Ajker Patrika

গণবিরোধী বাজেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বিকল্প নেই: বাম গণতান্ত্রিক জোট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ জুন ২০২৪, ২১: ০৫
গণবিরোধী বাজেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বিকল্প নেই: বাম গণতান্ত্রিক জোট

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট সংকটের চক্রে ঘূর্ণমান দিশাহীন বাজেট। অতীতের অর্থনৈতিক সংকটের কারণ চিহ্নিত করে দূর করার কোনো দিকনির্দেশনা এ বাজেটে না থাকায় অর্থনীতি সংকটের চক্রেই ঘুরপাক খেতে থাকবে। সাধারণ মানুষের জন্য এই বাজেট নয়, এটি লুটপাটকারীদের আরও লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছে। গণবিরোধী এই বাজেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বিকল্প নেই। 

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখ্যান করে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন জোটের নেতারা। 

সমাবেশে বাসদ (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, প্রতিবারই বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ থাকে না। কিন্তু লুটপাটের জন্য বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়। এই সরকার জনগণের স্বার্থের বাজেট কখনোই দিতে পারবে না। 

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘এবার গত বছরের চেয়ে বাজেট টাকার অঙ্কে সাড়ে ৪ শতাংশ বেড়েছে। এই অতিরিক্ত টাকাটা আমাদের ট্যাক্সের মাধ্যমেই সরকার নেবে। ঘাটতি যা হবে সেটা তারা ঋণ নেবে। এই ঋণ এবং ঋণের সুদের টাকাও জনগণকেই পরিশোধ করতে হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা আফগানিস্তানের নিচে চলে এসেছি। এখানে মাত্র জিডিপির ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ বরাদ্দ হলো। সরকার শিক্ষাকে সংকুচিত করার সমস্ত আয়োজন নিয়েছে। দেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস কৃষি। কৃষিতেও বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

এই বাজেট জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বড়লোকদের পকেটে ভরার বাজেট উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আর তারা সেই টাকা পাচার করবে দেশের বাইরে। বাজেট এবার এতই স্মার্ট যে আপনার টাকা চুরি হবে, আর আপনি টেরই পাবেন না। আমরা স্মার্ট, ডিজিটাল বাজেট চাই না, আমরা জনগণের কল্যাণের বাজেট চাই।’ 

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এই বাজেট আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধানবিরোধী। সংবিধানে বলা আছে, অনুপার্জিত আয় কোনোভাবে ভোগ করা যাবে না। কিন্তু আমাদের শেখ হাসিনা কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিচ্ছেন। এখন সৎ আয়ের চেয়ে অসৎ আয়ের ক্ষেত্রে কম ট্যাক্স দিতে হবে। এই গণবিরোধী বাজেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বিকল্প নেই।’

সভাপতির বক্তব্যে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘গণবিরোধী এই বাজেট আমাদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সামনেও আমাদের তাই করতে হবে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় কখনোই শ্রমিকশ্রেণির স্বার্থ রক্ষার বাজেট হবে না।’ 

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা শিশু, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনসিপি ছাড়লেন কেন্দ্রীয় নেতা, তারেক রহমানকে সমর্থন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মীর আরশাদুল হক। ছবি: সংগৃহীত
মীর আরশাদুল হক। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে অবশেষে নিজ দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে তাকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। তার এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে সারা দেশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

তারেক রহমানের ফেরার এই বিশেষ দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ছেড়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক। একই সঙ্গে তিনি তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় এনসিপি ব্যর্থ হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

মীর আরশাদুল হক এনসিপির কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদের পাশাপাশি চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যে স্বপ্ন ও সম্ভাবনা দেখে এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলাম, তার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। দল ও বড় অংশের নেতারা ভুল পথে আছেন।’

ফেসবুক পোস্টে আরশাদুল হক লিখেছেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ও জোটের সরকার গঠন করার কোনো বিকল্প নেই। জুলাই অভ্যুত্থান ও পরবর্তী সময়ে তারেক রহমানের বিভিন্ন কার্যক্রম ও বক্তব্য পর্যালোচনা করে আমার মনে হয়েছে, সবাইকে ধারণ করে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা ও সক্ষমতা কেবল তিনিই রাখেন।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশ নিয়ে তারেক রহমানের ‘ক্লিয়ার ভিশন’ এবং ‘স্মার্ট অ্যাপ্রোচ’ তাঁকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে। তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো হুজুগে প্রভাবিত না হয়ে দেশের সামগ্রিক স্বার্থে তারেক রহমানের জনকল্যাণমূলক ভিশন বাস্তবায়নে সমর্থন জানানো উচিত।’

তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন থেকে ফিরে আসার এক বিজয়ের গল্প। দলটির মতে, এটি কেবল একজনের আগমন নয়, বরং নতুন রাজনীতি ও নতুন করে পথচলার এক দৃঢ় সংকল্প। বিমানবন্দরের আশপাশে এবং রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে ভোর থেকেই হাজার হাজার নেতা-কর্মী তাদের প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানাতে সমবেত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঘোড়ার গাড়িতে করে ৩০০ ফুটের দিকে যাত্রা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঘোড়ার গাড়িতে করে ৩০০ ফুটের দিকে যাত্রা। ছবি: আজকের পত্রিকা
তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঘোড়ার গাড়িতে করে ৩০০ ফুটের দিকে যাত্রা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘোড়ার গাড়িতে করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকার ৩০০ ফিটের দিকে যাত্রা করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমাতুল্লাহর নেতৃত্বে প্রায় তিন শতাধিক ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে শাহবাগ-বাংলামোটর হয়ে কারওয়ান বাজার থেকে ৩০০ ফিটের দিকে যাত্রা করেন তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার সাড়ে ১২টার দিকে শাহবাগ থেকে ৩০০ ফিটের দিকে যাত্রা করতে দেখা গেছে।

ঘোড়ার গাড়ি
ঘোড়ার গাড়ি

আবু নাসের রহমাতুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তারেক রহমান দীর্ঘ বছর পরে দেশে ফিরেছেন এ জন্য আমরা সবচেয়ে খুশি আজকের দিনে। আজ বরিশাল থেকে রওনা হয়েছি তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে। ঢাকা থেকে প্রায় তিন শতাধিক রিকশায় করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য যাত্রা করেছি।’

লাল মিয়া নামে একজন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বরিশাল থেকে সোজা ঢাকায় এসেছি। পরে আমরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছি।’ মো. ইব্রাহিম এক বিএনপি কর্মী বলেন, ‘আমরা অনেক খুশি যে তারেক রহমান আজ দেশে এসেছেন। আমরা ৩০০ ফিটের দিকে রওনা হয়েছি।’

মো. জাকির হোসেন নামে অপর এক বিএনপি কর্মী বলেন, ‘তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানাতে বরিশাল থেকে আমরা এসেছি। আবু নাসেরের নেতৃত্বে আমাদের এই যাত্রা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব, তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে সারজিস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ার পথে বাংলাদেশে স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টায় এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান প্রায় দেড় যুগ পর বাংলাদেশে ফিরছেন। স্বৈরাচারের পতন, পরিবর্তিত পরিস্থিতি, নানা উত্থান-পতন, রাজনৈতিক ক্রমধারার এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তিনি আজ বাংলাদেশে আসছেন। আমরা ২৪ এর অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে তাঁকে স্বাগত জানাই।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান বাস্তবতাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক লড়াই, আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াই থেকে শুরু করে আগামীর কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ার পথে বাংলাদেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা কাজ করে যাব, এটাই প্রত্যাশা। স্বাগতম।’

১৭ বছরের নির্বাসন জীবন কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৪৪ মিনিটে বিমান থেকে নামেন তারেক রহমান। এরপর ইমিগ্রেশন পার হয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি। তাঁর পরিবারের সদস্যরাও এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানস্থলে যাবেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালি পায়ে বাগানে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেন তারেক রহমান, হাতে নিলেন মাটি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৯
খালি পায়ে বাগানে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেন তারেক রহমান, হাতে নিলেন মাটি

বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই জুতা খুলে মাটিতে খালি পায়ে মাটি স্পর্শ করেছেন তারেক রহমান। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জের বাইরের বাগানে তিনি খালি পায়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা ১২টা ৩১ মিনিটে জুতা-মোজা খুলে মাটিতে দাঁড়ান তারেক রহমান। এরপর ডান হাতে এক টুকরো মাটি তুলে নেন তিনি। এরপর জুতা পায়ে দিয়ে তাঁর জন্য নির্ধারিত বাসে উঠে পূর্বাচলে স্থাপিত সংবর্ধনা মঞ্চের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত