Ajker Patrika

যুদ্ধের যুগে শান্তিময় পাঁচ দেশ

ফিচার ডেস্ক
ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

শুধু এ বছরেই নতুন করে তিনটি দেশে সংঘাত শুরু হয়েছে। না, কোনো উড়ো কথা নয়। এটি এ বছরের গ্লোবাল পিস ইনডেক্স (জিপিআই) থেকে পাওয়া তথ্য। তাদের তথ্য বলছে, বিশ্বে রাষ্ট্রভিত্তিক সংঘাতের সংখ্যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। যুদ্ধ বাড়ছে, সীমান্ত নিরাপত্তা কঠোর হচ্ছে এবং বাণিজ্যিক উত্তেজনা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ বছর যেন এক ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে বিশ্ববাসীর কাছে। তবুও মানুষ বেঁচে আছে, খাচ্ছে, ঘুরছে, শ্বাস নিচ্ছে। কিছু দেশ এখনো শান্তিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে যাচ্ছে।

ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস ইনস্টিটিউটের জিপিআই ২৩টি সূচক বিশ্লেষণ করে এমন কিছু দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে, যারা শান্তিকে রেখেছে সবার ওপরে। ২৩টি সূচকের মধ্যে ছিল সংঘাত, সামরিক ব্যয়, সন্ত্রাসবাদ, খুন ও অন্যান্য নিরাপত্তা-সংক্রান্ত পরিমাপক।

এই দেশগুলো প্রায় দুই দশক ধরে এই সব সূচকের শীর্ষে অবস্থান করছে। দীর্ঘ মেয়াদে শান্তিমূলক নীতি কতটা কার্যকর হতে পারে, এ তালিকা তাই বলছে। শান্তিময় দেশগুলো হলো—

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

আইসল্যান্ড

২০০৮ সাল থেকে একটানা বিশ্বের ‘সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ’ দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে আইসল্যান্ড। অর্থাৎ এক-দুই বছর নয়, টানা ১৭ বছর দেশটি নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে শীর্ষে। নিরাপত্তা, চলমান সংঘাত ও সামরিকীকরণ—এই তিন ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম স্কোর করে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে দেশটি। এই তিন ক্ষেত্রে আইসল্যান্ড এ বছর আরও ২ শতাংশ উন্নতি করেছে। ফলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা দেশের সঙ্গে তাদের ব্যবধান আরও বেড়েছে।

চলমান সংঘাত সূচকে আইসল্যান্ডের স্কোর ১। এটি প্রমাণ করে যে দেশটি আন্তর্জাতিক বা ঘরোয়া কোনো সংঘাতে জড়িত নয়। শান্তিতে নেতৃত্বের এই ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে দেশটিতে প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা দৃঢ়, অপরাধের হার অত্যন্ত কম, সামরিকীকরণের হার নিম্নমুখী ও সামাজিক অবস্থায় উচ্চমুখী আস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া আইসল্যান্ড বিশ্বের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সূচকে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। ফলে এ বছর এটি বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

আয়ারল্যান্ড

২০ শতকের শেষ ভাগে আয়ারল্যান্ড সংঘাতপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু এখন দেশটিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায় শান্তি। আয়ারল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে গ্লোবাল পিস ইনডেক্সে শীর্ষ স্থানের কাছাকাছি অবস্থান ধরে রেখেছে। সামরিকীকরণ কমাতে তারা অনেক এগিয়েছে। দেশটিতে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের হার অত্যন্ত কম। বহির্বিশ্বের সঙ্গে সংঘাতের ক্ষেত্রেও তারা একই অবস্থা ধরে রেখেছে। এ ছাড়া নিম্নমুখী সামরিকীকরণ সূচকে আয়ারল্যান্ড বিশ্বে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার দিক থেকেও দেশটি শীর্ষ ১০-এ রয়েছে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আয়ারল্যান্ড সামরিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখে। তারা কূটনৈতিক সমাধানে বিশ্বাস করে। ইউরোপের যে চারটি দেশ ন্যাটোর সদস্য নয়, তাদের মধ্যে একটি আয়ারল্যান্ড। দেশটিতে শান্তি বজায় থাকার মূল কারণ, সেখানে রাজনৈতিক সন্ত্রাস কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। অপরাধ সম্পর্কে জনসাধারণের ধারণায় উন্নতি ঘটেছে। আয়ারল্যান্ডে বন্দিত্বের হার কম, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুপ্রতিষ্ঠিত। এ সবকিছু আয়ারল্যান্ডে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

নিউজিল্যান্ড

এ বছর নিউজিল্যান্ড দুই ধাপ ওপরে উঠে তৃতীয় হয়েছে। মূলত নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস বা আন্দোলনের প্রভাব কমে যাওয়ার ফলে তাদের অবস্থান উন্নত হয়েছে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দ্বীপদেশ ভৌগোলিকভাবে নিরাপদ। কারণ, দেশটি আন্তর্জাতিক সংঘাত থেকে দূরে থাকে। অভ্যন্তরীণ নীতিমালাও এ দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা দেয়। নিউজিল্যান্ডের বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন বিশ্বে অন্যতম কঠোর। নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সূচকে শক্তিশালী অবস্থানের কারণে নিউজিল্যান্ডকে এ বছর বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

অস্ট্রিয়া

শীর্ষ পর্যায়ের শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় অস্ট্রিয়ার অবস্থান চতুর্থ স্থানে। যদিও এ বছর দেশটি এক ধাপ নিচে নেমে গেছে। নিরাপত্তা ও সুরক্ষা এবং সামরিকীকরণ সূচকে দেশটি এখনো তর শক্তিশালী পারফরম্যান্স বজায় রেখেছে। অস্ট্রিয়ার এই উচ্চ অবস্থান দীর্ঘদিন ধরে বজায় রাখতে পেরেছে কিছু বিশেষ কারণে। দেশটি ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থানে অবস্থিত। সেখানে রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল। এমনকি দেশটিতে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সংঘাতের মাত্রাও একেবারে কম।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুর এ বছরও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তাদের অবস্থান বিশ্বে ষষ্ঠ। দেশটি চলমান সংঘাত নিরসন এবং নিরাপত্তা ও সুরক্ষা—এই দুই সূচকে অসাধারণ উন্নতি দেখিয়েছে। এ বছর সিঙ্গাপুর চলমান সংঘাত নিরসন সূচকে বিশ্বে চতুর্থ স্থান লাভ করেছে। এটি প্রমাণ করে যে দেশটি দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে তার অবস্থান ধরে রেখেছে। কোনো সাম্প্রতিক সংঘাতজনিত মৃত্যু বা আন্তর্জাতিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার মতো ঘটনা দেশটিতে নেই।

সূত্র: বিবিসি, ভিশন অব হিউম্যানিটিজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বর্ষবরণের পানীয় হোক স্ট্রবেরি লেমোনেড

ফিচার ডেস্ক
ছবি: মরিয়ম হোসেন নূপুর।
ছবি: মরিয়ম হোসেন নূপুর।

নতুন বছর বরণ করার সময় চলে এসেছে। রাত ১২টার ঘণ্টা জানান দেবে ২০২৬-এর আগমন। বছরের প্রথম দিনে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া তো হবেই। এসব খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি লাল পানীয়। আপনাদের জন্য স্ট্রবেরি লেমোনেডের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর

উপকরণ

স্ট্রবেরি ২টি, পানি ১/৪ কাপ, লেবুর রস ২ চা চামচ, সোডা ওয়াটার ৩/৪ কাপ, সুগার সিরাপ ২ চা চামচ, পুদিনা পাতা ১ টেবিল চামচ।

প্রণালি

স্ট্রবেরি পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিতে হবে। একটি গ্লাসে পুদিনা পাতা দিয়ে একটু থেঁত করে নিয়ে এরপর এতে লেবুর রস, ছেঁকে রাখা স্ট্রবেরি জুস এবং সুগার সিরাপ মিশিয়ে নিতে হবে। পরিবেশনের আগে সোডা ওয়াটার মিশিয়ে নিতে হবে। সবশেষে লেবুর টুকরা এবং বরফ দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেনাকাটার আসক্তি দূর করবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক
ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

কেনাকাটা করতে সবাই ভালোবাসে। নতুন জামা, দরকারি জিনিস বা পছন্দের কিছু কিনলে মন ভালো হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কেউ প্রয়োজন না থাকলেও বা টাকা নেই জেনেও বারবার কেনাকাটা করতে থাকে, তখন সেটি আর শখ থাকে না। তখন সেটি কেনাকাটার আসক্তিতে পরিণত হয়।

এই সমস্যা মানুষ বুঝতে পারে। কেনাকাটা করা ঠিক হচ্ছে না জেনেও নিজেকে থামাতে পারে না। ধীরে ধীরে এতে আর্থিক চাপ, ঋণ আর মানসিক অশান্তি বাড়তে থাকে।

কেনাকাটার আসক্তি আসলে কী?

কিছু কিনলে হঠাৎ আনন্দ অনুভব করেন অনেকে। সেই আনন্দ আবার পেতে বারবার কেনাকাটা করা একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। কেউ নির্দিষ্ট জিনিসে আসক্ত হয় যেমন জামাকাপড়, গয়না, মোবাইল বা প্রসাধনী। আবার কেউ যা চোখে পড়ে তাই কিনে ফেলে। যেমন খাবার, অপ্রয়োজনীয় জিনিস, এমনকি জমি বা শেয়ারও।

অনেক সময় মানসিক চাপ, দুঃখ, একাকিত্ব বা রাগ থেকে মুক্তি পেতেই মানুষ কেনাকাটার দিকে ঝোঁকে। কিন্তু কেনাকাটার আনন্দটা খুব অল্প সময়ের হয়। পরে আফসোস হয় এবং ঋণের বোঝা বাড়ে।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

কী কী লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?

  • কেনাকাটার আসক্তি অনেক সময় গোপন থাকে। বাইরে থেকে বোঝা নাও যেতে পারে। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ আছে—
  • প্রায়ই কেনাকাটার চিন্তা মাথায় ঘুরতে থাকে
  • মন খারাপ বা চাপের সময় বাজারে ঢুকে পড়া
  • প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও জিনিস কেনা
  • কেনা জিনিস ব্যবহার না করেই পড়ে থাকা
  • ক্রেডিট কার্ডের সীমা বারবার শেষ হয়ে যাওয়া
  • পুরোনো ঋণ শোধ না করেই নতুন কার্ড নেওয়া
  • কেনাকাটার পর অল্প সময় খুব আনন্দ পাওয়া
  • পরে অনুশোচনা হওয়া, কিন্তু আবার একই কাজ করা
  • টাকা বা কেনাকাটার কথা লুকানো, মিথ্যা বলা
  • বারবার চেষ্টা করেও কেনাকাটা কমাতে না পারা

এই লক্ষণগুলো দীর্ঘদিন চললে সেটি গুরুতর সমস্যায় রূপ নিতে পারে।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

এর সমাধান কী?

কেনাকাটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ, জীবনের জন্য কেনাকাটা দরকার। তাই সমাধান হলো নিয়ন্ত্রণ শেখা।

  • অনেক ক্ষেত্রে শুরুতে—
  • কার্ড বা নগদ টাকার ব্যবহার সীমিত করা
  • পরিবারের কাউকে সাময়িকভাবে টাকা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া

খুব কাজে আসে কাউন্সেলিং বা আচরণগত থেরাপি।

থেরাপির মাধ্যমে মানুষ শেখে—

  • হঠাৎ কেনাকাটার ইচ্ছা কীভাবে থামাতে হয়
  • কোন পরিস্থিতিতে কেনাকাটা করতে মন চায় তা চিনতে
  • কেনাকাটার বদলে চাপ সামলানোর নতুন উপায়
  • সমস্যার পেছনে লুকানো মানসিক কষ্ট বুঝতে

সহায়তা কোথায় পাওয়া যায়?

অনেক দেশে এবং অনলাইনে কেনাকাটার নেশা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে অর্থ ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মানুষকে আয়-ব্যয়ের হিসাব করা, বাজেট তৈরি করা এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায়। পাশাপাশি পুনরুদ্ধার প্রোগ্রাম রয়েছে, যেখানে একই সমস্যায় ভোগা মানুষ একে অপরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। এতে একাকিত্ব কমে এবং মানসিক সাহস পাওয়া যায়। আর যদি ঋণের পরিমাণ খুব বেশি হয়ে যায়, তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে ঋণ পরামর্শক সংস্থা বা অভিজ্ঞ আর্থিক পরামর্শকের সহায়তা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে ওঠে।

ভবিষ্যৎ কী?

যদি সময়মতো সাহায্য নেওয়া যায়, তাহলে এই সমস্যা থেকে বের হওয়া সম্ভব। মাঝেমধ্যে আবার পুরোনো অভ্যাস ফিরে আসতে পারে, এটা স্বাভাবিক। তবে সঠিক সহায়তা থাকলে আবার নিয়ন্ত্রণে ফেরা যায়।

কেনাকাটার আসক্তি ধীরে ধীরে মানুষকে ঋণ, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের দিকে নিয়ে যায়। শুরুতে বিষয়টি তেমন গুরুতর মনে না হলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি জীবনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। তবে সচেতনতা, পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তা এবং প্রয়োজনে পেশাদার সাহায্য নিলে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে এসে আবার সুস্থ, নিয়ন্ত্রিত ও শান্ত জীবনে ফিরে আসা সম্ভব।

সূত্র: হেলথলাইন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বর্ষবরণে যেসব শুভ রঙে নিজেকে সাজাতে পারেন

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১৭
২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে বেগুনি রঙের পোশাক হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ
২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে বেগুনি রঙের পোশাক হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ

পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপারটি সত্যিই বিশেষ। একটি বছর ঘুরে যখন নতুন বছর আসে, তখন আমাদের মনে জাগে একরাশ প্রত্যাশা। এই নতুন সময়ে আমরা বেশ কিছু ছোট ছোট কাজ করে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। বছরের প্রথম দিন প্রতিটি কাজই আমরা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যাতে পুরো বছরে তার একটা রেশ থাকে। পোশাকের রং নির্বাচনের বেলায়ও কিন্তু এ কথাটা খাটে। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, আসছে বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে পৃথিবীর ওপর সূর্যের প্রভাব থাকবে। ফলে কয়েকটি শুভ রঙের পোশাক আলমারিতে রাখলে পুরো বছরটাই চনমনে কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। কয়েকটি বিশেষ রংকে শক্তি, সুরক্ষা ও সমৃদ্ধির প্রতীক বলে মনে করা হয়। তবে পোশাকের রং নির্বাচনের মাধ্যমেই যে আপনি সফল হয়ে যাবেন, বিষয়টা এমন নয়। বরং, এই প্রতীকী ভঙ্গিটি আপনার মানসিক সংকল্পকে দৃঢ় করবে। ২০২৬ সালকে বরণ করতে যে ৭টি রং আপনার জীবনে শুভ বার্তা নিয়ে আসতে পারে, তা নিয়েই আজকের এই ফিচার।

নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ
নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ

যেসব রঙের পোশাক আলমারিতে রাখতে পারেন

লাল

জীবনীশক্তি ও সুরক্ষার প্রতীক লাল রংকে এশিয়ান সংস্কৃতিতে বিশেষ করে চীনে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। বিয়ে থেকে শুরু করে নববর্ষ—সব শুভ উপলক্ষেই লাল রং প্রাধান্য পায়। এটি নেতিবাচকতা ও অশুভ শক্তিকে দূরে রাখার শক্তিশালী ঢাল হিসেবেও কাজ করে। এই নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে।

সোনালি

প্রাচুর্য ও ধারাবাহিক সাফল্যের প্রতীক এই রং যুগ যুগ ধরে স্বর্ণ বা মূল্যবান ধাতুর সমার্থক, যা সরাসরি সম্পদ ও ক্ষমতার জানান দেয়। নতুন বছরে যারা ক্যারিয়ার বা ব্যবসায় বিশেষ উন্নতি ও সমৃদ্ধি খুঁজছেন, তাঁদের জন্য সোনালি রঙের পোশাক হবে আত্মবিশ্বাসের এক চমৎকার উৎস।

রুপালি

মানসিক স্বচ্ছতা এবং অন্তর্দৃষ্টির প্রতীক রুপালি রঙের সঙ্গে চাঁদের স্নিগ্ধ আভার সম্পর্ক রয়েছে। অন্ধকারে যেমন চাঁদের আলো পথ দেখায়, তেমনই রুপালি রং প্রতিকূলতার মধ্যেও সঠিক পথ দেখায় বলে মনে করা হয়। ভারসাম্যপূর্ণ ও শান্ত নতুন বছরের জন্য রুপালি রঙের পোশাক বেছে নেওয়া হতে পারে বুদ্ধিমানের কাজ।

প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ
প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ

সবুজ

প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। এটি হঠাৎ আসা কোনো সৌভাগ্য নয়, বরং ধারাবাহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে পাওয়া টেকসই সাফল্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। যাঁরা নতুন বছরে নিজের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপর জোর দিতে চান এবং জীবনে স্থিতিশীল সমৃদ্ধি আনতে চান, তাঁদের পোশাকে সবুজের ছোঁয়া থাকা জরুরি।

নীল

মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে হাজার বছর ধরে নীল রংকে অশুভ দৃষ্টি ও ঈর্ষা থেকে বাঁচার এক শক্তিশালী কবচ হিসেবে দেখা হয়। এ ছাড়া নীল রঙের মাহাত্ম্য মানসিক প্রশান্তি, ভারসাম্য ও স্থিরতার ধারক হিসেবেও রয়েছে। আধুনিক জীবনের চরম অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা কাটিয়ে যাঁরা নতুন বছরে স্থিতিশীল থাকতে চান, নীল রঙের পোশাক হবে তাঁদের জন্য এক ধরনের আশ্রয়ের মতো, যা আপনাকে সুরক্ষার অনুভূতি দিয়ে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

সাদা

সাদা রঙের দুটি বিশেষ দিক রয়েছে। এটি যেমন বিদায়কে সম্মান জানায়, তেমনই নতুনের পবিত্রতাকেও তুলে ধরে। পুরোনো বছরের সব ক্লান্তি মুছে ফেলে যারা একেবারে নতুন করে জীবন শুরু করতে চান, সাদা রং তাদের জন্য সেরা। এটি যেন জীবনের এক ‘ব্ল্যাঙ্ক পেজ’ বা সাদা পাতার মতো, যেখানে আপনি নিজের মতো করে নিজের জীবনের গল্প লিখতে পারবেন।

বেগুনি

ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, বেগুনি রং একসময় সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। এটি শুধু রাজপরিবার, সম্রাট এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের পোশাকের জন্যই বরাদ্দ থাকত। এর মূল কারণ ছিল এই রঙের দুষ্প্রাপ্যতা এবং উচ্চমূল্য। এখনো এই রংকে ক্ষমতা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর ব্যক্তিগত আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবেই দেখা হয়। ২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে এই রং হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ।

সূত্র: গ্ল্যামার ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কফি দিয়ে তৈরি ডেজার্ট দিয়ে শুরু হোক নতুন বছর

ফিচার ডেস্ক
‘কেটো তিরামিসু মুস’ হতে পারে বিকেলের নাশতা বা ডিনারের পর এক দুর্দান্ত ডেজার্ট। ছবি: পেক্সেলস
‘কেটো তিরামিসু মুস’ হতে পারে বিকেলের নাশতা বা ডিনারের পর এক দুর্দান্ত ডেজার্ট। ছবি: পেক্সেলস

আর মাত্র এক দিন পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আমরা কতই না আয়োজন করে থাকি। এর একটি অংশের আয়োজন হয় রান্নাঘরে। অনেক কিছু না হোক, ব্যস্ত জীবন থেকে একটু সময় বের করে প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় খাবার খেয়ে হলেও আমরা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভালোবাসি। কোনো কিছুর শুরু ভালো দিয়ে করতে চাইলে মিষ্টি খাওয়া ভালো। অনেকে এই ধারণায় এখনো বিশ্বাসী। কফি ও মিষ্টি খাবার খেতে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য থাকছে কফি দিয়ে তৈরি কিছু ডেজার্টের রেসিপি।

কফি মাফিন কেক

স্বাস্থ্যকর এবং দারুণ স্বাদের কফি মাফিন হতে পারে আপনার উদ্‌যাপনের সঙ্গী। এর জন্য দরকার—

১ কাপ সাধারণ ময়দা

আধা চা চামচ বেকিং সোডা

এক চিমটি লবণ

স্বাদ বাড়াতে সামান্য দারুচিনি গুঁড়া

১ টেবিল চামচ এসপ্রেসো বা কফি পাউডার

কোয়ার্টার কাপ টক দই

মিষ্টি প্রয়োজনমতো।

কোয়ার্টার কাপ কড়া লিকারের কফি

কোয়ার্টার কাপ সোডা ওয়াটার বা স্পার্কলিং ওয়াটার

মাখন গলিয়ে তাতে কফি বিন ভিজিয়ে রেখে কফি বাটার (ঐচ্ছিক) তৈরি করে নিন।

কফি দিয়ে তৈরি চটজলদি ডেজার্ট দিয়ে স্বাগত জানাতে পারেন নতুন বছরকে। ছবি: পেক্সেলস
কফি দিয়ে তৈরি চটজলদি ডেজার্ট দিয়ে স্বাগত জানাতে পারেন নতুন বছরকে। ছবি: পেক্সেলস

প্রস্তুত প্রণালি

ওভেন ২২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৪২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় প্রি-হিট করতে দিন। মাফিন টিনে সামান্য তেল বা মাখন ব্রাশ করে নিন। একটি বড় পাত্রে আটা, বেকিং সোডা, লবণ, দারুচিনি গুঁড়া এবং কফি পাউডার একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন। আলাদা একটি পাত্রে টক দই, মধু এবং তৈরি করা কড়া লিকারের কফি মিশিয়ে নিন। শুকনো উপকরণের মিশ্রণে দই ও কফির মিশ্রণটি ঢালুন। এরপর এতে সোডা ওয়াটার যোগ করুন। খুব দ্রুত হালকা হাতে মেশান (বেশি ঘুঁটবেন না)। দেরি না করে দ্রুত ব্যাটারটি মাফিন টিনে ঢালুন। প্রথমে ২২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ৫ মিনিট বেক করুন। এরপর তাপমাত্রা কমিয়ে ১৯০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৩৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) করে আরও ৮-১০ মিনিট বেক করুন। একটি কাঠি মাফিনের ভেতর ঢুকিয়ে দেখুন, কাঠি পরিষ্কার বের হয়ে এলে বুঝবেন, মাফিন তৈরি। মাফিনগুলো ঠান্ডা হলে ওপরে কফি-মাখন বা ক্রিম চিজ লাগিয়ে সকালের নাশতায় উপভোগ করুন।

স্বাস্থ্যকর এবং দারুণ স্বাদের কফি মাফিন হতে পারে আপনার উদ্‌যাপনের সঙ্গী। ছবি: পেক্সেলস
স্বাস্থ্যকর এবং দারুণ স্বাদের কফি মাফিন হতে পারে আপনার উদ্‌যাপনের সঙ্গী। ছবি: পেক্সেলস

চকলেট কফি মউজ

মাত্র ৫টি উপকরণ দিয়ে কোনো জেলাটিন বা হেভি ক্রিম ছাড়াই শুধু ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন কফি মউজ। উপকরণসমূহ—

১. ডার্ক চকলেট (৭০-৮০% কোকো হলে ভালো)।

২. ঘরোয়া তাপমাত্রায় থাকা ডিমের সাদা অংশ (ফ্রিজ থেকে ৩০ মিনিট আগে বের করে রাখা)।

৩. ১ টেবিল চামচ ম্যাপেল সিরাপ (মিষ্টি ও ক্যারামেল ফ্লেভারের জন্য)।

৪. আধা কাপ কড়া লিকারের কফি

৫. সাজানোর জন্য টাটকা বা ফ্রোজেন বেরি বা স্ট্রবেরি

প্রস্তুত প্রণালি (মাত্র ১০ মিনিটে)

একটি সস প্যানে অল্প আঁচে চকলেট গলিয়ে নিন। এতে ম্যাপেল সিরাপ ও কফি দিয়ে নাড়ুন। মসৃণ হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন। একটি পরিষ্কার কাচ বা মেটালের পাত্রে ডিমের সাদা অংশগুলো ইলেকট্রিক হুইস্ক দিয়ে বিট করুন, যতক্ষণ না এটি ঘন সাদা ফেনার মতো হয়। এবার গলানো চকলেটের মিশ্রণটি অল্প অল্প করে ডিমের সাদা অংশে যোগ করুন। একটি স্প্যাচুলা দিয়ে আলতো হাতে চকলেট এবং ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিন। খুব জোরে নাড়বেন না, তাহলে ফুরফুরে ভাব নষ্ট হয়ে যাবে। মিশ্রণটি ছোট ছোট গ্লাস বা কাপে ভাগ করে ঢালুন। ফ্রিজে অন্তত ৩০ মিনিট রাখুন। পুরো রাত রাখলে আরও ভালো টেক্সচার আসবে।

মাত্র ৫টি উপকরণ দিয়ে কোনো জেলাটিন বা হেভি ক্রিম ছাড়াই শুধু ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন কফি মউজ। ছবি: দ্য বিগ ম্যান্স ওয়ার্ল্ড
মাত্র ৫টি উপকরণ দিয়ে কোনো জেলাটিন বা হেভি ক্রিম ছাড়াই শুধু ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন কফি মউজ। ছবি: দ্য বিগ ম্যান্স ওয়ার্ল্ড

কেটো তিরামিসু মুস

তিরামিসু নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে। তার মধ্যে একটি হলো তিরামিসু কি আসলে কেক? এর সহজ উত্তর হলো, সঠিক প্রণালিতে তিরামিসু তৈরি করে খেয়ে বোঝা। কেটো ডায়েট যাঁরা অনুসরণ করছেন, তাঁদের জন্য ‘কেটো তিরামিসু মুস’ হতে পারে বিকেলের নাশতা বা ডিনারের পর এক দুর্দান্ত ডেজার্ট। এটি যেমন দেখতে অভিজাত, খেতেও তেমনি ক্রিমি এবং রিচ। এসপ্রেসো কফি, মাস্কারপোন চিজ এবং কোকো পাউডারের স্তরে সাজানো এই মুসটি লো-কার্ব বা কম শর্করাযুক্ত ঘরানার।

প্রস্তুত প্রণালি

একটি বড় পাত্রে চিজ, হেভি হুইপিং ক্রিম, চিনির পরিবর্তে এরিথ্রিটল, এক চিমটি লবণ এবং এসপ্রেসো কফি একসঙ্গে নিন। একটি ইলেকট্রিক বিটার বা হ্যান্ড হুইস্ক দিয়ে মিশ্রণটিকে ততক্ষণ পর্যন্ত বিট করুন, যতক্ষণ না এটি ঘন এবং ফুরফুরে হয়ে ওঠে। এবার পরিবেশনের গ্লাস নিন। প্রথমে কিছুটা মাস্কারপোন মিশ্রণ দিন, তার ওপর সামান্য কোকো পাউডার ছিটিয়ে দিন। এভাবে কয়েকবার স্তর তৈরি করুন। সবশেষে ওপরে সামান্য এসপ্রেসো পাউডার ছিটিয়ে দিন এবং সুন্দর দেখানোর জন্য কয়েকটি কফি বিন বসিয়ে দিন। বানিয়েই পরিবেশন করতে পারেন অথবা ফ্রিজে রেখে কিছুটা ঠান্ডা করে উপভোগ করুন। যাঁরা খুব দ্রুত কিন্তু স্পেশাল কিছু তৈরি করতে চান, তাঁদের জন্য এটি পারফেক্ট। সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশনের গ্লাসে সাজিয়ে নিন এবং ওপরে কিছুটা এসপ্রেসো পাউডার ছিটিয়ে দিন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল চমৎকার স্বাদের এই মিষ্টি পদ। মিষ্টি, ক্রিমি এবং কফির ফ্লেভারের এই মেলবন্ধন এড়িয়ে যাওয়া সত্যিই অসম্ভব।

সূত্র: মাই শেফস এপ্রোন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত