নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম নেই দলটির অনেক বড় নেতার। মনোনয়নবঞ্চিত এসব নেতা এ নিয়ে মুখ খুলছেন না। তবে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
দলীয় সূত্র বলেছে, মনোনয়নবঞ্চিতদের কর্মী-সমর্থকদের এই ক্ষোভ-বিক্ষোভে বিএনপি কিছুটা চাপে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থীর নাম স্থগিত করা হয়েছে। দলটির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতা বলছেন, মনোনয়নবঞ্চিতদের নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে, পর্যালোচনা হচ্ছে। এটি সম্ভাব্য তালিকা। প্রয়োজনে প্রার্থী বদল হতে পারে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের মধ্যে প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে ২৩৭ আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেন।
সম্ভাব্য এই প্রার্থী তালিকায় হেভিওয়েটদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আসলাম চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জয়নুল আবেদীন, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, হুমায়ুন কবির, সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাইসহ আরও অনেকের নাম নেই।
দলীয় প্রার্থী তালিকায় বাদ পড়া এসব নেতা দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা সমালোচনা করছেন। সোমবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মনোনয়নবঞ্চিতদের কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও পছন্দের নেতা মনোনীত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বঞ্চিত নেতারা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলছেন না। তবে মনঃক্ষুণ্ন হওয়ার বিষয়টি ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন। কারও কারও কথায় হতাশাও প্রকাশ পেয়েছে।
বঞ্চিত নেতারা বলছেন, প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকার কারণ তাঁরা জানেন না। বুঝতেও পারছেন না। এক নেতা অভিমানের সুরে বলেন, ‘কিছু জানি না। এসব নিয়ে কথা বলতেও ইচ্ছা করছে না।’
বিগত একাদশ সংসদে বিএনপি থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ছিলেন রুমিন ফারহানা। সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, প্রকাশিত তালিকাটি প্রাথমিক পর্যায়ের। সময়ের সঙ্গে তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে। কেউ বাদ পড়তে পারেন, আবার নতুন কেউ যুক্তও হতে পারেন। তাই এই তালিকাকে চূড়ান্ত হিসেবে দেখা উচিত নয়।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ভূমিকা রাখা একাধিক নেতা বলছেন, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেভিওয়েট নেতা মনোনয়নের প্রাথমিক তালিকায় জায়গা পাননি। এসব নেতার বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক রয়েছেন। কেউ কেউ নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরেও সব জায়গায় সমান জনপ্রিয় ও সুপরিচিত মুখ। তাঁদের নাম না থাকায় তীব্র সমালোচনা শুরু হওয়ায় দল চাপ অনুভব করছে। এ অবস্থায় তাঁদের নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে, পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
বাদ পড়া হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে কারও এখনো মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সে জন্যই তো সম্ভাব্য (ঘোষিত তালিকা) বলা হয়েছে। যদি প্রয়োজন মনে করে, স্থায়ী কমিটি আবার অদল-বদল করতে পারে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে চূড়ান্ত করা হবে।
এদিকে ২৩৭ আসনের ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থীর নাম গতকাল স্থগিত করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর ফলে সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ৬৪টিতে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি রইল। দলীয় সূত্র বলছে, ৬৪ আসনের মধ্যে ৪০টি দেওয়া হতে পারে শরিকদের। বাকি আসনগুলো রাখা হয়েছে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জন্য। এখনো দলের অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন, তাঁদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের এসব আসনে মনোনয়ন দেওয়া হবে। পাশাপাশি বাদ পড়া হেভিওয়েট নেতাদেরও কেউ কেউ মনোনয়ন পেতে পারেন।
বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক নেতা বলেন, সম্ভাব্য তালিকায় নাম ওঠা প্রার্থীদেরও চূড়ান্ত মনোনয়নের আগপর্যন্ত স্থান ধরে রাখতে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে মনোনীতদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের কারও আচরণে দলীয় নির্দেশের প্রতিফলন না ঘটলে তাঁর বিষয়ে দল নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অন্যদিকে তাঁর বিকল্প হিসেবে যাঁকে দল ভেবে রেখেছে অথবা প্রাথমিকে বঞ্চিত হয়েছেন, এমন কারও ভাগ্য খুলে যেতে পারে।
দ্বিতীয় প্রজন্মের যাঁরা আছেন তালিকায়
বিএনপির মনোনীতদের এই প্রাথমিক তালিকায় দলের প্রয়াত ও প্রবীণ বেশ কয়েকজন নেতার সন্তানদেরও নাম রয়েছে। দ্বিতীয় প্রজন্মের এই প্রার্থীদের বেশির ভাগই অবশ্য রাজনীতিতে সক্রিয়। অনেকের আগেও নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কেউ কেউ সংসদেও গেছেন।
দ্বিতীয় প্রজন্মের এই তরুণ নেতারা হলেন—সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারের ছেলে মোহাম্মদ নওশাদ জমির (পঞ্চগড়-১), সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুল (নাটোর-১), সাবেক এমপি আব্দুর রউফ চৌধুরীর ছেলে রাগীব রউফ চৌধুরী (কুষ্টিয়া-২), সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (যশোর-৩), সাবেক এমপি সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদ রবিন (ঢাকা-৪), অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন (ঢাকা-৬), বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শ্যামা ওবায়েদ (ফরিদপুর-২), সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ (ফরিদপুর-৩), সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত সাইফুর রহমানের ছেলে নাসের রহমান (মৌলভীবাজার-৩), বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন (চট্টগ্রাম-৫), বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৭), সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান (গাজীপুর-৪), সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে মঈনুল ইসলাম খাঁন (মানিকগঞ্জ-২), ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর ছেলে ইয়াসের খান চৌধুরী (ময়মনসিংহ-৯), সাবেক এমপি সিরাজুল হকের ছেলে মাহমুদুল হক রুবেল (শেরপুর-৩), সাবেক হুইপ প্রয়াত জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরী (শেরপুর-২), শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর মেয়ে সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা (শেরপুর-১), সাবেক এমপি শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে মেহেদী হাসান (ঝিনাইদহ-৩), গাজীপুরের সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করিম রনি (গাজীপুর-২), সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের ছেলে আহমেদ সোহেল মঞ্জু সুমন (পিরোজপুর-২)।
নাসের রহমান মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি। তিনি ২০০১ সালের উপনির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে উপনির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন মঈনুল ইসলাম খাঁন।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন। শেরপুর ১, ২ ও ৩ আসনে মনোনীত প্রার্থীরাও ওই নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে অংশ নিয়েছিলেন।
ফাঁকা রয়েছে যে আসনগুলো
বিএনপি যেসব আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেনি, সেগুলো হলো—ঠাকুরগাঁও-২, দিনাজপুর-৫, নীলফামারী-১ ও ৩, লালমনিরহাট-২, বগুড়া-২, নওগাঁ-৫, নাটোর-৩, সিরাজগঞ্জ-১, পাবনা-১, ঝিনাইদহ-১, ২ ও ৪, যশোর-৫, নড়াইল-২, বাগেরহাট-১, ২ ও ৩, খুলনা-১, পটুয়াখালী-২ ও ৩, বরিশাল-৩, ঝালকাঠি-১, পিরোজপুর-১, টাঙ্গাইল-৫, ময়মনসিংহ-৪ ও ১০, কিশোরগঞ্জ-১ ও ৫, মানিকগঞ্জ-১, মুন্সিগঞ্জ-৩, ঢাকা-৭, ৯, ১০, ১৩, ১৭, ১৮ ও ২০, গাজীপুর-১ ও ৬, নরসিংদী-৩, নারায়ণগঞ্জ-৪, রাজবাড়ী-২, ফরিদপুর-১, মাদারীপুর-১ ও ২, সুনামগঞ্জ-২ ও ৪, সিলেট-৪ ও ৫, হবিগঞ্জ-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৬, কুমিল্লা-২ ও ৭, লক্ষ্মীপুর-১ ও ৪, চট্টগ্রাম-৩, ৬, ৯, ১১, ১৪ ও ১৫ এবং কক্সবাজার-২।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম নেই দলটির অনেক বড় নেতার। মনোনয়নবঞ্চিত এসব নেতা এ নিয়ে মুখ খুলছেন না। তবে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
দলীয় সূত্র বলেছে, মনোনয়নবঞ্চিতদের কর্মী-সমর্থকদের এই ক্ষোভ-বিক্ষোভে বিএনপি কিছুটা চাপে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থীর নাম স্থগিত করা হয়েছে। দলটির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতা বলছেন, মনোনয়নবঞ্চিতদের নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে, পর্যালোচনা হচ্ছে। এটি সম্ভাব্য তালিকা। প্রয়োজনে প্রার্থী বদল হতে পারে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের মধ্যে প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে ২৩৭ আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেন।
সম্ভাব্য এই প্রার্থী তালিকায় হেভিওয়েটদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আসলাম চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জয়নুল আবেদীন, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, হুমায়ুন কবির, সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাইসহ আরও অনেকের নাম নেই।
দলীয় প্রার্থী তালিকায় বাদ পড়া এসব নেতা দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা সমালোচনা করছেন। সোমবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মনোনয়নবঞ্চিতদের কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও পছন্দের নেতা মনোনীত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বঞ্চিত নেতারা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলছেন না। তবে মনঃক্ষুণ্ন হওয়ার বিষয়টি ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন। কারও কারও কথায় হতাশাও প্রকাশ পেয়েছে।
বঞ্চিত নেতারা বলছেন, প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকার কারণ তাঁরা জানেন না। বুঝতেও পারছেন না। এক নেতা অভিমানের সুরে বলেন, ‘কিছু জানি না। এসব নিয়ে কথা বলতেও ইচ্ছা করছে না।’
বিগত একাদশ সংসদে বিএনপি থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ছিলেন রুমিন ফারহানা। সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, প্রকাশিত তালিকাটি প্রাথমিক পর্যায়ের। সময়ের সঙ্গে তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে। কেউ বাদ পড়তে পারেন, আবার নতুন কেউ যুক্তও হতে পারেন। তাই এই তালিকাকে চূড়ান্ত হিসেবে দেখা উচিত নয়।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ভূমিকা রাখা একাধিক নেতা বলছেন, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেভিওয়েট নেতা মনোনয়নের প্রাথমিক তালিকায় জায়গা পাননি। এসব নেতার বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক রয়েছেন। কেউ কেউ নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরেও সব জায়গায় সমান জনপ্রিয় ও সুপরিচিত মুখ। তাঁদের নাম না থাকায় তীব্র সমালোচনা শুরু হওয়ায় দল চাপ অনুভব করছে। এ অবস্থায় তাঁদের নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে, পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
বাদ পড়া হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে কারও এখনো মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সে জন্যই তো সম্ভাব্য (ঘোষিত তালিকা) বলা হয়েছে। যদি প্রয়োজন মনে করে, স্থায়ী কমিটি আবার অদল-বদল করতে পারে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে চূড়ান্ত করা হবে।
এদিকে ২৩৭ আসনের ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থীর নাম গতকাল স্থগিত করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর ফলে সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ৬৪টিতে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি রইল। দলীয় সূত্র বলছে, ৬৪ আসনের মধ্যে ৪০টি দেওয়া হতে পারে শরিকদের। বাকি আসনগুলো রাখা হয়েছে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জন্য। এখনো দলের অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন, তাঁদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের এসব আসনে মনোনয়ন দেওয়া হবে। পাশাপাশি বাদ পড়া হেভিওয়েট নেতাদেরও কেউ কেউ মনোনয়ন পেতে পারেন।
বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক নেতা বলেন, সম্ভাব্য তালিকায় নাম ওঠা প্রার্থীদেরও চূড়ান্ত মনোনয়নের আগপর্যন্ত স্থান ধরে রাখতে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে মনোনীতদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের কারও আচরণে দলীয় নির্দেশের প্রতিফলন না ঘটলে তাঁর বিষয়ে দল নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অন্যদিকে তাঁর বিকল্প হিসেবে যাঁকে দল ভেবে রেখেছে অথবা প্রাথমিকে বঞ্চিত হয়েছেন, এমন কারও ভাগ্য খুলে যেতে পারে।
দ্বিতীয় প্রজন্মের যাঁরা আছেন তালিকায়
বিএনপির মনোনীতদের এই প্রাথমিক তালিকায় দলের প্রয়াত ও প্রবীণ বেশ কয়েকজন নেতার সন্তানদেরও নাম রয়েছে। দ্বিতীয় প্রজন্মের এই প্রার্থীদের বেশির ভাগই অবশ্য রাজনীতিতে সক্রিয়। অনেকের আগেও নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কেউ কেউ সংসদেও গেছেন।
দ্বিতীয় প্রজন্মের এই তরুণ নেতারা হলেন—সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারের ছেলে মোহাম্মদ নওশাদ জমির (পঞ্চগড়-১), সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুল (নাটোর-১), সাবেক এমপি আব্দুর রউফ চৌধুরীর ছেলে রাগীব রউফ চৌধুরী (কুষ্টিয়া-২), সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (যশোর-৩), সাবেক এমপি সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদ রবিন (ঢাকা-৪), অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন (ঢাকা-৬), বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শ্যামা ওবায়েদ (ফরিদপুর-২), সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ (ফরিদপুর-৩), সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত সাইফুর রহমানের ছেলে নাসের রহমান (মৌলভীবাজার-৩), বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন (চট্টগ্রাম-৫), বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৭), সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান (গাজীপুর-৪), সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে মঈনুল ইসলাম খাঁন (মানিকগঞ্জ-২), ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর ছেলে ইয়াসের খান চৌধুরী (ময়মনসিংহ-৯), সাবেক এমপি সিরাজুল হকের ছেলে মাহমুদুল হক রুবেল (শেরপুর-৩), সাবেক হুইপ প্রয়াত জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরী (শেরপুর-২), শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর মেয়ে সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা (শেরপুর-১), সাবেক এমপি শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে মেহেদী হাসান (ঝিনাইদহ-৩), গাজীপুরের সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করিম রনি (গাজীপুর-২), সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের ছেলে আহমেদ সোহেল মঞ্জু সুমন (পিরোজপুর-২)।
নাসের রহমান মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি। তিনি ২০০১ সালের উপনির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে উপনির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন মঈনুল ইসলাম খাঁন।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন। শেরপুর ১, ২ ও ৩ আসনে মনোনীত প্রার্থীরাও ওই নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে অংশ নিয়েছিলেন।
ফাঁকা রয়েছে যে আসনগুলো
বিএনপি যেসব আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেনি, সেগুলো হলো—ঠাকুরগাঁও-২, দিনাজপুর-৫, নীলফামারী-১ ও ৩, লালমনিরহাট-২, বগুড়া-২, নওগাঁ-৫, নাটোর-৩, সিরাজগঞ্জ-১, পাবনা-১, ঝিনাইদহ-১, ২ ও ৪, যশোর-৫, নড়াইল-২, বাগেরহাট-১, ২ ও ৩, খুলনা-১, পটুয়াখালী-২ ও ৩, বরিশাল-৩, ঝালকাঠি-১, পিরোজপুর-১, টাঙ্গাইল-৫, ময়মনসিংহ-৪ ও ১০, কিশোরগঞ্জ-১ ও ৫, মানিকগঞ্জ-১, মুন্সিগঞ্জ-৩, ঢাকা-৭, ৯, ১০, ১৩, ১৭, ১৮ ও ২০, গাজীপুর-১ ও ৬, নরসিংদী-৩, নারায়ণগঞ্জ-৪, রাজবাড়ী-২, ফরিদপুর-১, মাদারীপুর-১ ও ২, সুনামগঞ্জ-২ ও ৪, সিলেট-৪ ও ৫, হবিগঞ্জ-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৬, কুমিল্লা-২ ও ৭, লক্ষ্মীপুর-১ ও ৪, চট্টগ্রাম-৩, ৬, ৯, ১১, ১৪ ও ১৫ এবং কক্সবাজার-২।

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
৫ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের জাতীয় নেতাকে সর্বস্তরের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে সম্মান জানাতে পারে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পারে, সে জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সব দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
এ সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত থাকবেন। দাফনকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তিদের ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফনকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের জাতীয় নেতাকে সর্বস্তরের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে সম্মান জানাতে পারে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পারে, সে জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সব দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
এ সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত থাকবেন। দাফনকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তিদের ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফনকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম নেই দলটির অনেক বড় নেতার। মনোনয়নবঞ্চিত এসব নেতা এ নিয়ে মুখ খুলছেন না। তবে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
০৫ নভেম্বর ২০২৫
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
৫ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে এই হাসপাতালেই মৃত্যুকে বরণ করে নেন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এই আপসহীন নেত্রী।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ২৩ নভেম্বর শেষ দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। ৮০ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সেখানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। তবে শারীরিক অবস্থা দীর্ঘ পথ ভ্রমণের অনুকূলে না থাকায় সেটি আর সম্ভব হয়নি।
পরিবার ও দলীয় সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। তবে মেডিকেল বোর্ডের মত ছিল, দীর্ঘ বিমানযাত্রা তাঁর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ফুসফুসে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্যন্ত্রের দুর্বলতা ও অন্যান্য জটিলতার কারণে ২৯ নভেম্বরের পর বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ স্থগিত হয়। পরবর্তী সময়ে শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। সেই সময়ই সরকার তাঁকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঘোষণা করে। সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে সার্বক্ষণিক জড়িত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছিল। দেশি-বিদেশি খ্যাতনামা চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড দায়িত্বে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই ও জন হপকিন্স হাসপাতাল, যুক্তরাজ্যের লন্ডন ব্রিজ হাসপাতাল, লন্ডন ক্লিনিক ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা চিকিৎসা বোর্ডে যুক্ত ছিলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানও চিকিৎসক দলের সদস্য ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার পর নিয়মিত হাসপাতালে গিয়ে মায়ের চিকিৎসার তদারকি করতেন। সোমবার রাতেও মাকে দেখতে হাসপাতালে যান তিনি। এই রাতে ছেলে তারেক ছাড়াও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান, বড় বোন সেলিনা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, দুই নাতনি জাইমা রহমান ও জাহিয়া রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যান। রাত দুইটা নাগাদ পরিবারের সদস্যসহ হাসপাতাল ত্যাগ করেন তারেক রহমান। পরে সকাল ৬টার দিকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর পায় দেশবাসী।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে এই হাসপাতালেই মৃত্যুকে বরণ করে নেন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এই আপসহীন নেত্রী।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ২৩ নভেম্বর শেষ দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। ৮০ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সেখানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। তবে শারীরিক অবস্থা দীর্ঘ পথ ভ্রমণের অনুকূলে না থাকায় সেটি আর সম্ভব হয়নি।
পরিবার ও দলীয় সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। তবে মেডিকেল বোর্ডের মত ছিল, দীর্ঘ বিমানযাত্রা তাঁর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ফুসফুসে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্যন্ত্রের দুর্বলতা ও অন্যান্য জটিলতার কারণে ২৯ নভেম্বরের পর বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ স্থগিত হয়। পরবর্তী সময়ে শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। সেই সময়ই সরকার তাঁকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঘোষণা করে। সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে সার্বক্ষণিক জড়িত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছিল। দেশি-বিদেশি খ্যাতনামা চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড দায়িত্বে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই ও জন হপকিন্স হাসপাতাল, যুক্তরাজ্যের লন্ডন ব্রিজ হাসপাতাল, লন্ডন ক্লিনিক ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা চিকিৎসা বোর্ডে যুক্ত ছিলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানও চিকিৎসক দলের সদস্য ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার পর নিয়মিত হাসপাতালে গিয়ে মায়ের চিকিৎসার তদারকি করতেন। সোমবার রাতেও মাকে দেখতে হাসপাতালে যান তিনি। এই রাতে ছেলে তারেক ছাড়াও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান, বড় বোন সেলিনা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, দুই নাতনি জাইমা রহমান ও জাহিয়া রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যান। রাত দুইটা নাগাদ পরিবারের সদস্যসহ হাসপাতাল ত্যাগ করেন তারেক রহমান। পরে সকাল ৬টার দিকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর পায় দেশবাসী।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম নেই দলটির অনেক বড় নেতার। মনোনয়নবঞ্চিত এসব নেতা এ নিয়ে মুখ খুলছেন না। তবে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
০৫ নভেম্বর ২০২৫
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
৫ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
২০১০ সাল থেকেই খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন ফাতেমা বেগম। গৃহকর্মী থেকে হয়ে ওঠেন বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা বলছেন, চেয়ারপারসনের প্রতি ফাতেমার মমত্ববোধ প্রবল। সব সময় পাশে থাকা, চেয়ারপারসনকে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মনে করিয়ে দেওয়াসহ সব কাজই ফাতেমা করতেন।
ফাতেমা বেগমের গ্রামের বাড়ি ভোলা। ২০১০ সাল থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর গৃহপরিচারিকা হিসেবে ফাতেমাকে সঙ্গে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার ছয় দিনের মাথায় ফাতেমাও সেখানে যান। প্রায় ২৫ মাস স্বেচ্ছায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারেই ছিলেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের উত্তাল সময়েও ফাতেমাকে দেখা গেছে খালেদা জিয়ার নীরব ছায়াসঙ্গী হিসেবে। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলনে খালেদা জিয়াকে গুলশানে কার্যালয়ের সামনে আটকে দেওয়ার সময়ও পতাকা হাতে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফাতেমা। ২০১৫ সালের শুরুতে টানা ৯২ দিন বিএনপির চেয়ারপারসন গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানকালেও তিনি ছিলেন সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
স্বল্পভাষী ফাতেমার বয়স ৪০ বছর ছুঁই ছুই। তিনি এক সন্তানের জননী।
ফাতেমা মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন রাজধানীর শাহজাহানপুরে। বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের তথ্য বলছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতার মাধ্যমে মূলত ‘ফিরোজা’য় কাজ শুরু ফাতেমার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেড় দশকের বেশি সময় ধরে নিরবচ্ছিন্ন এই সঙ্গ শুধু চাকরি নয়, এটি যেন রাজনৈতিক ইতিহাসের এক মানবিক অধ্যায়।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
২০১০ সাল থেকেই খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন ফাতেমা বেগম। গৃহকর্মী থেকে হয়ে ওঠেন বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা বলছেন, চেয়ারপারসনের প্রতি ফাতেমার মমত্ববোধ প্রবল। সব সময় পাশে থাকা, চেয়ারপারসনকে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মনে করিয়ে দেওয়াসহ সব কাজই ফাতেমা করতেন।
ফাতেমা বেগমের গ্রামের বাড়ি ভোলা। ২০১০ সাল থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর গৃহপরিচারিকা হিসেবে ফাতেমাকে সঙ্গে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার ছয় দিনের মাথায় ফাতেমাও সেখানে যান। প্রায় ২৫ মাস স্বেচ্ছায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারেই ছিলেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের উত্তাল সময়েও ফাতেমাকে দেখা গেছে খালেদা জিয়ার নীরব ছায়াসঙ্গী হিসেবে। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলনে খালেদা জিয়াকে গুলশানে কার্যালয়ের সামনে আটকে দেওয়ার সময়ও পতাকা হাতে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফাতেমা। ২০১৫ সালের শুরুতে টানা ৯২ দিন বিএনপির চেয়ারপারসন গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানকালেও তিনি ছিলেন সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
স্বল্পভাষী ফাতেমার বয়স ৪০ বছর ছুঁই ছুই। তিনি এক সন্তানের জননী।
ফাতেমা মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন রাজধানীর শাহজাহানপুরে। বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের তথ্য বলছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতার মাধ্যমে মূলত ‘ফিরোজা’য় কাজ শুরু ফাতেমার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেড় দশকের বেশি সময় ধরে নিরবচ্ছিন্ন এই সঙ্গ শুধু চাকরি নয়, এটি যেন রাজনৈতিক ইতিহাসের এক মানবিক অধ্যায়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম নেই দলটির অনেক বড় নেতার। মনোনয়নবঞ্চিত এসব নেতা এ নিয়ে মুখ খুলছেন না। তবে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
০৫ নভেম্বর ২০২৫
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে। তাঁদের ভাষ্যে উঠে এসেছে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব, নির্যাতনের মুখেও অবিচল থাকা এবং শেষ দিন পর্যন্ত গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার এক অনন্য রাজনৈতিক জীবন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রামরত এক আপসহীন নেত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন যে, নেত্রী (খালেদা জিয়া) দীর্ঘদিন তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রায় সমস্ত অংশই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন এবং গণতন্ত্রের মূল্যবোধগুলোকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তখন গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য তিনি কাজ করেছেন। জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। আর যখন বিরোধী ছিলেন, তখনো তিনি একইভাবে সেই গণতন্ত্রকেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বিএনপির রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্ট এবং দলকে গণমানুষের কাতারে নিয়ে যাওয়া নেতা। তিনি বলেন, ‘গৃহবধূ থেকে ম্যাডামের রাজনীতিতে আসাটা ছিল বিএনপির রাজনীতির জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট। দলের নেতৃত্বে এসে তিনিই বিএনপিকে একটি জনপ্রিয় দলে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা এক নেত্রী। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপরে জুলুম হয়েছে, নির্যাতন হয়েছে; কিন্তু তিনি কোনো দিন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। তিনি কোনো দিন আপস করেননি। গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজেকে বিজয়ী প্রমাণ করতে পেরেছেন। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আগপর্যন্ত তিনি স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করে গেছেন। তিনি সেই যুদ্ধে নিজেকে বিজয়ী বলে প্রমাণ করেছেন।
ড. আবদুল মঈন খান আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া রাজপথে যুদ্ধ করেছেন। ২০০৯ সালের পরে যখন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নির্যাতন, অত্যাচার ও মিথ্যা মামলা তাঁর ওপরে নেমে এসেছিল...তখন অনেকে পরামর্শ দিয়েছিল—আপনি কেন এই কষ্ট সহ্য করছেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম করছি। আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের মানুষের জন্য, আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’’’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন একই সঙ্গে রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল অভিভাবক। তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এমন একজন মানুষ ছিলেন, আমাদের যাদের উনার সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে মেশার সুযোগ হয়েছে...আমরা দেখেছি, উনি একদিকে যেমন সত্যি সত্যি অভিভাবক, আরেক দিকে মাতৃস্নেহে উনি আমাদের দেখতেন। কোনো দিন বাসায় যাওয়ার পরে কোনো কিছু না খেয়ে বাসা থেকে কেউ যেতে পারত না।’
চিকিৎসাধীন অবস্থার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসকদের কী খাইয়েছেন? এগুলো সব সময় উনার যাঁরা কাজের সহকর্মী ছিলেন, সহায়তা করতেন, তাঁদের জিজ্ঞাসা করতেন। উনি বলে দিতেন, আজকে এটা দিবা। কোনো দিন (চিকিৎসক) যেতে একটু দেরি হলে জিজ্ঞাসা করতেন...এত দেরি কেন হলো? আমি তো বসে আছি। অর্থাৎ চিকিৎসকেরা কখন যাবেন...উনি যখন বাসায় থাকতেন, তখন প্রতিদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা তাঁর বাসায় যেতেন। উনি সবার সঙ্গে কথা বলতেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘গণতন্ত্রের লড়াই করতে করতেই বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুপথযাত্রী হয়েছিলেন। খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের আকাঙ্ক্ষা। বাংলাদেশে দলমত-নির্বিশেষে সবাই তাঁর নামে ঐক্যবদ্ধ ছিল। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে বাংলাদেশ গণতন্ত্র ফেরত পেত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, সেই স্বপ্ন পূরণ হতো।’
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতি ছায়া থেকে বঞ্চিত হলো বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন, এই সংকট কাটিয়ে ওঠা জাতির জন্য কঠিন।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রাম, ব্যক্তিত্ব ও মানবিক দিক নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীনতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের অভিভাবকসুলভ আচরণ—সবকিছু মিলিয়ে তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন এক সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল মানুষ হিসেবে। তাঁদের ভাষ্যে উঠে এসেছে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব, নির্যাতনের মুখেও অবিচল থাকা এবং শেষ দিন পর্যন্ত গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার এক অনন্য রাজনৈতিক জীবন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রামরত এক আপসহীন নেত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন যে, নেত্রী (খালেদা জিয়া) দীর্ঘদিন তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রায় সমস্ত অংশই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন এবং গণতন্ত্রের মূল্যবোধগুলোকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তখন গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য তিনি কাজ করেছেন। জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। আর যখন বিরোধী ছিলেন, তখনো তিনি একইভাবে সেই গণতন্ত্রকেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বিএনপির রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্ট এবং দলকে গণমানুষের কাতারে নিয়ে যাওয়া নেতা। তিনি বলেন, ‘গৃহবধূ থেকে ম্যাডামের রাজনীতিতে আসাটা ছিল বিএনপির রাজনীতির জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট। দলের নেতৃত্বে এসে তিনিই বিএনপিকে একটি জনপ্রিয় দলে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা এক নেত্রী। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপরে জুলুম হয়েছে, নির্যাতন হয়েছে; কিন্তু তিনি কোনো দিন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। তিনি কোনো দিন আপস করেননি। গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজেকে বিজয়ী প্রমাণ করতে পেরেছেন। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আগপর্যন্ত তিনি স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করে গেছেন। তিনি সেই যুদ্ধে নিজেকে বিজয়ী বলে প্রমাণ করেছেন।
ড. আবদুল মঈন খান আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া রাজপথে যুদ্ধ করেছেন। ২০০৯ সালের পরে যখন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নির্যাতন, অত্যাচার ও মিথ্যা মামলা তাঁর ওপরে নেমে এসেছিল...তখন অনেকে পরামর্শ দিয়েছিল—আপনি কেন এই কষ্ট সহ্য করছেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম করছি। আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের মানুষের জন্য, আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’’’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের দৃষ্টিতে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন একই সঙ্গে রাষ্ট্রনায়ক ও স্নেহশীল অভিভাবক। তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এমন একজন মানুষ ছিলেন, আমাদের যাদের উনার সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে মেশার সুযোগ হয়েছে...আমরা দেখেছি, উনি একদিকে যেমন সত্যি সত্যি অভিভাবক, আরেক দিকে মাতৃস্নেহে উনি আমাদের দেখতেন। কোনো দিন বাসায় যাওয়ার পরে কোনো কিছু না খেয়ে বাসা থেকে কেউ যেতে পারত না।’
চিকিৎসাধীন অবস্থার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসকদের কী খাইয়েছেন? এগুলো সব সময় উনার যাঁরা কাজের সহকর্মী ছিলেন, সহায়তা করতেন, তাঁদের জিজ্ঞাসা করতেন। উনি বলে দিতেন, আজকে এটা দিবা। কোনো দিন (চিকিৎসক) যেতে একটু দেরি হলে জিজ্ঞাসা করতেন...এত দেরি কেন হলো? আমি তো বসে আছি। অর্থাৎ চিকিৎসকেরা কখন যাবেন...উনি যখন বাসায় থাকতেন, তখন প্রতিদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা তাঁর বাসায় যেতেন। উনি সবার সঙ্গে কথা বলতেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘গণতন্ত্রের লড়াই করতে করতেই বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুপথযাত্রী হয়েছিলেন। খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের আকাঙ্ক্ষা। বাংলাদেশে দলমত-নির্বিশেষে সবাই তাঁর নামে ঐক্যবদ্ধ ছিল। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে বাংলাদেশ গণতন্ত্র ফেরত পেত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, সেই স্বপ্ন পূরণ হতো।’
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতি ছায়া থেকে বঞ্চিত হলো বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন, এই সংকট কাটিয়ে ওঠা জাতির জন্য কঠিন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম নেই দলটির অনেক বড় নেতার। মনোনয়নবঞ্চিত এসব নেতা এ নিয়ে মুখ খুলছেন না। তবে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
০৫ নভেম্বর ২০২৫
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এর আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে, আবার কখনো ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাসায়। কিন্তু এবার আর তাঁর ফেরা হলো না। টানা ৩৮ দিন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে লড়েছেন রোগের সঙ্গে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেড় দশকের বেশি সময় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি। বাসভবন, কার্যালয়, রাজপথ, হাসপাতাল, কারাগার, বিদেশ—সবখানেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকেছেন তিনি। থেকে গেছেন আড়ালে। এই মানুষটি হলেন ফাতেমা বেগম।
৫ ঘণ্টা আগে