Ajker Patrika

খেলাধুলার মধ্য দিয়েই শিশুরা লেখাপড়া শিখবে: প্রধানমন্ত্রী

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৪, ১৬: ৫৩
খেলাধুলার মধ্য দিয়েই শিশুরা লেখাপড়া শিখবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আজকের শিশুরা ডিজিটাল যুগের। কাজেই ডিজিটাল শিক্ষার ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। এখন আমাদের ভবিষ্যৎ দেখতে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ করার। এই শিশুরা তো একদিন এই প্রযুক্তি ব্যবহার শিখবে। আমাদের যে স্মার্ট বাংলাদেশ সে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা, অর্থাৎ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার মূল নেতৃত্ব আজকের শিশুরাই দেবে। আর সেটাই তো আমাদের লক্ষ্য। সেই ভাবে আমরা তাদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

আজ রোববার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অভিভাবকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘লেখাপড়া খুবই দরকার, কিন্তু লেখাপড়ার নামে তাদের ওপর কোনো রকম চাপ সৃষ্টি করবেন না। আমরাই এখন চাচ্ছি, খেলাধুলার মধ্য দিয়েই শিশুরা তাদের লেখাপড়া শিখবে, যাতে তার ভেতরের সুপ্ত মেধাবিকাশের সুযোগ পায়। সেই ভাবে আমরা কারিকুলাম তৈরি করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। কারণ, এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন তো শিশুরা বিশ্বটাকে সামনে দেখতে পায়। ক্লাসে শুধু বই পড়া না চোখে দেখে শিখতে পারে। আর এর পরে তারাই হবে এক স্মার্ট বাংলাদেশের এক স্মার্ট নাগরিক। সেটাই আমরা চাই। আজকের শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে আনব হাসি সবার ঘরে যথার্থ প্রতিপাদ্য গ্রহণ করার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। আমি চাই আমার দেশের প্রতিটা শিশু নিরাপদ জীবন পাক, সুন্দর ও উন্নত জীবন পাক সেটাই আমার কাম্য।’

শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই বাংলাদেশটাকে একটা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন। আজকের শিশুদের কাছে আমার অনুরোধ—গুরুজনদের মানতে হবে, শিক্ষককে মানতে হবে, বাবা-মার কথা শুনে চলতে হবে। বাবা-মার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। তাহলে কেউ বিপথে যেতে পারবে না। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি থেকে দূরে রাখার জন্য ছোটবেলা থেকেই সততার শিক্ষা দিতে হবে। সেই সঙ্গে সঙ্গে গান-বাজনা লেখাপড়া, ধর্মীয় শিক্ষা, ছবি আঁকা থেকে শুরু করে সব ধরনের কারিকুলাম এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। শিক্ষক আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে ছোটবেলা থেকে তাদের ভেতরে যেন মানবিক গুণগুলি বজায় থাকে, সেদিকে যেমন দেখবেন, আবার এই শিশুদের ভেতরে যে সুপ্ত মেধা আছে সেই মেধা ও মানব বিকাশে সুযোগ যেন তারা পায় সেদিকে দেখবেন।’ 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকে বিশ্বব্যাপী আমরা দেখি অনেকেই শিশু অধিকারের কথা বলে, শিশু শিক্ষার কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু আমরা এটিও দেখি যে পাশাপাশি একটি দ্বিমুখী কার্যক্রম। সেই গাজায় শিশুদের ওপর যখন বোমা ফেলা হয়, হত্যা করা হয়, হাসপাতালে বোমা ফেলা হয়, ফিলিস্তিনের ওপর যখন আক্রমণ করা হয়, তখন আমি জানি না এই মানবাধিকার সংস্থাগুলো কোথায় থাকে? তাদের সেই মানবিকতা বোধ কোথায় থাকে? সেটাই আমার প্রশ্ন। আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। কারণ, যুদ্ধের সেই ভয়াবহতা আমরা নিজেরাও দেখেছি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী যেভাবে আমাদের ওপর অত্যাচার করেছে। আমরা সব সময় নির্যাতিত মানুষের পাশে আছি। তাই তো আমার প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে যখন মানুষের ওপর অত্যাচার হলো, শিশুরা আহত অবস্থায় ছিল, তারা যখন আশ্রয় চাইল আমরা মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু আজকে গাজায় শিশুদের যে অবস্থাটা দেখি, নারীদের যে অবস্থাটা দেখি—আমি জানি না বিশ্বের বিবেক কেন নাড়া দেয় না। সেটাই আমার প্রশ্ন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন ’৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছর পরে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করি, তখন আমাদের শিশুদের সব রকম সুরক্ষা দেওয়ার পদক্ষেপ নেই। আমরা ২০০৭ সালে নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইন করে শিশুদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করি। তা ছাড়া ২০১০ সালে জাতীয় শিশু নীতি-২০১১ আমরা প্রণয়ন করি। আমরা শিশু আইন-২০১৩ প্রণয়ন করি, ২০১৮ সালে সেটাকে আবার সংশোধন করে শিশুদের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। আমরা শিশুর উন্নয়ন ও স্বাভাবিক জীবন একীভূত করার লক্ষ্যে শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে শিশুদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি। তা ছাড়া শিশুদের জন্য শিশুসদন প্রতিষ্ঠা, প্রাথমিক বৃত্তিমূলক শিক্ষাদান কর্মসূচি, সারা বাংলাদেশে শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রাইমারি স্কুল ২ কিলোমিটারের মধ্যে যেন এক একটি প্রাইমারি স্কুল হয়—সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আমাদের দেশে মাত্র ৪৫ ভাগ শিশু লেখাপড়া করত; আজকে আমাদের দেশে প্রায় ৯৮ ভাগ শিশু স্কুলে যায় পড়াশোনা করে এবং সেই সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। বিশেষ করে মেয়েরা তো স্কুলে যেতে পারত না, তাদের জন্য আমরা সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আমাদের দেশের কারিগরি শিক্ষার হার ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৮ ভাগ এটি এখন বাড়িয়ে ১৭ দশমিক ৮৮ ভাগে উন্নীত করতে পেরেছি। এ ছাড়া আরও যেন ভালো কারিগরি ও ভোকেশনাল ট্রেনিং পায়, সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। স্কুলগুলোতে আমরা কম্পিউটার ল্যাব করেছি, কম্পিউটার শিক্ষা এবং ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। প্রযুক্তির শিক্ষাটা যেন শিশুকাল থেকে পায়, সে ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। শিশুদের ঝরে পড়ার হার কমিয়ে এনেছি। প্রাথমিক বিদ্যালয়সংখ্যা আমরা বাড়িয়েছি।’ 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সকল সুযোগ একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছিল। মাত্র ৩ বছর ৭ মাস সময় পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি আমাদের একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। যে সংবিধানে এ দেশের মানুষের প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক করা, নারী শিক্ষার সুযোগ, নারী নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য পার্লামেন্টে সংরক্ষিত আসন থেকে শুরু করে সব ব্যবস্থা তিনি করেছিলেন। আজকে আমরা পল্লী বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে যা কিছুই করি, সব ভিত্তি তিনি করে দিয়ে গেছেন। শিশুদের সুরক্ষার জন্য শিশু আইন তিনি প্রণয়ন করেন এবং শিশুদের জন্য তিনি এমন ব্যবস্থা করে যান, যেন কোনো শিশু অবহেলিত না থাকে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, জাতির পিতার যে আকাঙ্ক্ষা ছিল দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত থেকে তিনি অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে দেশকে যখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, আর সেই সময় ১৫ আগস্টের আঘাত এল। এরপর আর বাংলাদেশের মানুষের ভবিষ্যৎ কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। এই টুঙ্গিপাড়ার মাটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জন্ম গ্রহণ করেন। এই মাটিতেই তিনি ঘুমিয়ে আছেন বাবা-মায়ের কবরের পাশে। আজকে এখানে আমরা জাতীয় শিশু দিবস পালন করতে পেরে খুবই আনন্দিত। আমরা একটা জিনিস চাই, এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে, আর সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।’ 

এর আগে জাতির পিতার ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং পরে ১০টা ৩৯ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

এরপর তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপরে পবিত্র সুরা ফাতেহা পাঠ ও বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন তাঁরা। দোয়া-মোনাজাত শেষে রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে রক্ষিত মন্তব্য বইয়ে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন। রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানানোর পর দলীয় প্রধান হিসেবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। এরপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলা ১১টা ২৭ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি প্রাঙ্গণে আয়োজিত শিশু সমাবেশ অনুষ্ঠানে আসন গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ১১টা ৩৭ মিনিটে স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। স্বাগত বক্তব্য শেষে বঙ্গবন্ধু ও শিশু অধিকারবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বেলা ১১টা ৫৩ মিনিটে শিশু প্রতিনিধির বক্তব্য দেন তাইমা তাসনিম। এরপরে বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি এমপি। এরপরে দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে সভাপতির বক্তব্য দেন শিশু প্রতিনিধি তিয়াশা জামিন। সভাপতির বক্তব্যের পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এরপরে প্রধান অতিথি জেলার ১০৪ জন অসচ্ছল, মেধাবী শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজনের হাতে পাঁচ হাজার টাকার আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রধানমন্ত্রীকে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম গোপালগঞ্জের জিআই আবেদীত ব্রোঞ্জের গয়নার স্মারক উপহার ও জিআই সনদ পাওয়া গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ভর্তি হাঁড়ি তুলে দেন। পরে দুপুর ১২টা ৩৩ মিনিটে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১২টা ৫৬ মিনিটে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষ করেন। পরে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী, প্রশিক্ষক ও কলাকুশলীদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। 

এরপরে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার সমাধি প্রাঙ্গণে আয়োজিত বইমেলা ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।

সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মোহাম্মদ ফারুক খান এমপি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমপি, শেখ হেলালুদ্দীন এমপি, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলে নাইম, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, প্রধানমন্ত্রীর নিজ নির্বাচনী এলাকার (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বশার খায়ের, সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুলসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বেলা ৩টা ১৭ মিনিটে হেলিকপ্টারে ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।

আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।

আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।

আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত