Ajker Patrika

দেশে করোনা সংক্রমণে টানা ঊর্ধ্বগতি, অবহেলাই কারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ০৮ জুন ২০২১, ২৩: ১২
দেশে করোনা সংক্রমণে টানা ঊর্ধ্বগতি, অবহেলাই কারণ

ঢাকা: দেশে করোনা সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বগতি, তার লাগাম টানা যেন অসম্ভব হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ। গত এপ্রিল থেকেই এসব এলাকায় সাধারণ সংক্রমণের পাশাপাশি ভয়াবহ রূপ নিতে থাকে ভারতীয় ধরন বা ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট। এর মধ্যে দক্ষিণের বিভাগ খুলনা এখন ভারতীয় ধরনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে প্রধান স্থল যোগাযোগ এ অঞ্চলে হওয়ায় এই বিভাগেই ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞ পরামর্শকে আমলে না নেওয়া ও করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে অবহেলার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।

সীমান্ত এলাকায় উচ্চ সংক্রমণের ফলে সারা দেশে সংক্রমণ হার আবারও বাড়তে শুরু করেছে। করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালগুলোকে। শুধু খুলনায় নয়, সীমান্তবর্তী অন্যান্য এলাকার পাশাপাশি সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ছে জেলা সদরের শহরগুলোতে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত এক মাসের মধ্যে আজ মঙ্গলবার দেশে করোনায় রেকর্ড শনাক্ত ও প্রাণহানির ঘটনার ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৩২২ জনের। এর আগে গত ৯ মে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

ঢাকা বিভাগে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা কম হলেও চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে গত দুই দিনে সংক্রমণ ৩ থেকে ৫ শতাংশ বেড়েছে। মাঝে রাজশাহীর পরিস্থিতি সবার মধ্যে শঙ্কার জন্ম দিলেও এখন সবচেয়ে বাজে অবস্থা খুলনার।

ভারতের সঙ্গে এই বিভাগের ২৮৪ কিলোমিটার সীমান্ত সম্পর্ক রয়েছে। এরই মধ্যে বিভাগের কয়েকটি জেলায় ডেলটা ধরনের (বি.১৬১৭. ২) উপস্থিতি পাওয়া গেছে। গত ২৬ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত সীমান্তে কঠোর বিধিনিষেধ থাকলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি চলাচল। বিশেষ করে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভারতে যারা আটকা পড়েছেন, তাদের অনেকেই এখন ফিরছেন। এর মধ্যে আবার অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে ফিরছেন। ফলে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে এই ধরন। তবে এখনো ফেরত আসাদের রাখা হচ্ছে দুই সপ্তাহের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে। তারপরও থেমে নেই সংক্রমণ।

এ বিভাগের যশোরেই দেশের প্রধান স্থলবন্দর। এই বন্দর দিয়ে আসা দুজনের মাধ্যমে দেশে ভারতীয় ধরন প্রথম প্রবেশ করে। পরে সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, কক্সবাজার, নাটোর, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গাসহ সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় এ ধরন ছড়িয়ে পড়ে। গত মাসেই এসব জেলায় সংক্রমণ মাত্রা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ এই জেলায় কেন্দ্রীয় কোনো অক্সিজেন ব্যবস্থা নেই। গুরুতর কোভিড রোগীদের ভরসা জেলার একমাত্র ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। এই হাসপাতালে বর্তমানে ২৬৫টি ছোট-বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। এসব সিলিন্ডার সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা ব্যবহার করা যায় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কেএমসিএইচ) রোগীদের চাপে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা পাঁচ কিলোলিটার থেকে দশ কিলোলিটারে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। হাসপাতালটিতে সাধারণ রোগীদের জন্য ৫০০ শয্যা থাকলেও সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ বাড়ায় দৈনিক গড়ে ১০০০ থেকে ১২০০ রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ২০টি আইসিইউ ও ১৪টি হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলা আছে বলে জানিয়েছেন কেএমসিএইচের পরিচালক বিধান চন্দ্র দাশ।

খুলনা ছাড়াও বিভাগের অন্যান্য জেলার মধ্যে সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও নড়াইলের হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। এসব জেলায় ৪৯টি আইসিইউ ও ৩০৪টি হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলা রয়েছে। তবে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে হাসপাতালগুলোর যে খবর পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, এসব জেলায় এই মুহূর্তে ৪৬টি আইসিইউ ও মাত্র ৮৮টি হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলা সক্রিয় আছে।

অন্যদিকে যশোর ছাড়াও ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, বাগেরহাট ও নড়াইলে কোনো আইসিইউ নেই। সীমান্ত চলাচল বন্ধ থাকলেও বেপরোয়া চলাচল ও স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা বাস্তবায়ন না থাকায় ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও সাতক্ষীরায় ক্রমেই ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে করোনা। এরই মধ্যে এসব জেলায় সংক্রমণ মাত্রা ৩০ শতাংশ থেকে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, দেশের আট বিভাগের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে গত দুদিনে সংক্রমণ মাত্রা ৩ থেকে ৫ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে আগের দিন ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ সংক্রমণ হার থাকলেও পরদিন তা ১৪ শতাংশের কাছাকাছি চলে যায়। খুলনায় ২৩ শতাংশ থেকে প্রায় ৩১ শতাংশে এবং সিলেট বিভাগে ১৩ শতাংশ থেকে এক লাফে প্রায় ১৭ শতাংশে ওঠে। অন্যদিকে কিছুটা কমেছে ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক রোবেদ আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা সীমান্ত এলাকাগুলোতে পরীক্ষার হার বাড়িয়েছি। দ্রুত যাতে রোগী শনাক্ত করা যায়, সে জন্য অ্যান্টিজেন পরীক্ষার হার বাড়ানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র থেকে একটি মেডিকেল টিম চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান করছে। তাঁরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। এই মুহূর্তে জরুরি রোগী ছাড়া আর কোনো রোগীকে যেন ভর্তি না নেওয়া হয়, সংশ্লিষ্টদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুধু এই জেলা নয়, সীমান্তের অন্য এলাকাগুলোতেও এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

করোনা সংক্রমণে এমন ঊর্ধ্বগতি বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ আমলে না নেওয়ার ফল বলে মন্তব্য করেছেন কোভিড-১৯ বিষয়ক জনস্বাস্থ্য কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আগেই আমরা বলেছিলাম সংক্রমণের তীব্রতা ঈদের পর বাড়বে। এখন তাই হচ্ছে। আমরা বারবার সুপারিশ করেছি, অনেক আগেই অধিক সংক্রমিত এলাকা চিহ্নিত করে সেগুলোকে লকডাউনের আওতায় আনা হোক। কিন্তু কেন যেন সেগুলো আমলে নেওয়া হয়নি। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাসনাত কি সরকারের অংশ— ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাসনাত কি সরকারের অংশ— ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয়–প্রশ্রয় দিয়ে ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, হাসনাত সরকারের অংশ নয়, সুতরাং তাঁর বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নয়। বাংলাদেশ কোনো ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী ব্যক্তিকে’ কখনো আশ্রয় দেবে না।

গতকাল ঢাকায় এক সমাবেশে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত বলেন, ‘ভারতকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, সম্ভাবনা, ভোটাধিকার ও মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে না, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। ভারতের যারা সেপারেটিস্ট আছে বাংলাদেশে, আমরা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যে সেভেন সিস্টার রয়েছে, সেটাকে ভারত থেকে আলাদ করে দেব।’

তার এই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা চলছে। ভারতও বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।

বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রথমেই তো প্রশ্ন হচ্ছে যে, হাসনাত কি সরকারের অংশ? সে তো সরকারের অংশ না। সরকারের বক্তব্য যদি হতো, সেটা হয় আমি বলতাম নয়তো সরকারের যে সর্বোচ্চ অফিস সেখান থেকে বলতো। কাজেই এটা অনেকটাই অবান্তর।’

বিচ্ছিন্নবাদীদের ‘আশ্রয়–প্রশ্রয়’ দেওয়ার বিষয়ে হাসনাতের বক্তব্যের প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ কোনো সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করে না— এটা আপনারা জানেন আমাদের একটা নীতি আছে। আমরা কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী ব্যক্তিকে আমাদের ভূমিতে আশ্রয় দেব— অবশ্যই এটা সরকার করবে না। এবং আমি অনুমান করি, বাংলাদেশের কোনো সরকারই তা করবে না। এটা একজন ‘অ্যাক্টিভিস্ট’ রাজনীতি করেন, উনি বলতে পারেন, কিন্তু সেটা সরকারের অবস্থান অবশ্যই সেটা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেভিল হান্ট-২: এবার এক দিনে গ্রেপ্তার ১৩৯৮ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডেভিল হান্ট-২: এবার এক দিনে গ্রেপ্তার ১৩৯৮ জন

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২-এর বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে এবার ১ হাজার ৩৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় বিভিন্ন ধরনের অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়। ‎

‎পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, গতকাল মঙ্গলবার থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২-এর অভিযানে সারা দেশে ১ হাজার ৩৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৫২৩ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানে অবৈধ একটি পিস্তল, পাঁচটি দেশীয় অস্ত্র, একটি ওয়ান শুটারগান, একটি বন্দুক, তিন রাউন্ড গুলি, একটি ফায়ার করা গুলি, তিন রাউন্ড কার্তুজ, ১১টি দেশীয় অস্ত্র ও ১২টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ডিএমপি, আরএমপি, জিএমপি, ঢাকা রেঞ্জ, চট্টগ্রাম রেঞ্জ, খুলনা রেঞ্জ ও রাজশাহী রেঞ্জ ইউনিটের অভিযানে এসব অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। বেশ কয়েকটি ইউনিট চেকপোস্ট চালায়।

এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২১ হাজার ৬৩০টি মোটরসাইকেল ও ১৯ হাজার ৯৪টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে একটি একনলা বন্ধুক, দুটি ধারালো ছুরি, একটি বার্মিজ চাকু, এক রাউন্ড গুলি ও একটি ফায়ার করা গুলি উদ্ধার এবং ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী। প্রথম দিন গ্রেপ্তার করা হয় ৪৭৬ জন, দ্বিতীয় দিন ৫৬৭, তৃতীয় দিন ৮২৩ ও চতুর্থ দিন ১ হাজার ৩৯৮ জন। গত চার দিনে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২-এ মোট গ্রেপ্তার ৩ হাজার ২৬৪ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এই সরকারের শুরু থেকেই ভারতের সঙ্গে ‘টানাপোড়েন আছে’— এটা বাস্তবতা, মেনে নেওয়াই ভালো: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৭
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: পিআইডি
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: পিআইডি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ‘টানাপোড়েন আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন এই সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। এটা মেনে নিয়েই ‘ভালো সম্পর্ক তৈরির’ চেষ্টা সরকার করছে বলেও তিনি জানান। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তৌহিদ হোসেন।

এর আগে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ হামিদউল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশে ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির’ কথা তুলে ধরা হয়।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটা (দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে তলব) খুব অপ্রত্যাশিত কিছু না। সাধারণত এটা ঘটে। একজনকে ডাকলে আরেকজনকে ডাকা হয়।

তৌহিদ হোসেন বলেন, এই বাস্তবতাকে মেনে নেওয়াই ভালো যে—আসলে এই সরকারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত (সম্পর্কে) টানাপোড়েন তো আছেই ভারতের সঙ্গে।

তবে বাস্তবতা মেনে নিয়েই বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে জানিয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘তবে আমরা চাইলেই যে হবে, এমন কোনো কথা নেই। দুই পক্ষ থেকেই সম্পর্ককে এগোনোর চেষ্টা করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র: এবার গুলশান থানার মামলায় গ্রেপ্তার মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩১
মেজর সাদিক ও স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন।
মেজর সাদিক ও স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন।

মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকে গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

সুমাইয়ার স্বামী মেজর সাদিকুল হকের বিরুদ্ধে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে কোর্ট-মার্শাল গঠন করেছে সেনাবাহিনী।

আদালতে গুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই মোক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুমাইয়া জাফরিনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন ডিবি পুলিশের গুলশান জোনাল টিমের পরিদর্শক মোজাম্মেল হক মামুন।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল সকালে গুলশান-১-এর জব্বার টাওয়ারের পাশে ৩০-৩৫ জন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিক্ষোভ-মিছিল করেন। আসামিরা দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাঁরা দেশবিরোধী স্লোগান দেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। কয়েকজন পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ ওই দিনই গুলশান থানায় মামলা করে।

আবেদনে বলা হয়, এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের জবানবন্দি ও স্থানীয়ভাবে তদন্তে জানা যায়, সুমাইয়া মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অর্থ জোগানদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতা। তিনি সক্রিয়ভাবে দেশবিরোধী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। আসামি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়। তিনি ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত সদস্যদের অর্থ জোগান দিয়ে থাকেন বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এই আসামি সারা দেশের আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীদের সুসংগঠিত করে দেশের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিলেন বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।

রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন গ্রেপ্তার দেখানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। পরে আদালত তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গেরিলা প্রশিক্ষণের ঘটনায় ভাটারা থানায় করা মামলায় গত ৬ আগস্ট সুমাইয়া জাফরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৭ আগস্ট তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ড হয়। রিমান্ড শেষে ১২ আগস্ট সুমাইয়া জাফরিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত