হুসাইন আহমদ

‘ভাগ্য আব্দুল বারীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। পূর্ব পাকিস্তানের হাজার হাজার মানুষের মতো তিনিও একটি ভুল করেছিলেন, মারাত্মক ভুল— পাকিস্তানি সেনা টহলের চোখে পড়েন তিনি। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৪ বছর। তাকে ঘিরে ধরে পাকিস্তানি সশস্ত্র সেনারা, তিনি তখন ভয়ে কাঁপছিলেন— কারণ কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে হত্যা করা হবে।’
ভয়ার্ত ও লোমহর্ষক এই চিত্র তুলে ধরে শুরু হয় দক্ষিণ এশিয়ার সাংবাদিকতার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের একটি। এর মধ্য দিয়েই পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ দমনের নামে সেনাবাহিনী যে নৃশংশ অভিযান চালাচ্ছিল, তার বাস্তব চিত্র প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়।
সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া প্রতিবেদনটি লিখেছিলেন একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক। এর জন্য তাকে সবকিছু ফেলে সপরিবারে প্রাণ নিয়ে পাকিস্তান থেকে পালাতে হয়েছিল। সেই সাংবাদিক আর কেউ নন, তিনি অ্যান্থনি মাসকারেনহাস।
‘জেনোসাইড’ নামে শুধু এক শব্দের বিশাল মাস্টহেডে প্রতিবেদনটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে ১৯৭১ সালের ১৩ জুন যুক্তরাজ্যের সানডে টাইমসে প্রকাশিত হয়। তাতে প্রতিবেদনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম দমন-পীড়নের তথ্য উঠে আসে। কিন্তু সেই দমন-পীড়ন ব্যর্থ হয়। ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
মাসকারেনহাসের প্রতিবেদন যে এই বিজয়ে গুরুত্ব ভূমিকা রেখেছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তার প্রতিবেদনই বিশ্ববাসীকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং ভারতকে সামরিক পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করে।
তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সানডে টাইমসের সম্পাদক হ্যারল্ড ইভান্সকে বলেছিলেন, ‘এই প্রতিবেদন আমাকে এতটাই নাড়া দিয়েছিল যে, ভারত সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তুতির জন্য আমি ইউরোপ ও মস্কো সফরে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাতে বাধ্য হয়েছি।’
তবে বাঙালিদের স্বাধীনতা অর্জন মাসকারেনহাসের মূল উদ্দেশ্য তা ছিল না। ইভান্স তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘তিনি (মাসকারেনহাস) কেবল একজন ভালো সাংবাদিক ছিলেন, যিনি সততার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেছেন।’ কিন্তু এর জন্য তাকে বড় আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে চলে যেতে হয় তাকে।

একজন সাহসী সাংবাদিকের আত্মত্যাগ
১৯৭১ সালে যখন যুদ্ধ শুরুর সময় পাকিস্তানের করাচির একজন সম্মানিত সাংবাদিক ছিলেন মাসকারেনহাস। সাংবাদিক হিসেবে শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল তাঁর। তিনি ছিলেন গোয়া বংশোদ্ভূত ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সদস্য। স্ত্রী ইভন মাসকারেনহাস ও পাঁচ সন্তান নিয়ে সুখের জীবন ছিল তাঁর।
কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন টিকেনি, ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শুরু হয় সঙ্কট। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে নিরঙ্কুশ জয় পেলেও পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি। পূর্ব পাকিস্তানে বিক্ষোভ বাড়তে থাকে এবং পর্যায়ে আওয়ামী লীগ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে।
এই আন্দোলন দমাতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকায় ব্যাপক গণহত্যা চালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়কে বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং এর প্রথম শিকার হয় জগন্নাথ হলের ছাত্র-শিক্ষকরা। এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহনী গ্রামের দিকে হামলা চালাতে থাকে। তাদের সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর লড়াই শুরু হয়।
শুরুর দিকে দমন-পীড়নের পরিকল্পনা সফল হবে বলে ধারণা করছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। সরকারের এই ‘সাফল্যের গল্প’ তুলে ধরতে ৮ জন পাকিস্তানি সাংবাদিককে পূর্ব পাকিস্তানে আমন্ত্রণ জানায় সেনাবাহিনী। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। বাকিরা সবাই তাঁদের উদ্দেশ্য সাধন ধরলেও মাসকারেনহাস বেঁকে বসেছিলেন, সত্য প্রকাশের কঠিন সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সত্য প্রকাশের ঝুঁকি
অ্যান্থনি মাসকারেনহাস যখন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ফিরে করাচি গেলেন, তখন তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তার স্ত্রী ইভন বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কখনোই তাকে এতটা হতাশ ও বিষণ্ণ দেখিনি। তিনি তখন বলছিলেন, তিনি প্রতিবেদন না লিখলে, তিনি আর কখনো কিছু লিখতে পারবেন না।’
পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সেন্সরশিপ ছিল কঠোর। মাসকারেনহাস জানতেন, তিনি দেশে বসে এই প্রতিবেদন লিখলে তাকে হত্যা করা হবে। তাই তিনি বোনের অসুস্থতার অজুহাতে লন্ডনে চলে যান। সরাসরি সানডে টাইমসের সম্পাদকের কাছে গিয়ে সব খুলে বলেন।
সম্পাদক ইভান্স বলেন, ‘তাঁর কথা এতটাই বিশ্বাসযোগ্য ছিল, যে তার বক্তব্য শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কীভাবে পাকিস্তানি সেনারা সুপরিকল্পিত গণহত্যা চালাচ্ছিল, সেই বর্ণনা উঠে এসেছিল তাঁর কথায়।’ পাকিস্তানি সেনারা এটিকে ‘চূড়ান্ত সমাধান’ বলে অভিহিত করেছিল।
বিপদের মুখে যেভাবে সপরিবারে পালান
কিন্তু যুগান্তকারী এই প্রতিবেদন ছাপার আগে পরিবারের নিরাপত্তার জন্য লন্ডনে থাকা নিশ্চিত করতে হয়েছিল মাসকারেনহাসকে। পরিকল্পনা ছিল, লন্ডন থেকে তিনি একটি টেলিগ্রাম পাঠালে স্ত্রী ও সন্তানরা করাচি থেকে পালাবেন। ওই টেলিগ্রাম বার্তার সংকেত ছিল, ‘অ্যানের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে’।
সেদিনের ঘটনা স্মরণ করে তাঁর স্ত্রী ইভন বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে বার্তাটি পেলাম। আমি আমার সন্তানদের উঠিয়ে দিয়ে বললাম, ‘আমাদের এখনই লন্ডন যেতে হবে। আমরা তখন কাঁদছিলাম, যেন এক শোকযাত্রায় অংশ নিচ্ছি।
কিন্তু সন্দেহ থেকে বাঁচতে তার আগেই মাসকারেনহাসকে পাকিস্তানে ফিরতে হয়েছিল। পরে তিনি গোপনে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান ছাড়েন। লন্ডনে পৌঁছানোর পরদিন অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৩ জুন সানডে টাইমসের প্রথম পাতায় ‘Genocide’ শিরোনামে তাঁর প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের এই প্রতিবেদন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। পাকিস্তান সরকার মাসকারেনহাসকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করে। তবে সাংবাদিক হিসেবে তাঁর সততা ও দক্ষতা অটুট ছিল। পাকিস্তান যে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করেছে সেখবর ১৯৭৯ সালে তিনিই প্রথম প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের বন্ধু মাসকারেনহাস
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এখনও মাসকারেনহাসের সেই প্রতিবেদন সংরক্ষিত আছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মোফিদুল হক বলেন, ‘এটি যুদ্ধকালীন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিবেদন। আমাদের দেশ যখন বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ঠিক তখনই এটি প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন বিশ্ববাসীকে আমাদের দুর্দশার কথা জানাতে সাহায্য করে।’
ইভন মাসকারেনহাস ও তাঁর সন্তানরা আস্তে আস্তে নতুন জীবনে অভ্যস্ত হন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘লন্ডনের মানুষ খুবই গম্ভীর ছিল। করাচিতে আমরা হাসিখুশি ছিলাম, কিন্তু এখানে সবাই ছিল নীরব। কিন্তু আমরা কখনোই আমাদের সিদ্ধান্তের জন্য অনুতপ্ত নই।
(অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের যুগান্তকারী প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিবিসির নিবন্ধ থেকে অনূদিত)।

‘ভাগ্য আব্দুল বারীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। পূর্ব পাকিস্তানের হাজার হাজার মানুষের মতো তিনিও একটি ভুল করেছিলেন, মারাত্মক ভুল— পাকিস্তানি সেনা টহলের চোখে পড়েন তিনি। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৪ বছর। তাকে ঘিরে ধরে পাকিস্তানি সশস্ত্র সেনারা, তিনি তখন ভয়ে কাঁপছিলেন— কারণ কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে হত্যা করা হবে।’
ভয়ার্ত ও লোমহর্ষক এই চিত্র তুলে ধরে শুরু হয় দক্ষিণ এশিয়ার সাংবাদিকতার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের একটি। এর মধ্য দিয়েই পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ দমনের নামে সেনাবাহিনী যে নৃশংশ অভিযান চালাচ্ছিল, তার বাস্তব চিত্র প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়।
সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া প্রতিবেদনটি লিখেছিলেন একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক। এর জন্য তাকে সবকিছু ফেলে সপরিবারে প্রাণ নিয়ে পাকিস্তান থেকে পালাতে হয়েছিল। সেই সাংবাদিক আর কেউ নন, তিনি অ্যান্থনি মাসকারেনহাস।
‘জেনোসাইড’ নামে শুধু এক শব্দের বিশাল মাস্টহেডে প্রতিবেদনটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে ১৯৭১ সালের ১৩ জুন যুক্তরাজ্যের সানডে টাইমসে প্রকাশিত হয়। তাতে প্রতিবেদনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম দমন-পীড়নের তথ্য উঠে আসে। কিন্তু সেই দমন-পীড়ন ব্যর্থ হয়। ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
মাসকারেনহাসের প্রতিবেদন যে এই বিজয়ে গুরুত্ব ভূমিকা রেখেছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তার প্রতিবেদনই বিশ্ববাসীকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং ভারতকে সামরিক পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করে।
তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সানডে টাইমসের সম্পাদক হ্যারল্ড ইভান্সকে বলেছিলেন, ‘এই প্রতিবেদন আমাকে এতটাই নাড়া দিয়েছিল যে, ভারত সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তুতির জন্য আমি ইউরোপ ও মস্কো সফরে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাতে বাধ্য হয়েছি।’
তবে বাঙালিদের স্বাধীনতা অর্জন মাসকারেনহাসের মূল উদ্দেশ্য তা ছিল না। ইভান্স তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘তিনি (মাসকারেনহাস) কেবল একজন ভালো সাংবাদিক ছিলেন, যিনি সততার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেছেন।’ কিন্তু এর জন্য তাকে বড় আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে চলে যেতে হয় তাকে।

একজন সাহসী সাংবাদিকের আত্মত্যাগ
১৯৭১ সালে যখন যুদ্ধ শুরুর সময় পাকিস্তানের করাচির একজন সম্মানিত সাংবাদিক ছিলেন মাসকারেনহাস। সাংবাদিক হিসেবে শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল তাঁর। তিনি ছিলেন গোয়া বংশোদ্ভূত ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সদস্য। স্ত্রী ইভন মাসকারেনহাস ও পাঁচ সন্তান নিয়ে সুখের জীবন ছিল তাঁর।
কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন টিকেনি, ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শুরু হয় সঙ্কট। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে নিরঙ্কুশ জয় পেলেও পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি। পূর্ব পাকিস্তানে বিক্ষোভ বাড়তে থাকে এবং পর্যায়ে আওয়ামী লীগ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে।
এই আন্দোলন দমাতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকায় ব্যাপক গণহত্যা চালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়কে বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং এর প্রথম শিকার হয় জগন্নাথ হলের ছাত্র-শিক্ষকরা। এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহনী গ্রামের দিকে হামলা চালাতে থাকে। তাদের সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর লড়াই শুরু হয়।
শুরুর দিকে দমন-পীড়নের পরিকল্পনা সফল হবে বলে ধারণা করছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। সরকারের এই ‘সাফল্যের গল্প’ তুলে ধরতে ৮ জন পাকিস্তানি সাংবাদিককে পূর্ব পাকিস্তানে আমন্ত্রণ জানায় সেনাবাহিনী। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। বাকিরা সবাই তাঁদের উদ্দেশ্য সাধন ধরলেও মাসকারেনহাস বেঁকে বসেছিলেন, সত্য প্রকাশের কঠিন সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সত্য প্রকাশের ঝুঁকি
অ্যান্থনি মাসকারেনহাস যখন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ফিরে করাচি গেলেন, তখন তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তার স্ত্রী ইভন বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কখনোই তাকে এতটা হতাশ ও বিষণ্ণ দেখিনি। তিনি তখন বলছিলেন, তিনি প্রতিবেদন না লিখলে, তিনি আর কখনো কিছু লিখতে পারবেন না।’
পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সেন্সরশিপ ছিল কঠোর। মাসকারেনহাস জানতেন, তিনি দেশে বসে এই প্রতিবেদন লিখলে তাকে হত্যা করা হবে। তাই তিনি বোনের অসুস্থতার অজুহাতে লন্ডনে চলে যান। সরাসরি সানডে টাইমসের সম্পাদকের কাছে গিয়ে সব খুলে বলেন।
সম্পাদক ইভান্স বলেন, ‘তাঁর কথা এতটাই বিশ্বাসযোগ্য ছিল, যে তার বক্তব্য শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কীভাবে পাকিস্তানি সেনারা সুপরিকল্পিত গণহত্যা চালাচ্ছিল, সেই বর্ণনা উঠে এসেছিল তাঁর কথায়।’ পাকিস্তানি সেনারা এটিকে ‘চূড়ান্ত সমাধান’ বলে অভিহিত করেছিল।
বিপদের মুখে যেভাবে সপরিবারে পালান
কিন্তু যুগান্তকারী এই প্রতিবেদন ছাপার আগে পরিবারের নিরাপত্তার জন্য লন্ডনে থাকা নিশ্চিত করতে হয়েছিল মাসকারেনহাসকে। পরিকল্পনা ছিল, লন্ডন থেকে তিনি একটি টেলিগ্রাম পাঠালে স্ত্রী ও সন্তানরা করাচি থেকে পালাবেন। ওই টেলিগ্রাম বার্তার সংকেত ছিল, ‘অ্যানের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে’।
সেদিনের ঘটনা স্মরণ করে তাঁর স্ত্রী ইভন বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে বার্তাটি পেলাম। আমি আমার সন্তানদের উঠিয়ে দিয়ে বললাম, ‘আমাদের এখনই লন্ডন যেতে হবে। আমরা তখন কাঁদছিলাম, যেন এক শোকযাত্রায় অংশ নিচ্ছি।
কিন্তু সন্দেহ থেকে বাঁচতে তার আগেই মাসকারেনহাসকে পাকিস্তানে ফিরতে হয়েছিল। পরে তিনি গোপনে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান ছাড়েন। লন্ডনে পৌঁছানোর পরদিন অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৩ জুন সানডে টাইমসের প্রথম পাতায় ‘Genocide’ শিরোনামে তাঁর প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের এই প্রতিবেদন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। পাকিস্তান সরকার মাসকারেনহাসকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করে। তবে সাংবাদিক হিসেবে তাঁর সততা ও দক্ষতা অটুট ছিল। পাকিস্তান যে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করেছে সেখবর ১৯৭৯ সালে তিনিই প্রথম প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের বন্ধু মাসকারেনহাস
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এখনও মাসকারেনহাসের সেই প্রতিবেদন সংরক্ষিত আছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মোফিদুল হক বলেন, ‘এটি যুদ্ধকালীন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিবেদন। আমাদের দেশ যখন বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ঠিক তখনই এটি প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন বিশ্ববাসীকে আমাদের দুর্দশার কথা জানাতে সাহায্য করে।’
ইভন মাসকারেনহাস ও তাঁর সন্তানরা আস্তে আস্তে নতুন জীবনে অভ্যস্ত হন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘লন্ডনের মানুষ খুবই গম্ভীর ছিল। করাচিতে আমরা হাসিখুশি ছিলাম, কিন্তু এখানে সবাই ছিল নীরব। কিন্তু আমরা কখনোই আমাদের সিদ্ধান্তের জন্য অনুতপ্ত নই।
(অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের যুগান্তকারী প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিবিসির নিবন্ধ থেকে অনূদিত)।
হুসাইন আহমদ

‘ভাগ্য আব্দুল বারীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। পূর্ব পাকিস্তানের হাজার হাজার মানুষের মতো তিনিও একটি ভুল করেছিলেন, মারাত্মক ভুল— পাকিস্তানি সেনা টহলের চোখে পড়েন তিনি। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৪ বছর। তাকে ঘিরে ধরে পাকিস্তানি সশস্ত্র সেনারা, তিনি তখন ভয়ে কাঁপছিলেন— কারণ কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে হত্যা করা হবে।’
ভয়ার্ত ও লোমহর্ষক এই চিত্র তুলে ধরে শুরু হয় দক্ষিণ এশিয়ার সাংবাদিকতার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের একটি। এর মধ্য দিয়েই পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ দমনের নামে সেনাবাহিনী যে নৃশংশ অভিযান চালাচ্ছিল, তার বাস্তব চিত্র প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়।
সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া প্রতিবেদনটি লিখেছিলেন একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক। এর জন্য তাকে সবকিছু ফেলে সপরিবারে প্রাণ নিয়ে পাকিস্তান থেকে পালাতে হয়েছিল। সেই সাংবাদিক আর কেউ নন, তিনি অ্যান্থনি মাসকারেনহাস।
‘জেনোসাইড’ নামে শুধু এক শব্দের বিশাল মাস্টহেডে প্রতিবেদনটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে ১৯৭১ সালের ১৩ জুন যুক্তরাজ্যের সানডে টাইমসে প্রকাশিত হয়। তাতে প্রতিবেদনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম দমন-পীড়নের তথ্য উঠে আসে। কিন্তু সেই দমন-পীড়ন ব্যর্থ হয়। ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
মাসকারেনহাসের প্রতিবেদন যে এই বিজয়ে গুরুত্ব ভূমিকা রেখেছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তার প্রতিবেদনই বিশ্ববাসীকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং ভারতকে সামরিক পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করে।
তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সানডে টাইমসের সম্পাদক হ্যারল্ড ইভান্সকে বলেছিলেন, ‘এই প্রতিবেদন আমাকে এতটাই নাড়া দিয়েছিল যে, ভারত সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তুতির জন্য আমি ইউরোপ ও মস্কো সফরে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাতে বাধ্য হয়েছি।’
তবে বাঙালিদের স্বাধীনতা অর্জন মাসকারেনহাসের মূল উদ্দেশ্য তা ছিল না। ইভান্স তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘তিনি (মাসকারেনহাস) কেবল একজন ভালো সাংবাদিক ছিলেন, যিনি সততার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেছেন।’ কিন্তু এর জন্য তাকে বড় আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে চলে যেতে হয় তাকে।

একজন সাহসী সাংবাদিকের আত্মত্যাগ
১৯৭১ সালে যখন যুদ্ধ শুরুর সময় পাকিস্তানের করাচির একজন সম্মানিত সাংবাদিক ছিলেন মাসকারেনহাস। সাংবাদিক হিসেবে শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল তাঁর। তিনি ছিলেন গোয়া বংশোদ্ভূত ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সদস্য। স্ত্রী ইভন মাসকারেনহাস ও পাঁচ সন্তান নিয়ে সুখের জীবন ছিল তাঁর।
কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন টিকেনি, ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শুরু হয় সঙ্কট। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে নিরঙ্কুশ জয় পেলেও পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি। পূর্ব পাকিস্তানে বিক্ষোভ বাড়তে থাকে এবং পর্যায়ে আওয়ামী লীগ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে।
এই আন্দোলন দমাতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকায় ব্যাপক গণহত্যা চালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়কে বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং এর প্রথম শিকার হয় জগন্নাথ হলের ছাত্র-শিক্ষকরা। এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহনী গ্রামের দিকে হামলা চালাতে থাকে। তাদের সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর লড়াই শুরু হয়।
শুরুর দিকে দমন-পীড়নের পরিকল্পনা সফল হবে বলে ধারণা করছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। সরকারের এই ‘সাফল্যের গল্প’ তুলে ধরতে ৮ জন পাকিস্তানি সাংবাদিককে পূর্ব পাকিস্তানে আমন্ত্রণ জানায় সেনাবাহিনী। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। বাকিরা সবাই তাঁদের উদ্দেশ্য সাধন ধরলেও মাসকারেনহাস বেঁকে বসেছিলেন, সত্য প্রকাশের কঠিন সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সত্য প্রকাশের ঝুঁকি
অ্যান্থনি মাসকারেনহাস যখন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ফিরে করাচি গেলেন, তখন তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তার স্ত্রী ইভন বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কখনোই তাকে এতটা হতাশ ও বিষণ্ণ দেখিনি। তিনি তখন বলছিলেন, তিনি প্রতিবেদন না লিখলে, তিনি আর কখনো কিছু লিখতে পারবেন না।’
পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সেন্সরশিপ ছিল কঠোর। মাসকারেনহাস জানতেন, তিনি দেশে বসে এই প্রতিবেদন লিখলে তাকে হত্যা করা হবে। তাই তিনি বোনের অসুস্থতার অজুহাতে লন্ডনে চলে যান। সরাসরি সানডে টাইমসের সম্পাদকের কাছে গিয়ে সব খুলে বলেন।
সম্পাদক ইভান্স বলেন, ‘তাঁর কথা এতটাই বিশ্বাসযোগ্য ছিল, যে তার বক্তব্য শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কীভাবে পাকিস্তানি সেনারা সুপরিকল্পিত গণহত্যা চালাচ্ছিল, সেই বর্ণনা উঠে এসেছিল তাঁর কথায়।’ পাকিস্তানি সেনারা এটিকে ‘চূড়ান্ত সমাধান’ বলে অভিহিত করেছিল।
বিপদের মুখে যেভাবে সপরিবারে পালান
কিন্তু যুগান্তকারী এই প্রতিবেদন ছাপার আগে পরিবারের নিরাপত্তার জন্য লন্ডনে থাকা নিশ্চিত করতে হয়েছিল মাসকারেনহাসকে। পরিকল্পনা ছিল, লন্ডন থেকে তিনি একটি টেলিগ্রাম পাঠালে স্ত্রী ও সন্তানরা করাচি থেকে পালাবেন। ওই টেলিগ্রাম বার্তার সংকেত ছিল, ‘অ্যানের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে’।
সেদিনের ঘটনা স্মরণ করে তাঁর স্ত্রী ইভন বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে বার্তাটি পেলাম। আমি আমার সন্তানদের উঠিয়ে দিয়ে বললাম, ‘আমাদের এখনই লন্ডন যেতে হবে। আমরা তখন কাঁদছিলাম, যেন এক শোকযাত্রায় অংশ নিচ্ছি।
কিন্তু সন্দেহ থেকে বাঁচতে তার আগেই মাসকারেনহাসকে পাকিস্তানে ফিরতে হয়েছিল। পরে তিনি গোপনে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান ছাড়েন। লন্ডনে পৌঁছানোর পরদিন অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৩ জুন সানডে টাইমসের প্রথম পাতায় ‘Genocide’ শিরোনামে তাঁর প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের এই প্রতিবেদন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। পাকিস্তান সরকার মাসকারেনহাসকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করে। তবে সাংবাদিক হিসেবে তাঁর সততা ও দক্ষতা অটুট ছিল। পাকিস্তান যে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করেছে সেখবর ১৯৭৯ সালে তিনিই প্রথম প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের বন্ধু মাসকারেনহাস
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এখনও মাসকারেনহাসের সেই প্রতিবেদন সংরক্ষিত আছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মোফিদুল হক বলেন, ‘এটি যুদ্ধকালীন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিবেদন। আমাদের দেশ যখন বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ঠিক তখনই এটি প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন বিশ্ববাসীকে আমাদের দুর্দশার কথা জানাতে সাহায্য করে।’
ইভন মাসকারেনহাস ও তাঁর সন্তানরা আস্তে আস্তে নতুন জীবনে অভ্যস্ত হন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘লন্ডনের মানুষ খুবই গম্ভীর ছিল। করাচিতে আমরা হাসিখুশি ছিলাম, কিন্তু এখানে সবাই ছিল নীরব। কিন্তু আমরা কখনোই আমাদের সিদ্ধান্তের জন্য অনুতপ্ত নই।
(অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের যুগান্তকারী প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিবিসির নিবন্ধ থেকে অনূদিত)।

‘ভাগ্য আব্দুল বারীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। পূর্ব পাকিস্তানের হাজার হাজার মানুষের মতো তিনিও একটি ভুল করেছিলেন, মারাত্মক ভুল— পাকিস্তানি সেনা টহলের চোখে পড়েন তিনি। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৪ বছর। তাকে ঘিরে ধরে পাকিস্তানি সশস্ত্র সেনারা, তিনি তখন ভয়ে কাঁপছিলেন— কারণ কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে হত্যা করা হবে।’
ভয়ার্ত ও লোমহর্ষক এই চিত্র তুলে ধরে শুরু হয় দক্ষিণ এশিয়ার সাংবাদিকতার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের একটি। এর মধ্য দিয়েই পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ দমনের নামে সেনাবাহিনী যে নৃশংশ অভিযান চালাচ্ছিল, তার বাস্তব চিত্র প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়।
সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া প্রতিবেদনটি লিখেছিলেন একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক। এর জন্য তাকে সবকিছু ফেলে সপরিবারে প্রাণ নিয়ে পাকিস্তান থেকে পালাতে হয়েছিল। সেই সাংবাদিক আর কেউ নন, তিনি অ্যান্থনি মাসকারেনহাস।
‘জেনোসাইড’ নামে শুধু এক শব্দের বিশাল মাস্টহেডে প্রতিবেদনটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে ১৯৭১ সালের ১৩ জুন যুক্তরাজ্যের সানডে টাইমসে প্রকাশিত হয়। তাতে প্রতিবেদনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম দমন-পীড়নের তথ্য উঠে আসে। কিন্তু সেই দমন-পীড়ন ব্যর্থ হয়। ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
মাসকারেনহাসের প্রতিবেদন যে এই বিজয়ে গুরুত্ব ভূমিকা রেখেছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তার প্রতিবেদনই বিশ্ববাসীকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং ভারতকে সামরিক পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করে।
তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সানডে টাইমসের সম্পাদক হ্যারল্ড ইভান্সকে বলেছিলেন, ‘এই প্রতিবেদন আমাকে এতটাই নাড়া দিয়েছিল যে, ভারত সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তুতির জন্য আমি ইউরোপ ও মস্কো সফরে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাতে বাধ্য হয়েছি।’
তবে বাঙালিদের স্বাধীনতা অর্জন মাসকারেনহাসের মূল উদ্দেশ্য তা ছিল না। ইভান্স তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘তিনি (মাসকারেনহাস) কেবল একজন ভালো সাংবাদিক ছিলেন, যিনি সততার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেছেন।’ কিন্তু এর জন্য তাকে বড় আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে চলে যেতে হয় তাকে।

একজন সাহসী সাংবাদিকের আত্মত্যাগ
১৯৭১ সালে যখন যুদ্ধ শুরুর সময় পাকিস্তানের করাচির একজন সম্মানিত সাংবাদিক ছিলেন মাসকারেনহাস। সাংবাদিক হিসেবে শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল তাঁর। তিনি ছিলেন গোয়া বংশোদ্ভূত ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সদস্য। স্ত্রী ইভন মাসকারেনহাস ও পাঁচ সন্তান নিয়ে সুখের জীবন ছিল তাঁর।
কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন টিকেনি, ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শুরু হয় সঙ্কট। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে নিরঙ্কুশ জয় পেলেও পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি। পূর্ব পাকিস্তানে বিক্ষোভ বাড়তে থাকে এবং পর্যায়ে আওয়ামী লীগ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে।
এই আন্দোলন দমাতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকায় ব্যাপক গণহত্যা চালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়কে বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং এর প্রথম শিকার হয় জগন্নাথ হলের ছাত্র-শিক্ষকরা। এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহনী গ্রামের দিকে হামলা চালাতে থাকে। তাদের সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর লড়াই শুরু হয়।
শুরুর দিকে দমন-পীড়নের পরিকল্পনা সফল হবে বলে ধারণা করছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। সরকারের এই ‘সাফল্যের গল্প’ তুলে ধরতে ৮ জন পাকিস্তানি সাংবাদিককে পূর্ব পাকিস্তানে আমন্ত্রণ জানায় সেনাবাহিনী। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। বাকিরা সবাই তাঁদের উদ্দেশ্য সাধন ধরলেও মাসকারেনহাস বেঁকে বসেছিলেন, সত্য প্রকাশের কঠিন সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সত্য প্রকাশের ঝুঁকি
অ্যান্থনি মাসকারেনহাস যখন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ফিরে করাচি গেলেন, তখন তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তার স্ত্রী ইভন বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কখনোই তাকে এতটা হতাশ ও বিষণ্ণ দেখিনি। তিনি তখন বলছিলেন, তিনি প্রতিবেদন না লিখলে, তিনি আর কখনো কিছু লিখতে পারবেন না।’
পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সেন্সরশিপ ছিল কঠোর। মাসকারেনহাস জানতেন, তিনি দেশে বসে এই প্রতিবেদন লিখলে তাকে হত্যা করা হবে। তাই তিনি বোনের অসুস্থতার অজুহাতে লন্ডনে চলে যান। সরাসরি সানডে টাইমসের সম্পাদকের কাছে গিয়ে সব খুলে বলেন।
সম্পাদক ইভান্স বলেন, ‘তাঁর কথা এতটাই বিশ্বাসযোগ্য ছিল, যে তার বক্তব্য শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কীভাবে পাকিস্তানি সেনারা সুপরিকল্পিত গণহত্যা চালাচ্ছিল, সেই বর্ণনা উঠে এসেছিল তাঁর কথায়।’ পাকিস্তানি সেনারা এটিকে ‘চূড়ান্ত সমাধান’ বলে অভিহিত করেছিল।
বিপদের মুখে যেভাবে সপরিবারে পালান
কিন্তু যুগান্তকারী এই প্রতিবেদন ছাপার আগে পরিবারের নিরাপত্তার জন্য লন্ডনে থাকা নিশ্চিত করতে হয়েছিল মাসকারেনহাসকে। পরিকল্পনা ছিল, লন্ডন থেকে তিনি একটি টেলিগ্রাম পাঠালে স্ত্রী ও সন্তানরা করাচি থেকে পালাবেন। ওই টেলিগ্রাম বার্তার সংকেত ছিল, ‘অ্যানের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে’।
সেদিনের ঘটনা স্মরণ করে তাঁর স্ত্রী ইভন বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে বার্তাটি পেলাম। আমি আমার সন্তানদের উঠিয়ে দিয়ে বললাম, ‘আমাদের এখনই লন্ডন যেতে হবে। আমরা তখন কাঁদছিলাম, যেন এক শোকযাত্রায় অংশ নিচ্ছি।
কিন্তু সন্দেহ থেকে বাঁচতে তার আগেই মাসকারেনহাসকে পাকিস্তানে ফিরতে হয়েছিল। পরে তিনি গোপনে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান ছাড়েন। লন্ডনে পৌঁছানোর পরদিন অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৩ জুন সানডে টাইমসের প্রথম পাতায় ‘Genocide’ শিরোনামে তাঁর প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের এই প্রতিবেদন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। পাকিস্তান সরকার মাসকারেনহাসকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করে। তবে সাংবাদিক হিসেবে তাঁর সততা ও দক্ষতা অটুট ছিল। পাকিস্তান যে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করেছে সেখবর ১৯৭৯ সালে তিনিই প্রথম প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের বন্ধু মাসকারেনহাস
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এখনও মাসকারেনহাসের সেই প্রতিবেদন সংরক্ষিত আছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মোফিদুল হক বলেন, ‘এটি যুদ্ধকালীন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিবেদন। আমাদের দেশ যখন বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ঠিক তখনই এটি প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন বিশ্ববাসীকে আমাদের দুর্দশার কথা জানাতে সাহায্য করে।’
ইভন মাসকারেনহাস ও তাঁর সন্তানরা আস্তে আস্তে নতুন জীবনে অভ্যস্ত হন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘লন্ডনের মানুষ খুবই গম্ভীর ছিল। করাচিতে আমরা হাসিখুশি ছিলাম, কিন্তু এখানে সবাই ছিল নীরব। কিন্তু আমরা কখনোই আমাদের সিদ্ধান্তের জন্য অনুতপ্ত নই।
(অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের যুগান্তকারী প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিবিসির নিবন্ধ থেকে অনূদিত)।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাইবার
১৬ মিনিট আগে
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় সরকার এর ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকা উচিত। দেশ গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকার ও গণমাধ্যমকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা...
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে থাকা ‘সন্তানের আয়’ দেখানোর বাধ্যবাধকতা বিষয়ে স্পষ্টতা চেয়ে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এর পরপরই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, এই তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক প্রেস...
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং সব ধরনের সাইবার অপরাধকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’
ড. ইউনূস বলেন, সরকার সব ধরনের নাগরিক সেবাকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে অনেক সেবা দেশে ও বিদেশে অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে। এসব সেবাকে সুরক্ষিত ও নির্বিঘ্ন রাখতে হলে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি। নাগরিক সেবার খাতগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস আরও বলেন, সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিসহ যেসব প্রতিষ্ঠান সাইবার নিরাপত্তাব্যবস্থা নেবে, তাদের নিয়মিত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার হালনাগাদ করতে হবে। পাশাপাশি এসব ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত জনবলকে আরও দক্ষ করে তুলতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট জনবলকে একটি রেটিং পদ্ধতির আওতায় আনতে হবে, যাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাইবার সুরক্ষাসহ প্রকৃত মূল্যায়ন সহজ হয়। ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরে কোনো অপরাধ করে যেন কেউ পার পেয়ে না যায়—সে বিষয়েও জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে বিচার বিভাগের পাশাপাশি কার্যকর ভূমিকা রাখার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ইতিমধ্যে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আরও কিছু প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি।
এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুজব, মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশনসহ অন্যান্য সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি এবং বিটিআরসির মধ্যকার সমন্বয়সাধনের বিষয়ে জোর গুরুত্ব আরোপ করেন।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরের সাইবার নিরাপত্তা আরও দৃঢ় করতে ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং আরও কিছু কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া তিনি সেক্টরাল সার্ট (সিইআরটি) গঠনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সদস্যসচিব ও জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালক ড. মো. তৈয়বুর রহমান পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এজেন্সির কার্যক্রম, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনাসহ সাইবার পরিমণ্ডলে সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ ও পরবর্তী প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রণীত ‘সাইবার ইনসিডেন্ট রিপোর্টিং অ্যান্ড রেস্পনস সিস্টেম’-এর বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
২১ মে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়নের পর এই সংশোধিত অধ্যাদেশের অধীনে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ২৬ আগস্ট জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিল গঠিত হয়। ২৫ সদস্যের এই কাউন্সিলের নেতৃত্বে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং সব ধরনের সাইবার অপরাধকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’
ড. ইউনূস বলেন, সরকার সব ধরনের নাগরিক সেবাকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে অনেক সেবা দেশে ও বিদেশে অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে। এসব সেবাকে সুরক্ষিত ও নির্বিঘ্ন রাখতে হলে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি। নাগরিক সেবার খাতগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস আরও বলেন, সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিসহ যেসব প্রতিষ্ঠান সাইবার নিরাপত্তাব্যবস্থা নেবে, তাদের নিয়মিত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার হালনাগাদ করতে হবে। পাশাপাশি এসব ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত জনবলকে আরও দক্ষ করে তুলতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট জনবলকে একটি রেটিং পদ্ধতির আওতায় আনতে হবে, যাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাইবার সুরক্ষাসহ প্রকৃত মূল্যায়ন সহজ হয়। ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরে কোনো অপরাধ করে যেন কেউ পার পেয়ে না যায়—সে বিষয়েও জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে বিচার বিভাগের পাশাপাশি কার্যকর ভূমিকা রাখার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ইতিমধ্যে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আরও কিছু প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি।
এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুজব, মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশনসহ অন্যান্য সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি এবং বিটিআরসির মধ্যকার সমন্বয়সাধনের বিষয়ে জোর গুরুত্ব আরোপ করেন।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরের সাইবার নিরাপত্তা আরও দৃঢ় করতে ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং আরও কিছু কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া তিনি সেক্টরাল সার্ট (সিইআরটি) গঠনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সদস্যসচিব ও জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালক ড. মো. তৈয়বুর রহমান পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এজেন্সির কার্যক্রম, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনাসহ সাইবার পরিমণ্ডলে সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ ও পরবর্তী প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রণীত ‘সাইবার ইনসিডেন্ট রিপোর্টিং অ্যান্ড রেস্পনস সিস্টেম’-এর বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
২১ মে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়নের পর এই সংশোধিত অধ্যাদেশের অধীনে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ২৬ আগস্ট জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিল গঠিত হয়। ২৫ সদস্যের এই কাউন্সিলের নেতৃত্বে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

১৯৭১ সালে অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের সানডে টাইমসে প্রকাশিত ‘Genocide’ প্রতিবেদন বিশ্ববাসীর সামনে পাকিস্তানের গণহত্যার ভয়াবহ চিত্র উন্মোচিত করে। এই প্রতিবেদন মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়ায় এবং ভারতকে সামরিক হস্তক্ষেপে উৎসাহিত করে। কিন্তু সত্য প্রকাশের জন্য মাসকারেনহাসকে পরিবারসহ পাকিস্তান থেকে
২৭ মার্চ ২০২৫
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় সরকার এর ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকা উচিত। দেশ গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকার ও গণমাধ্যমকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা...
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে থাকা ‘সন্তানের আয়’ দেখানোর বাধ্যবাধকতা বিষয়ে স্পষ্টতা চেয়ে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এর পরপরই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, এই তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক প্রেস...
১ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয় আজ রোববার পরিদর্শন করেছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। এ সময় তিনি বলেছেন, হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেইলি স্টারের উপদেষ্টা সম্পাদক কামাল আহমেদ, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কর্মকর্তারা।
প্রতিষ্ঠান দুটির ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পরিদর্শন শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, পক্ষে-বিপক্ষে মতভেদ থাকাটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তবে সহিংসতা ও হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় সরকার এর ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকা উচিত। দেশ গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকার ও গণমাধ্যমকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, পত্রিকা প্রকাশের সক্ষমতা বড় সাহসিকতা ও পেশাদারত্বের পরিচয়। মিডিয়া সত্য তুলে ধরবে—এটাই জনগণের প্রত্যাশা। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
এ সময় ড. এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৃঢ়তার প্রশংসা করেন। ক্ষতিগ্রস্ত গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, গণমাধ্যম ঘুরে দাঁড়াবে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বজায় থাকবে।

হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয় আজ রোববার পরিদর্শন করেছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। এ সময় তিনি বলেছেন, হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেইলি স্টারের উপদেষ্টা সম্পাদক কামাল আহমেদ, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কর্মকর্তারা।
প্রতিষ্ঠান দুটির ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পরিদর্শন শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, পক্ষে-বিপক্ষে মতভেদ থাকাটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তবে সহিংসতা ও হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় সরকার এর ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকা উচিত। দেশ গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকার ও গণমাধ্যমকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, পত্রিকা প্রকাশের সক্ষমতা বড় সাহসিকতা ও পেশাদারত্বের পরিচয়। মিডিয়া সত্য তুলে ধরবে—এটাই জনগণের প্রত্যাশা। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
এ সময় ড. এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৃঢ়তার প্রশংসা করেন। ক্ষতিগ্রস্ত গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, গণমাধ্যম ঘুরে দাঁড়াবে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বজায় থাকবে।

১৯৭১ সালে অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের সানডে টাইমসে প্রকাশিত ‘Genocide’ প্রতিবেদন বিশ্ববাসীর সামনে পাকিস্তানের গণহত্যার ভয়াবহ চিত্র উন্মোচিত করে। এই প্রতিবেদন মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়ায় এবং ভারতকে সামরিক হস্তক্ষেপে উৎসাহিত করে। কিন্তু সত্য প্রকাশের জন্য মাসকারেনহাসকে পরিবারসহ পাকিস্তান থেকে
২৭ মার্চ ২০২৫
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাইবার
১৬ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে থাকা ‘সন্তানের আয়’ দেখানোর বাধ্যবাধকতা বিষয়ে স্পষ্টতা চেয়ে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এর পরপরই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, এই তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক প্রেস...
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে থাকা ‘সন্তানের আয়’ দেখানোর বাধ্যবাধকতা বিষয়ে স্পষ্টতা চেয়ে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এর পরপরই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, এই তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক।
আজ রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, আরপিওতে না থাকা সত্ত্বেও মনোনয়নপত্রে সন্তানেরও আয়ের হিসাব দেওয়ার বিষয়টি রাখা হয়েছে। যেটা নিয়ে সব জায়গায় একটা প্রশ্ন উঠেছে। কারণ অনেকের সন্তানেরা নিজেরাই উপার্জনক্ষম এবং তাঁরা নির্ভরশীল নন। অনেকেই দেশের বাইরে থাকেন। অনেকেই নিজেরা আলাদাভাবেই ট্যাক্স দেন। এই বিষয়টা নিয়ে একটা জটিলতা হয়ে গেছে। যার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছি এবং কথা বললাম। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং তাঁর সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা বোঝাতে চেয়েছেন নির্ভরশীল সন্তানদের বুঝিয়েছেন। তাঁরা এর ব্যাখ্যা দেবেন যে, এই ‘সন্তান’ শব্দটার অর্থ হলো ‘নির্ভরশীল সন্তান’।
সিইসির সঙ্গে বিএনপির এই বৈঠকের পর বিষয়টি স্পষ্ট করে বিকেলে সব রিটার্নিং কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছে কমিশন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, হলফনামার ক্রম ১০-এ আয়কর সংক্রান্ত তথ্যে সর্বশেষ আয়কর রিটার্ন জমার বিবরণ অংশে প্রদত্ত ছকের ক্রমিক ২,৩ ও ৪ এ উল্লিখিত যথাক্রমে স্বামী/স্ত্রী, সন্তান ও নির্ভরশীলদের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া ঐচ্ছিক মর্মে বিবেচিত হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে থাকা ‘সন্তানের আয়’ দেখানোর বাধ্যবাধকতা বিষয়ে স্পষ্টতা চেয়ে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এর পরপরই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, এই তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক।
আজ রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, আরপিওতে না থাকা সত্ত্বেও মনোনয়নপত্রে সন্তানেরও আয়ের হিসাব দেওয়ার বিষয়টি রাখা হয়েছে। যেটা নিয়ে সব জায়গায় একটা প্রশ্ন উঠেছে। কারণ অনেকের সন্তানেরা নিজেরাই উপার্জনক্ষম এবং তাঁরা নির্ভরশীল নন। অনেকেই দেশের বাইরে থাকেন। অনেকেই নিজেরা আলাদাভাবেই ট্যাক্স দেন। এই বিষয়টা নিয়ে একটা জটিলতা হয়ে গেছে। যার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছি এবং কথা বললাম। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং তাঁর সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা বোঝাতে চেয়েছেন নির্ভরশীল সন্তানদের বুঝিয়েছেন। তাঁরা এর ব্যাখ্যা দেবেন যে, এই ‘সন্তান’ শব্দটার অর্থ হলো ‘নির্ভরশীল সন্তান’।
সিইসির সঙ্গে বিএনপির এই বৈঠকের পর বিষয়টি স্পষ্ট করে বিকেলে সব রিটার্নিং কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছে কমিশন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, হলফনামার ক্রম ১০-এ আয়কর সংক্রান্ত তথ্যে সর্বশেষ আয়কর রিটার্ন জমার বিবরণ অংশে প্রদত্ত ছকের ক্রমিক ২,৩ ও ৪ এ উল্লিখিত যথাক্রমে স্বামী/স্ত্রী, সন্তান ও নির্ভরশীলদের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া ঐচ্ছিক মর্মে বিবেচিত হবে।

১৯৭১ সালে অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের সানডে টাইমসে প্রকাশিত ‘Genocide’ প্রতিবেদন বিশ্ববাসীর সামনে পাকিস্তানের গণহত্যার ভয়াবহ চিত্র উন্মোচিত করে। এই প্রতিবেদন মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়ায় এবং ভারতকে সামরিক হস্তক্ষেপে উৎসাহিত করে। কিন্তু সত্য প্রকাশের জন্য মাসকারেনহাসকে পরিবারসহ পাকিস্তান থেকে
২৭ মার্চ ২০২৫
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাইবার
১৬ মিনিট আগে
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় সরকার এর ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকা উচিত। দেশ গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকার ও গণমাধ্যমকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা...
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক প্রেস...
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, হাদি হত্যার তদন্ত শেষপর্যায়ে রয়েছে এবং আগামী ১০ দিনের মধ্যে (৭ জানুয়ারি) এ মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা সম্ভব হবে। দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে মামলাটি ইতিমধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য প্রকাশ না করলেও উপদেষ্টা বেশ কিছু অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ঘটনার মূল হোতা ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা হুমায়ুন কবির, মা হাসি বেগম, স্ত্রী শাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু ও প্রেমিকা মারিয়া আক্তার লিমা রয়েছেন। এ ছাড়া মো. কবির, নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, সিবিয়ন দিও, সঞ্জয় চিসিম, মো. আমিনুল ইসলাম রাজু ও মো. আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জন ও চারজন সাক্ষী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, ৫২ রাউন্ড গুলি, ম্যাগাজিন, ছোরা, ভুয়া নম্বরপ্লেটসহ একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য আলামত পুলিশের হাতে রয়েছে।
তদন্তে ৫৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপরীতে মোট ২১৮ কোটি টাকার স্বাক্ষরিত চেক জব্দ করা হয়েছে, যা এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে গভীর কোনো ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয় বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভেতরে ফ্যাসিস্টের দোসর ও দুষ্কৃতকারীরা ওত পেতে রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধ করব—দলের ভেতরে খোলস পাল্টানো সুযোগসন্ধানী ও দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করুন। তারা যেন আপনাদের দলে আশ্রয় না পায়, সে বিষয়ে সচেতন হোন। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিন।’
কোর কমিটির সভায় দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করা হয়। উপদেষ্টা জানান, ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে (অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২) এ পর্যন্ত ২২ হাজার ৩৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ১০২টি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার বিষয়েও কথা বলেন। তিনি জানিয়েছেন, এ ঘটনায় র্যাব ও পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। লক্ষ্মীপুর নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগের মূল আসামি রুবেল এবং খুলনায় শ্রমশক্তি নেতা মোতালেব শিকদারকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, হাদি হত্যার বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল অনবরত তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, হাদি হত্যার তদন্ত শেষপর্যায়ে রয়েছে এবং আগামী ১০ দিনের মধ্যে (৭ জানুয়ারি) এ মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা সম্ভব হবে। দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে মামলাটি ইতিমধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য প্রকাশ না করলেও উপদেষ্টা বেশ কিছু অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ঘটনার মূল হোতা ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা হুমায়ুন কবির, মা হাসি বেগম, স্ত্রী শাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু ও প্রেমিকা মারিয়া আক্তার লিমা রয়েছেন। এ ছাড়া মো. কবির, নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, সিবিয়ন দিও, সঞ্জয় চিসিম, মো. আমিনুল ইসলাম রাজু ও মো. আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জন ও চারজন সাক্ষী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, ৫২ রাউন্ড গুলি, ম্যাগাজিন, ছোরা, ভুয়া নম্বরপ্লেটসহ একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য আলামত পুলিশের হাতে রয়েছে।
তদন্তে ৫৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপরীতে মোট ২১৮ কোটি টাকার স্বাক্ষরিত চেক জব্দ করা হয়েছে, যা এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে গভীর কোনো ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয় বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভেতরে ফ্যাসিস্টের দোসর ও দুষ্কৃতকারীরা ওত পেতে রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধ করব—দলের ভেতরে খোলস পাল্টানো সুযোগসন্ধানী ও দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করুন। তারা যেন আপনাদের দলে আশ্রয় না পায়, সে বিষয়ে সচেতন হোন। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিন।’
কোর কমিটির সভায় দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করা হয়। উপদেষ্টা জানান, ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে (অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২) এ পর্যন্ত ২২ হাজার ৩৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ১০২টি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার বিষয়েও কথা বলেন। তিনি জানিয়েছেন, এ ঘটনায় র্যাব ও পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। লক্ষ্মীপুর নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগের মূল আসামি রুবেল এবং খুলনায় শ্রমশক্তি নেতা মোতালেব শিকদারকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, হাদি হত্যার বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল অনবরত তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

১৯৭১ সালে অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের সানডে টাইমসে প্রকাশিত ‘Genocide’ প্রতিবেদন বিশ্ববাসীর সামনে পাকিস্তানের গণহত্যার ভয়াবহ চিত্র উন্মোচিত করে। এই প্রতিবেদন মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়ায় এবং ভারতকে সামরিক হস্তক্ষেপে উৎসাহিত করে। কিন্তু সত্য প্রকাশের জন্য মাসকারেনহাসকে পরিবারসহ পাকিস্তান থেকে
২৭ মার্চ ২০২৫
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাইবার
১৬ মিনিট আগে
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় সরকার এর ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকা উচিত। দেশ গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকার ও গণমাধ্যমকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা...
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে থাকা ‘সন্তানের আয়’ দেখানোর বাধ্যবাধকতা বিষয়ে স্পষ্টতা চেয়ে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এর পরপরই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, এই তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক।
১ ঘণ্টা আগে