Ajker Patrika

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৪৭
আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদের জমানায় শিকারি সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্য দেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদের জমানায় শিকারি সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্য দেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের জমানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কী ভূমিকা পালন করেছে, এটা নিয়ে কোনো সমালোচনা না করে উপাচার্য, উপ-উপাচার্যকে দাওয়াত দিয়ে পাপমোচন হবে না। তাঁদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদের জমানায় শিকারি সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্যকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ সভাপ্রধান ছিলেন। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ। সেমিনারে আলোচক ছিলেন ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. খোরশেদ আলম; প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন।

সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের একটি বিষয় হচ্ছে অতীতের সিগনেফায়ারগুলো নিজের আত্মস্থ করে নেওয়া। তার টিভির নাম একাত্তর, এটা হচ্ছে ফ্যাসিজমের লক্ষণ। অথবা একুশে—এগুলো হলো আত্মসাৎকরণ। আপনারা বলতে পারেন, এগুলো তো জাতীয় সিম্বল (প্রতীক), নাম দেওয়া সমস্যা নেই। নাম দেওয়া সমস্যা না, নাম দিয়ে যা করে, তা তো ভয়াবহ।’

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের জমানাটা কী; বলা যেতে পারে, ফ্যাসিবাদের জমানা বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে শুরু হয়েছে। প্রথম মহাযুদ্ধের পরে এর জয় হয়েছে। তবে এর সূত্রপাত প্রথম মহাযুদ্ধ নয়। ইউরোপে যে ফ্যাসিবাদের উদ্ভব হয়েছিল, বলা হয় মহাবিপর্যয়কর হলোকাস্ট, ৬০ লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করা হয়েছে। ইহুদি ছাড়া অন্যান্য জাতিসত্তার মানুষকেও হত্যা করা হয়েছে। এটাকে আমি ছোট করছি না। তবে এর চেয়ে বড় বড় বিপর্যয়ের ঘটনা দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা, মধ্য আফ্রিকা কিংবা আমাদের দেশেও হয়েছে। এমনকি ’৪৭ সালের ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়, যাকে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর বলা হয়, সে সময়ও সরকারি হিসাবে ৫ লক্ষ লোক মারা গেছে। বেসরকারি হিসাবে ১২ লক্ষ। কিন্তু এগুলোকে হলোকাস্ট বলা হয় না। এমনকি প্যালেস্টাইনের হলোকাস্টের কথাও বলা হয় না, এগুলো তো ফ্যাসিবাদ।’

সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, ‘সাংবাদিকতা শুধু জনমত তৈরি করে না, এটা রাজনৈতিক মতও তৈরি করে; থিওরি তৈরি করে, ক্ষমতাও তৈরি করে। ফ্যাসিবাদের উদাহরণ হিসেবে বলি, ১৯৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের ১০০ বছর পূর্ণ হয় ঢাকার। সেসব পত্রিকা আমি দেখেছি, তারা বিশেষ সংখ্যা বের করেছিল। ভারত সংখ্যা, পাকিস্তান সংখ্যার বিশেষ সংখ্যা বের করেছিল; কিন্তু ২০০৭ সালে ১৫০ বছর পূর্তিতে ঢাকার কয়েকটি দুর্বল পত্রিকা ও টিএসসিতে কয়েকজন বামপন্থীরা কিছু বক্তব্য দিয়েছিল। সরকারিভাবে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। পলাশীর যুদ্ধের কথা উল্লেখ নেই, ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের উল্লেখ নেই, এমনকি ৪৭ সালে ব্রিটিশরা বিদায় নিয়েছে, তারও কোনো স্বীকৃতি নেই।’

সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, ‘ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর আমরা পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালন করেছি। পাকিস্তানিদের বিরোধের কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে, এটা কার্পেটের নিচে চাপিয়ে দেওয়া এমনভাবে, এটা যেন ঘটে নাই; এটাই ফ্যাসিবাদ। গ্রাফিতি আঁকা নিয়ে আক্রমণ করা, এটাও ফ্যাসিবাদ, মানে ফ্যাসিবাদ এখনো জীবন্ত আছে। আন্দোলনে যারা বীরের ভূমিকা পালন করেছে, তাদের পেটানো হচ্ছে, এটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। ফ্যাসিবাদ আমাদের শিক্ষকদের ভেতর আছে, ছাত্রদের ভেতর আছে। এটা শুধু বিশেষ নামধারী রাজনৈতিক দলের মধ্যে নয়, এটা আমাদের পাঠ্যপুস্তকপ্রণেতাদের মাঝে আছে, আমাদের পাঠ্যপুস্তক কারা প্রণয়ন করেছে, যারা আমাদের দেশকে বাংলা অঞ্চল হিসেবে প্রণয়ন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসপন্থী শিক্ষকেরা এটা করেছে, তারা এখনো চাকরিতে বহাল আছে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘শিকারি সাংবাদিকতাকে সাংবাদিকতায় দুর্বৃত্তায়নের রাজনৈতিক অর্থনীতি বলা যায়। এর ভয়াবহতা সবাই বুঝি। ফলে যার যার অবস্থান থেকে সতর্ক থাকতে হবে।’

প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে আ-আল মামুন বলেন, বিগত সরকারের সময়ে হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের ব্যক্তিজীবন ঘিরে হেনস্তা; গুলশানে মুনিয়া হত্যাকাণ্ডে সায়েম সোবহান আনভীরের সম্পৃক্ততা; পরীমণির বাসায় মধ্যরাতে র‍্যাবের অভিযান এবং সেটি টেলিভিশনে লাইভ সম্প্রচার কিংবা প্রথম আলোর স্বাধীনতা দিবসে ‘মাছ-মাংসের স্বাধীনতা’ শীর্ষক ফটো কার্ড প্রভৃতি ঘটনা শিকারি সাংবাদিকতার অন্যতম উদাহরণ।

আ-আল মামুন বলেন, ভারতবিরোধিতার কারণে এবং শেখ হাসিনার কথা না শোনায় মামুনুল হকের ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করে তাঁকে যেভাবে সেদিন হেনস্তা করে মিডিয়ায় চরিত্র হনন করা হয়েছিল; মুনিয়া এবং তাঁর বোনকে অর্থলোভী সাব্যস্ত করা; পরীমণিকে একেকটা প্রেমিক বদলানো, মদ ইত্যাদিভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কোনো না কোনোভাবে মিডিয়ার একটি অংশ শিকারি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ ধরনের সাংবাদিকতায় মিডিয়া, গোয়েন্দা সংস্থা এবং সরকারের একটা অংশ একসঙ্গে কাজ করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত