Ajker Patrika

২০২১ এর জীবনযাপন

আনিকা জীনাত, ঢাকা
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ২৩: ৪৪
২০২১ এর জীবনযাপন

‘জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি-কুড়ি বছরের পার—’।

বিশের পর একুশও শেষ। কিন্তু থেকে গেছে গড়ে ওঠা জীবনযাত্রা। এ জীবনযাত্রা বদলে দিতে ২০২০ সালের করোনা অতিমারি বেশ বড় ভূমিকা রেখেছিল। তার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে গিয়ে কিছু অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হয়েছে আমাদের। তার জন্য গড়ে উঠেছে নতুন প্রবণতা, ‘নিউ নরমাল’ আমাদের জীবনে স্থায়ী জায়গা তৈরি করেছে।

কাস্টমাইজড পোশাক
একই রকম পোশাক পরে বিভিন্ন উৎসব পালনের চল এ বছরও বহাল ছিল। ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে এ প্রবণতা। এই পোশাকগুলোয় বিভিন্ন ধরনের নকশা স্থান পেয়েছে। হ্যান্ড পেইন্ট করা শাড়ি ও পাঞ্জাবিতে প্রকৃতির নানা বিষয় স্থান পেয়েছে। সমুদ্রের ঢেউ, শিউলি ফুল, কাশবন, অপরাজিতা ফুল, ময়ূরের পেখম–সবই দেখা গেছে শাড়িতে। এ প্রবণতা সামনের দিকে আরও বাড়তে পারে।

খাবারে লাগাম
স্বল্প মেয়াদি লকডাউনের সময় বন্ধ ছিল হোটেল-রেস্তোরাঁ। ফুড ডেলিভারি অ্যাপের কারণে এ বছরও ঘরে বসেই বাইরের খাবার অর্ডার করা গেছে। লকডাউন উঠে গেলেও হোম ডেলিভারি নেওয়ার চল বহাল আছে। বাসায় যাঁরা রান্না করে খেয়েছেন, তাঁরা খাবার-দাবার রান্নায় তেল ও লবণ ব্যবহারে সতর্ক ছিলেন। সকালের নাশতায় জায়গা করে নিয়েছে ওটস, সিরাল, কর্নফ্লেক্স, ফল। স্বাস্থ্য সচেতনেরা দুধ-চায়ের বদলে গ্রিনটিকে জায়গা দিয়েছেন চায়ের কাঁপে। করোনা মহামারির পর থেকেই কমেছে দাওয়াত আদান-প্রদানের রীতি। সামাজিকভাবে মেলামেশার অভাব খানিকটা কমিয়েছে খাবারদাবারভিত্তিক গ্রুপগুলো। কে কী রান্না করেছেন তা নিয়ে জমজমাট ছিল ভার্চুয়াল আড্ডা। 

ব্যাকপ্যাক
হ্যান্ডব্যাগের জনপ্রিয়তা কমিয়ে দিয়েছে পিঠে ঝোলানো ব্যাকপ্যাক। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো বটেই, কর্মজীবী নারীদের কাছেও ব্যাকপ্যাকের জনপ্রিয়তা বেড়েছে।
ছোট আকারের এই ব্যাগগুলোর ওজন কম। ব্যবহার করতেও বেশ সুবিধা। বড় ফিতাওয়ালা টোটব্যাগের প্রচলনও দেখা গেছে। অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য নারীরা বেছে নিয়েছেন মাইক্রো ব্যাগ। ভেতরে তেমন কিছু আঁটে না। তবে দেখতে বেশ স্টাইলিশ। ছোট চার কোনা ফিতাওয়ালা এই ব্যাগ ক্লাচ ব্যাগের জায়গা দখল করেছে।

বাসায় বিয়ে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই বিয়ের আয়োজন বাসায় সেরেছে। ঘরোয়া এই বিয়েতে মানুষের উপস্থিতি কম ছিল। কনেকে দেখা গেছে স্নিগ্ধ মেকআপে। বছরজুড়েই বিয়ের শাড়ি হিসেবে জামদানির দাপট ছিল। অনেকেই বিয়ের ছবি তুলেছেন ঘরের ভেতরে কিংবা ছাদে। রাতের বেলায় ছোটখাটো কোনো রেস্টুরেন্টে সেরেছেন বাকি আনুষ্ঠানিকতা। এর বিপরীত চিত্রও দেখা গেছে। অনেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমার অপেক্ষায় ছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ামাত্র ব্রাইডাল শাওয়ার, মেহেদি, সংগীত, গায়েহলুদ ও বিয়ের অনুষ্ঠান করেছেন।

ন্যুড মেকআপ
বাসায় বসে মেকআপ করার প্রচলন শুরু হয় গত বছর। ২০২১ সালেও একই ধারা অব্যাহত ছিল। মেকআপ শিখতে অনেকেই ইউটিউব টিউটোরিয়ালের সহায়তা নিয়েছেন। ভারী মেকআপের বদলে এখন ন্যুড মেকআপই বেশি জনপ্রিয়। মেকআপ আর্টিস্টদের কাছে ‘নো মেকআপ লুক’-এর আবদার ছিল চাহিদার তুঙ্গে। স্মোকি আই, কড়া লিপস্টিক ও ব্লাশন ব্যবহারের মাত্রা কম ছিল।

lifeইনডোর প্ল্যান্ট
গৃহবন্দী সময়ের কিছুটা ভাগ প্রকৃতিও পেয়েছে। প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা বাড়ায় ঘরের আনাচকানাচে অনেকেই টব রেখেছেন। কেউ কেউ পুরো একটি র‍্যাক সাজিয়েছেন ইনডোর প্ল্যান্ট দিয়ে। এ ছাড়া ফুল গাছের প্রতি মানুষের আলাদা আকর্ষণ ছিল। সাজানো-গোছানো বারান্দাও যে মনে প্রশান্তি আনে, তা আমাদের করোনাকালীন উপলব্ধি। 

হোম অফিস
বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাসা থেকে কাজের সুযোগ দিয়েছে। হোম অফিসের কারণে ল্যাপটপ, স্পিকার ও ওয়েবক্যামের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। ভিডিওর রেজল্যুশন বাড়াতে অনেকে স্ট্যান্ডসহ রিং লাইটও কিনেছেন। অনেকে বিছানায় বসে ল্যাপটপ ব্যবহারের জন্য ছোট টেবিল কিনেছেন। অনেক সম্মেলন, সভা ও আলোচনা হয়েছে জুম বা গুগল মিটে। ওয়েবিনারের কারণে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আলোচনায় যোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কমেছে।

আরাম আগে
বাসায় বসে থাকার কারণে মানুষের অভ্যাসে কিছু বদল এসেছে। এরই প্রভাবে রাস্তাঘাটে দেখা যাচ্ছে ঢিলেঢালা জিনস। পায়জামার আকারও ঢোলা ছিল। আঁটসাঁট পোশাকে অনেকেই এখন আর স্বস্তি বোধ করছেন না।
তরুণ-তরুণীরা এখন নিজের চেয়ে বড় আকারের টি-শার্ট কেনার প্রতি ঝুঁকেছেন। অফিসের পোশাকেও বদল এসেছে। নারীরা বেছে নিচ্ছে ঢিলেঢালা ফরমাল প্যান্ট। এর ওপরে পরছেন কুর্তি বা টপস। সিঙ্গেল কামিজের দাপটে দর্জির কাছে গিয়ে সালোয়ার-কামিজ বানানোর হার কমেছে।

ছাদে উৎসব
অনলাইনে পোশাক কিনে, সেজেগুজে ছাদে উঠে ছবি তোলার অভিজ্ঞতা মাত্র এক বছর পুরোনো। এবারও ঈদের দিন ছাদে গিয়ে ছবি তুলেছেন অনেকে। পুরান ঢাকার সাকরাইন উৎসবের মতো অনেক উৎসবই এখন ছাদকেন্দ্রিক। বারবিকিউ পার্টি করার সময় চলে এসেছে। কয়লা, কাঠি ও ম্যারিনেট করা মাংস নিয়ে অনেকেই চলে যাচ্ছেন ছাদে। লকডাউনের মধ্যে বিকেলবেলার আড্ডাও ছিল ছাদকেন্দ্রিক। 

শ্রাগ
এখন বাইরে বের হওয়ার আগে শহুরে নারীরা গায়ে চাপিয়ে নিচ্ছেন ডেনিমের জ্যাকেট নয়তো শ্রাগ। আগের মতো সালোয়ার-কামিজের ওপর আর সোয়েটার পরার চল নেই। ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচতে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন জিনসের প্যান্ট। ওপরের অংশে থাকছে কুর্তি বা টি-শার্ট।

ছেলেদের কাছে হুডি জ্যাকেট বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। হুডির কারণে মাফলার বা কানঢাকা টুপির ব্যবহার এড়ানো যায়। কিছু কিছু জ্যাকেটে হুডি খুলে রাখার ব্যবস্থাও আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ধ্যায় চায়ের সঙ্গে টা চাই? ঝটপট তৈরি করে নিন মুচমুচে পেঁয়াজু

ফিচার ডেস্ক
ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা
ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা

এই শীতের সন্ধ্যায় অফিসে থেকে বাড়ি ফিরে গরমাগরম চায়ে চুমুক তো দেওয়া চাই-ই চাই। কিন্তু চায়ের সঙ্গে টা-ও তো থাকতে হবে। এর জন্য সকালে বের হওয়ার আগে একটি বাটিতে খেসারি ডাল ভিজিয়ে রেখে বের হোন। সন্ধ্যায় তা দিয়ে তৈরি করে নিন মুচমুচে পেঁয়াজু। আপনাদের জন্য রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।

উপকরণ

খেসারি ডাল ১ কাপ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচের কুঁচি ২ টেবিল চামচ, ধনেপাতাকুচি ২ টেবিল চামচ, আদা ও রসুনবাটা ১ চা-চামচ, মরিচগুঁড়া, ধনিয়াগুঁড়া, জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ করে, লবণ স্বাদমতো, বেকিং পাউডার আধা চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ এবং সয়াবিন তেল (ভাজার জন্য) পরিমাণমতো।

প্রণালি

ভেজানো খেসারি ডাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর পাটায় বেঁটে নিন। একটি বাটিতে সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে নিন। কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম করে পেঁয়াজু ছেড়ে ডোবা তেলে সোনালি করে ভেজে নিন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল সুস্বাদু ও মুখরোচক গরম গরম পেঁয়াজু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছোট ঘর সাজান মাল্টিফাংশনাল আসবাবে

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৯
শহরে ছোট বাসা নিয়ে থাকছেন, তাঁদের জন্য মাল্টিফাংশনাল আসবাব খুব কাজে দেয়। ছবি: পেক্সেলস
শহরে ছোট বাসা নিয়ে থাকছেন, তাঁদের জন্য মাল্টিফাংশনাল আসবাব খুব কাজে দেয়। ছবি: পেক্সেলস

ছোট ঘরে প্রয়োজনীয় সব আসবাব গুছিয়ে রেখে পরিসর খোলামেলা দেখানো একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আধুনিক মাল্টিফাংশনাল আসবাব ব্যবহার করে খুব সুন্দরভাবে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। সঠিক আসবাব নির্বাচনের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার ছোট ঘরটিও করে তুলতে পারবেন আরামদায়ক ও আভিজাত্যপূর্ণ। নতুন দম্পতি যাঁরা ছোট ফ্ল্যাটে সংসারজীবন শুরু করতে চলেছেন বা যাঁরা শিক্ষার্থী, শহরে ছোট বাসা নিয়ে থাকছেন, তাঁদের জন্য মাল্টিফাংশনাল আসবাব খুব কাজে দেয়। এতে ঘরের জায়গাও বাঁচে আবার এক আসবাবই হয়ে ওঠে বহু কাজের কাজী।

মাল্টিফাংশনাল ফার্নিচার কী?

সহজ কথায়, যে ফার্নিচারগুলো একাধিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়, সেগুলোই মাল্টিফাংশনাল ফার্নিচার। যেমন একটি সোফা, যা রাতে আবার বিছানা হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এগুলোকে বলা হয় সোফা কাম বেড। আবার একটি ডাইনিং টেবিল, যা প্রয়োজন শেষে ভাঁজ করে দেয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে রাখা যায়। তখন সেটি হয়ে ওঠে দেয়ালের সাজের একটা অংশ।

ছোট জায়গায় মাল্টিফাংশনাল ফার্নিচার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নিচের টিপসগুলো কাজে লাগাতে পারেন।

দৈনন্দিন প্রয়োজন বুঝে নিন

ফার্নিচার কেনার আগে নিজের জীবনযাত্রা নিয়ে ভাবুন। আপনি বাসায় থেকে কাজ করেন কিনা বা প্রায়ই অতিথির সমাগম হয় কিনা তার ওপর আপনার ফার্নিচার নির্বাচন নির্ভর করবে। আপনি যদি বাসায় বসে অফিসের কাজ করেন, তবে এমন কফি টেবিল বেছে নিন, যা ডেস্ক হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। আবার প্রায় অতিথি এলে রাতে ঘুমানোর জন্য সোফা কাম বেড আপনার জন্য আদর্শ।

ছোট ঘরে রাখার জন্য এমন আসবাব কিনুন, যা সহজেই একটি থেকে আরেকটিতে রূপান্তর করা সম্ভব। ছবি: পেক্সেলস
ছোট ঘরে রাখার জন্য এমন আসবাব কিনুন, যা সহজেই একটি থেকে আরেকটিতে রূপান্তর করা সম্ভব। ছবি: পেক্সেলস

বহুমুখী ব্যবহারকে প্রাধান্য দিন

এমন আসবাব কিনুন, যা সহজেই একটি থেকে আরেকটিতে রূপান্তর করা সম্ভব। যেমন বসার পাশাপাশি শোয়া বা জিনিস রাখার কাজেও আসবে, এরকম ফার্নিচার নিলে একসঙ্গে একটাতেই অনেক কাজ হয়ে যাবে।

স্টোরেজ সুবিধা দেখে নিন

ছোট ঘরের প্রধান সমস্যা হলো জিনিসপত্র রাখার জায়গার অভাব। তাই হাইডিং স্টোরেজ সুবিধাসহ আসবাব কিনুন। যেমন ড্রয়ারযুক্ত বিছানা কিংবা ভেতরে ফাঁকা থাকা অটোমান বা বসার টুল। এগুলো ঘরকে জঞ্জালমুক্ত রাখবে।

দেয়ালের ব্যবহার

মেঝের জায়গা বাঁচাতে দেয়ালের উচ্চতাকে কাজে লাগান। লম্বা বুকশেলফ বা দেয়ালে সেট করা যায় এমন বুকশেলফ, ড্রেসিং টেবিল বা ডাইনিং টেবিলের ব্যবহার ঘর বড় ও খোলামেলা দেখাবে।

হালকা ও আরামদায়ক আসবাব

ভারী ও বড় আসবাব আসলে ছোট ঘরের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। চিকন ও মডুলার ডিজাইনের আসবাব কিনুন। ফোল্ডিং চেয়ার বা টেবিল প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করে সরিয়ে রাখা যায়, যা জায়গাও বাঁচায়।

রঙের সঠিক ব্যবহার

রঙের ওপর ঘরের প্রশস্ততা অনেকটাই নির্ভর করে। হালকা ও নিউট্রাল রং, যেমন সাদা, বেইজ বা হালকা ধূসর রঙে ঘর বড় ও উজ্জ্বল দেখায়। হালকা রঙের ফার্নিচারও একই কাজ করে এবং ঘরকে অন্ধকার করে দেয় না।

প্রয়োজন শেষে ভাঁজ করে দেয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে রাখা যায় কিছু কিছু মাল্টিফাংশনাল আসবাব। ছবি: পেক্সেলস
প্রয়োজন শেষে ভাঁজ করে দেয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে রাখা যায় কিছু কিছু মাল্টিফাংশনাল আসবাব। ছবি: পেক্সেলস

পরিমাণের চেয়ে গুণগত মান দেখুন

অনেক সস্তা ও কম কাজের আসবাব দিয়ে ঘর না ভরিয়ে কয়েকটি মানসম্পন্ন মাল্টিফাংশনাল ফার্নিচার কিনুন। মানসম্পন্ন একটি সোফা-কাম-বেড বা অ্যাডজাস্টেবল ওয়ার্কস্টেশন আপনার দীর্ঘদিনের সঙ্গী হয়ে ঘরে একটা মিনিমালিস্টিক লুক বজায় রাখবে।

কমেন্ট (কোট আনকোট করে লেখার মাঝখানে দেবেন)

ছোট বাসা সাজাতে এমন মাল্টিফাংশনাল আসবাব ব্যবহার করতে হবে, যেগুলোর গড়ন সোজাসাপ্টা ও যত্ন নেওয়া সহজ। ছোট ঘরের ক্ষেত্রে নিচু আসবাব বাছাই করতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসবাব রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে। বেছে নিতে হবে মিনিমাল আসবাব। এতে করে ঘরের আয়তন অনেকটাই বড় দেখাবে। এতে আলো-বাতাস চলাচল করতে পারবে এবং ঘরটাকেও বড় দেখাবে।

রুম্মান আরা ফারুকী

প্রধান স্থপতি, ইন্টেরিয়র ডিজাইন স্টুডিও স্বয়ং

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাপানের ‘অলিখিত নিয়ম’—যেগুলো না জানলে বিব্রত হতে পারেন পর্যটকেরা

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪২
জাপানের ‘অলিখিত নিয়ম’—যেগুলো না জানলে বিব্রত হতে পারেন পর্যটকেরা

নীরবতা পালন, সময়ের আগে পৌঁছানো এবং নিজের আবর্জনা নিজে বহন করা—এগুলো জাপানের এমন কিছু সামাজিক শিষ্টাচার, যা অনেক বিদেশি পর্যটক অজান্তেই ভঙ্গ করে বসেন।

জাপানি সমাজে ‘হারিয়ো’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা রয়েছে। এই সংস্কৃতিতে মানুষ সব সময় আশপাশের পরিবেশ ও অন্যের অনুভূতির প্রতি সচেতন; যাতে সামাজিক সৌহার্দ্য বজায় থাকে। তবে এই অলিখিত নিয়মগুলো বিদেশিদের জন্য অনেক সময় বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে।

২০২৫ সালে মার্কিন ভ্রমণবিষয়ক ম্যাগাজিন কঁদে নাস্ত ট্রাভেলারের পাঠক জরিপে জাপান ‘বিশ্বের সেরা দেশ’ নির্বাচিত হওয়ার পর টোকিওতে বসবাসরত খাদ্য ও ভ্রমণ বিশেষজ্ঞ টোকিও হালফি পর্যটকদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ আচরণগত পরামর্শ তুলে ধরেন।

নির্ধারিত সময়ের আগে পৌঁছানো

জাপানে সময়নিষ্ঠা শুধু ভদ্রতা নয়, এটি দায়িত্ববোধ। এখানে ‘ঠিক সময়ে পৌঁছানো’ বলতে বোঝায় ৫-১০ মিনিট আগে উপস্থিত হওয়া; বিশেষ করে রেস্তোরাঁয় বুকিং থাকলে। দেরি করাকে এখানে খুবই অসম্মানজনক হিসেবে দেখা হয়। তাই যাতায়াতের সময় সব ধরনের বিলম্বের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা জরুরি।

নীরব থাকা শিষ্টাচার

জাপানিরা শান্ত পরিবেশকে খুব গুরুত্ব দেন। ট্রেন, বাস, রেস্তোরাঁ বা যেকোনো পাবলিক স্থানে উচ্চ স্বরে কথা বলা উচিত নয়। ধীর ও শান্ত কণ্ঠে কথা বলাকে অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে ধরা হয়।

‘মোত্তাইনাই’ সংস্কৃতি বুঝুন

‘মোত্তাইনাই’ মানে অপচয় না করা। খাবার, সময় বা পরিশ্রম—কোনো কিছুই যেন নষ্ট না হয়। সেটাই এই দর্শনের মূল কথা। খাবারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্ডার না করা, প্রতিটি খাবারের পেছনের শ্রম ও উপাদানের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। এসবই এই সংস্কৃতির অংশ।

খাবারের টেবিলে শালীনতা

জাপানে খাওয়া শুধু দৈনন্দিন কাজ নয়, এটি সাংস্কৃতিক আচারের অংশ। তাই কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি—

  • খাবারের ছবি তোলার আগে শেফের অনুমতি নিন
  • মোবাইল বা ক্যামেরা সরাসরি টেবিল বা কাউন্টারে রাখবেন না
  • হাতব্যাগ টেবিলের ওপর রাখা অশোভন, অধিকাংশ রেস্তোরাঁয় ব্যাগ রাখার আলাদা ব্যবস্থা থাকে
  • ছবি তুললে দ্রুত তুলুন, খাবার ঠান্ডা হলে শেফ অসম্মানিত বোধ করতে পারেন
  • পানীয়তে ‘চিয়ার্স’ করার সময় গ্লাসে গ্লাস ঠোকাবেন না
  • তীব্র সুগন্ধিযুক্ত পারফিউম বা হ্যান্ডক্রিম ব্যবহার এড়িয়ে চলুন

গণপরিবহনে শিষ্টাচার

জাপানের গণপরিবহনে চলাচল করার সময় নীরবতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ফোন সাইলেন্ট রাখতে হয়, উচ্চ স্বরে কথা বলা অনুচিত। সাধারণ ট্রেন বা বাসে খাবার খাওয়া নিষেধ। লাইনে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে জাপানিরা খুব শৃঙ্খলাবদ্ধ। আগে নামা যাত্রীদের নামতে দেওয়া হয়। এসকেলেটরেও নিয়ম আছে, টোকিওতে বাঁ পাশে দাঁড়ানো হয়, ওসাকায় ডান পাশে। স্থানীয়দের দেখে অনুসরণ করাই সবচেয়ে ভালো।

আবর্জনা নিজের দায়িত্ব

জাপানের রাস্তাঘাট পরিষ্কার হলেও সেখানে ডাস্টবিন খুব কম দেখা যায়। মানুষ সাধারণত নিজের আবর্জনা ব্যাগে রেখে দেয় এবং নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে আলাদা ভাগে (প্লাস্টিক, কাগজ, ধাতু ইত্যাদি) ফেলে।

ব্যক্তিগত পরিসরের প্রতি সম্মান

জাপানিরা ব্যক্তিগত পরিসরকে খুব গুরুত্ব দেন। অপরিচিত কাউকে জড়িয়ে ধরা বা স্পর্শ করা অস্বস্তিকর হতে পারে। করমর্দনের বদলে হালকা নত হয়ে অভিবাদন জানানোই প্রচলিত। প্রকাশ্যে ঘনিষ্ঠ আচরণও সাধারণত গ্রহণযোগ্য নয়।

ট্রাফিক আইন মানা

খালি রাস্তা হলেও জাপানিরা সবুজসংকেত না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। নিয়ম মেনে চলাই এখানে সামাজিক দায়িত্বের অংশ। পর্যটকদেরও সেটি অনুসরণ করা উচিত।

কথার আড়ালের অর্থ বোঝা জরুরি

জাপানিরা সাধারণত সরাসরি ‘না’ বলেন না। ‘কঠিন হবে’ বা ‘পরে দেখা যাবে’—এ ধরনের কথার আড়ালে ভদ্রভাবে প্রত্যাখ্যান লুকিয়ে থাকতে পারে। এখানে ‘হোননে’ (মনের কথা) ও ‘তাতেমায়ে’ (সামাজিক মুখোশ) এই দুই ধারণা খুব গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে সংঘাত এড়িয়ে সামাজিক সামঞ্জস্য বজায় রাখাই মুখ্য।

সূত্র: সিএন ট্রাভেলার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন বছরে চুলের ছাঁটে বদল আনতে চাচ্ছেন? এই হেয়ারকাটগুলো বিবেচনায় রাখতে পারেন

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩০
চুলের ক্ষেত্রে ২০২৬ সাল হয়তো হবে ‘এফোর্টলেস পলিশ ইয়ার’; যেখানে কৃত্রিমতার চেয়ে চুলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য এবং ব্যক্তিগত রুচি বেশি প্রাধান্য পাবে। ছবি: পেক্সেলস
চুলের ক্ষেত্রে ২০২৬ সাল হয়তো হবে ‘এফোর্টলেস পলিশ ইয়ার’; যেখানে কৃত্রিমতার চেয়ে চুলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য এবং ব্যক্তিগত রুচি বেশি প্রাধান্য পাবে। ছবি: পেক্সেলস

২০২৬ সালের ফ্যাশন ট্রেন্ড কী হতে চলেছে, তা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে নানা জল্পনাকল্পনা; বিশেষ করে চুলের জন্য কী হতে চলেছে ট্রেন্ডি, তা নিয়ে ফ্যাশন-সচেতনদের আগ্রহের যেন শেষ নেই। কানাঘুষা চলছে, চুলের ক্ষেত্রে ২০২৬ সাল হয়তো হবে ‘এফোর্টলেস পলিশ ইয়ার’; যেখানে কৃত্রিমতার চেয়ে চুলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য এবং ব্যক্তিগত রুচি বেশি প্রাধান্য পাবে। তবে বছরের শুরুতে যাঁরা নতুন হেয়ারকাট নিয়ে সবার সামনে হাজির হতে চাইছেন, তাঁরা অপেক্ষা না করে এই হেয়ারকাটগুলোর যেকোনোটি বেছে নিতে পারেন।

গ্র্যাজুয়েট বব

গতানুগতিক বব কাটের চিরচেনা রূপ ছাপিয়ে ২০২৬ সালে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকতে পারে ‘গ্র্যাজুয়েট বব’। এতে পেছনের দিকের চুলগুলো কিছুটা ছোট ও সূক্ষ্ম টেক্সচারযুক্ত থাকে এবং সামনের দিকের চুলগুলো ক্রমান্বয়ে কিছুটা লম্বা হয়ে আসে। মানে, দুই কানের পাশের চুলগুলো মাথার পেছনের অংশের চুলের তুলনায় পয়েন্ট আকারে লম্বা হয়ে নামে। এই কাট চুলে চমৎকার ভলিউম যোগ করে। যাঁরা ঘরে কিংবা কর্মক্ষেত্রে—উভয় ক্ষেত্রে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী, স্মার্ট এবং একই সঙ্গে বেশ পরিপাটি হিসেবে উপস্থাপন করতে চান, তাঁদের জন্য এই কাট হবে সেরা পছন্দ।

ডিসকানেক্টেড ফ্রিঞ্জ

যাঁরা একটু বোল্ড ও ব্যতিক্রম লুকে নিজেকে দেখতে চান, তাঁদের জন্য এই ডিসকানেক্টেড ফ্রিঞ্জ লুক। এই হেয়ারস্টাইলের মূল বিশেষত্ব হলো কপালের সামনের ছোট করে ছাঁটা চুলগুলো; যা বাকি চুলের সঙ্গে মিশে না গিয়ে কিছুটা আলাদা বা ‘ডিসকানেক্টেড’ অবস্থায় থাকে। এটি আপনার চেহারায় একটি আত্মবিশ্বাসী ও বোল্ড লুক নিয়ে আসবে।

সাইড ফ্রিঞ্জ

কোমল আর মায়াবী একটি লুকের জন্য সাইড ফ্রিঞ্জের আবেদন চিরন্তন। চুলের দৈর্ঘ্য যেমনই হোক, এক পাশে আলতো করে ঝুলে থাকা এই চুলগুলো চেহারায় একটি চমৎকার ‘ফেস-ফ্রেমিং’ ইফেক্ট তৈরি করে, যা মুখের গড়নকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। যাঁরা চুলে খুব বেশি কাটছাঁট না করে পরিবর্তন আনতে চান, এই স্টাইল তাঁদের জন্য।

প্রতিবছর বিভিন্ন হেয়ারকাট ট্রেন্ডে আসে। তবে ট্রেন্ডে থাকলে কিংবা ভালো লাগলেই যেকোনো হেয়ারকাট দেওয়াটা উচিত নয়। মুখের গড়ন ও চুলের ধরন বুঝে হেয়ারকাট বেছে নিতে হবে। না হলে পুরো লুকটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।শোভন সাহা, কসমেটোলজিস্ট ও শোভন মেকওভারের স্বত্বাধিকারী

স্ক্যাল্পটেড কার্লস

যাঁদের চুল প্রাকৃতিকভাবেই কোঁকড়া, তাঁদের জন্য সুসংবাদ। আগামী বছরের ফ্যাশনে কৃত্রিমভাবে চুল সোজা করার চেয়ে চুলের স্বাভাবিক টেক্সচার বা গঠনই বেশি গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট শেপ বা আকৃতিতে সাজানো এই ‘স্ক্যাল্পচারাল কার্লস’ আপনার পুরো লুকে যোগ করবে অনন্য এক মাত্রা। এটি চুলের স্বাভাবিক ভলিউম বজায় রেখে চুলে আনে প্রাণবন্ত ভাব। যাঁরা নিজের স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে একটু ভালোভাবে তুলে ধরতে চান, তাঁদের জন্য এই স্টাইল হবে আগামী বছরের সেরা পছন্দ।

যাঁরা ঘরে কিংবা কর্মক্ষেত্রে—উভয় ক্ষেত্রে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী, স্মার্ট এবং একই সঙ্গে বেশ পরিপাটি হিসেবে উপস্থাপন করতে চান, তাঁদের জন্য গ্র‍্যাজুয়েট বব কাট হবে সেরা পছন্দ। ছবি: পেক্সেলস
যাঁরা ঘরে কিংবা কর্মক্ষেত্রে—উভয় ক্ষেত্রে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী, স্মার্ট এবং একই সঙ্গে বেশ পরিপাটি হিসেবে উপস্থাপন করতে চান, তাঁদের জন্য গ্র‍্যাজুয়েট বব কাট হবে সেরা পছন্দ। ছবি: পেক্সেলস

সফট কার্ভ বব

হলিউডের পুরোনো সিনেমা দেখতে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা বেছে নিতে পারেন এই হেয়ারকাট। ঘাড় পর্যন্ত কাটা চুলের আগার অংশ সামান্য কার্ভ করা থাকে এই হেয়ারস্টাইলে। শুধু এক পাশে সিঁথি কেটে পরিপাটি করে আঁচড়ে নিলেই চুল নিয়ে আর কোনো ভাবনা নেই।

যাঁরা নিজের স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে একটু ভালোভাবে তুলে ধরতে চান, তাঁদের জন্য স্ক্যাল্পটেড কার্লস স্টাইল হবে আগামী বছরের সেরা পছন্দ।
যাঁরা নিজের স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে একটু ভালোভাবে তুলে ধরতে চান, তাঁদের জন্য স্ক্যাল্পটেড কার্লস স্টাইল হবে আগামী বছরের সেরা পছন্দ।

চুলে প্রাধান্য পাবে চকচকে রঙ

চুলের রঙের ক্ষেত্রে আগামী বছর রাজত্ব করতে চলেছে গাঢ় বাদামি বা ল্যাভিস ব্রুনেট শেডের নানা বৈচিত্র্য। ধারণা করা হচ্ছে, বিশেষ করে কফি মোকা বা এসপ্রেসোর মতো উজ্জ্বল ও চকচকে রংগুলো ফ্যাশন-সচেতনদের পছন্দের শীর্ষে থাকবে। এই শেডগুলোর বিশেষত্ব হলো এদের অসাধারণ উজ্জ্বলতা ও গ্লসি ফিনিশ, যা চুলে একটি প্রাকৃতিক কিন্তু অত্যন্ত ‘লাক্সারিয়াস’ বা বিলাসবহুল ভাব ফুটিয়ে তোলে। সেই সঙ্গে এই রংগুলো বাংলাদেশি স্কিন টোনগুলোর সঙ্গে খুব ভালো মানায় এবং চুলে একটা স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ভাব আনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত