Ajker Patrika

ঠোঁট সেলাই, বস্তায় ভরে নদীতে ছুড়ে ফেলা: ১৫ বছরে গুম–খুনের যতো কৌশল

আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২: ৪০
রাষ্ট্রীয় গুমের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাষ্ট্রীয় গুমের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা

গুমসংক্রান্ত কমিশনের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত শনিবার জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গুম, নির্যাতন ও খুনের ভয়াবহ বর্ণনা।

প্রতিবেদনে গুমের পদ্ধতি, প্রক্রিয়া এবং যে পদ্ধতিতে এগুলো কার্যকর করা হয়েছে, সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের মূল্যায়নে দেখা গেছে, বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক গুমের ঘটনা মূলত পুলিশ বিভাগের অধীনে কাজ করা বিভিন্ন ইউনিট দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং সন্ত্রাসবিরোধী ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ (সিটিটিসি) বিভাগ। ভুক্তভোগী, সাক্ষী এবং পরিবারের সদস্যদের মতে, এই বাহিনীগুলো বেশির ভাগ গুমের জন্য প্রধানত দায়ী।

এ ছাড়া, আরও কিছু সংস্থার নাম উঠে এসেছে, যার মধ্যে রয়েছে—ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই)।

কমিশন ১ হাজার ৬৭৬টি নথিভুক্ত অভিযোগের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৭৫৮টি অভিযোগ পর্যালোচনা করেছে। এই পর্যালোচনার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে:

১৫ বছরের গুমের পর্যালোচনা
বছরঅভিযোগবছরঅভিযোগ
২০০৯২০১৭৮৪
২০১০১৯২০১৮৮৯
২০১১২৩২০১৯৩৬
২০১২৩৬২০২০১৮
২০১৩৭৩২০২১২৫
২০১৪৪৫২০২২৪২
২০১৫৭৮২০২৩৩৪
২০১৬১৩০২০২৪২১

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গুমের এই সংস্কৃতি ১৫ বছরের মধ্যে এমনভাবে পরিকল্পিত ছিল, যাতে তা সহজে শনাক্ত করা না যায়। উদাহরণস্বরূপ, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রায়ই সাদাপোশাকে কাজ করতেন এবং নিজেদের কর্মকাণ্ড অন্য কোনো সংস্থার ওপর চাপিয়ে দিতেন। যেমন—ডিজিএফআই যদি কোনো অভিযান পরিচালনা করত, তারা দাবি করত তারা র‍্যাব; র‍্যাব হলে বলত তারা ডিবি।

নিরাপত্তা বাহিনী প্রায়ই ভুক্তভোগীদের নিজেদের মধ্যে হস্তান্তর ও বিনিময় করত। একটি বাহিনী অপহরণ করত, আরেকটি আটক রাখত এবং তৃতীয়টি হয় হত্যা করত বা মুক্তি দিত।

একটি উদাহরণ হলো, এক ভুক্তভোগীর কল রেকর্ডে দেখায় যে, অপহরণের পরপরই তাঁর সিম কার্ড ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরে সক্রিয় ছিল। প্রথম অবস্থান ডিজিএফআইয়ের একটি গোপন আটক কেন্দ্রে ছিল, পরে তাঁকে র‍্যাবের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয় এবং কয়েক মাস পর র‍্যাব–৭ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়।

কিছু ক্ষেত্রে একটি বাহিনী এককভাবে গুম কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সেই অপারেশন উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভক্ত করা হতো। অপহরণের জন্য একটি দল, আটক রাখার জন্য আরেকটি দল এবং হত্যা বা মুক্তি দেওয়ার জন্য আরেকটি দল দায়িত্ব পালন করত। ফলে যারা হত্যা কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত ছিল, তারাও প্রায়ই জানত না কাকে হত্যা করা হচ্ছে।

বাহিনীর মধ্যে প্রায়শই কাজের এলাকা এবং দায়িত্বের সীমারেখা অস্পষ্ট ছিল। উদাহরণস্বরূপ, র‍্যাব–২ সহজেই র‍্যাব–১১–এর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে পারত, যা বাহিনীর অভ্যন্তরে কোনো প্রশ্ন তুলত না।

এই পরিকল্পিত অপারেশনাল জটিলতার কারণে অনুসন্ধানে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে কমিশনকে। তবে, বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীদের সাহস এবং তাঁদের তথ্য প্রদানের মাধ্যমেই এই ব্যবস্থা কিছুটা উন্মোচন করতে পেরেছে কমিশন।

অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা এবং মুক্তি

অপহরণ

অনুসন্ধান অনুসারে, অপহরণ সাধারণত রাস্তায় বা বাড়িতে সংঘটিত হতো, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাতে। অপহরণকারীরা প্রায়ই সাদাপোশাক পরিহিত থাকত এবং নিজেদের পরিচয় দিত ‘প্রশাসনের লোক’, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ডিবি অথবা র‍্যাব হিসেবে। যেসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেসব ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরা গভীর মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন, কারণ তাঁরা দেখেছিলেন কীভাবে তাঁদের প্রিয়জনদের মারধর করে ও জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে অপহৃতদের আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ ছাড়া, ফেরি, রাস্তার পাশ অথবা অন্যান্য জনবহুল স্থান থেকেও ভুক্তভোগীদের অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের সময় তাঁদের নাম ধরে ডাকা হতো এবং দ্রুত বড় গাড়িতে তুলে নেওয়া হতো। গাড়ির ভেতরেই ভুক্তভোগীদের চোখ বাঁধা, হাতকড়া পরানো এবং অস্ত্রের মুখে হুমকি দেওয়া হতো। প্রায়শই নির্যাতন যেমন: মারধর বা বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, আটকের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যেত।

কিছু অপহরণ জনসমক্ষে ঘটেছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত স্থানে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়াই অপহরণ সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে প্রমাণ সংগ্রহ করা অত্যন্ত কঠিন হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ভুক্তভোগী, যিনি বেঁচে ফিরে এসেছিলেন, উল্লেখ করেছেন, ‘আমি তার সঙ্গে চা খেয়েছিলাম এবং সে বাড়ি ফিরছিল। পনেরো মিনিট পরে আমি রাস্তার পাশে তার সাইকেল এবং বই পড়ে থাকতে দেখলাম।’

যাঁরা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদের সাক্ষ্য এবং পরিস্থিতির ভিত্তিতে কিছু অপহরণের ঘটনার বর্ণনা পাওয়া সম্ভব হয়েছে।

আটক

ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সময়ের জন্য আটক রাখা হতো ৪৮ থেকে ৬০ ঘণ্টা, কয়েক সপ্তাহ বা মাস এবং কিছু ক্ষেত্রে আট বছর পর্যন্ত। সাধারণ ধারণা ছিল যে ভুক্তভোগীদের কেবল গোপন কারাগারে রাখা হয়, কিন্তু বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে, অনেককে বৈধ বন্দীদের সঙ্গে একই সেলে আটক রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, একই স্থাপনার ভেতরেই তাঁদের অবৈধ সেল থেকে বৈধ সেলে স্থানান্তর করা হতো। এসব স্থানান্তর সাধারণত আদালতে হাজিরার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হতো, যেন তাঁদের অবৈধ আটকের বিষয়টি আড়াল করা যায়।

তদন্তে দেখা গেছে, অনেক গোপন আটককেন্দ্র এখনো অক্ষত রয়েছে, যদিও কিছু ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসগুলো পরিদর্শনের সময় এসব কেন্দ্রে আটক ব্যক্তিদের অবস্থান নির্ধারণে ভুক্তভোগীদের বিবরণ কাজে লাগিয়েছে কমিশন।

নির্যাতন

নথিভুক্ত নির্যাতনের বর্ণনা নির্মম এবং পদ্ধতিগত। বেসামরিক বাহিনীর (যেমন: ডিবি বা সিটিটিসি) পরিচালিত কেন্দ্রগুলোতে নির্যাতন তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের অংশ ছিল। এসব নির্যাতন স্থানীয় অফিসেই ঘটত এবং প্রায়শই বিশেষায়িত সরঞ্জাম ব্যবহার করা হতো।

অন্যদিকে, সামরিক বাহিনী (যেমন র‍্যাব বা ডিজিএফআই) পরিচালিত কেন্দ্রে নির্যাতনের জন্য বিশেষায়িত অবকাঠামো ছিল। এসব কেন্দ্র প্রায়ই সাউন্ডপ্রুফ কক্ষ এবং বিশেষ যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত ছিল। এগুলো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।

এক ভুক্তভোগী উল্লেখ করেছেন, ২০১০ সালে তাঁকে ধানমন্ডি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তার ঠোঁট সেলাই করা হয়েছিল, কোনো অ্যানাস্থেটিক ব্যবহার (অবশ) না করেই। তিনি এই অভিজ্ঞতাকে ‘গরুর চামড়া সেলাই করার মতো’ বলে বর্ণনা করেছেন।

হত্যা

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, গুম হওয়া ব্যক্তিদের হয় হত্যা করা হয়েছে অথবা তাঁদের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে আটকে রাখা হয়েছে। যাঁদের হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের মরদেহ সিমেন্টের ব্যাগ বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

কিছু ক্ষেত্রে সামরিক কর্মকর্তা এবং সৈন্যরা সরাসরি এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, এক র‍্যাব কর্মকর্তা বর্ণনা করেছেন কীভাবে একটি ‘অভিষেক’ সেশনের সময় তাঁর সামনে দুটি ভুক্তভোগীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।

মুক্তি

যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁরা কমিশনের তদন্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উৎস। তবে মুক্তি পাওয়া ভুক্তভোগীদের ওপর মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে এবং তাদের নির্যাতনের বিষয়টি ঢাকতে মিডিয়ায় মিথ্যা গল্প প্রচার করা হয়েছে।

বেঁচে ফিরে আসা ব্যক্তিদের সাক্ষ্য অনুসারে, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে এবং স্থানীয় আইন ও বিচারব্যবস্থার ফাঁদে ফেলে দীর্ঘ সময় ভোগান্তির শিকার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই মাসের চুক্তিতে স্বাস্থ্যের ডিজি ও সচিব নিয়োগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।

২৪ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সামিউল আমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী মো. সাইদুর রহমানকে তাঁর অবসরোত্তর ছুটি ও তৎসংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিত এবং অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

একই আইনের সমধারায় দুই মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরও। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. মো. শাদরুল আলমকে। এত দিন তিনি সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের (সিএমই) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আজ সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব দূর-রে শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাঁকে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ২৫৮২ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।

খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।

ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পি কে হালদার। ফাইল ছবি
পি কে হালদার। ফাইল ছবি

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।

আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।

কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলার তদন্ত-বিচারকাজে আইনি পরামর্শক হলেন সমাজী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর সমাজীকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদার সুবিধায় ওই দায়িত্ব দিয়ে আজ সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী প্রচারণাকালে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি আততায়ীর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগরীর পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। ডিএমপির অধীনে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মামলাটি দ্রুত তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

হাদি হত্যাকাণ্ডের মামলা তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্তসংশ্লিষ্টদের এবং পরে আদালতে বিচারকালে বিচারসংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশন টিমকে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত