ইশতিয়াক হাসান
বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় আবারও পাহাড় ও প্রকৃতিপ্রেমীতে সরগরম হয়ে উঠেছে সাজেক। এদিকে বছরের এই সময়টা, অর্থাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষভাগ সাজেক ভ্রমণের জন্য এক কথায় আদর্শ। কেন সেই উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি আপনার সাজেকে ঘুরে বেড়ানো আরও আনন্দময় এবং ঝামেলামুক্ত করতে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এই লেখায়।
এটা এখন মোটামুটি সবারই জানা যে সাজেক রাঙামাটিতে পড়লেও যাওয়া সহজ খাগড়াছড়ি দিয়ে। আপনি কখনো সাজেক যাননি, তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন, কেন সাজেক যাবেন? লেখাটি পড়তে পড়তে আশা করি এর উত্তর পেয়ে যাবেন।
ধরলাম আপনি ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির দিকে যাওয়া রাতের বাসে চড়েছেন। ভোরের আলো ফুটেছে কেবল, এমন সময় দেখলেন গাড়িটা বামের একটা পথে ঢুকে পড়েছে। খাড়া পাহাড়ি, আঁকাবাঁকা পথ ধরে যখন বাসটা চলবে, সামনে অনেক দূরে হয়তো ম্যাচ বাক্সের মতো অন্য কোনো একটি ট্রাক কিংবা বাস দেখলেন। আর ভাবলেন, মনে হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমানায় পৌঁছে গেছেন। ব্যাপার মোটেই তা নয়, আপনি আসলে এখন আছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-মিরসরাই রেঞ্জে। বলা চলে সাজেক ভ্রমণের মজা শুরু হয়ে গেল আপনার।

তারপর থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত মোটামুটি পুরো পথটি গিয়েছে পাহাড়কে পাশে রেখে। সবুজ পাহাড় আপনাকে মুগ্ধ করবে, একই সঙ্গে আবার কোথাও কোথাও একপাশের খাদ দেখে গা কাঁটা দিতে পারে। খাগড়াছড়িতে প্রবেশের আগে আলুটিলার পাশে যে খাড়া ঢালটা পাবেন, সেটা পেরোনোর সময় রোমাঞ্চিত হবেন। খাগড়াছড়ি তো চলে এলেন, এখন সাজেক যাবেন কীভাবে?
বড় দল হলে খাগড়াছড়ি শহর থেকে চান্দের গাড়ি বা পিকআপ জিপ ভাড়া নেবেন সাজেক পর্যন্ত। আবার শুধু পরিবার নিয়ে গেলে কিংবা তিন-চারজনের ছোট দল হলে ভাড়া করবেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মাহিন্দ্রা। এখানে জানিয়ে রাখা ভালো, খাগড়াছড়ি থেকে যখনই রওনা দেন না কেন, বাঘাইহাট থেকে সব গাড়ি ছাড়বে একই সময়ে। সকালে এবং দুপুরে দুই টাইমে সেখান থেকে ছাড়ে গাড়ি। পর্যটক বহনকারী গাড়িগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সঙ্গে থাকে সেনাবাহিনীর জিপ।

চান্দের গাড়িতে এক রাত থাকাসহ ভাড়া পড়বে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। সঙ্গে দ্বিতীয় দিন খাগড়াছড়ির জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা গুহার মতো জায়গাগুলোও ঘুরে দেখাবে। এদিকে পিকআপ জিপে ভাড়া পড়বে ৯ হাজার টাকা। সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মাহিন্দ্রায় এই ভাড়া ৫ হাজারের আশপাশে।
খাগড়াছড়ি থেকে বাঘাইহাট পর্যন্ত পথটা নয়ন জুড়াবে আপনার। দীঘিনালা পর্যন্ত সড়কে বাঁক বেশি। দীঘিনালার কাছে মাইনি নদী পেরোনোর সময় কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে নদীটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। বাঘাইহাট থেকে চান্দের গাড়িগুলো লাইন করে দাঁড়ায়। এ সময় চাইলে বাঘাইহাট বাজারে নেমে পাহাড়ি কলা কিংবা মৌসুমি কোনো ফল কিনতে পারেন। রাসায়নিকমুক্ত তাজা ফল পাবেন নিঃসন্দেহে। তবে পর্যটকের চাহিদার কারণে দামটা এখন আগের তুলনায় বেড়েছে।

বাঘাইহাটের পর থেকে পাবেন পাহাড়ি পথের আসল মজা। এই রাস্তা উঠেছে তো আবার নেমেছে। তারপর আবার উঠেছে। তবে এই পথে খুব বেশি বাঁক নেই। পাহাড়ি পথে একটার পর একটা চান্দের গাড়ি ছোটার দৃশ্যও সুন্দর। এই পথে রাস্তার ওঠানামার কারণে আপনি পাবেন রোলার কোস্টারে চড়ার অনুভূতি। মাঝে মাঝে রাস্তার ধারে পাহাড়িদের একটা-দুটো ঘর পাবেন, দেখবেন মুগ্ধ চোখে। চলার পথে অবশ্যই দৃষ্টি সজাগ রাখবেন, না হলে অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন। বিশেষ করে কাসালং ও মাইনি নদী যেখানটায় মিলেছে সেখানটা এক কথায় অসাধারণ। সেতুর ওপর থেকে নিচে বাঁ পাশে দুই নদীর মিলনস্থলের সৌন্দর্য দেখে আবার গাড়িতে উঠতে মন চাইবে না।

সাজেক যাওয়া পথে মাঝে মাঝেই রাস্তার দুপাশে দেখবেন পাহাড়ি শিশুদের। হাসিমুখে হাত নাড়বে তারা। সর্বশেষ প্রায় খাড়া একটা চড়াই পেরোতে হবে। এটা পেরোতে গিয়ে গাড়িগুলো গোঁ গোঁ শব্দে প্রতিবাদ জানাতে থাকবে। তবে ভয়ের কিছু নেই, শেষ পর্যন্ত ঠিকই আপনাকে পাহাড়ের ওপরে পৌঁছে দেবে। সাজেক ভ্রমণের অন্যতম রোমাঞ্চকর মুহূর্ত পাহাড়ের খাড়া এই অংশ পেরোনো।

পাহাড়ের ওপর উঠেই চমকে যাবেন। রাস্তার দুপাশে সারবেঁধে দাঁড়িয়ে আছে একটার পর একটা হোটেল, কটেজ, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁ। দৃশ্যটা দেখে আপনার একটু দার্জিলিং দার্জিলিং ফিল হতে পারে। একই সঙ্গে আবার এটাও মনে হতে পারে, জায়গাটি অনেক বেশি ঘিঞ্জি বানিয়ে ফেলেছে।
মোটেল-রিসোর্টে ভরপুর এই জায়গার নাম রুইলুই পাড়া। সাজেক রাঙামাটির একটি ইউনিয়ন হলেও পর্যটকেরা সাজেক বলতে এই রুইলুই পাড়া এবং আরও ওপরের পাড়া কংলাককেই বোঝেন। রুইলুই মূলত লুসাই ও ত্রিপুরা অধ্যুষিত একটি পাড়া। মজার ঘটনা, ২০১১ সালে যখন সাজেকে এসেছিলাম, তখন একটি হোটেল-রিসোর্টও ছিল না, আর এখন এগুলোতে গিজগিজ করছে।

এখন শিরোনামের দিকে একটু তাকাই, লিখেছি ‘সাজেক ভ্রমণের এখনই সময়’, কেন? বর্ষায় প্রকৃতি অনেক সবুজ থাকে সন্দেহ নেই। বৃষ্টিতে পাহাড় যেভাবে সাজে, তার জুড়ি মেলা ভার। মেঘের আনাগোনা থাকে প্রচুর। তবে বৃষ্টির কারণে পথ পিচ্ছিল থাকায় পাহাড়ি রাস্তায় ঝুঁকি কিছুটা হলেও বাড়ে। এদিকে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে আবহাওয়া ভালো থাকলেও প্রকৃতির সবুজ ভাব কমতে থাকে। কিন্তু এই সময়টায় বৃষ্টির ঝামেলা নেই, এদিকে আবার পাহাড় যথেষ্ট সবুজ। ভোরের দিকে ভালো মেঘও পাবেন। বেশ একটা শীত শীত আমেজও পাবেন। মোটের ওপর তাই চোখ বুঝে সাজেক ভ্রমণের একটি প্ল্যান সাজিয়ে ফেলতে পারেন।
তবে কথা হলো, পুরোনো সাজেক যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা অনেকেই এখনকার রিসোর্ট-কটেজে ঘিঞ্জি সাজেককে পছন্দ করেন না। তাঁদের দোষ দেওয়া যায় না। এখানে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে একের পর এক রিসোর্ট-কটেজ। অনেক ক্ষেত্রেই একটার থেকে প্রকৃতির রূপ উপভোগ নষ্ট করে দিয়েছে আরেকটি। তারপর আবার আমরা পর্যটক এবং ব্যবসায়ীরা মিলে অনেকটা আবর্জনাময় করে রেখেছি জায়গাটি।

তবে আমার অভিজ্ঞতা বলে, এখনকার সাজেকেও চাইলে আনন্দময় কয়েকটি দিন কাটাতে পারবেন, সেই সঙ্গে ইট-পাথরের নগরে যাওয়ার সময় সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারবেন সারা জীবন মনে রাখার মতো কিছু স্মৃতি। এমনিতে সাজেকের রুইলুই পাড়ায় ঘুরে বেড়ানোর সময় রাস্তার দুপাশ থেকেই পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
রুইলুই পাড়ায় একটা মডেল লুসাই পাড়া আছে। দেখে বেশ মজা পাবেন, টিকিট জনপ্রতি ৩০ টাকা। আমরা অনেকটা সময় ওখানে কাটিয়েছিলাম। গাছের ওপর বাড়ি বা গাছবাড়িটা দেখে মজা পাবেন। লুসাইদের রাজার বাড়ি, সাধারণ বাড়িঘর, তৈজসপত্র সবকিছুই দেখবেন। রাজার বাড়ি মানে বাড়ির মডেলে আবার আছে কয়েকটা পেইন্টিংও। একটা দোলনাও পাবেন লুসাই শিশুদের জন্য বানানো দোলনার স্টাইলে। এ ছাড়াও লুসাইদের জীবনযাত্রার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানান কিছুই পাবেন। হেলিপ্যাড থেকে সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন। সাজেকে পৌঁছার পরদিন ভোরে ঘুরে আসতে পারেন কংলাক পাড়া থেকে। কংলাক পাড়া এদিকের সবচেয়ে উঁচু জায়গা। ওখান থেকে আশপাশের পাহাড় ও রুইলুই পাড়ার রাস্তা এবং ঘরবাড়িগুলো দেখতেও বেশ লাগে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কংলাকেও পরিকল্পনাহীনভাবে একের পর এক কটেজ-হোটেল গজিয়ে উঠতে শুরু করেছে।

এখন সাজেকে একটু নিরিবিলি উপভোগের সুযোগ কীভাবে মিলবে, সে বিষয়ে দু-চারটি কথা বলছি। সাজেকের পুবে ভারতের মিজোরাম, পশ্চিমে বাংলাদেশের দীঘিনালা। পুবমুখী ও পশ্চিমমুখী উভয় কটেজ থেকেই সামনে যত দূর চোখ যায় সবুজ পাহাড়ের দেখা মিলবে। ভালো ব্যালকনি বা বারান্দা আছে এমন একটি কটেজ বেছে নিন। আমার ব্যক্তিগতভাবে পুবমুখী দৃশ্য পছন্দ। কারণ ওদিকে বাংলাদেশের পাহাড় শেষ হতেই শুরু হয়ে গেছে ভারতের সেভেন সিস্টারের এক রাজ্য মিজোরামের পাহাড়। ব্যালকনিতে বসেই বড় একটা সময় পার করে দিতে পারবেন। মিজোরামের ওদিকে কামরা থাকলে দেখতে পাবেন সূর্যোদয়, পশ্চিমে মানে দীঘিনালার দিকে কটেজ নিলে সূর্যাস্তের ভিউ ভালো পাবেন।
মেঘ ভালো দেখতে চাইলে একেবারে ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হবে। বারান্দায় দাঁড়াতেই দেখবেন সাদা একটা মেঘের পর্দা ঢেকে রেখেছে গোটা পাহাড়রাজ্য। সূর্য ওপর দিকে ওটার সঙ্গে সঙ্গে মেঘের চাদর ছিঁড়ে সবুজ পাহাড় বেরোতে থাকবে। এ ছাড়া ভিড়বাট্টা এড়িয়ে প্রকৃতি উপভোগ করতে চাইলে পাহাড়িদের চলাচলের কোনো পথ ধরে চলে যেতে পারেন নিচের দিকে। পাহাড়িদের জীবন, সবুজ গাছপালা, পাখির কলকাকলি—সবকিছুই দেখার ও শোনার সুযোগ মিলবে চোখ-কান খোলা রাখলে। পাহাড়ের ঢালে কোনো ঘেসো জমিতে বসে মিজোরাম কিংবা বাংলাদেশের পাহাড় দেখতে দেখতেও আনন্দময় সময় পার করতে পারেন।

তবে সাজেকের ভিড় এড়াতে চাইলে অবশ্য আপনার টানা ছুটির দিন এড়িয়ে যেতে হবে। তেমনি শুক্র ও শনিবার না গেলেই মঙ্গল। কারণ ওই দিনগুলোতে পর্যটকের চাপ থাকায় রিসোর্ট-কটেজের ভাড়াও থাকে বেশি। তেমনি সাজেকের রাস্তায় শান্তিমতো হাঁটাও মুশকিল।
আর আগে থেকে হোটেল-কটেজ ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে ছুটির দিন হলে ওটাই আপনার প্রথম কর্তব্য। ঈদসহ বড় ছুটিতে অনেকেই রিসোর্ট ভাড়া না করে গিয়ে বড় বিপদে পড়েছেন।

রিসোর্ট বা কটেজ বাছাইয়ের জন্য ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন। তেমনি কোন রেস্তোরাঁয় খাবেন সেটা বাছাইয়েও ইউটিউব আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। কিছু ভিডিও দেখলে বাছবিচার করার কাজটা সহজ হবে। তেমনি বেশির ভাগ রিসোর্ট-কটেজের ফেসবুক পেজ আছে। ওখানে ঢুঁ মারতে পারেন। এদিকে ছুটির দিন ছাড়া গেলে আপনি দরাদরি করে একটু কম ভাড়ায় কটেজ পেয়ে যাবেন। সাজেকের বেশির ভাগ কটেজের রুম ভাড়া ১৫০০ থেকে ৫ হাজারের মধ্যে। রেস্তোরাঁয় গোটা দিনের প্যাকেজ নিলে খাওয়ার খরচটা কম পড়বে।
কাজেই পাঠক, সাজেকে আনন্দময় একটি ভ্রমণে আপনাকে স্বাগত। ওহ্, একটা কথা, আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে পরিবেশ সুন্দর রাখুন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনকে সম্মান করুন।

বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় আবারও পাহাড় ও প্রকৃতিপ্রেমীতে সরগরম হয়ে উঠেছে সাজেক। এদিকে বছরের এই সময়টা, অর্থাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষভাগ সাজেক ভ্রমণের জন্য এক কথায় আদর্শ। কেন সেই উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি আপনার সাজেকে ঘুরে বেড়ানো আরও আনন্দময় এবং ঝামেলামুক্ত করতে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এই লেখায়।
এটা এখন মোটামুটি সবারই জানা যে সাজেক রাঙামাটিতে পড়লেও যাওয়া সহজ খাগড়াছড়ি দিয়ে। আপনি কখনো সাজেক যাননি, তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন, কেন সাজেক যাবেন? লেখাটি পড়তে পড়তে আশা করি এর উত্তর পেয়ে যাবেন।
ধরলাম আপনি ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির দিকে যাওয়া রাতের বাসে চড়েছেন। ভোরের আলো ফুটেছে কেবল, এমন সময় দেখলেন গাড়িটা বামের একটা পথে ঢুকে পড়েছে। খাড়া পাহাড়ি, আঁকাবাঁকা পথ ধরে যখন বাসটা চলবে, সামনে অনেক দূরে হয়তো ম্যাচ বাক্সের মতো অন্য কোনো একটি ট্রাক কিংবা বাস দেখলেন। আর ভাবলেন, মনে হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমানায় পৌঁছে গেছেন। ব্যাপার মোটেই তা নয়, আপনি আসলে এখন আছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-মিরসরাই রেঞ্জে। বলা চলে সাজেক ভ্রমণের মজা শুরু হয়ে গেল আপনার।

তারপর থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত মোটামুটি পুরো পথটি গিয়েছে পাহাড়কে পাশে রেখে। সবুজ পাহাড় আপনাকে মুগ্ধ করবে, একই সঙ্গে আবার কোথাও কোথাও একপাশের খাদ দেখে গা কাঁটা দিতে পারে। খাগড়াছড়িতে প্রবেশের আগে আলুটিলার পাশে যে খাড়া ঢালটা পাবেন, সেটা পেরোনোর সময় রোমাঞ্চিত হবেন। খাগড়াছড়ি তো চলে এলেন, এখন সাজেক যাবেন কীভাবে?
বড় দল হলে খাগড়াছড়ি শহর থেকে চান্দের গাড়ি বা পিকআপ জিপ ভাড়া নেবেন সাজেক পর্যন্ত। আবার শুধু পরিবার নিয়ে গেলে কিংবা তিন-চারজনের ছোট দল হলে ভাড়া করবেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মাহিন্দ্রা। এখানে জানিয়ে রাখা ভালো, খাগড়াছড়ি থেকে যখনই রওনা দেন না কেন, বাঘাইহাট থেকে সব গাড়ি ছাড়বে একই সময়ে। সকালে এবং দুপুরে দুই টাইমে সেখান থেকে ছাড়ে গাড়ি। পর্যটক বহনকারী গাড়িগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সঙ্গে থাকে সেনাবাহিনীর জিপ।

চান্দের গাড়িতে এক রাত থাকাসহ ভাড়া পড়বে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। সঙ্গে দ্বিতীয় দিন খাগড়াছড়ির জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা গুহার মতো জায়গাগুলোও ঘুরে দেখাবে। এদিকে পিকআপ জিপে ভাড়া পড়বে ৯ হাজার টাকা। সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মাহিন্দ্রায় এই ভাড়া ৫ হাজারের আশপাশে।
খাগড়াছড়ি থেকে বাঘাইহাট পর্যন্ত পথটা নয়ন জুড়াবে আপনার। দীঘিনালা পর্যন্ত সড়কে বাঁক বেশি। দীঘিনালার কাছে মাইনি নদী পেরোনোর সময় কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে নদীটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। বাঘাইহাট থেকে চান্দের গাড়িগুলো লাইন করে দাঁড়ায়। এ সময় চাইলে বাঘাইহাট বাজারে নেমে পাহাড়ি কলা কিংবা মৌসুমি কোনো ফল কিনতে পারেন। রাসায়নিকমুক্ত তাজা ফল পাবেন নিঃসন্দেহে। তবে পর্যটকের চাহিদার কারণে দামটা এখন আগের তুলনায় বেড়েছে।

বাঘাইহাটের পর থেকে পাবেন পাহাড়ি পথের আসল মজা। এই রাস্তা উঠেছে তো আবার নেমেছে। তারপর আবার উঠেছে। তবে এই পথে খুব বেশি বাঁক নেই। পাহাড়ি পথে একটার পর একটা চান্দের গাড়ি ছোটার দৃশ্যও সুন্দর। এই পথে রাস্তার ওঠানামার কারণে আপনি পাবেন রোলার কোস্টারে চড়ার অনুভূতি। মাঝে মাঝে রাস্তার ধারে পাহাড়িদের একটা-দুটো ঘর পাবেন, দেখবেন মুগ্ধ চোখে। চলার পথে অবশ্যই দৃষ্টি সজাগ রাখবেন, না হলে অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন। বিশেষ করে কাসালং ও মাইনি নদী যেখানটায় মিলেছে সেখানটা এক কথায় অসাধারণ। সেতুর ওপর থেকে নিচে বাঁ পাশে দুই নদীর মিলনস্থলের সৌন্দর্য দেখে আবার গাড়িতে উঠতে মন চাইবে না।

সাজেক যাওয়া পথে মাঝে মাঝেই রাস্তার দুপাশে দেখবেন পাহাড়ি শিশুদের। হাসিমুখে হাত নাড়বে তারা। সর্বশেষ প্রায় খাড়া একটা চড়াই পেরোতে হবে। এটা পেরোতে গিয়ে গাড়িগুলো গোঁ গোঁ শব্দে প্রতিবাদ জানাতে থাকবে। তবে ভয়ের কিছু নেই, শেষ পর্যন্ত ঠিকই আপনাকে পাহাড়ের ওপরে পৌঁছে দেবে। সাজেক ভ্রমণের অন্যতম রোমাঞ্চকর মুহূর্ত পাহাড়ের খাড়া এই অংশ পেরোনো।

পাহাড়ের ওপর উঠেই চমকে যাবেন। রাস্তার দুপাশে সারবেঁধে দাঁড়িয়ে আছে একটার পর একটা হোটেল, কটেজ, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁ। দৃশ্যটা দেখে আপনার একটু দার্জিলিং দার্জিলিং ফিল হতে পারে। একই সঙ্গে আবার এটাও মনে হতে পারে, জায়গাটি অনেক বেশি ঘিঞ্জি বানিয়ে ফেলেছে।
মোটেল-রিসোর্টে ভরপুর এই জায়গার নাম রুইলুই পাড়া। সাজেক রাঙামাটির একটি ইউনিয়ন হলেও পর্যটকেরা সাজেক বলতে এই রুইলুই পাড়া এবং আরও ওপরের পাড়া কংলাককেই বোঝেন। রুইলুই মূলত লুসাই ও ত্রিপুরা অধ্যুষিত একটি পাড়া। মজার ঘটনা, ২০১১ সালে যখন সাজেকে এসেছিলাম, তখন একটি হোটেল-রিসোর্টও ছিল না, আর এখন এগুলোতে গিজগিজ করছে।

এখন শিরোনামের দিকে একটু তাকাই, লিখেছি ‘সাজেক ভ্রমণের এখনই সময়’, কেন? বর্ষায় প্রকৃতি অনেক সবুজ থাকে সন্দেহ নেই। বৃষ্টিতে পাহাড় যেভাবে সাজে, তার জুড়ি মেলা ভার। মেঘের আনাগোনা থাকে প্রচুর। তবে বৃষ্টির কারণে পথ পিচ্ছিল থাকায় পাহাড়ি রাস্তায় ঝুঁকি কিছুটা হলেও বাড়ে। এদিকে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে আবহাওয়া ভালো থাকলেও প্রকৃতির সবুজ ভাব কমতে থাকে। কিন্তু এই সময়টায় বৃষ্টির ঝামেলা নেই, এদিকে আবার পাহাড় যথেষ্ট সবুজ। ভোরের দিকে ভালো মেঘও পাবেন। বেশ একটা শীত শীত আমেজও পাবেন। মোটের ওপর তাই চোখ বুঝে সাজেক ভ্রমণের একটি প্ল্যান সাজিয়ে ফেলতে পারেন।
তবে কথা হলো, পুরোনো সাজেক যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা অনেকেই এখনকার রিসোর্ট-কটেজে ঘিঞ্জি সাজেককে পছন্দ করেন না। তাঁদের দোষ দেওয়া যায় না। এখানে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে একের পর এক রিসোর্ট-কটেজ। অনেক ক্ষেত্রেই একটার থেকে প্রকৃতির রূপ উপভোগ নষ্ট করে দিয়েছে আরেকটি। তারপর আবার আমরা পর্যটক এবং ব্যবসায়ীরা মিলে অনেকটা আবর্জনাময় করে রেখেছি জায়গাটি।

তবে আমার অভিজ্ঞতা বলে, এখনকার সাজেকেও চাইলে আনন্দময় কয়েকটি দিন কাটাতে পারবেন, সেই সঙ্গে ইট-পাথরের নগরে যাওয়ার সময় সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারবেন সারা জীবন মনে রাখার মতো কিছু স্মৃতি। এমনিতে সাজেকের রুইলুই পাড়ায় ঘুরে বেড়ানোর সময় রাস্তার দুপাশ থেকেই পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
রুইলুই পাড়ায় একটা মডেল লুসাই পাড়া আছে। দেখে বেশ মজা পাবেন, টিকিট জনপ্রতি ৩০ টাকা। আমরা অনেকটা সময় ওখানে কাটিয়েছিলাম। গাছের ওপর বাড়ি বা গাছবাড়িটা দেখে মজা পাবেন। লুসাইদের রাজার বাড়ি, সাধারণ বাড়িঘর, তৈজসপত্র সবকিছুই দেখবেন। রাজার বাড়ি মানে বাড়ির মডেলে আবার আছে কয়েকটা পেইন্টিংও। একটা দোলনাও পাবেন লুসাই শিশুদের জন্য বানানো দোলনার স্টাইলে। এ ছাড়াও লুসাইদের জীবনযাত্রার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানান কিছুই পাবেন। হেলিপ্যাড থেকে সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন। সাজেকে পৌঁছার পরদিন ভোরে ঘুরে আসতে পারেন কংলাক পাড়া থেকে। কংলাক পাড়া এদিকের সবচেয়ে উঁচু জায়গা। ওখান থেকে আশপাশের পাহাড় ও রুইলুই পাড়ার রাস্তা এবং ঘরবাড়িগুলো দেখতেও বেশ লাগে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কংলাকেও পরিকল্পনাহীনভাবে একের পর এক কটেজ-হোটেল গজিয়ে উঠতে শুরু করেছে।

এখন সাজেকে একটু নিরিবিলি উপভোগের সুযোগ কীভাবে মিলবে, সে বিষয়ে দু-চারটি কথা বলছি। সাজেকের পুবে ভারতের মিজোরাম, পশ্চিমে বাংলাদেশের দীঘিনালা। পুবমুখী ও পশ্চিমমুখী উভয় কটেজ থেকেই সামনে যত দূর চোখ যায় সবুজ পাহাড়ের দেখা মিলবে। ভালো ব্যালকনি বা বারান্দা আছে এমন একটি কটেজ বেছে নিন। আমার ব্যক্তিগতভাবে পুবমুখী দৃশ্য পছন্দ। কারণ ওদিকে বাংলাদেশের পাহাড় শেষ হতেই শুরু হয়ে গেছে ভারতের সেভেন সিস্টারের এক রাজ্য মিজোরামের পাহাড়। ব্যালকনিতে বসেই বড় একটা সময় পার করে দিতে পারবেন। মিজোরামের ওদিকে কামরা থাকলে দেখতে পাবেন সূর্যোদয়, পশ্চিমে মানে দীঘিনালার দিকে কটেজ নিলে সূর্যাস্তের ভিউ ভালো পাবেন।
মেঘ ভালো দেখতে চাইলে একেবারে ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হবে। বারান্দায় দাঁড়াতেই দেখবেন সাদা একটা মেঘের পর্দা ঢেকে রেখেছে গোটা পাহাড়রাজ্য। সূর্য ওপর দিকে ওটার সঙ্গে সঙ্গে মেঘের চাদর ছিঁড়ে সবুজ পাহাড় বেরোতে থাকবে। এ ছাড়া ভিড়বাট্টা এড়িয়ে প্রকৃতি উপভোগ করতে চাইলে পাহাড়িদের চলাচলের কোনো পথ ধরে চলে যেতে পারেন নিচের দিকে। পাহাড়িদের জীবন, সবুজ গাছপালা, পাখির কলকাকলি—সবকিছুই দেখার ও শোনার সুযোগ মিলবে চোখ-কান খোলা রাখলে। পাহাড়ের ঢালে কোনো ঘেসো জমিতে বসে মিজোরাম কিংবা বাংলাদেশের পাহাড় দেখতে দেখতেও আনন্দময় সময় পার করতে পারেন।

তবে সাজেকের ভিড় এড়াতে চাইলে অবশ্য আপনার টানা ছুটির দিন এড়িয়ে যেতে হবে। তেমনি শুক্র ও শনিবার না গেলেই মঙ্গল। কারণ ওই দিনগুলোতে পর্যটকের চাপ থাকায় রিসোর্ট-কটেজের ভাড়াও থাকে বেশি। তেমনি সাজেকের রাস্তায় শান্তিমতো হাঁটাও মুশকিল।
আর আগে থেকে হোটেল-কটেজ ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে ছুটির দিন হলে ওটাই আপনার প্রথম কর্তব্য। ঈদসহ বড় ছুটিতে অনেকেই রিসোর্ট ভাড়া না করে গিয়ে বড় বিপদে পড়েছেন।

রিসোর্ট বা কটেজ বাছাইয়ের জন্য ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন। তেমনি কোন রেস্তোরাঁয় খাবেন সেটা বাছাইয়েও ইউটিউব আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। কিছু ভিডিও দেখলে বাছবিচার করার কাজটা সহজ হবে। তেমনি বেশির ভাগ রিসোর্ট-কটেজের ফেসবুক পেজ আছে। ওখানে ঢুঁ মারতে পারেন। এদিকে ছুটির দিন ছাড়া গেলে আপনি দরাদরি করে একটু কম ভাড়ায় কটেজ পেয়ে যাবেন। সাজেকের বেশির ভাগ কটেজের রুম ভাড়া ১৫০০ থেকে ৫ হাজারের মধ্যে। রেস্তোরাঁয় গোটা দিনের প্যাকেজ নিলে খাওয়ার খরচটা কম পড়বে।
কাজেই পাঠক, সাজেকে আনন্দময় একটি ভ্রমণে আপনাকে স্বাগত। ওহ্, একটা কথা, আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে পরিবেশ সুন্দর রাখুন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনকে সম্মান করুন।
ইশতিয়াক হাসান
বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় আবারও পাহাড় ও প্রকৃতিপ্রেমীতে সরগরম হয়ে উঠেছে সাজেক। এদিকে বছরের এই সময়টা, অর্থাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষভাগ সাজেক ভ্রমণের জন্য এক কথায় আদর্শ। কেন সেই উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি আপনার সাজেকে ঘুরে বেড়ানো আরও আনন্দময় এবং ঝামেলামুক্ত করতে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এই লেখায়।
এটা এখন মোটামুটি সবারই জানা যে সাজেক রাঙামাটিতে পড়লেও যাওয়া সহজ খাগড়াছড়ি দিয়ে। আপনি কখনো সাজেক যাননি, তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন, কেন সাজেক যাবেন? লেখাটি পড়তে পড়তে আশা করি এর উত্তর পেয়ে যাবেন।
ধরলাম আপনি ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির দিকে যাওয়া রাতের বাসে চড়েছেন। ভোরের আলো ফুটেছে কেবল, এমন সময় দেখলেন গাড়িটা বামের একটা পথে ঢুকে পড়েছে। খাড়া পাহাড়ি, আঁকাবাঁকা পথ ধরে যখন বাসটা চলবে, সামনে অনেক দূরে হয়তো ম্যাচ বাক্সের মতো অন্য কোনো একটি ট্রাক কিংবা বাস দেখলেন। আর ভাবলেন, মনে হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমানায় পৌঁছে গেছেন। ব্যাপার মোটেই তা নয়, আপনি আসলে এখন আছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-মিরসরাই রেঞ্জে। বলা চলে সাজেক ভ্রমণের মজা শুরু হয়ে গেল আপনার।

তারপর থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত মোটামুটি পুরো পথটি গিয়েছে পাহাড়কে পাশে রেখে। সবুজ পাহাড় আপনাকে মুগ্ধ করবে, একই সঙ্গে আবার কোথাও কোথাও একপাশের খাদ দেখে গা কাঁটা দিতে পারে। খাগড়াছড়িতে প্রবেশের আগে আলুটিলার পাশে যে খাড়া ঢালটা পাবেন, সেটা পেরোনোর সময় রোমাঞ্চিত হবেন। খাগড়াছড়ি তো চলে এলেন, এখন সাজেক যাবেন কীভাবে?
বড় দল হলে খাগড়াছড়ি শহর থেকে চান্দের গাড়ি বা পিকআপ জিপ ভাড়া নেবেন সাজেক পর্যন্ত। আবার শুধু পরিবার নিয়ে গেলে কিংবা তিন-চারজনের ছোট দল হলে ভাড়া করবেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মাহিন্দ্রা। এখানে জানিয়ে রাখা ভালো, খাগড়াছড়ি থেকে যখনই রওনা দেন না কেন, বাঘাইহাট থেকে সব গাড়ি ছাড়বে একই সময়ে। সকালে এবং দুপুরে দুই টাইমে সেখান থেকে ছাড়ে গাড়ি। পর্যটক বহনকারী গাড়িগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সঙ্গে থাকে সেনাবাহিনীর জিপ।

চান্দের গাড়িতে এক রাত থাকাসহ ভাড়া পড়বে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। সঙ্গে দ্বিতীয় দিন খাগড়াছড়ির জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা গুহার মতো জায়গাগুলোও ঘুরে দেখাবে। এদিকে পিকআপ জিপে ভাড়া পড়বে ৯ হাজার টাকা। সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মাহিন্দ্রায় এই ভাড়া ৫ হাজারের আশপাশে।
খাগড়াছড়ি থেকে বাঘাইহাট পর্যন্ত পথটা নয়ন জুড়াবে আপনার। দীঘিনালা পর্যন্ত সড়কে বাঁক বেশি। দীঘিনালার কাছে মাইনি নদী পেরোনোর সময় কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে নদীটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। বাঘাইহাট থেকে চান্দের গাড়িগুলো লাইন করে দাঁড়ায়। এ সময় চাইলে বাঘাইহাট বাজারে নেমে পাহাড়ি কলা কিংবা মৌসুমি কোনো ফল কিনতে পারেন। রাসায়নিকমুক্ত তাজা ফল পাবেন নিঃসন্দেহে। তবে পর্যটকের চাহিদার কারণে দামটা এখন আগের তুলনায় বেড়েছে।

বাঘাইহাটের পর থেকে পাবেন পাহাড়ি পথের আসল মজা। এই রাস্তা উঠেছে তো আবার নেমেছে। তারপর আবার উঠেছে। তবে এই পথে খুব বেশি বাঁক নেই। পাহাড়ি পথে একটার পর একটা চান্দের গাড়ি ছোটার দৃশ্যও সুন্দর। এই পথে রাস্তার ওঠানামার কারণে আপনি পাবেন রোলার কোস্টারে চড়ার অনুভূতি। মাঝে মাঝে রাস্তার ধারে পাহাড়িদের একটা-দুটো ঘর পাবেন, দেখবেন মুগ্ধ চোখে। চলার পথে অবশ্যই দৃষ্টি সজাগ রাখবেন, না হলে অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন। বিশেষ করে কাসালং ও মাইনি নদী যেখানটায় মিলেছে সেখানটা এক কথায় অসাধারণ। সেতুর ওপর থেকে নিচে বাঁ পাশে দুই নদীর মিলনস্থলের সৌন্দর্য দেখে আবার গাড়িতে উঠতে মন চাইবে না।

সাজেক যাওয়া পথে মাঝে মাঝেই রাস্তার দুপাশে দেখবেন পাহাড়ি শিশুদের। হাসিমুখে হাত নাড়বে তারা। সর্বশেষ প্রায় খাড়া একটা চড়াই পেরোতে হবে। এটা পেরোতে গিয়ে গাড়িগুলো গোঁ গোঁ শব্দে প্রতিবাদ জানাতে থাকবে। তবে ভয়ের কিছু নেই, শেষ পর্যন্ত ঠিকই আপনাকে পাহাড়ের ওপরে পৌঁছে দেবে। সাজেক ভ্রমণের অন্যতম রোমাঞ্চকর মুহূর্ত পাহাড়ের খাড়া এই অংশ পেরোনো।

পাহাড়ের ওপর উঠেই চমকে যাবেন। রাস্তার দুপাশে সারবেঁধে দাঁড়িয়ে আছে একটার পর একটা হোটেল, কটেজ, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁ। দৃশ্যটা দেখে আপনার একটু দার্জিলিং দার্জিলিং ফিল হতে পারে। একই সঙ্গে আবার এটাও মনে হতে পারে, জায়গাটি অনেক বেশি ঘিঞ্জি বানিয়ে ফেলেছে।
মোটেল-রিসোর্টে ভরপুর এই জায়গার নাম রুইলুই পাড়া। সাজেক রাঙামাটির একটি ইউনিয়ন হলেও পর্যটকেরা সাজেক বলতে এই রুইলুই পাড়া এবং আরও ওপরের পাড়া কংলাককেই বোঝেন। রুইলুই মূলত লুসাই ও ত্রিপুরা অধ্যুষিত একটি পাড়া। মজার ঘটনা, ২০১১ সালে যখন সাজেকে এসেছিলাম, তখন একটি হোটেল-রিসোর্টও ছিল না, আর এখন এগুলোতে গিজগিজ করছে।

এখন শিরোনামের দিকে একটু তাকাই, লিখেছি ‘সাজেক ভ্রমণের এখনই সময়’, কেন? বর্ষায় প্রকৃতি অনেক সবুজ থাকে সন্দেহ নেই। বৃষ্টিতে পাহাড় যেভাবে সাজে, তার জুড়ি মেলা ভার। মেঘের আনাগোনা থাকে প্রচুর। তবে বৃষ্টির কারণে পথ পিচ্ছিল থাকায় পাহাড়ি রাস্তায় ঝুঁকি কিছুটা হলেও বাড়ে। এদিকে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে আবহাওয়া ভালো থাকলেও প্রকৃতির সবুজ ভাব কমতে থাকে। কিন্তু এই সময়টায় বৃষ্টির ঝামেলা নেই, এদিকে আবার পাহাড় যথেষ্ট সবুজ। ভোরের দিকে ভালো মেঘও পাবেন। বেশ একটা শীত শীত আমেজও পাবেন। মোটের ওপর তাই চোখ বুঝে সাজেক ভ্রমণের একটি প্ল্যান সাজিয়ে ফেলতে পারেন।
তবে কথা হলো, পুরোনো সাজেক যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা অনেকেই এখনকার রিসোর্ট-কটেজে ঘিঞ্জি সাজেককে পছন্দ করেন না। তাঁদের দোষ দেওয়া যায় না। এখানে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে একের পর এক রিসোর্ট-কটেজ। অনেক ক্ষেত্রেই একটার থেকে প্রকৃতির রূপ উপভোগ নষ্ট করে দিয়েছে আরেকটি। তারপর আবার আমরা পর্যটক এবং ব্যবসায়ীরা মিলে অনেকটা আবর্জনাময় করে রেখেছি জায়গাটি।

তবে আমার অভিজ্ঞতা বলে, এখনকার সাজেকেও চাইলে আনন্দময় কয়েকটি দিন কাটাতে পারবেন, সেই সঙ্গে ইট-পাথরের নগরে যাওয়ার সময় সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারবেন সারা জীবন মনে রাখার মতো কিছু স্মৃতি। এমনিতে সাজেকের রুইলুই পাড়ায় ঘুরে বেড়ানোর সময় রাস্তার দুপাশ থেকেই পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
রুইলুই পাড়ায় একটা মডেল লুসাই পাড়া আছে। দেখে বেশ মজা পাবেন, টিকিট জনপ্রতি ৩০ টাকা। আমরা অনেকটা সময় ওখানে কাটিয়েছিলাম। গাছের ওপর বাড়ি বা গাছবাড়িটা দেখে মজা পাবেন। লুসাইদের রাজার বাড়ি, সাধারণ বাড়িঘর, তৈজসপত্র সবকিছুই দেখবেন। রাজার বাড়ি মানে বাড়ির মডেলে আবার আছে কয়েকটা পেইন্টিংও। একটা দোলনাও পাবেন লুসাই শিশুদের জন্য বানানো দোলনার স্টাইলে। এ ছাড়াও লুসাইদের জীবনযাত্রার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানান কিছুই পাবেন। হেলিপ্যাড থেকে সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন। সাজেকে পৌঁছার পরদিন ভোরে ঘুরে আসতে পারেন কংলাক পাড়া থেকে। কংলাক পাড়া এদিকের সবচেয়ে উঁচু জায়গা। ওখান থেকে আশপাশের পাহাড় ও রুইলুই পাড়ার রাস্তা এবং ঘরবাড়িগুলো দেখতেও বেশ লাগে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কংলাকেও পরিকল্পনাহীনভাবে একের পর এক কটেজ-হোটেল গজিয়ে উঠতে শুরু করেছে।

এখন সাজেকে একটু নিরিবিলি উপভোগের সুযোগ কীভাবে মিলবে, সে বিষয়ে দু-চারটি কথা বলছি। সাজেকের পুবে ভারতের মিজোরাম, পশ্চিমে বাংলাদেশের দীঘিনালা। পুবমুখী ও পশ্চিমমুখী উভয় কটেজ থেকেই সামনে যত দূর চোখ যায় সবুজ পাহাড়ের দেখা মিলবে। ভালো ব্যালকনি বা বারান্দা আছে এমন একটি কটেজ বেছে নিন। আমার ব্যক্তিগতভাবে পুবমুখী দৃশ্য পছন্দ। কারণ ওদিকে বাংলাদেশের পাহাড় শেষ হতেই শুরু হয়ে গেছে ভারতের সেভেন সিস্টারের এক রাজ্য মিজোরামের পাহাড়। ব্যালকনিতে বসেই বড় একটা সময় পার করে দিতে পারবেন। মিজোরামের ওদিকে কামরা থাকলে দেখতে পাবেন সূর্যোদয়, পশ্চিমে মানে দীঘিনালার দিকে কটেজ নিলে সূর্যাস্তের ভিউ ভালো পাবেন।
মেঘ ভালো দেখতে চাইলে একেবারে ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হবে। বারান্দায় দাঁড়াতেই দেখবেন সাদা একটা মেঘের পর্দা ঢেকে রেখেছে গোটা পাহাড়রাজ্য। সূর্য ওপর দিকে ওটার সঙ্গে সঙ্গে মেঘের চাদর ছিঁড়ে সবুজ পাহাড় বেরোতে থাকবে। এ ছাড়া ভিড়বাট্টা এড়িয়ে প্রকৃতি উপভোগ করতে চাইলে পাহাড়িদের চলাচলের কোনো পথ ধরে চলে যেতে পারেন নিচের দিকে। পাহাড়িদের জীবন, সবুজ গাছপালা, পাখির কলকাকলি—সবকিছুই দেখার ও শোনার সুযোগ মিলবে চোখ-কান খোলা রাখলে। পাহাড়ের ঢালে কোনো ঘেসো জমিতে বসে মিজোরাম কিংবা বাংলাদেশের পাহাড় দেখতে দেখতেও আনন্দময় সময় পার করতে পারেন।

তবে সাজেকের ভিড় এড়াতে চাইলে অবশ্য আপনার টানা ছুটির দিন এড়িয়ে যেতে হবে। তেমনি শুক্র ও শনিবার না গেলেই মঙ্গল। কারণ ওই দিনগুলোতে পর্যটকের চাপ থাকায় রিসোর্ট-কটেজের ভাড়াও থাকে বেশি। তেমনি সাজেকের রাস্তায় শান্তিমতো হাঁটাও মুশকিল।
আর আগে থেকে হোটেল-কটেজ ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে ছুটির দিন হলে ওটাই আপনার প্রথম কর্তব্য। ঈদসহ বড় ছুটিতে অনেকেই রিসোর্ট ভাড়া না করে গিয়ে বড় বিপদে পড়েছেন।

রিসোর্ট বা কটেজ বাছাইয়ের জন্য ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন। তেমনি কোন রেস্তোরাঁয় খাবেন সেটা বাছাইয়েও ইউটিউব আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। কিছু ভিডিও দেখলে বাছবিচার করার কাজটা সহজ হবে। তেমনি বেশির ভাগ রিসোর্ট-কটেজের ফেসবুক পেজ আছে। ওখানে ঢুঁ মারতে পারেন। এদিকে ছুটির দিন ছাড়া গেলে আপনি দরাদরি করে একটু কম ভাড়ায় কটেজ পেয়ে যাবেন। সাজেকের বেশির ভাগ কটেজের রুম ভাড়া ১৫০০ থেকে ৫ হাজারের মধ্যে। রেস্তোরাঁয় গোটা দিনের প্যাকেজ নিলে খাওয়ার খরচটা কম পড়বে।
কাজেই পাঠক, সাজেকে আনন্দময় একটি ভ্রমণে আপনাকে স্বাগত। ওহ্, একটা কথা, আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে পরিবেশ সুন্দর রাখুন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনকে সম্মান করুন।

বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় আবারও পাহাড় ও প্রকৃতিপ্রেমীতে সরগরম হয়ে উঠেছে সাজেক। এদিকে বছরের এই সময়টা, অর্থাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষভাগ সাজেক ভ্রমণের জন্য এক কথায় আদর্শ। কেন সেই উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি আপনার সাজেকে ঘুরে বেড়ানো আরও আনন্দময় এবং ঝামেলামুক্ত করতে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এই লেখায়।
এটা এখন মোটামুটি সবারই জানা যে সাজেক রাঙামাটিতে পড়লেও যাওয়া সহজ খাগড়াছড়ি দিয়ে। আপনি কখনো সাজেক যাননি, তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন, কেন সাজেক যাবেন? লেখাটি পড়তে পড়তে আশা করি এর উত্তর পেয়ে যাবেন।
ধরলাম আপনি ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির দিকে যাওয়া রাতের বাসে চড়েছেন। ভোরের আলো ফুটেছে কেবল, এমন সময় দেখলেন গাড়িটা বামের একটা পথে ঢুকে পড়েছে। খাড়া পাহাড়ি, আঁকাবাঁকা পথ ধরে যখন বাসটা চলবে, সামনে অনেক দূরে হয়তো ম্যাচ বাক্সের মতো অন্য কোনো একটি ট্রাক কিংবা বাস দেখলেন। আর ভাবলেন, মনে হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমানায় পৌঁছে গেছেন। ব্যাপার মোটেই তা নয়, আপনি আসলে এখন আছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-মিরসরাই রেঞ্জে। বলা চলে সাজেক ভ্রমণের মজা শুরু হয়ে গেল আপনার।

তারপর থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত মোটামুটি পুরো পথটি গিয়েছে পাহাড়কে পাশে রেখে। সবুজ পাহাড় আপনাকে মুগ্ধ করবে, একই সঙ্গে আবার কোথাও কোথাও একপাশের খাদ দেখে গা কাঁটা দিতে পারে। খাগড়াছড়িতে প্রবেশের আগে আলুটিলার পাশে যে খাড়া ঢালটা পাবেন, সেটা পেরোনোর সময় রোমাঞ্চিত হবেন। খাগড়াছড়ি তো চলে এলেন, এখন সাজেক যাবেন কীভাবে?
বড় দল হলে খাগড়াছড়ি শহর থেকে চান্দের গাড়ি বা পিকআপ জিপ ভাড়া নেবেন সাজেক পর্যন্ত। আবার শুধু পরিবার নিয়ে গেলে কিংবা তিন-চারজনের ছোট দল হলে ভাড়া করবেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মাহিন্দ্রা। এখানে জানিয়ে রাখা ভালো, খাগড়াছড়ি থেকে যখনই রওনা দেন না কেন, বাঘাইহাট থেকে সব গাড়ি ছাড়বে একই সময়ে। সকালে এবং দুপুরে দুই টাইমে সেখান থেকে ছাড়ে গাড়ি। পর্যটক বহনকারী গাড়িগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সঙ্গে থাকে সেনাবাহিনীর জিপ।

চান্দের গাড়িতে এক রাত থাকাসহ ভাড়া পড়বে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। সঙ্গে দ্বিতীয় দিন খাগড়াছড়ির জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা গুহার মতো জায়গাগুলোও ঘুরে দেখাবে। এদিকে পিকআপ জিপে ভাড়া পড়বে ৯ হাজার টাকা। সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মাহিন্দ্রায় এই ভাড়া ৫ হাজারের আশপাশে।
খাগড়াছড়ি থেকে বাঘাইহাট পর্যন্ত পথটা নয়ন জুড়াবে আপনার। দীঘিনালা পর্যন্ত সড়কে বাঁক বেশি। দীঘিনালার কাছে মাইনি নদী পেরোনোর সময় কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে নদীটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। বাঘাইহাট থেকে চান্দের গাড়িগুলো লাইন করে দাঁড়ায়। এ সময় চাইলে বাঘাইহাট বাজারে নেমে পাহাড়ি কলা কিংবা মৌসুমি কোনো ফল কিনতে পারেন। রাসায়নিকমুক্ত তাজা ফল পাবেন নিঃসন্দেহে। তবে পর্যটকের চাহিদার কারণে দামটা এখন আগের তুলনায় বেড়েছে।

বাঘাইহাটের পর থেকে পাবেন পাহাড়ি পথের আসল মজা। এই রাস্তা উঠেছে তো আবার নেমেছে। তারপর আবার উঠেছে। তবে এই পথে খুব বেশি বাঁক নেই। পাহাড়ি পথে একটার পর একটা চান্দের গাড়ি ছোটার দৃশ্যও সুন্দর। এই পথে রাস্তার ওঠানামার কারণে আপনি পাবেন রোলার কোস্টারে চড়ার অনুভূতি। মাঝে মাঝে রাস্তার ধারে পাহাড়িদের একটা-দুটো ঘর পাবেন, দেখবেন মুগ্ধ চোখে। চলার পথে অবশ্যই দৃষ্টি সজাগ রাখবেন, না হলে অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন। বিশেষ করে কাসালং ও মাইনি নদী যেখানটায় মিলেছে সেখানটা এক কথায় অসাধারণ। সেতুর ওপর থেকে নিচে বাঁ পাশে দুই নদীর মিলনস্থলের সৌন্দর্য দেখে আবার গাড়িতে উঠতে মন চাইবে না।

সাজেক যাওয়া পথে মাঝে মাঝেই রাস্তার দুপাশে দেখবেন পাহাড়ি শিশুদের। হাসিমুখে হাত নাড়বে তারা। সর্বশেষ প্রায় খাড়া একটা চড়াই পেরোতে হবে। এটা পেরোতে গিয়ে গাড়িগুলো গোঁ গোঁ শব্দে প্রতিবাদ জানাতে থাকবে। তবে ভয়ের কিছু নেই, শেষ পর্যন্ত ঠিকই আপনাকে পাহাড়ের ওপরে পৌঁছে দেবে। সাজেক ভ্রমণের অন্যতম রোমাঞ্চকর মুহূর্ত পাহাড়ের খাড়া এই অংশ পেরোনো।

পাহাড়ের ওপর উঠেই চমকে যাবেন। রাস্তার দুপাশে সারবেঁধে দাঁড়িয়ে আছে একটার পর একটা হোটেল, কটেজ, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁ। দৃশ্যটা দেখে আপনার একটু দার্জিলিং দার্জিলিং ফিল হতে পারে। একই সঙ্গে আবার এটাও মনে হতে পারে, জায়গাটি অনেক বেশি ঘিঞ্জি বানিয়ে ফেলেছে।
মোটেল-রিসোর্টে ভরপুর এই জায়গার নাম রুইলুই পাড়া। সাজেক রাঙামাটির একটি ইউনিয়ন হলেও পর্যটকেরা সাজেক বলতে এই রুইলুই পাড়া এবং আরও ওপরের পাড়া কংলাককেই বোঝেন। রুইলুই মূলত লুসাই ও ত্রিপুরা অধ্যুষিত একটি পাড়া। মজার ঘটনা, ২০১১ সালে যখন সাজেকে এসেছিলাম, তখন একটি হোটেল-রিসোর্টও ছিল না, আর এখন এগুলোতে গিজগিজ করছে।

এখন শিরোনামের দিকে একটু তাকাই, লিখেছি ‘সাজেক ভ্রমণের এখনই সময়’, কেন? বর্ষায় প্রকৃতি অনেক সবুজ থাকে সন্দেহ নেই। বৃষ্টিতে পাহাড় যেভাবে সাজে, তার জুড়ি মেলা ভার। মেঘের আনাগোনা থাকে প্রচুর। তবে বৃষ্টির কারণে পথ পিচ্ছিল থাকায় পাহাড়ি রাস্তায় ঝুঁকি কিছুটা হলেও বাড়ে। এদিকে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে আবহাওয়া ভালো থাকলেও প্রকৃতির সবুজ ভাব কমতে থাকে। কিন্তু এই সময়টায় বৃষ্টির ঝামেলা নেই, এদিকে আবার পাহাড় যথেষ্ট সবুজ। ভোরের দিকে ভালো মেঘও পাবেন। বেশ একটা শীত শীত আমেজও পাবেন। মোটের ওপর তাই চোখ বুঝে সাজেক ভ্রমণের একটি প্ল্যান সাজিয়ে ফেলতে পারেন।
তবে কথা হলো, পুরোনো সাজেক যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা অনেকেই এখনকার রিসোর্ট-কটেজে ঘিঞ্জি সাজেককে পছন্দ করেন না। তাঁদের দোষ দেওয়া যায় না। এখানে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে একের পর এক রিসোর্ট-কটেজ। অনেক ক্ষেত্রেই একটার থেকে প্রকৃতির রূপ উপভোগ নষ্ট করে দিয়েছে আরেকটি। তারপর আবার আমরা পর্যটক এবং ব্যবসায়ীরা মিলে অনেকটা আবর্জনাময় করে রেখেছি জায়গাটি।

তবে আমার অভিজ্ঞতা বলে, এখনকার সাজেকেও চাইলে আনন্দময় কয়েকটি দিন কাটাতে পারবেন, সেই সঙ্গে ইট-পাথরের নগরে যাওয়ার সময় সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারবেন সারা জীবন মনে রাখার মতো কিছু স্মৃতি। এমনিতে সাজেকের রুইলুই পাড়ায় ঘুরে বেড়ানোর সময় রাস্তার দুপাশ থেকেই পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
রুইলুই পাড়ায় একটা মডেল লুসাই পাড়া আছে। দেখে বেশ মজা পাবেন, টিকিট জনপ্রতি ৩০ টাকা। আমরা অনেকটা সময় ওখানে কাটিয়েছিলাম। গাছের ওপর বাড়ি বা গাছবাড়িটা দেখে মজা পাবেন। লুসাইদের রাজার বাড়ি, সাধারণ বাড়িঘর, তৈজসপত্র সবকিছুই দেখবেন। রাজার বাড়ি মানে বাড়ির মডেলে আবার আছে কয়েকটা পেইন্টিংও। একটা দোলনাও পাবেন লুসাই শিশুদের জন্য বানানো দোলনার স্টাইলে। এ ছাড়াও লুসাইদের জীবনযাত্রার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানান কিছুই পাবেন। হেলিপ্যাড থেকে সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন। সাজেকে পৌঁছার পরদিন ভোরে ঘুরে আসতে পারেন কংলাক পাড়া থেকে। কংলাক পাড়া এদিকের সবচেয়ে উঁচু জায়গা। ওখান থেকে আশপাশের পাহাড় ও রুইলুই পাড়ার রাস্তা এবং ঘরবাড়িগুলো দেখতেও বেশ লাগে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কংলাকেও পরিকল্পনাহীনভাবে একের পর এক কটেজ-হোটেল গজিয়ে উঠতে শুরু করেছে।

এখন সাজেকে একটু নিরিবিলি উপভোগের সুযোগ কীভাবে মিলবে, সে বিষয়ে দু-চারটি কথা বলছি। সাজেকের পুবে ভারতের মিজোরাম, পশ্চিমে বাংলাদেশের দীঘিনালা। পুবমুখী ও পশ্চিমমুখী উভয় কটেজ থেকেই সামনে যত দূর চোখ যায় সবুজ পাহাড়ের দেখা মিলবে। ভালো ব্যালকনি বা বারান্দা আছে এমন একটি কটেজ বেছে নিন। আমার ব্যক্তিগতভাবে পুবমুখী দৃশ্য পছন্দ। কারণ ওদিকে বাংলাদেশের পাহাড় শেষ হতেই শুরু হয়ে গেছে ভারতের সেভেন সিস্টারের এক রাজ্য মিজোরামের পাহাড়। ব্যালকনিতে বসেই বড় একটা সময় পার করে দিতে পারবেন। মিজোরামের ওদিকে কামরা থাকলে দেখতে পাবেন সূর্যোদয়, পশ্চিমে মানে দীঘিনালার দিকে কটেজ নিলে সূর্যাস্তের ভিউ ভালো পাবেন।
মেঘ ভালো দেখতে চাইলে একেবারে ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হবে। বারান্দায় দাঁড়াতেই দেখবেন সাদা একটা মেঘের পর্দা ঢেকে রেখেছে গোটা পাহাড়রাজ্য। সূর্য ওপর দিকে ওটার সঙ্গে সঙ্গে মেঘের চাদর ছিঁড়ে সবুজ পাহাড় বেরোতে থাকবে। এ ছাড়া ভিড়বাট্টা এড়িয়ে প্রকৃতি উপভোগ করতে চাইলে পাহাড়িদের চলাচলের কোনো পথ ধরে চলে যেতে পারেন নিচের দিকে। পাহাড়িদের জীবন, সবুজ গাছপালা, পাখির কলকাকলি—সবকিছুই দেখার ও শোনার সুযোগ মিলবে চোখ-কান খোলা রাখলে। পাহাড়ের ঢালে কোনো ঘেসো জমিতে বসে মিজোরাম কিংবা বাংলাদেশের পাহাড় দেখতে দেখতেও আনন্দময় সময় পার করতে পারেন।

তবে সাজেকের ভিড় এড়াতে চাইলে অবশ্য আপনার টানা ছুটির দিন এড়িয়ে যেতে হবে। তেমনি শুক্র ও শনিবার না গেলেই মঙ্গল। কারণ ওই দিনগুলোতে পর্যটকের চাপ থাকায় রিসোর্ট-কটেজের ভাড়াও থাকে বেশি। তেমনি সাজেকের রাস্তায় শান্তিমতো হাঁটাও মুশকিল।
আর আগে থেকে হোটেল-কটেজ ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে ছুটির দিন হলে ওটাই আপনার প্রথম কর্তব্য। ঈদসহ বড় ছুটিতে অনেকেই রিসোর্ট ভাড়া না করে গিয়ে বড় বিপদে পড়েছেন।

রিসোর্ট বা কটেজ বাছাইয়ের জন্য ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন। তেমনি কোন রেস্তোরাঁয় খাবেন সেটা বাছাইয়েও ইউটিউব আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। কিছু ভিডিও দেখলে বাছবিচার করার কাজটা সহজ হবে। তেমনি বেশির ভাগ রিসোর্ট-কটেজের ফেসবুক পেজ আছে। ওখানে ঢুঁ মারতে পারেন। এদিকে ছুটির দিন ছাড়া গেলে আপনি দরাদরি করে একটু কম ভাড়ায় কটেজ পেয়ে যাবেন। সাজেকের বেশির ভাগ কটেজের রুম ভাড়া ১৫০০ থেকে ৫ হাজারের মধ্যে। রেস্তোরাঁয় গোটা দিনের প্যাকেজ নিলে খাওয়ার খরচটা কম পড়বে।
কাজেই পাঠক, সাজেকে আনন্দময় একটি ভ্রমণে আপনাকে স্বাগত। ওহ্, একটা কথা, আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে পরিবেশ সুন্দর রাখুন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনকে সম্মান করুন।

সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু। পৃথিবীর খুব অল্প জায়গায় এই দেলি বাল কিংবা ম্যাড হানি নামের মধু উৎপাদন হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চল আর নেপালের...
৭ ঘণ্টা আগে
শীত জেঁকে বসেছে। ভারী গরম কাপড় গায়ে না চড়িয়ে বাইরে বের হওয়া কঠিন। তবে চুপি চুপি বলে রাখি, অনলাইন শপিংয়ে যাঁরা পটু, তাঁরা কিন্তু প্রতিবছর নিত্য়নতুন গায়ে চড়ানোর চাদর কিনে ফেলেন। হ্যাঁ, মায়ের বকুনি খাওয়ার ভয়ে হয়তো আলমারিতে বন্দী করে রাখেন। কিন্তু প্রতিবছর এত সুন্দর সুন্দর থিমে চাদর বাজারে আসে...
৮ ঘণ্টা আগে
এই বছর ব্যক্তিগত লক্ষ্যের পাশাপাশি আমাদের এই সুন্দর গ্রহটিকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বও কি আমাদের নয়? জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশদূষণের এই সময়ে আমাদের ছোট ছোট কিছু অভ্যাসই পারে বড় পরিবর্তন আনতে। ২০২৬ সালে একটি সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে আপনি কিছু অভ্যাস নিজের জীবনে যোগ করতে পারেন।...
১০ ঘণ্টা আগে
রূপবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ত্বকের শুষ্ক ও নির্জীব ভাব দূর করতে বাইরে থেকে যেমন মশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন, তেমনি নিয়মিত কয়েকটি খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে শীতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ। পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপও পড়বে দেরিতে।...
১২ ঘণ্টা আগেরজত কান্তি রায়, ঢাকা

শীতকাল এলে সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে গলির মোড়, প্রায় সবখানে মধুর বিজ্ঞাপন চলতে থাকে। কত রকমের যে মধু হতে পারে, তা না দেখলে বোঝা কঠিন। প্রায় সব মধু বিক্রেতার মধুই শতভাগ ‘পিওর’। কারও কারও মধু তো সুন্দরবনের একমাত্র খাঁটি মধু! কারও মধু আবার সরিষা ফুল থেকে তৈরি! যা হোক, শীত মানে বঙ্গদেশে মধুর বাজারে চলে ভীষণ উত্তেজনা। আর দাম? সে তো আপনারা নিজেরাই জানেন।
আমাদের সবার কাছে প্রায় একই রকম তথ্য আছে, মধু হলো উত্তম মিষ্টিজাতীয় খাবার। তার ওপর আর মিষ্টি নেই! সেসব হয়তো ঠিক আছে। কিন্তু তথ্য যদি বলে, মধুতেও বিষ থাকে! প্রথমে অবিশ্বাস্য, তারপর খতিয়ে দেখার চেষ্টা করবেন অনেকেই। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। মধুতেও থাকে বিষ। কিংবা মধুও হয় বিষাক্ত। কিন্তু সেটাও খাওয়া হয়। শত শত বছর ধরেই খাওয়া হয়।

একটা ছোটগল্প শোনাই। সে বহুকাল আগে, খ্রিষ্টপূর্ব ৪০১ সালের ঘটনা। গ্রিক সেনারা তুরস্কের ট্রাবজোন অঞ্চলে অভিযান চালাল; কিন্তু সেটা ঘটনা নয়। পৃথিবীর ইতিহাসে সে রকম অভিযানের বহু গল্প আছে। এই অভিযান বিখ্যাত হয়ে আছে, সে অঞ্চলের এক বিশেষ মধুর কারণে। গ্রিক সেনারা ট্রাবজোন অঞ্চলে পাওয়া বিশেষ এক মধু খেয়ে বমি করতে শুরু করল। সেনাদের কেউ কেউ এতটাই মাতাল হয়ে পড়ল যে, তাদের মস্তিষ্কে ‘বিভ্রান্তি’ দেখা দিল। কেউ কেউ মৃত মানুষের মতো পড়ে রইল এবং তারপর যা হওয়ার তা-ই হলো, গ্রিকরা পরাজিত হলো। এ ঘটনার কথা লিখেছিলেন ঐতিহাসিক জেনোফন। সেটাই ছিল এ মধুর বিষক্রিয়ার প্রথম লিখিত বিবরণ।
সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু।
সীমিত উৎপাদন
সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু। পৃথিবীর খুব অল্প জায়গায় এই দেলি বাল কিংবা ম্যাড হানি নামের মধু উৎপাদন হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চল আর নেপালের পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের কিছু জায়গায় এই মধু উৎপন্ন হয়। সম্প্রতি সিএনএনের সাংবাদিক মৌরিন ও’হেয়ার এ বিষয়ে একটি লেখা লিখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পৃথিবীর দুটি জায়গায় এই ‘বিরল মধু’ পাওয়া যায়। আবার কিছু সূত্র বলে, এই দুটি জায়গার সঙ্গে জর্জিয়া ও আজারবাইজানের ককেশীয় দেশগুলোতেও সীমিত পরিমাণে এই মধু উৎপন্ন হয়। মূলত যেসব পাহাড়ি জায়গায় রডোডেনড্রন ফুলের প্রাচুর্য আছে, সেসব জায়গায় ম্যাড হানি উৎপন্ন হয়। স্থানীয় পার্বত্য মৌমাছিরা রডোডেনড্রন ফুলের রস সংগ্রহ করে এই বিশেষ মধু তৈরি করে।
বিষাক্ত কেন
রডোডেনড্রন ফুলের পরাগ রেণু ও নেকটারে থাকে গ্রায়ানটক্সিন নামক এক ধরনের নিউরোটক্সিন। এটি মধুতে সঞ্চিত হয়। এই টক্সিনই ম্যাড হানির রহস্যময় ও বিপজ্জনক সব বৈশিষ্ট্য তৈরি করে।

এ মধুর স্বাদ কেমন
চেখে যেহেতু দেখা হয়নি, তাই নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে মধু যেহেতু, মিষ্টতা কিছু থাকবেই। তবে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ম্যাড হানির স্বাদ তিতা বা টক অর্থাৎ, সাধারণ মধুর চেয়ে ভিন্ন। এর রং গাঢ় বাদামি বা লালচে রং।
এক দারুণ ঐতিহ্য
বিপদ যতই থাক, যারা এ মধু উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত তারা এটি চেখে দেখবে না, তা তো হয় না। ফলে নেপাল ও তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে এ মধুকে কেন্দ্র করে শত শত বছর ধরে তৈরি হয়েছে ঐতিহ্য।
নেপালের গুরাং সম্প্রদায় ও তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের স্থানীয় লোকেরা প্রজন্ম ধরে অল্প পরিমাণে ম্যাড হানি ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। তারা এটিকে পেটের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এমনকি যৌনশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্যবহার করে। তবে এর ব্যবহার সব সময়ই একটি জটিল রীতিনীতি ও পরিমিতিবোধের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়।
এটাও বলে রাখি, কিছু মানুষ এটিকে ‘হানি হাই’ বা নেশার জন্যও ব্যবহার করে।
পরিমাণের বেশি খেলে কী হতে পারে?
বিপদ আছে। যেকোনো খাবারই পরিমাণের বেশি খেলে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু এই ম্যাড হানি স্বল্প মাত্রায় খেলেও হতে পারে হালকা ইউফোরিয়া, স্নায়বিক শিথিলতা বা বমি বমি ভাব। আর উচ্চ মাত্রায় খেলে? সে তালিকা বেশ লম্বা।
তবে হ্যাঁ, প্রাকৃতিক এই উত্তেজকের জন্য আছে প্রাকৃতিক চিকিৎসা। জানা যাচ্ছে, সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লক্ষণগুলো নিজে থেকে কমে যায়। তবে গুরুতর ক্ষেত্রে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
বলে রাখা ভালো, এটি বেশির ভাগ দেশে অবৈধ নয়। তবে বিক্রি বা বিপণনে নিয়ন্ত্রণ আছে।
আধুনিক বাণিজ্য ও অপব্যবহার
বিশেষ কিছু অঞ্চলের মানুষদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পরিচালিত জ্ঞানের মাধ্যমে যে মধু একসময় ছিল বিশেষ, সে মধুই এখন ‘অনলাইন পণ্যে’ পরিণত হয়েছে। ফলে চাহিদা বেড়েছে স্বাভাবিকভাবে। নেপাল ও তুরস্ক থেকে এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘এক্সোটিক হানি’ বা ‘সাইকোঅ্যাকটিভ হানি’ হিসেবে বিক্রি হয়। পর্যটকদের মধ্যে এটি খাওয়া একটি ‘অভিজ্ঞতা’ হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, বিশেষ করে নেপালের অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে। আর এ চাহিদা বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে ভেজাল ম্যাড হানির পরিমাণ।
বৈচিত্র্যপিয়াসীরা ভেজাল না খেয়ে আসলের সন্ধান করতে পারেন।
সূত্র:

শীতকাল এলে সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে গলির মোড়, প্রায় সবখানে মধুর বিজ্ঞাপন চলতে থাকে। কত রকমের যে মধু হতে পারে, তা না দেখলে বোঝা কঠিন। প্রায় সব মধু বিক্রেতার মধুই শতভাগ ‘পিওর’। কারও কারও মধু তো সুন্দরবনের একমাত্র খাঁটি মধু! কারও মধু আবার সরিষা ফুল থেকে তৈরি! যা হোক, শীত মানে বঙ্গদেশে মধুর বাজারে চলে ভীষণ উত্তেজনা। আর দাম? সে তো আপনারা নিজেরাই জানেন।
আমাদের সবার কাছে প্রায় একই রকম তথ্য আছে, মধু হলো উত্তম মিষ্টিজাতীয় খাবার। তার ওপর আর মিষ্টি নেই! সেসব হয়তো ঠিক আছে। কিন্তু তথ্য যদি বলে, মধুতেও বিষ থাকে! প্রথমে অবিশ্বাস্য, তারপর খতিয়ে দেখার চেষ্টা করবেন অনেকেই। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। মধুতেও থাকে বিষ। কিংবা মধুও হয় বিষাক্ত। কিন্তু সেটাও খাওয়া হয়। শত শত বছর ধরেই খাওয়া হয়।

একটা ছোটগল্প শোনাই। সে বহুকাল আগে, খ্রিষ্টপূর্ব ৪০১ সালের ঘটনা। গ্রিক সেনারা তুরস্কের ট্রাবজোন অঞ্চলে অভিযান চালাল; কিন্তু সেটা ঘটনা নয়। পৃথিবীর ইতিহাসে সে রকম অভিযানের বহু গল্প আছে। এই অভিযান বিখ্যাত হয়ে আছে, সে অঞ্চলের এক বিশেষ মধুর কারণে। গ্রিক সেনারা ট্রাবজোন অঞ্চলে পাওয়া বিশেষ এক মধু খেয়ে বমি করতে শুরু করল। সেনাদের কেউ কেউ এতটাই মাতাল হয়ে পড়ল যে, তাদের মস্তিষ্কে ‘বিভ্রান্তি’ দেখা দিল। কেউ কেউ মৃত মানুষের মতো পড়ে রইল এবং তারপর যা হওয়ার তা-ই হলো, গ্রিকরা পরাজিত হলো। এ ঘটনার কথা লিখেছিলেন ঐতিহাসিক জেনোফন। সেটাই ছিল এ মধুর বিষক্রিয়ার প্রথম লিখিত বিবরণ।
সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু।
সীমিত উৎপাদন
সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু। পৃথিবীর খুব অল্প জায়গায় এই দেলি বাল কিংবা ম্যাড হানি নামের মধু উৎপাদন হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চল আর নেপালের পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের কিছু জায়গায় এই মধু উৎপন্ন হয়। সম্প্রতি সিএনএনের সাংবাদিক মৌরিন ও’হেয়ার এ বিষয়ে একটি লেখা লিখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পৃথিবীর দুটি জায়গায় এই ‘বিরল মধু’ পাওয়া যায়। আবার কিছু সূত্র বলে, এই দুটি জায়গার সঙ্গে জর্জিয়া ও আজারবাইজানের ককেশীয় দেশগুলোতেও সীমিত পরিমাণে এই মধু উৎপন্ন হয়। মূলত যেসব পাহাড়ি জায়গায় রডোডেনড্রন ফুলের প্রাচুর্য আছে, সেসব জায়গায় ম্যাড হানি উৎপন্ন হয়। স্থানীয় পার্বত্য মৌমাছিরা রডোডেনড্রন ফুলের রস সংগ্রহ করে এই বিশেষ মধু তৈরি করে।
বিষাক্ত কেন
রডোডেনড্রন ফুলের পরাগ রেণু ও নেকটারে থাকে গ্রায়ানটক্সিন নামক এক ধরনের নিউরোটক্সিন। এটি মধুতে সঞ্চিত হয়। এই টক্সিনই ম্যাড হানির রহস্যময় ও বিপজ্জনক সব বৈশিষ্ট্য তৈরি করে।

এ মধুর স্বাদ কেমন
চেখে যেহেতু দেখা হয়নি, তাই নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে মধু যেহেতু, মিষ্টতা কিছু থাকবেই। তবে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ম্যাড হানির স্বাদ তিতা বা টক অর্থাৎ, সাধারণ মধুর চেয়ে ভিন্ন। এর রং গাঢ় বাদামি বা লালচে রং।
এক দারুণ ঐতিহ্য
বিপদ যতই থাক, যারা এ মধু উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত তারা এটি চেখে দেখবে না, তা তো হয় না। ফলে নেপাল ও তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে এ মধুকে কেন্দ্র করে শত শত বছর ধরে তৈরি হয়েছে ঐতিহ্য।
নেপালের গুরাং সম্প্রদায় ও তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের স্থানীয় লোকেরা প্রজন্ম ধরে অল্প পরিমাণে ম্যাড হানি ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। তারা এটিকে পেটের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এমনকি যৌনশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্যবহার করে। তবে এর ব্যবহার সব সময়ই একটি জটিল রীতিনীতি ও পরিমিতিবোধের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়।
এটাও বলে রাখি, কিছু মানুষ এটিকে ‘হানি হাই’ বা নেশার জন্যও ব্যবহার করে।
পরিমাণের বেশি খেলে কী হতে পারে?
বিপদ আছে। যেকোনো খাবারই পরিমাণের বেশি খেলে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু এই ম্যাড হানি স্বল্প মাত্রায় খেলেও হতে পারে হালকা ইউফোরিয়া, স্নায়বিক শিথিলতা বা বমি বমি ভাব। আর উচ্চ মাত্রায় খেলে? সে তালিকা বেশ লম্বা।
তবে হ্যাঁ, প্রাকৃতিক এই উত্তেজকের জন্য আছে প্রাকৃতিক চিকিৎসা। জানা যাচ্ছে, সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লক্ষণগুলো নিজে থেকে কমে যায়। তবে গুরুতর ক্ষেত্রে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
বলে রাখা ভালো, এটি বেশির ভাগ দেশে অবৈধ নয়। তবে বিক্রি বা বিপণনে নিয়ন্ত্রণ আছে।
আধুনিক বাণিজ্য ও অপব্যবহার
বিশেষ কিছু অঞ্চলের মানুষদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পরিচালিত জ্ঞানের মাধ্যমে যে মধু একসময় ছিল বিশেষ, সে মধুই এখন ‘অনলাইন পণ্যে’ পরিণত হয়েছে। ফলে চাহিদা বেড়েছে স্বাভাবিকভাবে। নেপাল ও তুরস্ক থেকে এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘এক্সোটিক হানি’ বা ‘সাইকোঅ্যাকটিভ হানি’ হিসেবে বিক্রি হয়। পর্যটকদের মধ্যে এটি খাওয়া একটি ‘অভিজ্ঞতা’ হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, বিশেষ করে নেপালের অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে। আর এ চাহিদা বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে ভেজাল ম্যাড হানির পরিমাণ।
বৈচিত্র্যপিয়াসীরা ভেজাল না খেয়ে আসলের সন্ধান করতে পারেন।
সূত্র:
বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় আবারও পাহাড় ও প্রকৃতিপ্রেমীতে সরগরম হয়ে উঠেছে সাজেক। এদিকে বছরের এ সময়টা অর্থাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষভাগ সাজেক ভ্রমণের জন্য এক কথায় আদর্শ। কেন সেই উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি আপনার সাজেকে ঘুরে বেড়ানো আরও আনন্দময় এবং ঝামেলামুক্ত করতে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এ লেখায়।
০৯ নভেম্বর ২০২৪
শীত জেঁকে বসেছে। ভারী গরম কাপড় গায়ে না চড়িয়ে বাইরে বের হওয়া কঠিন। তবে চুপি চুপি বলে রাখি, অনলাইন শপিংয়ে যাঁরা পটু, তাঁরা কিন্তু প্রতিবছর নিত্য়নতুন গায়ে চড়ানোর চাদর কিনে ফেলেন। হ্যাঁ, মায়ের বকুনি খাওয়ার ভয়ে হয়তো আলমারিতে বন্দী করে রাখেন। কিন্তু প্রতিবছর এত সুন্দর সুন্দর থিমে চাদর বাজারে আসে...
৮ ঘণ্টা আগে
এই বছর ব্যক্তিগত লক্ষ্যের পাশাপাশি আমাদের এই সুন্দর গ্রহটিকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বও কি আমাদের নয়? জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশদূষণের এই সময়ে আমাদের ছোট ছোট কিছু অভ্যাসই পারে বড় পরিবর্তন আনতে। ২০২৬ সালে একটি সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে আপনি কিছু অভ্যাস নিজের জীবনে যোগ করতে পারেন।...
১০ ঘণ্টা আগে
রূপবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ত্বকের শুষ্ক ও নির্জীব ভাব দূর করতে বাইরে থেকে যেমন মশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন, তেমনি নিয়মিত কয়েকটি খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে শীতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ। পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপও পড়বে দেরিতে।...
১২ ঘণ্টা আগেবিভাবরী রায়

শীত জেঁকে বসেছে। ভারী গরম কাপড় গায়ে না চড়িয়ে বাইরে বের হওয়া কঠিন। তবে চুপি চুপি বলে রাখি, অনলাইন শপিংয়ে যাঁরা পটু, তাঁরা কিন্তু প্রতিবছর নিত্য়নতুন গায়ে চড়ানোর চাদর কিনে ফেলেন। হ্যাঁ, মায়ের বকুনি খাওয়ার ভয়ে হয়তো আলমারিতে বন্দী করে রাখেন। কিন্তু প্রতিবছর এত সুন্দর সুন্দর থিমে চাদর বাজারে আসে, না কিনলেই বরং অপরাধবোধ হয়!
শীতের চাদরের আবেদন সব সময় ছিল। আগে সেগুলো শাড়ি বা সালোয়ার কামিজের সঙ্গে পরতেন মেয়েরা। আর এখন পরছেন জিনস টপসের সঙ্গে। তবে কখন কালার ম্যাচিং এবং কখন কালার কনট্রাস্ট করে পরতে হবে, তা মনে রাখতে হবে। কীভাবে পরবেন, তা নির্ভর করে কোথায় যাচ্ছেন এবং নিজে কতটা ক্যারি করতে পারছেন, তার ওপর। সৌমিক দাস, প্রধান নির্বাহী, রঙ বাংলাদেশ
শীতে স্টাইলিংয়ের জন্য চাদরের তুলনা হয় না। একসময় চাদরের জমিনে ফুটিয়ে তোলা হতো বিভিন্ন নকশা। এখন ক্রেতাদের চাহিদার কথা ভেবে ফ্যাশন ডিজাইনাররাই সেগুলো নকশাদার করে তুলছেন। তৈরি করছেন বিভিন্ন থিমেটিক নকশার চাদরও। নকশাদার ও থিমেটিক এসব চাদর শাড়ি, কুর্তি, টপস, সিঙ্গেল কামিজ, সালোয়ার-কামিজ—সবকিছুর সঙ্গে পরা যায়। কিন্তু কোন পোশাকের সঙ্গে কোন চাদর কীভাবে পরবেন, সেটাও তো জেনে রাখা প্রয়োজন।
শীতে ভ্রমণ, বনভোজন, সকালে রোদ পোহাতে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারগুলো চলতেই থাকে। একেক জায়গায় একেকভাবে চাদর পরা জরুরি। অর্থাৎ সব জায়গায় একইভাবে চাদর পরা যাবে না।
শাড়ির সঙ্গে
শাড়ির সঙ্গে চাদর স্টাইলিং করার খুব বেশি উপায় নেই। হয় গায়ে জড়িয়ে পরা, নয়তো এক কাঁধের ওপর ফেলে রাখা। সেই ফেলে রাখা গুছিয়েও হতে পারে আবার ছেড়ে দিয়েও হতে পারে। যে ক্যারিশমা করতে পারেন, তা হলো একরঙা শাড়ির সঙ্গে ছাপা ও জ্যামিতিক প্যাটার্নের উজ্জ্বল রঙের মিলমিশ রয়েছে এমন চাদর পরুন।

লুজ ডেনিম প্যান্টের সঙ্গে
লুজ ডেনিম প্যান্ট এখন বেশ জনপ্রিয়। ডেনিম প্যান্টের ওপর ক্রপ টি-শার্ট পরলেও কিন্তু গায়ে জড়িয়ে নিতে পারেন চাদর। ডেনিমের ওপর জড়িয়ে নিতে পারেন উলের সুতায় বোনা, তসরের কিংবা সিনথেটিক সুতায় বোনা চাদর, সিল্কের চাদর, অ্যান্ডি চাদর অথবা ডুপিয়ান কাপড়ের চাদর। গলায় স্কার্ফের মতো জড়িয়ে হোক বা পুরো গা ঢেকে, দিব্যি বেরিয়ে পরতে পারেন ডেনিমের সঙ্গে চাদর পরে।
কামিজের সঙ্গে
একটু স্টাইলিশভাবে পরতে প্রথমে চাদর গলায় ঝোলান। চাদরের শেষ দুই মাথা একসঙ্গে গিঁট দিয়ে নিন। বড়সড় যে লুপটি তৈরি হলো, তা গলায় পরুন। গিঁটের অংশটি কাঁধের পেছনে থাকবে। এবার টুইস্ট করে দুই বা তিন স্তরে গলায় পরুন এবং প্রয়োজনমতো ছড়িয়ে নিন। যাতে এলোমেলো না হয়ে যায়। সেটা ঠেকাতে গিঁটের সঙ্গে ব্রোচ পিনআপ করে নিতে পারেন।
আরও যেভাবে পরতে পারেন

এলিগ্যান্ট স্টাইলের জন্য
অভিজাত লুক পেতে বেছে নিতে পারেন ইউনিক বো স্টাইল। এ স্টাইলের জন্য পাতলা চাদর বেছে নিতে পারেন। কাঁধের দুই পাশে ঝোলানো চাদরের এক প্রান্ত বড় ও অন্য প্রান্তটি ছোট রাখুন। এবার বড় প্রান্তটির শেষ মাথা থেকে ওপরের দিকে লুপ তৈরি করুন। এরপর লুপের মাঝ বরাবর ধরে অন্য প্রান্ত দিয়ে পেঁচিয়ে টাইট করে নিন।
আউটিংয়ে ঝলমলে দেখাতে
একটু ঝলমলে আউটলুক পেতে উজ্জ্বল রঙের শাল বেছে নিতে পারেন। ওজনে হালকা ও উজ্জ্বল প্রিন্টের চাদর আর কুল টোনের কামিজ বা একরঙা টি-শার্ট চটজলদি অভিজাত লুক দেবে। উজ্জ্বল রঙের প্রিন্টের চাদর সাদামাটা শার্ট বা টপসকেও অভিজাত লুকে বদলে দেয়।
বোহিমিয়ান স্টাইল
বোহিমিয়ান স্টাইলে শাল বা চাদর পরতে গলায় দুই প্যাঁচে জড়িয়ে বাঁ পাশের প্রান্তের এক কোনা ডান দিকে চাদরের গলার অংশের সঙ্গে পিনআপ করে নিন। অন্য প্রান্তটি থাকবে ছড়ানো প্রান্তের নিচে।

কোথায় পাবেন এসব চাদর
প্রায় সব ফ্যাশন হাউস বিভিন্ন ধরনের চাদর বিক্রি করে। অনেক অনলাইন পেজও এগুলো বিক্রি করে। কোনো কোনো পেজ পছন্দমতো চাদর তৈরিও করে দেয়। প্রতিটি জেলা শহরের সুপারমার্কেটে বা যেকোনো শপিং মলে খুঁজলে পাওয়া যাবে পছন্দের চাদর।
ছবি সৌজন্য: সাতকাহন

শীত জেঁকে বসেছে। ভারী গরম কাপড় গায়ে না চড়িয়ে বাইরে বের হওয়া কঠিন। তবে চুপি চুপি বলে রাখি, অনলাইন শপিংয়ে যাঁরা পটু, তাঁরা কিন্তু প্রতিবছর নিত্য়নতুন গায়ে চড়ানোর চাদর কিনে ফেলেন। হ্যাঁ, মায়ের বকুনি খাওয়ার ভয়ে হয়তো আলমারিতে বন্দী করে রাখেন। কিন্তু প্রতিবছর এত সুন্দর সুন্দর থিমে চাদর বাজারে আসে, না কিনলেই বরং অপরাধবোধ হয়!
শীতের চাদরের আবেদন সব সময় ছিল। আগে সেগুলো শাড়ি বা সালোয়ার কামিজের সঙ্গে পরতেন মেয়েরা। আর এখন পরছেন জিনস টপসের সঙ্গে। তবে কখন কালার ম্যাচিং এবং কখন কালার কনট্রাস্ট করে পরতে হবে, তা মনে রাখতে হবে। কীভাবে পরবেন, তা নির্ভর করে কোথায় যাচ্ছেন এবং নিজে কতটা ক্যারি করতে পারছেন, তার ওপর। সৌমিক দাস, প্রধান নির্বাহী, রঙ বাংলাদেশ
শীতে স্টাইলিংয়ের জন্য চাদরের তুলনা হয় না। একসময় চাদরের জমিনে ফুটিয়ে তোলা হতো বিভিন্ন নকশা। এখন ক্রেতাদের চাহিদার কথা ভেবে ফ্যাশন ডিজাইনাররাই সেগুলো নকশাদার করে তুলছেন। তৈরি করছেন বিভিন্ন থিমেটিক নকশার চাদরও। নকশাদার ও থিমেটিক এসব চাদর শাড়ি, কুর্তি, টপস, সিঙ্গেল কামিজ, সালোয়ার-কামিজ—সবকিছুর সঙ্গে পরা যায়। কিন্তু কোন পোশাকের সঙ্গে কোন চাদর কীভাবে পরবেন, সেটাও তো জেনে রাখা প্রয়োজন।
শীতে ভ্রমণ, বনভোজন, সকালে রোদ পোহাতে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারগুলো চলতেই থাকে। একেক জায়গায় একেকভাবে চাদর পরা জরুরি। অর্থাৎ সব জায়গায় একইভাবে চাদর পরা যাবে না।
শাড়ির সঙ্গে
শাড়ির সঙ্গে চাদর স্টাইলিং করার খুব বেশি উপায় নেই। হয় গায়ে জড়িয়ে পরা, নয়তো এক কাঁধের ওপর ফেলে রাখা। সেই ফেলে রাখা গুছিয়েও হতে পারে আবার ছেড়ে দিয়েও হতে পারে। যে ক্যারিশমা করতে পারেন, তা হলো একরঙা শাড়ির সঙ্গে ছাপা ও জ্যামিতিক প্যাটার্নের উজ্জ্বল রঙের মিলমিশ রয়েছে এমন চাদর পরুন।

লুজ ডেনিম প্যান্টের সঙ্গে
লুজ ডেনিম প্যান্ট এখন বেশ জনপ্রিয়। ডেনিম প্যান্টের ওপর ক্রপ টি-শার্ট পরলেও কিন্তু গায়ে জড়িয়ে নিতে পারেন চাদর। ডেনিমের ওপর জড়িয়ে নিতে পারেন উলের সুতায় বোনা, তসরের কিংবা সিনথেটিক সুতায় বোনা চাদর, সিল্কের চাদর, অ্যান্ডি চাদর অথবা ডুপিয়ান কাপড়ের চাদর। গলায় স্কার্ফের মতো জড়িয়ে হোক বা পুরো গা ঢেকে, দিব্যি বেরিয়ে পরতে পারেন ডেনিমের সঙ্গে চাদর পরে।
কামিজের সঙ্গে
একটু স্টাইলিশভাবে পরতে প্রথমে চাদর গলায় ঝোলান। চাদরের শেষ দুই মাথা একসঙ্গে গিঁট দিয়ে নিন। বড়সড় যে লুপটি তৈরি হলো, তা গলায় পরুন। গিঁটের অংশটি কাঁধের পেছনে থাকবে। এবার টুইস্ট করে দুই বা তিন স্তরে গলায় পরুন এবং প্রয়োজনমতো ছড়িয়ে নিন। যাতে এলোমেলো না হয়ে যায়। সেটা ঠেকাতে গিঁটের সঙ্গে ব্রোচ পিনআপ করে নিতে পারেন।
আরও যেভাবে পরতে পারেন

এলিগ্যান্ট স্টাইলের জন্য
অভিজাত লুক পেতে বেছে নিতে পারেন ইউনিক বো স্টাইল। এ স্টাইলের জন্য পাতলা চাদর বেছে নিতে পারেন। কাঁধের দুই পাশে ঝোলানো চাদরের এক প্রান্ত বড় ও অন্য প্রান্তটি ছোট রাখুন। এবার বড় প্রান্তটির শেষ মাথা থেকে ওপরের দিকে লুপ তৈরি করুন। এরপর লুপের মাঝ বরাবর ধরে অন্য প্রান্ত দিয়ে পেঁচিয়ে টাইট করে নিন।
আউটিংয়ে ঝলমলে দেখাতে
একটু ঝলমলে আউটলুক পেতে উজ্জ্বল রঙের শাল বেছে নিতে পারেন। ওজনে হালকা ও উজ্জ্বল প্রিন্টের চাদর আর কুল টোনের কামিজ বা একরঙা টি-শার্ট চটজলদি অভিজাত লুক দেবে। উজ্জ্বল রঙের প্রিন্টের চাদর সাদামাটা শার্ট বা টপসকেও অভিজাত লুকে বদলে দেয়।
বোহিমিয়ান স্টাইল
বোহিমিয়ান স্টাইলে শাল বা চাদর পরতে গলায় দুই প্যাঁচে জড়িয়ে বাঁ পাশের প্রান্তের এক কোনা ডান দিকে চাদরের গলার অংশের সঙ্গে পিনআপ করে নিন। অন্য প্রান্তটি থাকবে ছড়ানো প্রান্তের নিচে।

কোথায় পাবেন এসব চাদর
প্রায় সব ফ্যাশন হাউস বিভিন্ন ধরনের চাদর বিক্রি করে। অনেক অনলাইন পেজও এগুলো বিক্রি করে। কোনো কোনো পেজ পছন্দমতো চাদর তৈরিও করে দেয়। প্রতিটি জেলা শহরের সুপারমার্কেটে বা যেকোনো শপিং মলে খুঁজলে পাওয়া যাবে পছন্দের চাদর।
ছবি সৌজন্য: সাতকাহন
বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় আবারও পাহাড় ও প্রকৃতিপ্রেমীতে সরগরম হয়ে উঠেছে সাজেক। এদিকে বছরের এ সময়টা অর্থাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষভাগ সাজেক ভ্রমণের জন্য এক কথায় আদর্শ। কেন সেই উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি আপনার সাজেকে ঘুরে বেড়ানো আরও আনন্দময় এবং ঝামেলামুক্ত করতে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এ লেখায়।
০৯ নভেম্বর ২০২৪
সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু। পৃথিবীর খুব অল্প জায়গায় এই দেলি বাল কিংবা ম্যাড হানি নামের মধু উৎপাদন হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চল আর নেপালের...
৭ ঘণ্টা আগে
এই বছর ব্যক্তিগত লক্ষ্যের পাশাপাশি আমাদের এই সুন্দর গ্রহটিকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বও কি আমাদের নয়? জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশদূষণের এই সময়ে আমাদের ছোট ছোট কিছু অভ্যাসই পারে বড় পরিবর্তন আনতে। ২০২৬ সালে একটি সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে আপনি কিছু অভ্যাস নিজের জীবনে যোগ করতে পারেন।...
১০ ঘণ্টা আগে
রূপবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ত্বকের শুষ্ক ও নির্জীব ভাব দূর করতে বাইরে থেকে যেমন মশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন, তেমনি নিয়মিত কয়েকটি খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে শীতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ। পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপও পড়বে দেরিতে।...
১২ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

২০২৬ সাল আমাদের দোরগোড়ায়। নতুন বছর মানেই নিজের উন্নতির জন্য নতুন সব পরিকল্পনা। কিন্তু এই বছর ব্যক্তিগত লক্ষ্যের পাশাপাশি আমাদের এই সুন্দর গ্রহটিকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বও কি আমাদের নয়? জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশদূষণের এই সময়ে আমাদের ছোট ছোট কিছু অভ্যাসই পারে বড় পরিবর্তন আনতে। ২০২৬ সালে একটি সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে আপনি কিছু অভ্যাস নিজের জীবনে যোগ করতে পারেন।
বর্জ্য নিয়ে নতুন করে ভাবুন
আমাদের প্রতিদিনের ছোট ছোট সমন্বয় বর্জ্য কমাতে বিশাল ভূমিকা রাখে।

যাতায়াতে আনুন পরিবর্তন

যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া কার্বন নিঃসরণের অন্যতম প্রধান কারণ। আপনি গাড়ি যত কম চালাবেন, পৃথিবী তত বেশি শ্বাস নিতে পারবে। বাস, ট্রেন বা সাবওয়ে ব্যবহার আপনার কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক কমিয়ে দেয়। ছোট যাত্রায় গাড়ির বদলে বিকল্প পথ বেছে নিলে বায়ুদূষণ কমে, যানজট হ্রাস পায় এবং আপনার ব্যক্তিগত কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক নিচে নেমে আসে। এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। দূরে কোথাও যাওয়ার বদলে নিজের এলাকার আশপাশে ঘুরুন বা বন্ধুর সঙ্গে তাঁর বাড়িতে কিংবা আপনার বাড়িতেই ছুটি কাটান। এই সময়ে দৈনন্দিন বিরক্তিকর কাজগুলো থেকে ছুটি নিয়ে নিজের এলাকার অচেনা জায়গাগুলো ঘুরে দেখুন, স্থানীয় খাবার চেখে দেখুন। এতে একটি দীর্ঘ বিমানযাত্রা বা ক্লান্তিকর সফর থেকে পরিবেশ বেঁচে যাবে। এতে বিমান বা দীর্ঘ সফরের দূষণ কমবে।
খাদ্যাভ্যাসে আনুন টেকসই ধারা
আপনার খাবার প্লেটের সিদ্ধান্তই ঠিক করে দেয় পরিবেশের ভবিষ্যৎ। প্লেটে নিরামিষ বা প্ল্যান্টবেজড রেসিপি, যেমন মসুর ডাল বা কাজু-পান্তা মাংসের তুলনায় অনেক কম কার্বন নিঃসরণ করে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন বা দুই দিন মাংস ছাড়া খাওয়ার চেষ্টা করুন। সব সময় স্থানীয় খামারে উৎপাদিত এবং মৌসুমি ফল ও সবজি কেনার চেষ্টা করুন। প্লাস্টিকে মোড়ানো সবজি এড়িয়ে খোলা সবজি কিনুন। খাবারের অপচয় রোধে আগে থেকেই মিল প্ল্যানিং করুন। এটি আপনাকে বাইরের প্লাস্টিক মোড়ানো খাবারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে।

ঘরে শক্তি সাশ্রয় করুন
বিদ্যুৎ সাশ্রয় আপনার পকেটের পাশাপাশি পৃথিবীরও উপকার করে। অনেক সময় যন্ত্র বন্ধ থাকলেও প্লাগ লাগানো থাকলে বিদ্যুৎ খরচ হয়। কাজ শেষে প্লাগ খুলে রাখুন। হ্যালোজেন বাল্বের বদলে এলইডি ব্যবহার করুন। নতুন কোনো যন্ত্র কেনার আগে সেটির এনার্জি রেটিং দেখে নিন। পুরোনো যন্ত্র বদলে এনার্জি-এফিসিয়েন্ট ফ্রিজ বা ওয়াশিং মেশিন কিনুন। স্মার্ট মিটার ব্যবহার করুন, যা আপনার বিদ্যুৎ খরচের ধরন বুঝতে এবং সাশ্রয় করতে সাহায্য করবে। বাড়িতে সোলার প্যানেল বা এয়ার সোর্স হিট পাম্প লাগানোর কথা ভাবতে পারেন।
পানি সংরক্ষণ ও বনায়ন
পানি জীবন হলেও আমাদের অপচয়ের কারণে এটি ক্রমেই দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে। লো-ফ্লো ফাউসেট বা শাওয়ার ফিক্সচার ব্যবহার করুন। এ ছাড়া ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার সময় লোড পূর্ণ হলে তবেই মেশিন চালান। নিজের জানালার পাশে বা বারান্দায় টমেটো বা হার্বস চাষ শুরু করুন। ঘরোয়া উদ্ভিদের কাটিং থেকে নতুন চারা তৈরি করে বন্ধুদের উপহার দিন। বাড়িতে কম্পোস্টিং শুরু করলে তা আপনার গাছের পুষ্টি জোগাবে এবং বর্জ্য কমাবে।
একা লড়াই করার চেয়ে দলগত কাজ বেশি কার্যকর। আপনি চাইলে স্থানীয় কোনো ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপে যোগ দিতে পারেন। তাদের সঙ্গে এলাকা পরিষ্কার করা বা পরিবেশ সচেতনতামূলক প্রচারণায় অংশ নিন। ২০২৬ সাল হোক আমাদের সচেতনতার বছর। আপনার ছোট একটি পদক্ষেপই পারে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে। শুরুটা হোক আজ থেকেই!
সূত্র: ইকোমিনা, গুড এনার্জি

২০২৬ সাল আমাদের দোরগোড়ায়। নতুন বছর মানেই নিজের উন্নতির জন্য নতুন সব পরিকল্পনা। কিন্তু এই বছর ব্যক্তিগত লক্ষ্যের পাশাপাশি আমাদের এই সুন্দর গ্রহটিকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বও কি আমাদের নয়? জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশদূষণের এই সময়ে আমাদের ছোট ছোট কিছু অভ্যাসই পারে বড় পরিবর্তন আনতে। ২০২৬ সালে একটি সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে আপনি কিছু অভ্যাস নিজের জীবনে যোগ করতে পারেন।
বর্জ্য নিয়ে নতুন করে ভাবুন
আমাদের প্রতিদিনের ছোট ছোট সমন্বয় বর্জ্য কমাতে বিশাল ভূমিকা রাখে।

যাতায়াতে আনুন পরিবর্তন

যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া কার্বন নিঃসরণের অন্যতম প্রধান কারণ। আপনি গাড়ি যত কম চালাবেন, পৃথিবী তত বেশি শ্বাস নিতে পারবে। বাস, ট্রেন বা সাবওয়ে ব্যবহার আপনার কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক কমিয়ে দেয়। ছোট যাত্রায় গাড়ির বদলে বিকল্প পথ বেছে নিলে বায়ুদূষণ কমে, যানজট হ্রাস পায় এবং আপনার ব্যক্তিগত কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক নিচে নেমে আসে। এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। দূরে কোথাও যাওয়ার বদলে নিজের এলাকার আশপাশে ঘুরুন বা বন্ধুর সঙ্গে তাঁর বাড়িতে কিংবা আপনার বাড়িতেই ছুটি কাটান। এই সময়ে দৈনন্দিন বিরক্তিকর কাজগুলো থেকে ছুটি নিয়ে নিজের এলাকার অচেনা জায়গাগুলো ঘুরে দেখুন, স্থানীয় খাবার চেখে দেখুন। এতে একটি দীর্ঘ বিমানযাত্রা বা ক্লান্তিকর সফর থেকে পরিবেশ বেঁচে যাবে। এতে বিমান বা দীর্ঘ সফরের দূষণ কমবে।
খাদ্যাভ্যাসে আনুন টেকসই ধারা
আপনার খাবার প্লেটের সিদ্ধান্তই ঠিক করে দেয় পরিবেশের ভবিষ্যৎ। প্লেটে নিরামিষ বা প্ল্যান্টবেজড রেসিপি, যেমন মসুর ডাল বা কাজু-পান্তা মাংসের তুলনায় অনেক কম কার্বন নিঃসরণ করে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন বা দুই দিন মাংস ছাড়া খাওয়ার চেষ্টা করুন। সব সময় স্থানীয় খামারে উৎপাদিত এবং মৌসুমি ফল ও সবজি কেনার চেষ্টা করুন। প্লাস্টিকে মোড়ানো সবজি এড়িয়ে খোলা সবজি কিনুন। খাবারের অপচয় রোধে আগে থেকেই মিল প্ল্যানিং করুন। এটি আপনাকে বাইরের প্লাস্টিক মোড়ানো খাবারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে।

ঘরে শক্তি সাশ্রয় করুন
বিদ্যুৎ সাশ্রয় আপনার পকেটের পাশাপাশি পৃথিবীরও উপকার করে। অনেক সময় যন্ত্র বন্ধ থাকলেও প্লাগ লাগানো থাকলে বিদ্যুৎ খরচ হয়। কাজ শেষে প্লাগ খুলে রাখুন। হ্যালোজেন বাল্বের বদলে এলইডি ব্যবহার করুন। নতুন কোনো যন্ত্র কেনার আগে সেটির এনার্জি রেটিং দেখে নিন। পুরোনো যন্ত্র বদলে এনার্জি-এফিসিয়েন্ট ফ্রিজ বা ওয়াশিং মেশিন কিনুন। স্মার্ট মিটার ব্যবহার করুন, যা আপনার বিদ্যুৎ খরচের ধরন বুঝতে এবং সাশ্রয় করতে সাহায্য করবে। বাড়িতে সোলার প্যানেল বা এয়ার সোর্স হিট পাম্প লাগানোর কথা ভাবতে পারেন।
পানি সংরক্ষণ ও বনায়ন
পানি জীবন হলেও আমাদের অপচয়ের কারণে এটি ক্রমেই দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে। লো-ফ্লো ফাউসেট বা শাওয়ার ফিক্সচার ব্যবহার করুন। এ ছাড়া ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার সময় লোড পূর্ণ হলে তবেই মেশিন চালান। নিজের জানালার পাশে বা বারান্দায় টমেটো বা হার্বস চাষ শুরু করুন। ঘরোয়া উদ্ভিদের কাটিং থেকে নতুন চারা তৈরি করে বন্ধুদের উপহার দিন। বাড়িতে কম্পোস্টিং শুরু করলে তা আপনার গাছের পুষ্টি জোগাবে এবং বর্জ্য কমাবে।
একা লড়াই করার চেয়ে দলগত কাজ বেশি কার্যকর। আপনি চাইলে স্থানীয় কোনো ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপে যোগ দিতে পারেন। তাদের সঙ্গে এলাকা পরিষ্কার করা বা পরিবেশ সচেতনতামূলক প্রচারণায় অংশ নিন। ২০২৬ সাল হোক আমাদের সচেতনতার বছর। আপনার ছোট একটি পদক্ষেপই পারে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে। শুরুটা হোক আজ থেকেই!
সূত্র: ইকোমিনা, গুড এনার্জি
বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় আবারও পাহাড় ও প্রকৃতিপ্রেমীতে সরগরম হয়ে উঠেছে সাজেক। এদিকে বছরের এ সময়টা অর্থাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষভাগ সাজেক ভ্রমণের জন্য এক কথায় আদর্শ। কেন সেই উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি আপনার সাজেকে ঘুরে বেড়ানো আরও আনন্দময় এবং ঝামেলামুক্ত করতে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এ লেখায়।
০৯ নভেম্বর ২০২৪
সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু। পৃথিবীর খুব অল্প জায়গায় এই দেলি বাল কিংবা ম্যাড হানি নামের মধু উৎপাদন হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চল আর নেপালের...
৭ ঘণ্টা আগে
শীত জেঁকে বসেছে। ভারী গরম কাপড় গায়ে না চড়িয়ে বাইরে বের হওয়া কঠিন। তবে চুপি চুপি বলে রাখি, অনলাইন শপিংয়ে যাঁরা পটু, তাঁরা কিন্তু প্রতিবছর নিত্য়নতুন গায়ে চড়ানোর চাদর কিনে ফেলেন। হ্যাঁ, মায়ের বকুনি খাওয়ার ভয়ে হয়তো আলমারিতে বন্দী করে রাখেন। কিন্তু প্রতিবছর এত সুন্দর সুন্দর থিমে চাদর বাজারে আসে...
৮ ঘণ্টা আগে
রূপবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ত্বকের শুষ্ক ও নির্জীব ভাব দূর করতে বাইরে থেকে যেমন মশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন, তেমনি নিয়মিত কয়েকটি খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে শীতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ। পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপও পড়বে দেরিতে।...
১২ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

শীতে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্ক ভাব দূর করতে কত কীই-না করি আমরা। যতবার হাত ধোয়া হচ্ছে, ততবারই ময়শ্চারাইজার না মাখলে হাত খসখসে হয়ে উঠছে। ময়শ্চারাইজার মাখার পরও কিছুক্ষণ বাদে বাদে রিঅ্যাপ্লাই করতে হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, ঠান্ডা নাকি আরও বাড়বে। ফলে শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের চিন্তায় এখনই কপালে ভাঁজ পড়ে গেছে। রূপবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ত্বকের শুষ্ক ও নির্জীব ভাব দূর করতে বাইরে থেকে যেমন মশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন, তেমনি নিয়মিত কয়েকটি খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে শীতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ। পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপও পড়বে দেরিতে।
শীতে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়। বয়স যত বেশি, ত্বকের আর্দ্রতা তত কম থাকে এই ঋতুতে। এ সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে কিছু খাবার। ঘি, আমলকী, বাদাম, টমেটো, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার খেলে ত্বকের স্বাভাবিক তেল উৎপাদন অব্যাহত থাকে। কোলাজেন উৎপাদনও বাড়ে। ফলে ত্বক পরিপুষ্ট হওয়ার পাশাপাশি জেল্লা ছড়ায়। শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ এবং স্বত্বাধিকারী, বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার
ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি যেসব খাবার খাবেন
খাঁটি ঘি
প্রতিদিন অন্তত এক চা-চামচ ঘি খান। এতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি ও চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন। এগুলো খেলে শরীর ভালো রাখার পাশাপাশি ত্বকও পরিপুষ্ট হবে। ত্বকের প্রাকৃতিক তৈলাক্ত ভাব বজায় রাখতেও সাহায্য করে ঘি। ফলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠে না।
সালাদে টমেটো রাখুন
শীতে বাজারে যে টমেটো পাওয়া যায়, তাতে প্রচুর লাইকোপিন থাকে, যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের কোলাজেন ভেঙে দেয়। ফলে বলিরেখা পড়ে। এ ছাড়া এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতেও সহায়তা করে।

আমলকী
ত্বক তারুণ্যদীপ্ত রাখে ভিটামিন সি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালে শরীরে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি একাই পূরণ করতে পারে আমলকী। এই ছোট্ট ফল নিয়মিত খেলে তা কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্র ভাব এবং টান টান ভাব বজায় রাখার জন্য এই কোলাজেন বেশি জরুরি।
তিল
এই শীতে তিলের নাড়ু, হালুয়া, ভর্তা তৈরি করে খেতে পারেন। এটি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখতে সহায়তা করে। এতে ত্বক থাকে কোমল ও উজ্জ্বল। তিলে থাকা জিংক ও স্বাস্থ্যকর চর্বি ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ময়শ্চারাইজড রাখে।
সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ডি ত্বক কোমল ও হাড় মজবুত রাখে। সপ্তাহে অন্তত দুদিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়া দরকার। তবে এই মাছ রান্নায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার না করাই ভালো।
কাঠবাদাম ও আখরোট
ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ৬টি ভেজানো কাঠবাদাম খান। এতে ত্বক সুন্দর থাকবে। কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি, যা ত্বকের কোষ ভালো রাখে। কাঠবাদাম ছাড়াও খেতে পারেন আখরোট। এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড; যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে, টক্সিনকে ত্বকের ক্ষতি করতে দেয় না।
বিটরুট
বিটরুটের ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম ও সুপার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বক পরিষ্কার রাখে, ত্বকের পোর বা ছিদ্রগুলো মেরামত করে। প্রতিদিন ৫০০ মিলি লিটার বিটরুটের জুস পান করলে বা সালাদ হিসেবে বিটরুট খেলে ত্বক ভালো থাকে।
টক দই
ত্বকের জন্য যত ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার রয়েছে, সেগুলোর মধ্য়ে প্রোবায়োটিকস খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রোবায়োটিকস হিসেবে টক দই খুব ভালো ও সহজলভ্য একটি খাবার। এতে রয়েছে পেটের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা অন্ত্রে পৌঁছে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পেটের স্বাস্থ্যের প্রভাব পড়ে ত্বকে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় টক দই রাখলে ত্বকের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাব বজায় থাকে। ফলে শীতকালে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা নিয়ে বাড়তি ভাবনা থাকে না।

শীতে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্ক ভাব দূর করতে কত কীই-না করি আমরা। যতবার হাত ধোয়া হচ্ছে, ততবারই ময়শ্চারাইজার না মাখলে হাত খসখসে হয়ে উঠছে। ময়শ্চারাইজার মাখার পরও কিছুক্ষণ বাদে বাদে রিঅ্যাপ্লাই করতে হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, ঠান্ডা নাকি আরও বাড়বে। ফলে শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের চিন্তায় এখনই কপালে ভাঁজ পড়ে গেছে। রূপবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ত্বকের শুষ্ক ও নির্জীব ভাব দূর করতে বাইরে থেকে যেমন মশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন, তেমনি নিয়মিত কয়েকটি খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে শীতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ। পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপও পড়বে দেরিতে।
শীতে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়। বয়স যত বেশি, ত্বকের আর্দ্রতা তত কম থাকে এই ঋতুতে। এ সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে কিছু খাবার। ঘি, আমলকী, বাদাম, টমেটো, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার খেলে ত্বকের স্বাভাবিক তেল উৎপাদন অব্যাহত থাকে। কোলাজেন উৎপাদনও বাড়ে। ফলে ত্বক পরিপুষ্ট হওয়ার পাশাপাশি জেল্লা ছড়ায়। শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ এবং স্বত্বাধিকারী, বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার
ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি যেসব খাবার খাবেন
খাঁটি ঘি
প্রতিদিন অন্তত এক চা-চামচ ঘি খান। এতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি ও চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন। এগুলো খেলে শরীর ভালো রাখার পাশাপাশি ত্বকও পরিপুষ্ট হবে। ত্বকের প্রাকৃতিক তৈলাক্ত ভাব বজায় রাখতেও সাহায্য করে ঘি। ফলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠে না।
সালাদে টমেটো রাখুন
শীতে বাজারে যে টমেটো পাওয়া যায়, তাতে প্রচুর লাইকোপিন থাকে, যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের কোলাজেন ভেঙে দেয়। ফলে বলিরেখা পড়ে। এ ছাড়া এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতেও সহায়তা করে।

আমলকী
ত্বক তারুণ্যদীপ্ত রাখে ভিটামিন সি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালে শরীরে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি একাই পূরণ করতে পারে আমলকী। এই ছোট্ট ফল নিয়মিত খেলে তা কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্র ভাব এবং টান টান ভাব বজায় রাখার জন্য এই কোলাজেন বেশি জরুরি।
তিল
এই শীতে তিলের নাড়ু, হালুয়া, ভর্তা তৈরি করে খেতে পারেন। এটি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখতে সহায়তা করে। এতে ত্বক থাকে কোমল ও উজ্জ্বল। তিলে থাকা জিংক ও স্বাস্থ্যকর চর্বি ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ময়শ্চারাইজড রাখে।
সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ডি ত্বক কোমল ও হাড় মজবুত রাখে। সপ্তাহে অন্তত দুদিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়া দরকার। তবে এই মাছ রান্নায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার না করাই ভালো।
কাঠবাদাম ও আখরোট
ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ৬টি ভেজানো কাঠবাদাম খান। এতে ত্বক সুন্দর থাকবে। কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি, যা ত্বকের কোষ ভালো রাখে। কাঠবাদাম ছাড়াও খেতে পারেন আখরোট। এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড; যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে, টক্সিনকে ত্বকের ক্ষতি করতে দেয় না।
বিটরুট
বিটরুটের ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম ও সুপার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বক পরিষ্কার রাখে, ত্বকের পোর বা ছিদ্রগুলো মেরামত করে। প্রতিদিন ৫০০ মিলি লিটার বিটরুটের জুস পান করলে বা সালাদ হিসেবে বিটরুট খেলে ত্বক ভালো থাকে।
টক দই
ত্বকের জন্য যত ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার রয়েছে, সেগুলোর মধ্য়ে প্রোবায়োটিকস খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রোবায়োটিকস হিসেবে টক দই খুব ভালো ও সহজলভ্য একটি খাবার। এতে রয়েছে পেটের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা অন্ত্রে পৌঁছে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পেটের স্বাস্থ্যের প্রভাব পড়ে ত্বকে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় টক দই রাখলে ত্বকের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাব বজায় থাকে। ফলে শীতকালে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা নিয়ে বাড়তি ভাবনা থাকে না।
বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় আবারও পাহাড় ও প্রকৃতিপ্রেমীতে সরগরম হয়ে উঠেছে সাজেক। এদিকে বছরের এ সময়টা অর্থাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষভাগ সাজেক ভ্রমণের জন্য এক কথায় আদর্শ। কেন সেই উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি আপনার সাজেকে ঘুরে বেড়ানো আরও আনন্দময় এবং ঝামেলামুক্ত করতে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এ লেখায়।
০৯ নভেম্বর ২০২৪
সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু। পৃথিবীর খুব অল্প জায়গায় এই দেলি বাল কিংবা ম্যাড হানি নামের মধু উৎপাদন হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চল আর নেপালের...
৭ ঘণ্টা আগে
শীত জেঁকে বসেছে। ভারী গরম কাপড় গায়ে না চড়িয়ে বাইরে বের হওয়া কঠিন। তবে চুপি চুপি বলে রাখি, অনলাইন শপিংয়ে যাঁরা পটু, তাঁরা কিন্তু প্রতিবছর নিত্য়নতুন গায়ে চড়ানোর চাদর কিনে ফেলেন। হ্যাঁ, মায়ের বকুনি খাওয়ার ভয়ে হয়তো আলমারিতে বন্দী করে রাখেন। কিন্তু প্রতিবছর এত সুন্দর সুন্দর থিমে চাদর বাজারে আসে...
৮ ঘণ্টা আগে
এই বছর ব্যক্তিগত লক্ষ্যের পাশাপাশি আমাদের এই সুন্দর গ্রহটিকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বও কি আমাদের নয়? জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশদূষণের এই সময়ে আমাদের ছোট ছোট কিছু অভ্যাসই পারে বড় পরিবর্তন আনতে। ২০২৬ সালে একটি সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে আপনি কিছু অভ্যাস নিজের জীবনে যোগ করতে পারেন।...
১০ ঘণ্টা আগে