Ajker Patrika

পর্যটনশিল্পে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় সিরিয়া

ফিচার ডেস্ক
বরসা পানো
বরসা পানো

বাশার আল-আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে সিরিয়ায়। মুক্ত সিরিয়াকে নতুন করে সাজাতে এখন ব্যস্ত সে দেশের জনগণ। ভাবা হচ্ছে তাদের পর্যটনশিল্প নিয়েও। স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তাদের আশা, সিরিয়ার ধ্বংসপ্রাপ্ত পর্যটনশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হবেন তাঁরা।

২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যটন বন্ধ ছিল। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে দামেস্কে। কাতার এয়ারওয়েজ, তুর্কি এয়ারলাইনসসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা দামেস্কে তাদের সেবা চালু করেছে।

যুদ্ধের আগে সিরিয়ার পর্যটন অবস্থা

গৃহযুদ্ধের আগে সিরিয়ার জিডিপির ১৪ শতাংশ ছিল পর্যটন ঘিরে। ২০১০ সালে ১০ মিলিয়নের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছিলেন দেশটি। সিরিয়ার ইতিহাসে প্রাচীন স্থাপত্য; যেমন প্যালমিরা, ক্রুসেডার যুগের দুর্গগুলো, দামেস্কের পুরোনো শহর এবং সমুদ্রসৈকতগুলো ছিল পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর এসব ঐতিহাসিক স্থান ধ্বংস হতে শুরু করে। তবে বর্তমানে সিরিয়া পুনরুদ্ধারের পথে হাঁটছে। হাবাব নামের একজন স্থানীয় হোটেল মালিক তাঁর হোটেল আবারও চালু করেছেন। সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এখন মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছেন। আমরা সবাই আশাবাদী, আগামী দিনে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে।’

অতিরিক্ত সতর্কতা

সিরিয়া সফরের ব্যাপারে অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, প্রায় ১৪ বছর ধরে চলা যুদ্ধের পর সিরিয়া কি নিরাপদ? বর্তমানে সিরিয়ায় শাসন করছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তেহরির আল-শাম বা এইচটিএস। এটি আবার ব্রিটেনের কাছে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত। অনেক পর্যটক এখনো সিরিয়ায় যাওয়া নিয়ে দ্বিধান্বিত। যদিও পর্যটন ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, সিরিয়ার পর্যটনশিল্প দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে। তাঁরা মনে করছেন, পর্যটকেরা শুধু স্থানীয় অর্থনীতিতে সাহায্য করবেন না, বরং সিরিয়ার ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতি তাঁদের আরও আগ্রহ তৈরি হবে।

উমাইয়াদ মসজিদ
উমাইয়াদ মসজিদ

পর্যটনের মাধ্যমে অর্থনীতি পুনর্গঠন

পর্যটন একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে সিরিয়ার পুনর্গঠনে—অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মাধ্যমে শুধু যে অর্থনৈতিক লাভ হবে তা নয়; বরং সিরিয়ার মানুষ তাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিশ্বকে ভালোভাবে জানাতে পারবে। রকি রোড ট্রাভেলের প্রতিষ্ঠাতা শেন হোরান বলেন, ‘পর্যটন হতে পারে সিরিয়ার জেগে ওঠার জন্য নিরাময়ের প্রক্রিয়া। এটি সিরিয়ার পুনর্গঠনে সহায়ক হবে।’

আল হামাদিয়া স্কয়ার
আল হামাদিয়া স্কয়ার

আজকের সিরিয়া এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, যেখান থেকে নিজেদের পুরোনো পর্যটনশিল্পকে আবারও নতুন দিকে নিয়ে যেতে পারে। সেখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরাও এমনটা ভাবছেন। স্থানীয়রা প্রস্তুতি নিচ্ছেন অতিথিদের সঙ্গে নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পরিচয় করিয়ে দিতে।

সূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারী ও পুরুষের মস্তিষ্ক কি আসলেই আলাদা? গবেষকেরা কী বলছেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
গবেষকদের মতে, স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্ক মস্তিষ্কের লিঙ্গ ভিত্তিক পার্থক্যগুলো চিহ্নিত করতে পারলে বিভিন্ন রোগের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে গভীর ধারণা পাওয়া সম্ভব। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
গবেষকদের মতে, স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্ক মস্তিষ্কের লিঙ্গ ভিত্তিক পার্থক্যগুলো চিহ্নিত করতে পারলে বিভিন্ন রোগের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে গভীর ধারণা পাওয়া সম্ভব। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

একুশ শতকে এসেও লৈঙ্গিক সমতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা ও বিতর্ক সচল রয়েছে। কার মাথায় বুদ্ধি বেশি, কার উপস্থিত বুদ্ধি বেশি ভালো—এসব আলোচনা থেকে এখনো থামানো যায় না কাউকেই। একজন নারী বেশি বুদ্ধিমান নাকি একজন পুরুষের মাথায় বুদ্ধির ভারটা বেশি, তুমুল সেই বিতর্কের ফাঁক গলে নারীরা বাড়ির আঙিনা থেকে পাড়ি জমাচ্ছে মহাকাশে। এমনকি একজন পুরুষ জটিলতম মেশিনের ডিজাইন করতে করতে রান্নাঘরে তৈরি করছে নতুন নতুন খাবারের রেসিপি। তা-ও থামছে না বুদ্ধির ঘটে কার পাল্লা ভারী, তা নিয়ে ঝগড়া। এদিকে বিজ্ঞানীদের মাইক্রোস্কোপের নিচে উঠে এসেছে সেই চিরন্তন প্রশ্ন—নারী ও পুরুষের মস্তিষ্ক কি আসলেই আলাদা? এই প্রশ্ন যেমন কৌতূহলোদ্দীপক, তেমনি বিতর্কিত। সাম্প্রতিক গবেষণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ফলে এই বিতর্ক এক নতুন মাত্রা পেয়েছে।

‘পাঁচ আউন্স’-এর সেই পুরোনো তত্ত্ব

মস্তিষ্কের গঠন নিয়ে বিতর্কের শুরুটা বেশ পুরোনো। শুরুর দিকের গবেষণায় মানুষের মাথার খুলির আয়তন মেপে দেখা গিয়েছিল, পুরুষের মস্তিষ্ক ওজনের দিক থেকে নারীদের তুলনায় কিছুটা ভারী। এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তখন কিছু সমালোচক ‘মিসিং ফাইভ আউন্স’ বা হারানো পাঁচ আউন্স তত্ত্বটি সামনে আনেন। তাঁদের ধারণা ছিল, পুরুষের কথিত শ্রেষ্ঠত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে এই বাড়তি ওজনে। তবে আধুনিক বিজ্ঞান এই ধারণাকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছে। নিউ সায়েন্টিস্টদের মতে, এর একটি অত্যন্ত সহজ ব্যাখ্যা রয়েছে। সাধারণত বড় শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রাখতে বেশি পরিমাণ মস্তিষ্কের কোষ বা টিস্যুর প্রয়োজন হয়। প্রাণিজগতেও এই একই নিয়ম দেখা যায়। অর্থাৎ, বড় শরীর মানেই বড় মস্তিষ্ক। এর সঙ্গে মেধার কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই।

স্ট্যানফোর্ড গবেষণার মূল লক্ষ্য

বর্তমানে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম পার্থক্যগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তবে তাঁদের এই কাজের উদ্দেশ্য কেবল পার্থক্য খোঁজা নয়। স্ট্যানফোর্ড মেডিসিনের মনোরোগ ও আচরণগত বিজ্ঞানের অধ্যাপক বিনোদ মেনন বলেন, ‘এই গবেষণার মূল অনুপ্রেরণা হলো মানুষের মস্তিষ্কের বিকাশ, বার্ধক্য এবং স্নায়বিক রোগ বা মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদে যে ভিন্নতা দেখা যায়, তা বোঝা।’

গবেষকদের মতে, স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্ক মস্তিষ্কের লৈঙ্গিক ভিত্তিক পার্থক্যগুলো চিহ্নিত করতে পারলে বিভিন্ন রোগের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে গভীর ধারণা পাওয়া সম্ভব। যেমন অটিজম ও পারকিনসনের মতো রোগগুলো পুরুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এদিকে মাল্টিপল স্কলেরোসিস ও বিষণ্নতা জাতীয় রোগে নারীরা বেশি আক্রান্ত হয়। বিনোদ মেনন সতর্ক করে বলেন, মস্তিষ্কের গঠনের এই লৈঙ্গিক ভিত্তিক পার্থক্যগুলো যদি আমরা এড়িয়ে যাই, তবে স্নায়বিক রোগের পেছনের মূল কারণগুলো হয়তো আমাদের অজানাই থেকে যাবে।

‘সেক্স ডিফারেন্স’ অ্যাজেন্ডা

তবে এই ধরনের গবেষণাকে ভিন্ন চোখে দেখছেন অনেক বিজ্ঞানী। ব্রিটিশ নিউরোসায়েন্টিস্ট জিনা রিপন ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এ লিখেছেন, বর্তমানে সমাজে জৈবিকভাবে নির্ধারিত লৈঙ্গিক ভিত্তিক পার্থক্য খোঁজার একধরনের প্রবল আগ্রহ বা ‘অ্যাজেন্ডা’ তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, মানুষ চায় নারী-পুরুষের আচরণ, মেজাজ বা অর্জনের পার্থক্যগুলো সরাসরি মস্তিষ্কের ওপর চাপিয়ে দিতে। এস্টন ইউনিভার্সিটি ব্রেন সেন্টারের এই ইমেরিটাস অধ্যাপক মনে করেন, ‘আমরা যদি এই যুক্তিতে বিশ্বাস করতে শুরু করি, নারী-পুরুষের পার্থক্যগুলো জন্মগত বা অপরিবর্তনীয়, তবে সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার সব প্রচেষ্টা সহজে বাধাগ্রস্ত হবে।’ তাঁর মতে, সমান হওয়ার অর্থ এই নয় যে সবকিছুতে অভিন্ন হতে হবে। কিন্তু পার্থক্যগুলোকে স্থায়ী তকমা দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।

আধুনিক প্রযুক্তি ও আগামীর পথ

বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত গবেষণাগুলো পুরোনো আমলের লৈঙ্গিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক বিতর্ক কাটিয়ে নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের প্রকৃত সত্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করছে। বিষয়টি এখনো অত্যন্ত বিতর্কিত এবং স্পর্শকাতর। বিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশের অভিমত হলো, গবেষণার ফলাফল যা-ই আসুক, তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। চিকিৎসার প্রয়োজনে কোনো পার্থক্যকে যেমন এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়, তেমনি সেই পার্থক্য পুঁজি করে সামাজিক বৈষম্যকে বৈধতা দেওয়াও উচিত হবে না।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ন্যাচার, নিউ সায়েন্টিস্ট, স্ট্যানফোর্ড মেডিকেল ম্যাগাজিন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৪
আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

মেষ

সাহস আজ আপনার রক্তে টগবগ করছে। অফিসে সহকর্মীদের ওপর এমন হুকুম চালাবেন যেন আপনি সম্রাট আকবরের বংশধর। সঞ্চয় ভালো হবে, কিন্তু কৃপণতার দুনিয়ায় আজ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারেন। গিন্নি বা প্রিয়তমা আজ কেনাকাটার কথা তুললে কানপুরে যাওয়ার টিকিট কাটার ভান করতে পারেন। রাস্তায় হাঁটার সময় মোবাইল টিপবেন না; আজ নর্দমায় পা পড়ার বা হোঁচট খাওয়ার প্রবল যোগ! পকেটে একটি লাল রুমাল রাখুন, মেজাজ ঠান্ডা থাকবে।

বৃষ

মনের কথা আজ পেটে সইবে না। তবে খবরদার! অফিসের বস বা পাড়ার চায়ের দোকানের আড্ডায় নিজের বা অন্যের হাঁড়ি ভাঙবেন না। দাম্পত্য জীবনে আজ একটু ‘মাখন’ লাগানোর প্রয়োজন আছে, নয়তো রাতের ডিনারে শুধু সেদ্ধ ভাত জুটতে পারে। পুরোনো কোনো পাওনা টাকা হঠাৎ ফেরত পেতে পারেন, যা দিয়ে কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ার ইচ্ছা হবে প্রবল। সোশ্যাল মিডিয়ায় আজ বিতর্কিত কমেন্ট করবেন না, ট্রল হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ পারসেন্ট। বাইরে বেরোনোর আগে এক চামচ দই চিনি খেয়ে বেরোন।

মিথুন

বসের মেজাজ আজ তপ্ত কড়াইয়ের মতো। তিনি যদি বলেন ‘ঘাস নীল’, তবে আপনি তালি বাজিয়ে বলবেন ‘কী অপূর্ব নীলিমা স্যার!’ ছোট ভুল আজ ক্যারিয়ারের এভারেস্টে ফাটল ধরাতে পারে, তাই যেকোনো ফাইলে সই করার আগে অন্তত তিনবার চোখ বুলিয়ে নিন। বাড়িতে কোনো খুশির খবর বা হঠাৎ মিষ্টি আসতে পারে। ক্যালরি মেপে মিষ্টি খাবেন, ডায়াবেটিস আজ উঁকি দিচ্ছে। সবুজ রঙের কোনো কলম সঙ্গে রাখুন।

কর্কট

মানিব্যাগের দশা আজ মরুভূমির মতো। মাসের শেষে পকেট গড়ের মাঠ হওয়ায় বন্ধুর থেকে ধার নেওয়ার ফন্দি আঁটবেন। পারিবারিক দায়িত্ব আজ হিমালয়ের মতো কাঁধে চেপে বসবে, তবে চিন্তা নেই—দিন শেষে কোনো পুরোনো বন্ধুর আড্ডায় সব ক্লান্তি দূর হবে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে বেশি সময় নষ্ট করবেন না, কাজের দেরি হবে। ছোটদের কিছু চকলেট উপহার দিন, আপনার ভাগ্য খুলবে।

সিংহ

কাজের চেয়ে আপনার মন আজ বিনোদনের দিকে বেশি। অফিসের কম্পিউটারে আড়ালে গেম খেলতে গিয়ে বসের হাতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা আছে। পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ভাইবোনের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে মেজাজ হারাবেন না, হিতে বিপরীত হতে পারে। নতুন গাড়ি বা গ্যাজেট কেনার ভূত মাথায় চাপতে পারে, কিন্তু আজ ডিল করবেন না।

আজ অনলাইন শপিং সাইটগুলো থেকে দূরে থাকুন, নয়তো ক্রেডিট কার্ডের দফারফা হবে।

কন্যা

আপনি আজ বড্ড আবেগপ্রবণ। টিভির সিরিয়াল দেখেও চোখে জল আসতে পারে। তবে এই কোমল মন আজ নতুন বন্ধু তৈরিতে সাহায্য করবে। অফিসে কাজের চাপ থাকবে প্রচুর, কিন্তু ক্রেডিট নেওয়ার সময় দেখবেন অন্য কেউ লাইন মেরে চলে গেছে। ধৈর্য ধরুন, ফলের আশা করবেন না (আপাতত)। পরনিন্দা-পরচর্চা থেকে দূরে থাকুন, পাড়ার আন্টিরা আপনাকে ফাঁসিয়ে দিতে পারে।

তুলা

আজ আপনার জন্য প্রলোভনের দিন। শপিং মলের ‘৫০% অফ’ দেখে মন নাচবে, কিন্তু পকেটে হাত দিলেই শক খাবেন। সামাজিক অনুষ্ঠানে আপনি আজ মধ্যমণি, কিন্তু বেশি স্মার্টনেস দেখাতে গিয়ে হাসির পাত্র হবেন না। দুজনের ঝগড়া মেটাতে গিয়ে নিজে মাঝখান থেকে ভিলেন হয়ে যাবেন না। একটি রুপার কয়েন বা আংটি সঙ্গে রাখুন।

বৃশ্চিক

যাঁরা হার্ডওয়্যার বা যন্ত্রপাতির ব্যবসা করেন, তাঁদের আজ পয়া দিন। স্ত্রীর বুদ্ধিতে কোনো ব্যবসায়িক জটিলতা মিটে যেতে পারে। শ্বশুরবাড়ির দিক থেকে দামি কোনো উপহার বা নিমন্ত্রণ আসার সম্ভাবনা আছে। তবে শরীরের নিচের অংশে চোট লাগার ভয় আছে, তাই সাবধানে চলাফেরা করুন। মিষ্টি দেখলে আজ লোভ সামলান, দাঁত ব্যথার যোগ আছে।

ধনু

মন আজ এক জায়গায় টিকবে না। অফিস কামাই করে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা জাগবে। হঠাৎ কোনো অজানার থেকে আর্থিক প্রস্তাব আসতে পারে, যাচাই না করে পা দেবেন না। ভ্রমণের সুযোগ এলে ব্যাগ গুছিয়ে নিন, তবে ট্রেন বা বাসে মানিব্যাগ এবং মোবাইল সামলে রাখুন। প্রিয়জনের সঙ্গে তর্কে যাবেন না, ঝগড়া মেটাতে ২০২৬ সাল চলে আসবে।

মকর

প্রেমের দুনিয়ায় আজ বড় আকাল। প্রিয়তমার সঙ্গে ছোটখাটো বিষয়ে ভুল-বোঝাবুঝি হতে পারে, যা বিশ্বযুদ্ধের আকার নিতে পারে। দুপুরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো শেষ করুন। কারণ, বিকেলে অলসতা আপনাকে অজগরের মতো গিলে খাবে। সন্তানদের কোনো জেদ পূরণ করতে গিয়ে পকেট খালি হতে পারে। ঠান্ডা মেজাজে কথা বলুন, নয়তো আজ বাড়িতে থালাবাসন ওড়ার শব্দ শোনা যেতে পারে।

কুম্ভ

আপনি আজ পাড়ার ‘শান্তি কমিটি’র মেম্বারের মতো আচরণ করবেন। নিজের অশান্তি ভুলে অন্যের দুঃখ মুছতে ব্যস্ত থাকবেন। আধ্যাত্মিক কোনো কাজে যোগ দিলে মন ভালো থাকবে। জিম বা ব্যায়াম করার প্রবল উৎসাহ জাগবে, কিন্তু প্রথম দিনেই দুনিয়ার ভার তুলতে গিয়ে পেশিতে টান লাগাবেন না। অচেনা কাউকে আজ টাকা ধার দেবেন না।

মীন

দিনটা আপনার জন্য বেশ পয়া। লটারি না জিতলেও মন থাকবে ফুরফুরে। পুরোনো কোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হতে পারে। বাড়িতে নতুন কোনো রেসিপি ট্রাই করতে পারেন; বাড়ির লোকজন হয়তো ভয়ে ভয়ে খাবে, কিন্তু মুখে আপনার প্রশংসাই করবে। ছোটখাটো শারীরিক সমস্যা অবহেলা করবেন না। ঠান্ডা পানি বা আইসক্রিম আজ এড়িয়ে চলুন, গলার অবস্থা খারাপ হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সকালের নাশতা কখন খাবেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম থেকে ওঠার দুই ঘণ্টার মধ্যে সকালের ভারসাম্যপূর্ণ নাশতা সেরে ফেলা উচিত। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম থেকে ওঠার দুই ঘণ্টার মধ্যে সকালের ভারসাম্যপূর্ণ নাশতা সেরে ফেলা উচিত। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

সকালের নাশতা বা ব্রেকফাস্টকে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার বলা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কী খাচ্ছেন, সেটা বড় প্রশ্ন নয়। বড় প্রশ্ন হলো, কখন খাচ্ছেন। পুষ্টিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানো এবং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি এড়াতে সকালের নাশতা খাওয়ার সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভালো অভ্যাসের জন্য জেনে নিন, কখন নাশতা খাবেন। সঠিক সময়ে স্বাস্থ্যকর নাশতা শুধু আপনার শরীরের ওজন বা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করবে না, বরং সারা দিনের শক্তি, মানসিক স্বচ্ছতা এবং কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করবে।

হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষায় ‘দুই ঘণ্টার নিয়ম’

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম থেকে ওঠার দুই ঘণ্টার মধ্যে সকালের ভারসাম্যপূর্ণ নাশতা সেরে ফেলা উচিত। এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সরাসরি সাহায্য করে। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে পরে অস্বাস্থ্যকর নাশতা বা বেশি পরিমাণে খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ান ভেরোনিকা রাউস এবং ডোবরা মারফির মতে, নাশতার সময় যত দ্রুত হয়, কোলেস্টেরলের জন্য, তা তত মঙ্গলজনক। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত সকালের নাশতা এড়িয়ে যান, তাঁদের শরীরে ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। ২০২১ সালে চীনে ৩৭ হাজার ৩৫৫ জন প্রাপ্তবয়স্কের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নাশতা খান না, তাঁদের রক্তে চর্বির পরিমাণ ১০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং মোট কোলেস্টেরল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের অন্য একটি বিশ্লেষণ বলছে, নাশতা বাদ দিলে এলডিএল কোলেস্টেরল গড়ে ৯ দশমিক ৮৯ এমজি/ডিএল পর্যন্ত বাড়তে পারে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ১২ ঘণ্টার ফাস্টিং

যদি আপনার লক্ষ্য হয় ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রণে রাখা, তবে খাবারের সময়ের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ হিসাব কাজ করে। নাশতা মানেই উপবাস ভাঙা। গবেষকদের মতে, আগের দিনের রাতের খাবার এবং পরের দিনের সকালের নাশতার মধ্যে অন্তত ১২ ঘণ্টার ব্যবধান থাকা উচিত। যেমন আপনি যদি রাত ৮টায় রাতের খাবার খেয়ে নেন, তবে সকাল ৮টার আগে নাশতা না করাই ভালো। এই ১২ ঘণ্টার বিরতি শরীরে কেটোসিস প্রক্রিয়া শুরু করতে সাহায্য করে; যেখানে শরীর শক্তির জন্য গ্লুকোজের বদলে জমানো চর্বি পোড়াতে থাকে। এ ছাড়া এই বিরতি অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বা মাইক্রোবায়োমকে বিশ্রাম ও পুনর্গঠনের সুযোগ দেয়, যা মেটাবলিজম দ্রুত করে।

কত দেরি হলে তা ‘খুব দেরি’

একটি গবেষণা অনুযায়ী, সকাল ৯টার মধ্যে নাশতা সেরে ফেলা আদর্শ সময়। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। এর কারণ হলো, সকালে আমাদের মেটাবলিজম বা বিপাক প্রক্রিয়া সবচেয়ে ভালো কাজ করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর ইনসুলিন প্রতিরোধী হতে শুরু করে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং পেটে চর্বি জমায়। তবে মনে রাখতে হবে, ১২ ঘণ্টার উপবাসের নিয়মটি নমনীয়। যদি কোনো কারণে রাতে দেরি করে খাবার খান, তবে পরের দিন ১২ ঘণ্টা পূর্ণ করেই হালকা নাশতা করা উচিত।

দেরিতে ডিনার ও নাশতা বর্জন নয়

ইউরোপীয় ‘জার্নাল অব প্রিভেনটিভ কার্ডিওলজি’তে প্রকাশিত গবেষণায় দেরিতে রাতের খাবার এবং সকালের নাশতা বাদ দেওয়াকে মারাত্মক উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁরা এই অভ্যাসে অভ্যস্ত, তাঁদের হৃদ্‌রোগ, হার্ট অ্যাটাক এবং শরীরে প্রদাহের ঝুঁকি অনেক বেশি। গবেষকেরা একে একটি ‘কিলার’ বা প্রাণঘাতী কম্বিনেশন হিসেবে অভিহিত করেছেন।

কোলেস্টেরল কমাতে আদর্শ নাশতা

ডোনাট বা পেস্ট্রির মতো চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। এগুলোতে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা সরাসরি এলডিএল কোলেস্টেরল বাড়ায়। নাশতায় উদ্ভিজ্জ খাবার বা প্ল্যান্ট-বেসড খাবারের ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ফল ও ওটস: এতে থাকা সলুবল ফাইবার অন্ত্রে কোলেস্টেরলকে আটকে ফেলে রক্তে মিশতে বাধা দেয়।

হোল-গ্রেইন টোস্ট বা সিরিয়াল: এতে থাকা ভিটামিন-বি হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়।

বাদাম ও বীজ: এগুলো স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্ল্যান্ট স্টেরল সমৃদ্ধ।

ব্যায়ামের ভূমিকা

নাশতার পাশাপাশি নিয়মিত সকালে ব্যায়াম কোলেস্টেরলের জন্য মহৌষধ। এটি এলডিএল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়। হার্টের সুস্বাস্থ্যের জন্য সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি পরিশ্রম, যেমন দ্রুত হাঁটা অথবা ৭৫ মিনিট দৌড়ানোর মতো কঠিন কাজ করা জরুরি।

সূত্র: ভোগ, ডেইলি মেইল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় স্কুলের ফুটবল টিমে গোলকিপার ছিলেন জাইমা রহমান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে। সেখানেই স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে এখন ব্যারিস্টার তিনি।

তবে, জাইমা রহমানের শৈশবের পুরোটা সময় বাংলাদেশেই কেটেছে। প্রাথমিকে পড়াশোনা করেছেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকায় (আইএসডি)। এই স্কুলেরই ফুটবল দলের সদস্য ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, গোলকিপার হিসেবে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও সামাল দিয়েছেন। এমনকি জয় করেছেন মেডেলও।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে আসাকে সামনে রেখে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শৈশবের সেই অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণা করেন জাইমা। তিনি জানান, ফুটবল খেলে তিনি যে মেডেলটি পেয়েছিলেন, সেটি দাদিকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন দাদির অফিসেই।

সেই সময়টিতে জাইমা রহমানের দাদি বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। নাতনির মুখে মেডেল জয়ের গল্পটি তিনি বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং এই গল্পটি তিনি অন্যদের সঙ্গেও খুব গর্ব করে বলতেন।

এ বিষয়ে জাইমা লিখেছেন—‘আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাঁকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখাতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী-কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচণ্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে, পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।’

১৭ বছর পর বাবা-মায়ের সঙ্গে আবারও দেশে ফিরে আসা জাইমা রহমান এখন ৩০ বছরের পরিপূর্ণ এক ব্যক্তিত্ব। লন্ডনে গিয়ে তাঁর জীবন নতুনভাবে গড়ে ওঠে। শেকড় হারানোর বেদনার সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন সমাজ, নতুন ভাষা, নতুন লড়াই। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। লন্ডনের ম্যারিমাউন্ট গার্লস স্কুল থেকে তিনি ও-লেভেল পাস করেন। পরে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি থেকে। পরে তিনি লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী আইন প্রতিষ্ঠান ‘ইনার টেম্পল’ থেকে ‘বার-এট-ল’ কোর্স সম্পন্ন করে ব্যারিস্টার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত