Ajker Patrika

তিস্তা চুক্তির জন্য ভারতকে চাপ দেওয়া হয়েছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী 

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
তিস্তা চুক্তির জন্য ভারতকে চাপ দেওয়া হয়েছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী 

তিস্তা নদী নিয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের কথা ছিল। কিন্তু পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য সেটা সম্ভব হয়নি। সেটা নিয়ে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। দীর্ঘ ১২ বছর পর বাংলাদেশ–ভারতের ৩৮ তম মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছি—মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন। তিনি চান যত দ্রুত সম্ভব এমওইউটা স্বাক্ষর হোক। আমি ভারতের জলশক্তি মন্ত্রীকে বলেছি এ ব্যাপারে তাঁর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্য। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী যখন ভারতে যাবেন তখন এমওইউ সাক্ষর সম্ভব কিনা, সে ব্যাপারেও বলেছি। জলশক্তি মন্ত্রী আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, তাঁরা এ ব্যাপারে চেষ্টা করবেন।’

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, দীর্ঘ ১২ বছর পর জেআরসি বৈঠকটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা আশাবাদী, ১২ বছরের যে একটা স্টল মেট ছিল সেটা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। ভবিষ্যতে প্রতিবছরই এ ধরনের বৈঠক হবে। এটি আমাকে ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন।’

জাহিদ ফারুক বলেন, ‘আমরা ভারতে গিয়েছিলাম অনেক আশা নিয়ে। আপনারা জানেন, বাংলাদেশ পানির দেশের লোক, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। আমাদের সঙ্গে ভারতের ৫৪টি নদী আছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ছিল সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’

জাহিদ ফারুক আরও বলেন, ‘এ ছাড়া আমাদের কুশিয়ারা নদীতে ১৫২ কিউসেক পানি পাওয়ার বিষয়ে কথা বলেছি। কারণ, সেখানে আমাদের ৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। যার জন্য আমরা পাম্প হাউস করেছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ ৪ / ৫ বছর ধরে ভারত পানি দিচ্ছিল না, আটকিয়ে রেখেছিল। সেটার ব্যাপারে আলোচনা করেছি। সেই এমওইউ দেওয়া হয়েছে। সেটা তাদের ক্যাবিনেটে এপ্রুভের জন্য পাঠিয়েছে। আশা করছি প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় এটা দস্তখত হবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা ছাড়াও আমরা গঙ্গার পানির ব্যাপারে বলেছি। আমাদের যে হিস্যা দেওয়া হয়, সেটা যেন আমরা আরও বেশি করে ব্যবহার করতে পারি সেটার ব্যাপারেও তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই দেশের টেকনিক্যাল টিম একত্রিত হয়ে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের ৬টি নদীর উজান থেকে কোনো ডাইভারশন করা হয়েছে কিনা সে বিষয়েও আমরা জানতে চেয়েছি। কিন্তু তাঁরা আমাদের এখনো তথ্য দেয়নি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ সংবাদগুলো আমাদের দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা আশা করতে পারি, এই ৬টা নদীর ব্যাপারে এমওইউ হবে। সেই সঙ্গে নদীর পানির হিস্যা আমরা বণ্টন করতে পারব। এসব নদীর সঙ্গে আরও ৮টি নদীর ব্যাপারে স্টাডির জন্য বলেছি। তখন তাঁরা বলেছে, টেকনিক্যাল কমিটিতে যারা আছে, তাঁরা এটার ব্যাপারে বসে আলোচনা করবে। তাদের আলোচনার পর পরবর্তী মিটিংয়ে আমরা আলোচনা করব।’ 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে একটি রিপোর্ট ছিল, ভারতের একটি নদীর সঙ্গে আরেকটি নদীর ইন্টারলিংক রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা তাদের বলেছি, হিমালয় থেকে যেসব নদী বাংলাদেশে প্রবাহিত হয় সেই নদীগুলো আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে তাঁরা ইন্টারলিংক করতে পারবে না। সেই বিষয়েও তাঁরা রাজি হয়েছে।’ 

এর আগে, দিল্লির সুষমা স্বরাজ ভবনে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনুষ্ঠিত ৩৮ তম মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে। অপরদিকে ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন জলসম্পদ সচিব পঙ্কজ কুমার। 

জানা গেছে, অনুষ্ঠিত বৈঠকে অভিন্ন নদনদীর পানি বণ্টন চুক্তির খসড়া কাঠামো প্রস্তুতির জন্য আরও কিছু অভিন্ন নদীর ডেটা ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছেন। এ ছাড়া বৈঠকে দুই দেশের অভিন্ন নদনদী বিশেষ করে গঙ্গা, তিস্তা, মনু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার এবং কুশিয়ারা সংক্রান্ত সব সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বন্যা সংক্রান্ত তথ্য ও তথ্যের আদান-প্রদান, নদীর তীর রক্ষার কাজ, সাধারণ অববাহিকা ব্যবস্থাপনা এবং ভারতীয় নদী আন্তসংযোগ প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমান ও জাইমার ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন, রোববার উঠবে কমিশনে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৫
আজ শনিবার ভোটার নিবন্ধনের জন্য নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ছবি তোলেন ও বায়োমেট্রিক দেন তারেক রহমান ও তাঁর কন্যা জাইমা রহমান। ছবি: মিডিয়া সেল
আজ শনিবার ভোটার নিবন্ধনের জন্য নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ছবি তোলেন ও বায়োমেট্রিক দেন তারেক রহমান ও তাঁর কন্যা জাইমা রহমান। ছবি: মিডিয়া সেল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর মেয়ে জাইমা রহমান নির্বাচন কমিশনে (ইসি) গিয়ে ভোটার হওয়ার নিবন্ধনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তাঁদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি আগামীকাল রোববার নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি চূড়ান্ত হবে।

আজ শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

সচিব বলেন, ভোটার তালিকা আইনে যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক বা ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিককে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার এখতিয়ার কমিশনের রয়েছে। ভোটার নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিষয়টি আগামীকাল কমিশনে উপস্থাপন করা হবে।

সচিব আরও জানান, তাঁরা ঢাকা-১৭ আসনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (এনআইডি) এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘উনারা আগেই অনলাইনে ফরম পূরণ করেছেন। এখন আমাদের কাছে এসে শুধু বায়োমেট্রিক দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।’

ডিজি এনআইডি বলেন, ‘সব তথ্য আপলোড করার পর সফটওয়্যার স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্ভারে সার্চ করে দেখবে যে সেটা কারও সঙ্গে ম্যাচ করে কি না। ম্যাচ না করলে ৫ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এনআইডি নম্বর জেনারেট হবে। যেহেতু এখন ভোটার হওয়ার জন্য চাপ কম। তাই আশা করি, এটি দ্রুতই হয়ে যাবে।’

আজ শনিবার ভোটার নিবন্ধনের জন্য নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ছবি তোলেন ও বায়োমেট্রিক দেন তারেক রহমান ও তাঁর কন্যা জাইমা রহমান। ছবি: মিডিয়া সেল
আজ শনিবার ভোটার নিবন্ধনের জন্য নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ছবি তোলেন ও বায়োমেট্রিক দেন তারেক রহমান ও তাঁর কন্যা জাইমা রহমান। ছবি: মিডিয়া সেল

শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মা ডা. জুবাইদা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করেন জাইমা রহমান। সেখান থেকে তাঁরা বের হয়ে যান পৌনে ১টার দিকে। পরে বেলা ১টার দিকে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে আসেন তারেক রহমান। কার্যক্রম সম্পন্ন করে ১টা ২০ মিনিটের দিকে ইটিআই ভবন ত্যাগ করেন তিনি।

ইসি সূত্র জানায়, দেশে প্রথমবার ২০০৭-০৮ সালে যখন ছবিসহ ভোটার তালিকা করা হয়; তারেক রহমান জেল, হাসপাতাল ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ায় সেই তালিকায় যুক্ত হতে পারেননি। তবে ছবিসহ ভোটার তালিকা করার আগে তিনি দেশের ভোটার ছিলেন। ২০০৬ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বগুড়া-৭ আসন থেকে তিনি মনোনয়নপত্রও তুলে ছিলেন। ছবিসহ তালিকা প্রকাশের পর আগের সব ভোটার তালিকা বাতিল করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েন তারেক রহমান।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সপরিবার দেশে ফেরেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, ২৭ ডিসেম্বর ভোটার হবেন তারেক রহমান। ইতিমধ্যে তারেক রহমানকে দলটির পক্ষ থেকে বগুড়া-৬ আসনের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামীকাল সোমবার। আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিষিদ্ধ দলের নেতারা আটকে যেতে পারেন তফসিলের শর্তে

তানিম আহমেদ, ঢাকা 
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাওয়া প্রার্থীদের নিষিদ্ধ কিংবা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন—এমন অঙ্গীকার করতে হবে। সঙ্গে দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্যও জমা দিতে হবে। নির্বাচনে মনোনয়ন ফরমে এমন বিধান রাখা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের এমন বিধানকে অস্পষ্ট মনে করছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, গত কয়েক দিনে একাধিক রাজনৈতিক নেতা দল বদল করেছেন। আবার কেউ কেউ দল বিলুপ্ত করে বড় দলে যোগ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন রাজনৈতিক দলের নেতারা অন্য কোনো দলে যোগ দিলে কী বিধান থাকবে, তা পরিষ্কার করা হয়নি।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আবদুল আলীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন এবং কী কারণে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নির্বাচন কমিশনকে পরিষ্কার করতে হবে। যেহেতু এক দল থেকে আরেক দলে যোগদান করা নিষিদ্ধ নয়, এ রকম অনেক উদাহরণ গত কয়েক দিনে হয়েছে।’

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রার্থীকে বলতে হবে, তিনি কোনো নিষিদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন রাজনৈতিক দলের সদস্য নন।

পরে যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে বিষয়টি মিথ্যাচার হিসেবে গণ্য হবে। সে ক্ষেত্রে তিনি মিথ্যাবাদী।

কেউ নিষিদ্ধ দলের সঙ্গে জড়িত কি না, ইসি কীভাবে সেটি প্রমাণ করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, ‘আপনারা (গণমাধ্যম) জানিয়ে দেবেন, উনি (প্রার্থী) মিথ্যা কথা বলছেন। এরপর ইসি তদন্ত করে দেখবে, অভিযোগটি সত্য নাকি মিথ্যা।’ সে ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে—জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘সেটা নির্ভর করবে অপরাধের মাত্রার ওপরে।’

কী কারণে এমন বিধান ‍যুক্ত করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, কর্তৃপক্ষ মনে করেছে, এবার এমন একটা অঙ্গীকারনামা থাকা ভালো।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। যেখানে ২৩ পাতার মনোনয়ন ফরম পূরণ করতে হবে প্রার্থীদের। যার শেষ দুই পাতার তফসিল-১ ও ২ প্রার্থীদের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হবে।

তফসিল-১ অঙ্গীকারনামায় দলীয় প্রার্থী নিষিদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বা সমমর্যাদার পদধারী এমন দুজনকে স্বাক্ষর দিতে হবে। যেখানে রাজনৈতিক দলের নাম ও নিবন্ধন নম্বর দিতে হবে।

রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকারনামার ক্ষেত্রে বলা আছে, ‘আমার দল এবং দল মনোনীত সব প্রার্থী সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ বিধান মেনে চলব। দল বা দল মনোনীত কোনো প্রার্থী এই আচরণ বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে আইন ও বিধিমালার বিধান অনুযায়ী শাস্তি মেনে নিতে বাধ্য থাকব।’

প্রার্থীর অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, ‘আমি অঙ্গীকার করেছি, আমি কোনো নিষিদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই।’ প্রার্থীর স্বাক্ষরের সঙ্গে দুজন সাক্ষীর নাম, স্বাক্ষর ও এনআইডি নম্বর দিতে হবে।

আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী আইন সংশোধন করে বলা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলার অভিযোগপত্র গঠিত হলেই নির্বাচনে অযোগ্য হবেন অভিযুক্ত। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) বলা হয়েছে, ফেরারি আসামিরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেরারি আসামিদের নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণার প্রতিফলন হচ্ছে মনোনয়ন ফরমে নতুন বিধান যুক্ত করা। আর এখন যেহেতু আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, তাই বিষয়টি বলা হয়েছে। দলটির নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের বাইরে রাখতেই এমন বিধান রাখা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের এমন উদ্যোগের সমালোচনা করেছে আওয়ামী লীগের গত তিন সরকারের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশ)। গতকাল দলের প্রার্থী ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেন দলের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

সংবাদ সম্মেলনে শামীম হায়দার বলেন, ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলের কর্মীদের মনোনয়ন না দেওয়ার বিধান অসাংবিধানিক। দল নিষিদ্ধ হলে তিনি স্বাভাবিকভাবে অন্য যেকোনো দলে আসতেই পারেন এবং ভোট করতে পারেন। এটা তো সাংবিধানিক অধিকার। তিনি সাজাপ্রাপ্ত ও নির্বাচনে অযোগ্য নন। ইসির এমন তফসিল অবিবেচনাপ্রসূত ও অসাংবিধানিক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা

সরকারের কোনো না কোনো অংশ এই হামলা ঘটতে দিয়েছে: নূরুল কবীর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ১৫
শনিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নূরুল কবির। ছবি: সংগৃহীত
শনিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নূরুল কবির। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার এবং ছায়ানট ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি পরিকল্পিত এবং সরকারের কোনো না কোনো অংশের মদদেই এটি ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর।

আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

১৮ ডিসেম্বর রাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা কার্যালয়গুলোতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং ব্যাপক লুটপাট চালায়। বিশেষ করে প্রথম আলো কার্যালয় আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। একই রাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সংহতি জানাতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন সম্পাদক নূরুল কবীর। সাংবাদিক সমাজ এই ঘটনাকে ‘গণমাধ্যমের জন্য কালো দিন’ হিসেবে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

সম্মেলনে নূরুল কবীর বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে জানি, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানটকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এক-দুই দিন আগে থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কারা এই ঘোষণা দিয়েছে, তা এ দেশের মানুষ জানে এবং সরকারও জানে। ফৌজদারি অপরাধের এমন প্রকাশ্য ঘোষণার পরও সরকার তাদের গ্রেপ্তার করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সরকার হামলাকারীদের আগেভাগে থামায়নি বলেই আমরা মনে করি, সরকারের কোনো না কোনো অংশ এই ঘটনাটি ঘটতে দিয়েছে। একটি সংগঠিত শক্তি সেখানে গিয়ে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ইতিমধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে স্পষ্ট রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া গেছে।’

বিজেসি ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বিশিষ্টজনেরা গণমাধ্যমের ওপর এ ধরনের হামলাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত বলে বর্ণনা করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন সাবেক গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও ডেইলি স্টারের কনসালটিং এডিটর কামাল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিজেসি ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বিজেসি উপদেষ্টা খায়রুল আনোয়ার।

বক্তারা বলেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করার যেকোনো চেষ্টা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি। এই হামলার ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে স্বাধীন সাংবাদিকতা ঝুঁকির মুখে পড়বে।

হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে মামলা করা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সাংবাদিক নেতারা এই হামলার নেপথ্যের মূল পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করার এবং গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমান-জাইমার ভোটার হওয়া নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত রোববার: আখতার আহমেদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৭
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের ভোটার হওয়ার নথি রোববার কমিশনে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আজ শনিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান সিনিয়র সচিব।

আখতার আহমেদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর মেয়ে জাইমা রহমান গুলশান এলাকায় ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার হওয়ার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। আজকেই হয়তো তাঁদের এনআইডি নম্বর দেওয়া হবে। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর ভোটার হওয়ার জন্য কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। তাই আগামীকাল তাঁদের ভোটার হওয়ার নথি কমিশনে উপস্থাপন করা হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর মেয়ে জাইমা রহমান ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। আজ শনিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রথমে জাইমা রহমান এবং পরে তারেক রহমান এ দুই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত