Ajker Patrika

সামান্য অনুদান নিয়ে তুমুল কাড়াকাড়ি

  • ‘তদবির ছাড়া মেলে না’ অধিদপ্তরের অনুদান
  • ৩ কোটি টাকা পাওয়ার দৌড়ে ৩৮৩ প্রতিষ্ঠান
  • কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধেও সরকারি পক্ষের নানা অভিযোগ
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
সামান্য অনুদান নিয়ে তুমুল কাড়াকাড়ি

দেশে বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৮৩। এসব নিরাময় কেন্দ্র সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগ ও অর্থায়নে পরিচালিত হয়। তবে প্রতি অর্থবছরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আবেদন সাপেক্ষে কিছু সরকারি অনুদান দিয়ে থাকে। পরিচালন ব্যয়ের তুলনায় সামান্য সেই অনুদান নিতে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা তদবিরের আশ্রয় নেয়। ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ঝক্কির কারণে এখন অনেক প্রতিষ্ঠান আবেদন করাই বাদ দিয়েছে।

বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোর লাইসেন্স দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সরকারি তথ্য অনুযায়ী দেশে বর্তমানে ৩৮৩টি নিরাময় কেন্দ্রে ৫ হাজার ১৭১টি শয্যা রয়েছে। প্রতি অর্থবছর সরকারি অনুদানের জন্য অধিদপ্তর এসব নিরাময় কেন্দ্র থেকে আবেদন আহ্বান করে। প্রতি অর্থবছরে ২০০ থেকে ৩০০ আবেদন পড়ে। এরপর অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কমিটি তা যাচাই-বাছাই করে। কিছু নিরাময় কেন্দ্র দেড় লাখ থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদান পায়।

এ প্রতিবেদক ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের কয়েকটি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রের মালিক ও পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের অনেকে দাবি করেন, তাঁরা মূলত মানবিক কারণে এসব প্রতিষ্ঠান চালান। সরকার যে অনুদান দেয়, তা নামমাত্র। এই অনুদান দিয়ে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের এক সপ্তাহের খরচও চলে না। তারপরও এ নিয়ে কাড়াকাড়ি হয়। নিরাময় কেন্দ্রগুলোর ভাষ্য, কিছু অনুদান পেলে গরিব রোগীদের ছাড় দেওয়া যায়। সরকারি অনুদান পেলে রোগীদের খরচ কমানো যায়। নিরাময় কেন্দ্রের মালিকেরা অভিযোগ করেছেন, যাঁদের সঙ্গে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের খাতির আছে, তাঁরাই অনুদান পান।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানের বিব্লকের ১ নম্বর সড়কে বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্র ‘নিউ তরী’। পরিচালক হেলাল উদ্দিন এক দশকের বেশি সময় ধরে এই প্রতিষ্ঠান চালান। তিনি একবার ১০ হাজার টাকা সরকারি অনুদান পেয়েছিলেন। এরপর আর কোনো অনুদান পাননি। এ বিষয়ে হেলাল উদ্দিন বলেন, কর্মকর্তারা যাঁকে ‘ভালো মনে করেন’, তাঁকেই অনুদান দেন। তাঁরা এখন আর এই অনুদান চান না।

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ২১ বছরের পুরোনো মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ‘প্রশান্তি’। দুই দশক ধরে ১০ শয্যার এই প্রতিষ্ঠান একবারও সরকারি অনুদান পায়নি। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক কামাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তদবির ছাড়া কোনো অনুদান মেলে না। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাকে দিয়ে তদবির করাতে হয়। এরপর কর্মকর্তারা কেন্দ্র ভিজিট করতে আসেন, তাঁদের খুশি করতে হয়। তারপর অনুদান মেলে। এত কিছু করে আর অনুদান নিতে মন চায় না। তাই আবেদন বন্ধ করে দিয়েছি।’

যাঁরা এসব ঝক্কিঝামেলা কাটিয়ে অনুদান পান, তাঁদেরও রয়েছে অভিযোগ। উত্তরার গ্রিন লাইফ মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক আসমা আক্তার বলেন, গত অর্থবছরে তাঁদের প্রতিষ্ঠানটি অনুদান পেয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। আসমা আক্তার বলেন, ‘রিহ্যাব সেন্টারগুলো টিকে থাকলে অনেক পরিবার বাঁচবে। তাই সরকারকে সব প্রতিষ্ঠানের পাশেই দাঁড়ানো উচিত।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সারা দেশের ৯১টি নিরাময় কেন্দ্রে ১ কোটি টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে দেড় কোটি টাকা, ২০২১-২২ সালে ৪০টি প্রতিষ্ঠানকে দেড় কোটি টাকা, ২০২২-২৩ সালে ৮২ প্রতিষ্ঠানকে আড়াই কোটি টাকা এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৩০টি প্রতিষ্ঠানকে তিন কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়। সর্বশেষ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি অনুদান পেয়েছে নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত ৫০ শয্যার মুক্তি মানসিক ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। এই প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ৫০ হাজার ৬০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই ১ লাখ ৮০ হাজার ও ১ লাখ ৯০ হাজার করে অনুদান পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর দেওয়া তথ্যমতে, এই অঙ্ক তাদের এক সপ্তাহের খরচ।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, সরকারি এই অনুদান নিতে অনেক প্রভাবশালী মহল থেকে তদবির করা হয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে দিয়ে তদবির করেও কেউ কেউ অনুদান নিয়েছেন।

এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রের বিভিন্ন অনিয়মের কথা বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, সব নিরাময় কেন্দ্রকে অনুদান দেওয়ার প্রয়োজন নেই। অনুদান দিলেও তাঁরা রোগীদের কাছ থেকে কম টাকা নেবে না। কর্মকর্তারা বলেছেন, চলতি বছর আবার আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। এবার রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে সহায়তা দেওয়া হবে।

কর্মকর্তারা আরও বলছেন, একজন রোগীর কাছ থেকে নিরাময় কেন্দ্রগুলো মাসে ৮ থেকে ৫০ হাজার বা আরও বেশি টাকা নেয়। উন্নত মানের কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা ব্যয় আরও বেশি। রোগীর অবস্থা অনুযায়ী তারা ফি নির্ধারণ করে। সরকারি অনুদান বেশি হলেও এসব ফি কমবে না।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিরাময় কেন্দ্রগুলোকে যেসব শর্ত দেওয়া হয়, সেগুলো তাঁদের পূরণ করতে হবে। চিকিৎসা সঠিকভাবে করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ত্রুটির কথা শোনা যায়।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার যতটুকু অর্থ বরাদ্দ দেয়, সেটুকুই সবাইকে ভাগ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বাজেট কম এবং প্রতিষ্ঠান বেশি হওয়ায় অনুদান দিতে আমাদেরও বেগ পেতে হয়। তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকেরা চিকিৎসার জন্য রোগীদের কাছ থেকে অনেক টাকা নেন। এটা তো তাঁদের ব্যবসা। অনুদান মূলত তাঁদের উৎসাহিত করার জন্য দেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশে আসবে ওসমান হাদির মরদেহ

বাসস, ঢাকা  
শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনা হবে।

এনসিপির স্বাস্থ্য সেলের প্রধান ও হাদির চিকিৎসায় নিয়োজিত থাকা ডা. আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে রওনা হয়ে সম্ভাব্য সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করবে।’

বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি।

গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ী। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত ও শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ত্রোপচারের সময় মারা যান ওসমান হাদি: ডা. আহাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বন্দুকধারীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। রাজধানীর পল্টন এলাকায় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রোপচারের পর গতকাল তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বন্দুকধারীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। রাজধানীর পল্টন এলাকায় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রোপচারের পর গতকাল তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্যসচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

ডা. আহাদ জানান, বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টার দিকে শরিফ ওসমান হাদির পরিবার অস্ত্রোপচারের জন্য সম্মতি দেয়। পরে তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘অপারেশন শেষ হওয়ার পর আর কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। পরে সরাসরি তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়।’

এদিকে হাদির মরদেহ শুক্রবার সকালে দেশে এসে পৌঁছাবে বলেও জানিয়েছেন ডা. আহাদ।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ী। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত ও শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত, শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৫
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া

শহীদ শরিফ ওসমান হাদির অকাল মৃত্যুতে আগামী শনিবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এই ঘোষণা দেন তিনি।

সিঙ্গাপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন হাদি। এই উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক একটি সংবাদ নিয়ে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি আর আমাদের মাঝে নেই।’

শরিফ ওসমান হাদির এই অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, তাঁর প্রয়াণ দেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিসরে এক অপূরণীয় ক্ষতি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমি তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবারের সদস্যবৃন্দ, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শহীদ ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে।’

এ সময় হাদির মৃত্যুতে আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদির অকাল মৃত্যুতে আগামী শনিবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছি। এই উপলক্ষে শনিবার দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

একই সঙ্গে আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুমা দেশের প্রতিটি মসজিদে শহীদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়গুলোতেও আয়োজন হবে বিশেষ প্রার্থনার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুতে দেশ সাহসী কণ্ঠস্বর হারাল: প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৪৯
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি শোকবার্তায় বলেন, শরিফ ওসমান হাদির অকাল ও মর্মান্তিক মৃত্যুতে দেশ এক সাহসী কণ্ঠস্বরকে হারাল।

প্রধান বিচারপতি হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত