বিচারব্যবস্থা ঠিক না থাকলে অন্য কিছু ঠিক থাকার সুযোগ নেই: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০: ০০
Thumbnail image
আমীর খসরু। ফাইল ছবি

বিচারব্যবস্থা ঠিক না থাকলে বাকি কিছু ঠিক থাকার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। একই সঙ্গে তিনি ২০১৬ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানকে উৎখাতে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পরে চার হাজার বিচারক ও এক লাখের সরকারি কর্মকর্তাকে বহিষ্কারের কথা তুলে ধরেন। খসরু বলেন, ‘সেই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ কী করবে, না করবে তার বোঝার ও চিন্তার বিষয় আছে।’

আজ শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সঙ্গে বাংলাদেশ সফররত তুরস্কের ইন্টারন্যাশনাল জুরিস্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। বেলা ৩টার পর থেকে শুরু হওয়া বৈঠকটি চলে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।

বিএনপির পক্ষে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাজভীরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক নাসির উদ্দীন অসীম। ১৬ সদস্যের জুরিস্ট ইউনিয়ন প্রতিনিধি ছিলেন রফিক কোরকুসুজ কামাল কেয়া, মেহসুরেত আকিনলি, হোসনি ইয়াযযান, হান্না একবুলাট, রাসিম আয়তিন প্রমুখ।

পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফেরত আনতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ওদের সঙ্গে আলোচনাটা অব্যাহত থাকবে। কারণ, বিচারব্যবস্থা ঠিক না থাকলে দেশে বাকি কিছু ঠিক থাকার সুযোগ নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার বিগত দিনে যে ক্ষতি করেছে, সেখানে (তুরস্ক) ১২ হাজারের মধ্যে ৪ হাজার বিচারককে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ১ লাখ ২৫ হাজার কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ কী করবে, না করবে তার বোঝার ও চিন্তার বিষয় আছে।’

বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যারা যারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, তাদের বিষয়ে আলাপ হয়েছে। তাদের কীভাবে বিচারের আওতায় আনা হয়, সেটা তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে প্রচলন আছে। যারা দেশে আছে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের এবং রাজনীতিবিদ স্বৈরাচারের সঙ্গে একাত্মতা দেখিয়ে এত লোকের প্রাণহানি ঘটিয়েছে। গুম, খুন, হত্যা, মিথ্যা মামলা, পুলিশি হেফাজতে হত্যাকাণ্ড, জেলে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে মৃত্যু। সার্বিকভাবে যে কাজগুলো, যেটা তুরস্কেও হয়েছিল।’

২০১৬ সালের জুলাই মাসে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানকে উৎখাতের চেষ্টা করে সেনাবাহিনীর একটি অংশ। সেটা ব্যর্থ করে দেয় এরদোয়ানের সমর্থকেরা। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে চার হাজার বিচারক ও এক লাখের বেশি বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বহিষ্কার করা হয়।

তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পরে দেশটি থেকে অনেকেই পালিয়ে গেছেন দাবি করে খসরু জানান, ৫ আগস্টের পরে বাংলাদেশের স্বৈরাচার সমর্থকেরা পালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘তুরস্কের চক্রান্তের সঙ্গে জড়িতরা অনেকেই পালিয়ে গেছেন। আমাদের বেলায় যারা স্বৈরাচারের সঙ্গে জড়িত ছিল। কিছু কিছু জায়গায় তো মিল আছে। ওখানে অনেক লোক পালিয়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তারা পালিয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতা ও বাংলাদেশের আগামী দিনে কীভাবে এটাকে মোকাবিলা করতে পারি তা বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত