আজকের পত্রিকা ডেস্ক

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা টিকে থাকবে।
আলপিনের মাথার আকারের, এক মিলিমিটারের বেশি লম্বা নয় এমন এই প্রাণী মহাকাশের চরম প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার রেকর্ড রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এর এই ‘সুপারপাওয়ার’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই গবেষণা ক্যানসার রোগীদের রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেওয়া থেকে শুরু করে গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানে খাদ্য ও ওষুধ সংরক্ষণে কাজে আসতে পারে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে টারডিগ্রেড, অনেকে বলেন মস আকৃতির শূকরছানা, এদের দেখতে দানবের মতো লাগে—তাদের স্ফীত মুখ, চোখা নখর এবং ছুরির মতো দাঁত। এদের সহনশীলতার সীমা পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা একাধিক পরীক্ষা করেছেন, যার ফলাফল চমকপ্রদ:
বিকিরণ: মানুষের জন্য মারাত্মক মাত্রার চেয়ে ১ হাজার গুণ বেশি বিকিরণ এরা সহ্য করতে পারে।
তাপমাত্রা: এদের ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা হয়েছে এবং আবার পরম শূন্যের ঠিক ওপরে ০.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হিমায়িত করা হয়েছে।
গতি: ২০২১ সালের এক গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা টারডিগ্রেডকে ৯০০ মিটার/সেকেন্ড (প্রায় ৩০০০ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে ছুড়ে দিয়ে দেখেছেন, এরা অক্ষত থাকে। এই গতি একটি সাধারণ হ্যান্ডগান থেকে ছোড়া বুলেটের গতির চেয়েও বেশি।
মহাকাশে টিকে থাকা: ২০০৭ সালে, টারডিগ্রেডই প্রথম প্রাণী যা মহাকাশে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে। এমনকি কিছু স্ত্রী টারডিগ্রেড মহাকাশেই ডিম পেড়েছিল এবং বাচ্চাগুলোও সুস্থ ছিল। ২০১৯ সালে ইসরায়েলের যে চন্দ্রযানটি চাঁদের বুকে বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটিতে ছিল অসংখ্য টারডিগ্রেড। সেগুলো টিকে আছে কিনা নিশ্চিত নয়।
টারডিগ্রেডকে হিমালয়ের পর্বতমালা, গভীর সমুদ্রতল, অ্যান্টার্কটিকা এমনকি উচ্চ অম্লীয় জাপানি উষ্ণ প্রস্রবণগুলোতেও পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রজাতির টারডিগ্রেড শনাক্ত করা হয়েছে।
বেঁচে থাকার গোপন কৌশল
শরীর থেকে আর্দ্রতা চলে যাওয়া বা পানিশূন্যতা হলো যে কোনো জীবের জন্য একটি পরিবেশগত চরম অবস্থা। বেশির ভাগ প্রাণীর জন্য পানি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। পানি শুকিয়ে গেলে কোষের ভেতরের প্রোটিনগুলো একসঙ্গে জমাট বেঁধে অকার্যকর হয়ে যায়।
টারডিগ্রেড এই বিপর্যয় এড়াতে পারে দুটি প্রধান কৌশলে:
১. স্থবির হয়ে যাওয়া
জার্মান বিজ্ঞানীরা ১৯২২ সালে আবিষ্কার করেন, যখন একটি টারডিগ্রেড শুকিয়ে যায়, তখন মাথা এবং আটটি পা গুটিয়ে নেয়। একটি গভীর সুপ্তাবস্থায় চলে যায়, এটি প্রায় মৃত্যুর মতো মনে হয়।
এই অবস্থায়, টারডিগ্রেডের বিপাক স্বাভাবিক হারের মাত্র ০.০১ শতাংশে নেমে আসে।
এটি কয়েক দশক ধরে এই অবস্থায় অবস্থায় থাকতে পারে। পরে পানির সংস্পর্শে এলেই আবার সচল হয়।
১৯৪৮ সালে, ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাদুঘরে ধুলো জমা একটি টারডিগ্রেডকে পানি দেওয়ার পর সেটি আংশিকভাবে আবার সচল হয়েছিল।
২. টিডিপি প্রোটিনের সুরক্ষা জাল
২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, টারডিগ্রেড শুকিয়ে যাওয়ার সময় রহস্যময় কিছু প্রোটিন তৈরির জিন সক্রিয় হয়, যার নাম দেওয়া হয় টারডিগ্রেড-নির্দিষ্ট বিশৃঙ্খল প্রোটিন (টিডিপি)।
২০২২ সালে, জাপানের বিজ্ঞানীরা দেখান, সাইটোপ্লাজমিক অ্যাবানডেন্ট হিট সলিউবল (সিএএইচএস) নামক এক শ্রেণির টিডিপি প্রোটিন এর জন্য দায়ী।
এই প্রোটিনগুলো শুকিয়ে যাওয়ার সময় আধা-কঠিন জেলের মতো রূপ নেয়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইমিং-এর সহযোগী অধ্যাপক টমাস বুথবি বলেন, এই প্রোটিনগুলো কোষের ভেতরে মাকড়সার জালের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এই ফাইবারগুলো (তন্তু) সংবেদনশীল প্রোটিনগুলোকে জড়িয়ে ধরে সেগুলোকে ভাঁজ হতে বা নষ্ট হতে বাধা দেয়।
ডিএনএ সুরক্ষা এবং মানব কল্যাণে প্রয়োগ
টারডিগ্রেড কীভাবে বিকিরণ সহ্য করে, তা বেশ ভালোভাবেই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে, কুনিয়েদা এবং তাঁর দল ডেম্যাজ সাপ্রেসর প্রোটিন (ডিসাপ) নামে একটি প্রোটিন আবিষ্কার করেন, যা ডিএনএকে একটি কম্বলের মতো মুড়ে ফেলে এবং আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞানীরা মানব কোষে ডিসাপ প্রোটিন তৈরি করার জিন যুক্ত করে দেখেছেন, এটি মানব ডিএনএকেও রক্ষা করতে পারে। ফলে মানুষের অমরত্বের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও সমাধান সূত্রের উৎস হতে পারে এই আণুবীক্ষণিক প্রাণী।
সুপারপাওয়ার
টারডিগ্রেডের এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো মানবকল্যাণে ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো:
রেডিয়েশন থেরাপিতে সুরক্ষা: ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত উচ্চ-শক্তির বিকিরণ সুস্থ টিস্যুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ডিসাপ প্রোটিন ব্যবহার করে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি ক্যানসার কোষ ধ্বংসের সময় পার্শ্ববর্তী সুস্থ টিস্যুকে রক্ষা করতে পারে।
সংরক্ষণ প্রযুক্তি: টিডিপি প্রোটিন ব্যবহার করে ভ্যাকসিন বা হিমোফিলিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর ভি৩-এর মতো সংবেদনশীল জৈবিক উপকরণ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বুথবি আবিষ্কার করেছেন, ফ্যাক্টর ভি৩-কে টিডিপি-এর সঙ্গে মিশ্রিত করলে, এটি রেফ্রিজারেটর ছাড়াই কক্ষ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। ফলে এটি দরিদ্র দেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যেখানে ভ্যাকসিন বা অন্যান্য উপকরণের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
মহাকাশ যাত্রা: নাসা টারডিগ্রেডের এই বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য খাদ্য ও ওষুধকে শুষ্কতা বা বিকিরণ থেকে রক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন।
টারডিগ্রেডকে কেন পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি চরম অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হলো, সেটি এখনো রহস্য। এই প্রাণীর বিস্ময়কর ক্ষমতাগুলোর রহস্য উন্মোচন করা গেলে তা কেবল মানবজাতির উপকারে আসবে না, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে টারডিগ্রেডরা।

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা টিকে থাকবে।
আলপিনের মাথার আকারের, এক মিলিমিটারের বেশি লম্বা নয় এমন এই প্রাণী মহাকাশের চরম প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার রেকর্ড রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এর এই ‘সুপারপাওয়ার’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই গবেষণা ক্যানসার রোগীদের রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেওয়া থেকে শুরু করে গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানে খাদ্য ও ওষুধ সংরক্ষণে কাজে আসতে পারে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে টারডিগ্রেড, অনেকে বলেন মস আকৃতির শূকরছানা, এদের দেখতে দানবের মতো লাগে—তাদের স্ফীত মুখ, চোখা নখর এবং ছুরির মতো দাঁত। এদের সহনশীলতার সীমা পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা একাধিক পরীক্ষা করেছেন, যার ফলাফল চমকপ্রদ:
বিকিরণ: মানুষের জন্য মারাত্মক মাত্রার চেয়ে ১ হাজার গুণ বেশি বিকিরণ এরা সহ্য করতে পারে।
তাপমাত্রা: এদের ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা হয়েছে এবং আবার পরম শূন্যের ঠিক ওপরে ০.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হিমায়িত করা হয়েছে।
গতি: ২০২১ সালের এক গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা টারডিগ্রেডকে ৯০০ মিটার/সেকেন্ড (প্রায় ৩০০০ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে ছুড়ে দিয়ে দেখেছেন, এরা অক্ষত থাকে। এই গতি একটি সাধারণ হ্যান্ডগান থেকে ছোড়া বুলেটের গতির চেয়েও বেশি।
মহাকাশে টিকে থাকা: ২০০৭ সালে, টারডিগ্রেডই প্রথম প্রাণী যা মহাকাশে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে। এমনকি কিছু স্ত্রী টারডিগ্রেড মহাকাশেই ডিম পেড়েছিল এবং বাচ্চাগুলোও সুস্থ ছিল। ২০১৯ সালে ইসরায়েলের যে চন্দ্রযানটি চাঁদের বুকে বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটিতে ছিল অসংখ্য টারডিগ্রেড। সেগুলো টিকে আছে কিনা নিশ্চিত নয়।
টারডিগ্রেডকে হিমালয়ের পর্বতমালা, গভীর সমুদ্রতল, অ্যান্টার্কটিকা এমনকি উচ্চ অম্লীয় জাপানি উষ্ণ প্রস্রবণগুলোতেও পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রজাতির টারডিগ্রেড শনাক্ত করা হয়েছে।
বেঁচে থাকার গোপন কৌশল
শরীর থেকে আর্দ্রতা চলে যাওয়া বা পানিশূন্যতা হলো যে কোনো জীবের জন্য একটি পরিবেশগত চরম অবস্থা। বেশির ভাগ প্রাণীর জন্য পানি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। পানি শুকিয়ে গেলে কোষের ভেতরের প্রোটিনগুলো একসঙ্গে জমাট বেঁধে অকার্যকর হয়ে যায়।
টারডিগ্রেড এই বিপর্যয় এড়াতে পারে দুটি প্রধান কৌশলে:
১. স্থবির হয়ে যাওয়া
জার্মান বিজ্ঞানীরা ১৯২২ সালে আবিষ্কার করেন, যখন একটি টারডিগ্রেড শুকিয়ে যায়, তখন মাথা এবং আটটি পা গুটিয়ে নেয়। একটি গভীর সুপ্তাবস্থায় চলে যায়, এটি প্রায় মৃত্যুর মতো মনে হয়।
এই অবস্থায়, টারডিগ্রেডের বিপাক স্বাভাবিক হারের মাত্র ০.০১ শতাংশে নেমে আসে।
এটি কয়েক দশক ধরে এই অবস্থায় অবস্থায় থাকতে পারে। পরে পানির সংস্পর্শে এলেই আবার সচল হয়।
১৯৪৮ সালে, ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাদুঘরে ধুলো জমা একটি টারডিগ্রেডকে পানি দেওয়ার পর সেটি আংশিকভাবে আবার সচল হয়েছিল।
২. টিডিপি প্রোটিনের সুরক্ষা জাল
২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, টারডিগ্রেড শুকিয়ে যাওয়ার সময় রহস্যময় কিছু প্রোটিন তৈরির জিন সক্রিয় হয়, যার নাম দেওয়া হয় টারডিগ্রেড-নির্দিষ্ট বিশৃঙ্খল প্রোটিন (টিডিপি)।
২০২২ সালে, জাপানের বিজ্ঞানীরা দেখান, সাইটোপ্লাজমিক অ্যাবানডেন্ট হিট সলিউবল (সিএএইচএস) নামক এক শ্রেণির টিডিপি প্রোটিন এর জন্য দায়ী।
এই প্রোটিনগুলো শুকিয়ে যাওয়ার সময় আধা-কঠিন জেলের মতো রূপ নেয়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইমিং-এর সহযোগী অধ্যাপক টমাস বুথবি বলেন, এই প্রোটিনগুলো কোষের ভেতরে মাকড়সার জালের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এই ফাইবারগুলো (তন্তু) সংবেদনশীল প্রোটিনগুলোকে জড়িয়ে ধরে সেগুলোকে ভাঁজ হতে বা নষ্ট হতে বাধা দেয়।
ডিএনএ সুরক্ষা এবং মানব কল্যাণে প্রয়োগ
টারডিগ্রেড কীভাবে বিকিরণ সহ্য করে, তা বেশ ভালোভাবেই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে, কুনিয়েদা এবং তাঁর দল ডেম্যাজ সাপ্রেসর প্রোটিন (ডিসাপ) নামে একটি প্রোটিন আবিষ্কার করেন, যা ডিএনএকে একটি কম্বলের মতো মুড়ে ফেলে এবং আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞানীরা মানব কোষে ডিসাপ প্রোটিন তৈরি করার জিন যুক্ত করে দেখেছেন, এটি মানব ডিএনএকেও রক্ষা করতে পারে। ফলে মানুষের অমরত্বের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও সমাধান সূত্রের উৎস হতে পারে এই আণুবীক্ষণিক প্রাণী।
সুপারপাওয়ার
টারডিগ্রেডের এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো মানবকল্যাণে ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো:
রেডিয়েশন থেরাপিতে সুরক্ষা: ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত উচ্চ-শক্তির বিকিরণ সুস্থ টিস্যুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ডিসাপ প্রোটিন ব্যবহার করে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি ক্যানসার কোষ ধ্বংসের সময় পার্শ্ববর্তী সুস্থ টিস্যুকে রক্ষা করতে পারে।
সংরক্ষণ প্রযুক্তি: টিডিপি প্রোটিন ব্যবহার করে ভ্যাকসিন বা হিমোফিলিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর ভি৩-এর মতো সংবেদনশীল জৈবিক উপকরণ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বুথবি আবিষ্কার করেছেন, ফ্যাক্টর ভি৩-কে টিডিপি-এর সঙ্গে মিশ্রিত করলে, এটি রেফ্রিজারেটর ছাড়াই কক্ষ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। ফলে এটি দরিদ্র দেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যেখানে ভ্যাকসিন বা অন্যান্য উপকরণের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
মহাকাশ যাত্রা: নাসা টারডিগ্রেডের এই বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য খাদ্য ও ওষুধকে শুষ্কতা বা বিকিরণ থেকে রক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন।
টারডিগ্রেডকে কেন পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি চরম অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হলো, সেটি এখনো রহস্য। এই প্রাণীর বিস্ময়কর ক্ষমতাগুলোর রহস্য উন্মোচন করা গেলে তা কেবল মানবজাতির উপকারে আসবে না, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে টারডিগ্রেডরা।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা টিকে থাকবে।
আলপিনের মাথার আকারের, এক মিলিমিটারের বেশি লম্বা নয় এমন এই প্রাণী মহাকাশের চরম প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার রেকর্ড রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এর এই ‘সুপারপাওয়ার’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই গবেষণা ক্যানসার রোগীদের রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেওয়া থেকে শুরু করে গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানে খাদ্য ও ওষুধ সংরক্ষণে কাজে আসতে পারে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে টারডিগ্রেড, অনেকে বলেন মস আকৃতির শূকরছানা, এদের দেখতে দানবের মতো লাগে—তাদের স্ফীত মুখ, চোখা নখর এবং ছুরির মতো দাঁত। এদের সহনশীলতার সীমা পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা একাধিক পরীক্ষা করেছেন, যার ফলাফল চমকপ্রদ:
বিকিরণ: মানুষের জন্য মারাত্মক মাত্রার চেয়ে ১ হাজার গুণ বেশি বিকিরণ এরা সহ্য করতে পারে।
তাপমাত্রা: এদের ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা হয়েছে এবং আবার পরম শূন্যের ঠিক ওপরে ০.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হিমায়িত করা হয়েছে।
গতি: ২০২১ সালের এক গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা টারডিগ্রেডকে ৯০০ মিটার/সেকেন্ড (প্রায় ৩০০০ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে ছুড়ে দিয়ে দেখেছেন, এরা অক্ষত থাকে। এই গতি একটি সাধারণ হ্যান্ডগান থেকে ছোড়া বুলেটের গতির চেয়েও বেশি।
মহাকাশে টিকে থাকা: ২০০৭ সালে, টারডিগ্রেডই প্রথম প্রাণী যা মহাকাশে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে। এমনকি কিছু স্ত্রী টারডিগ্রেড মহাকাশেই ডিম পেড়েছিল এবং বাচ্চাগুলোও সুস্থ ছিল। ২০১৯ সালে ইসরায়েলের যে চন্দ্রযানটি চাঁদের বুকে বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটিতে ছিল অসংখ্য টারডিগ্রেড। সেগুলো টিকে আছে কিনা নিশ্চিত নয়।
টারডিগ্রেডকে হিমালয়ের পর্বতমালা, গভীর সমুদ্রতল, অ্যান্টার্কটিকা এমনকি উচ্চ অম্লীয় জাপানি উষ্ণ প্রস্রবণগুলোতেও পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রজাতির টারডিগ্রেড শনাক্ত করা হয়েছে।
বেঁচে থাকার গোপন কৌশল
শরীর থেকে আর্দ্রতা চলে যাওয়া বা পানিশূন্যতা হলো যে কোনো জীবের জন্য একটি পরিবেশগত চরম অবস্থা। বেশির ভাগ প্রাণীর জন্য পানি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। পানি শুকিয়ে গেলে কোষের ভেতরের প্রোটিনগুলো একসঙ্গে জমাট বেঁধে অকার্যকর হয়ে যায়।
টারডিগ্রেড এই বিপর্যয় এড়াতে পারে দুটি প্রধান কৌশলে:
১. স্থবির হয়ে যাওয়া
জার্মান বিজ্ঞানীরা ১৯২২ সালে আবিষ্কার করেন, যখন একটি টারডিগ্রেড শুকিয়ে যায়, তখন মাথা এবং আটটি পা গুটিয়ে নেয়। একটি গভীর সুপ্তাবস্থায় চলে যায়, এটি প্রায় মৃত্যুর মতো মনে হয়।
এই অবস্থায়, টারডিগ্রেডের বিপাক স্বাভাবিক হারের মাত্র ০.০১ শতাংশে নেমে আসে।
এটি কয়েক দশক ধরে এই অবস্থায় অবস্থায় থাকতে পারে। পরে পানির সংস্পর্শে এলেই আবার সচল হয়।
১৯৪৮ সালে, ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাদুঘরে ধুলো জমা একটি টারডিগ্রেডকে পানি দেওয়ার পর সেটি আংশিকভাবে আবার সচল হয়েছিল।
২. টিডিপি প্রোটিনের সুরক্ষা জাল
২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, টারডিগ্রেড শুকিয়ে যাওয়ার সময় রহস্যময় কিছু প্রোটিন তৈরির জিন সক্রিয় হয়, যার নাম দেওয়া হয় টারডিগ্রেড-নির্দিষ্ট বিশৃঙ্খল প্রোটিন (টিডিপি)।
২০২২ সালে, জাপানের বিজ্ঞানীরা দেখান, সাইটোপ্লাজমিক অ্যাবানডেন্ট হিট সলিউবল (সিএএইচএস) নামক এক শ্রেণির টিডিপি প্রোটিন এর জন্য দায়ী।
এই প্রোটিনগুলো শুকিয়ে যাওয়ার সময় আধা-কঠিন জেলের মতো রূপ নেয়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইমিং-এর সহযোগী অধ্যাপক টমাস বুথবি বলেন, এই প্রোটিনগুলো কোষের ভেতরে মাকড়সার জালের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এই ফাইবারগুলো (তন্তু) সংবেদনশীল প্রোটিনগুলোকে জড়িয়ে ধরে সেগুলোকে ভাঁজ হতে বা নষ্ট হতে বাধা দেয়।
ডিএনএ সুরক্ষা এবং মানব কল্যাণে প্রয়োগ
টারডিগ্রেড কীভাবে বিকিরণ সহ্য করে, তা বেশ ভালোভাবেই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে, কুনিয়েদা এবং তাঁর দল ডেম্যাজ সাপ্রেসর প্রোটিন (ডিসাপ) নামে একটি প্রোটিন আবিষ্কার করেন, যা ডিএনএকে একটি কম্বলের মতো মুড়ে ফেলে এবং আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞানীরা মানব কোষে ডিসাপ প্রোটিন তৈরি করার জিন যুক্ত করে দেখেছেন, এটি মানব ডিএনএকেও রক্ষা করতে পারে। ফলে মানুষের অমরত্বের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও সমাধান সূত্রের উৎস হতে পারে এই আণুবীক্ষণিক প্রাণী।
সুপারপাওয়ার
টারডিগ্রেডের এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো মানবকল্যাণে ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো:
রেডিয়েশন থেরাপিতে সুরক্ষা: ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত উচ্চ-শক্তির বিকিরণ সুস্থ টিস্যুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ডিসাপ প্রোটিন ব্যবহার করে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি ক্যানসার কোষ ধ্বংসের সময় পার্শ্ববর্তী সুস্থ টিস্যুকে রক্ষা করতে পারে।
সংরক্ষণ প্রযুক্তি: টিডিপি প্রোটিন ব্যবহার করে ভ্যাকসিন বা হিমোফিলিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর ভি৩-এর মতো সংবেদনশীল জৈবিক উপকরণ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বুথবি আবিষ্কার করেছেন, ফ্যাক্টর ভি৩-কে টিডিপি-এর সঙ্গে মিশ্রিত করলে, এটি রেফ্রিজারেটর ছাড়াই কক্ষ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। ফলে এটি দরিদ্র দেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যেখানে ভ্যাকসিন বা অন্যান্য উপকরণের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
মহাকাশ যাত্রা: নাসা টারডিগ্রেডের এই বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য খাদ্য ও ওষুধকে শুষ্কতা বা বিকিরণ থেকে রক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন।
টারডিগ্রেডকে কেন পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি চরম অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হলো, সেটি এখনো রহস্য। এই প্রাণীর বিস্ময়কর ক্ষমতাগুলোর রহস্য উন্মোচন করা গেলে তা কেবল মানবজাতির উপকারে আসবে না, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে টারডিগ্রেডরা।

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা টিকে থাকবে।
আলপিনের মাথার আকারের, এক মিলিমিটারের বেশি লম্বা নয় এমন এই প্রাণী মহাকাশের চরম প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার রেকর্ড রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এর এই ‘সুপারপাওয়ার’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই গবেষণা ক্যানসার রোগীদের রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেওয়া থেকে শুরু করে গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানে খাদ্য ও ওষুধ সংরক্ষণে কাজে আসতে পারে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে টারডিগ্রেড, অনেকে বলেন মস আকৃতির শূকরছানা, এদের দেখতে দানবের মতো লাগে—তাদের স্ফীত মুখ, চোখা নখর এবং ছুরির মতো দাঁত। এদের সহনশীলতার সীমা পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা একাধিক পরীক্ষা করেছেন, যার ফলাফল চমকপ্রদ:
বিকিরণ: মানুষের জন্য মারাত্মক মাত্রার চেয়ে ১ হাজার গুণ বেশি বিকিরণ এরা সহ্য করতে পারে।
তাপমাত্রা: এদের ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা হয়েছে এবং আবার পরম শূন্যের ঠিক ওপরে ০.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হিমায়িত করা হয়েছে।
গতি: ২০২১ সালের এক গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা টারডিগ্রেডকে ৯০০ মিটার/সেকেন্ড (প্রায় ৩০০০ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে ছুড়ে দিয়ে দেখেছেন, এরা অক্ষত থাকে। এই গতি একটি সাধারণ হ্যান্ডগান থেকে ছোড়া বুলেটের গতির চেয়েও বেশি।
মহাকাশে টিকে থাকা: ২০০৭ সালে, টারডিগ্রেডই প্রথম প্রাণী যা মহাকাশে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে। এমনকি কিছু স্ত্রী টারডিগ্রেড মহাকাশেই ডিম পেড়েছিল এবং বাচ্চাগুলোও সুস্থ ছিল। ২০১৯ সালে ইসরায়েলের যে চন্দ্রযানটি চাঁদের বুকে বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটিতে ছিল অসংখ্য টারডিগ্রেড। সেগুলো টিকে আছে কিনা নিশ্চিত নয়।
টারডিগ্রেডকে হিমালয়ের পর্বতমালা, গভীর সমুদ্রতল, অ্যান্টার্কটিকা এমনকি উচ্চ অম্লীয় জাপানি উষ্ণ প্রস্রবণগুলোতেও পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রজাতির টারডিগ্রেড শনাক্ত করা হয়েছে।
বেঁচে থাকার গোপন কৌশল
শরীর থেকে আর্দ্রতা চলে যাওয়া বা পানিশূন্যতা হলো যে কোনো জীবের জন্য একটি পরিবেশগত চরম অবস্থা। বেশির ভাগ প্রাণীর জন্য পানি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। পানি শুকিয়ে গেলে কোষের ভেতরের প্রোটিনগুলো একসঙ্গে জমাট বেঁধে অকার্যকর হয়ে যায়।
টারডিগ্রেড এই বিপর্যয় এড়াতে পারে দুটি প্রধান কৌশলে:
১. স্থবির হয়ে যাওয়া
জার্মান বিজ্ঞানীরা ১৯২২ সালে আবিষ্কার করেন, যখন একটি টারডিগ্রেড শুকিয়ে যায়, তখন মাথা এবং আটটি পা গুটিয়ে নেয়। একটি গভীর সুপ্তাবস্থায় চলে যায়, এটি প্রায় মৃত্যুর মতো মনে হয়।
এই অবস্থায়, টারডিগ্রেডের বিপাক স্বাভাবিক হারের মাত্র ০.০১ শতাংশে নেমে আসে।
এটি কয়েক দশক ধরে এই অবস্থায় অবস্থায় থাকতে পারে। পরে পানির সংস্পর্শে এলেই আবার সচল হয়।
১৯৪৮ সালে, ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাদুঘরে ধুলো জমা একটি টারডিগ্রেডকে পানি দেওয়ার পর সেটি আংশিকভাবে আবার সচল হয়েছিল।
২. টিডিপি প্রোটিনের সুরক্ষা জাল
২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, টারডিগ্রেড শুকিয়ে যাওয়ার সময় রহস্যময় কিছু প্রোটিন তৈরির জিন সক্রিয় হয়, যার নাম দেওয়া হয় টারডিগ্রেড-নির্দিষ্ট বিশৃঙ্খল প্রোটিন (টিডিপি)।
২০২২ সালে, জাপানের বিজ্ঞানীরা দেখান, সাইটোপ্লাজমিক অ্যাবানডেন্ট হিট সলিউবল (সিএএইচএস) নামক এক শ্রেণির টিডিপি প্রোটিন এর জন্য দায়ী।
এই প্রোটিনগুলো শুকিয়ে যাওয়ার সময় আধা-কঠিন জেলের মতো রূপ নেয়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইমিং-এর সহযোগী অধ্যাপক টমাস বুথবি বলেন, এই প্রোটিনগুলো কোষের ভেতরে মাকড়সার জালের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এই ফাইবারগুলো (তন্তু) সংবেদনশীল প্রোটিনগুলোকে জড়িয়ে ধরে সেগুলোকে ভাঁজ হতে বা নষ্ট হতে বাধা দেয়।
ডিএনএ সুরক্ষা এবং মানব কল্যাণে প্রয়োগ
টারডিগ্রেড কীভাবে বিকিরণ সহ্য করে, তা বেশ ভালোভাবেই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে, কুনিয়েদা এবং তাঁর দল ডেম্যাজ সাপ্রেসর প্রোটিন (ডিসাপ) নামে একটি প্রোটিন আবিষ্কার করেন, যা ডিএনএকে একটি কম্বলের মতো মুড়ে ফেলে এবং আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞানীরা মানব কোষে ডিসাপ প্রোটিন তৈরি করার জিন যুক্ত করে দেখেছেন, এটি মানব ডিএনএকেও রক্ষা করতে পারে। ফলে মানুষের অমরত্বের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও সমাধান সূত্রের উৎস হতে পারে এই আণুবীক্ষণিক প্রাণী।
সুপারপাওয়ার
টারডিগ্রেডের এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো মানবকল্যাণে ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো:
রেডিয়েশন থেরাপিতে সুরক্ষা: ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত উচ্চ-শক্তির বিকিরণ সুস্থ টিস্যুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ডিসাপ প্রোটিন ব্যবহার করে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি ক্যানসার কোষ ধ্বংসের সময় পার্শ্ববর্তী সুস্থ টিস্যুকে রক্ষা করতে পারে।
সংরক্ষণ প্রযুক্তি: টিডিপি প্রোটিন ব্যবহার করে ভ্যাকসিন বা হিমোফিলিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর ভি৩-এর মতো সংবেদনশীল জৈবিক উপকরণ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বুথবি আবিষ্কার করেছেন, ফ্যাক্টর ভি৩-কে টিডিপি-এর সঙ্গে মিশ্রিত করলে, এটি রেফ্রিজারেটর ছাড়াই কক্ষ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। ফলে এটি দরিদ্র দেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যেখানে ভ্যাকসিন বা অন্যান্য উপকরণের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
মহাকাশ যাত্রা: নাসা টারডিগ্রেডের এই বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য খাদ্য ও ওষুধকে শুষ্কতা বা বিকিরণ থেকে রক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন।
টারডিগ্রেডকে কেন পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি চরম অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হলো, সেটি এখনো রহস্য। এই প্রাণীর বিস্ময়কর ক্ষমতাগুলোর রহস্য উন্মোচন করা গেলে তা কেবল মানবজাতির উপকারে আসবে না, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে টারডিগ্রেডরা।

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
১৯ ঘণ্টা আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
১ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৪ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওয়াটসন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালে ডিএনএর কাঠামোগত রহস্য উন্মোচন করেন। এই আবিষ্কারকে ‘বিশ শতকের অন্যতম সেরা অগ্রগতি’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আবিষ্কার আণবিক জীববিজ্ঞানের দ্রুত বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছিল।
ডিএনএ ডাবল হেলিক্স হলো ডিএনএর দুটি সর্পিল বা প্যাঁচানো মইয়ের মতো কাঠামো, যা পরস্পরকে পেঁচিয়ে থাকে। এই কাঠামোতে দুটি শৃঙ্খল থাকে, সেটি আবার হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে সংযুক্ত। এই শৃঙ্খলগুলো অ্যাডেনিন (A) ও থাইমিন (T) এবং সাইটোসিন (C) ও গুয়ানিনের (G) মতো নাইট্রোজেনাস বেস জোড়া দিয়ে গঠিত।
জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স—এই তিনজন বিজ্ঞানী ১৯৬২ সালে ডিএনএর ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। এই আবিষ্কারের সময় তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা জীবনের রহস্য আবিষ্কার করেছি।’
যদিও এই আবিষ্কারের পেছনে কিংস কলেজের গবেষক রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের তোলা এক্স-রে চিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটি তাঁর সম্মতি ছাড়াই ওয়াটসন ও ক্রিক ব্যবহার করেছিলেন। মরিস উইলকিন্স ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে ডিএনএ অণুর কাঠামো নির্ণয়ের কাজ করেছিলেন।
এমন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সাফল্যের পরও পরবর্তীকালে বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে জেমস ওয়াটসনের খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি ‘আফ্রিকার সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে হতাশ’। কারণ, ‘আমাদের সব সামাজিক নীতি এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে তাদের (আফ্রিকানদের) বুদ্ধিমত্তা আমাদের মতোই—যদিও সব পরীক্ষামূলক ফলাফলে তেমনটি দেখা যায় না।’ এই মন্তব্যের জেরে নিউইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলরের পদ হারান তিনি।
২০১৯ সালে ওয়াটসন পুনরায় একই ধরনের মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি আরও একবার বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যোগসূত্র টেনেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, ল্যাবরেটরি তাঁর চ্যান্সেলর ইমেরিটাসসহ সমস্ত সম্মানসূচক পদ কেড়ে নেয়। ল্যাবরেটরি সেই সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘ড. ওয়াটসনের বক্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞানের দ্বারা অসমর্থিত।’
২০১৪ সালে বৈজ্ঞানিক মহলে একঘরে হওয়ার অনুভূতির কথা বলে ওয়াটসন তাঁর নোবেল পদকটি ৪৮ লাখ ডলারে (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা) নিলামে বিক্রি করে দেন। যদিও পদকটি ক্রয় করা এক রুশ বিলিয়নিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি আবার তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯২৮ সালের এপ্রিলে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন জেমস ওয়াটসন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য স্কলারশিপ পান। ডিএনএ নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি কেমব্রিজে যান, যেখানে ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ডিএনএর গঠন আবিষ্কারের পর তিনি হার্ভার্ডে জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নেন। এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করার কৃতিত্ব তাঁর।

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওয়াটসন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালে ডিএনএর কাঠামোগত রহস্য উন্মোচন করেন। এই আবিষ্কারকে ‘বিশ শতকের অন্যতম সেরা অগ্রগতি’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আবিষ্কার আণবিক জীববিজ্ঞানের দ্রুত বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছিল।
ডিএনএ ডাবল হেলিক্স হলো ডিএনএর দুটি সর্পিল বা প্যাঁচানো মইয়ের মতো কাঠামো, যা পরস্পরকে পেঁচিয়ে থাকে। এই কাঠামোতে দুটি শৃঙ্খল থাকে, সেটি আবার হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে সংযুক্ত। এই শৃঙ্খলগুলো অ্যাডেনিন (A) ও থাইমিন (T) এবং সাইটোসিন (C) ও গুয়ানিনের (G) মতো নাইট্রোজেনাস বেস জোড়া দিয়ে গঠিত।
জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স—এই তিনজন বিজ্ঞানী ১৯৬২ সালে ডিএনএর ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। এই আবিষ্কারের সময় তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা জীবনের রহস্য আবিষ্কার করেছি।’
যদিও এই আবিষ্কারের পেছনে কিংস কলেজের গবেষক রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের তোলা এক্স-রে চিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটি তাঁর সম্মতি ছাড়াই ওয়াটসন ও ক্রিক ব্যবহার করেছিলেন। মরিস উইলকিন্স ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে ডিএনএ অণুর কাঠামো নির্ণয়ের কাজ করেছিলেন।
এমন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সাফল্যের পরও পরবর্তীকালে বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে জেমস ওয়াটসনের খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি ‘আফ্রিকার সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে হতাশ’। কারণ, ‘আমাদের সব সামাজিক নীতি এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে তাদের (আফ্রিকানদের) বুদ্ধিমত্তা আমাদের মতোই—যদিও সব পরীক্ষামূলক ফলাফলে তেমনটি দেখা যায় না।’ এই মন্তব্যের জেরে নিউইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলরের পদ হারান তিনি।
২০১৯ সালে ওয়াটসন পুনরায় একই ধরনের মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি আরও একবার বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যোগসূত্র টেনেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, ল্যাবরেটরি তাঁর চ্যান্সেলর ইমেরিটাসসহ সমস্ত সম্মানসূচক পদ কেড়ে নেয়। ল্যাবরেটরি সেই সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘ড. ওয়াটসনের বক্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞানের দ্বারা অসমর্থিত।’
২০১৪ সালে বৈজ্ঞানিক মহলে একঘরে হওয়ার অনুভূতির কথা বলে ওয়াটসন তাঁর নোবেল পদকটি ৪৮ লাখ ডলারে (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা) নিলামে বিক্রি করে দেন। যদিও পদকটি ক্রয় করা এক রুশ বিলিয়নিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি আবার তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯২৮ সালের এপ্রিলে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন জেমস ওয়াটসন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য স্কলারশিপ পান। ডিএনএ নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি কেমব্রিজে যান, যেখানে ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ডিএনএর গঠন আবিষ্কারের পর তিনি হার্ভার্ডে জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নেন। এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করার কৃতিত্ব তাঁর।

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
১৪ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
১ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৪ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, গেরমোঁপ্রে ছোটবেলা থেকেই বরফযুগের প্রাণীদের নিয়ে মুগ্ধ ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসে কাজ করার সময় গ্রামের একটি গুহা থেকে পাওয়া প্রাগৈতিহাসিক কিছু প্রাণীর হাড় পরীক্ষা করছিলেন।
এই কাজ করতে গিয়ে একটি মাথার খুলির দিকে মনোযোগী হন গেরমোঁপ্রে। দীর্ঘদিন ধরে খুলিটিকে বরফযুগের কোনো নেকড়ের বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গেরমোঁপ্রে বুঝতে পারেন—এটির নাক বা মুখের অংশটি ছোট ও চওড়া এবং এগুলো গৃহপালিত প্রাণীর বৈশিষ্ট্য।
পরে রেডিওকার্বন পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই খুলির বয়স প্রায় ৩৫ হাজার বছর। আর বৈশিষ্টগুলোই বলে দিচ্ছে, এটি সেই সময়ের কোনো নেকড়ে নয়, বরং মানুষের সান্নিধ্যে থাকা প্রাচীন কোনো কুকুর হতে পারে।
গেরমোঁপ্রে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কেউ বিশ্বাস করবে না।’ তবে তাঁর এই গবেষণা প্রকাশের পর থেকে বিজ্ঞানমহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি আসলে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি নেকড়ের মাথার খুলি। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি সত্যিই গৃহপালিত কুকুরের সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শন।
গেরমোঁপ্রে মনে করেন, এটি এমন এক যুগের চিহ্ন, যখন মানুষ প্রথমবারের মতো প্রাণীদের সঙ্গে সহাবস্থান শুরু করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, কুকুর গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া মানুষের উদ্যোগেই ঘটেছিল। প্রাচীন মানুষেরা নেকড়ে শাবক লালন করত, আক্রমণাত্মকদের বেছে হত্যা করত আর শান্তগুলোকে নিজেদের সঙ্গী বানাত। এভাবেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় প্যালিওলিথিক কুকুর।
বরফযুগের বেলজিয়াম ছিল খোলা তৃণভূমি—চারপাশে ম্যামথ, ঘোড়া, রেইনডিয়ার আর বন্য সিংহ-ভালুকের ভিড়। এমন বিপজ্জনক পৃথিবীতে কুকুর ছিল মানুষের সহচর, রক্ষক ও পথপ্রদর্শক।
গেরমোঁপ্রের মতে, এই প্রাচীন খুলি শুধু একটি প্রাণীর নয়, মানবসভ্যতার প্রথম বন্ধুত্বের প্রতীকও বটে—যখন মানুষ আর কুকুর একে অন্যের ভরসা হয়ে উঠেছিল বরফে ঢাকা নীরব পৃথিবীর প্রান্তরে।

বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, গেরমোঁপ্রে ছোটবেলা থেকেই বরফযুগের প্রাণীদের নিয়ে মুগ্ধ ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসে কাজ করার সময় গ্রামের একটি গুহা থেকে পাওয়া প্রাগৈতিহাসিক কিছু প্রাণীর হাড় পরীক্ষা করছিলেন।
এই কাজ করতে গিয়ে একটি মাথার খুলির দিকে মনোযোগী হন গেরমোঁপ্রে। দীর্ঘদিন ধরে খুলিটিকে বরফযুগের কোনো নেকড়ের বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গেরমোঁপ্রে বুঝতে পারেন—এটির নাক বা মুখের অংশটি ছোট ও চওড়া এবং এগুলো গৃহপালিত প্রাণীর বৈশিষ্ট্য।
পরে রেডিওকার্বন পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই খুলির বয়স প্রায় ৩৫ হাজার বছর। আর বৈশিষ্টগুলোই বলে দিচ্ছে, এটি সেই সময়ের কোনো নেকড়ে নয়, বরং মানুষের সান্নিধ্যে থাকা প্রাচীন কোনো কুকুর হতে পারে।
গেরমোঁপ্রে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কেউ বিশ্বাস করবে না।’ তবে তাঁর এই গবেষণা প্রকাশের পর থেকে বিজ্ঞানমহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি আসলে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি নেকড়ের মাথার খুলি। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি সত্যিই গৃহপালিত কুকুরের সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শন।
গেরমোঁপ্রে মনে করেন, এটি এমন এক যুগের চিহ্ন, যখন মানুষ প্রথমবারের মতো প্রাণীদের সঙ্গে সহাবস্থান শুরু করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, কুকুর গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া মানুষের উদ্যোগেই ঘটেছিল। প্রাচীন মানুষেরা নেকড়ে শাবক লালন করত, আক্রমণাত্মকদের বেছে হত্যা করত আর শান্তগুলোকে নিজেদের সঙ্গী বানাত। এভাবেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় প্যালিওলিথিক কুকুর।
বরফযুগের বেলজিয়াম ছিল খোলা তৃণভূমি—চারপাশে ম্যামথ, ঘোড়া, রেইনডিয়ার আর বন্য সিংহ-ভালুকের ভিড়। এমন বিপজ্জনক পৃথিবীতে কুকুর ছিল মানুষের সহচর, রক্ষক ও পথপ্রদর্শক।
গেরমোঁপ্রের মতে, এই প্রাচীন খুলি শুধু একটি প্রাণীর নয়, মানবসভ্যতার প্রথম বন্ধুত্বের প্রতীকও বটে—যখন মানুষ আর কুকুর একে অন্যের ভরসা হয়ে উঠেছিল বরফে ঢাকা নীরব পৃথিবীর প্রান্তরে।

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
১৪ দিন আগে
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
১৯ ঘণ্টা আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৪ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ওভেন হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।
স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ওভেন ব্যবহার করে নভোচারীরা ২৮ মিনিটে রোস্টেড চিকেন উইংস রান্না করতে সক্ষম হন। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় তাপ সমভাবে ছড়ায় না বলে মহাকাশে রান্না করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওভেনটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি তিয়ানগং স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো চাপ সৃষ্টি না করে এবং ধোঁয়াবিহীন ও স্থিতিশীল তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি একটি গ্রিল কেস-এ চিকেন উইংস নিয়ে স্পেস স্টেশনের দেয়ালের একটি ছোট কেবিন আকৃতির অংশে স্থাপন করছেন।
অ্যারোস্পেস নলেজ সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন ওভেনের ভেতর বাতাস ঘুরে তাপ সঞ্চালন ঘটায়, মহাকাশে তা হয় না। কারণ সেখানে কনভেকশন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত। তাই প্রকৌশলীদের এমন একটি বিশেষ পদ্ধতি বের করতে হয়েছে যাতে খাবার সমভাবে গরম হয় এবং রান্নার ধোঁয়াও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নভোচারীদের সুরক্ষাও নিশ্চিত থাকে।’
ওভেনটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রাখা হয়েছে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৯০ ডিগ্রিতে। এর ফলে নভোচারীরা প্রসেসড ফুড গরম করার পাশাপাশি খাবার রান্নাও করতে পারছেন।
এর আগে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ প্রথমবারের মতো মহাকাশে খাবার বেক করার একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ন্যানোরেকস ও জিরো জি কিচেন যৌথভাবে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ ওভেন ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা চালায়। তখন পাঁচটি চকলেট চিপ কুকি বেক করা হয়। এটি ছিল মহাকাশে প্রথমবারের মতো কোনো খাবার বেক করার ঘটনা। পরবর্তীতে স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে এর মধ্যে তিনটি কুকি পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছান শেনঝো-২১ মিশনের তিন নভোচারী। তাঁরা সেখানে প্রায় ছয় মাসের জন্য অবস্থান করবেন। শেনঝো-২০ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাঁরা। শেনঝো-২০ এর সদস্যরা গত এপ্রিল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ওভেন হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।
স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ওভেন ব্যবহার করে নভোচারীরা ২৮ মিনিটে রোস্টেড চিকেন উইংস রান্না করতে সক্ষম হন। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় তাপ সমভাবে ছড়ায় না বলে মহাকাশে রান্না করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওভেনটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি তিয়ানগং স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো চাপ সৃষ্টি না করে এবং ধোঁয়াবিহীন ও স্থিতিশীল তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি একটি গ্রিল কেস-এ চিকেন উইংস নিয়ে স্পেস স্টেশনের দেয়ালের একটি ছোট কেবিন আকৃতির অংশে স্থাপন করছেন।
অ্যারোস্পেস নলেজ সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন ওভেনের ভেতর বাতাস ঘুরে তাপ সঞ্চালন ঘটায়, মহাকাশে তা হয় না। কারণ সেখানে কনভেকশন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত। তাই প্রকৌশলীদের এমন একটি বিশেষ পদ্ধতি বের করতে হয়েছে যাতে খাবার সমভাবে গরম হয় এবং রান্নার ধোঁয়াও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নভোচারীদের সুরক্ষাও নিশ্চিত থাকে।’
ওভেনটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রাখা হয়েছে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৯০ ডিগ্রিতে। এর ফলে নভোচারীরা প্রসেসড ফুড গরম করার পাশাপাশি খাবার রান্নাও করতে পারছেন।
এর আগে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ প্রথমবারের মতো মহাকাশে খাবার বেক করার একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ন্যানোরেকস ও জিরো জি কিচেন যৌথভাবে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ ওভেন ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা চালায়। তখন পাঁচটি চকলেট চিপ কুকি বেক করা হয়। এটি ছিল মহাকাশে প্রথমবারের মতো কোনো খাবার বেক করার ঘটনা। পরবর্তীতে স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে এর মধ্যে তিনটি কুকি পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছান শেনঝো-২১ মিশনের তিন নভোচারী। তাঁরা সেখানে প্রায় ছয় মাসের জন্য অবস্থান করবেন। শেনঝো-২০ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাঁরা। শেনঝো-২০ এর সদস্যরা গত এপ্রিল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
১৪ দিন আগে
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
১৯ ঘণ্টা আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
১ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শনি গ্রহের বৃহত্তম এবং রহস্যময় উপগ্রহ টাইটান। চরম শীতল পরিবেশের এই উপগ্রহ রসায়ন শাস্ত্রের এক অতি মৌলিক নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব বস্তু সাধারণত একে অপরের সঙ্গে মেশে না, যেমন পৃথিবীতে তেল ও পানি—টাইটানের তীব্র ঠান্ডায় (মাইনাস ১৮৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) দুটো একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারে।
সুইডেনের চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং নাসার বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন চালমার্সের রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মার্টিন রাম।
সাধারণত পৃথিবীতে পোলার এবং নন-পোলার অণুগুলো একে অপরের সঙ্গে মেশে না। এটি ‘লাইক ডিসলভস লাইক’ নীতি নামে পরিচিত। পানির মতো পোলার অণুগুলোতে আধানের বণ্টন অসম থাকে, আর তেলের মতো নন-পোলার অণুগুলোতে আধান সুষম থাকে। এই ভিন্নতার কারণেই এরা একে অপরকে বিকর্ষণ করে এবং আলাদা স্তর তৈরি করে।
পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে দেখানো হয়েছে, টাইটানের চরম শীতল পরিস্থিতি এই নিয়মকে উল্টে দেয়। গবেষকেরা ল্যাবরেটরিতে টাইটানের পরিবেশ তৈরি করে পরীক্ষা করেন এবং দেখেন যে পোলার হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং নন-পোলার হাইড্রোকার্বন (যেমন মিথেন ও ইথেন) কঠিন রূপে একসঙ্গে ক্রিস্টালাইজড (স্ফটিক) হতে পারে।
অধ্যাপক রাম জানান, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ক্রিস্টালগুলোর মধ্যে আন্তঃআণবিক শক্তি অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই শক্তির কারণেই নন-পোলার অণুগুলো ক্রিস্টাল কাঠামোর ভেতরে প্রবেশ করে একসঙ্গে থাকতে পারে। এই ঘটনা পৃথিবীতে প্রায় অসম্ভব।
অধ্যাপক রাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার টাইটানের ভূতত্ত্ব এবং এর অদ্ভুত সব ল্যান্ডস্কেপ—যেমন হ্রদ, সমুদ্র এবং বালিয়াড়ি—বোঝার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে।’
তিনি আরও মন্তব্য করেন, টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে। হাইড্রোজেন সায়ানাইডের এই ভূমিকা প্রাণ সৃষ্টির মৌলিক উপাদান, যেমন প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এবং জেনেটিক কোডের জন্য প্রয়োজনীয় নিউক্লিওবেস অজৈবিকভাবে তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করতে পারে।

শনি গ্রহের বৃহত্তম এবং রহস্যময় উপগ্রহ টাইটান। চরম শীতল পরিবেশের এই উপগ্রহ রসায়ন শাস্ত্রের এক অতি মৌলিক নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব বস্তু সাধারণত একে অপরের সঙ্গে মেশে না, যেমন পৃথিবীতে তেল ও পানি—টাইটানের তীব্র ঠান্ডায় (মাইনাস ১৮৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) দুটো একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারে।
সুইডেনের চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং নাসার বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন চালমার্সের রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মার্টিন রাম।
সাধারণত পৃথিবীতে পোলার এবং নন-পোলার অণুগুলো একে অপরের সঙ্গে মেশে না। এটি ‘লাইক ডিসলভস লাইক’ নীতি নামে পরিচিত। পানির মতো পোলার অণুগুলোতে আধানের বণ্টন অসম থাকে, আর তেলের মতো নন-পোলার অণুগুলোতে আধান সুষম থাকে। এই ভিন্নতার কারণেই এরা একে অপরকে বিকর্ষণ করে এবং আলাদা স্তর তৈরি করে।
পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে দেখানো হয়েছে, টাইটানের চরম শীতল পরিস্থিতি এই নিয়মকে উল্টে দেয়। গবেষকেরা ল্যাবরেটরিতে টাইটানের পরিবেশ তৈরি করে পরীক্ষা করেন এবং দেখেন যে পোলার হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং নন-পোলার হাইড্রোকার্বন (যেমন মিথেন ও ইথেন) কঠিন রূপে একসঙ্গে ক্রিস্টালাইজড (স্ফটিক) হতে পারে।
অধ্যাপক রাম জানান, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ক্রিস্টালগুলোর মধ্যে আন্তঃআণবিক শক্তি অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই শক্তির কারণেই নন-পোলার অণুগুলো ক্রিস্টাল কাঠামোর ভেতরে প্রবেশ করে একসঙ্গে থাকতে পারে। এই ঘটনা পৃথিবীতে প্রায় অসম্ভব।
অধ্যাপক রাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার টাইটানের ভূতত্ত্ব এবং এর অদ্ভুত সব ল্যান্ডস্কেপ—যেমন হ্রদ, সমুদ্র এবং বালিয়াড়ি—বোঝার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে।’
তিনি আরও মন্তব্য করেন, টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে। হাইড্রোজেন সায়ানাইডের এই ভূমিকা প্রাণ সৃষ্টির মৌলিক উপাদান, যেমন প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এবং জেনেটিক কোডের জন্য প্রয়োজনীয় নিউক্লিওবেস অজৈবিকভাবে তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করতে পারে।

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
১৪ দিন আগে
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
১৯ ঘণ্টা আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
১ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৪ দিন আগে