Ajker Patrika

দলগুলোর মতানৈক্য: মাঠে গড়াচ্ছে রাজনীতি

  • পিআর পদ্ধতি, জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ কিছু বিষয়ে আলোচনায় ঐকমত্য নেই।
  • অভিন্ন পাঁচ দাবি আদায়ে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফতে ইসলামীর।
  • পিআর ছাড়া বাকি চার দাবিতে কর্মসূচি দেবে এনসিপি, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদও।
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৫
দলগুলোর মতানৈক্য: মাঠে গড়াচ্ছে রাজনীতি

দীর্ঘদিন আলোচনার পরও জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে একমত হতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপি জুলাই সনদের সাংবিধানিক বিষয়গুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদের মাধ্যমে সমাধানের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দল জুলাই সনদের আইনি রূপ দিয়ে তার ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচন চায়। এ ছাড়া সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে মতানৈক্য কাটেনি দলগুলোর। এ অবস্থায় দাবি আদায়ে তিন দিনের কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াতসহ তিনটি ইসলামি দল। এর মধ্য দিয়ে আলোচনার টেবিল থেকে রাজপথে গড়াচ্ছে রাজনীতি, বাড়ছে উদ্বেগ ও শঙ্কা।

দলগুলোর মাঠের কর্মসূচির কারণে দেশের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, এখন বিএনপি যদি পাল্টা কর্মসূচি দেয়, তাহলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আবার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। দেখা দিতে পারে সংঘাত।

রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে আসছে। প্রথম ধাপে দলগুলোর সঙ্গে আলাদা করে বসেছিল কমিশন। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ৩০টি দল ও জোট নিয়ে ২৩ দিন সংলাপ হয়। দুই ধাপের সংলাপে ৮৪টি বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়, যার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করেছে কমিশন। কিন্তু বাস্তবায়ন পদ্ধতি ঠিক না হওয়ায় ঝুলে রয়েছে সনদে স্বাক্ষর। বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক একাধিক বৈঠক হলেও সমাধান আসেনি। এ অবস্থায় গতকাল সোমবার জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন। অভিন্ন এই পাঁচ দাবির সঙ্গে আরও একটি দাবি যোগ করে যুগপৎ কর্মসূচি দিয়েছে খেলাফত মজলিস। নেজামে ইসলামীও একই দাবিতে কর্মসূচি দেবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া পিআর বাদে বাকি চার দাবিতে এনসিপি, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ পৃথক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামবে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আনুষ্ঠানিক আলোচনার বাইরেও সরকার ও কমিশনের পক্ষ থেকে কয়েকবার অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া দলগুলো নিজেদের মধ্যেও কয়েকবার আলোচনায় বসেছিল। কিন্তু জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে একমত হতে পারেনি একটি দলও। এ অবস্থায় নিজেদের মতের পক্ষে দাবি আদায়ে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচিতে যাচ্ছে দলগুলো।

দাবি আদায়ে দলগুলোর রাজপথের কর্মসূচিকে রাজনৈতিক কৌশল বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, দাবি-দাওয়াগুলো নিয়ে দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে কথা বলছে, সাধারণ মানুষ কীভাবে গ্রহণ করছে, সেটা জানার জন্য এখন কর্মসূচি দিচ্ছে তারা। এটা দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। যার মাধ্যমে তাদের পক্ষের যুক্তিকে আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াও একটি লক্ষ্য হতে পারে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির কথা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের কাছে বারবার বলেছি; কিন্তু সমাধান হচ্ছে না। তাই আমরা বলছি, আন্দোলনের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, স্বাভাবিক পদ্ধতিতে দাবি আদায় না হলে তো আন্দোলনের পথেই যেতে হবে। তাই আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছি। এর মাধ্যমে আমাদের দাবি-দাওয়াগুলো জনগণকে জানাব।’

ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘আমরা সংস্কার দেখছি না। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের কার্যকর কোনো অগ্রগতি দেখছি না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচার দেখছি না। জাতীয় পার্টিসহ আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলীয় জোটের বিচার ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ দেখছি না। এসব দাবি আদায়ের পাশাপাশি পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরা রাজপথে কর্মসূচি দিয়েছি।’

এনসিপি পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পক্ষে নয়, তারা উচ্চকক্ষ পিআর পদ্ধতিতে চায়। যে কারণে তারা যুগপৎ আন্দোলনে না গিয়ে বাকি চারটি প্রস্তাব বাস্তবায়নের দাবিতে রাজপথে পৃথক কর্মসূচি দেবে। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো কর্মসূচি দেব। জামায়াত বা ইসলামী আন্দোলন যেসব দাবিতে কর্মসূচি দিয়েছে, তার পিআর পদ্ধতি ছাড়া সব বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত আছি। তবে আমরা যুগপৎ আন্দোলনে যাচ্ছি না। কিন্তু বাকি চারটি দাবি আদায়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার ভিত্তিতে আমরা কর্মসূচি দেব।’

তিনটি দলের রাজপথের কর্মসূচিকে রাজনীতির জন্য নেতিবাচক সংবাদ বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, এখন বিএনপি পাল্টা কর্মসূচি দিলে রাজনীতিতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। জুলাই সনদের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা। কারও কারও মতে, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশে জুলাই সনদ অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবায়ন করলেও তার স্বীকৃতি দিতে হবে জাতীয় সংসদকে। সে সংসদে তো বিএনপি, জামায়াতসহ সব দল থাকবে। সে ক্ষেত্রে জুলাই সনদের বিষয়ে আলোচনার টেবিলে সমাধানের তাগিদ দেন তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘দাবি আদায়ে রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচি পালন করতেই পারে। কিন্তু সেটা যেন হরতাল বা ধর্মঘট না হয়। আমি মনে করি, বিষয়টি সমাধানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিকে নিয়ে একসঙ্গে বসতে পারেন। কথা বললে এটার সমাধান হবেই। একটু সময় লাগলেও সমাধান হবে বলে মনে করি। কারণ এখানে পয়েন্ট অব নো রিটার্নের জায়গা নেই।’

জুলাই সনদকে ঘিরে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী দলগুলোর রাজপথের কর্মসূচিকে দুভাবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন। তাঁর মতে, সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার ঘোষণা দিলে জামায়াত বলেছিল তারা সংস্কারের আগে নির্বাচন চায় না এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। একটা হতে পারে জামায়াত নির্বাচন চাচ্ছে না। কর্মসূচির মাধ্যমে সে ইঙ্গিত দিচ্ছে। আবার অতীতে দেখা গেছে, সরকার নিজের চাওয়া বাস্তবায়নে বিভিন্ন দলকে দিয়ে কখনো মব বা রাজপথে আন্দোলন করিয়ে চাপ সৃষ্টি করে থাকে।

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির দাবিতে জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিতে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বিএনপি। দলীয় ফোরামে আলোচনা ছাড়া এ নিয়ে নেতারা প্রকাশ্য মন্তব্য করতে চান না বলে একাধিক নেতার সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারে। জামায়াত পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে যেসব কর্মসূচি দিয়েছে, তা সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য দিয়েছে বলে মনে করি। তাদের কর্মসূচি দেখেই আমরা এ বিষয়ে মন্তব্য করব।’

তিনটি দলের কর্মসূচির বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন রকমের দাবি-দাওয়া আছে, সেই অনুযায়ী কর্মসূচি দিচ্ছে। কিন্তু কমিশনের কাজের সঙ্গে তারা যেভাবে সহযোগিতা করছে, তা অব্যাহত থেকেছে। আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। আমরা এখন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করছি। তাতে জামায়াত অংশগ্রহণ করছে। তাদের বক্তব্য দিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য অনুযায়ী আরও আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা এক জায়গায় আসতে পারব। ফলে তাদের রাজপথের কর্মসূচিকে আমরা দলীয় কর্মসূচি হিসেবে বিবেচনা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নাহিদ শিক্ষকতা ও পরামর্শ দিয়ে বছরে আয় করেন ১৬ লাখ টাকা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম তাঁর হলফনামায় বর্তমান পেশা হিসেবে পরামর্শক ও আগের পেশা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা উল্লেখ করেছেন। আর তিনি শিক্ষকতা ও পরামর্শ দিয়ে বছরে আয় করেন ১৬ লাখ টাকা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১১ আসনে প্রার্থী হিসেবে হলফনামায় এমন তথ্য দিয়েছেন তিনি।

শিক্ষাগত যোগ্যতায় উল্লেখ করেছেন স্নাতক। তাঁর স্ত্রী ফাতিমাতুজ জোহরা পেশায় গৃহিণী।

অস্থাবর সম্পদে নাহিদ উল্লেখ করেছেন, নগদ অর্থ আছে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর কাছে আছে ২ লাখ টাকা। ব্যাংকে আছে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৩৬৩ টাকা ৫৭ পয়সা। নিজের কাছে অর্জনকালীন পৌনে ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার গয়না আছে। স্ত্রীর কাছে আছে অর্জনকালীন ১০ লাখ টাকা মূল্যের গয়না। এ ছাড়া ১ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক পণ্য আছে এবং আসবাবপত্র আছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার।

আয়কর রিটার্নে নাহিদ ৩২ লাখ ১৬ হাজার ১২২ টাকার সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। আয়কর দিয়েছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ২৭৪ টাকা।

স্থাবর সম্পদে তিনি কোনো কিছু উল্লেখ করেননি। সব ঘরে প্রযোজ্য নয় লিখেছেন। ঋণের তথ্যে তিনি উল্লেখ করেছেন, নির্ভরশীল ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ (স্ত্রী) ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের রামপুরা শাখা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের বাড়ি-গাড়ি নেই, আছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নগদ ও ব্যাংকে জমা আছে ৩১ লাখ ৫৮ হাজার ৪২৮ টাকা। স্ত্রী জুবাইদা রহমানের আছে ৬৬ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৭ টাকা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ ও ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী হিসেবে জমা দেওয়া হলফনামায় অস্থাবর সম্পদের তিনি এমন হিসাব দিয়েছেন।

হলফনামায় পেশা হিসেবে তারেক রহমান রাজনীতি উল্লেখ করেছেন। স্ত্রী জুবাইদা রহমান পেশায় চিকিৎসক। মেয়ে জাইমা জারনাজ রহমান ছাত্রী।

হলফনামা অনুযায়ী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আয়কর রিটার্নে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার ১৮৫ টাকার সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। আর আয়কর দিয়েছেন ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭১৩ টাকা।

দেশে-বিদেশে আয়ের উৎসে দেখিয়েছেন, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও বাণিজ্যিক স্থান নেই। শেয়ার, বন্ড/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে বছরে আয় করেন ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫৩ টাকা।

অস্থাবর সম্পদে তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেছেন, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির অর্জনকালীন সময়ে শেয়ার আছে ৫ লাখ টাকার, কোম্পানির শেয়ার ৪৫ লাখ টাকার, কোম্পানি আছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার।

তারেক রহমানের ব্যাংকে নিজ নামে ৯০ লাখ ২৪ হাজার ৩০৭ টাকার এফডিআর, সঞ্চয়ী আমানত ২০ হাজার ও অন্যান্য আমানত আছে ১ লাখ টাকার। স্ত্রীর নামে আছে ৩৫ লাখ টাকার এফডিআর, সঞ্চয়ী আমানত আছে ১৫ হাজার ২৬০ টাকার।

অর্জনকালীন ২ হাজার ৯৫০ টাকা মূল্যের গয়না ও ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকার আসবাবপত্র আছে।

স্থাবর সম্পদে উল্লেখ করেছেন, নিজের কোনো কৃষিজমি নেই। ২ দশমিক ০১ একর ও ১ দশমিক ৪ শতাংশ অকৃষিজমি আছে; যার অর্জনকালীন মূল্য ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। উপহারের আবাসস্থলের জমি আছে ২ দশমিক ৯ শতাংশ ৷ স্ত্রীর আছে যৌথ মালিকানার ১১১ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি ও ৮০০ বর্গফুট দোতলা ভবন; যার মূল্য অজানা।

তারেক রহমান তাঁর হলফনামায় আরও উল্লেখ করেছেন, তিনি দ্বৈত নাগরিক নন। শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক। বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। ২০০৭ সাল থেকে তাঁর নামে ৭৭টি মামলা করা হয়েছিল, যার কোনোটি থেকে খালাস, কোনোটি প্রত্যাহার, কোনোটি খারিজ, কোনোটি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। বাছাই চলবে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে ২২ জানুয়ারি। প্রচার চালানো যাবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। আর একই সঙ্গে সংসদ ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাসনাতের বছরে আয় সাড়ে ১২ লাখ টাকা, ব্যাংকে ২৬ লাখ টাকার সোনা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর বছরে আয় ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৫৩৯ টাকা। তাঁর পেশা ব্যবসা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হলফনামায় এসব তথ্য উল্লেখ করেন তিনি।

হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ। তিনি উল্লেখ করেছেন স্ত্রী সাবরিনা জাহান নুসরাত পেশায় গৃহিণী। হাম্মাম আব্দুল্লাহ হামজা নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে।

অস্থাবর সম্পদে হাসনাত উল্লেখ করেছেন, নগদ আছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকে আছে ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা। গয়না আছে ২৬ লাখ টাকার। ইলেকট্রনিক পণ্য আছে ৬৫ হাজার টাকার। আসবাব আছে ১ লাখ টাকার।

স্থাবর সম্পদে তিনি কোনো কিছু উল্লেখ করেননি। লিখেছেন, ‘প্রযোজ্য নয়’।

আয়কর রিটার্নে তিনি ৩১ লাখ ৬৭ হাজার ৬১৯ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। আয়কর দিয়েছেন ১ লাখ ৫ হাজার ৫৩১ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার প্রয়াণে ছায়ানট ও উদীচীর শোক প্রকাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
খালেদা জিয়ার প্রয়াণে ছায়ানট ও উদীচীর শোক প্রকাশ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছে দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

এক বিজ্ঞপ্তিতে ছায়ানট জানায়, দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য সংগঠনটি কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁকে স্মরণ করছে। শোকবার্তায় ছায়ানটের সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণ জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

এদিকে, এক পৃথক শোকবার্তায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি বর্ণিল অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছে।

শোকবার্তায় উদীচীর নেতারা উল্লেখ করেন, ১৯৮০–এর দশকে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া অনন্য ভূমিকা পালন করেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর তিনি বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সক্রিয় হন। ধারাবাহিক গণ-আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী এরশাদের পতনের পর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার শোকসন্তপ্ত পরিবার ও তাঁর রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত