Ajker Patrika

যে আবিষ্কারগুলো বদলে দিয়েছে বিশ্ব

মৃত্তিকা পণ্ডিত
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২১, ২০: ০৪
যে আবিষ্কারগুলো বদলে দিয়েছে বিশ্ব

এ পৃথিবীতে মানুষের বয়স তো কম হলো না। সেই অনিশ্চিত যাযাবর জীবন থেকে আজকের ব্যক্তিসর্বস্ব জীবনে নিজের রূপান্তর একদিনে হয়নি। মানুষের জীবনের এই রূপান্তরে চাকা বা আগুনের গল্প তো ঢের হলো। ইতিহাসের পাথর খুড়ে বের হয়েছে এমন হাজারটা আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের কথা, যা মানুষের গল্পে নতুন নতুন বাঁক এনে দিয়েছে। ইতিহাসের নানা বাঁক ঘুরে একসময় মানুষ পা রাখল আধুনিক যুগে। এ এক বিরাট উত্তরণ। কিন্তু এই যুগের শুরুর সাথে এখনকার পার্থক্য বিস্তর। এই যুগেও এমন কিছু আবিষ্কার আছে, যা মানুষকে এগিয়ে দিয়েছে অনেকটা। ওয়ার্ল্ড এক্সপোর গত ১৭০ বছরের ইতিহাসে বাঁকবদল এনে দেওয়া এমন বেশ কিছু আবিষ্কারের কথা তুলে এনেছে সিএনএন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে ওয়ার্ল্ড এক্সপোর ইতিহাসে আলোড়ন তোলা নানা আবিষ্কার ও পণ্য এবং পরে মানুষের ইতিহাস বদলে দেওয়ায় এসবের প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। আজ থেকে ১৭০ বছর আগে ১৮৫১ সালে লন্ডনে আয়োজিত হয় লন্ডন’স গ্রেট এক্সিবিশন। তারপর থেকে প্রতি পাঁচ বছর পর এমন আয়োজন হচ্ছে একেকবার একেক দেশে। এবার যেমন এমন মেলা বসেছে দুবাইয়ে, যা গত বছরের অক্টোবরে শুরু হয়েছি। এই বিশ্বমেলাগুলোর মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসী পরিচিত হয়েছে এমন সব পণ্য ও ধারণার সঙ্গে, যা ছাড়া এখন একটি দিনও হয়তো কল্পনা করা সম্ভব নয়। অথচ সত্য হচ্ছে, এসব পণ্য ছাড়াও মানুষ একসময় চলেছে। যেমন ১৯৭০ সালের আগে আজকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠা মোবাইল ফোন বস্তুটি ছিল না। আর ১৯০১ সালের আগে ছিল না কোনো এক্স–রে মেশিন।

লন্ডনে ১৮৫১ সালে যে গ্রেট এক্সিবিশনের আয়োজন হয়েছিল তা–ই ক্রমে ওয়াল্ড এক্সপোতে রূপ নিয়েছে। খাঁটি বাংলায় বিশ্বমেলা। এই মেলায় উঠে আসা নানা আবিষ্কার পরে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়। এর মধ্যে কিছু কিছু এতটাই প্রভাবশালী হয়ে ওঠে যে, মানুষের জীবনধারাই বদলে দেয় এগুলো। ওয়ার্ল্ড এক্সপোয় উঠে আসা নানা আবিষ্কার পরিবহন থেকে শুরু করে চারুকলা কিংবা বাণিজ্যসহ সবকিছুতেই এক রকম বিপ্লব এনে দিয়েছে।

সর্বশেষ ওয়াল্ড এক্সপো আয়োজিত হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই), যা মধ্যপ্রাচ্যে হওয়া প্রথম এমন কোনো ইভেন্ট। সর্বশেষ এই এক্সপোয় কী এল, তার হিসাব নেওয়ার আগে দেখা যাক এই আয়োজনের ১৭০ বছরে বিশ্ব কী পেল।

ক্রিস্ট্রাল প্যালেস
ক্রিস্টাল প্যালেস ছিল ১৮৫১ সালের বৃহত্তম কাচের ভবন। এর প্রদর্শন ছিল ১৮৫১ সালে লন্ডনের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী। ৬০ লাখেরও বেশি লোক লন্ডনের হাইড পার্কে এই সংরক্ষণাগারটিতে গিয়েছিলেন।
ক্রিস্টাল প্যালেস মডিউলার নির্মাণ ও আজকের কাচের ভবন তৈরির ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল।

সিঙ্গার সেলাই মেশিন
সাধারণ মানুষের ব্যবহারবান্ধব সেলাই মেশিন তৈরি হয় ১৯ শতকের গোড়ার দিকে। এই আবিস্কারের পর টেক্সটাইল শিল্প অভাবিতভাবে এগিয়ে যায়। ঘটনাটি বেশ মজার। বর্তমান যে হাতে চালানো সেলাই মেশিন দেখা যায়, তার শুরুটা হয়েছিল আইজ্যাক মেরিট সিঙ্গারের হাতে। চেনা গেল? হ্যাঁ, সিঙ্গার মেশিন। এখন যা একটি ব্র্যান্ড, তার শুরুটা মূলত এই আইজ্যাক মেরিট সিঙ্গারের হাতে। ১৮৫১ সালে ম্যাসাচুসেটসের বোস্টনে সিঙ্গারকে ডাকা হয় একটি সেলাই মেশিন মেরামতের জন্য। সেই মিশেনটির নকশাকার ছিলেন লিরো ও ব্লোজেট। পুরো বিষয়টি দেখেশুনে সিঙ্গার বুঝলেন নকশায় বড় ধরনের গলদ রয়েছে। নিজেই করে ফেললেন নতুন নকশা, যা বিশ্বের সেলাইয়ের ইতিহাসটিই বদলে দিল। তারপর পেটেন্ট নিয়ে ঝামেলা শেষে পরের প্যারিস এক্সপোয় তুললেন মেশিনটি। ব্যাস, হয়ে গেল। সেই থেকে চলছে হাতে চালিত সেলাই মেশিনের চাকা।

প্লাস্টিক
পরিবেশের কথা উঠলেই প্লাস্টিকের বদনাম। কিন্তু ভাবুন আজকের একটি প্লাস্টিকবিহীন দিন। ভাবুন এই পদার্থটি না থাকলে কত দামে কী কী কিনতে হতো আপনাকে। কৃত্রিম প্লাস্টিকের যাত্রা শুরু ১৮৬২ সালে। একেবারে সুনির্দিষ্ট করে বলবার সুযোগ নেই অবশ্য। যেমন সুযোগ নেই সুনিশ্চিত করে এর আবিষ্কারকের নামটি বলার। মোটাদাগে ১৮৬০ ও ৭০–এর দশকে প্রথম কৃত্রিম প্লাস্টিক সেলুলয়েডের আবিষ্কার। যুক্তরাষ্ট্রের জন ওয়েসলি হ্যাট বা ইংরেজ উদ্ভাবক আলেক্সান্ডার পার্কসকে কৃত্রিম প্লাস্টিক আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেওয়া হয়। ১৮৬২ সাল তবে কেন? হ্যাঁ ওই বছর লন্ডনে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে পার্কস নিয়ে এলেন নিজের তৈরি পার্কেসাইন। আর এর মধ্য দিয়েই শুরু হলো বলা যায় আজকের গণ উৎপাদনের ধারণার। একই নামে পার্কস একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করলেও তা টেকেনি। কিন্তু বহাল তবিয়তে টিকে আছে তাঁর আনা প্লাস্টিকের ধারণা।

ওয়াশিং মেশিন
রিচার্ড ল্যানসডেল ১৮৬২ সালের ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে যখন তাঁর ওয়াশিং মেশিনটি উপস্থাপন করেছিলেন, তখন তিনি কল্পনাও করতে পারেননি যে উত্তরসূরীদের পারিবারিক জীবনে এ ঘূর্ণায়মান যন্ত্রটি কতটা অপরিহার্য হয়ে উঠবে। ওই মেশিনটি অবশ্য হাতে মানুষকেই চালাতে হতো। কিন্তু ২০ শতকের ইলেকট্রিক ওয়াশিং মেশিনের ভিতটি গড়ে দিয়েছিলেন ল্যানসডেলই। তাই ওয়াশিং মেশিনে কাপড় দিয়ে চা খেতে খেতে খবরের কাগজটি হাতে তুলে নেওয়ার আগে অন্তত একবার ল্যানসডেলকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিন।

ইঞ্জিন
অন্তর্দহ ইঞ্জিন। ১৮৬০ সালে বেলজিয়ামের উদ্ভাবক এতিয়েঁ লেনোয়াঁ যখন বাস্প ইঞ্জিনের বদলে অন্য কোনো জ্বালানিতে চলতে সক্ষম এই ইঞ্জিনের খোঁজ দিলেন, তখন হয়তো তিনি নিজেও জানতেন না কতটা বদলের খোঁজ দিলেন তিনি। সে সময় যে দুই ধাপের (টু–স্ট্রোক) ইঞ্জিন তিনি নিয়ে এলেন, তার কর্মদক্ষতা ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। কিন্তু এত কম দক্ষতাও এর জনপ্রিয়তার পথে বাধা হতে পারেনি। দু বছর পর আয়োজিত ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে তিনি তুললেন এটি। তারপর ইতিহাস।

টেলিফোন
ফিলাডেলফিয়ায় ১৮৭৬ সালে অনুষ্ঠিত মেলার বড় চমক ছিল টেলিফোন। স্কটিশ উদ্ভাবক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল এক্সপোতে এই যন্ত্রের প্রদর্শন করেছিলেন। এর দুটি প্রান্ত ছিল—ট্রান্সমিটার ও রিসিভার। যখন কেউ ট্রান্সমিটারে কথা বলত, তখন শব্দটির কম্পনগুলি বৈদ্যুতিন প্রবাহে রূপান্তরিত হয়ে তারের মাধ্যমে রিসিভারে যেত। ফলে এক পাশে কথা বললে অন্য পাশে তা শোনা যেত। টেলিফোনের আবিষ্কার আমাদের জীবনের দূরত্বকে ঘুচিয়ে দিয়েছে। কে জানত এই প্রদর্শনের প্রায় শত বছর পর এমনই আরেক যোগাযোগ যন্ত্র হাজির হবে অন্য দেশে আয়োজিত কোনো মেলায়, যা পুরো যোগাযোগের ধারণাটিকেই খোলনলচে বদলে দেবে।

বিদ্যুৎ
বিদ্যুৎ ছাড়া একটা দিনও কি এখন কল্পনা করা যায়। কিন্তু মানুষের ইতিহাসে বিদ্যুতের গল্প তো এই সেদিনের। থমাস আলভা এডিসন ১৮৭৯ সালে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে বাল্ব আবিষ্কার করেছিলেন, যার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন ছিল। এডিসন ও ওয়েস্টিংহাউস তাঁদের সিস্টেম এক্সপোতে ১৮৯৩ সালে সফলভাবে শিকাগোকে এর ব্যবহার শুরু করেন, যা আমাদের জীবন আমূল বদলে দিল।

আধুনিক গাড়ি
টয়োটা প্রাইসের প্রায় এক শতাব্দী আগে এবং টেসলা প্রতিষ্ঠার ১০৩ বছর আগে লুডভিগ লোহনার ও ফার্ডিনান্ড পোরশে তাঁদের বৈদ্যুতিক মোটরচালিত গাড়ি নিয়ে ১৯০০ সালের ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে এসেছিলেন, যা পৃথিবীর গতিকে বাড়িয়ে দিয়েছে। আজকের অটোমোবাইল শিল্প যে জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে, তার গোড়াপত্তনটি হয়েছিল এই বৈদ্যুতিক গাড়ি দিয়েই।

এক্স-রে মেশিন
বর্তমানে আমরা বেশিরভাগই এক্স-রে মেশিনের সঙ্গে পরিচিত। প্রথম সেন্ট লুইতে ১৯০৪ সালের এক্সপোতে মানুষ এর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল। তার আগের এক দশকের শ্রম জড়িয়ে আছে এর সঙ্গে। জার্মান বিজ্ঞানী উইলহেম রন্টজেন ১৮৯৫ সালে হঠাৎ করে আবিষ্কার করে বসেন রঞ্জন রশ্মী বা বহুল পরিচিত এক্স–রে, যা তাঁকে ১৯০১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম নোবেলবিজয়ীর সম্মান এনে দেয়।

হ্যামবার্গার
সেন্ট লুইসে ১৯০৪ সালের ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে প্রথম হ্যামবার্গার প্রদর্শিত হয়। শিল্পবিপ্লবের ফল হিসেবে এই ফাস্টফুডের মঞ্চে আবির্ভাবের বিষয়টি সময়ের ব্যাপার ছিল মাত্র। খাবারকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল এই হ্যামবার্গার। আজকের এই ফাস্টফুড দুনিয়ার যে বাড়বাড়ন্তি তার শুরুটা এর হাত ধরেই হয়েছিল বললে, তেমন অত্যুক্তি হবে না।

টেলিভিশন সম্প্রচার
টেলিভিশন সম্প্রচার ১৯৩৯ সালে গণযোগাযোগের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সৃষ্টি করে। যুক্তরাষ্ট্রের রেডিও করপোরেশন (আরসিএ) প্যাভিলিয়ন প্রথম এটি নিয়ে আসে। যদিও সে সময়ের টিভি সেটগুলোর মূল্য তখন বেশি ছিল। তা তো থাকবেই। কারণ, এই বঙ্গদেশেই তো এমনকি নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত টেলিভিশনের লাইসেন্স নবায়নের এক ধরনের বাধ্যবাধকতা ছিল। খুব কম লোকই এই বাধ্যবাধকতা মেনে চললেও এমন বিধির অস্তিত্বই বলে দেয় মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে গণযোগাযোগের ক্ষেত্রে কতটা অগ্রগতি হয়েছে। ১৯৩৯ সালে প্রথম টেলিভিশন সম্প্রচারটি করেছিল এনবিসি, যা ধারণ করা হয়েছিল নিউইয়র্কের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে। সে সময় পৃথিবীর রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্কে টিভিসেট ছিল ১০০টিরও কম।

ভয়েস রিকগনিশন প্রযুক্তি
আধুনিক আড়িপাতা যন্ত্রের উত্থানটি যে প্রযুক্তির হাত ধরে হয়েছিল, তা প্রথম প্রদর্শিত হয়েছিল ১৯৬২ সালের সিয়াটল ওয়ার্ল্ড’স ফেয়ারে। সেবারের মেলায় বিশ্বখ্যাত কোম্পানি আইবিএমের প্রকৌশলী উইলিয়াম ডার্শ জুতোর বাক্স আকৃতির একটি যন্ত্র নিয়ে আসেন। দেখতে নিরীহ এই যন্ত্র ১৬টি শব্দ চিনতে পারত এবং সেই শব্দের সূত্র ধরে সঠিক অঙ্ক কষে উত্তর দিতে পারত। সে সময়ই বিজ্ঞানীরা ভিবষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, একদিন হয়তো এ যন্ত্র আড়িপাতার কাজে ব্যবহৃত হবে। বিজ্ঞানীরা আদতেই আগেভাগে ভবিষ্যৎ দেখতে পাওয়া লোক।

চাকাহীন ট্রেন
নাম লেভাট্রেন। ১৯৬২ সালের এক্সপোতে এই নামেরই এক চাকাহীন ট্রেন নিয়ে এল ফোর্ড কোম্পানি। চৌম্বকীয় শক্তি দিয়ে চালিত এই ট্রেনই আজকের গতির দুনিয়ার অন্যতম আশ্রয়স্থল।

ইউরি গ্যাগারিন, মহাকাশে প্রথম মানুষ
মহাশূন্যে প্রথম মানুষ ইউরি গ্যাগারিন। মহাশূন্যের অভিজ্ঞতা নিতে যাত্রী হিসেবেই শুধু মহাশূন্যে গেলেও এটা এক বড় ঘটনার জন্ম দেয়। কারণ, এর মধ্য দিয়ে মহাশূন্যে মানুষের টিকে থাকার উপযোগী ক্যাপস্যুলের কার্যকারিতা এ থেকে প্রমাণিত হয়েছিল।

রেডিও-নিয়ন্ত্রিত ঘড়ি
সিকোর রেডিও-নিয়ন্ত্রিত ঘড়ি (আরসিসি) সিস্টেমটি জাপানের অভিনব একটি আবিষ্কার, যা ১৯৭০ সালের এক্সপোতে প্রদর্শিত হয়েছিল। প্রতি হাজার বছরে এক সেকেন্ডের ত্রুটির হারের সঙ্গে একটি পারমাণবিক মাস্টার ক্লক জুড়ে দিয়ে প্রদর্শনস্থলের চারপাশে ১১০টি ঘড়িতে তারহীন রেডিও তরঙ্গ পাঠিয়ে সময় প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ফলে যে যেখানেই থাকুক না কেন, একই সময় দেখতে পেত। আজকের জিপিএস প্রযুক্তির যুগেও এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। এখনো সুনির্দিষ্ট ও সঠিক সময় পেতে নানা ডিভাইসের সঙ্গে এই আরসিসি বা রেডিও নিয়ন্ত্রিত ঘড়ি সংযুক্ত রাখা হয়।

তারবিহীন ফোন
জাপানের ওসাকায় অনুষ্ঠিত ১৯৭০ সালের এক্সপোর ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশনস প্যাভিলিয়নে গেলে যে কেউ প্লাস্টিকের ছোট ছোট দোলনায় বসে সেখানে সংযুক্ত তারহীন ফোনে জাপানের যেকোনো অঞ্চলে কথা বলতে পারত। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন আজকের মোবাইল ফোনের আদিমাতার কথঅই বলা হচ্ছে। সে সময় বসে কে আর ভেবেছিল—একদিন মোবাইল ব্যবহারকারী হিসেবে নিবন্ধনের সংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে।

প্রথম তারবিহীন ফোন। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবুধাবি ভ্রমণের আগে যা জানা জরুরি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সামান্য প্রস্তুতি ও সচেতনতা থাকলে আবুধাবি ভ্রমণ হয়ে উঠতে পারে স্মরণীয় ও ঝামেলামুক্ত। ছবি: উইকিপিডিয়া
সামান্য প্রস্তুতি ও সচেতনতা থাকলে আবুধাবি ভ্রমণ হয়ে উঠতে পারে স্মরণীয় ও ঝামেলামুক্ত। ছবি: উইকিপিডিয়া

সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আধুনিক স্থাপনা ও অতিথিপরায়ণ মানুষের জন্য আবুধাবি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আকর্ষণীয় শহর হিসেবে পরিচিত। মরুভূমির বিস্তীর্ণ প্রান্তর, নীল সমুদ্র, আধুনিক আকাশচুম্বী ভবন আর প্রাচীন ঐতিহ্যের মেলবন্ধনের কারণে এই শহর পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এখানকার মানুষজন সাধারণত বন্ধুবৎসল, যা পর্যটকদের অভিজ্ঞতাকে আরও সুন্দর করে তোলে। তবে এই বৈচিত্র্যময় শহরের ভ্রমণ যেন নির্বিঘ্ন ও আনন্দদায়ক হয়, সে জন্য স্থানীয় সংস্কৃতি, সামাজিক আচরণ এবং কিছু নিয়মকানুন সম্পর্কে আগেভাগে ধারণা রাখা জরুরি। সামান্য প্রস্তুতি ও সচেতনতা থাকলে আবুধাবি ভ্রমণ হয়ে উঠতে পারে স্মরণীয় ও ঝামেলামুক্ত।

ভ্রমণ পরিকল্পনা

কমপক্ষে চার দিন সময় রাখুন: সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় রাজ্য হলো আবুধাবি। রাজধানী শহরের আধুনিক জীবনধারার পাশাপাশি এই রাজ্যে রয়েছে বিস্তৃত মরুভূমি, পাহাড়ি অঞ্চল, দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত এবং প্রায় ২০০ ছোট-বড় দ্বীপ। এই বৈচিত্র্যই আবুধাবিকে আলাদা করে তুলেছে। দ্রুত দেখে নেওয়ার চেয়ে সময় নিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দেখলেই এখানকার প্রকৃত সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব। এ জন্য হাতে চার দিন সময় রাখা ভালো। তাতে ঘুরে ঘুরে দেখা যাবে অনেক কিছু।

বাইরের কাজে উপযোগী পোশাক নিন: এখানে সাইক্লিং, কায়াকিং, মরুভূমি ভ্রমণ বা গলফ খেলার সুযোগ আছে। তাই আরামদায়ক পোশাক, জুতা ও টুপি রাখুন সঙ্গে। নভেম্বর থেকে মার্চে হালকা জ্যাকেট কাজে আসে, আর গ্রীষ্মে সুতি বা লিনেন কাপড় ভালো।

যাতায়াত ব্যবস্থা

ট্যাক্সি অ্যাপ ডাউনলোড করুন: আবুধাবিতে ট্যাক্সি অ্যাপ ব্যবহার করলে সহজে ট্যাক্সি পাওয়া যায়, তীব্র গরমে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। সারা দেশে চলাচলের জন্য ‘করিম’ নামের অ্যাপটি বেশ জনপ্রিয়।

ফ্রি শাটল ও বাস: লুভর আবুধাবি, শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফ্রি শাটল বাস চলে। সাধারণ বাসে যাতায়াতের জন্য ‘হাফিলাত স্মার্ট কার্ড’ ব্যবহার করা হয়।

পোশাক ও আচরণ

সম্মানজনক পোশাক পরুন: মিউজিয়াম, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ছোট শহরগুলো ঘুরে দেখার সময় কাঁধ এবং হাঁটু ঢাকা শালীন পোশাক পরা ভদ্রতা ও সম্মানের অংশ হিসেবে ধরা হয়। এতে স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি সম্মান দেখানো হয় এবং অপ্রয়োজনীয় বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানো যায়। ধর্মীয় স্থান, বিশেষ করে মসজিদে প্রবেশের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ উভয়েরই ঢিলেঢালা ও সম্পূর্ণ ঢাকা পোশাক পরা বাধ্যতামূলক। এ সময় নারীদের মাথা ঢাকার জন্য স্কার্ফ ব্যবহার করতে হয়, যা অনেক মসজিদে প্রয়োজনে ধারও দেওয়া হয়।

ছবি তোলার সময় সতর্কতা: আবুধাবিতে মানুষের ছবি তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকা জরুরি। কোনো ব্যক্তির; বিশেষ করে নারী ও শিশুর ছবি তোলার আগে অবশ্যই তাদের অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি ছাড়া কারও ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। তাই ভ্রমণের সময় ছবি তোলার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং স্থানীয় আইন মেনে চলা নিরাপদ ও দায়িত্বশীল আচরণ।

স্থানীয় অভিবাদন জানুন: আবুধাবিতে সাধারণভাবে ইংরেজি প্রচলিত হলেও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার সময় আরবি অভিবাদন তারা বেশি পছন্দ করে। ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে শুভেচ্ছা জানালে স্থানীয়রা সাধারণত খুশি হয় এবং এতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। একইভাবে কথোপকথনের শেষে বা সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ‘শুকরান’ (ধন্যবাদ) বলা ভালো।

সামাজিক শিষ্টাচার

  • বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে আগে হাত মেলাবেন না।
  • ডান হাত দিয়ে কিছু দেওয়া-নেওয়া করুন।
  • অশালীন অঙ্গভঙ্গি ও গালাগালি আইনত অপরাধ।
  • রমজানে খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে সংযত থাকতে হবে।

মদ্যপান ও আচরণ

লাইসেন্সপ্রাপ্ত বার ও হোটেলে অ্যালকোহল পাওয়া যায়, তবে মাতাল আচরণ, উচ্চ স্বরে ঝগড়া বা বিশৃঙ্খলা একেবারেই নিষিদ্ধ। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো কঠোরভাবে দণ্ডনীয়।

নিরাপত্তা ও আইন

আবুধাবি বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ শহর। চুরি-ছিনতাই খুবই বিরল এ শহরে। তবে সমলিঙ্গ সম্পর্ক ও লৈঙ্গিক বৈচিত্র্যসংক্রান্ত আইন কঠোর। এ বিষয়ে পর্যটকদের সতর্ক থাকতে হয়। জরুরি প্রয়োজনে পুলিশের নম্বর ৯৯৯।

আবুধাবি আধুনিক এবং অতিথিপরায়ণ হলেও এখানকার সংস্কৃতি ও আইন মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামান্য সচেতনতা থাকলেই এই শহরের ভ্রমণ হয়ে উঠবে নিরাপদ, সম্মানজনক ও স্মরণীয়।

সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যেসব বিপজ্জনক খাবার মৃত্যুর কারণ হতে পারে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৫
খাবার সব সময় আনন্দের বিষয় নয়। কিছু কিছু খাবার ঝুঁকির কারণও হতে পারে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
খাবার সব সময় আনন্দের বিষয় নয়। কিছু কিছু খাবার ঝুঁকির কারণও হতে পারে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

ভুল প্রস্তুতি, সামান্য অসাবধানতা কিংবা জ্ঞানের অভাব—এগুলো যেকোনো খাবারকে মুহূর্তে পরিণত করতে পারে নীরব ঘাতকে। পৃথিবীজুড়ে এমন অনেক খাবার আছে, যেগুলো দেখতে লোভনীয় হলেও সেগুলোর ভেতরে লুকিয়ে আছে মারাত্মক বিপদ। বিষাক্ত উদ্ভিদ থেকে শুরু করে মারাত্মক বিষ বহনকারী প্রাণী—সবই থাকে এই খাবারগুলোতে। সেগুলো খেলে গুরুতর অসুস্থতা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। আসুন, বিশ্বের এমন কিছু বিপজ্জনক খাবারের দিকে নজর দেওয়া যাক, যেগুলো বিভিন্ন সাংস্কৃতিক রন্ধনশৈলীর অংশ হলেও সেগুলোর ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা অপরিহার্য।

বীজ, ফল ও সবজি

সাধারণ কিছু ফল ও সবজির ভুল অংশ কিংবা ভুল প্রস্তুতি মারাত্মক হতে পারে। কামরাঙায় নিউরোটক্সিন থাকে, যা কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য মারাত্মক হতে পারে। তাদের এটি খেলে মারাত্মক বিভ্রান্তি, খিঁচুনি বা মৃত্যুও ঘটতে পারে। তবে সুস্থ ব্যক্তিরা এটি পরিমিত খেতে পারে।

কামরাঙায় নিউরোটক্সিন থাকে, যা কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য মারাত্মক হতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক
কামরাঙায় নিউরোটক্সিন থাকে, যা কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য মারাত্মক হতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক

জ্যামাইকার অ্যাকি নামের একটি ফল কাঁচা অবস্থায় হাইপোগ্লাইসিন এ নামে বিষাক্ত পদার্থ ধারণ করে। এ ফল খেলে বমি হতে পারে। এ ছাড়া এটি রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে কোমা বা মৃত্যুও ঘটতে পারে। কাসাভা একটি মূলজাতীয় সবজি। এটিতে সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড থাকে, যা ভুলভাবে প্রক্রিয়াকরণ করা হলে সায়ানাইড নির্গত করে। এতে বমি বমি ভাব, বমি বা মৃত্যু হতে পারে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্যাংগিয়াম ইড্যুলে নামের বীজে হাইড্রোজেন সায়ানাইড নামক মারাত্মক বিষ থাকে। খাওয়ার আগে অবশ্যই বীজটিকে বিষমুক্ত করার জন্য গাঁজানো বা প্রক্রিয়াকরণ করতে হয়।

কাঁচা কাজুতে উরুশিওল নামে বিষাক্ত তেল থাকে। এটি না ভেজে বা না সেঁকে খেলে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া বা শ্বাসযন্ত্রের কষ্ট হতে পারে। কাঁচা বা অপর্যাপ্ত রান্না করা লাল কিডনি বিনসে ফাইটোইমাগ্লুটিনিন নামে একটি টক্সিন থাকে। এভাবে লাল কিডনি বিনস খেলে বমি বমি ভাব, বমি এবং হজমের গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করে। এই বিষাক্ত পদার্থ নিষ্ক্রিয় করতে এগুলোকে উচ্চ তাপমাত্রায় পুরোপুরি রান্না করতে হয়।

কাঁচা কাজুতে উরুশিওল নামে বিষাক্ত তেল থাকে। এটি না ভেজে খেলে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া বা শ্বাসযন্ত্রের কষ্ট হতে পারে। ছবি: উইকিপিডিয়া
কাঁচা কাজুতে উরুশিওল নামে বিষাক্ত তেল থাকে। এটি না ভেজে খেলে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া বা শ্বাসযন্ত্রের কষ্ট হতে পারে। ছবি: উইকিপিডিয়া

চেরির বীজ এবং অন্যান্য স্টোন ফলের বীজে অ্যামিগডালিন থাকে, যা হজমের সময় সায়ানাইড নির্গত করে। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে সায়ানাইড বিষক্রিয়া হতে পারে। রুবাবের ডাঁটা নিরাপদ হলেও এর পাতায় অক্সালিক অ্যাসিড ও অ্যানথ্রাকুইনোন গ্লাইকোসাইডের মতো বিষাক্ত যৌগ থাকে। এল্ডারবেরিস নামক উদ্ভিদের কাঁচা ফল, পাতা, বাকল এবং মূলে লেকটিন ও সায়ানাইড থাকে, যা বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়া ঘটাতে পারে। তবে বীজ এবং বেরিগুলো সঠিকভাবে রান্না করলে সায়ানাইড দূর হয়।

মাশরুম ও মসলা

ডেথ ক্যাপ মাশরুম বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ছত্রাকগুলোর অন্যতম। এতে অ্যামাটক্সিনের মতো শক্তিশালী বিষাক্ত পদার্থ থাকে, যা লিভার ও কিডনি বিকল করে দিতে পারে। জায়ফল বেশি পরিমাণে খেলে মাইরিস্টিসিন নামক যৌগটির কারণে হ্যালুসিনেশন, বমি বমি ভাব এবং খিঁচুনি হতে পারে। এটি অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করলে অঙ্গ ব্যর্থতার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিশ্বের অন্যতম ঝাল মরিচের নাম ড্রাগন’স ব্রেথ। এর ঝালের মাত্রা ২.৪৮ মিলিয়ন স্কোভিল ইউনিট। এটি খাওয়ার ফলে গলা পুড়ে যাওয়া, শ্বাস পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া বা অ্যানাফাইল্যাকটিক শক হতে পারে।

জায়ফল বেশি পরিমাণে খেলে হ্যালুসিনেশন, বমি বমি ভাব, খিঁচুনি এবং কখনো কখনো মৃত্যুর কারণও হতে পারে। ছবি: ইউকিপিডিয়া
জায়ফল বেশি পরিমাণে খেলে হ্যালুসিনেশন, বমি বমি ভাব, খিঁচুনি এবং কখনো কখনো মৃত্যুর কারণও হতে পারে। ছবি: ইউকিপিডিয়া

তৈরি খাবার ও তরল

কাঁচা মধুতে বটুলিজম স্পোর থাকতে পারে, যা এক বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এই স্পোরগুলো নিউরোটক্সিন তৈরি করে, যা শিশুদের পক্ষাঘাত এবং মৃত্যু ঘটাতে পারে। এ ছাড়া পাস্তুরায়ন করা হয়নি; এমন দুধ ও পনিরে সালমোনেলা, লিস্টেরিয়া বা ই. কোলাইয়ের মতো ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। গর্ভবতী, শিশু এবং বয়স্কদের জন্য এটি বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।

কাসু মার্তজু নামক সার্ডিনিয়ার পনিরে ইচ্ছাকৃতভাবে জীবন্ত লার্ভা রাখা হয়। এই লার্ভা হজমের পরেও জীবিত থাকতে পারে এবং অন্ত্রে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। ল্যাই নামক ক্ষারযুক্ত পানিতে ভেজানো শুকনো মাছ দিয়ে তৈরি একটি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান খাবার লুটফিস্ক। সঠিকভাবে ধুয়ে না ফেললে উচ্চ মাত্রার ল্যাই রাসায়নিক পোড়া বা হজমজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আলফা স্প্রাউটস একটি পুষ্টিকর স্প্রাউট। এটি উষ্ণ ও আর্দ্র পরিস্থিতিতে বেড়ে ওঠার কারণে ই. কোলাই বা সালমোনেলার মতো ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে দূষিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

প্রাণী ও মাছ থেকে সৃষ্ট ঝুঁকি

কিছু প্রাণী ও মাছের শরীরে মারাত্মক বিষ লুকিয়ে থাকে। যেমন জাপানের জনপ্রিয় খাবার ফুগু। এতে আছে টেট্রোডোটক্সিনের মতো অত্যন্ত শক্তিশালী একটি নিউরোটক্সিন। দুর্ঘটনাক্রমে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি থাকায় শুধু লাইসেন্সপ্রাপ্ত শেফরাই এটি প্রস্তুত করার অনুমতি পান। সিলভার-স্ট্রাইপ ব্লাসোপ পাফারফিশের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এতেও মারাত্মক টেট্রোডোটক্সিন থাকে। ভুলভাবে প্রস্তুত করলে এটি পক্ষাঘাত, শ্বাসযন্ত্রের বিকলতা এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। সুশি বা স্টেক টার্টারের মতো কাঁচা মাছ বা মাংস খেলে ই. কোলাই বা সালমোনেলার মতো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বা পরজীবীর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ঐতিহ্যবাহী মিসরীয় খাবার ফেসিখ নামের গাঁজানো মাছের পদটি যদি সঠিকভাবে রান্না করা না হয়, তবে এটি বটুলিজম নামক মারাত্মক স্নায়ুতন্ত্রের রোগের কারণ হতে পারে।

ঝিনুক এবং অন্যান্য শেলফিশ ক্ষতিকর শেওলা বহন করতে পারে, সেগুলো প্যারালিটিক শেলফিশ পয়জনিং সৃষ্টি করে। এটি পক্ষাঘাত বা শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতির কারণ হতে পারে। কোরিয়ার একটি খাবারে জীবন্ত অক্টোপাস পরিবেশন করা হয়। এর কাটা শুঁড়গুলো তখনো নড়াচড়া করতে পারে, যা ভালোভাবে চিবিয়ে না খেলে শ্বাসরোধের কারণ হতে পারে। নামিবিয়ার কিছু অঞ্চলে আফ্রিকান বুলফ্রগ নামের একটি ব্যাঙ খাওয়া হয়। তবে এর চামড়া ও অঙ্গে থাকা বিষাক্ত পদার্থ কিডনি ফেইলিওর ঘটাতে পারে, যদি এটি সঠিকভাবে রান্না হয়ে না থাকে।

দূষিত পানি থেকে সংগ্রহ করা ক্ল্যামস হেপাটাইটিস এবং টাইফয়েডের মতো বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে। খাদ্যজনিত অসুস্থতা এড়াতে এটি সঠিকভাবে রান্না করা অপরিহার্য। কিছু সংস্কৃতিতে এটি বিশেষ খাবার হিসেবে খাওয়া হয় বানরের মাথা। এটি ক্রিউটজফেল্ড-জেকব রোগর মতো রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বহন করে, যা একটি মারাত্মক স্নায়ু-অবক্ষয়কারী রোগ।

মূলকথা হলো, খাবার হিসেবে সবই হয়তো কোনো না কোনো সংস্কৃতির স্মারক। নির্দিষ্ট অঞ্চলের মানুষ সেসব খাবার মজা করেই খায় তাদের প্রজন্মগত অভিজ্ঞতার কারণে। তবে মনে রাখতে হবে, খাবারগুলো সঠিকভাবে রান্না না হলে কিংবা সেসব খাবারে অভ্যস্ত না হলে সেগুলো ঝুঁকির কারণ তো বটেই, মৃত্যুর কারণও হয়ে উঠতে পারে।

সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাজি ভালোবাসার লাল-সবুজে

নিশাত তামান্না
ছবি সৌজন্য: রঙ বাংলাদেশ
ছবি সৌজন্য: রঙ বাংলাদেশ

বিজয় দিবসে লাল-সবুজের ফ্যাশন এখন দারুণ ট্রেন্ড। পতাকার এই রং ছড়িয়ে থাকে আমাদের মন, পোশাক-পরিচ্ছদ ও সাজগোজে। তবে হিম হিম শীতে কোন ধরনের লাল-সবুজ পোশাক বেছে নেবেন এবং এর সঙ্গে সাজ কেমন হবে, সেসব নিয়ে অনেকে আছেন দ্বিধায়। তবে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। দেখে নিতে পারেন এখানে।

পোশাক

বিজয় দিবসের পোশাকের রং লাল-সবুজ। সাধারণত সবুজকে বেছে নেওয়া হয় পোশাকের মূল রং হিসেবে। এরপর শাড়ি হলে পাড়ে, কামিজের সঙ্গে ওড়না, পাঞ্জাবির কলার ও হাত—এসব জায়গায় উজ্জ্বল আভা ছড়ায় লাল রং। এসব নকশায় সাধারণত থাকে দেশীয় আলপনা, বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি, ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছাপচিত্র, জাতীয় ফুল কিংবা জাতীয় পাখি, লতাপাতাসহ নানা রকম দেশীয় আবহ। এসব পোশাকের মধ্যে শাড়ি, কুর্তি, সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, টপ, পাঞ্জাবি বা টি-শার্টই হয়ে উঠবে একখণ্ড ক্যানভাস। তবে ডিসেম্বর মাস মানে গায়ে অল্প হলেও শীতের পোশাক তুলতে হচ্ছে। ফলে বিজয় উৎসবের পোশাকের সঙ্গে ম্যাড়মেড়ে শীতের পোশাক যে একেবারেই মানানসই নয়, তা সবার জানা। রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস বলেন, ‘পোশাক পরার ক্ষেত্রে শীতের হিম আবহাওয়াকে প্রাধান্য দিতে হবে। তাই এমন পোশাক বেছে নিতে হবে, যা আরামদায়ক কিন্তু একই সঙ্গে হালকা শীত এড়ানো যায়।’

সৌমিক দাস আরও বলেন, ‘বিজয় দিবসের পোশাকের নকশায় ডিজাইনাররা সুতি কাপড়কেই বেশি প্রাধান্য দেন। পোশাকে মার্জিত ভাব বজায় রাখতে ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট, সুই-সুতার কাজ বেশি হয়। লাল-সবুজের শাড়ি, পাঞ্জাবি, কুর্তি, উত্তরীয়সহ নানা রকম পোশাক যেন হালকা শীতও মোকাবিলা করতে পারে, সেভাবে নকশা করা হয়েছে। পাশাপাশি ম্যাচিং করে পরার জন্য চাদরও নকশা করেছে রঙ বাংলাদেশ।’

সৌমিক দাস আরও বলেন, এ ধরনের উৎসবে পরিবারের সবাই মিলে একই পোশাক পরার ব্যাপারেও আগ্রহ দেখা যায়। তাই পরিবারের সবার জন্য কম্বো সেটও এনেছে এই ব্র‍্যান্ড।

সাজ

এই দিনে ঘোরাঘুরির আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ঠিক কেমন করে কাটাতে চাইছেন দিনটি। দল বেঁধে দূরে কোথাও যেতে চাইলে কিংবা কাছাকাছি এদিক-ওদিক ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখতে হলে সাজের ধরনেও আসবে ভিন্নতা। সাজ তো কেবল পোশাক নয়, এর সঙ্গে থাকে আনুষঙ্গিক আরও অনেক কিছুর সমন্বয়। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গয়না, চোখের সাজ, মুখের সাজ, চুলের সাজ— বাদ যায় না হাতে বা কাঁধে বহনের ব্যাগটিও। তাই একটু ভেবেচিন্তে পরিকল্পনা করে নিলে সাজ ও ঘোরাঘুরির আনন্দ হবে ঠিকঠাক।

ছবি সৌজন্য: রঙ বাংলাদেশ
ছবি সৌজন্য: রঙ বাংলাদেশ

বিজয় দিবসের দিনটিতে সাজ কেমন হলে ভালো হয়, এসব বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন কসমেটোলজিস্ট ও শোভন মেকওভারের স্বত্বাধিকারী শোভন সাহা। তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবসে পোশাকের রং লাল-সবুজ থাকে। কমবেশি সবাই এই রঙেই জড়িয়ে নেন নিজেদের। যেহেতু এটি গৌরবময় দিন, তাই সাজটিও হতে হবে মার্জিত ও স্নিগ্ধ। পাশাপাশি যেহেতু শীত, তাই ত্বক যেন মেকআপের ফলে অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়ে ওঠে, সেদিকেও নজর দেওয়া চাই।’

শোভন সাহার মতে, সাজের আগে খেয়াল রাখতে হবে ত্বকের ধরনের বিষয়টি। শুষ্ক, মিশ্র ও স্বাভাবিক—ত্বক এই তিন ধরনের হয়। তবে ত্বক যেমনই হোক না কেন, প্রথমে মুখ পরিষ্কার করে ক্রিম বা ময়শ্চারাইজার দিতে হবে। প্রাইমার ব্যবহার করলে দীর্ঘ সময় ত্বক সুন্দর দেখাবে।

এদিন সাজের ধরন ভারী না হলেই বরং ভালো। মুখের ত্বকে দাগ, ছোপ লুকিয়ে হালকা করে লিকুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে ভালোভাবে ত্বকের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার হালকা ফেস পাউডার দিয়ে তার ওপর পিচ বা গোলাপি ব্লাশন বুলিয়ে নিলেই ত্বকের সাজ পূর্ণ হবে।

চোখের সাজের ক্ষেত্রে পরামর্শ হলো, চোখে গাঢ় করে ওয়াটারপ্রুফ কাজল দিন। পোশাকের রং যেহেতু লাল-সবুজ থাকবে, তাই ঠোঁটে গাঢ় রঙের লিপস্টিক ব্যবহার না করে ন্যুড কিংবা হালকা রঙের লিপস্টিক পরে নিলে ভালো দেখাবে। তবে শাড়ি পরলে চুলে গুঁজে দেওয়া যেতে পারে তাজা ফুল। সবশেষে ম্যাচিং চুড়ি, গয়না ও টিপ পরলেই সাজ পুরোপুরি সম্পন্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

মেষ

আজ আপনার পকেট হঠাৎ করে গরম হতে পারে। জ্যোতিষ বলছে, ‘হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তি হতে পারে।’ কিন্তু এই অর্থ হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার আশপাশে থাকা ‘নারী বন্ধু’ (বা পুরুষ বন্ধু, লিঙ্গভেদ নেই) আপনাকে কফি, বিরিয়ানি বা নতুন সিরিজের সাবস্ক্রিপশনের জন্য অনুরোধ করতে পারে। সাবধান! এই অর্থ আপনার একার, মহাজাগতিক ঋণের নয়। সারা দিন জনসেবার ইচ্ছা জাগবে, ভালো কথা। কিন্তু তার আগে নিজের বিলগুলো মেটানো জরুরি। ভাগ্য আজ আপনাকে দেখাবে—টাকা উপার্জন করা যতটা সহজ, সেটা ধরে রাখা তার চেয়েও কঠিন! আজকের মন্ত্র হোক: কফি খাব, তবে বিল দেব না।

বৃষ

সকাল থেকে একটা অদ্ভুত মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি আপনাকে তাড়া করবে। এর কারণ সম্ভবত গভীর রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্টুন দেখা। জ্যোতিষ বলছে, ‘কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু আপনাকে ঠকানোর চেষ্টা করবেন।’ সেই ঘনিষ্ঠ বন্ধুটি আর কেউ নয়—সে হলো আপনার ফ্রিজের ভেতরে রাখা সেই মিষ্টির বাক্স, যেটি আপনাকে ডায়েট ভাঙতে উৎসাহিত করবে। ধ্যানের মাধ্যমে একাগ্রতা আনার চেষ্টা করুন। বস যদি সকালে কাজে ভুল ধরেন, তখন যোগাভ্যাস শুরু করে দিতে পারেন, হয়তো বস ভয় পাবেন। পেটের সমস্যা এড়াতে আজ অতিরিক্ত মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। কিন্তু যদি দেখেন বন্ধু বিরিয়ানি খাওয়াতে চাচ্ছে, তাহলে এই উপদেশ ভুলে যান। মন খারাপ? মনকে বলুন, ‘বিকেলের পরে সব ঠিক হয়ে যাবে, তার আগে ঘুমাও।’

মিথুন

সকালের দিকে মেজাজ এমন খিটখিটে থাকবে যে, পোষা প্রাণীটাও আপনাকে এড়িয়ে চলবে। তবে চিন্তা নেই, বিকেলের দিকে মুড ফ্রেশ হবে—যদি না কোনো অপ্রত্যাশিত ফোন কল আসে। কর্মক্ষেত্রে সুনাম হতে পারে, যা আপনার অহংবোধকে একধাপ বাড়িয়ে দেবে। আজ কিছু নতুন পোশাক, মোবাইল ফোন ইত্যাদি কেনার যোগ রয়েছে। আপনার সম্মান বৃদ্ধির মূল কারণ হতে পারে নতুন ফোনের ক্যামেরা। তাই নিজেকে প্রমাণ করতে নয়, বরং ভালো সেলফি তোলার জন্য আজ মন দিন। সাবধানে অর্থ ব্যয় করুন। যদি অনলাইনে কোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস চোখে পড়ে, মনে রাখবেন—ওটা কালকেও থাকবে।

কর্কট

আজকের দিনটি আপনার জন্য বেশ ব্যয়বহুল হতে চলেছে। এর মানে এই নয় যে দামি কিছু কিনবেন, বরং মানে হলো—হয়তো অফিসের কলিগদের জন্য চা-কফি কিনে নিজের মাসকাবারি বাজেট শেষ করবেন। বসের কাছে প্রশংসা পাবেন, কারণ আপনি কাজের প্রতি খুবই দায়িত্বশীল। এই দায়িত্বশীলতা আপনাকে আরও বেশি কাজ এনে দেবে, যা ভবিষ্যতে মানসিক ভারসাম্য নষ্টের কারণ হবে। সরকারি কাজে অসুবিধা দেখা দেবে—কারণ সরকারি কাজ সব সময়ই অসুবিধা সৃষ্টি করে। ভদ্র থাকুন, নইলে টাকা শেষ হয়ে গেলে ধার চাওয়ার মুখ থাকবে না।

সিংহ

প্রতিদিনের স্বাভাবিক রুটিন বদলানোর চেষ্টা কেউ একজন করবে। সেই ‘কেউ একজন’ আর কেউ নয়, তিনি হলেন আপনার জীবনসঙ্গী, যিনি আপনাকে দিয়ে ঘরের কাজ করানোর চেষ্টা করবেন। সেদিকে বিশেষ নজর রাখুন। তবে দিনের শেষে রোমান্সের যোগ রয়েছে, যদি আপনি রুটিন বদলের এই চ্যালেঞ্জে হেরে যান এবং বশ্যতা স্বীকার করেন। আজ ব্যবসা বা পেশার জন্য অর্থ সংগ্রহে আপনি সফল হবেন। ঘরের কাজকে প্রেমের খেলা মনে করুন। হারলেও লাভ, জিতলেও!

কন্যা

সারা দিন আপনার কোনো বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। চেষ্টা করলেও, ভেতরের কণ্ঠস্বর আপনাকে মনে করিয়ে দেবে—কত কাজ বাকি আছে। আজ আপনার স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা দরকার। সামান্য সর্দি-কাশিকে কঠিন ব্যামো ভেবে সারা দিন গুগল করতে পারেন। অফিসে পদোন্নতির যোগ রয়েছে, তবে এর মানে হলো—আপনার ওপর চাপ আরও বাড়বে। ব্যবসায়ীরা আজ আর্থিক বিষয়ে হতাশ হতে পারেন। সন্তানদের বিষয়ে একটু সতর্ক থাকুন। আজ হয়তো তারা আপনার গোপনে জমানো চকলেট খুঁজে পেতে পারে।

তুলা

ব্যবসায় খুব বেশি লাভ দেখতে পাওয়ার যোগ রয়েছে। এই লাভকে কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্যের আগের থেকে উন্নতি দেখা যাবে। আজকের দিনে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভদ্র থাকবেন এবং মানসিকভাবে ভারসাম্য বজায় রাখবেন। তবে সাবধান, এই ভদ্রতা যেন অতিরিক্ত বিনয়ে রূপ না নেয়। না হলে সবাই আপনাকে দিয়ে নিজের কাজ করিয়ে নেবে। অতিরিক্ত লাভের খবর পেয়ে রাতে ঘুম ভাঙতে পারে। চিন্তা করবেন না, এটা শুধু গ্যাস।

বৃশ্চিক

আজকের দিনটি আপনার জন্য ফলপ্রসূ হতে চলেছে। তবে এই ‘ফল’ হয়তো আপনার ই-মেইল ইনবক্সে জমা হওয়া হাজারো নতুন ই-মেইলের স্তূপ! কর্মজীবনের দিক থেকে নতুন সুযোগ পেতে পারেন। এটি হতে পারে—বসের নতুন প্রজেক্ট, যা আপনি একা সামলাবেন। অর্থের দিক থেকে দিনটি শুভ, কারণ আপনি আজ বুদ্ধি করে একটি অপ্রয়োজনীয় অনলাইন শপিং অর্ডার বাতিল করবেন। অর্থের দিক থেকে শুভ, মানে আপনি আজ অন্তত এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারবেন।

ধনু

আপনার জন্য আজ একটি শুভ দিন হতে চলেছে। এতটা শুভ যে, হয়তো সকালে উঠে জুতা পরার সময় মোজা পরতে ভুলে যাবেন। ক্যারিয়ারে লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পনা করুন। দিনের মূল প্ল্যানিং হবে, কীভাবে এই পরিকল্পনাকে আবার পরের দিনের জন্য স্থগিত করা যায়। গাড়ি চালানোর সময় অসতর্কতা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষত যখন আপনি ক্যারিয়ার প্ল্যানিংয়ের চিন্তায় মগ্ন থাকবেন। আপনার ভাগ্য আজ ভালো, শুধু নিজেকে বেশি সিরিয়াস না নিলেই হলো।

মকর

জ্যোতিষ বলছে, ‘সব জায়গায় ইতিবাচক মনোভাব দেখালে চলবে না।’ সত্যি কথা! আপনার ইতিবাচকতা দেখে অন্যরা ভয় পেতে পারে। রাস্তায় কারও সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি হতে পারে। ঝামেলার কারণ—আপনাকে দেখিয়ে কেউ যদি ভুল করে হাসে! বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন, যেমন—সকালের নাশতায় কী খাবেন, পাউরুটি নাকি পরোটা? আপনি মানসিক চাপে ভুগতে পারেন। রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন। যদি দেখেন কেউ আলু-পেঁয়াজ নিয়ে তর্ক করছে, সেখানে জড়াবেন না।

কুম্ভ

শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রচুর দায়িত্ব বৃদ্ধি পেতে পারে। এর মানে শুধু একটাই—আপনার ছুটি বাতিল। রাজনৈতিক কোনো কাজ করার আগে খুব ভাবনাচিন্তা করার দরকার আছে। সামনে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ আসবে, কিন্তু আপনি এমন দায়িত্বশীল যে সেই সুযোগ নিতে পারবেন না। যদিও মন চাইবে, ‘যাই হোক, একটু ফাঁকি দেওয়া যাক।’ এই দোটানা মানসিক চাপ বাড়াবে। ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ এলেও, যদি দেখেন বস আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছেন, তবে সেই সুযোগ হাতছাড়া করুন।

মীন

আজ সৃজনশীল শক্তিতে পূর্ণ একটি দিন কাটাবেন। আপনার এই সৃজনশীলতা হয়তো কাজে লাগতে পারে—বাড়িতে ভেঙে যাওয়া দামি জিনিসটি মেরামত করার জন্য। অর্থের দিক থেকে ভাগ্যবান প্রমাণিত হতে পারেন। হয়তো পুরোনো কোনো প্যান্টের পকেটে একটি পাঁচশ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। কেউ কোনো দায়িত্ব দিলে একেবারেই নেবেন না, কারণ এটা আপনার জন্য একটি ফাঁদ হতে পারে। আজ উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে—কারণ আপনি ওই দায়িত্বটি না নিতে পারার অপরাধবোধে ভুগবেন। দাম্পত্য জীবন শান্ত ও সুখকর থাকবে। কারণ সঙ্গী আজ আপনার সৃজনশীলতা দেখে কথা বলার সাহস পাবেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত