Ajker Patrika

৪০তম ক্যাডেট ব্যাচ

এসআই নিয়োগ আটকে গেছে নতুন ভেরিফিকেশনে

  • শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এরই মধ্যে ৩১৩ জনকে অব্যাহতি।
  • আটজনকে শোকজ। দুই দফায় পাসিং আউট প্যারেড স্থগিত।
  • দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগে দিন কাটছে ৪৮৮ জন প্রশিক্ষণার্থীর।
 শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২: ৩৬

পুলিশ বাহিনীর ৪০তম ক্যাডেট উপপরিদর্শকদের (এসআই) ১২ মাসের প্রশিক্ষণ শেষে পাসিং আউট প্যারেড হওয়ার কথা থাকলেও ১৪ মাসে তা হয়নি। এরই মধ্যে এই ব্যাচের সব মিলিয়ে ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আটজনকে গতকাল বুধবার রাতে অব্যাহতিপত্র দেওয়া হয়। পাসিং আউট প্যারেড দুই দফায় স্থগিত হওয়ায় এবং অব্যাহতির ঘটনায় এই ব্যাচের অন্য ক্যাডেটরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

পাসিং আউট প্যারেড না হওয়ায় প্রশিক্ষণ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সূত্র বলেছে, এই ব্যাচে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিষয়ে শেষ মুহূর্তে আবার পুলিশ ভেরিফিকেশন হচ্ছে। তাঁদের বা তাঁদের পরিবার, স্বজন, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে। কারণ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুলিশে; বিশেষ করে এসআই নিয়োগে ব্যাপক দলীয়করণ ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

এসআই নিয়োগে সুপারিশ পেয়েও প্রশিক্ষণকালে সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া ব্যক্তিদের অভিযোগ, শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে নয়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন করে বিভিন্ন সংস্থা দিয়ে ভেরিফিকেশন করার পর তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্যই তাঁদের অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, রাজনৈতিক কারণে নয়।

জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সর্বশেষ এসআই পদে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত ৪০তম ক্যাডেট ব্যাচের ৮২৩ জনের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর। রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে এই প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছিল এক বছর। নিয়ম অনুযায়ী, প্রশিক্ষণ শেষে গত ৪ নভেম্বর তাঁদের পাসিং আউট প্যারেড হওয়ার কথা ছিল। তবে ২১ অক্টোবর এই প্রশিক্ষণার্থী এসআইদের মধ্যে ২৫২ জনকে, ৪ নভেম্বর ৫৮ জনকে এবং ১৮ নভেম্বর তিনজনকে শৃঙ্খলাভঙ্গের বিভিন্ন অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষণ চলাকালে নাশতা না খেয়ে মাঠে হইচই করা, ক্লাসে অমনোযোগী থাকা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি।

সর্বশেষ গতকাল রাতে আটজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সূত্র বলেছে, রাতের ক্লাস চলাকালে তাঁদের অব্যাহতিপত্র দেওয়া হয়। ২৯ ডিসেম্বর তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় একাডেমি কর্তৃপক্ষ। নোটিশে তাঁদের বিরুদ্ধে মাঠে নির্দেশনা না মেনে উচ্চ স্বরে হইচই করা এবং দৌড়ানোর বদলে হাঁটার অভিযোগ আনা হয়। তাঁদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল। ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হলে অব্যাহতি দেওয়া হবে বলে নোটিশে জানানো হয়েছিল।

এ বিষয়ে সারদা পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান ভুঞার সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি।

৪০তম ক্যাডেট এসআইদের পাসিং আউট প্যারেডের প্রথমে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩১ অক্টোবর। পরে তা স্থগিত করা হয়। পরে ২৬ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেও পরে স্থগিত করা হয়। পাসিং আউট প্যারেড হওয়ার পর এসআই পদে পদায়ন করা হয় প্রশিক্ষণ সমাপ্তকারীদের।

বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন মহলের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশ বাহিনীকে দলীয়করণ করে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়, গুম, হত্যা, নির্যাতন, দমনপীড়নে ব্যবহার করেছে। এ জন্য দলীয় লোকজনকে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে; বিশেষ করে এসআই নিয়োগের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যদের সুপারিশকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আর্থিক লেনদেনেরও অভিযোগ ছিল। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নেতৃত্বে পুলিশ সদর দপ্তরের দু-তিনজন উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) যোগসাজশে একটি চক্র নিয়োগের তালিকা সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করত।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। নিয়োগ নিয়ে দলীয়করণের অভিযোগ থাকায় বিগত আমলে পুলিশের এসআই এবং বিসিএসে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্তদের বিষয় খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত ৪০তম ক্যাডেট এসআইদের বিষয়ে আবার একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে দুই মাস ধরে ভেরিফিকেশন (যাচাই-বাছাই) করানো হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ভেরিফিকেশন শেষ না হওয়ায় ওই ব্যাচের পাসিং আউট প্যারেড হচ্ছে না। ভেরিফিকেশনে ওই প্রশিক্ষণার্থী এসআইদের আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব—সবার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে রাজনৈতিক পরিচয় ও সম্পৃক্ততার বিষয়ে; যা থেকে দলীয়করণের বিষয়টি বোঝা যাবে।

এদিকে পাসিং আউট প্যারেড না হওয়ায় ৪৮০ জন প্রশিক্ষণার্থী এসআইয়ের প্রশিক্ষণ এখনো চলছে। তাঁদের কয়েকজন বলেছেন, এরই মধ্যে তাঁদের ব্যাচের ৪০ শতাংশ প্রশিক্ষণার্থীকে অব্যাহতি দেওয়ায় এবং পাসিং আউট প্যারেড দুবার স্থগিত হওয়ায় তাঁরা দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপে রয়েছেন। ১২ মাসের প্রশিক্ষণ ১৪ মাসে ঠেকেছে। পাসিং আউট প্যারেড না হওয়া পর্যন্ত প্রশিক্ষণ চলবে। ছয় মাস ধরে তাঁদের ছুটিও দেওয়া হচ্ছে না। পরিবারগুলোর আর্থিক সহায়তায় এত দিন চললেও চাকরি না হওয়ায় এখন সেসব পরিবার আশঙ্কায় পড়েছে। এ ছাড়া প্রশিক্ষণে থাকায় তাঁরা বিসিএসসহ অন্যান্য সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রশিক্ষণার্থী এসআই বলেন, এক বছর মেয়াদি এই মৌলিক প্রশিক্ষণকালে কোনো বেতন পাওয়া যায় না। থাকা-খাওয়া, প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত পোশাক এবং প্রতি মাসে ১ হাজার ৮২৫ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা দেওয়া হয়। বাকি সব খরচ প্রশিক্ষণার্থীকে বহন করতে হয়। কারও কারও পরিবার চাকরির পর সুখের আশায় অনেক কষ্টে এই খরচ জোগায়। সব মিলিয়ে এখনো চাকরিতে যোগ দিতে না পারায় তাঁরা হতাশ ও উদ্বিগ্ন। দ্রুততম সময়ে এই সমস্যার সমাধান চেয়ে তাঁরা একাডেমি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন।

এদিকে অব্যাহতি পাওয়া ব্যক্তিদের কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, এভাবে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এতজনকে একসঙ্গে অব্যাহতির ঘটনা বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ১১২ বছরের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

অব্যাহতিপ্রাপ্ত ৩১১ জন হাইকোর্টে ১৮ ডিসেম্বর পৃথক পাঁচটি রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত তাঁদের অব্যাহতিকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষ করে তাঁদের এসআই পদে পদায়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

রিটকারীদের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, অসদাচরণের অভিযোগ এনে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তাঁদের চূড়ান্তভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, যা আইনসম্মত নয়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে সারদা পুলিশ একাডেমির পদস্থ কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৪০
খোদা বকশ চৌধুরী। ফাইল ছবি
খোদা বকশ চৌধুরী। ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। তিনি প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত ছিলেন।

খোদা বখশ চৌধুরীর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন জানিয়ে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে শেষ দিকে এসে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন ওঠে। ওই পদে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও গুঞ্জন ছিল।

সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছিল, গত মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা ছিল খোদা বখশ চৌধুরীর। কিন্তু এ নিয়ে উপদেষ্টাদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হওয়ায় আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন প্রধান উপদেষ্টা।

একটি সূত্র বলছে, উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় খোদা বখশ চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন।

এর আগে গত ১০ মার্চ প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলামও এভাবে পদত্যাগ করেছিলেন।

অধ্যাপক আমিনুলকে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু গত ৫ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী সি আর আবরারকে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পাঁচদিন পর পদত্যাগ করেন অধ্যাপক আমিনুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই অভ্যুত্থানে চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ডের রায় ২০ জানুয়ারি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ০১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী ২০ জানুয়ারি রায় দেবেন ট্রাইব্যুনাল। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এই মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে গত ১৪ জুলাই অভিযোগ গঠন করা হয়। আট আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার থাকা শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, সাবেক কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। আর পলাতক রয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আক্তারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।

যাত্রাবাড়ীতে তাইম হত্যায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে ইমাম হাসান তাইম হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১১ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। যাতে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারদের হাজিরের জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পলাতকদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ওসি আবুল হাসান ও তৎকালীন ওসি (তদন্ত) জাকির হোসাইন। আর পলাতক রয়েছেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, ওয়ারী জোনের সাবেক ডিসি ইকবাল হোসাইন ও এডিসি এস এম শামীম, ডেমরা জোনের তৎকালীন এডিসি মো. মাসুদুর রহমান মনির, তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার নাহিদ ফেরদৌস, যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) ওহিদুল হক মামুন, এসআই (নিরস্ত্র) সাজ্জাদ উজ জামান ও মো. শাহদৎ আলী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিন উপলক্ষে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা বিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৫১
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, বাংলাদেশের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, ন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ফেলোশিপ অব বাংলাদেশের সভাপতি বিশপ ফিলিপ পি অধিকারী, খ্রিষ্টধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ড. বেনেডিক্ট আলো ডি রোজারিও, জাতীয় চার্চ পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি খ্রিস্টোফার অধিকারীসহ দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় খ্রিষ্টধর্মের নেতারা তাঁদের শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিশ্বজুড়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সুনাম এবং দেশের অর্থনীতি ও সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে তাঁর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনও সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজিত হবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে যিশুখ্রিষ্টকে সর্বজনীন উল্লেখ করে বলেন, যিশুখ্রিষ্টের ক্ষমা ও মানবসেবার মহান আদর্শ সামনে রেখে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষও এ বছর উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে বড়দিন উদ্‌যাপন করছে।

প্রধান উপদেষ্টাকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে জনগণ আপনার ওপর আস্থা রেখেছিল। আপনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। আমরা প্রার্থনা করি, একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আপনার প্রচেষ্টা সফল হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত নেতৃবৃন্দসহ সবাইকে বড়দিন ও আসন্ন নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আপনারাই সমাজের প্রতিবিম্ব। আপনাদের দেখলে বুঝতে পারি, সবকিছু ঠিক আছে কি না।’

আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে চাই। সে জন্যই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে জুলাই সনদ প্রস্তুত করা হয়েছে। এই সনদের ওপর গণভোটের মাধ্যমে দেশ আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে। গণভোটে জনগণ যে রায় দেবে, পরবর্তী সময়ে সংসদ সেভাবেই সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

প্রধান উপদেষ্টা এ সময় আসন্ন নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তুলতে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে আড়াই কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান ট্রাস্টের নেতৃবৃন্দ। দেশব্যাপী ৮০০টি চার্চের মধ্যে তিন ধাপে এই অনুদান বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।

পরে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন প্রধান উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে সরকার: প্রেস সচিব

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০২
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বুধবার বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বুধবার বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে সরকার প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তাঁর বাংলাদেশে ফেরাকে স্বাগত জানাই। তাঁর জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।’

প্রেস সচিব আরও জানান, সরকার তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়টি বিএনপির সঙ্গে পরামর্শ করছে এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।’

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। আমরা গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পাচ্ছি এবং ঘটনার তদন্তে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাকশ্রমিক দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, ‘সরকার হত্যাকাণ্ডকে নিন্দা জানিয়েছে। ভিডিও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অন্তত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা আজ উপদেষ্টা পরিষদকে জানিয়েছেন, দীপু হত্যার বিচার দ্রুত বিচার আইনের আওতায় সম্পন্ন হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।’

প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনার বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকটি মামলা করা হয়েছে। সব দোষীকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত