Ajker Patrika

সৈয়দপুরে শ্রমের হাটে কাজের জন্য হাহাকার

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২২, ১৫: ৪৪
সৈয়দপুরে শ্রমের হাটে কাজের জন্য হাহাকার

‘মোক কামোত নিয়া যান স্যার, মোক নিয়া যান স্যার। ঘরোত বুড়া মায়ের ওষুধ কিনির টাকা নাই। বাড়িত বউ ও ছোট তিনখান ব্যাটাবেটি। দুদিন থাকি কোনো কাম পাও নাই। এ দুদিন দুবেলা কোনোমতে আলুভর্তা দিয়া ভাত খাছি। বাড়ির গোরতকার এক মুদি দোকান থাকি বাকিত চাউল আর আলু কিনি আনছো। আইজ কাম না পাইলে চুলা জ্বলিবে না।’

নীলফামারীর সৈয়দপুরে শ্রমের হাটে শ্রমিক নিতে আসা এক গৃহস্থকে কথাগুলো বলছিলেন শহরের গোলাহাট এলাকার দিনমজুর ইলিয়াস হোসেন (৪৫)। কাজের সন্ধানে থাকা ইলিয়াস শুধু একা নন, তাঁর মতো শত শত শ্রমজীবী মানুষ কাজের সন্ধানে প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকেই সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শ্রমের হাটে জড়ো হন। তবে কাজের আশায় সকাল থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও অনেকের মিলছে না কর্মের সুযোগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের স্মৃতি অম্লান চত্বরে, শেরেবাংলা সড়কের চৌধুরী টাওয়ার ও স্টেশনের সামনে বসে শ্রমের হাট। শহর ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকার শ্রমজীবী মানুষ দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজের আশায় এসব স্থানে ভিড় করেন। এখানে আসার আগেও তাঁরা জানেন না কাজ মিলবে কি না। ইট ভাঙা, নির্মাণকাজ, রাজমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রির সহকারী, টাইলস মিস্ত্রি থেকে শুরু করে এমন কোনো কাজ নেই, যা তাঁরা করেন না।

এখন কাজ কম থাকায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিতে শ্রম বিক্রি করছেন হাটে আসা শ্রমিকেরা। প্রতিদিন এসব হাটে অন্তত ১০০ থেকে ১৫০ জন শ্রমিক আসেন। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ জন কাজ পেলেও বাকিরা ফিরে যান।

গতকাল বুধবার চৌধুরী টাওয়ারের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, পূর্বাকাশে তখনো সূর্যের আলোর দেখা নেই। কিন্তু কাজ করার উপকরণ নিয়ে কাজের সন্ধানে জড়ো হচ্ছেন মানুষ। রঙের খালি কৌটার ওপর বসে নিয়োগকারী ঠিকাদারের অপেক্ষা করছিলেন খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া থেকে আসা রংমিস্ত্রি হাসান আলী। তিনি বলেন, আগে কাজের অভাব ছিল না। কিন্তু করোনার পর থেকেই একদিন আছে তো অন্যদিন কাজ নেই। কাজ না থাকলে একমুঠো চাল কেনার উপায় থাকে না।’

দিনমজুর সরবরাহকারী ঠিকাদার মিজানুর রহমান জানান, এখানকার অধিকাংশ শ্রমিকই নির্মাণকাজ করেন। কিন্তু নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আগের মতো আর বহুতল ভবন কিংবা বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে না। কম টাকা মজুরিতেও কাজ নেই। ফলে অনেক কষ্টে কাটছে দিনমজুরদের জীবন।

সৈয়দপুর সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান জিকরুল হক বলেন, একদিকে কাজের অভাব, অন্যদিকে পরিবারের চাহিদা। এই সব বিষয় সরকার ও সমাজের দায়িত্বশীল মানুষের গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা ও এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত কাজ করা উচিত। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব

মেসিকে ১৫ কোটি টাকার ঘড়ি উপহার দিলেন আম্বানি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ