Ajker Patrika

বাদ পড়েছেন বড় অনেক নেতা, চাপে বিএনপি

  • মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের কর্মী-সমর্থকদের ক্ষোভ, অসন্তোষ।
  • বঞ্চিতদের নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে, প্রার্থী বদলও হতে পারে।
  • মনোনীতদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে, প্রয়োজনে নতুন সিদ্ধান্ত।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ০৪
বাদ পড়েছেন বড় অনেক নেতা, চাপে বিএনপি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম নেই দলটির অনেক বড় নেতার। মনোনয়নবঞ্চিত এসব নেতা এ নিয়ে মুখ খুলছেন না। তবে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।

দলীয় সূত্র বলেছে, মনোনয়নবঞ্চিতদের কর্মী-সমর্থকদের এই ক্ষোভ-বিক্ষোভে বিএনপি কিছুটা চাপে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থীর নাম স্থগিত করা হয়েছে। দলটির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতা বলছেন, মনোনয়নবঞ্চিতদের নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে, পর্যালোচনা হচ্ছে। এটি সম্ভাব্য তালিকা। প্রয়োজনে প্রার্থী বদল হতে পারে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের মধ্যে প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে ২৩৭ আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেন।

সম্ভাব্য এই প্রার্থী তালিকায় হেভিওয়েটদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আসলাম চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জয়নুল আবেদীন, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, হুমায়ুন কবির, সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাইসহ আরও অনেকের নাম নেই।

দলীয় প্রার্থী তালিকায় বাদ পড়া এসব নেতা দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা সমালোচনা করছেন। সোমবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মনোনয়নবঞ্চিতদের কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও পছন্দের নেতা মনোনীত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বঞ্চিত নেতারা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলছেন না। তবে মনঃক্ষুণ্ন হওয়ার বিষয়টি ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন। কারও কারও কথায় হতাশাও প্রকাশ পেয়েছে।

বঞ্চিত নেতারা বলছেন, প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকার কারণ তাঁরা জানেন না। বুঝতেও পারছেন না। এক নেতা অভিমানের সুরে বলেন, ‘কিছু জানি না। এসব নিয়ে কথা বলতেও ইচ্ছা করছে না।’

বিগত একাদশ সংসদে বিএনপি থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ছিলেন রুমিন ফারহানা। সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, প্রকাশিত তালিকাটি প্রাথমিক পর্যায়ের। সময়ের সঙ্গে তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে। কেউ বাদ পড়তে পারেন, আবার নতুন কেউ যুক্তও হতে পারেন। তাই এই তালিকাকে চূড়ান্ত হিসেবে দেখা উচিত নয়।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ভূমিকা রাখা একাধিক নেতা বলছেন, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেভিওয়েট নেতা মনোনয়নের প্রাথমিক তালিকায় জায়গা পাননি। এসব নেতার বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক রয়েছেন। কেউ কেউ নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরেও সব জায়গায় সমান জনপ্রিয় ও সুপরিচিত মুখ। তাঁদের নাম না থাকায় তীব্র সমালোচনা শুরু হওয়ায় দল চাপ অনুভব করছে। এ অবস্থায় তাঁদের নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে, পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

বাদ পড়া হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে কারও এখনো মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সে জন্যই তো সম্ভাব্য (ঘোষিত তালিকা) বলা হয়েছে। যদি প্রয়োজন মনে করে, স্থায়ী কমিটি আবার অদল-বদল করতে পারে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে চূড়ান্ত করা হবে।

এদিকে ২৩৭ আসনের ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থীর নাম গতকাল স্থগিত করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর ফলে সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ৬৪টিতে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি রইল। দলীয় সূত্র বলছে, ৬৪ আসনের মধ্যে ৪০টি দেওয়া হতে পারে শরিকদের। বাকি আসনগুলো রাখা হয়েছে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জন্য। এখনো দলের অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন, তাঁদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের এসব আসনে মনোনয়ন দেওয়া হবে। পাশাপাশি বাদ পড়া হেভিওয়েট নেতাদেরও কেউ কেউ মনোনয়ন পেতে পারেন।

বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক নেতা বলেন, সম্ভাব্য তালিকায় নাম ওঠা প্রার্থীদেরও চূড়ান্ত মনোনয়নের আগপর্যন্ত স্থান ধরে রাখতে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে মনোনীতদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের কারও আচরণে দলীয় নির্দেশের প্রতিফলন না ঘটলে তাঁর বিষয়ে দল নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অন্যদিকে তাঁর বিকল্প হিসেবে যাঁকে দল ভেবে রেখেছে অথবা প্রাথমিকে বঞ্চিত হয়েছেন, এমন কারও ভাগ্য খুলে যেতে পারে।

দ্বিতীয় প্রজন্মের যাঁরা আছেন তালিকায়

বিএনপির মনোনীতদের এই প্রাথমিক তালিকায় দলের প্রয়াত ও প্রবীণ বেশ কয়েকজন নেতার সন্তানদেরও নাম রয়েছে। দ্বিতীয় প্রজন্মের এই প্রার্থীদের বেশির ভাগই অবশ্য রাজনীতিতে সক্রিয়। অনেকের আগেও নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কেউ কেউ সংসদেও গেছেন।

দ্বিতীয় প্রজন্মের এই তরুণ নেতারা হলেন—সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারের ছেলে মোহাম্মদ নওশাদ জমির (পঞ্চগড়-১), সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুল (নাটোর-১), সাবেক এমপি আব্দুর রউফ চৌধুরীর ছেলে রাগীব রউফ চৌধুরী (কুষ্টিয়া-২), সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (যশোর-৩), সাবেক এমপি সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদ রবিন (ঢাকা-৪), অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন (ঢাকা-৬), বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শ্যামা ওবায়েদ (ফরিদপুর-২), সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ (ফরিদপুর-৩), সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত সাইফুর রহমানের ছেলে নাসের রহমান (মৌলভীবাজার-৩), বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন (চট্টগ্রাম-৫), বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৭), সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান (গাজীপুর-৪), সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে মঈনুল ইসলাম খাঁন (মানিকগঞ্জ-২), ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর ছেলে ইয়াসের খান চৌধুরী (ময়মনসিংহ-৯), সাবেক এমপি সিরাজুল হকের ছেলে মাহমুদুল হক রুবেল (শেরপুর-৩), সাবেক হুইপ প্রয়াত জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরী (শেরপুর-২), শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর মেয়ে সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা (শেরপুর-১), সাবেক এমপি শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে মেহেদী হাসান (ঝিনাইদহ-৩), গাজীপুরের সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করিম রনি (গাজীপুর-২), সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের ছেলে আহমেদ সোহেল মঞ্জু সুমন (পিরোজপুর-২)।

নাসের রহমান মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি। তিনি ২০০১ সালের উপনির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে উপনির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন মঈনুল ইসলাম খাঁন।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন। শেরপুর ১, ২ ও ৩ আসনে মনোনীত প্রার্থীরাও ওই নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে অংশ নিয়েছিলেন।

ফাঁকা রয়েছে যে আসনগুলো

বিএনপি যেসব আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেনি, সেগুলো হলো—ঠাকুরগাঁও-২, দিনাজপুর-৫, নীলফামারী-১ ও ৩, লালমনিরহাট-২, বগুড়া-২, নওগাঁ-৫, নাটোর-৩, সিরাজগঞ্জ-১, পাবনা-১, ঝিনাইদহ-১, ২ ও ৪, যশোর-৫, নড়াইল-২, বাগেরহাট-১, ২ ও ৩, খুলনা-১, পটুয়াখালী-২ ও ৩, বরিশাল-৩, ঝালকাঠি-১, পিরোজপুর-১, টাঙ্গাইল-৫, ময়মনসিংহ-৪ ও ১০, কিশোরগঞ্জ-১ ও ৫, মানিকগঞ্জ-১, মুন্সিগঞ্জ-৩, ঢাকা-৭, ৯, ১০, ১৩, ১৭, ১৮ ও ২০, গাজীপুর-১ ও ৬, নরসিংদী-৩, নারায়ণগঞ্জ-৪, রাজবাড়ী-২, ফরিদপুর-১, মাদারীপুর-১ ও ২, সুনামগঞ্জ-২ ও ৪, সিলেট-৪ ও ৫, হবিগঞ্জ-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৬, কুমিল্লা-২ ও ৭, লক্ষ্মীপুর-১ ও ৪, চট্টগ্রাম-৩, ৬, ৯, ১১, ১৪ ও ১৫ এবং কক্সবাজার-২।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশেষ ট্রেনে ভোটের প্রচার করা যাবে না

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চাওয়া নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের জন্য ১০টি বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বিএনপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাত শর্তে এসব ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর দেশের ১০টি রুটে এসব বিশেষ ট্রেন পরিচালিত হবে। ট্রেন পরিচালনায় কোন কোন শর্ত মানতে হবে, তা জানিয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালককে আলাদা চিঠি দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। শর্তের মধ্যে রয়েছে, কোনো অবস্থাতেই এসব ট্রেনকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যম, বাহন বা উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। ট্রেনের ভেতরে বা বাইরে নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, প্রতীক, লোগো বা সদৃশ কাঠামো, মাইক, সাউন্ড সিস্টেম বা অন্য কোনো প্রচারণামূলক উপকরণ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ট্রেনে চলাচলের সময় কোনো ধরনের স্লোগান, মিছিল বা রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া যাবে না। নির্ধারিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, ছাদে বা ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রী আরোহণও করা যাবে না। এসব শর্ত না মানলে বা ট্রেন, রেলপথ কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করলে ট্রেনের ভাড়া গ্রহণকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বিশেষ ট্রেন পরিচালনার জন্য নির্ধারিত সময়সূচি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই নিয়মিত ট্রেনের চলাচল বা সময়সূচি ব্যাহত করা যাবে না। পূর্বনির্ধারিত স্টেশন ছাড়া অন্য কোনো স্টেশনে ট্রেন থামানোর অনুরোধ গ্রহণযোগ্য হবে না। কোনো কারণে নির্বাচন কমিশন, সরকার বা রেলওয়ে বিশেষ ট্রেন পরিচালনা স্থগিত, সীমিত বা বাতিল করার সিদ্ধান্ত দিতে পারবে, এ বিষয়ে কোনো আপত্তি গ্রহণ করা হবে না।

বিশেষ ট্রেন পরিচালনার কারণে ২৫ ডিসেম্বর পশ্চিমাঞ্চলের নিয়মিত তিনটি কমিউটার ট্রেন—রোহনপুর, ঢালারচর ও রাজবাড়ী এক্সপ্রেস চলাচল করবে না।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করে ২৪ ডিসেম্বর রাতে অতিরিক্ত বগিসহ সাতটি বিশেষ ট্রেন রিজার্ভের অনুমতি চেয়ে ১৮ ডিসেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় বিএনপি। লন্ডন থেকে ২৫ ডিসেম্বর দেশে পৌঁছাবেন তারেক রহমান। ওই দিন পূর্বাচলে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষিত হওয়ার কারণে বিশেষ ট্রেন ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলেই আমরা এসব শর্ত দিয়েছি। কোনোভাবেই এসব বিশেষ ট্রেন নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির খুনিদের গ্রেপ্তারে প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায়নি: সাদিক কায়েম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদির খুনিদের গ্রেপ্তারে প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায়নি: সাদিক কায়েম

হাদির খুনিদের গ্রেপ্তারে প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক কায়েম। তিনি বলেছেন, ‘শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজায় লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতির মধ্যেও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায়নি।’ বিচার নিশ্চিতের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সুস্পষ্ট ও দায়িত্বশীল অবস্থান নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় পাঠানো তাঁর এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় হাদি হত্যার দ্রুততম ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথাও জানান ভিপি সাদিক কায়েম।

সাদিক কায়েম বলেন, শহীদ ওসমান হাদিকে হারিয়ে তাঁর পরিবার আজ দিশেহারা। ছোট্ট সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তাঁর স্ত্রী ন্যায়বিচারের আশায় অপেক্ষায় দিন গুনছেন। গভীর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে ‘শহীদি শপথ’ গ্রহণ করেছেন শহীদের হাতে গড়া ইনকিলাব মঞ্চের সহযোদ্ধারা।

ডাকসু ভিপি আরও বলেন, এত কিছুর পরও এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়লেও শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে তেমন কোনো কার্যকর তৎপরতা এখনো দৃশ্যমান নয়। খুনি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানসহ এই হত্যাকাণ্ডের হুকুমদাতা কেউই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি, এমনকি খুনির অবস্থান সম্পর্কেও সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি।

ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে শহীদ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবি ও আন্দোলনকে ছাত্র-জনতার মন থেকে মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গণমাধ্যমেও এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে পর্যাপ্ত ফলোআপ সংবাদ চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ তাঁর।

সব ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টাকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার কথা জানিয়ে সাদিক কায়েম বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম, রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন, সুশীল সমাজসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা শপথ করছি, শহীদ ওসমান হাদির স্বপ্নের ইনসাফভিত্তিক, সার্বভৌম ও মর্যাদাশীল একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক দখলে প্রতিযোগিতা করছে বিএনপি-জামায়াত: নাহিদ ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘ইলেকশনস ডায়ালগ: ইয়র পার্টি ভোটার কোয়েশ্চেনস’ শীর্ষক সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘ইলেকশনস ডায়ালগ: ইয়র পার্টি ভোটার কোয়েশ্চেনস’ শীর্ষক সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক দখলে নিতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে একধরনের ‘প্রতিযোগিতা’ চলছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে দ্য ডেইলি স্টারের আয়োজনে শুরু হওয়া ‘স্টার নির্বাচনী সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন নাহিদ।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান, পারস্পরিক আস্থাহীনতা, নির্বাচন ঘিরে উদ্বেগ, ‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণের প্রতিশ্রুতিসহ নানান বিষয়ে দলের অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, এই ভোটগুলো নিশ্চিত করতে তারা (জামায়াত-বিএনপি) কিছু লক্ষণ দেখাচ্ছে। তারা বলছে, মামলাগুলো (আওয়ামী লীগের) প্রত্যাহার করা হবে।

আওয়ামী লীগের নেতাদের বিএনপি ও অন্যান্য দলে অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে নাহিদ কুমিল্লার দেবিদ্বারের একটি ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, দেবিদ্বারে গণমাধ্যম ও পুলিশ সুপারের সামনে বড় আয়োজন করে ২০০ জন আওয়ামী লীগের লোক বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। এটা শুধু একটি উদাহরণ।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ট্রুথ কমিশনের মাধ্যমে ‘আওয়ামী লীগ প্রশ্ন’ সমাধান না হওয়ায় দেশ ভুগছে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী দলকে যারা সমর্থন করেছে আর যারা গণহত্যা বা সন্ত্রাসে জড়িত—এই দুই শ্রেণির মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য করতে হবে।

এর আগে এক দর্শক বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন কি না এবং তা ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে?’ এর জবাবে মির্জা ফখরুল অভিযোগটিকে ‘সাধারণীকরণ’ বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি লড়াই করেছি। আমরা এতটা দেউলিয়া অবস্থায় পৌঁছাইনি যে ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করতে হবে।’

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদও জামায়াতে ইসলামীর ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ নাকচ করেন। এমন ধারণার জন্য তিনি ‘হলুদ সাংবাদিকতা’কে দায়ী করে বলেন, ‘আমাদের দলে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এত রক্ত ও জীবন দেওয়ার পর ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করার প্রশ্নই ওঠে না।’ তবে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ দেওয়া হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এ প্রসঙ্গে বলেন, অনুপ্রবেশ নিয়ে বিতর্ক অর্থহীন, কারণ এটি বাংলাদেশের রাজনীতির একটি বাস্তবতা। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘অতীতে আমরা দেখেছি, পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে কীভাবে ছাত্রলীগের নির্বাহী সদস্য হওয়া যেত।’ তবে তাঁর মতে, ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঠেকাতে হলে কেবল ব্যক্তি নয়, বরং ‘লুটপাটের অর্থনীতিকে’ উপড়ে ফেলতে হবে।

সংলাপে মির্জা ফখরুল বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনায় দেশের মানুষ আবারও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এবং নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন, বিএনপি শুরু থেকে নির্বাচনের পক্ষে থাকলেও বিলম্বের কারণে নির্বাচন বানচালের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মির্জা ফখরুল জানান, বিএনপি ‘ভিশন-২০৩০’ ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে দেশকে স্থিতিশীল করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে।

সিপিবির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমও নির্বাচন বিলম্ব বা ভন্ডুল করার রাজনৈতিক অপচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলাগুলো ‘সুপরিকল্পিত’ বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ হলেও কেবল নির্বাচনেই সব সমস্যার সমাধান হবে, এই ধারণা ভুল।

জনগণের ক্ষমতায়ন, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ এবং অর্থ ও দুর্নীতির প্রভাবমুক্ত রাজনীতির ওপর মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম জোর দেন। তিনি বলেন, সমাজতন্ত্রের লক্ষ্য নিয়েই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল এবং সেই লক্ষ্য সামনে রেখে নির্বাচনে জনগণের কাছে যাওয়ার অঙ্গীকার করছে সিপিবি।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ ‘ইনসাফের বাংলাদেশ’ ও মানবিক সমাজ গড়ার ভিশন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তায়ন দূর করে নিরাপদ ও আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই তাঁদের লক্ষ্য। শিক্ষা খাতে অবৈতনিক শিক্ষা, প্রযুক্তিনির্ভর পাঠ্যক্রম এবং জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। নারী, কৃষক, শ্রমিক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুযোগ বাড়িয়ে বেকারত্ব শূন্যে নামানোর পরিকল্পনার কথাও তিনি তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ডেইলি স্টারের কনসাল্টিং এডিটর কামাল আহমেদ এই আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা ও নাগরিকদের চাওয়া জানতে দ্য ডেইলি স্টার আয়োজন করে ‘স্টার নির্বাচনী সংলাপ’। আজ বেলা সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন-মৈত্রী সম্মেলনে এই আয়োজন শুরু হয়।

ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনামের পক্ষে যুগ্ম সম্পাদক আশা মেহরীন আমিন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘ডেইলি স্টার একটি সৎ, জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ সরকারে বিশ্বাস করে, যারা আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো সমুন্নত রাখবে। এটি শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের অধীনেই সম্ভব, যা কেবল একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব হবে। তবে আমরা এটাও জানি যে, সরকার যতই চেষ্টা করুক না কেন, এটা সম্ভব করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সহযোগিতার প্রয়োজন।’

আশা মেহরীন আমিন আরও বলেন, ‘এখন থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করার এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য সবকিছু করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’

অনুষ্ঠানে অংশ নেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক, নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ, নাগরিক অধিকারকর্মী মিজানুর রহমান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় নিরীহ গ্রেপ্তারদের মুক্তি না দিলে বাড়বে ক্ষোভ: হেফাজত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় নিরীহ গ্রেপ্তারদের মুক্তি না দিলে বাড়বে ক্ষোভ: হেফাজত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মামলায় গ্রেপ্তার নিরীহ সমালোচনাকারীদের মুক্তি দাবি করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি করেন হেফাজতের এই দুই নেতা।

বিবৃতিতে মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে যারা নিরীহ সমালোচনাকারী, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় ভারতপন্থী পত্রিকা দুটির ওপর বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার ক্ষোভ বাড়বে বই কমবে না।’

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার ‘শান্তিপূর্ণ’ প্রতিবাদ জারি থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান। তাঁরা বলেন, ‘প্রথম আলো-ডেইলি স্টার নিছক গণমাধ্যম নয়, বরং এ দেশে দিল্লির সাউথ ব্লকের অ্যাজেন্ডা ও বিশেষ মতাদর্শিক রাজনীতির ফুটসোলজার হিসেবে ভাড়া খাটা প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জারি থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ভবনের সামনে একদল লোক জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা ভবন দুটিতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন।

বিবৃতিতে এই দুই নেতা আরও বলেন, ‘মার্কিন ওয়ার অন টেররের সিপাহি ও ভারতপন্থী পত্রিকা হিসেবে সমালোচিত প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার অভিযোগে কোনো নিরীহ সমালোচনাকারীকে গ্রেপ্তার বা নির্যাতন করা যাবে না।’ তবে প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা সহিংস হওয়াও হেফাজতে ইসলাম সমর্থন করে না বলে জানান তাঁরা।

হেফাজতের দুই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, ‘এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে শুধু একজনের পরিচয়ে তাঁর প্রাক্তন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা মাদ্রাসার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত শয়তানির আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে “জঙ্গি” ন্যারেটিভের গডফাদার প্রথম আলো। আর তার দোসর ডেইলি স্টার সেসব ন্যারেটিভ বিদেশিদের গলাধঃকরণ করিয়েছে। এভাবে পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে এ দেশের অগণিত আলেম, মাদ্রাসাছাত্র ও ধর্মপ্রাণ তরুণকে “জঙ্গিবাদের” তকমা দিয়ে জেল-জুলুমের সম্মতি উৎপাদন করা হয়েছিল। এর দায় পত্রিকা দুটি কখনো এড়াতে পারে না।’

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান আরও বলেন, ‘এক-এগারোর সময় পত্রিকা দুটির গণবিরোধী ভূমিকা আজও আমাদের জন্য সতর্কতা। প্রথম আলো-ডেইলি স্টার নিছক গণমাধ্যম নয়, বরং এ দেশে দিল্লির সাউথ ব্লকের অ্যাজেন্ডা ও বিশেষ মতাদর্শিক রাজনীতির ফুটসোলজার হিসেবে ভাড়া খাটা প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জারি থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত