Ajker Patrika

বিআরটির ৪০০০ কোটি টাকার প্রকল্পে জোড়াতালি

  • বিশেষায়িত বাসের পরিবর্তে চলবে বিআরটিসির বাস
  • মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসে, কাজ অসম্পূর্ণ, আছে ত্রুটি
  • বিশেষায়িত ১৩৭ বাস কেনার দরপত্রে ছিল অনিয়ম
  • গণশুনানিতে আসা অভিযোগ-অসংগতির সমাধান হয়নি
সৌগত বসু, ঢাকা 
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮: ৫২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বছরের পর বছর তীব্র যানজটের ভোগান্তি দিয়ে অবশেষে জোড়াতালি দিয়ে চালু হচ্ছে ঢাকা-গাজীপুর বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প। তবে ১২ বছর বয়সী প্রকল্পটির কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ পথে চলাচলের জন্য নির্ধারিত বিশেষায়িত বাসও কেনা হয়নি। তাই শুরুতে বিআরটিসির বাসই চলবে। প্রস্তুতিতে নানা ঘাটতি নিয়েই ৬ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলক চলাচল। ১৬ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

৪ হাজার ২৬৭ কোটি টাকার বিআরটি প্রকল্পের শেষ দিকে ধরা পড়েছে নির্মাণ ত্রুটিও। দফায় দফায় কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং পরিকল্পনায় বড় ত্রুটির কারণে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই এটিকে রুগ্‌ণ প্রকল্প আখ্যা দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত ভোগান্তি, বিপুল অর্থ ও সময় ব্যয়ের পর জোড়াতালি দিয়ে চালু করে বিআরটি প্রকল্পের লক্ষ্য পূরণ হবে না।

অভিযোগ রয়েছে, দরপত্রে অনিয়মের কারণে দুই বছরেও কেনা যায়নি বিশেষায়িত ১৩৭টি বাস। কারসাজির কারণে সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক সড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীর ‘পছন্দের’ প্রতিষ্ঠান বাদ পড়ায় ‘কার্যকর প্রতিযোগিতা’ হয়নি—এমন অজুহাতে একটি দরপত্র বাতিল করা হয়।

জানতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ৮ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশেষায়িত বাসের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বাস আসতে সময় লাগবে। এই বাস চলাচলের জন্য যে সফটওয়্যার লাগবে, তা এখনো করা হয়নি। তিনি বলেন, এত বড় বিনিয়োগে এখনো মানুষ কিছু পাচ্ছে না। এই রাস্তা বন্ধ থাকায় পাশের রাস্তায় যানজট হচ্ছে। এগুলো ভেবে বিআরটিসির বাস চালু হচ্ছে। এই লাইনে ব্যক্তিগত গাড়িও চলবে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সড়ক খাতে নেওয়া বড় প্রকল্পগুলোর একটি বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি। দ্রুততম সময়ে বিশেষায়িত বাসে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের শিববাড়ি পর্যন্ত মূল সড়কের মাঝখানে ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বিশেষ এই সড়ক নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়। বিশেষ এই সড়কে চলবে ‘ঢাকা লাইন’ নামে বিশেষায়িত বাস। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। পরে দফায় দফায় খরচ বেড়ে ব্যয় দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। ২০১২ সালে প্রকল্প নেওয়া হলেও কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। কাজে ধীরগতির কারণে ইতিমধ্যে ছয় দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ বাড়ানো মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি ডিসেম্বরে। কিন্তু কাজ শেষ হচ্ছে না। বিআরটি প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এডিবি, এএফডি ও জিইএফ। প্রকল্পের ঠিকাদার চায়না গ্যাজুবা গ্রুপ করপোরেশন (সিজিজিসি)।

বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বিআরটি ব্যবস্থা যাত্রী চলাচলে ভালো ভূমিকা রাখছে। দেশে বিআরটি প্রকল্পের শুরুতেও এমন আশা দেখানো হয়েছে। তবে প্রকল্পের শুরু থেকেই বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত তীব্র যানজটে পড়ে ভুগতে হয়েছে মানুষকে। নির্মাণকাজে গাফিলতির কারণে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে ১০ জনের।

প্রকল্প সূত্র জানায়, বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের শিববাড়ি টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কের ডান দিকে ২৫টি বিআরটি স্টেশন থাকবে। কেবল স্টেশনেই বাসে ওঠা-নামা করতে পারবেন যাত্রীরা। শুরুতে এ পথে আর্টিকুলেটেড বাস চালানোর কথা থাকলেও পরে তা পরিবর্তন করে স্ট্যান্ডার্ড বাস বা বিশেষায়িত বাস চলবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এসব বাসের দরজা থাকবে ডান দিকে। স্টেশনে ঢোকার আগেই যাত্রীকে টিকিট নিতে হবে। ভাড়া নেওয়া হবে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে। বাসগুলো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের সমতলে থামিয়ে যাত্রীদের ওঠানো-নামানো হবে। বাসগুলো প্রতি ঘণ্টায় একমুখী যাতায়াতে ১০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।

তবে বিশেষায়িত বাস না কেনায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ১০টি শীতাতপ বাস শুরুতে চলবে। ৬ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়েছে। উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। বিআরটিসি বলেছে, যাত্রী চাহিদা বাড়লে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে। গুলিস্তান থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে শিববাড়ি পর্যন্ত বিআরটিসি বাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০ টাকা।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বাস কেনা নিয়ে সময়ক্ষেপণ হয়েছে। যত দিন বাস না আসবে তত দিন বিআরটিসির বাস চলবে। আগের দরপত্রে অংশ নেওয়া ছয়টি প্রতিষ্ঠান ছিল চীনের। এবারের দরপত্রে অংশ নিয়েছে দুটি ভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠান। এগুলোর আর্থিক মূল্যায়ন চলছে। মূল্যায়ন চূড়ান্ত হলে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হবে।

সূত্রটি আরও বলেছে, প্রকল্পের ১৩৭টি বাস কিনতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে ফ্রান্স। বাস কেনার প্রক্রিয়া দুই বছরেও শেষ হয়নি। ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল মূল্যায়ন কমিটি চীনের হাইগার বাস কোম্পানি লিমিটেডকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সুপারিশ করে। তবে একই ব্যবসায়ী গ্রুপের আরও একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেওয়ায় বেআইনি হওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানকেই অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। ওই দরপত্র বাতিলের পর চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল আবার দরপত্র আহ্বান করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক সড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী বাস কেনার জন্য ‘পছন্দের’ প্রতিষ্ঠান দিয়ে দরপত্র আহ্বান করিয়েছিলেন। সেই দরপত্রে কারসাজি ধরা পড়লে তাঁদের পছন্দের প্রতিষ্ঠান বাদ পড়ে। এতে ‘কার্যকর প্রতিযোগিতা’ না হওয়ার কারণ দেখিয়ে দরপত্র বাতিল করা হয়। নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথমবার ছয়টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিলেও দ্বিতীয়বার অংশ নেয় দুটি প্রতিষ্ঠান।

বিআরটি প্রকল্প উদ্বোধনের দিন ঘনিয়ে এলেও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি। বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাসের স্টেশনগুলোর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। সব স্টেশনে ময়লার স্তূপ। ইলেকট্রিক সিঁড়ি দেওয়া হলেও সেগুলো বিকল অবস্থায় আছে। বিআরটি লাইনে গণপরিবহনের পাশাপাশি সব ধরনের যানবাহন চলছে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও যোগাযোগ খাতে বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুরুতে আর্টিকুলেটেড বাস চলার কথা ছিল, যে বাসে ১৪০ জন করে যাত্রী বহন করা যায়। এখন স্ট্যান্ডার্ড রুটের বাস চলার কথা বলা হচ্ছে। সেটার প্রস্তুতিতেও ঘাটতি হয়েছে। এখন বিআরটিসির বাস দিয়ে পরীক্ষামূলক চলাচল করছে। তবে যে ধরনের বাস চলার কথা বলা হয়েছিল মূলত সেভাবেই পরীক্ষা করতে হবে। এভাবে জোড়াতালি দিয়ে এই পরীক্ষা চালিয়ে বিআরটি করার লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না।

অভিযোগের সুরাহা হয়নি

বিআরটি প্রকল্প নিয়ে চলতি বছরের ২৭ মার্চ গাজীপুরে গণশুনানিতে নানা অভিযোগ ও অসংগতি তুলে ধরেন এলাকাবাসী। তাঁরা বলেন, ভোগড়ায় ফ্লাইওভারের উচ্চতা কম, সরু ড্রেনের কারণে মহাসড়কের পানি সরে না। বিআরটি স্টেশনে যাতায়াতের জন্য নির্মিত ৭২ ফুট উঁচু সিঁড়ি বয়স্ক মানুষ, মহিলা ও শিশুদের দুর্ভোগে ফেলবে। আগে সড়ক ও জনপথের মহাসড়কের প্রশস্ততা ছিল ১০০ ফুট। ওই মহাসড়ক দিয়ে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন চলে। কিন্তু এখন মহাসড়ক খুব সরু হয়ে পড়েছে। প্রকল্পটির চান্দনা চৌরাস্তা থেকে শিববাড়ি মোড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের কোথাও ফুটপাত রাখা হয়নি, কোনো ইউটার্নও নেই।

এসব সমস্যা সমাধানে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হলেও সমাধান হয়নি।

স্থানীয়রা বলছেন, শুনানির পর শুধু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে শিববাড়ি পর্যন্ত এক থেকে দেড় ফুট প্রস্থের ফুটপাত বানানো হয়েছে।

বিআরটি প্রকল্পের এক কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রণালয়ে যেসব সমস্যা জানানো হয়েছে, সেগুলো ধাপে ধাপে সমাধান করা হবে। ট্রাফিক বিভাগ থেকেও কিছু পরামর্শ এসেছে। সেগুলো নিয়েও কাজ করা হবে।

এসব বিষয়ে জানতে ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।

তবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মনিরুজ্জামান শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাস কেনার দরপত্রের নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (কাজ পাওয়ার নিশ্চিতকরণপত্র) এখনো পাঠানো হয়নি। এটি পাঠানোর পাঁচ থেকে ছয় মাস পর বাস আসতে পারে। প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান। যেহেতু বাস আসতে সময় লাগছে তাই এই রুট খালি রাখা হচ্ছে না।

বিআরটি প্রকল্প কবে শেষ হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের আগে প্রকল্পের যেসব জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো ঠিক করতে হবে। আগের সরকারের সময় বাস কেনার কথা থাকলেও হয়নি। দুর্নীতি হয়েছে। এখন যেন ঠিকভাবে হয় তা দেখা হচ্ছে।

[তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন আজকের পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৮১ আসনে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী

  • জামায়াতে বিদ্রোহী প্রার্থী ময়মনসিংহের এক নেতা।
  • মনোনয়ন ফরম বিক্রি ৩,৪০৭টি, জমা ২,৫৮২টি।
  • রোববার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই চলবে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
৮১ আসনে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে এদিন বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির আরও অনেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে অন্তত ৮১টি আসনে দলটির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

তবে শুধু বিএনপিতে নয়, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের দুই নেতা। আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য পর্যালোচনায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার থেকে আগামী রোববার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের তারিখ ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তির তারিখ ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি এবং ভোট গ্রহণ ১২ ফেব্রুয়ারি।

নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৩,৪০৭ জন। তাঁদের মধ্যে গতকাল শেষ দিন পর্যন্ত জমা পড়েছে ২ হাজার ৫৮২টি।

গত ৩ নভেম্বর প্রথম পর্যায়ে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিএনপি। এক দিন পরই মাদারীপুর-১ আসনের ঘোষিত প্রার্থী কামাল জামাল মোল্লার নাম স্থগিত করা হয়। পরে ৪ ডিসেম্বর আরও ৩৬টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে দলটি। পরবর্তী ২৮ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করলেও চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে। এর মধ্যে মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে ৮ জোট নেতার। এর বাইরে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন আরও ৫ নেতা।

আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা যায়, ময়মনসিংহে ১১টি আসনের ৯টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির ১৪ জন নেতা। ময়মনসিংহ-৪ ও ৫ বাদে বাকি সব আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতারা। ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের আসনেই দলের আরও দুই নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

নোয়াখালীর ৬টি আসনের মধ্যে তিনটিতেই বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বাইরে দলের অন্য নেতারাও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানসহ ২ জন। নোয়াখালী-৫ আসনে দলের বাইরে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতা প্রয়াত মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ। নোয়াখালী-৬ আসনেও বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলের তিন নেতা। দলের সমর্থন না পেয়েও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক এমপি ফজলুল আজিম ও তাঁর স্ত্রী এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানবীর উদ্দিন রাজিব। তিনটি আসনে বিদ্রোহীরা মাঠে থাকলে বিএনপির জন্য নেতিবাচক ফল আনতে পারে।

নওগাঁর ৬ আসনের মধ্যে ৫টিতেই বিএনপির প্রার্থী আছেন একাধিক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬টি আসনেও আছেন বিএনপির একাধিক প্রার্থী। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে সমর্থন দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকিকে বিএনপির ছাড় দেওয়া আসনে বিএনপির এক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নাটোরের ৪টি আসনের মধ্যে ২টিতে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে চান। এর মধ্যে নাটোর-১ আসনে বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরকে ছাড় দিলেও সেখানে বিএনপির নেতা হাসান মাহমুদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মানিকগঞ্জের ৩ আসনেই বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের তিনটি সংসদীয় আসনের একটিতে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির এক নেতা। দিনাজপুরের ৬ আসনের মধ্যে দুটিতে বিএনপির দুজন করে নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন (দিনাজপুর-২ ও ৫)।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম, জামালপুর, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, বরিশাল, বাগেরহাট, ফরিদপুর, পঞ্চগড়, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, শেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোর, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, নাটোর ও রংপুর, নরসিংদী, পাবনাসহ বিভিন্ন জায়গায় এক এবং একাধিক আসনে বিএনপির কয়েকজন করে নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জামায়াতে ইসলামী

এদিকে দলীয় প্রার্থী থাকার পরেও ময়মনসিংহ-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর জসিম উদ্দিন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার জামায়াতের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী হাসানুজ্জামান সজীব। ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির নেতা জহুরুল ইসলাম আজিজি।

১৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী বদল

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ১৫ আসনে পরিবর্তন করেছে বিএনপি। সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন এসেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে। ঢাকা-১২ আসনে সাইফুল আলম নীরবের পরিবর্তে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মো. মাসুদুজ্জামান ভোটে অনীহা প্রকাশ করার পর সেখানে বিএনপির সাবেক মহানগর সভাপতি আবুল কালামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। রাউজান (চট্টগ্রাম-৬) আসনে ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবর্তে গোলাম আকবর খন্দকারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-১৪ আসনটি আগে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদের ছেলে ওমর ফারুকের জন্য ফাঁকা রাখা হলেও অলি আহমদের দল জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেওয়ার পর সেখানে বিএনপি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিনকে প্রার্থী করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম-৪ আসনে কাজী সালাহউদ্দিনের পরিবর্তে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ থেকে সরিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে চট্টগ্রাম-১০ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান।

বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমানের ঋণখেলাপি-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সেখানে বিএনপির নেতা মীর শাহে আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তবে মান্না শেষ পর্যন্ত প্রার্থিতা ফেরত পেয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমানের বদলে কবির আহমেদ ভূঁইয়াকে প্রার্থী করা হয়। মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে এক্‌মি গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রবীণ নেতা মিজানুর রহমান সিনহার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ এবং মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে কামরুজ্জামান রতনের বদলে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন পেয়েছেন।

ঝিনাইদহ-১ আসনে সদ্য পদত্যাগ করা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে প্রার্থী করা হয়েছে। নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থীর পরিবর্তে জোটসঙ্গী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

যশোর-১, যশোর-৫ ও যশোর-৬ আসনেও দলীয় ও জোটগত সমীকরণে নতুন প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামাল মোল্লার বদলে নাদিরা আক্তারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যশোর-৬ আসনে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণকে প্রথমে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে গণঅধিকার পরিষদ থেকে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া রাশেদ খান। এদিকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনেই বিকল্প প্রার্থী রেখেছে বিএনপি।

মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ২ হাজার ৫৮২টি

ইসি জানিয়েছে, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছিল, জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হয়েছিল, জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি। খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি। ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪টি জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি মনোনয়নপত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই মাসের চুক্তিতে স্বাস্থ্যের ডিজি ও সচিব নিয়োগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।

২৪ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সামিউল আমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী মো. সাইদুর রহমানকে তাঁর অবসরোত্তর ছুটি ও তৎসংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিত এবং অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

একই আইনের সমধারায় দুই মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরও। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. মো. শাদরুল আলমকে। এত দিন তিনি সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের (সিএমই) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আজ সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব দূর-রে শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাঁকে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ২৫৮২ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।

খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।

ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পি কে হালদার। ফাইল ছবি
পি কে হালদার। ফাইল ছবি

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।

আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।

কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত