মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

পরিবার পরিকল্পনার অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের গত এক বছরের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এবং কম বয়সে বিবাহিত মেয়েদের গর্ভধারণের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞেরা এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশের মানুষের ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি অর্থাৎ ৩৭ শতাংশ আসে সরকারি খাত থেকে। এ ছাড়া বেসরকারি খাত থেকে ৫৭ শতাংশ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (এনজিও) থেকে ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসে ৪ শতাংশ উপকরণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি খাত প্রধান উৎস না হলেও মোট জনসংখ্যার বিশাল আকারের বিবেচনায় ৩৭ শতাংশকে বড় হারই বলতে হবে।
মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচ ধরনের পদ্ধতি সক্ষম দম্পতিদের মধ্যে সরকারিভাবে বিতরণ করা হয়। এগুলো হচ্ছে—খাওয়ার বড়ি, ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে খাওয়ার বড়ি ৪৯ শতাংশ, ইনজেক্টেবল ১৯ শতাংশ, কনডম ১০ শতাংশ, ইমপ্ল্যান্ট ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, আইইউডি ৩ শতাংশ এবং পুরুষের এনএসভি অস্ত্রোপচার এবং নারীর টিউবেকটমি অস্ত্রোপচার (স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ) ১২ শতাংশ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। স্বাভাবিক সময়ে অন্যান্য সামগ্রী বিতরণের সংখ্যা হচ্ছে ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার। তবে সরকারিভাবে সামগ্রীগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত না করতে পারায় গত এক বছর এসবের বিতরণ কমে এসেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে পদ্ধতিগুলোর ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। তখন খাবার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ। আর সর্বশেষ গত মাসে তা মাত্র ২ লাখে নেমে এসেছে। একইভাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৯ লাখ ইনজেক্টেবলের ব্যবহার হলেও গত মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজারে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ২৩ লাখ কনডম ব্যবহার হয়েছে। এটি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৬০ শতাংশ কম। গত মাসে কনডমের ব্যবহার ঠেকেছে ৬ লাখ ৮০ হাজারে। গত মাসে ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার হয়েছে পৌনে ২ হাজার। আর আইইউডির ব্যবহার হয়েছে ১ হাজারেরও কম।
অধিদপ্তর সূত্র বলছে, ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে খাওয়ার বড়ি নেই ১৫১টি উপজেলায়। ১৩১টিতে শিগগির মজুত শূন্য হবে। ৭৬টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। একইভাবে ১০৬টি উপজেলায় কনডম এবং ১৩৩টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণগুলোর মজুতের ক্ষেত্রেও একই ধরনের চিত্র দেখা গিয়েছে।
অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পদস্থ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, গত বছরের শুরুতে উপকরণ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তবে তৎকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ সচিব মো. আজিজুর রহমান ক্রয়ের অনুমোদন দেননি। তিনি যেসব উপকরণ আছে, তা দিয়ে কাজ ‘চালিয়ে নিতে’ বলেছিলেন। উচ্চপদস্থ এ কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, তৎকালীন ওই সচিবের ‘দূরদৃষ্টির অভাবে’ এখন সারা দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গত জুনে স্বাস্থ্য খাতের কৌশলগত পরিকল্পনা (ওপি) শেষ হয়েছে। ৫ বছর মেয়াদি নতুন ওপি না হওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন ব্যয়ের ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
এক জেলার চিত্র
মাদারীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে খাবার বড়ি মাঠে নেই। কনডম আছে। ইনজেক্টেবল, আইইউডি আছে। ইমপ্ল্যান্ট সামনের মাসে শেষ হবে। আমরা দম্পতিদের বিকল্প পদ্ধতির পরামর্শ দিচ্ছি। যেমন—নারীদের প্রয়োজনে নিজ উদ্যোগে বড়ি কিনে খেতে বলছি। অথবা আমাদের কাছে বিকল্প যে পদ্ধতি রয়েছে তা গ্রহণ করার কথা বলি। ফলে সংকট যে গুরুতর আকার ধারণ করেছে, তা বলা ঠিক হবে না।’
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা
দেশে বর্তমানে মোট প্রজনন হার ২ দশমিক ১ বলে জানিয়েছে বিবিএস। একজন নারী তার প্রজনন বয়সে (১৫ থেকে ৪৯ বছর) গড়ে যতটি সন্তানের জন্ম দেন, তা-ই মোট প্রজনন হার। অর্থাৎ দেশে বর্তমানে একজন নারী গড়ে দুটির বেশি সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের সংকটের কারণে দেশে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, কিশোরী গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সরকার যেসব উপকরণ বিতরণ করে তার বেশির ভাগই পান অসচ্ছল প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষেরা। ঘাটতির কারণে তাঁরা উপকরণ হাতে পাচ্ছেন না। ফলে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ বাড়বে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে গুরুত্ব কমিয়েছে। তাদের অনেকেই মনে করেন, সাম্প্রতিক দশকে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যাকে কার্যত উপেক্ষা করা হয়েছে।
বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এখন বাংলাদেশ। এহেন দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সাফল্যের আপাত স্থবিরতার চিত্র উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনের পর্যবেক্ষণে। আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্বর্ণযুগ ছিল গত শতকের আশি ও নব্বইয়ের দশক। ১৯৯৩ সালে আমাদের মোট প্রজনন হার ছিল ৩ দশমিক ৩। তখন থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত হার একই রকম ছিল। ২০০৪ এবং ২০০৭ সালে এসে তা কিছুটা কমে। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হার একই অবস্থায় রয়ে গেছে।...আর গত কয়েক বছর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নীতিগত ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। বিষয়টিকে ইদানীং সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।’
ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, দেশের ৭৪ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করছে বা উপকরণ পাচ্ছে ৬৪ শতাংশ দম্পতি। যে দশ শতাংশের সন্তান জন্মদানের পরিকল্পনা নেই, তাদের হাতে কোনো উপকরণও নেই। ওইসব নারীর অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন। এর মধ্যে উপকরণ সরবরাহে সংকট হলে স্বাভাবিকভাবেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
উপকরণ সরবরাহের চলমান সংকট নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ বলেন, ‘ওপি হঠাৎ করে বন্ধ হওয়ায় ক্রয়প্রক্রিয়া থেমে গিয়েছিল। আমরা রাজস্ব বাজেট থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণগুলো কেনার চেষ্টা করছি। ক্রয়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে।’

পরিবার পরিকল্পনার অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের গত এক বছরের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এবং কম বয়সে বিবাহিত মেয়েদের গর্ভধারণের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞেরা এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশের মানুষের ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি অর্থাৎ ৩৭ শতাংশ আসে সরকারি খাত থেকে। এ ছাড়া বেসরকারি খাত থেকে ৫৭ শতাংশ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (এনজিও) থেকে ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসে ৪ শতাংশ উপকরণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি খাত প্রধান উৎস না হলেও মোট জনসংখ্যার বিশাল আকারের বিবেচনায় ৩৭ শতাংশকে বড় হারই বলতে হবে।
মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচ ধরনের পদ্ধতি সক্ষম দম্পতিদের মধ্যে সরকারিভাবে বিতরণ করা হয়। এগুলো হচ্ছে—খাওয়ার বড়ি, ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে খাওয়ার বড়ি ৪৯ শতাংশ, ইনজেক্টেবল ১৯ শতাংশ, কনডম ১০ শতাংশ, ইমপ্ল্যান্ট ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, আইইউডি ৩ শতাংশ এবং পুরুষের এনএসভি অস্ত্রোপচার এবং নারীর টিউবেকটমি অস্ত্রোপচার (স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ) ১২ শতাংশ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। স্বাভাবিক সময়ে অন্যান্য সামগ্রী বিতরণের সংখ্যা হচ্ছে ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার। তবে সরকারিভাবে সামগ্রীগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত না করতে পারায় গত এক বছর এসবের বিতরণ কমে এসেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে পদ্ধতিগুলোর ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। তখন খাবার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ। আর সর্বশেষ গত মাসে তা মাত্র ২ লাখে নেমে এসেছে। একইভাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৯ লাখ ইনজেক্টেবলের ব্যবহার হলেও গত মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজারে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ২৩ লাখ কনডম ব্যবহার হয়েছে। এটি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৬০ শতাংশ কম। গত মাসে কনডমের ব্যবহার ঠেকেছে ৬ লাখ ৮০ হাজারে। গত মাসে ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার হয়েছে পৌনে ২ হাজার। আর আইইউডির ব্যবহার হয়েছে ১ হাজারেরও কম।
অধিদপ্তর সূত্র বলছে, ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে খাওয়ার বড়ি নেই ১৫১টি উপজেলায়। ১৩১টিতে শিগগির মজুত শূন্য হবে। ৭৬টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। একইভাবে ১০৬টি উপজেলায় কনডম এবং ১৩৩টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণগুলোর মজুতের ক্ষেত্রেও একই ধরনের চিত্র দেখা গিয়েছে।
অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পদস্থ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, গত বছরের শুরুতে উপকরণ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তবে তৎকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ সচিব মো. আজিজুর রহমান ক্রয়ের অনুমোদন দেননি। তিনি যেসব উপকরণ আছে, তা দিয়ে কাজ ‘চালিয়ে নিতে’ বলেছিলেন। উচ্চপদস্থ এ কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, তৎকালীন ওই সচিবের ‘দূরদৃষ্টির অভাবে’ এখন সারা দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গত জুনে স্বাস্থ্য খাতের কৌশলগত পরিকল্পনা (ওপি) শেষ হয়েছে। ৫ বছর মেয়াদি নতুন ওপি না হওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন ব্যয়ের ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
এক জেলার চিত্র
মাদারীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে খাবার বড়ি মাঠে নেই। কনডম আছে। ইনজেক্টেবল, আইইউডি আছে। ইমপ্ল্যান্ট সামনের মাসে শেষ হবে। আমরা দম্পতিদের বিকল্প পদ্ধতির পরামর্শ দিচ্ছি। যেমন—নারীদের প্রয়োজনে নিজ উদ্যোগে বড়ি কিনে খেতে বলছি। অথবা আমাদের কাছে বিকল্প যে পদ্ধতি রয়েছে তা গ্রহণ করার কথা বলি। ফলে সংকট যে গুরুতর আকার ধারণ করেছে, তা বলা ঠিক হবে না।’
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা
দেশে বর্তমানে মোট প্রজনন হার ২ দশমিক ১ বলে জানিয়েছে বিবিএস। একজন নারী তার প্রজনন বয়সে (১৫ থেকে ৪৯ বছর) গড়ে যতটি সন্তানের জন্ম দেন, তা-ই মোট প্রজনন হার। অর্থাৎ দেশে বর্তমানে একজন নারী গড়ে দুটির বেশি সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের সংকটের কারণে দেশে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, কিশোরী গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সরকার যেসব উপকরণ বিতরণ করে তার বেশির ভাগই পান অসচ্ছল প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষেরা। ঘাটতির কারণে তাঁরা উপকরণ হাতে পাচ্ছেন না। ফলে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ বাড়বে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে গুরুত্ব কমিয়েছে। তাদের অনেকেই মনে করেন, সাম্প্রতিক দশকে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যাকে কার্যত উপেক্ষা করা হয়েছে।
বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এখন বাংলাদেশ। এহেন দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সাফল্যের আপাত স্থবিরতার চিত্র উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনের পর্যবেক্ষণে। আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্বর্ণযুগ ছিল গত শতকের আশি ও নব্বইয়ের দশক। ১৯৯৩ সালে আমাদের মোট প্রজনন হার ছিল ৩ দশমিক ৩। তখন থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত হার একই রকম ছিল। ২০০৪ এবং ২০০৭ সালে এসে তা কিছুটা কমে। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হার একই অবস্থায় রয়ে গেছে।...আর গত কয়েক বছর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নীতিগত ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। বিষয়টিকে ইদানীং সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।’
ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, দেশের ৭৪ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করছে বা উপকরণ পাচ্ছে ৬৪ শতাংশ দম্পতি। যে দশ শতাংশের সন্তান জন্মদানের পরিকল্পনা নেই, তাদের হাতে কোনো উপকরণও নেই। ওইসব নারীর অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন। এর মধ্যে উপকরণ সরবরাহে সংকট হলে স্বাভাবিকভাবেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
উপকরণ সরবরাহের চলমান সংকট নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ বলেন, ‘ওপি হঠাৎ করে বন্ধ হওয়ায় ক্রয়প্রক্রিয়া থেমে গিয়েছিল। আমরা রাজস্ব বাজেট থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণগুলো কেনার চেষ্টা করছি। ক্রয়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে।’
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

পরিবার পরিকল্পনার অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের গত এক বছরের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এবং কম বয়সে বিবাহিত মেয়েদের গর্ভধারণের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞেরা এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশের মানুষের ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি অর্থাৎ ৩৭ শতাংশ আসে সরকারি খাত থেকে। এ ছাড়া বেসরকারি খাত থেকে ৫৭ শতাংশ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (এনজিও) থেকে ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসে ৪ শতাংশ উপকরণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি খাত প্রধান উৎস না হলেও মোট জনসংখ্যার বিশাল আকারের বিবেচনায় ৩৭ শতাংশকে বড় হারই বলতে হবে।
মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচ ধরনের পদ্ধতি সক্ষম দম্পতিদের মধ্যে সরকারিভাবে বিতরণ করা হয়। এগুলো হচ্ছে—খাওয়ার বড়ি, ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে খাওয়ার বড়ি ৪৯ শতাংশ, ইনজেক্টেবল ১৯ শতাংশ, কনডম ১০ শতাংশ, ইমপ্ল্যান্ট ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, আইইউডি ৩ শতাংশ এবং পুরুষের এনএসভি অস্ত্রোপচার এবং নারীর টিউবেকটমি অস্ত্রোপচার (স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ) ১২ শতাংশ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। স্বাভাবিক সময়ে অন্যান্য সামগ্রী বিতরণের সংখ্যা হচ্ছে ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার। তবে সরকারিভাবে সামগ্রীগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত না করতে পারায় গত এক বছর এসবের বিতরণ কমে এসেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে পদ্ধতিগুলোর ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। তখন খাবার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ। আর সর্বশেষ গত মাসে তা মাত্র ২ লাখে নেমে এসেছে। একইভাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৯ লাখ ইনজেক্টেবলের ব্যবহার হলেও গত মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজারে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ২৩ লাখ কনডম ব্যবহার হয়েছে। এটি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৬০ শতাংশ কম। গত মাসে কনডমের ব্যবহার ঠেকেছে ৬ লাখ ৮০ হাজারে। গত মাসে ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার হয়েছে পৌনে ২ হাজার। আর আইইউডির ব্যবহার হয়েছে ১ হাজারেরও কম।
অধিদপ্তর সূত্র বলছে, ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে খাওয়ার বড়ি নেই ১৫১টি উপজেলায়। ১৩১টিতে শিগগির মজুত শূন্য হবে। ৭৬টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। একইভাবে ১০৬টি উপজেলায় কনডম এবং ১৩৩টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণগুলোর মজুতের ক্ষেত্রেও একই ধরনের চিত্র দেখা গিয়েছে।
অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পদস্থ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, গত বছরের শুরুতে উপকরণ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তবে তৎকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ সচিব মো. আজিজুর রহমান ক্রয়ের অনুমোদন দেননি। তিনি যেসব উপকরণ আছে, তা দিয়ে কাজ ‘চালিয়ে নিতে’ বলেছিলেন। উচ্চপদস্থ এ কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, তৎকালীন ওই সচিবের ‘দূরদৃষ্টির অভাবে’ এখন সারা দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গত জুনে স্বাস্থ্য খাতের কৌশলগত পরিকল্পনা (ওপি) শেষ হয়েছে। ৫ বছর মেয়াদি নতুন ওপি না হওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন ব্যয়ের ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
এক জেলার চিত্র
মাদারীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে খাবার বড়ি মাঠে নেই। কনডম আছে। ইনজেক্টেবল, আইইউডি আছে। ইমপ্ল্যান্ট সামনের মাসে শেষ হবে। আমরা দম্পতিদের বিকল্প পদ্ধতির পরামর্শ দিচ্ছি। যেমন—নারীদের প্রয়োজনে নিজ উদ্যোগে বড়ি কিনে খেতে বলছি। অথবা আমাদের কাছে বিকল্প যে পদ্ধতি রয়েছে তা গ্রহণ করার কথা বলি। ফলে সংকট যে গুরুতর আকার ধারণ করেছে, তা বলা ঠিক হবে না।’
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা
দেশে বর্তমানে মোট প্রজনন হার ২ দশমিক ১ বলে জানিয়েছে বিবিএস। একজন নারী তার প্রজনন বয়সে (১৫ থেকে ৪৯ বছর) গড়ে যতটি সন্তানের জন্ম দেন, তা-ই মোট প্রজনন হার। অর্থাৎ দেশে বর্তমানে একজন নারী গড়ে দুটির বেশি সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের সংকটের কারণে দেশে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, কিশোরী গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সরকার যেসব উপকরণ বিতরণ করে তার বেশির ভাগই পান অসচ্ছল প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষেরা। ঘাটতির কারণে তাঁরা উপকরণ হাতে পাচ্ছেন না। ফলে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ বাড়বে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে গুরুত্ব কমিয়েছে। তাদের অনেকেই মনে করেন, সাম্প্রতিক দশকে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যাকে কার্যত উপেক্ষা করা হয়েছে।
বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এখন বাংলাদেশ। এহেন দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সাফল্যের আপাত স্থবিরতার চিত্র উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনের পর্যবেক্ষণে। আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্বর্ণযুগ ছিল গত শতকের আশি ও নব্বইয়ের দশক। ১৯৯৩ সালে আমাদের মোট প্রজনন হার ছিল ৩ দশমিক ৩। তখন থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত হার একই রকম ছিল। ২০০৪ এবং ২০০৭ সালে এসে তা কিছুটা কমে। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হার একই অবস্থায় রয়ে গেছে।...আর গত কয়েক বছর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নীতিগত ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। বিষয়টিকে ইদানীং সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।’
ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, দেশের ৭৪ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করছে বা উপকরণ পাচ্ছে ৬৪ শতাংশ দম্পতি। যে দশ শতাংশের সন্তান জন্মদানের পরিকল্পনা নেই, তাদের হাতে কোনো উপকরণও নেই। ওইসব নারীর অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন। এর মধ্যে উপকরণ সরবরাহে সংকট হলে স্বাভাবিকভাবেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
উপকরণ সরবরাহের চলমান সংকট নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ বলেন, ‘ওপি হঠাৎ করে বন্ধ হওয়ায় ক্রয়প্রক্রিয়া থেমে গিয়েছিল। আমরা রাজস্ব বাজেট থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণগুলো কেনার চেষ্টা করছি। ক্রয়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে।’

পরিবার পরিকল্পনার অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের গত এক বছরের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এবং কম বয়সে বিবাহিত মেয়েদের গর্ভধারণের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞেরা এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশের মানুষের ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি অর্থাৎ ৩৭ শতাংশ আসে সরকারি খাত থেকে। এ ছাড়া বেসরকারি খাত থেকে ৫৭ শতাংশ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (এনজিও) থেকে ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসে ৪ শতাংশ উপকরণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি খাত প্রধান উৎস না হলেও মোট জনসংখ্যার বিশাল আকারের বিবেচনায় ৩৭ শতাংশকে বড় হারই বলতে হবে।
মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচ ধরনের পদ্ধতি সক্ষম দম্পতিদের মধ্যে সরকারিভাবে বিতরণ করা হয়। এগুলো হচ্ছে—খাওয়ার বড়ি, ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে খাওয়ার বড়ি ৪৯ শতাংশ, ইনজেক্টেবল ১৯ শতাংশ, কনডম ১০ শতাংশ, ইমপ্ল্যান্ট ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, আইইউডি ৩ শতাংশ এবং পুরুষের এনএসভি অস্ত্রোপচার এবং নারীর টিউবেকটমি অস্ত্রোপচার (স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ) ১২ শতাংশ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। স্বাভাবিক সময়ে অন্যান্য সামগ্রী বিতরণের সংখ্যা হচ্ছে ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার। তবে সরকারিভাবে সামগ্রীগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত না করতে পারায় গত এক বছর এসবের বিতরণ কমে এসেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে পদ্ধতিগুলোর ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। তখন খাবার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ। আর সর্বশেষ গত মাসে তা মাত্র ২ লাখে নেমে এসেছে। একইভাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৯ লাখ ইনজেক্টেবলের ব্যবহার হলেও গত মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজারে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ২৩ লাখ কনডম ব্যবহার হয়েছে। এটি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৬০ শতাংশ কম। গত মাসে কনডমের ব্যবহার ঠেকেছে ৬ লাখ ৮০ হাজারে। গত মাসে ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার হয়েছে পৌনে ২ হাজার। আর আইইউডির ব্যবহার হয়েছে ১ হাজারেরও কম।
অধিদপ্তর সূত্র বলছে, ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে খাওয়ার বড়ি নেই ১৫১টি উপজেলায়। ১৩১টিতে শিগগির মজুত শূন্য হবে। ৭৬টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। একইভাবে ১০৬টি উপজেলায় কনডম এবং ১৩৩টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণগুলোর মজুতের ক্ষেত্রেও একই ধরনের চিত্র দেখা গিয়েছে।
অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পদস্থ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, গত বছরের শুরুতে উপকরণ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তবে তৎকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ সচিব মো. আজিজুর রহমান ক্রয়ের অনুমোদন দেননি। তিনি যেসব উপকরণ আছে, তা দিয়ে কাজ ‘চালিয়ে নিতে’ বলেছিলেন। উচ্চপদস্থ এ কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, তৎকালীন ওই সচিবের ‘দূরদৃষ্টির অভাবে’ এখন সারা দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গত জুনে স্বাস্থ্য খাতের কৌশলগত পরিকল্পনা (ওপি) শেষ হয়েছে। ৫ বছর মেয়াদি নতুন ওপি না হওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন ব্যয়ের ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
এক জেলার চিত্র
মাদারীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে খাবার বড়ি মাঠে নেই। কনডম আছে। ইনজেক্টেবল, আইইউডি আছে। ইমপ্ল্যান্ট সামনের মাসে শেষ হবে। আমরা দম্পতিদের বিকল্প পদ্ধতির পরামর্শ দিচ্ছি। যেমন—নারীদের প্রয়োজনে নিজ উদ্যোগে বড়ি কিনে খেতে বলছি। অথবা আমাদের কাছে বিকল্প যে পদ্ধতি রয়েছে তা গ্রহণ করার কথা বলি। ফলে সংকট যে গুরুতর আকার ধারণ করেছে, তা বলা ঠিক হবে না।’
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা
দেশে বর্তমানে মোট প্রজনন হার ২ দশমিক ১ বলে জানিয়েছে বিবিএস। একজন নারী তার প্রজনন বয়সে (১৫ থেকে ৪৯ বছর) গড়ে যতটি সন্তানের জন্ম দেন, তা-ই মোট প্রজনন হার। অর্থাৎ দেশে বর্তমানে একজন নারী গড়ে দুটির বেশি সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের সংকটের কারণে দেশে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, কিশোরী গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সরকার যেসব উপকরণ বিতরণ করে তার বেশির ভাগই পান অসচ্ছল প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষেরা। ঘাটতির কারণে তাঁরা উপকরণ হাতে পাচ্ছেন না। ফলে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ বাড়বে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে গুরুত্ব কমিয়েছে। তাদের অনেকেই মনে করেন, সাম্প্রতিক দশকে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যাকে কার্যত উপেক্ষা করা হয়েছে।
বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এখন বাংলাদেশ। এহেন দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সাফল্যের আপাত স্থবিরতার চিত্র উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনের পর্যবেক্ষণে। আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্বর্ণযুগ ছিল গত শতকের আশি ও নব্বইয়ের দশক। ১৯৯৩ সালে আমাদের মোট প্রজনন হার ছিল ৩ দশমিক ৩। তখন থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত হার একই রকম ছিল। ২০০৪ এবং ২০০৭ সালে এসে তা কিছুটা কমে। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হার একই অবস্থায় রয়ে গেছে।...আর গত কয়েক বছর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নীতিগত ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। বিষয়টিকে ইদানীং সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।’
ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, দেশের ৭৪ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করছে বা উপকরণ পাচ্ছে ৬৪ শতাংশ দম্পতি। যে দশ শতাংশের সন্তান জন্মদানের পরিকল্পনা নেই, তাদের হাতে কোনো উপকরণও নেই। ওইসব নারীর অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন। এর মধ্যে উপকরণ সরবরাহে সংকট হলে স্বাভাবিকভাবেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
উপকরণ সরবরাহের চলমান সংকট নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ বলেন, ‘ওপি হঠাৎ করে বন্ধ হওয়ায় ক্রয়প্রক্রিয়া থেমে গিয়েছিল। আমরা রাজস্ব বাজেট থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণগুলো কেনার চেষ্টা করছি। ক্রয়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে।’

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

পরিবার পরিকল্পনার অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের গত এক বছরের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে।
১১ এপ্রিল ২০২৫
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

পরিবার পরিকল্পনার অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের গত এক বছরের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে।
১১ এপ্রিল ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

পরিবার পরিকল্পনার অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের গত এক বছরের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে।
১১ এপ্রিল ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

পরিবার পরিকল্পনার অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের গত এক বছরের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে।
১১ এপ্রিল ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে