Ajker Patrika

আরপিওর ২০ ধারায় সংশোধনে আপত্তি জানিয়ে ইসিতে বিএনপির চিঠি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আরপিওর ২০ ধারায় সংশোধনে আপত্তি জানিয়ে ইসিতে বিএনপির চিঠি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ (আরপিও)-এর ২০ ধারায় সংশোধনে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। জোটবদ্ধ দলগুলোর নিজের ইচ্ছেমতো জোটের প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ চায় দলটি। আজ রোববার এ মর্মে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।

আজ আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকও করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিল। বৈঠকে প্রতিনিধি দলে ইসির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া উপস্থিত ছিলেন। ‎

বৈঠক শেষে ইসমাইল জবিউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন ইতিপূর্বে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের বিবেচনায় জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং নিজেদের দলের বা জোটের অন্য কোনো দলের নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, যা তাদের রাজনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক অধিকার। এর আগে এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো জটিলতা বা কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়নি, সুন্দরভাবে নির্বাচন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত এই প্রক্রিয়া পরিবর্তন বা সংশোধন করার জন্য কোনো দাবি ছিল না। বরং এই সরকারের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিমত চাওয়া হলে বিএনপি আরপিওর বিভিন্ন অনুচ্ছেদে সংশোধন প্রস্তাবে মতপ্রকাশ করতে গিয়ে বলেছে— আরপিওর ২০ নম্বর অনুচ্ছেদ অর্থাৎ দল বা জোটের প্রতীক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরিবর্তনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে না। যথাসময়ে তা ঐকমত্য কমিশন ও সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের উচ্চপর্যায়ে উপদেষ্টা লেভেলে বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে আলোচনাকালে আরপিওর ২০ নম্বর অনুচ্ছেদে কোনো পরিবর্তন আনা হবে না—এই মর্মে বিএনপিকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে পত্রিকায় বিপরীত সংবাদ অর্থাৎ জোট করলেও ভোট করতে হবে নিজের দলীয় প্রতীকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এই সংশোধনীর সঙ্গে একমত নয় এবং এই সংশোধনী বা পরিবর্তন বিএনপির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’

জোট গঠনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনে জয়ী হওয়া— এমন মন্তব্য করে ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, ‘জোটবদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দ চাওয়ার অধিকার আছে। এবং এযাবৎ এ প্রক্রিয়াতেই জোটবদ্ধ দলগুলোর চাহিদা অনুসারে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং এতে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয় না। এই বহুল প্রচলিত প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতি পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজনীয়তা কেন দেখা দিয়েছে তা আমাদের বোধগম্য না। তা ছাড়া নির্বাচনে প্রধান স্টেকগুলো অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রাক পরামর্শ ছাড়াই এমন একটা মেজর সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনভিপ্রেত এবং আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে বিএনপি মনে করে। জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করা আরপিওতে বৈধ এবং সেটাই দীর্ঘদিনের অনুসৃত রীতি বা পদ্ধতি। জোটবদ্ধ হয়ে রাজনীতি করার কিংবা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের অধিকার থাকলে জোটবদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছা অনুযায়ী নিজ দল কিংবা জোটবদ্ধ যে কোনো দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার অধিকার তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। সে অধিকার ক্ষুণ্ন করার কোনো সুযোগ আছে বলে বিএনপি মনে করে না। তাই আমরা আরপিওতে ২০ অনুচ্ছেদের পূর্বের বিধান বহাল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ব্যবহার করার জন্য নির্বাচন কমিশনতে অনুরোধ করেছি এবং আজকে এ ধরনের সিমিলার লেটার আমাদের উপদেষ্টা পর্যায়ে সরকারের আইন উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। আমরা আশা করি, সরকারের গুড সেন্স উইল প্রিভেইল এবং আগের মতোই ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন হবে না এবং জোটবদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলো হয় নিজের দল অথবা যেকোনো একটা দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্ট্যান্ডিং সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে আইন উপদেষ্টা মহোদয়ের একটা জেন্টেলম্যানস অ্যাগ্রিমেন্টের কথা উনি বলেছেন। সেটা আমি আজকেও বলেছি। সেই মর্মে আজকেও আবার এই কথাটা ওনাকে জানিয়ে রিকোয়েস্ট করা হচ্ছে। তো যেটা অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে আমরা আশা করছি সেই জেন্টেল অ্যাগ্রিমেন্ট অনুসারে কাজ হবে। সে জন্য ওইটা নিয়ে আর নতুন করে কোনো কথা বলা প্রয়োজন ছিল না বলে আমরা মনে করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক রাজনৈতিক দল বা নিজের দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু যখন জোটবদ্ধ হয়, তখন সে তার নিজের প্রতীক নিয়ে করবে না জোটের অন্য কোনো দলের প্রতীকে করবে সেটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারও তার। সেভাবেই নির্বাচন হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, সাক্ষাৎকার ২১ ডিসেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ফাইল ছবি
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ফাইল ছবি

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে যাচ্ছে নতুন নির্বাচনী জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট—এনডিএফ। আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির (জাপা) একাংশ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বাধীন এই ফ্রন্টের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১ ডিসেম্বর।

আজ বুধবার জাতীয় পার্টির (একাংশ) দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ও জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ফ্রন্টের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী, তাঁদের আগামী ২১ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় বাড়ি-১২১ /ডি, রোড-৪৪, গুলশান অ্যাভিনিউ, ঢাকার ঠিকানায় জীবনবৃত্তান্ত, অন্যান্য কাগজপত্রসহ উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে ফ্রন্টের অন্তর্ভুক্ত সব রাজনৈতিক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকা এক অনুষ্ঠানে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সাবেক দুই মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের জাতীয় পার্টি ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জেপিসহ মোট ১৮টি দল থাকছে এই জোটে। এই ১৮টি দলের মধ্যে ৬টির নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন রয়েছে।

নতুন জোটের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে। সভাপতি হয়েছেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। জোটের প্রধান মুখপাত্র হয়েছেন জাতীয় পার্টির (একাংশ) মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।

এ ছাড়া ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে গড়া নতুন দল জনতা পার্টি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ারকে জোটের প্রধান সমন্বয়ক করা হয়েছে।

এনডিএফের শরিক দলগুলো হলো—জাতীয় পার্টির (জাপা) আনিসুল ইসলামী নেতৃত্বাধীন অংশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (জেপি), জনতা পার্টি বাংলাদেশ, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (মহসিন রশিদ), জাতীয় ইসলামিক মহাজোট, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টি, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টি, অ্যালায়েন্স ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় সাংস্কৃতিক জোট, জাসদ (শাহজাহান সিরাজ), ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি ও গণ আন্দোলন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘২৫ তারিখ ইনশা আল্লাহ দেশে চলে যাচ্ছি’, নিজেই বললেন তারেক রহমান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০২
যুক্তরাজ্য বিএনপির আলোচনায় সভায় বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ছবি: স্ক্রিনশট
যুক্তরাজ্য বিএনপির আলোচনায় সভায় বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ছবি: স্ক্রিনশট

২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন—বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবার নিজেই তা জানালেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই তারিখ নিশ্চিত করেন। এর আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর প্রত্যাবর্তনের কথা জানিয়েছিলেন।

যুক্তরাজ্যের লন্ডনের দ্য সিটি প্যাভিলিয়ন হলে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় তারেক রহমান বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে বহুদিন ছিলাম। ১৭ বা প্রায় ১৮ বছর আপনাদের সঙ্গে ছিলাম। বাট, আগামী ২৫ তারিখে ইনশা আল্লাহ আমি দেশে চলে যাচ্ছি।’

তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মিলনায়তনে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা হর্ষধ্বনি দিয়ে ওঠেন।

এ দিকে নিজের বিদায়ের দিন বিমানবন্দরে ভিড় না করার জন্য যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, নেতা-কর্মীরা বিমানবন্দরে ভিড় করলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে।

সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনকে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর একক কৃতিত্ব নয় বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এটি বাংলাদেশের সব মানুষের সম্মিলিত অর্জন।

তারেক রহমান বলেন, দেশের ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবী, নারী, শিশু, গৃহিণীসহ সর্বস্তরের মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসায় স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি এবং দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। তিনি ২০২৪ সালের গণ-আন্দোলনের অর্জনকে বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের ফল হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

আন্দোলনের সফলতা একটি অধ্যায় হলেও বিজয় ধরে রাখা আরও কঠিন বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি সতর্ক করে বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত আছে। ১৯৭১ সালের ষড়যন্ত্রকারীরাই বিভিন্ন সময়ে (১৯৭৫, ১৯৮১, ১৯৯৬) সক্রিয় ছিল এবং আজও তারা সক্রিয়। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের দায়িত্ব হলো, দেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সরকার গঠন করতে সক্ষম হবে। তাঁরা বিজয়ী হলে দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেন এবং জনগণের কাছে তাঁদের জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা থাকবে।

দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও শিল্প খাতের বর্তমান গভীর সংকটের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ভবিষ্যতে বিএনপির সামনে অত্যন্ত বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে। তবে জনগণের সমর্থন ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমেই সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব বলে তিনি আশাবাদী।

তারেক রহমান বলেন, তিনি কোনো স্বপ্নের মধ্যে নেই, তিনি একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মধ্যে আছেন। তিনি জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় একটি সুস্পষ্ট ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা জনগণের সামনে উপস্থাপন করাকে দলের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব বলে মনে করেন।

বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি শিক্ষা খাতে আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাতে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্যভিত্তিক মডেল এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তা, যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা উন্নয়নের অঙ্গীকার করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ছয় মাসের মধ্যেই জনগণ এর সুফল দেখতে পাবে।

আলোচনা সভার আগে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের মাগফিরাত কামনা এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়। যুক্তরাজ্য বিএনপির নবগঠিত আংশিক কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব খসরুজ্জামান খসরুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অন্তর্বর্তী সরকারকে মোদির ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে বিবৃতি জারি করতে হবে: আখতার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪১
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। একই সঙ্গে অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়িত্ব নিয়ে মোদির ‘ইতিহাস বিকৃতি’র বিরুদ্ধে বিবৃতি জারির আহ্বান জানিয়েছেন এই নেতা।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা’ শেষে সমাবেশে আখতার হোসেন এসব কথা বলেন।

সমাবেশে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, ১৬ ডিসেম্বরকে নরেন্দ্র মোদি ভারতের বিজয় দিবস হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের বিজয় দিবসকে, বাংলাদেশের জনযুদ্ধকে, বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রামকে ভারতের বিজয় হিসেবে দেখানোর মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদি দৃশ্যত ইতিহাস বিকৃতি করেছেন। বাংলাদেশের জন্মের সাথে লেগে থাকা ইতিহাসকে বিকৃতির দায়ে নরেন্দ্র মোদিকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে আখতার বলেন, ‘এটা কোনো ছেলেখেলা নয়। বাংলাদেশের বিজয়কে ভারতের বিজয় দেখিয়ে ইতিহাস বিকৃতি করার ছেলেখেলাকে প্রশ্রয় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়িত্ব নিয়ে মোদির ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে বিবৃতি জারি করতে হবে।’

সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এবারের নির্বাচন সংস্কারের নির্বাচন। আপনারা সংস্কারের পক্ষে থাকবেন, বাংলাদেশের পক্ষে থাকবেন।’

এদিন বিকেল ৪টায় রাজধানীর বাংলামোটর এলাকা থেকে ‘আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা’ শুরু হয়। কাঁটাবন মোড়, নীলক্ষেত মোড় ও পলাশীর মোড় হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয় এ পদযাত্রা। এতে দলের সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

এ সময় তাঁরা বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন প্রদর্শন করেন। ‘গণভোটে হ্যাঁ বলি, সংস্কারের সাথে চলি’, ‘মুক্তির মূল সনদ গণভোট-গণভোট’, ‘এক হাদির কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’সহ নানা স্লোগান দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভক্ত করা যাবে না: নাহিদ ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩০
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভক্ত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা’ শেষে এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের নামে যেমন দেশকে বিভাজন করা যাবে না, ইসলামের নামেও দেশকে বিভাজন করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধ এবং ইসলামকে মুখোমুখি দাঁড় করার যে রাজনীতি গত ৫৪ বছর হয়েছে, সে রাজনীতি থেকে আমরা বের হয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব। ইসলাম আমার, মুক্তিযুদ্ধ আমার, জুলাইও আমার। যারা এগুলোকে বিভক্ত করতে চায়, তারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়।’

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নের সুরাহা হয়নি বলে উল্লেখ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখনো আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নের সুরাহা করতে পারিনি। ৫৪ বছর পর এসেও আমরা দেখি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং বিপক্ষের রাজনীতি। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা ভেবেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং বিপক্ষের বিভাজনের রাজনীতির সুরাহা হবে। সে রাজনীতি বাংলাদেশ থেকে দূর হবে। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি, ৫ আগস্টের পর সে রাজনীতি আবারও ফিরে এসেছে। যে রাজনীতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এবং মুজিববাদী বামপন্থীরা বাংলাদেশকে সব সময় বিভাজিত করে রেখেছিল, বাংলাদেশে সব সময় একটা ফ্যাসিবাদ কায়েম করে রেখেছিল।’

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এনসিপির অবস্থান এবং বক্তব্য খুবই পরিষ্কার বলে জানান নাহিদ। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম ভিত্তি। আমরা মনে করি, ১৯৪৭ এবং তার পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশের মানুষ আজাদির জন্য উপনিবেশবাদবিরোধী যে লড়াই শুরু করছিল, তার অন্যতম পরিণতি হচ্ছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম। এই স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছিলাম; কিন্তু আমরা সার্বভৌমত্ব পুরোপুরি অর্জন করতে পারিনি। আমাদের পাশের রাষ্ট্র বারবার এখানে তাঁবেদারি রাষ্ট্র, তাঁবেদারি দেশ কায়েম করতে চেয়েছে।’

সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এবারের নির্বাচন সংস্কারের নির্বাচন। আপনারা সংস্কারের পক্ষে থাকবেন, বাংলাদেশের পক্ষে থাকবেন।

এদিন বিকেল ৪টায় রাজধানীর বাংলামোটর এলাকা থেকে ‘আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা’ শুরু হয়। কাঁটাবন মোড়, নীলক্ষেত মোড় ও পলাশীর মোড় হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয় এই পদযাত্রা। এতে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

এ সময় তাঁরা বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা-সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন প্রদর্শন করেন। ‘গণভোটে হ্যাঁ বলি, সংস্কারের সাথে চলি’, ‘মুক্তির মূল সনদ গণভোট-গণভোট’, ‘এক হাদির কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’সহ নানা স্লোগান দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত