Ajker Patrika

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সংবিধান পর্যালোচনার দাবি মেননের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সংবিধান পর্যালোচনার দাবি মেননের

স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে সংবিধান পর্যালোচনার দাবি করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে এই সংবিধানের পর্যালোচনা হওয়া প্রয়োজন। সংসদ নেতাকে অনুরোধ জানাই, তিনি যেন এই সংসদের আগামী অধিবেশনে সংবিধান পর্যালোচনার জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করে দেন, যেখানে ধর্মীয় রাজনীতি থেকে শুরু করে সব বিষয়ে আমরা নতুন করে ভাবতে পারব।’ 

জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আজ বুধবার মেনন এ কথা বলেন। 

বিভিন্ন সময়ে দেশের সংবিধানের মৌলিক চরিত্র বদল হয়েছে উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধু সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে যে সংবিধান দিয়েছিলেন, তা সংসদীয় ব্যবস্থার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁর আমলেই এই সংবিধানের মৌল বিষয়গুলোর পরিবর্তন ঘটেছিল। আর সামরিক শাসকেরা নিজেদের ক্ষমতার স্বার্থে এবং পাকিস্তানি রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে ওই সংবিধানকে ভোঁতা ছুরি দিয়ে জবাই করেছিল। দ্বাদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানের মৌল চরিত্র কিছুটা ফিরিয়ে আনা হলেও এমন সব বিধি (এখনো) বর্তমান, যা সরকার পরিচালনায় প্রধান নির্বাহীর একক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছে। এবং সংবিধানকে ধর্মীয় রূপ দিয়েছে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ প্রশ্নে সংবিধান সংশোধন অতি জরুরি।’ 

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বিএনপির আমলে দ্বাদশ সংশোধনের সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে মরহুম আবদুস সামাদ আজাদের নেতৃত্বে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তারা তা মানেনি। এ কারণে সম্প্রতি অলি আহমেদ ক্ষমা চেয়েছেন।’ 

রাষ্ট্রপতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে থাকেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফলে ভিসি নিয়োগকর্তা হিসেবে তাদের কুকর্মের দায় রাষ্ট্রপতির ওপর এসে পড়ে। এই উপচার্যরা কী ধরনের স্বৈরশাসক ও দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠেন এবং চাকরি বাণিজ্যে লিপ্ত হন, সেটা আমরা দেখেছি। বর্তমানে সব ভিসি শাহজালালের পক্ষে দল পাকিয়েছেন। সরকারকে বলব, শিক্ষামন্ত্রীকে বলব, ছাত্রদের দাবি মেনে নিন। একজন ভিসির জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হতে পারে না। শিক্ষার্থীদের জীবন নষ্ট হতে পারে না।’ 

১৪ দলীয় জোটের এ নেতা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। বিএনপি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কেবল সরবই নয়, সরকার উৎখাতের স্লোগান দিচ্ছে। কিন্তু এসব নিয়ে কথা বলার সময় তারা নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখে না। ২০০৬ সালে দেড় কোটি ভুয়া ভোটার ও নিজের লোককে প্রধান উপদেষ্টা করার জন্য যে ষড়যন্ত্র করেছিল, তারই পরিণতিতে এ দেশকে আরেকটি সেনাশাসন দেখতে হয়েছে। জানি না এবার বিএনপির লক্ষ্য কী? তারা খোলসা করে বলছে না। কিন্তু কাজে স্পষ্ট যে, তারা একটি অস্বাভাবিক সরকার এখানে চায়। তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, মনোনয়ন বাণিজ্য, অর্থ, ধর্ম ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপমুক্ত নির্বাচনী ব্যবস্থার কথা বলেন না। কারণ, তারা এই ব্যবস্থাই বহাল রাখতে চায়।’ 

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘আমাদের বাম দাবিদার বন্ধুরা নির্বাচনী সংস্কারের কথা বললেও তাদের মূল দাবি এখন নির্বাচনকালীন সরকার। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সরাসরি, কেউ-বা যুগপৎ সমন্বিত আন্দোলনের নামে তাদের সাথে শরিক হবে, সেই আলামতও স্পষ্ট।’ চলমান ইউপি নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে মেনন বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য, অর্থ ও পেশি শক্তি এবং প্রশাসন ও ইসির নিশ্চেষ্ট ভূমিকা সমগ্র নির্বাচনে জনগণের আস্থা নষ্ট করেছে। নারায়ণগঞ্জের মতো ব্যতিক্রমী নির্বাচন মানুষকে আশা দেখিয়েছে। এই সরকারকে বহাল রেখেই সেটা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন সুদৃষ্টি। নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি মানা, অর্থ, পেশি শক্তি ও প্রশাসনের ভূমিকা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। সরকার দেরিতে হলেও নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আইন এনেছে। কিন্তু আইনটি অসম্পূর্ণ এবং এটা সংশোধন করতে হবে।’ 

রাষ্ট্রপতির ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি সরকারের উন্নয়নের বিশদ বর্ণনা করেছেন। সরকারের প্রণীত এই ভাষণে প্রশাসন, রাষ্ট্র ও জনজীবনের সমস্যা নিয়ে রাষ্ট্রপতির সরস মন্তব্যে কঠিন সত্যগুলো থেকে মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। ভাষণে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের কোনো কথা উল্লেখ নেই। করোনার সময়েও আমাদের দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষ ধনী হয়েছেন। আবার বিপুলসংখ্যক দরিদ্র হয়েছেন।’ 

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘দুর্নীতিতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার নিচের দিকে থেকে কেবল আফগানিস্তানের ওপরে আছে। এ জন্য নিশ্চয়ই আমরা লজ্জিত। প্রধানমন্ত্রী এই সংসদে বলেছিলেন ফুয়েল না দিলে ফাইল নড়ে না। এখন সেই দুর্নীতির ফুয়েলের দাম এতই বেড়েছে যে, ফাইল নড়ানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। অর্থমন্ত্রীর কাছে অর্থ পাচারকারীর তালিকা চাওয়ার পর উল্টো তিনি এই তালিকা এমপিদের কাছে চেয়েছেন। যেন এমপিরা অসত্য কথা বলেছেন।’ 

করোনা মোকাবিলার প্রসঙ্গ টেনে মেনন বলেন, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সফল দেশ হলেও টিকাদানে আফগানিস্তানের ওপরে। টিকা সংগ্রহ নিয়ে বেক্সিমকোকে আর্থিক সুবিধা দিতে গিয়ে যে কেলেঙ্কারি হয়েছিল, তার কোনো হিসাব নেই। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে টিকা সংগ্রহ করতে হয়েছিল। এখনো দেশে টিকা উৎপাদনের জন্য যে চুক্তি হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন দৃশ্যমান নয়। 

জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্য এই বাম নেতা করোনাকালে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তাঁর মতে, এ নিয়ে প্রচুর বাগাড়ম্বর শোনা গেলেও সমস্যার সমাধানে কোনো চেষ্টা নেই। একইভাবে সৌদি আরবে যাওয়া নারী শ্রমিকদের নির্যাতনের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি তাঁর বক্তব্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে র‍্যাবের সাতজন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়টিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো উল্লসিত। এই বিষয়ে সরকারের মূল্যায়ন রাষ্ট্রপতির ভাষণে থাকলে ভালো হতো। কারণ এই বিষয়ে পররাষ্ট্র ও অন্যান্য মন্ত্রীদের বক্তব্যে মনে হয় আমরা যেন অপরাধী।’ তিনি বলেন, ‘মার্কিন মুলুকে প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। যারা একাত্তরে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় পাকিস্তানিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি আটকাতে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছিল, তারা বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলার অধিকার রাখে না। বাংলাদেশের মানুষই এই সমস্যা মিটিয়ে নিতে সক্ষম।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩১
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত