আজকের পত্রিকা ডেস্ক

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত কিছু রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
আজ রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মিজ নার্ডিয়া সিম্পসনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার জন্যও বলেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের কৃষি, কৃষি পণ্য রপ্তানি, কারিগরি প্রশিক্ষণ, গবেষণা, কৃষি খাতের দক্ষ শ্রম শক্তি রপ্তানি বিষয়ে আলোচনা হয়।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব দীর্ঘ দিনের। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বাড়ানো সম্ভব। বিশেষ করে শাকসবজি ও আম রপ্তানি বাড়ানো যায়। অস্ট্রেলিয়ার কৃষি খাতের পরিধি অনেক, আমাদের দেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।’
হাইকমিশনার কৃষি পণ্য আমদানিতে তার দেশের আগ্রহের কথা জানিয়ে নির্দিষ্ট প্রটোকল মেনে পরিশোধন করে পণ্যের মান নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেন। হাইকমিশনার কৃষি গবেষণা ও কারিগরি প্রশিক্ষণে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর কাজ করবেন বলে জানান।

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত কিছু রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
আজ রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মিজ নার্ডিয়া সিম্পসনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার জন্যও বলেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের কৃষি, কৃষি পণ্য রপ্তানি, কারিগরি প্রশিক্ষণ, গবেষণা, কৃষি খাতের দক্ষ শ্রম শক্তি রপ্তানি বিষয়ে আলোচনা হয়।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব দীর্ঘ দিনের। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বাড়ানো সম্ভব। বিশেষ করে শাকসবজি ও আম রপ্তানি বাড়ানো যায়। অস্ট্রেলিয়ার কৃষি খাতের পরিধি অনেক, আমাদের দেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।’
হাইকমিশনার কৃষি পণ্য আমদানিতে তার দেশের আগ্রহের কথা জানিয়ে নির্দিষ্ট প্রটোকল মেনে পরিশোধন করে পণ্যের মান নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেন। হাইকমিশনার কৃষি গবেষণা ও কারিগরি প্রশিক্ষণে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর কাজ করবেন বলে জানান।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত কিছু রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
আজ রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মিজ নার্ডিয়া সিম্পসনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার জন্যও বলেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের কৃষি, কৃষি পণ্য রপ্তানি, কারিগরি প্রশিক্ষণ, গবেষণা, কৃষি খাতের দক্ষ শ্রম শক্তি রপ্তানি বিষয়ে আলোচনা হয়।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব দীর্ঘ দিনের। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বাড়ানো সম্ভব। বিশেষ করে শাকসবজি ও আম রপ্তানি বাড়ানো যায়। অস্ট্রেলিয়ার কৃষি খাতের পরিধি অনেক, আমাদের দেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।’
হাইকমিশনার কৃষি পণ্য আমদানিতে তার দেশের আগ্রহের কথা জানিয়ে নির্দিষ্ট প্রটোকল মেনে পরিশোধন করে পণ্যের মান নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেন। হাইকমিশনার কৃষি গবেষণা ও কারিগরি প্রশিক্ষণে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর কাজ করবেন বলে জানান।

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত কিছু রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
আজ রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মিজ নার্ডিয়া সিম্পসনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার জন্যও বলেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের কৃষি, কৃষি পণ্য রপ্তানি, কারিগরি প্রশিক্ষণ, গবেষণা, কৃষি খাতের দক্ষ শ্রম শক্তি রপ্তানি বিষয়ে আলোচনা হয়।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব দীর্ঘ দিনের। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বাড়ানো সম্ভব। বিশেষ করে শাকসবজি ও আম রপ্তানি বাড়ানো যায়। অস্ট্রেলিয়ার কৃষি খাতের পরিধি অনেক, আমাদের দেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।’
হাইকমিশনার কৃষি পণ্য আমদানিতে তার দেশের আগ্রহের কথা জানিয়ে নির্দিষ্ট প্রটোকল মেনে পরিশোধন করে পণ্যের মান নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেন। হাইকমিশনার কৃষি গবেষণা ও কারিগরি প্রশিক্ষণে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর কাজ করবেন বলে জানান।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার রাত থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ নানা জায়গায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন যানবাহনে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের একাধিক শাখ
৩৩ মিনিট আগে
প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার।
২ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার রাত থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ নানা জায়গায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন যানবাহনে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের একাধিক শাখায়। আক্রান্ত হয়েছে গ্রামীণ গ্রুপের অন্য স্থাপনাও। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বিচ্ছিন্নভাবে মিছিল হলেও পুলিশ আসার আগেই সরে যায় বিক্ষোভকারীরা।
রাজধানীর ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজার, মিরপুর, গাবতলী, মহাখালী, মতিঝিল ও মৌচাকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সকাল ১০টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রমনা কালীমন্দিরের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মিরপুরের মুক্ত বাংলা শপিং কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে পদচারী-সেতু থেকে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে মৌচাক ফ্লাইওভারের ওপর থেকে মৌচাক ক্রসিংয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এক রিকশাচালক আহত হয়েছেন। রাত সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা এবি ব্যাংকের সামনে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে একটি মিনি ট্রাকে আগুন দেওয়া হয়।
রোববার রাতে মহাখালীতে তিতুমীর কলেজের মূল ফটকের সামনে এবং আমতলী মোড় এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। এর আগে রাত ৯টার দিকে ধানমন্ডির সেন্ট্রাল রোডে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনের সড়কে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। রাত ৯টা ৪০ মিনিটে বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ছাড়া শ্যামপুর ও গাবতলীতেও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায় রাত ১০টার পর একটি লেগুনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের পানির ট্যাংকের সামনে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।
ঢাকার সাভার ও ধামরাইয়ে রোববার রাতে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম আগুন দেওয়া হয় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড় করিয়ে রাখা একটি বাসে। রাত ১১টার দিকে আগুন দেওয়া হয় সাভারের বিরুলিয়া এলাকায় দাঁড় করিয়ে রাখা আরেকটি বাসে। ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ‘ঢুলিভিটায় বাসে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আমাদের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠাই। রাত ১১টার দিকে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে বাসের বেশ কিছু অংশ পুড়ে যায়।’ সাভারের বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল ওহাব বলেন, বিরুলিয়ার বটতলা এলাকায় চালক বাস রেখে খেতে গেলে সেটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। রোববার রাত দেড়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের সামনে একটি বাসে আগুন লাগানো হয়।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার কাঠগড় এলাকায় রোববার রাতে রাস্তার পাশে থাকা একটি খালি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। মোটরসাইকেলে করে আসা দুজন বাসটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। গতকাল ভোরে হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট এলাকায় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক এবং চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটে রেললাইনে আগুন ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধের চেষ্টা করা হয়েছে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পেট্রল ঢেলে এক জামায়াত কর্মীর পিকআপ ভ্যান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজারসংলগ্ন উত্তর ফালগুনকরা রাস্তার মাথায় এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পিকআপ ভ্যানটি চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার পশ্চিম ধনমুড়ি গ্রামের জামায়াত কর্মী ফজলুল হক মোল্লার। গতকাল ভোরে মোটরসাইকেল আরোহী দুই দুর্বৃত্ত পেট্রল ঢেলে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা পিকআপটি পুড়িয়ে দেয়। স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগের লোকজন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই কাজ করেছে। ফজলুল হক মোল্লা বলেন, ‘ফজরের পর ফেনী থেকে মাছ আনতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আমার জীবিকা অর্জনের একমাত্র সম্বলটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
গতকাল শেখ হাসিনার রায়ের পর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা শেখ রাসেল শিশুপার্কের সামনে থেকে মিছিল বের করেন। ২০ মিনিটের মতো সেখানে অবস্থান করে সড়কে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পুলিশ আসার আগে তাঁরা পালিয়ে যান। গোপালগঞ্জ সদরের ৭ মার্চ চত্বরের উল্টো দিকে ফসলের মাঠে কয়েকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ আসার খবরে তাঁরা পালিয়ে যান। এ ছাড়া দোলা পেট্রলপাম্পের সামনে ও ডুমদিয়া এলাকায়ও বিক্ষোভ হয়েছে। এর আগে সকালে কাশিয়ানী উপজেলার তিলছড়া বাজার এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাঁরা পালিয়ে যান।
বগুড়ার ধুনটে গ্রামীণ ব্যাংকের গোসাইবাড়ী শাখা কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গত রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ভবনের বারান্দায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে দ্রুত ব্যাংকের কর্মীরা ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ব্যাংকের নৈশপ্রহরী শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি বারান্দাতেই ছিলেন। রাত ৩টার দিকে তিনি বারান্দা থেকে বের হওয়ামাত্র আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পটুয়াখালী ডিবুয়াপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিত্যক্ত গেটে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কালিকাপুর ইউনিয়নের মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শাখাটি আক্রান্ত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকজন ব্যাংকের সামনে এসে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর পেট্রল ঢেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে ব্যাংকের ভেতরে থাকা কর্মকর্তারা গিয়ে পানি ঢেলে আগুন নেভান।
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার বারাদিয়া বাজারে রোববার রাতে গ্রামীণ ব্যাংকের সামনের গেটে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ব্যাংকের কর্মীরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গতকাল গ্রামীণ গ্রুপের দুটি স্থাপনার নামফলক লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ভোর পৌনে ৫টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে কালিয়াকৈরের খাড়াজোড়া এলাকায় গ্রামীণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক-২-এর প্রধান ফটকের নামফলকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রধান ফটকের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। একই দিন ভোর ৫টার দিকে উপজেলার গোয়ালবাথান এলাকায় গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের নামফলকেও পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা।
রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মোহাম্মাদ হাবিব হাসানের ছোট ভাই নাদিম মাহমুদের বাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল বিকেলে ১৪ নম্বর সেক্টরের বটতলা এলাকায় অবস্থিত তাঁর পুরোনো ডুপ্লেক্স বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। যদিও ৫ আগস্টের পর থেকে নাদিম মাহমুদ বা তাঁর পরিবারের কেউ বাড়িটিতে থাকেন না। গতকালের ঘটনায় বাড়ির কেয়ারটেকার মো. হৃদয় ও নাদিম মাহমুদের কর্মচারী মো. বিপ্লব আহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার রাত থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ নানা জায়গায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন যানবাহনে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের একাধিক শাখায়। আক্রান্ত হয়েছে গ্রামীণ গ্রুপের অন্য স্থাপনাও। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বিচ্ছিন্নভাবে মিছিল হলেও পুলিশ আসার আগেই সরে যায় বিক্ষোভকারীরা।
রাজধানীর ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজার, মিরপুর, গাবতলী, মহাখালী, মতিঝিল ও মৌচাকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সকাল ১০টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রমনা কালীমন্দিরের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মিরপুরের মুক্ত বাংলা শপিং কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে পদচারী-সেতু থেকে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে মৌচাক ফ্লাইওভারের ওপর থেকে মৌচাক ক্রসিংয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এক রিকশাচালক আহত হয়েছেন। রাত সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা এবি ব্যাংকের সামনে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে একটি মিনি ট্রাকে আগুন দেওয়া হয়।
রোববার রাতে মহাখালীতে তিতুমীর কলেজের মূল ফটকের সামনে এবং আমতলী মোড় এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। এর আগে রাত ৯টার দিকে ধানমন্ডির সেন্ট্রাল রোডে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনের সড়কে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। রাত ৯টা ৪০ মিনিটে বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ছাড়া শ্যামপুর ও গাবতলীতেও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায় রাত ১০টার পর একটি লেগুনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের পানির ট্যাংকের সামনে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।
ঢাকার সাভার ও ধামরাইয়ে রোববার রাতে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম আগুন দেওয়া হয় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড় করিয়ে রাখা একটি বাসে। রাত ১১টার দিকে আগুন দেওয়া হয় সাভারের বিরুলিয়া এলাকায় দাঁড় করিয়ে রাখা আরেকটি বাসে। ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ‘ঢুলিভিটায় বাসে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আমাদের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠাই। রাত ১১টার দিকে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে বাসের বেশ কিছু অংশ পুড়ে যায়।’ সাভারের বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল ওহাব বলেন, বিরুলিয়ার বটতলা এলাকায় চালক বাস রেখে খেতে গেলে সেটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। রোববার রাত দেড়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের সামনে একটি বাসে আগুন লাগানো হয়।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার কাঠগড় এলাকায় রোববার রাতে রাস্তার পাশে থাকা একটি খালি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। মোটরসাইকেলে করে আসা দুজন বাসটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। গতকাল ভোরে হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট এলাকায় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক এবং চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটে রেললাইনে আগুন ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধের চেষ্টা করা হয়েছে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পেট্রল ঢেলে এক জামায়াত কর্মীর পিকআপ ভ্যান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজারসংলগ্ন উত্তর ফালগুনকরা রাস্তার মাথায় এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পিকআপ ভ্যানটি চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার পশ্চিম ধনমুড়ি গ্রামের জামায়াত কর্মী ফজলুল হক মোল্লার। গতকাল ভোরে মোটরসাইকেল আরোহী দুই দুর্বৃত্ত পেট্রল ঢেলে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা পিকআপটি পুড়িয়ে দেয়। স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগের লোকজন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই কাজ করেছে। ফজলুল হক মোল্লা বলেন, ‘ফজরের পর ফেনী থেকে মাছ আনতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আমার জীবিকা অর্জনের একমাত্র সম্বলটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
গতকাল শেখ হাসিনার রায়ের পর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা শেখ রাসেল শিশুপার্কের সামনে থেকে মিছিল বের করেন। ২০ মিনিটের মতো সেখানে অবস্থান করে সড়কে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পুলিশ আসার আগে তাঁরা পালিয়ে যান। গোপালগঞ্জ সদরের ৭ মার্চ চত্বরের উল্টো দিকে ফসলের মাঠে কয়েকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ আসার খবরে তাঁরা পালিয়ে যান। এ ছাড়া দোলা পেট্রলপাম্পের সামনে ও ডুমদিয়া এলাকায়ও বিক্ষোভ হয়েছে। এর আগে সকালে কাশিয়ানী উপজেলার তিলছড়া বাজার এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাঁরা পালিয়ে যান।
বগুড়ার ধুনটে গ্রামীণ ব্যাংকের গোসাইবাড়ী শাখা কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গত রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ভবনের বারান্দায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে দ্রুত ব্যাংকের কর্মীরা ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ব্যাংকের নৈশপ্রহরী শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি বারান্দাতেই ছিলেন। রাত ৩টার দিকে তিনি বারান্দা থেকে বের হওয়ামাত্র আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পটুয়াখালী ডিবুয়াপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিত্যক্ত গেটে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কালিকাপুর ইউনিয়নের মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শাখাটি আক্রান্ত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকজন ব্যাংকের সামনে এসে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর পেট্রল ঢেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে ব্যাংকের ভেতরে থাকা কর্মকর্তারা গিয়ে পানি ঢেলে আগুন নেভান।
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার বারাদিয়া বাজারে রোববার রাতে গ্রামীণ ব্যাংকের সামনের গেটে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ব্যাংকের কর্মীরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গতকাল গ্রামীণ গ্রুপের দুটি স্থাপনার নামফলক লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ভোর পৌনে ৫টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে কালিয়াকৈরের খাড়াজোড়া এলাকায় গ্রামীণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক-২-এর প্রধান ফটকের নামফলকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রধান ফটকের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। একই দিন ভোর ৫টার দিকে উপজেলার গোয়ালবাথান এলাকায় গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের নামফলকেও পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা।
রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মোহাম্মাদ হাবিব হাসানের ছোট ভাই নাদিম মাহমুদের বাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল বিকেলে ১৪ নম্বর সেক্টরের বটতলা এলাকায় অবস্থিত তাঁর পুরোনো ডুপ্লেক্স বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। যদিও ৫ আগস্টের পর থেকে নাদিম মাহমুদ বা তাঁর পরিবারের কেউ বাড়িটিতে থাকেন না। গতকালের ঘটনায় বাড়ির কেয়ারটেকার মো. হৃদয় ও নাদিম মাহমুদের কর্মচারী মো. বিপ্লব আহত হয়েছেন।

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত কিছু রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)
১০ নভেম্বর ২০২৪
প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার।
২ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
৩ ঘণ্টা আগেমানবতাবিরোধী অপরাধ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশে এই প্রথম কোনো সাবেক সরকারপ্রধানের ফাঁসির সাজা হলো। শেখ হাসিনা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি।
এই মামলায় পতিত শেখ হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাঁচ অভিযোগের দুটিতে এ দুজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অপর তিন অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এই দুজনের সব সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে জুলাই শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার অপর আসামি এবং পরে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল দুজনেই পলাতক।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে এই রায় ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এটিই ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়।
অন্তর্বর্তী সরকার এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছে। রায়ের গভীর তাৎপর্য উপলব্ধি করে সরকার সর্বস্তরের জনগণকে শান্ত, সংযত ও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
রায় ঘোষণা শুরুর আগেই ট্রাইব্যুনালের এজলাসকক্ষ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আসন না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে জড়ো হন জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্য, জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা চৌধুরী মামুনকে এজলাসে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা শুরু হয় দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের উল্লেখযোগ্য অংশ পড়ে শোনানো হয়। রায় ঘোষণা শেষ হয় বেলা ২টা ৫০ মিনিটে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা হতেই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আহত জুলাই যোদ্ধাদের অনেকে হাততালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। শহীদ পরিবারের অনেককেও কাঁদতেও দেখা যায়। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান দাঁড়িয়ে বলেন, ‘এটা আদালত। উচ্ছ্বাস বা যেকোনো প্রতিক্রিয়া ট্রাইব্যুনালের বাইরে দেখাতে হবে।’ পরে সবাই শান্ত হন। পুরোটা সময় নিশ্চুপ ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
অভিযোগ গঠনের চার মাস পর এই মামলার রায়
রায়ের সময় অ্যাটর্নি জেনারেল, ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটররা, তিন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম ও জিএস এস এম ফরহাদ, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী, শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত জুলাই যোদ্ধা, আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল এবং এর আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয় সেনাসদস্য, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যদের। ট্রাইব্যুনালে প্রবেশের সময় সবাইকে তল্লাশি করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেও কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ অনলাইনে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও কাউকে মাঠে দেখা যায়নি।
রায় ঘোষণার শুরুতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান প্রসিকিউশন টিম, তদন্ত সংস্থা, ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানান। স্মরণ করেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের। পরে ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ট্রাইব্যুনালের আইন, রোম স্ট্যাটিউট ও অভিযোগগুলো পড়ে শোনান। এরপর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণ, শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ ফজলে নূর তাপস, হাসানুল হক ইনু ও ঢাবির তৎকালীন ভিসি মাকসুদ কামালের টেলিফোন কথোপকথন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন, সাক্ষীদের বক্তব্য, দুই পক্ষের উপস্থাপন করা যুক্তি তুলে ধরেন। বিদেশে অবস্থানরত লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার এবং মুশফিকুল ফজল আনসারীর অবদান উল্লেখ করা হয়।
সব শেষে সাজার অংশ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। রায়ে বলা হয়, ট্রাইব্যুনালে যেসব কল রেকর্ড শোনানো হয়েছে, তা সঠিক। বিষয়টি ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে। আন্দোলন দমনে হত্যা-নির্যাতনের ঘটনায় তিন আসামি যৌথভাবে দায়ী; যা চৌধুরী মামুন স্বীকার করেছেন।
রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনাল এই মামলার পাঁচটি অভিযোগকে দুই ভাগে ভাগ করেন। এর মধ্যে গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য, ওই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি মাকসুদ কামালকে ফোন করে আন্দোলনকারীদের রাজাকার আখ্যা দিয়ে তাদের ফাঁসি দেওয়ার কথা বলে উসকানি, আদেশ এবং অপরাধ সংঘটনে অধীনস্থদের বাধা না দেওয়া এবং রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনা তাপস এবং পরবর্তী সময়ে হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে কথোপকথনে ড্রোন ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয়, আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি এবং লেথাল উইপন ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ, অপরাধ সংঘটনে অধীনস্থদের বাধা না দেওয়া; ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে গুলি করে হত্যা এবং ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় ৬ জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এই মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী মামুনের পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণে সহায়তা করায় তাঁর শাস্তির মাত্রা কম বলে জানান ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রসিকিউটররা জানান, পলাতক থাকায় এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ পাচ্ছেন না শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল। ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড একটি ঐতিহাসিক রায় বলে অভিহিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রায়ের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, রায়-পরবর্তী সময়ে কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা, উত্তেজনাপ্রসূত আচরণ, সহিংসতা বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে বিশেষ অনুরোধ জানানো হচ্ছে। জনগণের, বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই রায় ঘিরে জনমনে স্বাভাবিকভাবেই আবেগ সৃষ্টি হতে পারে। সেই আবেগের বশবর্তী হয়ে যেন কেউ জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়—সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সবাইকে সতর্ক করেছে। সরকার আরও স্পষ্ট করে জানাচ্ছে, যেকোনো ধরনের অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা বা জনশৃঙ্খলাভঙ্গের চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, আজকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন।’ তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি এই রায়ে সন্তুষ্ট। শেখ হাসিনা এবং তাঁর সহযোগীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের যে তাজা, অকাট্য, জোরালো, বিস্তৃত প্রমাণ রয়েছে, তাতে পৃথিবীর যেকোনো আদালতে বিচার হলেই সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা।
আসিফ নজরুল বলেন, তাঁরা যত দিন আছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকার্য পূর্ণ বেগে চলবে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এই দুই মামলায় সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডসহ আরও কয়েকটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগের আমলে গত ১৪ বছরে ৫৫টি রায় দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনাল থেকে। ২০২৩ সালের ১৩ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার অবসরে যাওয়ার পর বিচারকাজ বন্ধ ছিল ট্রাইব্যুনালের। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জুলাই-আগস্টের প্রায় দেড় হাজার নিহত এবং ৩০ হাজার আহত হওয়ার ঘটনার বিচার করতে গত বছরের ১৪ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে তিনজনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মাধ্যমে শুরু হয় ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম। পরে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা আরেকটি বাড়ানো হয়।
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এই মামলায় চলতি বছরের ১ জুন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানি জারি করা হয়। তবে তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগ গঠনের আগে ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেন চৌধুরী মামুন।
৩ আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ও চিফ প্রসিকিউটরের সূচনা বক্তব্যের পর শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। এই মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রত্যক্ষদর্শীসহ ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়। ২৩ অক্টোবর এই মামলার শুনানি শেষ হয়। ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য ১৭ তারিখ দিন ধার্য করে দেন ট্রাইব্যুনাল।

প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশে এই প্রথম কোনো সাবেক সরকারপ্রধানের ফাঁসির সাজা হলো। শেখ হাসিনা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি।
এই মামলায় পতিত শেখ হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাঁচ অভিযোগের দুটিতে এ দুজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অপর তিন অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এই দুজনের সব সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে জুলাই শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার অপর আসামি এবং পরে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল দুজনেই পলাতক।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে এই রায় ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এটিই ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়।
অন্তর্বর্তী সরকার এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছে। রায়ের গভীর তাৎপর্য উপলব্ধি করে সরকার সর্বস্তরের জনগণকে শান্ত, সংযত ও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
রায় ঘোষণা শুরুর আগেই ট্রাইব্যুনালের এজলাসকক্ষ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আসন না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে জড়ো হন জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্য, জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা চৌধুরী মামুনকে এজলাসে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা শুরু হয় দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের উল্লেখযোগ্য অংশ পড়ে শোনানো হয়। রায় ঘোষণা শেষ হয় বেলা ২টা ৫০ মিনিটে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা হতেই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আহত জুলাই যোদ্ধাদের অনেকে হাততালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। শহীদ পরিবারের অনেককেও কাঁদতেও দেখা যায়। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান দাঁড়িয়ে বলেন, ‘এটা আদালত। উচ্ছ্বাস বা যেকোনো প্রতিক্রিয়া ট্রাইব্যুনালের বাইরে দেখাতে হবে।’ পরে সবাই শান্ত হন। পুরোটা সময় নিশ্চুপ ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
অভিযোগ গঠনের চার মাস পর এই মামলার রায়
রায়ের সময় অ্যাটর্নি জেনারেল, ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটররা, তিন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম ও জিএস এস এম ফরহাদ, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী, শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত জুলাই যোদ্ধা, আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল এবং এর আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয় সেনাসদস্য, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যদের। ট্রাইব্যুনালে প্রবেশের সময় সবাইকে তল্লাশি করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেও কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ অনলাইনে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও কাউকে মাঠে দেখা যায়নি।
রায় ঘোষণার শুরুতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান প্রসিকিউশন টিম, তদন্ত সংস্থা, ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানান। স্মরণ করেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের। পরে ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ট্রাইব্যুনালের আইন, রোম স্ট্যাটিউট ও অভিযোগগুলো পড়ে শোনান। এরপর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণ, শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ ফজলে নূর তাপস, হাসানুল হক ইনু ও ঢাবির তৎকালীন ভিসি মাকসুদ কামালের টেলিফোন কথোপকথন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন, সাক্ষীদের বক্তব্য, দুই পক্ষের উপস্থাপন করা যুক্তি তুলে ধরেন। বিদেশে অবস্থানরত লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার এবং মুশফিকুল ফজল আনসারীর অবদান উল্লেখ করা হয়।
সব শেষে সাজার অংশ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। রায়ে বলা হয়, ট্রাইব্যুনালে যেসব কল রেকর্ড শোনানো হয়েছে, তা সঠিক। বিষয়টি ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে। আন্দোলন দমনে হত্যা-নির্যাতনের ঘটনায় তিন আসামি যৌথভাবে দায়ী; যা চৌধুরী মামুন স্বীকার করেছেন।
রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনাল এই মামলার পাঁচটি অভিযোগকে দুই ভাগে ভাগ করেন। এর মধ্যে গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য, ওই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি মাকসুদ কামালকে ফোন করে আন্দোলনকারীদের রাজাকার আখ্যা দিয়ে তাদের ফাঁসি দেওয়ার কথা বলে উসকানি, আদেশ এবং অপরাধ সংঘটনে অধীনস্থদের বাধা না দেওয়া এবং রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনা তাপস এবং পরবর্তী সময়ে হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে কথোপকথনে ড্রোন ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয়, আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি এবং লেথাল উইপন ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ, অপরাধ সংঘটনে অধীনস্থদের বাধা না দেওয়া; ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে গুলি করে হত্যা এবং ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় ৬ জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এই মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী মামুনের পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণে সহায়তা করায় তাঁর শাস্তির মাত্রা কম বলে জানান ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রসিকিউটররা জানান, পলাতক থাকায় এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ পাচ্ছেন না শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল। ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড একটি ঐতিহাসিক রায় বলে অভিহিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রায়ের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, রায়-পরবর্তী সময়ে কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা, উত্তেজনাপ্রসূত আচরণ, সহিংসতা বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে বিশেষ অনুরোধ জানানো হচ্ছে। জনগণের, বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই রায় ঘিরে জনমনে স্বাভাবিকভাবেই আবেগ সৃষ্টি হতে পারে। সেই আবেগের বশবর্তী হয়ে যেন কেউ জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়—সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সবাইকে সতর্ক করেছে। সরকার আরও স্পষ্ট করে জানাচ্ছে, যেকোনো ধরনের অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা বা জনশৃঙ্খলাভঙ্গের চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, আজকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন।’ তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি এই রায়ে সন্তুষ্ট। শেখ হাসিনা এবং তাঁর সহযোগীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের যে তাজা, অকাট্য, জোরালো, বিস্তৃত প্রমাণ রয়েছে, তাতে পৃথিবীর যেকোনো আদালতে বিচার হলেই সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা।
আসিফ নজরুল বলেন, তাঁরা যত দিন আছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকার্য পূর্ণ বেগে চলবে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এই দুই মামলায় সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডসহ আরও কয়েকটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগের আমলে গত ১৪ বছরে ৫৫টি রায় দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনাল থেকে। ২০২৩ সালের ১৩ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার অবসরে যাওয়ার পর বিচারকাজ বন্ধ ছিল ট্রাইব্যুনালের। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জুলাই-আগস্টের প্রায় দেড় হাজার নিহত এবং ৩০ হাজার আহত হওয়ার ঘটনার বিচার করতে গত বছরের ১৪ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে তিনজনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মাধ্যমে শুরু হয় ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম। পরে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা আরেকটি বাড়ানো হয়।
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এই মামলায় চলতি বছরের ১ জুন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানি জারি করা হয়। তবে তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগ গঠনের আগে ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেন চৌধুরী মামুন।
৩ আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ও চিফ প্রসিকিউটরের সূচনা বক্তব্যের পর শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। এই মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রত্যক্ষদর্শীসহ ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়। ২৩ অক্টোবর এই মামলার শুনানি শেষ হয়। ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য ১৭ তারিখ দিন ধার্য করে দেন ট্রাইব্যুনাল।

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত কিছু রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)
১০ নভেম্বর ২০২৪
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার রাত থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ নানা জায়গায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন যানবাহনে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের একাধিক শাখ
৩৩ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
দুজনেই পলাতক থাকায় মামলার পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানেত চাইলে চিফ প্রসিকিউটর মোহামামদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দুজনকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে রাষ্ট্র দুই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে। একটি হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ২০১৩ সালের যে অপরাধীর বহিঃসমর্পণ চুক্তি। সেই চুক্তি অনুযায়ী তাদেরকে বাংলাদেশ ভারত সরকারের কাছে ফেরত চাইবে। তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত আনার মাধ্যমে সাজা কার্যকর করা যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘দ্বিতীয় প্রক্রিয়া হচ্ছে, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে এনে সেই সাজা কার্যকর করা যেতে পারে। এই ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আসামিরা চাইলে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আপিল দায়ের করতে পারবেন। কিন্তু পলাতকরা আপিল করতে পারবেন না। কারণ পলাতক ব্যক্তির আইনগত অধিকার থাকে না। আপিল করতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশে এসে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তারপর কারাগারে গিয়ে দণ্ডিত ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করতে পারবেন।’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
দুজনেই পলাতক থাকায় মামলার পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানেত চাইলে চিফ প্রসিকিউটর মোহামামদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দুজনকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে রাষ্ট্র দুই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে। একটি হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ২০১৩ সালের যে অপরাধীর বহিঃসমর্পণ চুক্তি। সেই চুক্তি অনুযায়ী তাদেরকে বাংলাদেশ ভারত সরকারের কাছে ফেরত চাইবে। তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত আনার মাধ্যমে সাজা কার্যকর করা যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘দ্বিতীয় প্রক্রিয়া হচ্ছে, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে এনে সেই সাজা কার্যকর করা যেতে পারে। এই ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আসামিরা চাইলে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আপিল দায়ের করতে পারবেন। কিন্তু পলাতকরা আপিল করতে পারবেন না। কারণ পলাতক ব্যক্তির আইনগত অধিকার থাকে না। আপিল করতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশে এসে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তারপর কারাগারে গিয়ে দণ্ডিত ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করতে পারবেন।’

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত কিছু রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)
১০ নভেম্বর ২০২৪
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার রাত থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ নানা জায়গায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন যানবাহনে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের একাধিক শাখ
৩৩ মিনিট আগে
প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার।
২ ঘণ্টা আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়, আজ বাংলাদেশের আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা সারা দেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই রায় ও সাজা একটি মৌলিক নীতিকে পুনঃনিশ্চিত করেছে—যত ক্ষমতাবানই হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষ ও এখনো সেই ক্ষত বহনকারী পরিবারগুলোর জন্য এই রায় সীমিত মাত্রায় হলেও ন্যায়বিচার এনে দিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বছরের পর বছর নিপীড়নে ভেঙে পড়া গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুনর্নির্মাণের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। যে অপরাধগুলো নিয়ে বিচার হয়েছে—তরুণ ও শিশু, যাদের একমাত্র অস্ত্র ছিল তাদের কণ্ঠস্বর, তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগের আদেশ, যা আমাদের আইন ও সরকার–নাগরিক সম্পর্কের মৌলিক বন্ধনকে লঙ্ঘন করেছে। এসব জঘন্য কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মূল মূল্যবোধ—মর্যাদা, দৃঢ়তা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারকে আঘাত করেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁরা শুধুই সংখ্যা নন; তাঁরা ছিলেন আমাদের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও অধিকারসম্পন্ন নাগরিক। গত কয়েক মাসের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে, কীভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি—এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও—ব্যবহার করা হয়েছিল। এই রায় তাঁদের ভোগান্তিকে স্বীকৃতি দেয় এবং আমাদের বিচারব্যবস্থায় অপরাধীদের জবাবদিহির নিশ্চয়তা পুনর্ব্যক্ত করে।
‘বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক জবাবদিহির ধারায় পুনরায় যুক্ত হচ্ছে। পরিবর্তনের পক্ষে দাঁড়ানো শিক্ষার্থী ও নাগরিকেরা এটি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন এবং তাঁদের অনেকেই জীবন দিয়ে মূল্য দিয়েছেন, তাঁদের বর্তমান উৎসর্গ করেছেন আমাদের ভবিষ্যতের জন্য।’
এতে আরও বলা হয়, ‘সামনের পথচলায় শুধু আইনি জবাবদিহি নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠনও জরুরি। প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের জন্য মানুষ কেন সবকিছু ঝুঁকির মুখে ফেলে—তা বোঝা এবং সেই আস্থার উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থা তৈরি করা অপরিহার্য। আজকের রায় সেই যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশ সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি অঙ্গীকারের মাধ্যমে ন্যায়বিচার বাংলাদেশে শুধু নামমাত্র টিকে থাকবে না; এটি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সুদৃঢ় হবে।’

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়, আজ বাংলাদেশের আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা সারা দেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই রায় ও সাজা একটি মৌলিক নীতিকে পুনঃনিশ্চিত করেছে—যত ক্ষমতাবানই হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষ ও এখনো সেই ক্ষত বহনকারী পরিবারগুলোর জন্য এই রায় সীমিত মাত্রায় হলেও ন্যায়বিচার এনে দিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বছরের পর বছর নিপীড়নে ভেঙে পড়া গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুনর্নির্মাণের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। যে অপরাধগুলো নিয়ে বিচার হয়েছে—তরুণ ও শিশু, যাদের একমাত্র অস্ত্র ছিল তাদের কণ্ঠস্বর, তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগের আদেশ, যা আমাদের আইন ও সরকার–নাগরিক সম্পর্কের মৌলিক বন্ধনকে লঙ্ঘন করেছে। এসব জঘন্য কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মূল মূল্যবোধ—মর্যাদা, দৃঢ়তা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারকে আঘাত করেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁরা শুধুই সংখ্যা নন; তাঁরা ছিলেন আমাদের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও অধিকারসম্পন্ন নাগরিক। গত কয়েক মাসের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে, কীভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি—এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও—ব্যবহার করা হয়েছিল। এই রায় তাঁদের ভোগান্তিকে স্বীকৃতি দেয় এবং আমাদের বিচারব্যবস্থায় অপরাধীদের জবাবদিহির নিশ্চয়তা পুনর্ব্যক্ত করে।
‘বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক জবাবদিহির ধারায় পুনরায় যুক্ত হচ্ছে। পরিবর্তনের পক্ষে দাঁড়ানো শিক্ষার্থী ও নাগরিকেরা এটি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন এবং তাঁদের অনেকেই জীবন দিয়ে মূল্য দিয়েছেন, তাঁদের বর্তমান উৎসর্গ করেছেন আমাদের ভবিষ্যতের জন্য।’
এতে আরও বলা হয়, ‘সামনের পথচলায় শুধু আইনি জবাবদিহি নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠনও জরুরি। প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের জন্য মানুষ কেন সবকিছু ঝুঁকির মুখে ফেলে—তা বোঝা এবং সেই আস্থার উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থা তৈরি করা অপরিহার্য। আজকের রায় সেই যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশ সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি অঙ্গীকারের মাধ্যমে ন্যায়বিচার বাংলাদেশে শুধু নামমাত্র টিকে থাকবে না; এটি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সুদৃঢ় হবে।’

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত কিছু রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)
১০ নভেম্বর ২০২৪
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার রাত থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ নানা জায়গায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন যানবাহনে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের একাধিক শাখ
৩৩ মিনিট আগে
প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার।
২ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
৩ ঘণ্টা আগে