Ajker Patrika

ভিসা জটিলতায় ভ্রমণকর হারাচ্ছে সরকার

  • বাংলাদেশিদের ভিসা সীমিত করেছে ভারত। ভিসা সেন্টার ভারতে হওয়ায় ইউরোপের দেশে যেতেও জটিলতা।
  • কঠিন হয়েছে তুরস্ক, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার ভিসাপ্রাপ্তি। থাইল্যান্ডও দিনে ৪০০-র বেশি ভিসা দিচ্ছে না।
  • গত অক্টোবর ও নভেম্বরে ভ্রমণ কর বাবদ সরকারের রাজস্ব আদায় কমেছে প্রায় ১২৬ কোটি টাকা।
মনজুরুল ইসলাম ঢাকা
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ২৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গত বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা সীমিত করে ভারত। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অনেক দেশের ভিসা সেন্টার ভারতে থাকায় সেসব দেশের ভিসা প্রাপ্তিতে দেখা দিয়েছে জটিলতা। এ ছাড়া বিগত কয়েক মাসে কঠিন হয়েছে মালয়েশিয়া, তুরস্ক, মিসর, ইন্দোনেশিয়াসহ বাংলাদেশি পর্যটকদের নিয়মিত গন্তব্যের দেশগুলোর ভিসা প্রাপ্তিও। এতে বাংলাদেশ থেকে বিদেশ ভ্রমণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। যার প্রভাবে ধাক্কা লেগেছে সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম খাত ভ্রমণকর সংগ্রহেও।

হজ, ওমরাহ এবং ক্যানসারের চিকিৎসা ব্যতীত অন্য যেকোনো কাজে দেশের সীমানা পার হতে ভ্রমণকর পরিশোধ বাধ্যতামূলক। সেটি স্থল, রেল ও নৌপথ—সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আবার আকাশপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ক্ষেত্রেই ভ্রমণকর দিতে হয় যাত্রীদের। ফলে কোনো কারণে ভ্রমণ কমলে এ খাত থেকে আয় কমে সরকারের।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরের তুলনায় ২০২৪ সালের একই সময়ে ভ্রমণকর বাবদ সরকারের রাজস্ব আদায় কমেছে প্রায় ১২৬ কোটি টাকা। কেবল গত নভেম্বর মাসেই আগের বছরের নভেম্বরের তুলনায় ভ্রমণকর আদায় কমেছে ৪৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ, টাকায় যা প্রায় ৯৩ কোটি।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর মাসে ভ্রমণকর বাবদ সরকারের রাজস্ব আয় ছিল ১৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা অক্টোবর মাসে এসে দাঁড়ায় ১৭৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আর গত নভেম্বর মাসে ভ্রমণকর বাবদ সরকারের রাজস্ব আয় ছিল মাত্র ১১৫ কোটি ২২ লাখ টাকা।

দেশের পর্যটনশিল্পের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রফিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশিদের বিদেশ ভ্রমণ কমে গেছে মূলত ভিসা প্রাপ্তি জটিল হওয়ার কারণে। যার প্রভাব পড়েছে সরকারের ভ্রমণকর আদায়ের ক্ষেত্রে। বর্তমানে ভারত ভিসা দিচ্ছে না। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনাম ভিসা দিচ্ছে না। ইন্দোনেশিয়া ভিসা ফি বাড়িয়েছে। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার ভিসাপ্রাপ্তির হার কমে গেছে। দৈনিক মাত্র ৪০০ জন বাংলাদেশিকে ভিসা দিচ্ছে থাইল্যান্ড। এর পাশাপাশি আকাশপথে ভ্রমণে উড়োজাহাজের ভাড়া বাড়ার কারণেও পর্যটকেরা বিদেশভ্রমণ কমিয়েছেন।

বিদেশে কর্মী পাঠানো কমার করণেও ভ্রমণকর আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে উল্লেখ করে টোয়াব সভাপতি বলেন, সৌদি আরব ছাড়া বাকি দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিচ্ছে না। সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও বাহরাইন এ মুহূর্তে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা দিচ্ছে না। ফলে কর্মী ভিসায় বিদেশগমনও কমেছে। যার প্রভাব পড়ছে সরকারের ভ্রমণকর আদায়ে। তিনি বলেন, অতীতে বিদেশভ্রমণ কমলে দেশের ভেতরে পর্যটকদের ভ্রমণ বাড়ত। এবার সেটিও আশানুযায়ী হচ্ছে না।

কারণ, সেন্ট মার্টিন, পার্বত্য এলাকাসহ একাধিক গন্তব্যে বিধিনিষেধ থাকায় পর্যটকেরা আগ্রহ হাচ্ছেন।

টোয়াব সূত্র বলছে, ভ্রমণ, চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় ৪০ লাখ মানুষ বিদেশভ্রমণে যায়। যার মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশির গন্তব্য থাকে ভারত। ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম ৯ মাসে (ফেব্রুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ভারতে ভ্রমণ করা বিদেশি পর্যটকের মধ্যে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশিরা, যা গত অক্টোবরে এসে পৌঁছায় দ্বিতীয় অবস্থানে। গত সেপ্টেম্বরে ভারত ভ্রমণে গিয়েছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৬২ বাংলাদেশি। এ সংখ্যা গত অক্টোবরে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৫৮ জনে।

খাতসংশ্লিষ্টরা অবশ্য বলছেন, গত কয়েক মাসে যাঁরা ভারত ভ্রমণ করেছেন, তাঁদের বেশির ভাগের ভিসাই আগে ইস্যু করা। বর্তমানে ভারতের ভিসা সীমিত থাকায় সামনের দিনগুলোয় বাংলাদেশি পর্যটকের বিদেশযাত্রা আরও কমবে। ফলে কমে যাবে ভ্রমণকর বাবদ রাজস্ব আয়ও।

এদিকে সরাসরি ভিসা বন্ধ না করলেও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আবেদন প্রত্যাখ্যান করছে অনেক দেশ। ভিসা প্রসেসিং সহায়তাকারী একাধিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য বলছে, বর্তমানে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া আগের মতো ভিসা দিচ্ছে না। প্রায় ৮০ শতাংশ ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করছে তুরস্ক, মিসর, ভিয়েতনামও। থাইল্যান্ডের ভিসা পেতে অনেক সময় ৪৮ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। ভিসা ফি বাড়িয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কা।

শিক্ষার্থী ভিসায় প্রতিবছর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যায়। তবে ইউরোপের বেশ কিছু দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের ভিসা সেন্টার বাংলাদেশে নেই। এসব দেশের ভিসা নিতে হলে ভারতে গিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে হয়। কিন্তু ভারতের ডাবল এন্ট্রি ভিসা প্রাপ্তির হার কম হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও কাঙ্ক্ষিত দেশে যেতে পারছেন না।

এদিকে যাত্রী কম থাকায় ভারতগামী সাপ্তাহিক ফ্লাইটের সংখ্যা কমিয়ে এনেছে দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো। ভিসা বন্ধ হওয়ার পরপরই গত বছর কলকাতা রুটের ফ্লাইট বন্ধ করে বেসরকারি আকাশ পরিবহন সংস্থা নভোএয়ার। আরেক বেসরকারি উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ভারতগামী সাপ্তাহিক ফ্লাইট ৩২ থেকে ১০টিতে নামিয়ে এনেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত আকাশ পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও ভারতে ফ্লাইট কমিয়েছে। গত জুলাই মাসেও এয়ারলাইনসটির ভারতে সপ্তাহে ৫৯টি ফ্লাইট ছিল, যা গত নভেম্বর মাসে কমে দাঁড়িয়েছে সাপ্তাহিক ২৮টিতে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম জানান, ভারত ভিসা দেওয়া বন্ধ করায় যাত্রী কমেছে। এ জন্য ফ্লাইটসংখ্যা কমানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ রাতে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কারণে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বিআইডব্লিউটিএর জারি করা এক বিশেষ নৌ চলাচল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেসব লঞ্চ নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রাপথে রয়েছে, সেসবসহ অন্য সব নৌযানকে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল বিধিমালা, ১৯৭৬ অনুসরণ করে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬ শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
৬ শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ

৪১তম বিসিএস ব্যাচে নিয়োগ পাওয়া ছয় শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারকে (এএসপি) চাকরি থেকে অপসারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অপসারণ করা এএসপিরা হলেন মো. দেলোয়ার হোসেন, মাহমুদুল হক, মো. ইসহাক হোসেন, মো. মশিউর রহমান, মুহাম্মদ রাকিব আনোয়ার ও সাঈদ করিম মুগ্ধ।

আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালার ৬এর ২(এ) বিধি অনুযায়ী ওই ছয় শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

বিধিতে বলা আছে, শিক্ষানবিশ মেয়াদ চলাকালে কেউ সংশ্লিষ্ট চাকরিতে বহাল থাকার অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হলে সরকারি কর্ম কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ না করেই সরাসরি নিয়োগ অবসান করতে পারবে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের ‘অতিরঞ্জিত’ মন্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ২৬
সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের ‘অতিরঞ্জিত’ মন্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বর্ণনা করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন মহলকে সংখ্যালঘু বিষয়ে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। তিনি বিকেলে সাংবাদিকদের এই বিবৃতির কথা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাঁর মন্তব্য বাস্তব পরিস্থিতির প্রতিফলন নয়। বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এমন কোনো বিভ্রান্তিকর, অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনা বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে।’

বিচ্ছিন্ন কিছু অপরাধমূলক ঘটনাকে পরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক নিপীড়ন হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে আরও বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দিতে সেটার অপব্যবহার করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু মহলে বাছাই করা ও পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে অতিরঞ্জিত ও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সাধারণ ভারতীয় জনগণকে বাংলাদেশ, ভারতের বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যে ব্যক্তির উদাহরণ দিয়েছেন, তিনি ছিলেন তালিকাভুক্ত অপরাধী। চাঁদাবাজির সময় তাঁর মুসলিম সহযোগীর সঙ্গে থাকা অবস্থায় তাঁর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু ঘটে, যাঁকে পরে গ্রেপ্তার করা হয়। এই অপরাধমূলক ঘটনাকে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণের প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা বাস্তবসম্মত নয়, বরং বিভ্রান্তিকর।

বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ভারতের বিভিন্ন মহলকে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে, যা সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থার চেতনাকে ক্ষুণ্ন করে।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত