Ajker Patrika

গরমে ভোগাবে অসহনীয় লোডশেডিং

  • গরমকালে বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা থাকে গড়ে ১৮ হাজার মেগাওয়াট
  • চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহে দরকার হবে ৭০ হাজার কোটি টাকা
  • বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বকেয়া এই অর্থ শোধ করতে হবে ডলারে
আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৫, ১০: ১৩
গরমে ভোগাবে অসহনীয় লোডশেডিং

এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি—এই তিন মাস তীব্র গরম অনুভূত হয় দেশে। গ্রীষ্মের এ সময়ে বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা থাকে গড়ে ১৮ হাজার মেগাওয়াট। চাহিদার এই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে কেন্দ্রগুলোয় জ্বালানি সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে হবে। এজন্য দরকার হবে ৭০ হাজার কোটি টাকা, যার পুরোটাই বিদেশি মুদ্রা ডলারে পরিশোধযোগ্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার এই অর্থ জোগাড় করতে না পারলে গ্রীষ্মকালে দিনে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট লোডশেড করতে হবে। আর এতে গরমে বাড়বে মানুষের ভোগান্তি।

বিদ্যুৎ খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বাবদ প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে। আর গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে পেট্রোবাংলা ২৪ হাজার কোটি টাকার এলএনজি আমদানির অর্থ চেয়ে সরকারকে দিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা লাগবে বকেয়া পরিশোধে। এই অর্থ পরিশোধ করতে পারলে গ্রীষ্মে বিদ্যুতের সংকট গভীর হবে না। আর বৈদেশিক মুদ্রা জোগাড় করতে না পারলে সে ক্ষেত্রে জ্বালানি ঘাটতি বাড়বে, এতে বাড়বে লোডশেডিং।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সরকারি-বেসরকারি ও দেশি-বিদেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে পাইকারি বিদ্যুৎ কিনে তা বিতরণ সংস্থাগুলোর মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করে। বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রের বকেয়া বিল জমেছে প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা। আর জ্বালানিতে গ্যাস কেনা বাবদ বাকি পড়েছে ৭ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন গ্যাস বিক্রি বাবদ পেট্রোবাংলার কাছে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা পাবে। বাকি অর্থ বকেয়া পড়েছে এলএনজি আমদানিতে। এসব বকেয়া পরিশোধের জন্য পাওনাদার প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের কাছে দফায় দফায় ধরনা দিয়েছে। কিন্তু টাকা পরিশোধ করতে পারছে না বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়। এদিকে দেশের বেসরকারি কেন্দ্রগুলো পিডিবির কাছে পাবে ১২ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ মালিকানার পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র পিডিবির কাছে পাবে ১০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভারতের আদানি গ্রুপও ৪ হাজার কোটি টাকা পাবে। পিডিবির কেনা পাইকারি বিদ্যুৎ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ৮০টি সমিতির মাধ্যমে দেশের বড় অংশে বিতরণ করা হয়।

এ ছাড়া ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকা ও নারায়ণগঞ্জে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো), খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ও রাজশাহী-রংপুরসহ উত্তরবঙ্গের নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই পিএলসি (নেসকো) গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। পিডিবি নিজেও চট্টগ্রামসহ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে।

পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, দেশে মোট বিদ্যুতের গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৭৯ লাখ। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা আরইবির গ্রাহক ৩ কোটি ৬৭ লাখ। চলতি বছর গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে ১৮ হাজার মেগাওয়াট। এ সময় আরইবির ৮০টি সমিতির বিতরণ এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা হবে সাড়ে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার মেগাওয়াট।

দেশে এ মুহূর্তে শীতাতপ যন্ত্র বা এসির কত লোড আছে বা তাদের পেছনে কত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যয় হয়, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে এই লোড ৪ হাজার মেগাওয়াটের নিচে নেই বলে জানিয়েছেন পিডিবির প্রকৌশলীরা। তাঁরা বলছেন, গরম যত বাড়বে, এসির ব্যবহার তত বাড়বে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে বিদ্যুতের সংকট। এ কারণে সরকার নির্দেশ দিয়েছে, এসির তাপমাত্রা ২৫-এর নিচে না নিতে।

আমদানি করা বিদ্যুৎ ও দেশে স্থাপিত বিদ্যুতের ক্ষমতা সব মিলিয়ে ২৬ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট। জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত থাকলে ১৭ হাজার থেকে ১৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। কারণ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে পিক-আওয়ারে চালু রাখার জন্য, যেগুলোকে পিকিং বলা হয়। এসব কেন্দ্র একনাগাড়ে চালু রাখা যায় না। দেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল, এদিন ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। এই রেকর্ডও ১ ঘণ্টার উৎপাদনের।

পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, গ্রীষ্মে সব থেকে খারাপ অবস্থা হবে ময়মনসিংহ জোনে। পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এই দুই সংস্থার আওতায় ময়মনসিংহ অঞ্চলের ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলায় তাদের গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ৫০ লাখ। গ্রীষ্মকালে এই গ্রাহকের চাহিদা দাঁড়ায় প্রায় ১৫০০ মেগাওয়াট। এই অঞ্চলে মোট ৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থাপিত ক্ষমতা ৬৪০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে দুটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষমতা ৫৩ মেগাওয়াট, বিকেলের পর এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আসে না, পিক-আওয়ার সন্ধ্যায় এ দুটি কেন্দ্রের বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে। পিক-আওয়ার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গড়ে বিদ্যুতের প্রয়োজন ময়মনসিংহ জোনে দেড় হাজার মেগাওয়াট, এর বড় অংশ আনতে হয় ময়মনসিংহের বাইরে থেকে। কারণ বাকি পাঁচ বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ছাড়া বাকিগুলো তেলভিত্তিক। তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর খরচ অনেক বেশি হওয়ায় এই কেন্দ্রগুলো বেশি সময় চালু রাখাও যায়নি। গত বছরের এপ্রিলে এই জোনে লোডশেড ছিল প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট। এবার এই জোনে লোডশেড আরও বাড়তে পারে।

পিডিবির প্রকৌশলীরা উত্তরবঙ্গ নিয়েও এবার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, রংপুর জোনে ৯৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার স্থাপিত কেন্দ্র রয়েছে, যার মধ্যে আবার দুটি সৌরবিদ্যুতের ক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট, যা বিকেলের পর বন্ধ হয়ে যায়। ৭২০ মেগাওয়াট স্থাপিত ক্ষমতার কেন্দ্রের মধ্যে ৫২৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র, যার কয়লা আসে বড়পুকুরিয়া খনি থেকে। এই কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে সারা বছর কোনো না কোনো সংকট লেগে থাকে, হয় কেন্দ্রের মেরামতে বন্ধ থাকে, না হয় কেন্দ্রে কয়লাসংকট। চলতি মার্চ মাসেও কেন্দ্রটির ২৫০ মেগাওয়াট সংস্কারকাজে বন্ধ রয়েছে। ফলে রংপুর জোনের স্থাপিত ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ দিয়ে এই বিভাগের জেলাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়। সেখানে বাইরে থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়। এতে প্রয়োজনের অর্ধেক বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হয় না গ্রীষ্মকালে। গত বছরের অক্টোবরেও রংপুরসহ এই বিভাগের বিভিন্ন জেলায় তীব্র লোডশেড ছিল। এবারও সে আশঙ্কা রয়েছে। পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, এবার ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ বড় শহরগুলোতে লোডশেড কম রাখা হবে, তবে গ্রামে বাড়বে লোডশেড।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, ‘দেশীয় গ্যাসের সংস্থান না করতে পারলে লোডশেডিং মুক্ত করা যাবে না। বিদেশ থেকে কয়লা ও গ্যাস কিনে এনে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে লোডশেড মুক্ত করা যাবে না, কারণ সে সক্ষমতা আমাদের নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গণভোটের প্রচার: পরিবর্তনের চাবি আপনারই হাতে

  • ১১টি সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে লিফলেটে।
  • বলা হয়েছে, ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে সব পাবেন। ‘না’ ভোট দিলে কিছুই পাবেন না।
  • গণভোটের বিষয়ে সরকার, ইসি, মন্ত্রণালয় প্রচার চালাবে।
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১০টি ভোটের গাড়ি চালু করা হয়েছে। ভোটারদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ভোট পর্যন্ত দেশের সব জেলা-উপজেলায় ঘুরবে এসব গাড়ি। এ ছাড়া ভোটের গান প্রচারের পাশাপাশি উঠান বৈঠকও শুরু হয়েছে দেশব্যাপী। এর ধারাবাহিকতায় ‘দেশের চাবি আপনার হাতে’ স্লোগান নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

লিফলেটে ‘আপনি কি এমন বাংলাদেশ চান, যেখানে...’—এই জিজ্ঞাসার বিপরীতে ১১টি সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, সরকারি দল ইচ্ছেমতো সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না; সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের বিধান চালু হবে; বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার এবং গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটিসমূহের সভাপতি নির্বাচিত হবে; কেউ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না; সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়বে; ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য পার্লামেন্টে একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে; দেশের বিচারব্যবস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করবে; আপনার মৌলিক অধিকারের সংখ্যা (যেমন অবাধে ইন্টারনেট সেবাপ্রাপ্তির অধিকার) বাড়বে; দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি ইচ্ছেমতো ক্ষমা করতে পারবেন না; রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকবে।

লিফলেটে বলা হয়েছে, ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে ওপরের সবকিছু পাবেন। ‘না’ ভোট দিলে কিছুই পাবেন না। মনে রাখবেন, পরিবর্তনের চাবি এবার আপনারই হাতে।

এ ছাড়া গণভোটের বিষয়ে প্রচারের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে ‘গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম’ সেল খোলা হয়েছে। প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) অধ্যাপক আলী রীয়াজকে। সেলের উদ্যোগে লোগো ও লিফলেট তৈরি করা হয়েছে, যা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জানা গেছে, লিফলেট দু-এক দিনের মধ্যে বিলি শুরু করবে সরকার। তারা পর্যায়ক্রমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার শুরু করবে। গণভোট নিয়ে দুটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। যেখানে গণভোটের বিষয়ে সব ধরনের তথ্য দেওয়া থাকবে।

প্রচারের মাধ্যমে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে পৌঁছানো সরকারের লক্ষ্য বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণভোট একটি ঐতিহাসিক সুযোগ দেশের মানুষের জন্য। অতীতে যেভাবে গণভোট হয়েছে, তা থেকে এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ অতীতের গণভোটের ক্ষেত্রে দেখা গেছে গৃহীত সিদ্ধান্ত। যেমন দ্বাদশ সংশোধনীর ক্ষেত্রে। কিংবা এমন পরিস্থিতিতে হয়েছে, মানুষের পছন্দের জায়গা ছিল না। এই গণভোট হচ্ছে মানুষের পছন্দের সুযোগ। আশা করি, মানুষ সে সুযোগ ব্যবহার করবে।’

সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদের বিষয়ে গণভোটের বিষয়ে সারা দেশে প্রচারের লক্ষ্যে ২২ ডিসেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি—সুপার ক্যারাভান। এসব গাড়ি দেশের ৬৪ জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেবে। সেখানে বিভিন্ন ভিডিও চিত্র দেখানো হবে।

নির্বাচন এবং গণভোট উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৩০টি ভিডিও তৈরি করা হবে। যেখানে আটটি বিভাগের জন্য আটটি গান তৈরি করা হয়েছে। গত বুধবার ঢাকা বিভাগের জন‍্য নির্মিত গান রিলিজ করা হয়। গেয়েছেন স্টোইক ব্লিসখ‍্যাত কাজী। পর্যায়ক্রমে বাকি সাতটি বিভাগের জন্য নির্মিত গানও রিলিজ করা হবে। গানের কথায় এক দিন দুই ভোট, সংসদ-গণভোট আওয়াজ ওঠায়, জবাবদিহি, সংস্কার, পরিবর্তন চাইলে গণভোট দেওয়ার কথা বলা আছে। গত সরকারের আমলের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ড গানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গানের কথায় সব জেলার নাম বলা হয়েছে। যেখানে দেশের মালিক জনগণকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সর্বশেষ মানুষের উদ্দেশে বলা হয়, ‘আসুন দেশের মালিকানা বুঝে নিন।’

গণভোট নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি, ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ ১৯ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে প্রচার কার্যক্রম করবে সরকার। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকদের নিয়ে সরকার বৈঠক করেছে। এ ছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তথ্যচিত্র, শর্ট ভিডিও। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জারি-সারি গান, অঞ্চলভিত্তিক গান তৈরি করা হয়েছে—যা হাট-বাজারে প্রচার করা হবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উপজেলা পর্যায়ে ফোকাল ব্যক্তি নির্ধারণের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের জন্য একটি টিম তৈরি করা হচ্ছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে প্রচার হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এনজিও ব্যুরোর উদ্যোগেও প্রচার করা হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিতসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে ধর্মগুরুদের নিজ নিজ ধর্মীয় স্থানের গণভোটের বিষয়ে মানুষকে বার্তা দিতে বলা হবে। সেখানে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে কী সংস্কার হবে, ‘না’ ভোট দিলে কী হবে—তা বলতে বলা হবে।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগেও গণভোটে নিয়ে প্রচার করা হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘গণভোটের প্রচার করার জন্য আমাদের অফিসগুলোকে ফেস্টুন দেব। এ ছাড়া লিফলেট বিলি করব। তবে মূল কাজ করছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। আমরা আমাদের ভোট ব্যবস্থাপনায় যেটুকু দরকার, সেটুকু করব।’

গণভোট ও জুলাই সনদের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোও প্রচার করবে বলে আশা সরকারের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র নিলেন ৩১৪৪ জন, আগামীকালই দাখিলের শেষ সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটের কাজে কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইসি।

এর আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ও এ জন্য বাজেট প্রণয়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার রোধ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন ও নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আসবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভিসা প্রসেসিংসহ সব বিষয়ে সচিবের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে বিগত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যেভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, এবারও তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে পোস্টাল ভোটের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ডাক বিভাগকে সমন্বয় ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পোস্টাল ব্যালট দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত আনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।

এ ছাড়া আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সংস্কার এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের ভাঙা ও সংকীর্ণ রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ইসির সম্মতির প্রয়োজন হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী মঙ্গলবার অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশে কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আজ রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ দেওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সব জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পড়ান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত