Ajker Patrika

বন্ধ হচ্ছে সরকারি চাকরিজীবীদের আন্দোলনের পথ

শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ২০: ০০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দাবিদাওয়া আদায়ে বিভিন্ন সময় আন্দোলনে নেমেছেন সরকারি কর্মচারীরা। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তন হলে একের পর এক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিলেন তাঁরা। সরকারি কর্মচারীদের এমন দলবদ্ধ আন্দোলনের পথ বন্ধ করতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করছে অন্তর্বর্তী সরকার

এ জন্য নতুন একটি অধ্যাদেশের খসড়া করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন পেলে শিগগির এ বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারের নির্দেশনার আলোকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগ তড়িঘড়ি করে সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। সাধারণত সংশ্লিষ্ট উইং থেকে ফাইল তৈরি করে আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাতে হাতে ফাইল প্রস্তুত করেছেন।

একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে সেখানে নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হতে পারে। তিনজনের বেশি সরকারি কর্মচারী একসঙ্গে যাতে কোনো কর্মসূচিতে যোগ দিতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে এতে। সংশোধিত আইনটির অধ্যাদেশ হলে সরকারি চাকরিজীবীদের আন্দোলনে নামার আর কোনো উপায় থাকবে না।

সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে আজকের পত্রিকা। তাঁদের কেউ এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে চাননি। তবে তিন কর্মকর্তা সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বিধি অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আমাদের কাজ শেষ করেছি। এখন সরকার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’

নতুন আইন প্রণয়ন বা পুরোনো আইন সংশোধনের জন্য যে খসড়া করা হয়, তা পরীক্ষানিরীক্ষা করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি কমিটি রয়েছে। সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের খসড়াও ওই কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা গতকাল বিকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (আজ) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গ্রামীণ ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশের অনুমোদনের জন্য তোলার কথা রয়েছে। এ ছাড়া সম্পূরক হিসেবে সরকারি চাকরি আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়াও অনুমোদনের জন্য তোলা হতে পারে।’

সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে কর্মচারীদের আন্দোলনের পথ বন্ধের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, ‘আইন সংশোধন হলে আপনারা জানতে পারবেন‌‌। আমরা গোপনে কোনো কিছুই করব না।’

আইন সংশোধন করে সরকারি চাকরিজীবীদের দলবদ্ধভাবে আন্দোলনের পথ বন্ধ করার বিষয়টি এখন পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কয়েক কর্মকর্তা জেনেছেন। এই আইন সংশোধনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন কর্মকর্তা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের দাবিদাওয়া আদায়ের সব পথ বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে। এর বাস্তবায়ন হলে সরকারি চাকরিজীবীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, সরকারের শীর্ষ পদগুলোতে এখন চুক্তিতে নিয়োজিত কর্মকর্তারা রয়েছেন, তাঁদের আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। অন্তর্বর্তী সরকারও তাদের মেয়াদ শেষ করলেই দায়িত্ব শেষ। দাবিদাওয়া আদায়ের গণতান্ত্রিক পথ বন্ধ করে দিলে সরকারি চাকরিজীবীরা সহজে তা মেনে নেবে বলে মনে হচ্ছে না।

তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ৫ আগস্টের পর সরকারি কর্মচারীরা যে আচরণ করেছেন, তাতে করে তাঁদের জন্য এ রকম নিয়ম করা হলে অনেকের আপত্তি তোলার কোনো জায়গা থাকবে না। কারণ পেশাদারত্বের বাইরে গিয়ে সেই অবস্থানটা তাঁরা নষ্ট করেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর দাবিদাওয়া আদায়ে সরব হয়ে ওঠেন বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মচারীরা। ডিসি নিয়োগকে কেন্দ্র করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নজিরবিহীন হট্টগোল করেন উপসচিব পর্যায়ের একদল কর্মকর্তা। গত সরকারের সময় বঞ্চিত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন সচিবের দপ্তর ঘেরাও করেন। উপসচিব পুলের কোটা নিয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ে নজিরবিহীন শোডাউন করেন।

অন্যদিকে উপসচিব পুলের কোটা নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ভাবনার কথা জানানোর পর প্রশাসন ক্যাডার এবং ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়ে উভয় পক্ষ কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামে। সরকার তাঁদের সতর্ক করে বার্তা দেওয়ার পর উভয় পক্ষ ফেসবুকে বক্তব্য-বিবৃতি দিতে থাকে। পরে ফেসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারের নিয়মকানুন না মানলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তারপরও সরকারি কর্মচারীরা দাবিদাওয়া আদায়ে কর্মসূচি পালন করেন।

আইন করে সরকারি কর্মচারীদের দলবদ্ধভাবে দাবিদাওয়া জানানোর পথ বন্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার। তিনি বলেন, ‘দেশে এ রকম কিছু দরকার। কারণ আমরা একেবারেই অযৌক্তিক মানুষ। আমরা কোনটা চাইব, কোনটা চাইব না, কোনটা যৌক্তিক, কোনটা অযৌক্তিক; সেই বিচারবোধটা আমাদের নেই বললেই চলে।’

সাবেক এই সচিব বলেন, ‘প্রশাসন ক্যাডারে কর্মকর্তারা সচিবালয়ে যেটা করেছেন, গত ৫০ বছরে এ ধরনের নজির নেই। ২৫ ক্যাডারের কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে ভাষায় কথা বলেছেন, সেটি করা উচিত হয়নি। অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিবেরা মন্ত্রণালয়ের বারান্দায় শুয়ে পড়েছেন। এসব থামাতে এ ধরনের পদক্ষেপকে আমি সমর্থন করি। কারণ কিছু কিছু বিধিনিষেধ না থাকলে আপনি মানাতে পারবেন না। রাষ্ট্রকেও তো চলতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার আপসহীন ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে: রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ মঙ্গলবার এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর আপসহীন ভূমিকা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জাতির এই অপূরণীয় ক্ষতির মুহূর্তে আমি মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ ও অনুসারীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

দেশবাসীকে মরহুমার স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁর জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই হতে পারে খালেদা জিয়ার দাফন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২২
জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন খালেদা জিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া
জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন খালেদা জিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া

বিএনপির চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের রাজনীতির ‘আপসহীন’ নেত্রী খালেদা জিয়া আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

বর্ষীয়ান এই নেত্রীর প্রয়াণে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর দাফন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে তাঁর স্বামী, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে হতে পারে। এটি দল ও পরিবারের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত।

এ ছাড়া আগামীকাল বুধবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা ও দাফনপ্রক্রিয়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য বিএনপি বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করছে।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসা শেষে ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। সে সময় স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতিও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনের শারীরিক জটিলতা এবং মানসিক ধকলের কারণে তিনি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।

গত ২৩ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পুনরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে এক মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ভোরে তিনি চিকিৎসায় সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন এবং চিরবিদায় নেন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে নেতৃত্ব দেওয়া খালেদা জিয়া ‘দেশনেত্রী’ হিসেবে জনগণের কাছে সমাদৃত ছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাঁর অটল ভূমিকার কারণে তাঁকে ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে একটি যুগের অবসান ঘটল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তাঁর মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিকতা শেষে তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দলের পক্ষ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি বিস্তারিতভাবে ঘোষণা করার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নির্বাচন কমিশনের শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।

আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত এক শোকবার্তায় জানানো হয়, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একজন প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আরও দুই দফা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি দীর্ঘদিন বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবেও সংসদীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আপসহীন ভূমিকা পালন করেন।

নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিকাশে তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

নির্বাচন কমিশন মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ঠিক করতে উপদেষ্টাদের বৈঠক, দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৫
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক স্মরণীয় অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে চিরবিদায় নিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যু-পরবর্তী রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ও শোক পালনের রূপরেখা নির্ধারণে জরুরি বৈঠকে বসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বিশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত আছেন।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, দুপুর ১২টার পর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এই ভাষণেই রাষ্ট্রীয় শোক এবং সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শেষ বিদায়ের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে দলের চেয়ারপারসনের মৃত্যুতে পরবর্তী করণীয় ও জানাজার সময়সূচি নির্ধারণে স্থায়ী কমিটির জরুরি সভা ডেকেছে বিএনপি। দুপুর সাড়ে ১২টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় নির্বাচনের দিন জুলাই সনদের বিষয়ে প্রস্তাবিত গণভোটের সরকারি প্রচার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের প্রচার বন্ধ থাকবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই এই গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

১৯৪৫ সালে জন্ম নেওয়া খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন। তিন মেয়াদে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই নেত্রী মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং নারী শিক্ষার প্রসারে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা এবং রাজনৈতিক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০২৪ সালের আগস্ট বিপ্লবের পর তিনি পূর্ণ মুক্তি পেলেও শারীরিক জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন হাসপাতালেই কাটছিল তাঁর সময়।

তাঁর মৃত্যুতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা গভীর শোক প্রকাশ করছেন। হাসপাতালের সামনে এবং নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন হাজার হাজার শোকাতুর নেতা-কর্মী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত