ঝুঁকি দেখা দিতে থাকে।
৮৩ বছরের পরের পর্যায় সম্পর্কে তুলনামূলক কম ডেটা সংগ্রহ করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে দেখা গেছে, এ সময়ে মস্তিষ্কের বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয় এবং সংযোগগুলো আরও দুর্বল হতে থাকে।
গবেষণা দলের সদস্য ড. অ্যালেক্সা মাউজলি বলেন, মস্তিষ্ক জীবনের প্রতিটি ধাপে নিজের সংযোগগুলো বদলে নেয়। এভাবে কখনো তা শক্তিশালী, কখনো তা দুর্বল হয়। কিন্তু এই পরিবর্তন একরকম নয়; এটির স্পষ্ট কিছু পর্ব রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গবেষণা মানসিক রোগ, স্নায়বিক ব্যাধি ও বার্ধক্যজনিত সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বোঝার নতুন পথ খুলে দিতে পারে। স্ক্যানের বিশাল পরিসরই প্রথমবারের মতো মস্তিষ্কের এই পাঁচটি স্পষ্ট পর্বকে সামনে এনেছে।

নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে ৯, ৩২, ৬৬ ও ৮৩ বছর বয়সে।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণাটিতে ৪ হাজার মানুষের ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত মস্তিষ্কের স্ক্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, মস্তিষ্ক আজীবন পরিবর্তনশীল হলেও এই পরিবর্তন কোনো সরলরেখার মতো ঘটে না, বরং আলাদা আলাদা পাঁচটি ‘মস্তিষ্ক-পর্বে’ তা রূপ নেয়।
গবেষণায় চিহ্নিত পাঁচটি পর্ব হলো—১. জন্ম থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত ‘শৈশব’। ২. বয়স ৯ থেকে ৩২ বছর পর্যন্ত ‘কৈশোর’। ৩. বয়স ৩২ থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত ‘প্রাপ্তবয়স্ক’। ৪. বয়স ৬৬ থেকে ৮৩ বছর পর্যন্ত বার্ধক্যের প্রাথমিক পর্যায়। ৫. বয়স ৮৩ থেকে পরবর্তী যেকোনো সময় বার্ধক্যের শেষ পর্যায়।
এর মধ্যে শৈশবে তথা জন্ম থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের মস্তিষ্কের আকার দ্রুত বাড়ে। পাশাপাশি জীবনের শুরুতে যেসব অতিরিক্ত ‘সিন্যাপস’ বা মস্তিষ্কে বার্তা আদান-প্রদানের সেতু তৈরি হয়েছিল, সেগুলো ছাঁটাই হওয়া শুরু করে। ফলে মস্তিষ্ক অনেকটা এলোমেলোভাবে কাজ করে—ঠিক যেমন একটি শিশু পার্কে হাঁটতে হাঁটতে দিক হারিয়ে ফেলে।
কৈশোর যখন শুরু হয়, অর্থাৎ ৯ বছর বয়স থেকে হঠাৎ করে মস্তিষ্কের সংযোগগুলো অতি দক্ষ হয়ে ওঠে। গবেষকদের মতে, মানুষের জীবনে এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। এ সময় তাই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে মনে করা হতো, কিশোর বয়স শুধু ১৮-১৯ বছর বয়স পর্যন্ত। কিন্তু পরে বোঝা যায়, এই বয়স ২০–এর কোঠায়ও থাকে। নতুন গবেষণাটি বলছে, মস্তিষ্কের অ্যাডোলেসেন্স বা কৈশোর পর্যায় শেষ হয় ৩২ বছরের কাছাকাছি সময়ে। এ সময়ে মস্তিষ্কের দক্ষতা শীর্ষে পৌঁছায়।
৩২ থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত মস্তিষ্ক তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকে। পরিবর্তনের গতি ধীর হয়ে আসে। এ সময়কে গবেষকেরা বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্বের স্থিতিশীলতার সঙ্গে যুক্ত করেছেন।
৬৬ বছর বয়সের পর মানুষের মস্তিষ্কের কাজের ধরন একসঙ্গে সমন্বিত থাকার বদলে আলাদা আলাদা অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায়। যেন একটি ব্যান্ডের সদস্যরা নিজেদের একক ক্যারিয়ার শুরু করেছে। এই বয়স থেকেই উচ্চ রক্তচাপ ও ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক ঝুঁকি দেখা দিতে থাকে।
৮৩ বছরের পরের পর্যায় সম্পর্কে তুলনামূলক কম ডেটা সংগ্রহ করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে দেখা গেছে, এ সময়ে মস্তিষ্কের বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয় এবং সংযোগগুলো আরও দুর্বল হতে থাকে।
গবেষণা দলের সদস্য ড. অ্যালেক্সা মাউজলি বলেন, মস্তিষ্ক জীবনের প্রতিটি ধাপে নিজের সংযোগগুলো বদলে নেয়। এভাবে কখনো তা শক্তিশালী, কখনো তা দুর্বল হয়। কিন্তু এই পরিবর্তন একরকম নয়; এটির স্পষ্ট কিছু পর্ব রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গবেষণা মানসিক রোগ, স্নায়বিক ব্যাধি ও বার্ধক্যজনিত সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বোঝার নতুন পথ খুলে দিতে পারে। স্ক্যানের বিশাল পরিসরই প্রথমবারের মতো মস্তিষ্কের এই পাঁচটি স্পষ্ট পর্বকে সামনে এনেছে।

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের জীবনের মৌলিক উপাদান—ডিএনএ—সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরির জন্য শুরু হয়েছে এক ‘বিতর্কিত’ প্রকল্পের কাজ। এত দিন এ ধরনের গবেষণা ছিল নিষিদ্ধ বা সীমিত। কারণ অনেকের আশঙ্কা ছিল—এটা একদিন ‘ডিজাইনড বা নকশাকৃত’ শিশু তৈরি বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথ খুলে দিতে পারে।
২৬ জুন ২০২৫
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং...
৭ দিন আগে
সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না।
১২ দিন আগে
মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভূমিকম্প হলো পৃথিবীর ভূত্বকের অভ্যন্তরে হঠাৎ শক্তি নির্গমনের ফল, এটিই ভূপৃষ্ঠে কম্পন সৃষ্টি করে। সাধারণত একটি ভূমিকম্পের ঘটনাকে তিনটি পর্যায়ক্রমিক কম্পনের একটি সিরিজ হিসেবে দেখা হয়: ফোরশক, মেইনশক এবং আফটারশক। এই তিনটি পর্যায় একসঙ্গে একটি সম্পূর্ণ ভূমিকম্পের প্রক্রিয়াকে সংজ্ঞায়িত করে।
ফোরশক হলো এমন ভূমিকম্প যা একই স্থানে একটি বৃহত্তর ভূমিকম্পের আগে ঘটে থাকে। একটি ভূমিকম্পকে ফোরশক হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না যতক্ষণ না একই এলাকায় এর পরে একটি বৃহত্তর ভূমিকম্প আঘাত হানে।
আফটারশক হলো অপেক্ষাকৃত ছোট ভূমিকম্প, যা একটি বৃহত্তর ঘটনা বা ‘মেইনশক’-এর পরে একই অঞ্চলে কয়েক দিন থেকে কয়েক বছর ধরে চলতে থাকে। এগুলো সাধারণত ফাটলের (ফল্ট লাইন) ১-২টি দৈর্ঘ্যের মধ্যেই ঘটে। স্বাভাবিক পটভূমি স্তরে ফিরে আসার আগে পর্যন্ত এটি চলতে থাকে।
একটি সাধারণ নিয়ম হিসেবে, আফটারশকগুলো মেইনশকের সময় স্থানচ্যুত হওয়া ফাটলের অংশ বরাবর সামান্য পুনঃসামঞ্জস্যকে বোঝায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আফটারশকগুলোর পুনঘটন কমতে থাকে।
ঐতিহাসিকভাবে, অগভীর ভূমিকম্পের তুলনায় গভীর ভূমিকম্পের (৩০ কিমির বেশি) পরে আফটারশক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। নিচে এই তিনটি পর্যায় সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো:

১. ফোরশক বা প্রাথমিক কম্পন
ভূমিকম্পের প্রধান কম্পন (মেইনশক) আঘাত হানার আগে যে ছোট ছোট কম্পন অনুভূত হয়, সেগুলোকে ফোরশক বলা হয়। এগুলো মেইনশকের আগে ভূ-ত্বকে চাপ তৈরি হওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়।
ফোরশকের বৈশিষ্ট্য:
কোনো একটি নির্দিষ্ট ফাটল অঞ্চলে শক্তি জমা হওয়ার ফলে মেইনশক শুরু হওয়ার আগে যে মৃদু কম্পনগুলো হয়ে থাকে, তা-ই হলো ফোরশক। এই কম্পনগুলো প্রধান প্লেট (টেকটোনিক) বরাবর চাপ মুক্ত করতে শুরু করে এবং মেইনশকের জন্য অঞ্চলটিকে প্রস্তুত করে তোলে।
ফোরশকগুলোর মাত্রা সাধারণত মেইনশকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়। এই কম্পনগুলোর তীব্রতা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার কারণে অনেক সময় সাধারণ মানুষ তা অনুভবও করতে পারে না।
ফোরশকগুলো মেইনশকের কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত ঘটতে পারে।
ভূতত্ত্ববিদদের জন্য ফোরশকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হতে পারে, যদিও এগুলো নির্ভরযোগ্যভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য যথেষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা কেবল মেইনশক হওয়ার পরেই নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন যে, আগের কম্পনটি ফোরশক ছিল। যদি এই কম্পনগুলো শনাক্ত করা যায়, তবে এটি বড় ভূমিকম্পের সতর্কতা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
২. মেইনশক বা প্রধান কম্পন
ভূমিকম্পের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বা পর্যায় ক্রমে সবচেয়ে তীব্র এবং শক্তিশালী কম্পনটিকে মেইনশক বলা হয়। এই কম্পনটিই স্থিতিশক্তির চূড়ান্ত মুক্তি ঘটায় এবং সাধারণত সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি করে ও জনজীবনের ওপর প্রভাব ফেলে।
মেইনশকের বৈশিষ্ট্য:
এটি একটি নির্দিষ্ট ভূমিকম্পের ঘটনার সবচেয়ে বড় মাত্রার কম্পনের ঘটনা। এর মাত্রা অন্য ফোরশক বা আফটারশকগুলোর চেয়ে বেশি হয়। মেইনশকের সময় জমে থাকা অধিকাংশ স্থিতিশক্তি হঠাৎ গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে তরঙ্গাকারে নির্গত হয়।
যেহেতু এর মাত্রা এবং তীব্রতা সবচেয়ে বেশি, তাই ভবন, পরিকাঠামো এবং ভূ-প্রকৃতির ওপর এর প্রভাব সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক হয়।
মেইনশকের উৎপত্তিস্থানকে হাইপোসেন্টার বা ফোকাস এবং তার ঠিক ওপরের ভূ-পৃষ্ঠের স্থানকে এপিসেন্টার বলা হয়।
৩. আফটারশক বা পরবর্তী কম্পন
মেইনশক আঘাত হানার পরে একই অঞ্চলে যে ক্ষুদ্র কম্পনগুলো বারবার অনুভূত হতে থাকে, সেগুলোকে আফটারশক বলা হয়। এই কম্পনগুলো মেইনশকের পরে প্রধান ফাটল অঞ্চলে চাপের পুনঃসামঞ্জস্যের কারণে সৃষ্টি হয়।
আফটারশকের বৈশিষ্ট্য:
মেইনশকের আঘাতের ফলে ভূ-ত্বকের যে অংশ স্থানচ্যুত হয়েছে, সেখানে চাপ পুনরায় সামঞ্জস্য করার কারণে এই কম্পনগুলো সৃষ্টি হয়। এই চাপ কমার প্রক্রিয়া যতদিন চলে, ততদিন আফটারশক অনুভূত হতে থাকে।
আফটারশকগুলোর মাত্রা সব সময় মেইনশকের চেয়ে কম হয়, তবে প্রথম দিকের আফটারশকগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী হতে পারে এবং মেইনশকের কারণে দুর্বল হয়ে যাওয়া কাঠামোর আরও ক্ষতি করতে পারে। মেইনশকে দুর্বল হয়ে যাওয়া বাড়ি বা পরিকাঠামোর চূড়ান্ত পতন সাধারণত আফটারশকের ফলেই ঘটে থাকে।
মেইনশকের পর থেকে আফটারশকগুলো কয়েক দিন, কয়েক সপ্তাহ বা এমনকি কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে আফটারশক এক বছর বা তারও বেশি সময় ধরেও চলতে পারে।
আফটারশকের পুনঘটন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে। এই নিয়মটি ওমোরি’স ল নামে পরিচিত। এর অর্থ হলো, মেইনশকের ঠিক পরের দিনগুলোতে আফটারশক যত ঘন ঘন হয়, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এর সংখ্যা কমতে থাকে।
মনে রাখা প্রয়োজন, সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না। এই পর্যায়গুলো ভূমিকম্পের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া এবং ফাটল অঞ্চলের স্থিতিশীল হওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝাতে সাহায্য করে।

ভূমিকম্প হলো পৃথিবীর ভূত্বকের অভ্যন্তরে হঠাৎ শক্তি নির্গমনের ফল, এটিই ভূপৃষ্ঠে কম্পন সৃষ্টি করে। সাধারণত একটি ভূমিকম্পের ঘটনাকে তিনটি পর্যায়ক্রমিক কম্পনের একটি সিরিজ হিসেবে দেখা হয়: ফোরশক, মেইনশক এবং আফটারশক। এই তিনটি পর্যায় একসঙ্গে একটি সম্পূর্ণ ভূমিকম্পের প্রক্রিয়াকে সংজ্ঞায়িত করে।
ফোরশক হলো এমন ভূমিকম্প যা একই স্থানে একটি বৃহত্তর ভূমিকম্পের আগে ঘটে থাকে। একটি ভূমিকম্পকে ফোরশক হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না যতক্ষণ না একই এলাকায় এর পরে একটি বৃহত্তর ভূমিকম্প আঘাত হানে।
আফটারশক হলো অপেক্ষাকৃত ছোট ভূমিকম্প, যা একটি বৃহত্তর ঘটনা বা ‘মেইনশক’-এর পরে একই অঞ্চলে কয়েক দিন থেকে কয়েক বছর ধরে চলতে থাকে। এগুলো সাধারণত ফাটলের (ফল্ট লাইন) ১-২টি দৈর্ঘ্যের মধ্যেই ঘটে। স্বাভাবিক পটভূমি স্তরে ফিরে আসার আগে পর্যন্ত এটি চলতে থাকে।
একটি সাধারণ নিয়ম হিসেবে, আফটারশকগুলো মেইনশকের সময় স্থানচ্যুত হওয়া ফাটলের অংশ বরাবর সামান্য পুনঃসামঞ্জস্যকে বোঝায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আফটারশকগুলোর পুনঘটন কমতে থাকে।
ঐতিহাসিকভাবে, অগভীর ভূমিকম্পের তুলনায় গভীর ভূমিকম্পের (৩০ কিমির বেশি) পরে আফটারশক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। নিচে এই তিনটি পর্যায় সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো:

১. ফোরশক বা প্রাথমিক কম্পন
ভূমিকম্পের প্রধান কম্পন (মেইনশক) আঘাত হানার আগে যে ছোট ছোট কম্পন অনুভূত হয়, সেগুলোকে ফোরশক বলা হয়। এগুলো মেইনশকের আগে ভূ-ত্বকে চাপ তৈরি হওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়।
ফোরশকের বৈশিষ্ট্য:
কোনো একটি নির্দিষ্ট ফাটল অঞ্চলে শক্তি জমা হওয়ার ফলে মেইনশক শুরু হওয়ার আগে যে মৃদু কম্পনগুলো হয়ে থাকে, তা-ই হলো ফোরশক। এই কম্পনগুলো প্রধান প্লেট (টেকটোনিক) বরাবর চাপ মুক্ত করতে শুরু করে এবং মেইনশকের জন্য অঞ্চলটিকে প্রস্তুত করে তোলে।
ফোরশকগুলোর মাত্রা সাধারণত মেইনশকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়। এই কম্পনগুলোর তীব্রতা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার কারণে অনেক সময় সাধারণ মানুষ তা অনুভবও করতে পারে না।
ফোরশকগুলো মেইনশকের কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত ঘটতে পারে।
ভূতত্ত্ববিদদের জন্য ফোরশকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হতে পারে, যদিও এগুলো নির্ভরযোগ্যভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য যথেষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা কেবল মেইনশক হওয়ার পরেই নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন যে, আগের কম্পনটি ফোরশক ছিল। যদি এই কম্পনগুলো শনাক্ত করা যায়, তবে এটি বড় ভূমিকম্পের সতর্কতা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
২. মেইনশক বা প্রধান কম্পন
ভূমিকম্পের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বা পর্যায় ক্রমে সবচেয়ে তীব্র এবং শক্তিশালী কম্পনটিকে মেইনশক বলা হয়। এই কম্পনটিই স্থিতিশক্তির চূড়ান্ত মুক্তি ঘটায় এবং সাধারণত সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি করে ও জনজীবনের ওপর প্রভাব ফেলে।
মেইনশকের বৈশিষ্ট্য:
এটি একটি নির্দিষ্ট ভূমিকম্পের ঘটনার সবচেয়ে বড় মাত্রার কম্পনের ঘটনা। এর মাত্রা অন্য ফোরশক বা আফটারশকগুলোর চেয়ে বেশি হয়। মেইনশকের সময় জমে থাকা অধিকাংশ স্থিতিশক্তি হঠাৎ গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে তরঙ্গাকারে নির্গত হয়।
যেহেতু এর মাত্রা এবং তীব্রতা সবচেয়ে বেশি, তাই ভবন, পরিকাঠামো এবং ভূ-প্রকৃতির ওপর এর প্রভাব সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক হয়।
মেইনশকের উৎপত্তিস্থানকে হাইপোসেন্টার বা ফোকাস এবং তার ঠিক ওপরের ভূ-পৃষ্ঠের স্থানকে এপিসেন্টার বলা হয়।
৩. আফটারশক বা পরবর্তী কম্পন
মেইনশক আঘাত হানার পরে একই অঞ্চলে যে ক্ষুদ্র কম্পনগুলো বারবার অনুভূত হতে থাকে, সেগুলোকে আফটারশক বলা হয়। এই কম্পনগুলো মেইনশকের পরে প্রধান ফাটল অঞ্চলে চাপের পুনঃসামঞ্জস্যের কারণে সৃষ্টি হয়।
আফটারশকের বৈশিষ্ট্য:
মেইনশকের আঘাতের ফলে ভূ-ত্বকের যে অংশ স্থানচ্যুত হয়েছে, সেখানে চাপ পুনরায় সামঞ্জস্য করার কারণে এই কম্পনগুলো সৃষ্টি হয়। এই চাপ কমার প্রক্রিয়া যতদিন চলে, ততদিন আফটারশক অনুভূত হতে থাকে।
আফটারশকগুলোর মাত্রা সব সময় মেইনশকের চেয়ে কম হয়, তবে প্রথম দিকের আফটারশকগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী হতে পারে এবং মেইনশকের কারণে দুর্বল হয়ে যাওয়া কাঠামোর আরও ক্ষতি করতে পারে। মেইনশকে দুর্বল হয়ে যাওয়া বাড়ি বা পরিকাঠামোর চূড়ান্ত পতন সাধারণত আফটারশকের ফলেই ঘটে থাকে।
মেইনশকের পর থেকে আফটারশকগুলো কয়েক দিন, কয়েক সপ্তাহ বা এমনকি কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে আফটারশক এক বছর বা তারও বেশি সময় ধরেও চলতে পারে।
আফটারশকের পুনঘটন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে। এই নিয়মটি ওমোরি’স ল নামে পরিচিত। এর অর্থ হলো, মেইনশকের ঠিক পরের দিনগুলোতে আফটারশক যত ঘন ঘন হয়, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এর সংখ্যা কমতে থাকে।
মনে রাখা প্রয়োজন, সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না। এই পর্যায়গুলো ভূমিকম্পের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া এবং ফাটল অঞ্চলের স্থিতিশীল হওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝাতে সাহায্য করে।

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের জীবনের মৌলিক উপাদান—ডিএনএ—সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরির জন্য শুরু হয়েছে এক ‘বিতর্কিত’ প্রকল্পের কাজ। এত দিন এ ধরনের গবেষণা ছিল নিষিদ্ধ বা সীমিত। কারণ অনেকের আশঙ্কা ছিল—এটা একদিন ‘ডিজাইনড বা নকশাকৃত’ শিশু তৈরি বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথ খুলে দিতে পারে।
২৬ জুন ২০২৫
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং...
৭ দিন আগে
নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে
১০ দিন আগে
মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। তাঁদের গবেষণা অনুযায়ী, মুখ দিয়ে মুখ স্পর্শ করার এই আচরণটি প্রায় ২১ মিলিয়ন (২ কোটি ১০ লাখ) বছর আগে বিবর্তিত হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, মানুষ এবং অন্যান্য গ্রেট এপস বা বৃহৎ বানর প্রজাতির সাধারণ পূর্বপুরুষেরা সম্ভবত চুমুতে অভ্যস্ত ছিল।
গবেষকেরা মনে করছেন, এই গবেষণা প্রমাণ করে, চুম্বন মানব সমাজের নিজস্ব কোনো উদ্ভাবন নয়, বরং এটি সমগ্র প্রাণিজগতে বহু আগে থেকেই বিদ্যমান একটি বিবর্তনগত আচরণ।
চুম্বনের মতো একটি আবেগময় আচরণের উৎস বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথমে এর একটি সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা তৈরি করেন। ‘ইভোলিউশন অ্যান্ড হিউম্যান বিহেভিয়র’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা চুম্বনকে একটি ‘অ-আক্রমণাত্মক, নির্দেশিত মৌখিক-মৌখিক যোগাযোগ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যেখানে ঠোঁট বা মুখের পারস্পরিক স্পর্শ ও ঘষাঘষি থাকবে, কিন্তু কোনো খাদ্য আদান-প্রদান হবে না।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী এবং প্রধান গবেষক ড. মাটিল্ডা ব্রিন্ডল ব্যাখ্যা করেন, ‘মানুষ, শিম্পাঞ্জি এবং বোনোবো—সবাই চুম্বন করে। তাই এটি সম্ভবত তাদের সবচেয়ে সাম্প্রতিক সাধারণ পূর্বপুরুষের মধ্যেও বিদ্যমান ছিল। আমাদের ধারণা, চুম্বন প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ বছর আগে গ্রেট এপসদের মধ্যে বিবর্তিত হয়েছিল।’
গবেষকেরা মানুষের নিকটতম প্রাচীন আত্মীয়, নিয়ান্ডারথালদের মধ্যেও চুম্বনের প্রমাণ পেয়েছেন, যারা প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ড. ব্রিন্ডল জানান, নিয়ান্ডারথালদের ডিএনএ নিয়ে একটি পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, আধুনিক মানুষ এবং নিয়ান্ডারথালরা মুখগহ্বরের একই ধরনের জীবাণু ভাগ করে নিত।
ড. ব্রিন্ডল বলেন, ‘এর অর্থ হলো, দুটি প্রজাতি বিভক্ত হওয়ার পরও কয়েক লাখ বছর ধরে তাদের মধ্যে লালা বিনিময় হয়েছিল।’ এর থেকেই স্পষ্ট হয়, মানব এবং নিয়ান্ডারথালদের মধ্যে সম্ভবত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বা ‘স্মুচিং’ ঘটেছিল।
বিবর্তনগত ফ্যামিলি ট্রি তৈরি করার জন্য বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে চুম্বনের অনুরূপ আচরণ খুঁজে বের করেছেন। গবেষণায় নেকড়ে, প্রেইরি ডগ, এমনকি পোলার বিয়ার (মেরু ভালুক) এবং অ্যালবাট্রস পাখির মধ্যেও চুম্বনের বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার সঙ্গে মিলে যাওয়া আচরণের প্রমাণ মিলেছে।
যদিও এই গবেষণাটি চুম্বন কখন বিকশিত হয়েছে তা চিহ্নিত করে। তবে কেন এমন আচরণ বিকশিত হলো—এই বিবর্তনীয় ধাঁধার উত্তর দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। এ নিয়ে একাধিক তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, এটি এপসদের মধ্যে ‘গ্রুমিং’ বা ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার আচরণ থেকে এসেছে। আবার কারও মতে, এটি সঙ্গীর স্বাস্থ্য এবং উপযুক্ততা মূল্যায়ন করার একটি ঘনিষ্ঠ ও অন্তরঙ্গ উপায় হতে পারে।
ড. ব্রিন্ডল আশা করেন, এই গবেষণাটি ‘কেন’ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নতুন পথ খুলে দেবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোঝা উচিত যে এটি এমন একটি আচরণ, যা আমরা আমাদের অ-মানব আত্মীয়দের সঙ্গে ভাগ করে নিই। এটিকে কেবল মানুষের রোমান্টিক আচরণ বলে উড়িয়ে না দিয়ে, এর উৎস নিয়ে আমাদের আরও গবেষণা করা উচিত।’

মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। তাঁদের গবেষণা অনুযায়ী, মুখ দিয়ে মুখ স্পর্শ করার এই আচরণটি প্রায় ২১ মিলিয়ন (২ কোটি ১০ লাখ) বছর আগে বিবর্তিত হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, মানুষ এবং অন্যান্য গ্রেট এপস বা বৃহৎ বানর প্রজাতির সাধারণ পূর্বপুরুষেরা সম্ভবত চুমুতে অভ্যস্ত ছিল।
গবেষকেরা মনে করছেন, এই গবেষণা প্রমাণ করে, চুম্বন মানব সমাজের নিজস্ব কোনো উদ্ভাবন নয়, বরং এটি সমগ্র প্রাণিজগতে বহু আগে থেকেই বিদ্যমান একটি বিবর্তনগত আচরণ।
চুম্বনের মতো একটি আবেগময় আচরণের উৎস বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথমে এর একটি সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা তৈরি করেন। ‘ইভোলিউশন অ্যান্ড হিউম্যান বিহেভিয়র’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা চুম্বনকে একটি ‘অ-আক্রমণাত্মক, নির্দেশিত মৌখিক-মৌখিক যোগাযোগ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যেখানে ঠোঁট বা মুখের পারস্পরিক স্পর্শ ও ঘষাঘষি থাকবে, কিন্তু কোনো খাদ্য আদান-প্রদান হবে না।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী এবং প্রধান গবেষক ড. মাটিল্ডা ব্রিন্ডল ব্যাখ্যা করেন, ‘মানুষ, শিম্পাঞ্জি এবং বোনোবো—সবাই চুম্বন করে। তাই এটি সম্ভবত তাদের সবচেয়ে সাম্প্রতিক সাধারণ পূর্বপুরুষের মধ্যেও বিদ্যমান ছিল। আমাদের ধারণা, চুম্বন প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ বছর আগে গ্রেট এপসদের মধ্যে বিবর্তিত হয়েছিল।’
গবেষকেরা মানুষের নিকটতম প্রাচীন আত্মীয়, নিয়ান্ডারথালদের মধ্যেও চুম্বনের প্রমাণ পেয়েছেন, যারা প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ড. ব্রিন্ডল জানান, নিয়ান্ডারথালদের ডিএনএ নিয়ে একটি পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, আধুনিক মানুষ এবং নিয়ান্ডারথালরা মুখগহ্বরের একই ধরনের জীবাণু ভাগ করে নিত।
ড. ব্রিন্ডল বলেন, ‘এর অর্থ হলো, দুটি প্রজাতি বিভক্ত হওয়ার পরও কয়েক লাখ বছর ধরে তাদের মধ্যে লালা বিনিময় হয়েছিল।’ এর থেকেই স্পষ্ট হয়, মানব এবং নিয়ান্ডারথালদের মধ্যে সম্ভবত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বা ‘স্মুচিং’ ঘটেছিল।
বিবর্তনগত ফ্যামিলি ট্রি তৈরি করার জন্য বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে চুম্বনের অনুরূপ আচরণ খুঁজে বের করেছেন। গবেষণায় নেকড়ে, প্রেইরি ডগ, এমনকি পোলার বিয়ার (মেরু ভালুক) এবং অ্যালবাট্রস পাখির মধ্যেও চুম্বনের বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার সঙ্গে মিলে যাওয়া আচরণের প্রমাণ মিলেছে।
যদিও এই গবেষণাটি চুম্বন কখন বিকশিত হয়েছে তা চিহ্নিত করে। তবে কেন এমন আচরণ বিকশিত হলো—এই বিবর্তনীয় ধাঁধার উত্তর দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। এ নিয়ে একাধিক তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, এটি এপসদের মধ্যে ‘গ্রুমিং’ বা ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার আচরণ থেকে এসেছে। আবার কারও মতে, এটি সঙ্গীর স্বাস্থ্য এবং উপযুক্ততা মূল্যায়ন করার একটি ঘনিষ্ঠ ও অন্তরঙ্গ উপায় হতে পারে।
ড. ব্রিন্ডল আশা করেন, এই গবেষণাটি ‘কেন’ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নতুন পথ খুলে দেবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোঝা উচিত যে এটি এমন একটি আচরণ, যা আমরা আমাদের অ-মানব আত্মীয়দের সঙ্গে ভাগ করে নিই। এটিকে কেবল মানুষের রোমান্টিক আচরণ বলে উড়িয়ে না দিয়ে, এর উৎস নিয়ে আমাদের আরও গবেষণা করা উচিত।’

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের জীবনের মৌলিক উপাদান—ডিএনএ—সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরির জন্য শুরু হয়েছে এক ‘বিতর্কিত’ প্রকল্পের কাজ। এত দিন এ ধরনের গবেষণা ছিল নিষিদ্ধ বা সীমিত। কারণ অনেকের আশঙ্কা ছিল—এটা একদিন ‘ডিজাইনড বা নকশাকৃত’ শিশু তৈরি বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথ খুলে দিতে পারে।
২৬ জুন ২০২৫
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং...
৭ দিন আগে
নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে
১০ দিন আগে
সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না।
১২ দিন আগে