Ajker Patrika

বিআরটির ৪০০০ কোটি টাকার প্রকল্পে জোড়াতালি

  • বিশেষায়িত বাসের পরিবর্তে চলবে বিআরটিসির বাস
  • মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসে, কাজ অসম্পূর্ণ, আছে ত্রুটি
  • বিশেষায়িত ১৩৭ বাস কেনার দরপত্রে ছিল অনিয়ম
  • গণশুনানিতে আসা অভিযোগ-অসংগতির সমাধান হয়নি
সৌগত বসু, ঢাকা 
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮: ৫২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বছরের পর বছর তীব্র যানজটের ভোগান্তি দিয়ে অবশেষে জোড়াতালি দিয়ে চালু হচ্ছে ঢাকা-গাজীপুর বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প। তবে ১২ বছর বয়সী প্রকল্পটির কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ পথে চলাচলের জন্য নির্ধারিত বিশেষায়িত বাসও কেনা হয়নি। তাই শুরুতে বিআরটিসির বাসই চলবে। প্রস্তুতিতে নানা ঘাটতি নিয়েই ৬ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলক চলাচল। ১৬ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

৪ হাজার ২৬৭ কোটি টাকার বিআরটি প্রকল্পের শেষ দিকে ধরা পড়েছে নির্মাণ ত্রুটিও। দফায় দফায় কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং পরিকল্পনায় বড় ত্রুটির কারণে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই এটিকে রুগ্‌ণ প্রকল্প আখ্যা দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত ভোগান্তি, বিপুল অর্থ ও সময় ব্যয়ের পর জোড়াতালি দিয়ে চালু করে বিআরটি প্রকল্পের লক্ষ্য পূরণ হবে না।

অভিযোগ রয়েছে, দরপত্রে অনিয়মের কারণে দুই বছরেও কেনা যায়নি বিশেষায়িত ১৩৭টি বাস। কারসাজির কারণে সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক সড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীর ‘পছন্দের’ প্রতিষ্ঠান বাদ পড়ায় ‘কার্যকর প্রতিযোগিতা’ হয়নি—এমন অজুহাতে একটি দরপত্র বাতিল করা হয়।

জানতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ৮ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশেষায়িত বাসের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বাস আসতে সময় লাগবে। এই বাস চলাচলের জন্য যে সফটওয়্যার লাগবে, তা এখনো করা হয়নি। তিনি বলেন, এত বড় বিনিয়োগে এখনো মানুষ কিছু পাচ্ছে না। এই রাস্তা বন্ধ থাকায় পাশের রাস্তায় যানজট হচ্ছে। এগুলো ভেবে বিআরটিসির বাস চালু হচ্ছে। এই লাইনে ব্যক্তিগত গাড়িও চলবে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সড়ক খাতে নেওয়া বড় প্রকল্পগুলোর একটি বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি। দ্রুততম সময়ে বিশেষায়িত বাসে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের শিববাড়ি পর্যন্ত মূল সড়কের মাঝখানে ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বিশেষ এই সড়ক নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়। বিশেষ এই সড়কে চলবে ‘ঢাকা লাইন’ নামে বিশেষায়িত বাস। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। পরে দফায় দফায় খরচ বেড়ে ব্যয় দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। ২০১২ সালে প্রকল্প নেওয়া হলেও কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। কাজে ধীরগতির কারণে ইতিমধ্যে ছয় দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ বাড়ানো মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি ডিসেম্বরে। কিন্তু কাজ শেষ হচ্ছে না। বিআরটি প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এডিবি, এএফডি ও জিইএফ। প্রকল্পের ঠিকাদার চায়না গ্যাজুবা গ্রুপ করপোরেশন (সিজিজিসি)।

বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বিআরটি ব্যবস্থা যাত্রী চলাচলে ভালো ভূমিকা রাখছে। দেশে বিআরটি প্রকল্পের শুরুতেও এমন আশা দেখানো হয়েছে। তবে প্রকল্পের শুরু থেকেই বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত তীব্র যানজটে পড়ে ভুগতে হয়েছে মানুষকে। নির্মাণকাজে গাফিলতির কারণে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে ১০ জনের।

প্রকল্প সূত্র জানায়, বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের শিববাড়ি টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কের ডান দিকে ২৫টি বিআরটি স্টেশন থাকবে। কেবল স্টেশনেই বাসে ওঠা-নামা করতে পারবেন যাত্রীরা। শুরুতে এ পথে আর্টিকুলেটেড বাস চালানোর কথা থাকলেও পরে তা পরিবর্তন করে স্ট্যান্ডার্ড বাস বা বিশেষায়িত বাস চলবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এসব বাসের দরজা থাকবে ডান দিকে। স্টেশনে ঢোকার আগেই যাত্রীকে টিকিট নিতে হবে। ভাড়া নেওয়া হবে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে। বাসগুলো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের সমতলে থামিয়ে যাত্রীদের ওঠানো-নামানো হবে। বাসগুলো প্রতি ঘণ্টায় একমুখী যাতায়াতে ১০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।

তবে বিশেষায়িত বাস না কেনায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ১০টি শীতাতপ বাস শুরুতে চলবে। ৬ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়েছে। উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। বিআরটিসি বলেছে, যাত্রী চাহিদা বাড়লে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে। গুলিস্তান থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে শিববাড়ি পর্যন্ত বিআরটিসি বাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০ টাকা।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বাস কেনা নিয়ে সময়ক্ষেপণ হয়েছে। যত দিন বাস না আসবে তত দিন বিআরটিসির বাস চলবে। আগের দরপত্রে অংশ নেওয়া ছয়টি প্রতিষ্ঠান ছিল চীনের। এবারের দরপত্রে অংশ নিয়েছে দুটি ভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠান। এগুলোর আর্থিক মূল্যায়ন চলছে। মূল্যায়ন চূড়ান্ত হলে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হবে।

সূত্রটি আরও বলেছে, প্রকল্পের ১৩৭টি বাস কিনতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে ফ্রান্স। বাস কেনার প্রক্রিয়া দুই বছরেও শেষ হয়নি। ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল মূল্যায়ন কমিটি চীনের হাইগার বাস কোম্পানি লিমিটেডকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সুপারিশ করে। তবে একই ব্যবসায়ী গ্রুপের আরও একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেওয়ায় বেআইনি হওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানকেই অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। ওই দরপত্র বাতিলের পর চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল আবার দরপত্র আহ্বান করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক সড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী বাস কেনার জন্য ‘পছন্দের’ প্রতিষ্ঠান দিয়ে দরপত্র আহ্বান করিয়েছিলেন। সেই দরপত্রে কারসাজি ধরা পড়লে তাঁদের পছন্দের প্রতিষ্ঠান বাদ পড়ে। এতে ‘কার্যকর প্রতিযোগিতা’ না হওয়ার কারণ দেখিয়ে দরপত্র বাতিল করা হয়। নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথমবার ছয়টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিলেও দ্বিতীয়বার অংশ নেয় দুটি প্রতিষ্ঠান।

বিআরটি প্রকল্প উদ্বোধনের দিন ঘনিয়ে এলেও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি। বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাসের স্টেশনগুলোর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। সব স্টেশনে ময়লার স্তূপ। ইলেকট্রিক সিঁড়ি দেওয়া হলেও সেগুলো বিকল অবস্থায় আছে। বিআরটি লাইনে গণপরিবহনের পাশাপাশি সব ধরনের যানবাহন চলছে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও যোগাযোগ খাতে বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুরুতে আর্টিকুলেটেড বাস চলার কথা ছিল, যে বাসে ১৪০ জন করে যাত্রী বহন করা যায়। এখন স্ট্যান্ডার্ড রুটের বাস চলার কথা বলা হচ্ছে। সেটার প্রস্তুতিতেও ঘাটতি হয়েছে। এখন বিআরটিসির বাস দিয়ে পরীক্ষামূলক চলাচল করছে। তবে যে ধরনের বাস চলার কথা বলা হয়েছিল মূলত সেভাবেই পরীক্ষা করতে হবে। এভাবে জোড়াতালি দিয়ে এই পরীক্ষা চালিয়ে বিআরটি করার লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না।

অভিযোগের সুরাহা হয়নি

বিআরটি প্রকল্প নিয়ে চলতি বছরের ২৭ মার্চ গাজীপুরে গণশুনানিতে নানা অভিযোগ ও অসংগতি তুলে ধরেন এলাকাবাসী। তাঁরা বলেন, ভোগড়ায় ফ্লাইওভারের উচ্চতা কম, সরু ড্রেনের কারণে মহাসড়কের পানি সরে না। বিআরটি স্টেশনে যাতায়াতের জন্য নির্মিত ৭২ ফুট উঁচু সিঁড়ি বয়স্ক মানুষ, মহিলা ও শিশুদের দুর্ভোগে ফেলবে। আগে সড়ক ও জনপথের মহাসড়কের প্রশস্ততা ছিল ১০০ ফুট। ওই মহাসড়ক দিয়ে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন চলে। কিন্তু এখন মহাসড়ক খুব সরু হয়ে পড়েছে। প্রকল্পটির চান্দনা চৌরাস্তা থেকে শিববাড়ি মোড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের কোথাও ফুটপাত রাখা হয়নি, কোনো ইউটার্নও নেই।

এসব সমস্যা সমাধানে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হলেও সমাধান হয়নি।

স্থানীয়রা বলছেন, শুনানির পর শুধু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে শিববাড়ি পর্যন্ত এক থেকে দেড় ফুট প্রস্থের ফুটপাত বানানো হয়েছে।

বিআরটি প্রকল্পের এক কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রণালয়ে যেসব সমস্যা জানানো হয়েছে, সেগুলো ধাপে ধাপে সমাধান করা হবে। ট্রাফিক বিভাগ থেকেও কিছু পরামর্শ এসেছে। সেগুলো নিয়েও কাজ করা হবে।

এসব বিষয়ে জানতে ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।

তবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মনিরুজ্জামান শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাস কেনার দরপত্রের নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (কাজ পাওয়ার নিশ্চিতকরণপত্র) এখনো পাঠানো হয়নি। এটি পাঠানোর পাঁচ থেকে ছয় মাস পর বাস আসতে পারে। প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান। যেহেতু বাস আসতে সময় লাগছে তাই এই রুট খালি রাখা হচ্ছে না।

বিআরটি প্রকল্প কবে শেষ হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের আগে প্রকল্পের যেসব জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো ঠিক করতে হবে। আগের সরকারের সময় বাস কেনার কথা থাকলেও হয়নি। দুর্নীতি হয়েছে। এখন যেন ঠিকভাবে হয় তা দেখা হচ্ছে।

[তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন আজকের পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গণভোটের প্রচার: পরিবর্তনের চাবি আপনারই হাতে

  • ১১টি সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে লিফলেটে।
  • বলা হয়েছে, ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে সব পাবেন। ‘না’ ভোট দিলে কিছুই পাবেন না।
  • গণভোটের বিষয়ে সরকার, ইসি, মন্ত্রণালয় প্রচার চালাবে।
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১০টি ভোটের গাড়ি চালু করা হয়েছে। ভোটারদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ভোট পর্যন্ত দেশের সব জেলা-উপজেলায় ঘুরবে এসব গাড়ি। এ ছাড়া ভোটের গান প্রচারের পাশাপাশি উঠান বৈঠকও শুরু হয়েছে দেশব্যাপী। এর ধারাবাহিকতায় ‘দেশের চাবি আপনার হাতে’ স্লোগান নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

লিফলেটে ‘আপনি কি এমন বাংলাদেশ চান, যেখানে...’—এই জিজ্ঞাসার বিপরীতে ১১টি সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, সরকারি দল ইচ্ছেমতো সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না; সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের বিধান চালু হবে; বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার এবং গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটিসমূহের সভাপতি নির্বাচিত হবে; কেউ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না; সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়বে; ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য পার্লামেন্টে একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে; দেশের বিচারব্যবস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করবে; আপনার মৌলিক অধিকারের সংখ্যা (যেমন অবাধে ইন্টারনেট সেবাপ্রাপ্তির অধিকার) বাড়বে; দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি ইচ্ছেমতো ক্ষমা করতে পারবেন না; রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকবে।

লিফলেটে বলা হয়েছে, ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে ওপরের সবকিছু পাবেন। ‘না’ ভোট দিলে কিছুই পাবেন না। মনে রাখবেন, পরিবর্তনের চাবি এবার আপনারই হাতে।

এ ছাড়া গণভোটের বিষয়ে প্রচারের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে ‘গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম’ সেল খোলা হয়েছে। প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) অধ্যাপক আলী রীয়াজকে। সেলের উদ্যোগে লোগো ও লিফলেট তৈরি করা হয়েছে, যা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জানা গেছে, লিফলেট দু-এক দিনের মধ্যে বিলি শুরু করবে সরকার। তারা পর্যায়ক্রমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার শুরু করবে। গণভোট নিয়ে দুটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। যেখানে গণভোটের বিষয়ে সব ধরনের তথ্য দেওয়া থাকবে।

প্রচারের মাধ্যমে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে পৌঁছানো সরকারের লক্ষ্য বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণভোট একটি ঐতিহাসিক সুযোগ দেশের মানুষের জন্য। অতীতে যেভাবে গণভোট হয়েছে, তা থেকে এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ অতীতের গণভোটের ক্ষেত্রে দেখা গেছে গৃহীত সিদ্ধান্ত। যেমন দ্বাদশ সংশোধনীর ক্ষেত্রে। কিংবা এমন পরিস্থিতিতে হয়েছে, মানুষের পছন্দের জায়গা ছিল না। এই গণভোট হচ্ছে মানুষের পছন্দের সুযোগ। আশা করি, মানুষ সে সুযোগ ব্যবহার করবে।’

সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদের বিষয়ে গণভোটের বিষয়ে সারা দেশে প্রচারের লক্ষ্যে ২২ ডিসেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি—সুপার ক্যারাভান। এসব গাড়ি দেশের ৬৪ জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেবে। সেখানে বিভিন্ন ভিডিও চিত্র দেখানো হবে।

নির্বাচন এবং গণভোট উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৩০টি ভিডিও তৈরি করা হবে। যেখানে আটটি বিভাগের জন্য আটটি গান তৈরি করা হয়েছে। গত বুধবার ঢাকা বিভাগের জন‍্য নির্মিত গান রিলিজ করা হয়। গেয়েছেন স্টোইক ব্লিসখ‍্যাত কাজী। পর্যায়ক্রমে বাকি সাতটি বিভাগের জন্য নির্মিত গানও রিলিজ করা হবে। গানের কথায় এক দিন দুই ভোট, সংসদ-গণভোট আওয়াজ ওঠায়, জবাবদিহি, সংস্কার, পরিবর্তন চাইলে গণভোট দেওয়ার কথা বলা আছে। গত সরকারের আমলের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ড গানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গানের কথায় সব জেলার নাম বলা হয়েছে। যেখানে দেশের মালিক জনগণকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সর্বশেষ মানুষের উদ্দেশে বলা হয়, ‘আসুন দেশের মালিকানা বুঝে নিন।’

গণভোট নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি, ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ ১৯ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে প্রচার কার্যক্রম করবে সরকার। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকদের নিয়ে সরকার বৈঠক করেছে। এ ছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তথ্যচিত্র, শর্ট ভিডিও। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জারি-সারি গান, অঞ্চলভিত্তিক গান তৈরি করা হয়েছে—যা হাট-বাজারে প্রচার করা হবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উপজেলা পর্যায়ে ফোকাল ব্যক্তি নির্ধারণের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের জন্য একটি টিম তৈরি করা হচ্ছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে প্রচার হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এনজিও ব্যুরোর উদ্যোগেও প্রচার করা হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিতসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে ধর্মগুরুদের নিজ নিজ ধর্মীয় স্থানের গণভোটের বিষয়ে মানুষকে বার্তা দিতে বলা হবে। সেখানে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে কী সংস্কার হবে, ‘না’ ভোট দিলে কী হবে—তা বলতে বলা হবে।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগেও গণভোটে নিয়ে প্রচার করা হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘গণভোটের প্রচার করার জন্য আমাদের অফিসগুলোকে ফেস্টুন দেব। এ ছাড়া লিফলেট বিলি করব। তবে মূল কাজ করছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। আমরা আমাদের ভোট ব্যবস্থাপনায় যেটুকু দরকার, সেটুকু করব।’

গণভোট ও জুলাই সনদের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোও প্রচার করবে বলে আশা সরকারের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র নিলেন ৩১৪৪ জন, আগামীকালই দাখিলের শেষ সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটের কাজে কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইসি।

এর আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ও এ জন্য বাজেট প্রণয়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার রোধ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন ও নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আসবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভিসা প্রসেসিংসহ সব বিষয়ে সচিবের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে বিগত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যেভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, এবারও তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে পোস্টাল ভোটের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ডাক বিভাগকে সমন্বয় ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পোস্টাল ব্যালট দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত আনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।

এ ছাড়া আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সংস্কার এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের ভাঙা ও সংকীর্ণ রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ইসির সম্মতির প্রয়োজন হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী মঙ্গলবার অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশে কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আজ রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ দেওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সব জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পড়ান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত