আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে ভারতে আশ্রিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর তাঁদের প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াদিল্লিকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশ সরকার বলেছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধুসুলভ আচরণ নয়।’
কিন্তু গত সোমবার রায় ঘোষণার পর ভারত যে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে, সেটি ছিল বেশ কৌশলী এবং সেখানে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে কোনো কথা নেই। সেই বিবৃতির ভাষা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে আটকে দিয়ে ভারত প্রচ্ছন্ন নেতিবাচক মনোভঙ্গি প্রকাশ করেছে। দিল্লির বিবৃতিতে বলা হয়, রায় ভারতের নজরে আছে এবং দেশটি ‘বাংলাদেশের শান্তি, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে’ সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করবে।
এদিকে রায়ের পর ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তবে গত দুই দিনে কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা যা বলছেন, তাতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ভারতের ফেরত দেওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ বলেই মনে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন জোরালো হয়ে দেখা দেবে—ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেয়, তাহলে বাংলাদেশের হাতে কী আছে?
২০১৩ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার লক্ষ্য ছিল অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে তোলা এবং দুই দেশের মধ্যে পলাতক আসামি ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সুস্পষ্ট করা।
কোন অপরাধে প্রত্যর্পণ করা যায়
চুক্তি অনুযায়ী, যে অপরাধে ভারতে ও বাংলাদেশে কমপক্ষে এক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে, তা প্রত্যর্পণের যোগ্য। এর মধ্যে হত্যা, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, সহিংস অপরাধ ছাড়াও আর্থিক ও রাজস্ব ক্ষেত্রের অপরাধও অন্তর্ভুক্ত। তদুপরি, সহায়তা করা, উসকানি দেওয়া বা সহযোগী হিসেবে অংশ নেওয়াও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
কোনো ব্যক্তি অভিযুক্ত, অভিযুক্ত হয়ে পলাতক বা দণ্ডিত হয়ে অন্য দেশে পালিয়ে গেলে—দুই রাষ্ট্রই তাকে ফেরত চাওয়ার আবেদন করতে পারে। এর উদ্দেশ্য হলো বিচার সম্পন্ন করা বা পালিয়ে যাওয়া দণ্ড কার্যকর করা।
কখন প্রত্যর্পণ নাকচ করা যেতে পারে
চুক্তিতে এমন কিছু পরিস্থিতির উল্লেখ আছে, যেখানে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। চুক্তির ৬(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি অপরাধটি রাজনৈতিক প্রকৃতির হয়, তবে প্রত্যর্পণ নাকচ করা যেতে পারে।
তবে ৬(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, হত্যা, সন্ত্রাস, অপহরণ, হত্যায় প্ররোচনা, সহিংসতা বা অস্ত্র-সংক্রান্ত গুরুতর অপরাধকে রাজনৈতিক ধরা হবে না। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, নির্যাতনসহ গুরুতর অভিযোগ থাকায় এই ধারা প্রযোজ্য হওয়া নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
চুক্তির ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি অভিযুক্ত প্রমাণ করতে পারে, অভিযোগ এত ছোট যে তা প্রত্যর্পণের মতো কঠোর পদক্ষেপ যৌক্তিক নয়, অভিযোগের পর অনেক বেশি সময় পেরিয়ে যায় এবং ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা খারাপ বিশ্বাসে অভিযোগ আনা হয়, তাহলেও প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে।
এ ছাড়া শুধুই সামরিক প্রকৃতির অপরাধ হলে এবং সাধারণ ফৌজদারি অপরাধ না হলেও প্রত্যর্পণ নাকচ করা সম্ভব।
ভারতের ১৯৬২ সালের প্রত্যর্পণ আইন কী বলে
দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ছাড়াও ১৯৬২ সালের এক্সট্রাডিশন অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রত্যর্পণ করে ভারত। আইনটি পলাতক অপরাধীদের প্রত্যর্পণ-সম্পর্কিত বিধি সংশোধনের পাশাপাশি দেশের আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
প্রত্যর্পণ চুক্তির সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিস্থিতি তুলে ধরা এই আইনের ২৯ ও ৩১ ধারায় কিছু শর্ত নির্ধারণ করা আছে, যেগুলোর অধীনে প্রত্যর্পণ অস্বীকার করা যেতে পারে। প্রধান শর্তগুলো হলো—
ভারতের আদালতের কী নজির
ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আইনসিদ্ধ প্রক্রিয়া ছাড়া কাউকে জীবন বা ব্যক্তিস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।’ সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন, এই অধিকার ভারতের মাটিতে থাকা বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আদালত একাধিক রায়ে বলেছেন, আইনগত সব সুরক্ষা নিশ্চিত করা ছাড়া কাউকে এমন কোনো দেশে ফেরত পাঠানো যাবে না, যেখানে ব্যক্তি মৃত্যু, নির্যাতন বা অমানবিক আচরণের মুখে পড়ে।
কাতিয়ার আব্বাস হাবিব আল-কুতাইফি বনাম ভারত সরকার (১৯৯৮) মামলায় ইরাকের দুই আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠানো বন্ধ করা হয়। গুজরাট হাইকোর্ট বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত নন-রিফাউলমেন্ট নীতি এবং ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ কারও জীবন বা স্বাধীনতা ঝুঁকিতে ফেলতে পারে, এমন দেশে ফেরত পাঠানো নিষিদ্ধ করে।
ভারত ১৯৫১ সালের শরণার্থী সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ না হলেও এই নীতিকে আন্তর্জাতিক প্রচলিত আইন হিসেবে বিবেচনা করে এবং তা আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদে (আইসিসিপিআর) প্রতিফলিত, যেটির সদস্য ভারত।
বাংলাদেশ কী করতে পারে
বাংলাদেশের আদালতের রায়কে ভারত পর্যালোচনা করলেও, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সরকার মুখ খোলেনি। শেষ পর্যন্ত ভারত যদি না পাঠায়, বাংলাদেশ কী করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য পথগুলো হতে পারে—
আনুষ্ঠানিক নোট, বৈঠক, যৌথ কর্মপরিকল্পনা ইত্যাদির মাধ্যমে দিল্লির ওপর চাপ বাড়াতে পারে। তবে ভারত-বাংলাদেশের ক্ষমতার ভারসাম্য, ভূরাজনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিবেচনায় এই চাপ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা কিংবা আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিষয়টি উত্থাপন করে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা যেতে পারে। কিন্তু যেভাবে বিচার হয়েছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ—বিশেষত মৃত্যুদণ্ড—বাংলাদেশের বক্তব্যকে দুর্বল করতে পারে।
বাংলাদেশ চাইলে বিচার নিয়ে ভারতের উদ্বেগ দূর করতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া বা নতুন বিচারকাঠামোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে প্রত্যর্পণ বিরোধ সাধারণত আন্তর্জাতিক আদালতে তোলা যায়। কিন্তু ভারত যেহেতু শক্তিশালী আঞ্চলিক ক্ষমতা এবং বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনা রয়েছে, তাই এটি বাস্তবে অসম্ভব বা অকার্যকর।
মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের ফেরত না পাওয়ার নজির
বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বলছে, যেসব দেশে মৃত্যুদণ্ড নেই, সেসব দেশ কখনোই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে ফেরত দেয় না। এই বাস্তবতা শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও ভারতের সিদ্ধান্ত অনুমান করতে সাহায্য করে।
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আশরাফুজ্জামান ওরফে নায়েব আলী খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায়ের ১২ বছর পার হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাঁদের ফেরত দেয়নি। চৌধুরী মুঈনুদ্দীন লন্ডনে বহাল তবিয়তে রয়েছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় মুসলিম সংগঠনের। আর আশরাফুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় নাগরিকত্বসহ বসবাস করছেন।
তৎকালীন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী বলেছিলেন, মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ বলে এসব দেশ তাঁদের ফেরত দেয়নি।
এই তালিকায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম নূর চৌধুরী—বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম দণ্ডিত। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি কানাডায় আত্মগোপনে আছেন এবং কানাডা মৃত্যুদণ্ড-বিরোধী নীতি অনুসরণ করে বলে তাঁকে এখনো ফেরত দেয়নি।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার খুনিদের মতোই বুদ্ধিজীবী হত্যার আসামিদেরও ফিরিয়ে আনা যায়নি। কারণ, ওই দেশগুলো মৃত্যুদণ্ডবিরোধী।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে ভারতে আশ্রিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর তাঁদের প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াদিল্লিকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশ সরকার বলেছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধুসুলভ আচরণ নয়।’
কিন্তু গত সোমবার রায় ঘোষণার পর ভারত যে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে, সেটি ছিল বেশ কৌশলী এবং সেখানে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে কোনো কথা নেই। সেই বিবৃতির ভাষা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে আটকে দিয়ে ভারত প্রচ্ছন্ন নেতিবাচক মনোভঙ্গি প্রকাশ করেছে। দিল্লির বিবৃতিতে বলা হয়, রায় ভারতের নজরে আছে এবং দেশটি ‘বাংলাদেশের শান্তি, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে’ সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করবে।
এদিকে রায়ের পর ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তবে গত দুই দিনে কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা যা বলছেন, তাতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ভারতের ফেরত দেওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ বলেই মনে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন জোরালো হয়ে দেখা দেবে—ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেয়, তাহলে বাংলাদেশের হাতে কী আছে?
২০১৩ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার লক্ষ্য ছিল অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে তোলা এবং দুই দেশের মধ্যে পলাতক আসামি ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সুস্পষ্ট করা।
কোন অপরাধে প্রত্যর্পণ করা যায়
চুক্তি অনুযায়ী, যে অপরাধে ভারতে ও বাংলাদেশে কমপক্ষে এক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে, তা প্রত্যর্পণের যোগ্য। এর মধ্যে হত্যা, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, সহিংস অপরাধ ছাড়াও আর্থিক ও রাজস্ব ক্ষেত্রের অপরাধও অন্তর্ভুক্ত। তদুপরি, সহায়তা করা, উসকানি দেওয়া বা সহযোগী হিসেবে অংশ নেওয়াও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
কোনো ব্যক্তি অভিযুক্ত, অভিযুক্ত হয়ে পলাতক বা দণ্ডিত হয়ে অন্য দেশে পালিয়ে গেলে—দুই রাষ্ট্রই তাকে ফেরত চাওয়ার আবেদন করতে পারে। এর উদ্দেশ্য হলো বিচার সম্পন্ন করা বা পালিয়ে যাওয়া দণ্ড কার্যকর করা।
কখন প্রত্যর্পণ নাকচ করা যেতে পারে
চুক্তিতে এমন কিছু পরিস্থিতির উল্লেখ আছে, যেখানে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। চুক্তির ৬(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি অপরাধটি রাজনৈতিক প্রকৃতির হয়, তবে প্রত্যর্পণ নাকচ করা যেতে পারে।
তবে ৬(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, হত্যা, সন্ত্রাস, অপহরণ, হত্যায় প্ররোচনা, সহিংসতা বা অস্ত্র-সংক্রান্ত গুরুতর অপরাধকে রাজনৈতিক ধরা হবে না। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, নির্যাতনসহ গুরুতর অভিযোগ থাকায় এই ধারা প্রযোজ্য হওয়া নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
চুক্তির ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি অভিযুক্ত প্রমাণ করতে পারে, অভিযোগ এত ছোট যে তা প্রত্যর্পণের মতো কঠোর পদক্ষেপ যৌক্তিক নয়, অভিযোগের পর অনেক বেশি সময় পেরিয়ে যায় এবং ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা খারাপ বিশ্বাসে অভিযোগ আনা হয়, তাহলেও প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে।
এ ছাড়া শুধুই সামরিক প্রকৃতির অপরাধ হলে এবং সাধারণ ফৌজদারি অপরাধ না হলেও প্রত্যর্পণ নাকচ করা সম্ভব।
ভারতের ১৯৬২ সালের প্রত্যর্পণ আইন কী বলে
দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ছাড়াও ১৯৬২ সালের এক্সট্রাডিশন অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রত্যর্পণ করে ভারত। আইনটি পলাতক অপরাধীদের প্রত্যর্পণ-সম্পর্কিত বিধি সংশোধনের পাশাপাশি দেশের আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
প্রত্যর্পণ চুক্তির সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিস্থিতি তুলে ধরা এই আইনের ২৯ ও ৩১ ধারায় কিছু শর্ত নির্ধারণ করা আছে, যেগুলোর অধীনে প্রত্যর্পণ অস্বীকার করা যেতে পারে। প্রধান শর্তগুলো হলো—
ভারতের আদালতের কী নজির
ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আইনসিদ্ধ প্রক্রিয়া ছাড়া কাউকে জীবন বা ব্যক্তিস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।’ সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন, এই অধিকার ভারতের মাটিতে থাকা বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আদালত একাধিক রায়ে বলেছেন, আইনগত সব সুরক্ষা নিশ্চিত করা ছাড়া কাউকে এমন কোনো দেশে ফেরত পাঠানো যাবে না, যেখানে ব্যক্তি মৃত্যু, নির্যাতন বা অমানবিক আচরণের মুখে পড়ে।
কাতিয়ার আব্বাস হাবিব আল-কুতাইফি বনাম ভারত সরকার (১৯৯৮) মামলায় ইরাকের দুই আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠানো বন্ধ করা হয়। গুজরাট হাইকোর্ট বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত নন-রিফাউলমেন্ট নীতি এবং ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ কারও জীবন বা স্বাধীনতা ঝুঁকিতে ফেলতে পারে, এমন দেশে ফেরত পাঠানো নিষিদ্ধ করে।
ভারত ১৯৫১ সালের শরণার্থী সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ না হলেও এই নীতিকে আন্তর্জাতিক প্রচলিত আইন হিসেবে বিবেচনা করে এবং তা আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদে (আইসিসিপিআর) প্রতিফলিত, যেটির সদস্য ভারত।
বাংলাদেশ কী করতে পারে
বাংলাদেশের আদালতের রায়কে ভারত পর্যালোচনা করলেও, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সরকার মুখ খোলেনি। শেষ পর্যন্ত ভারত যদি না পাঠায়, বাংলাদেশ কী করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য পথগুলো হতে পারে—
আনুষ্ঠানিক নোট, বৈঠক, যৌথ কর্মপরিকল্পনা ইত্যাদির মাধ্যমে দিল্লির ওপর চাপ বাড়াতে পারে। তবে ভারত-বাংলাদেশের ক্ষমতার ভারসাম্য, ভূরাজনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিবেচনায় এই চাপ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা কিংবা আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিষয়টি উত্থাপন করে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা যেতে পারে। কিন্তু যেভাবে বিচার হয়েছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ—বিশেষত মৃত্যুদণ্ড—বাংলাদেশের বক্তব্যকে দুর্বল করতে পারে।
বাংলাদেশ চাইলে বিচার নিয়ে ভারতের উদ্বেগ দূর করতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া বা নতুন বিচারকাঠামোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে প্রত্যর্পণ বিরোধ সাধারণত আন্তর্জাতিক আদালতে তোলা যায়। কিন্তু ভারত যেহেতু শক্তিশালী আঞ্চলিক ক্ষমতা এবং বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনা রয়েছে, তাই এটি বাস্তবে অসম্ভব বা অকার্যকর।
মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের ফেরত না পাওয়ার নজির
বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বলছে, যেসব দেশে মৃত্যুদণ্ড নেই, সেসব দেশ কখনোই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে ফেরত দেয় না। এই বাস্তবতা শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও ভারতের সিদ্ধান্ত অনুমান করতে সাহায্য করে।
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আশরাফুজ্জামান ওরফে নায়েব আলী খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায়ের ১২ বছর পার হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাঁদের ফেরত দেয়নি। চৌধুরী মুঈনুদ্দীন লন্ডনে বহাল তবিয়তে রয়েছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় মুসলিম সংগঠনের। আর আশরাফুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় নাগরিকত্বসহ বসবাস করছেন।
তৎকালীন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী বলেছিলেন, মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ বলে এসব দেশ তাঁদের ফেরত দেয়নি।
এই তালিকায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম নূর চৌধুরী—বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম দণ্ডিত। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি কানাডায় আত্মগোপনে আছেন এবং কানাডা মৃত্যুদণ্ড-বিরোধী নীতি অনুসরণ করে বলে তাঁকে এখনো ফেরত দেয়নি।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার খুনিদের মতোই বুদ্ধিজীবী হত্যার আসামিদেরও ফিরিয়ে আনা যায়নি। কারণ, ওই দেশগুলো মৃত্যুদণ্ডবিরোধী।’
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে ভারতে আশ্রিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর তাঁদের প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াদিল্লিকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশ সরকার বলেছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধুসুলভ আচরণ নয়।’
কিন্তু গত সোমবার রায় ঘোষণার পর ভারত যে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে, সেটি ছিল বেশ কৌশলী এবং সেখানে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে কোনো কথা নেই। সেই বিবৃতির ভাষা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে আটকে দিয়ে ভারত প্রচ্ছন্ন নেতিবাচক মনোভঙ্গি প্রকাশ করেছে। দিল্লির বিবৃতিতে বলা হয়, রায় ভারতের নজরে আছে এবং দেশটি ‘বাংলাদেশের শান্তি, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে’ সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করবে।
এদিকে রায়ের পর ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তবে গত দুই দিনে কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা যা বলছেন, তাতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ভারতের ফেরত দেওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ বলেই মনে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন জোরালো হয়ে দেখা দেবে—ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেয়, তাহলে বাংলাদেশের হাতে কী আছে?
২০১৩ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার লক্ষ্য ছিল অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে তোলা এবং দুই দেশের মধ্যে পলাতক আসামি ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সুস্পষ্ট করা।
কোন অপরাধে প্রত্যর্পণ করা যায়
চুক্তি অনুযায়ী, যে অপরাধে ভারতে ও বাংলাদেশে কমপক্ষে এক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে, তা প্রত্যর্পণের যোগ্য। এর মধ্যে হত্যা, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, সহিংস অপরাধ ছাড়াও আর্থিক ও রাজস্ব ক্ষেত্রের অপরাধও অন্তর্ভুক্ত। তদুপরি, সহায়তা করা, উসকানি দেওয়া বা সহযোগী হিসেবে অংশ নেওয়াও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
কোনো ব্যক্তি অভিযুক্ত, অভিযুক্ত হয়ে পলাতক বা দণ্ডিত হয়ে অন্য দেশে পালিয়ে গেলে—দুই রাষ্ট্রই তাকে ফেরত চাওয়ার আবেদন করতে পারে। এর উদ্দেশ্য হলো বিচার সম্পন্ন করা বা পালিয়ে যাওয়া দণ্ড কার্যকর করা।
কখন প্রত্যর্পণ নাকচ করা যেতে পারে
চুক্তিতে এমন কিছু পরিস্থিতির উল্লেখ আছে, যেখানে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। চুক্তির ৬(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি অপরাধটি রাজনৈতিক প্রকৃতির হয়, তবে প্রত্যর্পণ নাকচ করা যেতে পারে।
তবে ৬(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, হত্যা, সন্ত্রাস, অপহরণ, হত্যায় প্ররোচনা, সহিংসতা বা অস্ত্র-সংক্রান্ত গুরুতর অপরাধকে রাজনৈতিক ধরা হবে না। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, নির্যাতনসহ গুরুতর অভিযোগ থাকায় এই ধারা প্রযোজ্য হওয়া নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
চুক্তির ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি অভিযুক্ত প্রমাণ করতে পারে, অভিযোগ এত ছোট যে তা প্রত্যর্পণের মতো কঠোর পদক্ষেপ যৌক্তিক নয়, অভিযোগের পর অনেক বেশি সময় পেরিয়ে যায় এবং ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা খারাপ বিশ্বাসে অভিযোগ আনা হয়, তাহলেও প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে।
এ ছাড়া শুধুই সামরিক প্রকৃতির অপরাধ হলে এবং সাধারণ ফৌজদারি অপরাধ না হলেও প্রত্যর্পণ নাকচ করা সম্ভব।
ভারতের ১৯৬২ সালের প্রত্যর্পণ আইন কী বলে
দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ছাড়াও ১৯৬২ সালের এক্সট্রাডিশন অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রত্যর্পণ করে ভারত। আইনটি পলাতক অপরাধীদের প্রত্যর্পণ-সম্পর্কিত বিধি সংশোধনের পাশাপাশি দেশের আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
প্রত্যর্পণ চুক্তির সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিস্থিতি তুলে ধরা এই আইনের ২৯ ও ৩১ ধারায় কিছু শর্ত নির্ধারণ করা আছে, যেগুলোর অধীনে প্রত্যর্পণ অস্বীকার করা যেতে পারে। প্রধান শর্তগুলো হলো—
ভারতের আদালতের কী নজির
ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আইনসিদ্ধ প্রক্রিয়া ছাড়া কাউকে জীবন বা ব্যক্তিস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।’ সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন, এই অধিকার ভারতের মাটিতে থাকা বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আদালত একাধিক রায়ে বলেছেন, আইনগত সব সুরক্ষা নিশ্চিত করা ছাড়া কাউকে এমন কোনো দেশে ফেরত পাঠানো যাবে না, যেখানে ব্যক্তি মৃত্যু, নির্যাতন বা অমানবিক আচরণের মুখে পড়ে।
কাতিয়ার আব্বাস হাবিব আল-কুতাইফি বনাম ভারত সরকার (১৯৯৮) মামলায় ইরাকের দুই আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠানো বন্ধ করা হয়। গুজরাট হাইকোর্ট বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত নন-রিফাউলমেন্ট নীতি এবং ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ কারও জীবন বা স্বাধীনতা ঝুঁকিতে ফেলতে পারে, এমন দেশে ফেরত পাঠানো নিষিদ্ধ করে।
ভারত ১৯৫১ সালের শরণার্থী সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ না হলেও এই নীতিকে আন্তর্জাতিক প্রচলিত আইন হিসেবে বিবেচনা করে এবং তা আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদে (আইসিসিপিআর) প্রতিফলিত, যেটির সদস্য ভারত।
বাংলাদেশ কী করতে পারে
বাংলাদেশের আদালতের রায়কে ভারত পর্যালোচনা করলেও, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সরকার মুখ খোলেনি। শেষ পর্যন্ত ভারত যদি না পাঠায়, বাংলাদেশ কী করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য পথগুলো হতে পারে—
আনুষ্ঠানিক নোট, বৈঠক, যৌথ কর্মপরিকল্পনা ইত্যাদির মাধ্যমে দিল্লির ওপর চাপ বাড়াতে পারে। তবে ভারত-বাংলাদেশের ক্ষমতার ভারসাম্য, ভূরাজনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিবেচনায় এই চাপ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা কিংবা আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিষয়টি উত্থাপন করে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা যেতে পারে। কিন্তু যেভাবে বিচার হয়েছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ—বিশেষত মৃত্যুদণ্ড—বাংলাদেশের বক্তব্যকে দুর্বল করতে পারে।
বাংলাদেশ চাইলে বিচার নিয়ে ভারতের উদ্বেগ দূর করতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া বা নতুন বিচারকাঠামোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে প্রত্যর্পণ বিরোধ সাধারণত আন্তর্জাতিক আদালতে তোলা যায়। কিন্তু ভারত যেহেতু শক্তিশালী আঞ্চলিক ক্ষমতা এবং বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনা রয়েছে, তাই এটি বাস্তবে অসম্ভব বা অকার্যকর।
মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের ফেরত না পাওয়ার নজির
বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বলছে, যেসব দেশে মৃত্যুদণ্ড নেই, সেসব দেশ কখনোই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে ফেরত দেয় না। এই বাস্তবতা শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও ভারতের সিদ্ধান্ত অনুমান করতে সাহায্য করে।
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আশরাফুজ্জামান ওরফে নায়েব আলী খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায়ের ১২ বছর পার হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাঁদের ফেরত দেয়নি। চৌধুরী মুঈনুদ্দীন লন্ডনে বহাল তবিয়তে রয়েছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় মুসলিম সংগঠনের। আর আশরাফুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় নাগরিকত্বসহ বসবাস করছেন।
তৎকালীন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী বলেছিলেন, মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ বলে এসব দেশ তাঁদের ফেরত দেয়নি।
এই তালিকায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম নূর চৌধুরী—বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম দণ্ডিত। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি কানাডায় আত্মগোপনে আছেন এবং কানাডা মৃত্যুদণ্ড-বিরোধী নীতি অনুসরণ করে বলে তাঁকে এখনো ফেরত দেয়নি।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার খুনিদের মতোই বুদ্ধিজীবী হত্যার আসামিদেরও ফিরিয়ে আনা যায়নি। কারণ, ওই দেশগুলো মৃত্যুদণ্ডবিরোধী।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে ভারতে আশ্রিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর তাঁদের প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াদিল্লিকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশ সরকার বলেছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধুসুলভ আচরণ নয়।’
কিন্তু গত সোমবার রায় ঘোষণার পর ভারত যে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে, সেটি ছিল বেশ কৌশলী এবং সেখানে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে কোনো কথা নেই। সেই বিবৃতির ভাষা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে আটকে দিয়ে ভারত প্রচ্ছন্ন নেতিবাচক মনোভঙ্গি প্রকাশ করেছে। দিল্লির বিবৃতিতে বলা হয়, রায় ভারতের নজরে আছে এবং দেশটি ‘বাংলাদেশের শান্তি, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে’ সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করবে।
এদিকে রায়ের পর ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তবে গত দুই দিনে কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা যা বলছেন, তাতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ভারতের ফেরত দেওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ বলেই মনে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন জোরালো হয়ে দেখা দেবে—ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেয়, তাহলে বাংলাদেশের হাতে কী আছে?
২০১৩ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার লক্ষ্য ছিল অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে তোলা এবং দুই দেশের মধ্যে পলাতক আসামি ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সুস্পষ্ট করা।
কোন অপরাধে প্রত্যর্পণ করা যায়
চুক্তি অনুযায়ী, যে অপরাধে ভারতে ও বাংলাদেশে কমপক্ষে এক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে, তা প্রত্যর্পণের যোগ্য। এর মধ্যে হত্যা, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, সহিংস অপরাধ ছাড়াও আর্থিক ও রাজস্ব ক্ষেত্রের অপরাধও অন্তর্ভুক্ত। তদুপরি, সহায়তা করা, উসকানি দেওয়া বা সহযোগী হিসেবে অংশ নেওয়াও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
কোনো ব্যক্তি অভিযুক্ত, অভিযুক্ত হয়ে পলাতক বা দণ্ডিত হয়ে অন্য দেশে পালিয়ে গেলে—দুই রাষ্ট্রই তাকে ফেরত চাওয়ার আবেদন করতে পারে। এর উদ্দেশ্য হলো বিচার সম্পন্ন করা বা পালিয়ে যাওয়া দণ্ড কার্যকর করা।
কখন প্রত্যর্পণ নাকচ করা যেতে পারে
চুক্তিতে এমন কিছু পরিস্থিতির উল্লেখ আছে, যেখানে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। চুক্তির ৬(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি অপরাধটি রাজনৈতিক প্রকৃতির হয়, তবে প্রত্যর্পণ নাকচ করা যেতে পারে।
তবে ৬(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, হত্যা, সন্ত্রাস, অপহরণ, হত্যায় প্ররোচনা, সহিংসতা বা অস্ত্র-সংক্রান্ত গুরুতর অপরাধকে রাজনৈতিক ধরা হবে না। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, নির্যাতনসহ গুরুতর অভিযোগ থাকায় এই ধারা প্রযোজ্য হওয়া নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
চুক্তির ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি অভিযুক্ত প্রমাণ করতে পারে, অভিযোগ এত ছোট যে তা প্রত্যর্পণের মতো কঠোর পদক্ষেপ যৌক্তিক নয়, অভিযোগের পর অনেক বেশি সময় পেরিয়ে যায় এবং ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা খারাপ বিশ্বাসে অভিযোগ আনা হয়, তাহলেও প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে।
এ ছাড়া শুধুই সামরিক প্রকৃতির অপরাধ হলে এবং সাধারণ ফৌজদারি অপরাধ না হলেও প্রত্যর্পণ নাকচ করা সম্ভব।
ভারতের ১৯৬২ সালের প্রত্যর্পণ আইন কী বলে
দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ছাড়াও ১৯৬২ সালের এক্সট্রাডিশন অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রত্যর্পণ করে ভারত। আইনটি পলাতক অপরাধীদের প্রত্যর্পণ-সম্পর্কিত বিধি সংশোধনের পাশাপাশি দেশের আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
প্রত্যর্পণ চুক্তির সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিস্থিতি তুলে ধরা এই আইনের ২৯ ও ৩১ ধারায় কিছু শর্ত নির্ধারণ করা আছে, যেগুলোর অধীনে প্রত্যর্পণ অস্বীকার করা যেতে পারে। প্রধান শর্তগুলো হলো—
ভারতের আদালতের কী নজির
ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আইনসিদ্ধ প্রক্রিয়া ছাড়া কাউকে জীবন বা ব্যক্তিস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।’ সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন, এই অধিকার ভারতের মাটিতে থাকা বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আদালত একাধিক রায়ে বলেছেন, আইনগত সব সুরক্ষা নিশ্চিত করা ছাড়া কাউকে এমন কোনো দেশে ফেরত পাঠানো যাবে না, যেখানে ব্যক্তি মৃত্যু, নির্যাতন বা অমানবিক আচরণের মুখে পড়ে।
কাতিয়ার আব্বাস হাবিব আল-কুতাইফি বনাম ভারত সরকার (১৯৯৮) মামলায় ইরাকের দুই আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠানো বন্ধ করা হয়। গুজরাট হাইকোর্ট বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত নন-রিফাউলমেন্ট নীতি এবং ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ কারও জীবন বা স্বাধীনতা ঝুঁকিতে ফেলতে পারে, এমন দেশে ফেরত পাঠানো নিষিদ্ধ করে।
ভারত ১৯৫১ সালের শরণার্থী সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ না হলেও এই নীতিকে আন্তর্জাতিক প্রচলিত আইন হিসেবে বিবেচনা করে এবং তা আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদে (আইসিসিপিআর) প্রতিফলিত, যেটির সদস্য ভারত।
বাংলাদেশ কী করতে পারে
বাংলাদেশের আদালতের রায়কে ভারত পর্যালোচনা করলেও, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সরকার মুখ খোলেনি। শেষ পর্যন্ত ভারত যদি না পাঠায়, বাংলাদেশ কী করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য পথগুলো হতে পারে—
আনুষ্ঠানিক নোট, বৈঠক, যৌথ কর্মপরিকল্পনা ইত্যাদির মাধ্যমে দিল্লির ওপর চাপ বাড়াতে পারে। তবে ভারত-বাংলাদেশের ক্ষমতার ভারসাম্য, ভূরাজনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিবেচনায় এই চাপ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা কিংবা আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিষয়টি উত্থাপন করে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা যেতে পারে। কিন্তু যেভাবে বিচার হয়েছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ—বিশেষত মৃত্যুদণ্ড—বাংলাদেশের বক্তব্যকে দুর্বল করতে পারে।
বাংলাদেশ চাইলে বিচার নিয়ে ভারতের উদ্বেগ দূর করতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া বা নতুন বিচারকাঠামোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে প্রত্যর্পণ বিরোধ সাধারণত আন্তর্জাতিক আদালতে তোলা যায়। কিন্তু ভারত যেহেতু শক্তিশালী আঞ্চলিক ক্ষমতা এবং বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনা রয়েছে, তাই এটি বাস্তবে অসম্ভব বা অকার্যকর।
মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের ফেরত না পাওয়ার নজির
বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বলছে, যেসব দেশে মৃত্যুদণ্ড নেই, সেসব দেশ কখনোই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে ফেরত দেয় না। এই বাস্তবতা শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও ভারতের সিদ্ধান্ত অনুমান করতে সাহায্য করে।
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আশরাফুজ্জামান ওরফে নায়েব আলী খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায়ের ১২ বছর পার হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাঁদের ফেরত দেয়নি। চৌধুরী মুঈনুদ্দীন লন্ডনে বহাল তবিয়তে রয়েছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় মুসলিম সংগঠনের। আর আশরাফুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় নাগরিকত্বসহ বসবাস করছেন।
তৎকালীন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী বলেছিলেন, মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ বলে এসব দেশ তাঁদের ফেরত দেয়নি।
এই তালিকায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম নূর চৌধুরী—বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম দণ্ডিত। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি কানাডায় আত্মগোপনে আছেন এবং কানাডা মৃত্যুদণ্ড-বিরোধী নীতি অনুসরণ করে বলে তাঁকে এখনো ফেরত দেয়নি।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার খুনিদের মতোই বুদ্ধিজীবী হত্যার আসামিদেরও ফিরিয়ে আনা যায়নি। কারণ, ওই দেশগুলো মৃত্যুদণ্ডবিরোধী।’

জেনারেটরসহ অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাড়ে চার বছর বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) হিসাবে দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আজ শনিবার তিনি ইস্তফা চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর এক চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে অ্যাটর্নি জেনারেল লিখেছেন, যথাবিহিত সম্মানপূর্বক আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে...
১০ ঘণ্টা আগে
এতে বলা হয়, দীর্ঘ এক যুগ পর নেওয়া এই পদক্ষেপ দেশে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার করবে এবং কিশোর-তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ নতুন প্রজন্মের তামাক ও নিকোটিন পণ্যের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব...
১২ ঘণ্টা আগে
তিনি বলেন, ‘কাল (রোববার) সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।’
১২ ঘণ্টা আগেওমর ফারুক, চট্টগ্রাম

জেনারেটরসহ অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাড়ে চার বছর বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) হিসাবে দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। অথচ যে জেনারেটরের অভাবে উৎপাদন চালু করা যাচ্ছে না সেটি প্রতিস্থাপনে ব্যয় হবে ১৩০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমান অবস্থায় নতুন জেনারেটর ক্রয়প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পুনরায় উৎপাদনে যেতে অন্তত আরও এক থেকে দেড় বছর লাগবে। এতে কেন্দ্রটির লোকসানের অঙ্ক আরও প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
বিপিডিবি সূত্র জানায়, শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্রটির গড় উৎপাদন ক্ষমতা ১৪৫ মেগাওয়াট। সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে উৎপাদন হয় প্রায় ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ, যা মাসে দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি ৪৪ লাখ ইউনিট। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে গড় ব্যয় ৫ টাকা ৪০ পয়সা। বিপরীতে বিদ্যুতের বর্তমান বিক্রয়মূল্য আবাসিক খাতে ৮ টাকা ৫৬ পয়সা, ক্ষুদ্র শিল্পে ১০ টাকা ৭৬ পয়সা এবং বাণিজ্যিক খাতে ১৩ টাকা ১ পয়সা। সব মিলিয়ে গড় বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় প্রতি ইউনিট ১০ টাকা ৭৭ পয়সা। ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রিতে কেন্দ্রটির গড় লাভ হয় ৫ টাকা ৩৩ পয়সা। এই হিসাবে কেন্দ্রটি চালু থাকলে মাসে বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে লাভ হতো প্রায় ৫৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা বছরে প্রায় ৬৬৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
জেনারেটরসহ অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে কেন্দ্রটির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে গত সাড়ে চার বছরে বিপুল এই সম্ভাব্য আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। সংশ্লিষ্ট হিসাব অনুযায়ী, এ সময় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।
বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টটি উৎপাদন শুরু করে। প্রায় ১৩ বছর নিয়মিতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জেনারেটর ও অন্যান্য যন্ত্রাংশে গুরুতর ত্রুটি দেখা দেয়। একপর্যায়ে উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, প্রাথমিক মেরামতের পর উৎপাদনে যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ২০২৩ সালের আগস্টে কেন্দ্রটির জেনারেটর আগুনে পুড়ে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বিশেষজ্ঞরা মত দেন, জেনারেটর ও গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ আর মেরামতযোগ্য নয়। নতুন যন্ত্রপাতি ছাড়া কেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব নয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, গ্যাস টারবাইন ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৯১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার একটি প্রস্তাব সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদিত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে গ্যাস টারবাইন ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ কেনা হলেও জেনারেটর সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়ায় সেগুলো এখনো স্থাপন করা যায়নি।
শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রধান প্রকৌশলী গোলাম হায়দার তালুকদার জানান, বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ২১০০তম সভায় নতুন জেনারেটর কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন আরোপিত পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর), ২০২৫ অনুসরণ করে জেনারেটর ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
জেনারেটর কেনায় বিলম্ব ও দীর্ঘদিন প্ল্যান্ট বন্ধ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালের আগস্টে আগুনে পুড়ে যাওয়ার পরপরই জেনারেটর মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে জার্মানির সিমেন্সের বিশেষজ্ঞ দল আসতে দেরি হয়। পরবর্তীকালে তারা মত দেয়, জেনারেটরটি আর মেরামতযোগ্য নয়। এরপর বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে নতুন জেনারেটর কেনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও পিপিআর-২০২৫ কার্যকর হওয়ায় পুরো প্রক্রিয়া নতুন করে সাজাতে হচ্ছে। এতে অন্তত ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লাগছে।’
কেন্দ্রসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, শিডিউলভিত্তিক রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে টারবাইন, কম্প্রেসার ও কম্বাশন চেম্বারের মেজর ওভারহোলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রাংশ ইতিমধ্যে কেন্দ্রের ভান্ডারে মজুত রয়েছে। তবে জেনারেটর সমস্যার কারণে টারবাইন অংশের ওভারহোলিং শেষ করা সম্ভব হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নতুন জেনারেটর কিনতে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। তবে জেনারেটর স্থাপন শেষে পুনরায় উৎপাদনে গেলে কেন্দ্রটি থেকে আগের মতোই বছরে প্রায় ৬৬৭ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে।
১৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্র বন্ধের প্রভাব ২২৫ মেগাওয়াট প্ল্যান্টেও বিপিডিবির অধীনে চট্টগ্রামে মোট সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কেন্দ্র কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহায় অবস্থিত, যার দুটি ১৫০ ও ৬০ মেগাওয়াটের পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং একটি ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল প্ল্যান্ট। এর মধ্যে ৬০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০১৭ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে এবং ১৫০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি বন্ধ আছে গত সাড়ে চার বছর ধরে। বর্তমানে শুধু কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দীর্ঘদিন ১৫০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় পার্শ্ববর্তী ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপরও চাপ বেড়েছে। নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওভারহোলিং প্রয়োজন হলেও বিদ্যুতের চাহিদার কারণে গত পাঁচ বছর কেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় নিরবচ্ছিন্নভাবে চালু রাখতে হয়েছে। ফলে ওভারহোলিং করা সম্ভব হয়নি।
বিদ্যুৎ সরবরাহে সংকট এড়াতে ২২৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রের ওভারহোলিং নিশ্চিত করতে হলে ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টটি দ্রুত উৎপাদনে আনা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জেনারেটরসহ অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাড়ে চার বছর বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) হিসাবে দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। অথচ যে জেনারেটরের অভাবে উৎপাদন চালু করা যাচ্ছে না সেটি প্রতিস্থাপনে ব্যয় হবে ১৩০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমান অবস্থায় নতুন জেনারেটর ক্রয়প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পুনরায় উৎপাদনে যেতে অন্তত আরও এক থেকে দেড় বছর লাগবে। এতে কেন্দ্রটির লোকসানের অঙ্ক আরও প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
বিপিডিবি সূত্র জানায়, শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্রটির গড় উৎপাদন ক্ষমতা ১৪৫ মেগাওয়াট। সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে উৎপাদন হয় প্রায় ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ, যা মাসে দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি ৪৪ লাখ ইউনিট। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে গড় ব্যয় ৫ টাকা ৪০ পয়সা। বিপরীতে বিদ্যুতের বর্তমান বিক্রয়মূল্য আবাসিক খাতে ৮ টাকা ৫৬ পয়সা, ক্ষুদ্র শিল্পে ১০ টাকা ৭৬ পয়সা এবং বাণিজ্যিক খাতে ১৩ টাকা ১ পয়সা। সব মিলিয়ে গড় বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় প্রতি ইউনিট ১০ টাকা ৭৭ পয়সা। ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রিতে কেন্দ্রটির গড় লাভ হয় ৫ টাকা ৩৩ পয়সা। এই হিসাবে কেন্দ্রটি চালু থাকলে মাসে বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে লাভ হতো প্রায় ৫৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা বছরে প্রায় ৬৬৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
জেনারেটরসহ অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে কেন্দ্রটির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে গত সাড়ে চার বছরে বিপুল এই সম্ভাব্য আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। সংশ্লিষ্ট হিসাব অনুযায়ী, এ সময় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।
বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টটি উৎপাদন শুরু করে। প্রায় ১৩ বছর নিয়মিতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জেনারেটর ও অন্যান্য যন্ত্রাংশে গুরুতর ত্রুটি দেখা দেয়। একপর্যায়ে উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, প্রাথমিক মেরামতের পর উৎপাদনে যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ২০২৩ সালের আগস্টে কেন্দ্রটির জেনারেটর আগুনে পুড়ে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বিশেষজ্ঞরা মত দেন, জেনারেটর ও গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ আর মেরামতযোগ্য নয়। নতুন যন্ত্রপাতি ছাড়া কেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব নয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, গ্যাস টারবাইন ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৯১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার একটি প্রস্তাব সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদিত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে গ্যাস টারবাইন ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ কেনা হলেও জেনারেটর সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়ায় সেগুলো এখনো স্থাপন করা যায়নি।
শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রধান প্রকৌশলী গোলাম হায়দার তালুকদার জানান, বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ২১০০তম সভায় নতুন জেনারেটর কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন আরোপিত পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর), ২০২৫ অনুসরণ করে জেনারেটর ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
জেনারেটর কেনায় বিলম্ব ও দীর্ঘদিন প্ল্যান্ট বন্ধ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালের আগস্টে আগুনে পুড়ে যাওয়ার পরপরই জেনারেটর মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে জার্মানির সিমেন্সের বিশেষজ্ঞ দল আসতে দেরি হয়। পরবর্তীকালে তারা মত দেয়, জেনারেটরটি আর মেরামতযোগ্য নয়। এরপর বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে নতুন জেনারেটর কেনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও পিপিআর-২০২৫ কার্যকর হওয়ায় পুরো প্রক্রিয়া নতুন করে সাজাতে হচ্ছে। এতে অন্তত ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লাগছে।’
কেন্দ্রসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, শিডিউলভিত্তিক রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে টারবাইন, কম্প্রেসার ও কম্বাশন চেম্বারের মেজর ওভারহোলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রাংশ ইতিমধ্যে কেন্দ্রের ভান্ডারে মজুত রয়েছে। তবে জেনারেটর সমস্যার কারণে টারবাইন অংশের ওভারহোলিং শেষ করা সম্ভব হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নতুন জেনারেটর কিনতে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। তবে জেনারেটর স্থাপন শেষে পুনরায় উৎপাদনে গেলে কেন্দ্রটি থেকে আগের মতোই বছরে প্রায় ৬৬৭ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে।
১৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্র বন্ধের প্রভাব ২২৫ মেগাওয়াট প্ল্যান্টেও বিপিডিবির অধীনে চট্টগ্রামে মোট সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কেন্দ্র কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহায় অবস্থিত, যার দুটি ১৫০ ও ৬০ মেগাওয়াটের পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং একটি ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল প্ল্যান্ট। এর মধ্যে ৬০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০১৭ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে এবং ১৫০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি বন্ধ আছে গত সাড়ে চার বছর ধরে। বর্তমানে শুধু কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দীর্ঘদিন ১৫০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় পার্শ্ববর্তী ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপরও চাপ বেড়েছে। নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওভারহোলিং প্রয়োজন হলেও বিদ্যুতের চাহিদার কারণে গত পাঁচ বছর কেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় নিরবচ্ছিন্নভাবে চালু রাখতে হয়েছে। ফলে ওভারহোলিং করা সম্ভব হয়নি।
বিদ্যুৎ সরবরাহে সংকট এড়াতে ২২৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রের ওভারহোলিং নিশ্চিত করতে হলে ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টটি দ্রুত উৎপাদনে আনা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে ভারতে আশ্রিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর তাঁদের প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াদিল্লিকে...
২০ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আজ শনিবার তিনি ইস্তফা চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর এক চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে অ্যাটর্নি জেনারেল লিখেছেন, যথাবিহিত সম্মানপূর্বক আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে...
১০ ঘণ্টা আগে
এতে বলা হয়, দীর্ঘ এক যুগ পর নেওয়া এই পদক্ষেপ দেশে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার করবে এবং কিশোর-তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ নতুন প্রজন্মের তামাক ও নিকোটিন পণ্যের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব...
১২ ঘণ্টা আগে
তিনি বলেন, ‘কাল (রোববার) সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।’
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে পদ থেকে ইস্তফা চেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আজ শনিবার তিনি ইস্তফা চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর এক অব্যাহতিপত্র পাঠিয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ইস্তফাপত্রটি আগামীকাল রোববার সকালে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
ওই চিঠিতে অ্যাটর্নি জেনারেল লিখেছেন, যথাবিহিত সম্মানপূর্বক আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমি বিগত ০৮ আগষ্ট ২০২৪ ইং তারিখ থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদে কর্মরত আছি। বর্তমানে আমি ব্যক্তিগত কারণে উক্ত পদে দায়িত্ব পালনে অপারগ।
বিধায় আমাকে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদ হতে অব্যাহতি প্রদানে মহোদয়ের মর্জি হয়।
গত ৫ নভেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে ভোট করবেন। সেদিন নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, ‘আমি ভোট করব। আমি নমিনেশন ওখানে চেয়েছি। আমি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আছি এখনো। আমার অ্যাটর্নি জেনারেল পদ ছেড়ে গিয়ে আমি ভোট করব। যখন সময় আসবে, তখন করব।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান দেশের ১৭তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে এ পদে নিয়োগ দেন। তিনি বিএনপির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে পদ থেকে ইস্তফা চেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আজ শনিবার তিনি ইস্তফা চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর এক অব্যাহতিপত্র পাঠিয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ইস্তফাপত্রটি আগামীকাল রোববার সকালে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
ওই চিঠিতে অ্যাটর্নি জেনারেল লিখেছেন, যথাবিহিত সম্মানপূর্বক আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমি বিগত ০৮ আগষ্ট ২০২৪ ইং তারিখ থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদে কর্মরত আছি। বর্তমানে আমি ব্যক্তিগত কারণে উক্ত পদে দায়িত্ব পালনে অপারগ।
বিধায় আমাকে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদ হতে অব্যাহতি প্রদানে মহোদয়ের মর্জি হয়।
গত ৫ নভেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে ভোট করবেন। সেদিন নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, ‘আমি ভোট করব। আমি নমিনেশন ওখানে চেয়েছি। আমি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আছি এখনো। আমার অ্যাটর্নি জেনারেল পদ ছেড়ে গিয়ে আমি ভোট করব। যখন সময় আসবে, তখন করব।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান দেশের ১৭তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে এ পদে নিয়োগ দেন। তিনি বিএনপির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে ভারতে আশ্রিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর তাঁদের প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াদিল্লিকে...
২০ নভেম্বর ২০২৫
জেনারেটরসহ অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাড়ে চার বছর বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) হিসাবে দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
৭ ঘণ্টা আগে
এতে বলা হয়, দীর্ঘ এক যুগ পর নেওয়া এই পদক্ষেপ দেশে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার করবে এবং কিশোর-তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ নতুন প্রজন্মের তামাক ও নিকোটিন পণ্যের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব...
১২ ঘণ্টা আগে
তিনি বলেন, ‘কাল (রোববার) সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।’
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরও শক্তিশালী করতে অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’কে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি)। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শনিবার বিএনটিটিপি থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দীর্ঘ এক যুগ পর নেওয়া এই পদক্ষেপ দেশে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার করবে এবং কিশোর-তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ নতুন প্রজন্মের তামাক ও নিকোটিন পণ্যের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব জনস্বাস্থ্য রক্ষায় একটি যুগান্তকারী, সাহসী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
অনুমোদিত অধ্যাদেশে সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানসহ সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিষিদ্ধ, তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও প্রদর্শন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার পরিসর ৭৫ শতাংশে উন্নীতকরণ, নিকোটিন পাউচসহ নতুন পণ্যকে তামাকজাত দ্রব্যের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তগুলোকে ‘অত্যন্ত ইতিবাচক’ বলে উল্লেখ করেছে বিএনটিটিপি।
তবে প্রস্তাবিত খসড়া থেকে খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধকরণ এবং তামাক বিক্রেতাদের লাইসেন্সিং বা নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার বিধান বাদ দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুচরা শলাকা বিক্রির কারণে শিশু-কিশোর ও স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে তামাক সহজলভ্য হয়ে থাকছে, যা জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
বিএনটিটিপির মতে, তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি, অবৈধ বাণিজ্য এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে তামাক বিক্রি রোধে বিক্রেতা নিবন্ধন ও খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধকরণ দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি। সরকার এ বিষয়ে পরিপূরক আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এবং স্বাস্থ্য ব্যয়, পরিবেশগত ক্ষতি ও উৎপাদনশীলতা হ্রাসের কারণে বছরে প্রায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে।
এ প্রেক্ষাপটে সরকার গৃহীত তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ শক্তিশালী ও তামাকমুক্ত ভবিষ্যতের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ উল্লেখ করে এই আন্দোলনে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সংবাদমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় বিএনটিটিপি।

বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরও শক্তিশালী করতে অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’কে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি)। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শনিবার বিএনটিটিপি থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দীর্ঘ এক যুগ পর নেওয়া এই পদক্ষেপ দেশে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার করবে এবং কিশোর-তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ নতুন প্রজন্মের তামাক ও নিকোটিন পণ্যের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব জনস্বাস্থ্য রক্ষায় একটি যুগান্তকারী, সাহসী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
অনুমোদিত অধ্যাদেশে সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানসহ সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিষিদ্ধ, তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও প্রদর্শন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার পরিসর ৭৫ শতাংশে উন্নীতকরণ, নিকোটিন পাউচসহ নতুন পণ্যকে তামাকজাত দ্রব্যের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তগুলোকে ‘অত্যন্ত ইতিবাচক’ বলে উল্লেখ করেছে বিএনটিটিপি।
তবে প্রস্তাবিত খসড়া থেকে খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধকরণ এবং তামাক বিক্রেতাদের লাইসেন্সিং বা নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার বিধান বাদ দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুচরা শলাকা বিক্রির কারণে শিশু-কিশোর ও স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে তামাক সহজলভ্য হয়ে থাকছে, যা জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
বিএনটিটিপির মতে, তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি, অবৈধ বাণিজ্য এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে তামাক বিক্রি রোধে বিক্রেতা নিবন্ধন ও খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধকরণ দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি। সরকার এ বিষয়ে পরিপূরক আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এবং স্বাস্থ্য ব্যয়, পরিবেশগত ক্ষতি ও উৎপাদনশীলতা হ্রাসের কারণে বছরে প্রায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে।
এ প্রেক্ষাপটে সরকার গৃহীত তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ শক্তিশালী ও তামাকমুক্ত ভবিষ্যতের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ উল্লেখ করে এই আন্দোলনে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সংবাদমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় বিএনটিটিপি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে ভারতে আশ্রিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর তাঁদের প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াদিল্লিকে...
২০ নভেম্বর ২০২৫
জেনারেটরসহ অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাড়ে চার বছর বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) হিসাবে দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আজ শনিবার তিনি ইস্তফা চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর এক চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে অ্যাটর্নি জেনারেল লিখেছেন, যথাবিহিত সম্মানপূর্বক আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে...
১০ ঘণ্টা আগে
তিনি বলেন, ‘কাল (রোববার) সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।’
১২ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আগামীকাল রোববার শপথ নেবেন বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
বিষয়টি আজ বাসসকে নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিমকোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘কাল (রোববার) সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।’
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ২৩ ডিসেম্বরে আইন সচিব লিয়াকত আলী মোল্লার সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ শপথের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
১৯৮৫ সালে জুবায়ের রহমান চৌধুরী জজ কোর্টে এবং ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট তিনি অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হন জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
২০২৪ সালের ১২ আগস্ট তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
জুবায়ের রহমান চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি (সম্মান) ও এলএলএম করেন। পরে যুক্তরাজ্য থেকে আন্তর্জাতিক আইনে এলএলএম করেন।

দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আগামীকাল রোববার শপথ নেবেন বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
বিষয়টি আজ বাসসকে নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিমকোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘কাল (রোববার) সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।’
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ২৩ ডিসেম্বরে আইন সচিব লিয়াকত আলী মোল্লার সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ শপথের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
১৯৮৫ সালে জুবায়ের রহমান চৌধুরী জজ কোর্টে এবং ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট তিনি অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হন জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
২০২৪ সালের ১২ আগস্ট তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
জুবায়ের রহমান চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি (সম্মান) ও এলএলএম করেন। পরে যুক্তরাজ্য থেকে আন্তর্জাতিক আইনে এলএলএম করেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে ভারতে আশ্রিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর তাঁদের প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াদিল্লিকে...
২০ নভেম্বর ২০২৫
জেনারেটরসহ অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাড়ে চার বছর বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) হিসাবে দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আজ শনিবার তিনি ইস্তফা চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর এক চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে অ্যাটর্নি জেনারেল লিখেছেন, যথাবিহিত সম্মানপূর্বক আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে...
১০ ঘণ্টা আগে
এতে বলা হয়, দীর্ঘ এক যুগ পর নেওয়া এই পদক্ষেপ দেশে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার করবে এবং কিশোর-তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ নতুন প্রজন্মের তামাক ও নিকোটিন পণ্যের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব...
১২ ঘণ্টা আগে