Ajker Patrika

কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের কথা ভাবছে: প্রধানমন্ত্রী 

বাসস, ঢাকা
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ২৩: ৩৪
কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের কথা ভাবছে: প্রধানমন্ত্রী 

‘কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের কথা ভাবছে, যা খুবই অমানবিক’— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

আমরা শান্তি চাই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের জন্য যদি কাজ করতে হয়, তাহলে জনগণকে হত্যা করে লাশের ওপরে পাড়া দিয়ে ক্ষমতায় যাবার যারা চিন্তা করে, তাদের মতো অমানবিকতা আমি আর কোথাও দেখি না। এটা আমাদের কাছে ভাবতেও অবাক লাগে। কাজেই আমরা শান্তি চাই।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যখন একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, একটু আশার আলো দেখছিল এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময়ে এই অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ মানুষের জীবনটাকে আবার ব্যাহত করছে। একটা শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এটাই হচ্ছে সব থেকে কষ্টের বিষয়। 

যারা এই ধ্বংসাত্মক কাজ করছে, তাদের বোধোদয় হবে, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ না করে গণতান্ত্রিক ধারায় যোগ দিক, জনগণের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখুক।

তাঁর সরকার একটার পর একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ আমরা যেভাবে মোকাবেলা করলাম, এরপরে অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের ঝামেলা মাঝে মাঝে শুরু হয়—সাধারণ মানুষকে কেন পুড়িয়ে মারা হয় সেটাই আমার প্রশ্ন? 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন দেওয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা এটা কী কারণে? আমার কাছে এটা এখনো বোধগম্য নয়। 

বাংলাদেশকে শান্তির অন্বেষক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শান্তি শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আঞ্চলিক এবং বিশ্বব্যাপী আমরা শান্তি চাই।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ উল্লেখ করে বলেন, ‘অন্তত আমি এটুকু দাবি করতে পারি, এ পর্যন্ত আমরা আমাদের এই পররাষ্ট্রনীতি নিয়েই চলেছি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে, আঞ্চলিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে আমাদের সমুদ্রসীমা, আমাদের স্থলসীমা, পার্বত্য শান্তি চুক্তি করে আমাদের রিফিউজিদের ফিরিয়ে আনার মতো ব্যবস্থা আমরা করেছি। সুচারুভাবে আমরা এগুলো করতে পেরেছি। এমনকি ছিটমহলগুলো আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিনিময় করতে পেরেছি। কাজেই বাংলাদেশ শান্তির দেশ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৯৬ সালে সরকারে এসেই আওয়ামী লীগ সশস্ত্র বাহিনীতে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের দেশের নারী সদস্যরা অনেক সুনাম করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে এবং তিনি শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের আরও নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাশা করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে নেতা-কর্মীদের ঢাকায় আনতে চলবে ১০টি বিশেষ ট্রেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দলটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি নিয়মিত চলাচলকারী একাধিক ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপির কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহ থেকে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দলটির নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় আনার জন্য বিশেষ ট্রেন ও অতিরিক্ত কোচ বরাদ্দের আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে চাহিদার ভিত্তিতে ১০টি রুটে বিশেষ ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিয়মিত চলাচলকারী একাধিক ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হবে।

চাহিদার ভিত্তিতে বিশেষ ট্রেন চলবে নিম্নোক্ত রুটগুলোতে—কক্সবাজার–ঢাকা–কক্সবাজার, জামালপুর–ময়মনসিংহ–ঢাকা–জামালপুর, টাঙ্গাইল–ঢাকা–টাঙ্গাইল, ভৈরববাজার–নরসিংদী–ঢাকা–নরসিংদী–ভৈরববাজার, জয়দেবপুর–ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট–জয়দেবপুর (গাজীপুর), পঞ্চগড়–ঢাকা–পঞ্চগড়, খুলনা–ঢাকা–খুলনা, চাটমোহর–ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট–চাটমোহর, রাজশাহী–ঢাকা–রাজশাহী এবং যশোর–ঢাকা–যশোর।

বিশেষ ট্রেন পরিচালনার কারণে স্বল্প দূরত্বের তিনটি ট্রেনের চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হবে। ট্রেনগুলো হলো—রাজবাড়ী কমিউটার (রাজবাড়ী–পোড়াদহ), ঢালারচর এক্সপ্রেস (পাবনা–রাজশাহী) এবং রোহনপুর কমিউটার (রোহনপুর–রাজশাহী)। ২৫ ডিসেম্বর এসব ট্রেনের যাত্রা এক দিনের জন্য স্থগিত থাকবে।

এতে সংশ্লিষ্ট রুটের যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বিশেষ ট্রেন পরিচালনা ও অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের আনুমানিক ৩৬ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হবে।

স্পেশাল ট্রেন ও অতিরিক্ত কোচে দলীয় নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন আচরণ বিধিমালা–২০২৫ কঠোরভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করেছে দুদক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করেছে দুদক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের জব্দ করা চারটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুদকের কর্মকর্তারা এসব মালামাল ত্রাণ তহবিলে পৌঁছে দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আদালতের আদেশে গুলশানে অবস্থিত বেনজীর আহমেদের বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিকসামগ্রী, ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিসপত্র ও পোশাক। এর মধ্যে ছিল ১৯টি ফ্রিজ, প্রায় ১০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার কন্ডিশনার, আধুনিক আসবাবপত্রসহ নানা ধরনের মালামাল। এসবসহ মোট ২৪৬ ধরনের সামগ্রী ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী ও কন্যাদের বসবাস করা চারটি ফ্ল্যাটে থাকা পচনশীল মালামাল এবং কিছু ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত সামগ্রীর নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। অন্য মালামাল আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণভান্ডারে জমা দেওয়া হয়।

ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করা ব্যবহার্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে—১২২টি শার্ট, ২৬৬টি প্যান্ট, ৩০টি ব্লেজার, ৮টি স্যুট, ৭২২টি টি-শার্ট, ২২৪টি পাঞ্জাবি, ৪৭টি পায়জামা, ৮৮ জোড়া স্যান্ডেল, ৩৫ জোড়া কেডস, ৩৮ জোড়া জুতা, ৪৯৪টি শাড়ি, ২৫০ সেট থ্রি-পিস, ৪৯৬টি সালোয়ার-কামিজ, ২১২টি জামা, ৫৬টি জ্যাকেট, ১০৯টি বেডশিট, ৭৫টি লেডিস ভ্যানিটি ব্যাগ, ৬২২টি লেডিস টপস, ১১টি পুরুষদের সোয়েটার, ৩৪টি লেডিস সোয়েটার, ৩৫৫টি লেডিস প্যান্ট, ২৮টি লেডিস টি-শার্ট, ৩৪৭টি ওড়না, ৮৯টি শাল চাদর, ১৩২টি শীতের জামা, ১৬টি লেহেঙ্গা, ৩৪টি সানগ্লাস ও ৬৭টি ট্রাউজার।

২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যার বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে দুদক। মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।

উল্লেখ্য, গুলশানের র‍্যানকন টাওয়ারে চারটি ফ্ল্যাট একত্র করে বেনজীর দম্পতি একটি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট নির্মাণ করেন। এতে সুইমিং পুল, মিনি থিয়েটার রুম, অতিথি বিনোদনকক্ষসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা ছিল।

অনুসন্ধানী দল জানায়, ওই ফ্ল্যাটের খাট, ড্রেসিং টেবিল, ডাইনিং টেবিল, সোফা, চেয়ার, আলমারি, ওয়ার্ডরোবসহ কিছু মূল্যবান আসবাব নিলামে তোলা হয়নি এবং ত্রাণ তহবিলেও জমা দেওয়া হয়নি। এসব বিষয়ে পরে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগেই ২০২৪ সালের ৪ মে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নতুন পাসপোর্ট তৈরি করে বেনজীর আহমেদ তাঁর স্ত্রী ও কন্যাদের নিয়ে গোপনে দেশ ত্যাগ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জালাল, সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকসহ ১১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৪১
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জালাল, সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকসহ ১১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

চাঁদপুর-২ (মতলব) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ড. মো. জালাল উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের চার সদস্য এবং বরিশাল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকসহ ১১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পৃথক পৃথক আদেশে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে ড. মো. জালাল উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের চার সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

অন্যরা হলেন জালাল উদ্দিনের স্ত্রী শাহানাজ পারভিন, দুই ছেলে সাঈদ মোহাম্মদ রিজভী ও সাঈদ মোহাম্মদ আলভী এবং মেয়ে আয়েশা তাসিনীমা তানভী।

দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম মামুনুর রশীদ তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূত অর্থ উপার্জন করে তা নিজ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টা এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।

এদিকে সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক বিষান ঘোষ। আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।

এ ছাড়া সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথিত পালক পুত্র মো. আসাদুজ্জামান, তাঁর স্ত্রী ইসরাত জাহান ও আসাদুজ্জামানের ভাই আখতারুজ্জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নাসরুল্লাহ হোসেন।

আবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অভিযুক্তরা চোরা চালান, হুন্ডি ব্যবসা, শুল্ক ফাঁকিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ অর্জন করেছেন এবং বিদেশে পাচার করেছেন বলে দুদক অনুসন্ধান করছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা ও যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন সুস্মিতার দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মিনু আক্তার সুমি।

আবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকায় তাঁদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। ইতিমধ্যে তাঁরা সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

প্রত্যেকের আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান কার্যক্রম চলার সময় দুদক বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছে, তাঁরা যেকোনো সময় দেশত্যাগ করতে পারেন। তাঁরা দেশত্যাগ করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এ কারণে প্রত্যেকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভয় ও বাধামুক্ত নির্বাচন করতে সরকার বদ্ধপরিকর: প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৫৫
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস । ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস । ছবি: পিআইডি

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে গণভোটের বিষয়ে সারা দেশে প্রচারণার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি— সুপার ক্যারাভান। আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে সুপার ক্যারাভান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিওবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে থাকবে না ভয়, থাকবে না বাধা— থাকবে কেবল জনগণের মুক্ত ও নির্ভীক মতপ্রকাশ। সরকার সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে ভোটের গাড়ির উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

ভিডিওবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। সামনে আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ওপর গণভোট।’ তিনি বলেন, এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি—সুপার ক্যারাভান। এসব গাড়ি দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘ভোটাধিকার কারও দয়া নয়—এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই আমরা ঠিক করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়; এটি রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘এই সুপার ক্যারাভান কেবল একটি গাড়িই নয়—এটি গণতন্ত্রের আনন্দবাণী বহনকারী বহর। এটি জানিয়ে দেবে, আপনার একটি ভোট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা মনে করিয়ে দেবে, নিষ্ক্রিয়তা নয়, অংশগ্রহণই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি, তরুণ সমাজ, নারী ভোটার ও প্রথমবারের ভোটারদের প্রতি, আপনারা এগিয়ে আসুন। প্রশ্ন করুন, জানুন, বুঝুন এবং ভোট দিন। আপনার সিদ্ধান্তেই গড়ে উঠবে আগামী দিনের বাংলাদেশ—নতুন বাংলাদেশ।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ‘আপনি দেশের মালিক। এ দেশ আগামী পাঁচ বছর আপনার পক্ষে কে চালাবে, সেটা আপনি ঠিক করে দেবেন। আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। সৎ ও সমর্থ প্রার্থী বেছে ভোট দিন। চিন্তাভাবনা করে ভোট দিন।’

গণভোটের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে আপনি আরও একটি ভোট দেবেন। জুলাই সনদে ভোট দেবেন। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দিনের পর দিন বৈঠক করে এই সনদ তৈরি হয়েছে। এই সনদ দেশের মানুষ পছন্দ করলে দেশ আগামী বহু বছরের জন্য নিরাপদে চলবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আপনি যদি এই সনদ সমর্থন করেন, তবে গণভোটে অবশ্যই ‘‘হ্যাঁ’’ ভোট দিন।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ‘চলুন, আমরা সবাই মিলে এই গণতান্ত্রিক যাত্রাকে সফল করি। চলুন, ভোট দিই—নিজের জন্য, দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, নতুন পৃথিবীর জন্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত