Ajker Patrika

ফিলিস্তিনের সমর্থনে হাল ফ্যাশনে যুক্ত হয়েছে কেফিয়াহ্

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ফিলিস্তিনের কেফিয়াহ্ নামের এই স্কার্ফ লাখ লাখ মানুষের কাছে প্রতিরোধ, স্বাধীনতা ও সাম্যের প্রতীক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ছবি: কোলাজ
ফিলিস্তিনের কেফিয়াহ্ নামের এই স্কার্ফ লাখ লাখ মানুষের কাছে প্রতিরোধ, স্বাধীনতা ও সাম্যের প্রতীক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ছবি: কোলাজ

কেফিয়াহ্, যা বিশ্বজুড়ে কেফিয়েহ, শেমাঘ কিংবা হাত্তা নামে পরিচিত। কেফিয়াহ্ যদিও শেমাঘ থেকে কিছুটা আলাদা। শেমাঘ তুলা ও উলের সুতা দিয়ে বোনা হয় বলে কেফিয়াহ্‌র চেয়ে একটু ভারী। অন্যদিকে প্রতিদিন মাথায় ব্যবহারের উপযোগী কাপড় খণ্ড হিসেবে কেফিয়াহ্ তুলনামূলক হালকা হয়ে থাকে।

এটি মূলত একটি ঐতিহ্যবাহী আরবীয় স্কার্ফ, যার বেশির ভাগ আইকনিক চেকার্ড প্যাটার্নে চোখে পড়ে। ফিলিস্তিনিরা সাধারণত মাথায় জড়িয়ে ব্যবহার করে এই পোশাক অনুষঙ্গটি। তবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে চোখ রাখলে দেখা যায়, সম্প্রতি ফিলিস্তিনের কেফিয়াহ্ নামের এই স্কার্ফ লাখ লাখ মানুষের কাছে প্রতিরোধ, স্বাধীনতা ও সাম্যের প্রতীক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ও স্বাধীনতার প্রতীক কেফিয়াহ্

সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেসের পিকক থিয়েটারে ৭৭তম এমি অ্যাওয়ার্ডসের আসরে অস্কারজয়ী স্প্যানিশ অভিনেতা হাভিয়ের বারদেম লালগালিচায় হাজির হয়েছিলেন ফিলিস্তিনি কেফিয়াহ্ স্কার্ফ গলায় জড়িয়ে। সেখানেই তিনি প্রকাশ্যে বললেন, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি। আমি এমন কারও সঙ্গে কাজ করতে পারব না, যে এই গণহত্যাকে সমর্থন করে বা ন্যায্যতা দেয়।’

অস্কারজয়ী স্প্যানিশ অভিনেতা হাভিয়ের বারদেম। ছবি: কেফিয়াহ্ ডট ওআরজি
অস্কারজয়ী স্প্যানিশ অভিনেতা হাভিয়ের বারদেম। ছবি: কেফিয়াহ্ ডট ওআরজি

গত বছর ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের শেষ দিন ফিলিস্তিনি স্কার্ফ কেফিয়াহ্ দিয়ে তৈরি একটি পোশাকে দেখা দেন বেলা হাদিদ। বরাবরই বেলা ফিলিস্তিনের পক্ষে নিজের শক্ত অবস্থান জানান দিয়ে আসছেন। সেবার ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতীক লাল কেফিয়াহ্‌ দিয়ে বানানো পোশাকে নজর কেড়েছেন তিনি।

শুধু বিশ্ববিখ্যাত তারকাদের কাছেই নয়, গত দুই বছরে আমাদের দেশেও ‘ফিলিস্তিনি রুমাল’ হিসেবে কেফিয়াহ্ স্কার্ফের বিক্রি বেড়েছে। এটি বিশ্বব্যাপী চলমান রাজনৈতিক সংগ্রামে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমর্থনের বিবৃতি হিসেবে অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে; যা ফ্যাশন বিশ্বেও নতুন পালক যোগ করেছে বলে মনে করছেন ফ্যাশন বোদ্ধারা।

কারা ব্যবহার করছে

কেফিয়াহ্ বর্তমানে ইউনিসেক্স ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে ফ্যাশন সচেতন নারী ও পুরুষ উভয়ই ব্যবহার করছে। সাদা-কালো বা লাল-সাদা রঙের মেলবন্ধন ছাড়াও নীল-কালো ও লাল-কমলা-নীলের মেলবন্ধনেও কেফিয়াহ্ পাওয়া যাচ্ছে।

হালফ্যাশনে কেফিয়াহ্‌র ব্যবহার

বিশ্বজুড়ে ফ্যাশনপ্রেমীরা সম্প্রতি কেফিয়াহ্ স্কার্ফ পরা নিজেদের ছবি শেয়ার করার সময়, হ্যাশট্যাগ কেফিয়াহ্ বা হ্যাশট্যাগ ফিলিস্তিন লিখে তারপরই পোস্ট করছেন। হালফ্যাশনে আপনিও যদি কেফিয়াহ্ যোগ করতে চান, তাহলে কয়েকভাবে এটি পরা শিখে নিতে পারেন।

ড্রপ শোল্ডার টি-শার্টের সঙ্গে পঞ্চ স্টাইলে

নারী বা পুরুষ যে কেউই কেফিয়াহ্ পঞ্চ স্টাইলে পরতে পারেন। এতে গলা, ঘাড় ও পিঠ তীব্র তাপ এবং ঠান্ডা বাতাস দুটো থেকেই রক্ষা করা সম্ভব। এই স্টাইলের সঙ্গে যদি ফ্যাশনেবল টুপি যোগ করেন তাহলে আরও স্টাইলিশ দেখাবে।

নারী বা পুরুষ যে কেউই কেফিয়াহ্ পঞ্চ স্টাইলে পরতে পারেন। ছবি: কেফিয়াহ্ ডট ওআরজি
নারী বা পুরুষ যে কেউই কেফিয়াহ্ পঞ্চ স্টাইলে পরতে পারেন। ছবি: কেফিয়াহ্ ডট ওআরজি

যেভাবে পরবেন—

  • কেফিয়াহ্কে ত্রিভুজাকারে ভাঁজ করুন।
  • দুই কোনা কাঁধের ওপর রেখে তৃতীয় কোনাটি বুকের ওপর রাখুন। তারপর কাঁধের ওপর কোনা দুটি এপাশ-ওপাশ করে জড়িয়ে দিন। তাতে দুই কাঁধই ঢাকা থাকবে।

ফ্লোয়ি হেডড্রেস কেফিয়াহ্

ফুলস্লিভ টি-শার্ট ও ডেনিম প্যান্টের ওপর একটু ভিন্ন রঙের কেফিয়াহ্কে ঢিলেঢালা হেডড্রেস হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।

ফ্লোয়ি হেডড্রেস কেফিয়াহ্। ছবি: কেফিয়াহ্ ডট ওআরজি
ফ্লোয়ি হেডড্রেস কেফিয়াহ্। ছবি: কেফিয়াহ্ ডট ওআরজি

যেভাবে পরবেন—

  • কেফিয়াহ্কে ত্রিভুজাকারে ভাঁজ করুন।
  • কোনার দিক মাথার পেছনে দিয়ে সমান অংশ কপাল বরাবর রাখুন। এমনভাবে রাখুন যাতে একপাশের দৈর্ঘ্য অন্য দিকের চেয়ে লম্বা হয়। ছোট দিকটি আপনার বুকের ওপর ঝুলতে দিন। লম্বা দিকটি চুলের নিচ থেকে ঘুরিয়ে এনে মাথার ওপর পিন আপ করে দিন।

হাফ হেড স্কার্ফ কেফিয়াহ্

মাথায় হেডব্য়ান্ডের মতো ছোট্ট রুমাল যাঁরা বেঁধে অভ্যস্ত, তাঁরা রুমালের জায়গায় এবার কেফিয়াহ্ দিয়ে স্টাইলিং করতে পারেন।

যেভাবে পরবেন—

  • মাথার মাঝ বরাবর সিঁথি কেটে নিন।
  • এবার কেফিয়াহ্কে ত্রিভুজাকারে ভাঁজ করুন।
  • কোনার দিক মাথার পেছনে দিয়ে সমান অংশ কপাল বরাবর রাখুন।
  • এবার দুই কানের নিচ পর্যন্ত দুই পাশে কেফিয়াহ্ ধরে চুলের পেছনে ক্লিপ দিয়ে সেট করে নিন।

ক্ল্যাসিক কেফিয়াহ্ নেক র‍্যাপ

কেফিয়াহ্‌ স্কার্ফ পরার সহজ ও ট্রেন্ডি উপায় হলো ঘাড় ও বুকের ওপর রাউন্ড শেপে ঝোলানো। লুকটি যেকোনো ক্যাজুয়াল পোশাকের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যায়।

ক্ল্যাসিক কেফিয়াহ্ নেক র‍্যাপ। ছবি: কেফিয়াহ্ ডট ওআরজি
ক্ল্যাসিক কেফিয়াহ্ নেক র‍্যাপ। ছবি: কেফিয়াহ্ ডট ওআরজি

যেভাবে পরবেন—

  • কেফিয়াহ্কে ত্রিভুজ আকারে ভাঁজ করুন।
  • তিন কোনা অংশ বুকের ওপর রেখে বাকি দুই কোনা ঘাড়ের পেছনে গিঁট দিতে পারেন।
  • অনেকে ঘাড়ের পেছন থেকে দুই কোনা ক্রস করে ঘুরিয়ে এনে বুকের ওপরই ঝুলিয়ে রাখেন। সে ক্ষেত্রে কেফিয়াহ্‌র প্রান্তগুলোয় বসানো ট্যাসেলগুলো বুকের ওপর ঝুলতে থাকে। এতে একরঙা টি-শার্ট, শার্ট বা ফতুয়ার ওপর একটা অন্যরকম লুক তৈরি হয়।

সূত্র ও ছবি: কেফিয়াহ্ ডট ওআরজি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১০ মিনিটের ধ্যানে কমাতে পারে মানসিক চাপ

ফিচার ডেস্ক
ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

বর্তমান জীবনে মানসিক চাপ প্রায় সবার নিত্যসঙ্গী। কাজের চাপ, দ্রুত যোগাযোগ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং সারাক্ষণ মোবাইল ও স্ক্রিনের সঙ্গে থাকা। সব মিলিয়ে আমরা অনেক সময় নিজের জন্য এক মুহূর্তও থামতে পারি না। এর ফল হিসেবে দেখা দেয় অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, মনোযোগের অভাব এবং ঘুমের সমস্যা। এই অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন অল্প সময় ধ্যান করলেই মানসিক চাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

ধ্যান কী এবং কেন এটি সহজ

অনেকেই মনে করেন ধ্যান মানে কঠিন কিছু। বিশেষ ভঙ্গিতে বসতে হয় বা জটিল নিয়ম মেনে চলতে হয়। আসলে বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। ধ্যান খুবই সহজ একটি মানসিক অনুশীলন। ধ্যান বলতে মূলত নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং বর্তমান মুহূর্তে নিজেকে স্থির রাখাকেই বোঝায়। এই সময় কোনো কিছু জোর করে ভাবার দরকার নেই, আবার সব চিন্তা বন্ধ করার চেষ্টাও করতে হয় না। শুধু শান্তভাবে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার দিকে মন দিলেই ধ্যান শুরু হয়ে যায়। ধ্যান করতে কোনো যন্ত্রপাতি লাগে না, বিশেষ পোশাকের প্রয়োজন হয় না এবং এর জন্য আলাদা কোনো খরচও নেই। বয়স, জায়গা বা সময়ের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও কয়েক মিনিট সময় বের করে নেওয়া সম্ভব বলেই ধ্যান আজকের দিনে মানসিক চাপ কমানোর একটি সহজ ও কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

কীভাবে উপকার পাওয়া যায়

অনেকে ভাবেন ধ্যান করতে হলে অনেক সময় দরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত অল্প সময়ই সবচেয়ে কাজে দেয়। ২০২৫ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করে। ধ্যান আমাদের জীবনের গতি একটু কমিয়ে দেয়। এতে আমরা শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাই, চিন্তাগুলো পরিষ্কার করতে পারি এবং মানসিকভাবে নতুন শক্তি ফিরে পাই। এই ছোট বিরতিই মস্তিষ্ককে চাপ সামলাতে সাহায্য করে।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

সকালে ধ্যান করলে কেন বেশি লাভ

দিনের শুরুটা যেমন হয়, অনেক সময় পুরো দিনটাই তেমন কাটে। সকালে মাত্র ১০ মিনিট ধ্যান করলে মন শান্ত থাকে এবং অকারণ দুশ্চিন্তা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধ্যানের সময় সচেতনভাবে শ্বাস নেওয়ার ফলে শরীরের স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে। এর প্রভাব সারা দিন থাকে। নিয়মিত সকালে ধ্যান করলে ধীরে ধীরে শান্ত থাকা মানুষের স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত হয়।

ধ্যান ও মনোযোগের সম্পর্ক

বর্তমানে অনেকে মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যায় ভোগেন। পড়াশোনা বা কাজে বসলে মন স্থির থাকে না, অল্প সময়ের মধ্যেই চিন্তা অন্যদিকে চলে যায়। নানা দুশ্চিন্তা আর কাজের চাপের কারণে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ধ্যান করলে মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখা, চিন্তাভাবনা করা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার অংশ সক্রিয় হয়। এর ফলে বিভ্রান্তি কমে, মাথার ভেতরের অগোছালো চিন্তাগুলো ধীরে ধীরে দূর হতে থাকে। ধ্যানের অভ্যাস গড়ে উঠলে কাজে মন বসানো সহজ হয়, দীর্ঘ সময় একাগ্রতা বজায় থাকে এবং কাজের মান ও দক্ষতা দুটোই বাড়ে।

ধ্যান শুরু করবেন কীভাবে

ধ্যান শুরু করতে কোনো বিশেষ জ্ঞান বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। আরাম করে বসে বা শুয়ে চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার দিকে মন দিলেই যথেষ্ট। মনে অন্য চিন্তা এলে বিরক্ত না হয়ে আবার শ্বাসের দিকে মন ফেরাতে হয়। প্রতিদিন নিয়ম করে মাত্র ১০ মিনিট সময় দিলেই ধীরে ধীরে এর সুফল বোঝা যায়।

ধ্যান কোনো জাদু নয়, আবার জটিল কিছুই নয়। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও প্রতিদিন নিজের জন্য ১০ মিনিট সময় বের করে নেওয়াই হতে পারে মানসিক চাপ কমানো, মন শান্ত রাখা এবং সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনে ফেরার একটি সহজ উপায়।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বর্ষবরণের পানীয় হোক স্ট্রবেরি লেমোনেড

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২০
ছবি: মরিয়ম হোসেন নূপুর।
ছবি: মরিয়ম হোসেন নূপুর।

নতুন বছর বরণ করার সময় চলে এসেছে। রাত ১২টার ঘণ্টা জানান দেবে ২০২৬-এর আগমন। বছরের প্রথম দিনে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া তো হবেই। এসব খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি লাল পানীয়। আপনাদের জন্য স্ট্রবেরি লেমোনেডের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর

উপকরণ

স্ট্রবেরি ২টি, পানি ১/৪ কাপ, লেবুর রস ২ চা চামচ, সোডা ওয়াটার ৩/৪ কাপ, সুগার সিরাপ ২ চা চামচ, পুদিনা পাতা ১ টেবিল চামচ।

প্রণালি

স্ট্রবেরি পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিতে হবে। একটি গ্লাসে পুদিনা পাতা দিয়ে একটু থেঁত করে নিয়ে এরপর এতে লেবুর রস, ছেঁকে রাখা স্ট্রবেরি জুস এবং সুগার সিরাপ মিশিয়ে নিতে হবে। পরিবেশনের আগে সোডা ওয়াটার মিশিয়ে নিতে হবে। সবশেষে লেবুর টুকরা এবং বরফ দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেনাকাটার আসক্তি দূর করবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক
ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

কেনাকাটা করতে সবাই ভালোবাসে। নতুন জামা, দরকারি জিনিস বা পছন্দের কিছু কিনলে মন ভালো হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কেউ প্রয়োজন না থাকলেও বা টাকা নেই জেনেও বারবার কেনাকাটা করতে থাকে, তখন সেটি আর শখ থাকে না। তখন সেটি কেনাকাটার আসক্তিতে পরিণত হয়।

এই সমস্যা মানুষ বুঝতে পারে। কেনাকাটা করা ঠিক হচ্ছে না জেনেও নিজেকে থামাতে পারে না। ধীরে ধীরে এতে আর্থিক চাপ, ঋণ আর মানসিক অশান্তি বাড়তে থাকে।

কেনাকাটার আসক্তি আসলে কী?

কিছু কিনলে হঠাৎ আনন্দ অনুভব করেন অনেকে। সেই আনন্দ আবার পেতে বারবার কেনাকাটা করা একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। কেউ নির্দিষ্ট জিনিসে আসক্ত হয় যেমন জামাকাপড়, গয়না, মোবাইল বা প্রসাধনী। আবার কেউ যা চোখে পড়ে তাই কিনে ফেলে। যেমন খাবার, অপ্রয়োজনীয় জিনিস, এমনকি জমি বা শেয়ারও।

অনেক সময় মানসিক চাপ, দুঃখ, একাকিত্ব বা রাগ থেকে মুক্তি পেতেই মানুষ কেনাকাটার দিকে ঝোঁকে। কিন্তু কেনাকাটার আনন্দটা খুব অল্প সময়ের হয়। পরে আফসোস হয় এবং ঋণের বোঝা বাড়ে।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

কী কী লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?

  • কেনাকাটার আসক্তি অনেক সময় গোপন থাকে। বাইরে থেকে বোঝা নাও যেতে পারে। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ আছে—
  • প্রায়ই কেনাকাটার চিন্তা মাথায় ঘুরতে থাকে
  • মন খারাপ বা চাপের সময় বাজারে ঢুকে পড়া
  • প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও জিনিস কেনা
  • কেনা জিনিস ব্যবহার না করেই পড়ে থাকা
  • ক্রেডিট কার্ডের সীমা বারবার শেষ হয়ে যাওয়া
  • পুরোনো ঋণ শোধ না করেই নতুন কার্ড নেওয়া
  • কেনাকাটার পর অল্প সময় খুব আনন্দ পাওয়া
  • পরে অনুশোচনা হওয়া, কিন্তু আবার একই কাজ করা
  • টাকা বা কেনাকাটার কথা লুকানো, মিথ্যা বলা
  • বারবার চেষ্টা করেও কেনাকাটা কমাতে না পারা

এই লক্ষণগুলো দীর্ঘদিন চললে সেটি গুরুতর সমস্যায় রূপ নিতে পারে।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

এর সমাধান কী?

কেনাকাটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ, জীবনের জন্য কেনাকাটা দরকার। তাই সমাধান হলো নিয়ন্ত্রণ শেখা।

  • অনেক ক্ষেত্রে শুরুতে—
  • কার্ড বা নগদ টাকার ব্যবহার সীমিত করা
  • পরিবারের কাউকে সাময়িকভাবে টাকা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া

খুব কাজে আসে কাউন্সেলিং বা আচরণগত থেরাপি।

থেরাপির মাধ্যমে মানুষ শেখে—

  • হঠাৎ কেনাকাটার ইচ্ছা কীভাবে থামাতে হয়
  • কোন পরিস্থিতিতে কেনাকাটা করতে মন চায় তা চিনতে
  • কেনাকাটার বদলে চাপ সামলানোর নতুন উপায়
  • সমস্যার পেছনে লুকানো মানসিক কষ্ট বুঝতে

সহায়তা কোথায় পাওয়া যায়?

অনেক দেশে এবং অনলাইনে কেনাকাটার নেশা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে অর্থ ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মানুষকে আয়-ব্যয়ের হিসাব করা, বাজেট তৈরি করা এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায়। পাশাপাশি পুনরুদ্ধার প্রোগ্রাম রয়েছে, যেখানে একই সমস্যায় ভোগা মানুষ একে অপরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। এতে একাকিত্ব কমে এবং মানসিক সাহস পাওয়া যায়। আর যদি ঋণের পরিমাণ খুব বেশি হয়ে যায়, তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে ঋণ পরামর্শক সংস্থা বা অভিজ্ঞ আর্থিক পরামর্শকের সহায়তা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে ওঠে।

ভবিষ্যৎ কী?

যদি সময়মতো সাহায্য নেওয়া যায়, তাহলে এই সমস্যা থেকে বের হওয়া সম্ভব। মাঝেমধ্যে আবার পুরোনো অভ্যাস ফিরে আসতে পারে, এটা স্বাভাবিক। তবে সঠিক সহায়তা থাকলে আবার নিয়ন্ত্রণে ফেরা যায়।

কেনাকাটার আসক্তি ধীরে ধীরে মানুষকে ঋণ, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের দিকে নিয়ে যায়। শুরুতে বিষয়টি তেমন গুরুতর মনে না হলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি জীবনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। তবে সচেতনতা, পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তা এবং প্রয়োজনে পেশাদার সাহায্য নিলে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে এসে আবার সুস্থ, নিয়ন্ত্রিত ও শান্ত জীবনে ফিরে আসা সম্ভব।

সূত্র: হেলথলাইন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বর্ষবরণে যেসব শুভ রঙে নিজেকে সাজাতে পারেন

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১৭
২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে বেগুনি রঙের পোশাক হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ
২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে বেগুনি রঙের পোশাক হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ

পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপারটি সত্যিই বিশেষ। একটি বছর ঘুরে যখন নতুন বছর আসে, তখন আমাদের মনে জাগে একরাশ প্রত্যাশা। এই নতুন সময়ে আমরা বেশ কিছু ছোট ছোট কাজ করে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। বছরের প্রথম দিন প্রতিটি কাজই আমরা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যাতে পুরো বছরে তার একটা রেশ থাকে। পোশাকের রং নির্বাচনের বেলায়ও কিন্তু এ কথাটা খাটে। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, আসছে বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে পৃথিবীর ওপর সূর্যের প্রভাব থাকবে। ফলে কয়েকটি শুভ রঙের পোশাক আলমারিতে রাখলে পুরো বছরটাই চনমনে কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। কয়েকটি বিশেষ রংকে শক্তি, সুরক্ষা ও সমৃদ্ধির প্রতীক বলে মনে করা হয়। তবে পোশাকের রং নির্বাচনের মাধ্যমেই যে আপনি সফল হয়ে যাবেন, বিষয়টা এমন নয়। বরং, এই প্রতীকী ভঙ্গিটি আপনার মানসিক সংকল্পকে দৃঢ় করবে। ২০২৬ সালকে বরণ করতে যে ৭টি রং আপনার জীবনে শুভ বার্তা নিয়ে আসতে পারে, তা নিয়েই আজকের এই ফিচার।

নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ
নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ

যেসব রঙের পোশাক আলমারিতে রাখতে পারেন

লাল

জীবনীশক্তি ও সুরক্ষার প্রতীক লাল রংকে এশিয়ান সংস্কৃতিতে বিশেষ করে চীনে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। বিয়ে থেকে শুরু করে নববর্ষ—সব শুভ উপলক্ষেই লাল রং প্রাধান্য পায়। এটি নেতিবাচকতা ও অশুভ শক্তিকে দূরে রাখার শক্তিশালী ঢাল হিসেবেও কাজ করে। এই নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে।

সোনালি

প্রাচুর্য ও ধারাবাহিক সাফল্যের প্রতীক এই রং যুগ যুগ ধরে স্বর্ণ বা মূল্যবান ধাতুর সমার্থক, যা সরাসরি সম্পদ ও ক্ষমতার জানান দেয়। নতুন বছরে যারা ক্যারিয়ার বা ব্যবসায় বিশেষ উন্নতি ও সমৃদ্ধি খুঁজছেন, তাঁদের জন্য সোনালি রঙের পোশাক হবে আত্মবিশ্বাসের এক চমৎকার উৎস।

রুপালি

মানসিক স্বচ্ছতা এবং অন্তর্দৃষ্টির প্রতীক রুপালি রঙের সঙ্গে চাঁদের স্নিগ্ধ আভার সম্পর্ক রয়েছে। অন্ধকারে যেমন চাঁদের আলো পথ দেখায়, তেমনই রুপালি রং প্রতিকূলতার মধ্যেও সঠিক পথ দেখায় বলে মনে করা হয়। ভারসাম্যপূর্ণ ও শান্ত নতুন বছরের জন্য রুপালি রঙের পোশাক বেছে নেওয়া হতে পারে বুদ্ধিমানের কাজ।

প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ
প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ

সবুজ

প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। এটি হঠাৎ আসা কোনো সৌভাগ্য নয়, বরং ধারাবাহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে পাওয়া টেকসই সাফল্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। যাঁরা নতুন বছরে নিজের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপর জোর দিতে চান এবং জীবনে স্থিতিশীল সমৃদ্ধি আনতে চান, তাঁদের পোশাকে সবুজের ছোঁয়া থাকা জরুরি।

নীল

মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে হাজার বছর ধরে নীল রংকে অশুভ দৃষ্টি ও ঈর্ষা থেকে বাঁচার এক শক্তিশালী কবচ হিসেবে দেখা হয়। এ ছাড়া নীল রঙের মাহাত্ম্য মানসিক প্রশান্তি, ভারসাম্য ও স্থিরতার ধারক হিসেবেও রয়েছে। আধুনিক জীবনের চরম অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা কাটিয়ে যাঁরা নতুন বছরে স্থিতিশীল থাকতে চান, নীল রঙের পোশাক হবে তাঁদের জন্য এক ধরনের আশ্রয়ের মতো, যা আপনাকে সুরক্ষার অনুভূতি দিয়ে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

সাদা

সাদা রঙের দুটি বিশেষ দিক রয়েছে। এটি যেমন বিদায়কে সম্মান জানায়, তেমনই নতুনের পবিত্রতাকেও তুলে ধরে। পুরোনো বছরের সব ক্লান্তি মুছে ফেলে যারা একেবারে নতুন করে জীবন শুরু করতে চান, সাদা রং তাদের জন্য সেরা। এটি যেন জীবনের এক ‘ব্ল্যাঙ্ক পেজ’ বা সাদা পাতার মতো, যেখানে আপনি নিজের মতো করে নিজের জীবনের গল্প লিখতে পারবেন।

বেগুনি

ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, বেগুনি রং একসময় সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। এটি শুধু রাজপরিবার, সম্রাট এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের পোশাকের জন্যই বরাদ্দ থাকত। এর মূল কারণ ছিল এই রঙের দুষ্প্রাপ্যতা এবং উচ্চমূল্য। এখনো এই রংকে ক্ষমতা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর ব্যক্তিগত আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবেই দেখা হয়। ২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে এই রং হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ।

সূত্র: গ্ল্যামার ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত