Ajker Patrika

মনে পড়ে মাটির দোতলা বাড়ির সেই ঈদ

মারুফ ইসলাম
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৩, ১৪: ৫৫
মনে পড়ে মাটির দোতলা বাড়ির সেই ঈদ

মোহাম্মদপুরের পশ্চিমে এদিকটায় এখনো আকাশ দেখা যায়। ভোর-সকালে পাখির ডাক শোনা যায়। পর্দা সরিয়ে জানালা খুলে দিলে একঝলক ঠান্ডা হাওয়া ঘরময় ছড়িয়ে পড়ে। এমন সকালে আলস্য জড়িয়ে শুয়ে থাকতে ভালো লাগে। 

শুয়ে আছি। জানালা খোলা। ভোরের ঘোলাটে স্নিগ্ধ আলোয় আমার ঘর ভেসে যাচ্ছে। বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, হয়নি। বুকভর্তি মেঘ নিয়ে আকাশটা ঝুঁকে আছে। কী শান্ত এক প্রকৃতি! এমন স্নিগ্ধ সকালে আমার একবারের জন্যও প্রিয় মানুষটার কথা মনে পড়ল না। প্রিয় বন্ধুর কথা মনে পড়ল না। বিপদে-আপদে যে পাশে দাঁড়ায়, তার কথা মনে পড়ল না। অনাদি অনন্ত সৃষ্টিকর্তার কথা মনে পড়ল না। হিজল ফুল মনে পড়ল না। বৃষ্টির দিন মনে পড়ল না (অথচ এই সবকিছুই আমার কত প্রিয়)... মনে পড়ল একটা বাড়িকে। মাটির দোতলা একটা বাড়ি। 

আম-মেহগনি-বাঁশঝাড়ের ছায়ায় ঘুমিয়ে থাকা সেই দোতলা বাড়িটায় অদ্ভুত সুন্দর ভোর হয়। ছোট বোনদের ডাকাডাকিতে ঘুম ভাঙে। সকাল ৮টায় ঈদের জামাত। সেটাই তারা মনে করিয়ে দেয় বারবার। ঘুম জড়ানো চোখ ডলতে ডলতে উঠে দেখতাম, আমাদের মাটির চুলোর হেঁশেলপাড় ফুলের মতো হেসে উঠেছে। সেমাই, চিনি, মসলা, ভেজানো পোলাওয়ের চাল, মাংস ইত্যাদির সম্মিলিত ঘ্রাণে বাতাস ম-ম করছে। হেঁশেলে খড়ি ঠেলছেন মা। রক্তিম আঁচে তাঁর মুখজুড়ে রাজ্যের আভা। বোনেরা সবাই শশব্যস্ত। বাদামের খোসা ছাড়াও রে, মসলা বাটো রে…। 

তারপর দেখতাম, সূর্য উঁকি দেওয়ার আগে, ফজরের নামাজ পড়েই আব্বা বাজারে গিয়ে বড়সড় একটা মাছ এনে ফেলে রেখেছেন উঠানে—তড়পায় পানিতে ফেলে আসা জীবনের জন্য। কে ভাবে তার কথা! আমরা খুশি, মাছের পোলাও রান্না হবে। বড় মোরগটা গত রাতে খোয়ারে ওঠার পরেই আলাদা করে ধরে রেখেছেন মা। আজ জবাই হবে। 

দূরে কোথাও, গ্রামের শেষ মাথার ঈদগাহের মাইক থেকে ভেসে আসছে আওয়াজ। খানিক বাদে শুরু হবে ঈদের নামাজ। মা তাড়া দেন গোসল সেরে নামাজে যেতে।

গ্রামের দিকে গোসলখানা আলাদা হয়। মূল বসতঘর থেকে একটু দূরে। সেখানে দেখতাম লম্বা লাইন। আব্বা হয়তো মাত্রই গোসল সেরে বের হলেন। বড় ভাই ঢুকলেন। তারপর আমি। ততক্ষণে হেঁশেলপাড়ে বসে দুটো বাদামের খোসা ছাড়ানো যেতে পারে। সেই সময়টুকু বোনদের পাশে বসে বাদামের খোসা ছাড়াতাম। সেমাইয়ে পর্যাপ্ত মিষ্টি হলো কি না, চেখে দেখতাম। 

সে এক জীবন ছিল বটে! ঢেউয়ের মতো উচ্ছল, ঝরনার মতো প্রাণবন্ত। আজকের ফেসবুক-টুইটার-ইউটিউবে বন্দী শিশুদের কাছে সেই জীবন ভিডিও গেমের মতো অলৌকিক মনে হতে পারে। তাদের হয়তো বিশ্বাসই হবে না, আমরা ঈদগাহের মাঠ থেকে ফিরেই পাড়া বেড়াতে বেরোতাম। পাড়ার সব ঘরে ঘুরে সেমাই, ফিরনি, জর্দা, মাছের পোলাও খেতে খেতে দুপুর পার করে ফেলতাম, তবু মা-বাবা একবারের জন্যও আমাদের খোঁজ নিতেন না। আমরা কোথায় আছি, কী করছি—একবারও খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করতেন না। ওই আছে কোথাও, মাগরিবের আগে ফিরলেই হলো—এই ছিল তাঁদের মনোভাব। 

এই পাড়া বেড়ানোর একটা সামাজিক মূল্য ছিল। সারা বছর যাদের বাড়িতে পা পড়ত না, খুব একটা আলাপ-সালাপ হতো না, তাদের সঙ্গে সম্পর্কটা ‘ঝালাই’ হতো। সামাজিকতা পুনর্নবায়ন হতো। অপেক্ষাকৃত অসচ্ছল পরিবারের শিশুটি অবলীলায় ঢুকে পড়ছে মধ্যবিত্তের ঘরে, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ঢুকে যাচ্ছে দরিদ্রের ঘরে, দরিদ্র ঢুকে পড়ছে উচ্চমধ্যবিত্তের ঘরে, যা পাচ্ছে তাই মুখে তুলে নিয়ে খাচ্ছে। এর যে সামাজিক মূল্য, ভেদাভেদহীনতার মূল্য, সাম্যের বার্তা, তা বোঝার মতো বয়স তখন না থাকলেও এখন বুঝি। 

এখন বুঝি আর আফসোস করি। কারণ ‘সেই রাম নেই, সেই অযোধ্যাও নেই’-এর মতো সেই গ্রামও নেই, সেই শিশুরাও নেই। গ্রামের শিশুরা এখন দল বেঁধে এর-ওর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঈদের সেমাই খায় না। তার বদলে পথের ধারে, গাছের আড়ালে সেলফি তোলে, শর্টস বানায়, রিল বানায়, টিকটক ভিডিও বানায়। ঈদের দিন ফেসবুক গ্রুপে আড্ডা দেয়, মেসেঞ্জারে আড্ডা দেয়, হোয়াটসঅ্যাপে আড্ডা দেয়। সারা দিন ঘাড় গুঁজে ইউটিউব, টিকটকে ভিডিও দেখে। 

আমাদের সেই বাড়িটার মাটির দেয়ালগুলো কথা বলতে জানলে নিশ্চয় হড়বড় করে অনেক ইতিহাস বলত। কত ঈদের সাক্ষী হয়ে আছে সে! 

ঘুম ভাঙার আগেই শুনতে পেতাম বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে ঝুপঝাপ আওয়াজ। পাড়ার ছেলে-বুড়ো দল বেঁধে পুকুরে নেমেছে গোসল করতে। ঈদের নামাজে যাওয়ার আগের গোসল। সাবানের ফেনায় পুকুরের টলটলে পানি ঘোলা হয়ে উঠেছে। গোসলের মতো একটি কাজও যে উৎসব করে করা যায়, সেই বোধ এখনকার শিশুদের মধ্যে নেই। তারা জানেই না, এভাবে দল বেঁধে পুকুরে গোসল করা যায়! 

আমরা দল বেঁধে আরও একটা কাজ করতাম। ঈদের নামাজ শেষে কবর জিয়ারত করতে যেতাম। পূর্বপুরুষদের স্মরণ করতাম। বাবা-চাচারা একেকটি কবর দেখিয়ে দিতেন আর বলতেন, এটা তোর দাদুর কবর, এটা দাদির, এটা অমুক চাচার, এটা তমুকের…। 

ঘাসগুলো ঘন হয়ে ছেয়ে রয়েছে কবর। শুকনো ফুল, পাতা ঝরে পড়েছে ওপর থেকে। ছায়া ছায়া শান্ত একটা প্রকৃতি মনকে বিষণ্ন করে তুলত। এই মৃত আত্মীয়রাও একদিন আমাদের মতো ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন, আজ তাদের অস্তিত্ব নেই এ ব্রহ্মাণ্ডে, এই বোধ আমাদের হঠাৎ করে যেন দার্শনিক ভাবালুতায় আচ্ছন্ন করে ফেলত। আমরা উদাস হয়ে মৃত আত্মার জন্য দোয়া করতাম। 

বিকেলের দিকে টেলিভিশন দেখতে বসতাম আমরা। একমাত্র চ্যানেল বিটিভি। বাংলা সিনেমাই প্রধান আকর্ষণ ছিল। এ ছাড়া ইত্যাদি, আনন্দমেলা—এসবও ছিল। কিন্তু এই অনুষ্ঠানগুলো রাতে হতো বলে আমাদের ভীষণ মন খারাপ থাকত। কারণ আমদের বাড়িতে টেলিভিশন ছিল না। 

নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকের কথা বলছি। তখনো গ্রামের প্রত্যেক ঘরে টেলিভিশন ঢোকেনি। প্রায় ধনী দু-একজনের বাড়িতে টেলিভিশন ছিল। তাদের বাড়ির মাথার ওপরে টেলিভিশনের অ্যানটেনা বহু দূর থেকে দেখা যেত। এত উঁচুতে অ্যানটেনা রাখার পরেও কখনো কখনো পরিষ্কার ছবি দেখা যেত না। 

আমরা তখন বাইরে এসে অ্যানটেনার বাঁশ ঘুরাতাম আর বলতাম, ঠিক হইছে…? ঘরের ভেতর থেকে কেউ একজন চিৎকার করে উত্তর দিত, ‘না হয়নি…হইছে হইছে…আহা, আগেই তো ভালো ছিল… হ্যাঁ হ্যাঁ হইছে এবার…থাক থাক।’ 

সেই জীবনটা হঠাৎ যেন শেষ রাতের ট্রেনের হুইসেলের মতো দূরের বাতাসে মিলিয়ে গেছে। রমজানের শেষ দিনে ইফতার মুখে দিয়েই সন্ধ্যার পশ্চিম আকাশে বাঁশঝাড়ের ওপর আর কেউ কাস্তের মতো ঈদের চাঁদ খোঁজে না। আজকের ছেলেমেয়েরা ফেসবুকেই ঈদের চাঁদ দেখে। কে জানে, এই প্রজন্মের আনন্দ প্রকাশের ঢংটা বড্ড অচেনা!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পোষা প্রাণী নিয়ে বিমানযাত্রার আগে জেনে নিন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
প্রিয় পোষা প্রাণী নিয়ে বিমানে ভ্রমণ যথেষ্ট দায়িত্বের কাজ বটে। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
প্রিয় পোষা প্রাণী নিয়ে বিমানে ভ্রমণ যথেষ্ট দায়িত্বের কাজ বটে। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

কোথাও ঘুরতে যাওয়া কিংবা দেশে ফেরা সব সময় আনন্দের। অনেকে ভ্রমণের সময় নিজের পোষা প্রাণী নিয়ে যাত্রা করেন। আপনার প্রিয় পোষা প্রাণীকে নিয়ে বিমানে ভ্রমণের পরিকল্পনা করা যেমন আনন্দের, তেমনি এটি যথেষ্ট দায়িত্বের কাজও বটে। একটি সফল ও নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে যাত্রার আগে ও চলাকালীন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। সঠিক প্রস্তুতি এবং নিয়মকানুন মেনে চললে আপনার এবং আপনার প্রিয় সঙ্গীটির বিমানযাত্রা হবে আনন্দদায়ক ও নিরাপদ।

গাড়িতে ভ্রমণ করা পোষা প্রাণীর জন্য সাধারণত নিরাপদ। কিন্তু বিমানে ভ্রমণ পোষা প্রাণীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে; বিশেষ করে ব্র্যাকিউসেফালিক বা চাপা নাকের প্রাণী, যেমন বুলডগ, পাগ বা পার্সিয়ান বিড়াল, বিমানে শ্বাসকষ্ট বা হিট স্ট্রোকের শিকার হতে পারে। তাই ভ্রমণের আগে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যদি সম্ভব হয়, পোষা প্রাণীকে কোনো নির্ভরযোগ্য পেট সিটার বা বোর্ডিংয়ে রেখে যাওয়া তাদের জন্য বেশি আরামদায়ক হতে পারে। যাত্রার ঝুঁকি এবং প্রয়োজনীয়তার ভারসাম্য বজায় রেখে সিদ্ধান্ত নিন।

পশুচিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র

ভ্রমণের অন্তত ১০ দিন আগে আপনার পশুচিকিৎসকের কাছে যান এবং একটি স্বাস্থ্য সনদ সংগ্রহ করুন। নিশ্চিত করুন যে সব টিকা, বিশেষ করে র‍্যাবিস দেওয়া আছে। পোষা প্রাণীর লাইসেন্স, মাইক্রোচিপ নম্বর, টিকা দানের প্রমাণপত্র এবং নিয়মিত ওষুধের একটি তালিকা সঙ্গে রাখুন। যদি প্রাণীটি কোনোভাবে হারিয়ে যায়, তবে তাকে খুঁজে পেতে তার একটি সাম্প্রতিক ছবিও সঙ্গে রাখুন।

এয়ারলাইনস নির্বাচন ও বুকিংয়ের সময় করণীয়

সব এয়ারলাইনসের নিয়ম এক নয়। তাই টিকিট কাটার আগে নিচের বিষয়গুলো নিশ্চিত করুন। ছোট কুকুর বা বিড়াল হলে অতিরিক্ত ফিতে তারা আপনার সঙ্গে কেবিনেই যেতে পারে কি না, জেনে নিন। মনে রাখবেন, কেবিনে প্রাণীর সংখ্যা সীমিত থাকে। তাই আগেভাগে কল করে বুকিং দিন। যদি আপনার প্রিয় প্রাণীকে কার্গোতে দিতেই হয়, তবে এয়ারলাইনসের আগের রেকর্ড যাচাই করে নিন। সংযোগকারী ফ্লাইট এড়িয়ে সরাসরি ফ্লাইট বেছে নিন। এতে বিমানে ওঠানো-নামানোর সময় ভুল হওয়ার ঝুঁকি কমে। গরমে ভ্রমণের জন্য খুব সকালে বা রাতে এবং শীতে দুপুরের ফ্লাইট বেছে নেওয়া ভালো।

সঠিক ক্যারিয়ার নির্বাচন ও প্রস্তুতি

আপনার পোষা প্রাণীর জন্য সঠিক ক্যারিয়ার বা কেনেল নির্বাচন করা বাধ্যতামূলক। ভ্রমণের অন্তত এক মাস আগে থেকে পোষা প্রাণীকে ক্যারিয়ারের সঙ্গে অভ্যস্ত করুন। সেখানে তাদের প্রিয় কম্বল বা খেলনা রাখুন এবং মাঝে মাঝে খাবার দিন। ক্যারিয়ারে আপনার নাম, স্থায়ী ঠিকানা এবং গন্তব্যস্থলের ফোন নম্বরসহ একটি ট্রাভেল লেবেল লাগিয়ে দিন। প্রাণীর নখ কেটে দিন, যাতে তা ক্যারিয়ারের খাঁজে আটকে না যায়। যাত্রার আগে ভারী খাবার দেবেন না। পানির পাত্রে বরফের টুকরা রাখতে পারেন, যাতে পানি উপচে না পড়ে। পশুচিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ট্রাঙ্কুলাইজার বা ঘুমের ওষুধ দেবেন না।

বিমানবন্দর ও নিরাপত্তা তল্লাশি

বিমানবন্দরে সিকিউরিটি স্ক্রিনিংয়ের সময় পোষা প্রাণীর ক্যারিয়ার এক্স-রে মেশিনের মধ্য দিয়ে যাবে। তখন আপনার কাছে দুটি উপায় থাকে,

  • পোষা প্রাণীর হারনেস শক্ত করে ধরে তাকে বাইরে রাখা এবং ক্যারিয়ারটি আলাদাভাবে চেক করা।
  • বিশেষ সেকেন্ডারি স্ক্রিনিংয়ের অনুরোধ করা, যাতে প্রাণীকে ক্যারিয়ার থেকে বের করতে না হয়।

কার্গোতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা

যদি পোষা প্রাণী কার্গোতে ভ্রমণ করে, তবে কিছু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন। বিমানে ওঠার পর ক্যাপ্টেন এবং অন্তত একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে জানান, কার্গোতে আপনার পোষা প্রাণী আছে। পোষা প্রাণীর গলায় এমন কলার পরান, যা ক্যারিয়ারের দরজায় আটকে যাবে না। এতে স্থায়ী ও অস্থায়ী দুটি আইডি ট্যাগ যুক্ত করুন। মনে রাখবেন, কোনো অবস্থায় চাপা নাকের প্রাণীদের কার্গোতে পাঠাবেন না।

গন্তব্যে পৌঁছানোর পর

গন্তব্যে পৌঁছানোর পর দ্রুত কোনো নিরাপদ স্থানে গিয়ে ক্যারিয়ার খুলুন এবং আপনার পোষা প্রাণীকে পরীক্ষা করুন। যদি কোনো অস্বাভাবিকতা লক্ষ করেন, তাহলে দেরি না করে স্থানীয় পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান এবং পরীক্ষার ফলাফল লিখিত আকারে সংগ্রহ করুন।

সূত্র: হিউম্যান ওয়ার্ল্ড ফর অ্যানিমেলস, ট্রাভেল আপ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্বল্প খরচে নেপাল ভ্রমণের ১১ পরামর্শ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
স্বল্প বাজেটের ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য নেপাল দারুণ গন্তব্য। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
স্বল্প বাজেটের ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য নেপাল দারুণ গন্তব্য। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

স্বল্প বাজেটের ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য নেপাল দারুণ গন্তব্য। ১৯৭০ সালের পর ‘হিপি ট্রেইল’ যুগ থেকে কাঠমান্ডুতে বাজেট ভ্রমণের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। পরে এই সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন শহর ও ট্রেকিং রুটে। যদিও আজকের নেপাল আগের মতো অতটা সস্তা নয়; তবে এখনো দেশটিতে স্বল্প খরচে ভ্রমণের অসাধারণ সুযোগ রয়েছে।

ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন সময় বুঝে

পর্যটনের ক্ষেত্রে নেপালে ব্যস্ত সময় হলো অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের শেষ এবং মার্চের শেষ থেকে এপ্রিল। এই সময় দেশটিতে হোটেল ও লজের ভাড়া বেড়ে যায়। এর বাইরে ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ এবং সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস হলো শোল্ডার সিজন। এই সময় দেশটিতে পর্যটক কম থাকে এবং হোটেল ভাড়ায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়। পাহাড়ি এলাকায় অনেক সময় চার্জিং বা ওয়াই-ফাই বিনা খরচে দেওয়া হয়। তবে শোল্ডার সিজনে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হতে পারে।

কাঠমান্ডু বিমানবন্দর থেকে একটু হাঁটুন

বিমানবন্দর এলাকায় ট্যাক্সিচালকেরা অনেক সময় অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন। তবে সেখান থেকে প্রায় ৮০ মিটার হাঁটলেই রিং রোডে সাধারণ ভাড়ায় ট্যাক্সি পাওয়া যায়। ট্যাক্সিতে থামেল এলাকায় যেতে সাধারণত ৬০০ রুপি লাগে। চাইলে লোকাল বাসও ব্যবহার করা যায়। আগাম জানালে অনেক হোটেল নির্দিষ্ট বা বিনা মূল্যের পিকআপ সুবিধাও দেয়।

থামেলের বাইরে থাকা-খাওয়া সাশ্রয়ী। ছবি: ফ্রিপিক
থামেলের বাইরে থাকা-খাওয়া সাশ্রয়ী। ছবি: ফ্রিপিক

পাঠাও ও ইনড্রাইভ ব্যবহার করুন

রাস্তার ট্যাক্সির চেয়ে কাঠমান্ডুতে পাঠাও এবং কাঠমান্ডুর বাইরে ইনড্রাইভ অ্যাপ ব্যবহার করলে কম ভাড়ায় নিরাপদ যাতায়াত করা যায়।

থাকা-খাওয়ার জন্য থামেলের বাইরে যান

থামেল পর্যটকদের জন্য সুবিধাজনক হলেও সেখানে হোটেল ও খাবারের দাম তুলনামূলক বেশি। থামেলের আশপাশের এলাকায় একই মানের হোটেল ২০ শতাংশ কম দামে পাওয়া যায়। খাবারের ক্ষেত্রেও শহরের অন্যান্য এলাকায় তুলনামূলক সস্তা ও ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়।

বিকল্প হিসেবে বৌদ্ধনাথ এলাকা

বৌদ্ধনাথ স্তূপসংলগ্ন এলাকা থামেলের ভালো বিকল্প। সেখানে সাশ্রয়ী হোটেল ও খাবার পাওয়া যায় এবং পরিবেশ অনেক শান্ত। সেখানে দেখা মিলবে তীর্থযাত্রীদের এবং শোনা যাবে বৌদ্ধদের প্রার্থনার ধ্বনি। বিমানবন্দরের কাছাকাছি হওয়ায় ভ্রমণের শেষ দিকে থাকার জন্য এটি আদর্শ জায়গা।

বৌদ্ধনাথ, পাতান দরবার স্কয়ার, কাঠমান্ডু দরবার স্কয়ার এবং ভক্তপুরের মতো ঐতিহাসিক স্থানগুলোর টিকিট এক সপ্তাহ বা ভিসার মেয়াদ পর্যন্ত বাড়ানো যায়। ছবি: ফ্রিপিক
বৌদ্ধনাথ, পাতান দরবার স্কয়ার, কাঠমান্ডু দরবার স্কয়ার এবং ভক্তপুরের মতো ঐতিহাসিক স্থানগুলোর টিকিট এক সপ্তাহ বা ভিসার মেয়াদ পর্যন্ত বাড়ানো যায়। ছবি: ফ্রিপিক

দর্শনীয় স্থানের টিকিট বাড়িয়ে নিন

বৌদ্ধনাথ, পাতান দরবার স্কয়ার, কাঠমান্ডু দরবার স্কয়ার এবং ভক্তপুর নেপালের জনপ্রিয় ঐতিহাসিক স্থান। অনেকে হয়তো জানেন না, এই স্থানগুলোর টিকিট এক সপ্তাহ বা ভিসার মেয়াদ পর্যন্ত বাড়ানো যায়। এর জন্য পাসপোর্ট প্রয়োজন। কাঠমান্ডু দরবার স্কয়ারে পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগতে পারে।

স্থানীয় খাবার খান, বিশেষ করে ট্রেকিংয়ের সময়

আন্তর্জাতিক খাবারের তুলনায় নেপালি খাবার অনেক সস্তা। পাহাড়ি ট্রেকে ডাল-ভাত সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও পুষ্টিকর খাবার।

লোকাল বাসের বদলে ট্যুরিস্ট বাস নিন

পোখারা, চিতওয়ান বা লুম্বিনিতে যেতে ট্যুরিস্ট বাস কিছুটা দামি হলেও বেশি আরামদায়ক এবং দ্রুত যাওয়া যায়। অল্প কিছু টাকা বেশি দিলেই ভ্রমণ অনেক স্বস্তিদায়ক হয়।

নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী ট্রেক বেছে নিন

নেপালের জনপ্রিয় ট্রেকিং রুটগুলো সাধারণত ব্যস্ত। অভিজ্ঞ ট্রেকাররা দলবদ্ধভাবে গাইড ছাড়াও যেতে পারেন। তবে একা যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। নিজের শারীরিক সক্ষমতা বুঝে ট্রেক নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি।

গাইড নিতে চাইলে নেপালে গিয়ে নিন

অনেকে নিরাপত্তার জন্য গাইড নিতে চান। সে ক্ষেত্রে আগে বুক না করে নেপালে গিয়ে সরাসরি গাইড বা এজেন্সির সঙ্গে কথা বললে খরচ কম পড়ে।

স্বল্প ট্রেকের জন্য গিয়ার ভাড়া নিন

স্বল্প সময়ের ট্রেকের জন্য ভারী গিয়ার সঙ্গে নেওয়ার দরকার নেই। কাঠমান্ডু ও পোখারায় সহজে জ্যাকেট, স্লিপিং ব্যাগ ইত্যাদি ভাড়া পাওয়া যায়। প্রতিদিন গড়ে ১০০ রুপি ব্যয় হতে পারে এ বাবদ।

নেপালে দৈনিক আনুমানিক খরচ

হোটেল বেড: ৪০০ রুপি

সাধারণ ডাবল রুম: ১ হাজার ৫০০ রুপি

লোকাল বাস (কাঠমান্ডু থেকে পোখারা): ৮০০ রুপি

ট্যুরিস্ট বাস: ১ হাজার ৩০০ রুপি

কফি: ২০০ রুপি থেকে শুরু

মোমো: ১৩০ রুপি থেকে শুরু

ভালো রেস্টুরেন্টে দুজনের ডিনার: ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৬ হাজার ৫০০ রুপি

পাহাড়ে ডাল-ভাত: ৪০০ থেকে ৮৫০ রুপি

দৈনিক গড় খরচ: ২ হাজার থেকে ৬ হাজার ৭০০ রুপি

২ সপ্তাহে খরচ: ২৮ হাজার থেকে ৯৪ হাজার রুপি

সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেষকৃত্যের পরিকল্পনা নিজেরাই করছেন মার্কিন প্রবীণেরা

ফিচার ডেস্ক
প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

নিজের শেষকৃত্য, উইল, চিকিৎসা ব্যয় এমনকি ভবিষ্যৎ পরিচর্যার ব্যবস্থাও আগেভাগে গুছিয়ে রাখছেন যুক্তরাষ্ট্রের বহু প্রবীণ নাগরিক। উদ্দেশ্য একটাই—বার্ধক্যে বা মৃত্যুর পর যেন সন্তানদের আর্থিক ও মানসিক চাপে না ফেলতে হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাবা-মায়ের দেখভালের অভিজ্ঞতা থেকে আজকের বেবি বুমার ও জেন এক্স প্রজন্ম এই সিদ্ধান্তে আসছে।

‘আমি মেয়ের বোঝা হতে চাই না’

ক্যালিফোর্নিয়ার প্লেজেন্টনের বাসিন্দা ৭৬ বছর বয়সী জসলিন কম্বস ইতিমধ্যে নিজের সব গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গুছিয়ে ফেলেছেন। উইল, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, অনলাইন পাসওয়ার্ড—সবকিছুর একটি তালিকা তৈরি করে রেখেছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, নিজের জমিতেই একটি ছোট আলাদা ঘর তৈরি করেছেন। ভবিষ্যতে সেখানে কেয়ারগিভার থাকবেন, অথবা প্রয়োজনে সেটি ভাড়া দিয়ে অতিরিক্ত আয় করবেন। এই পরিকল্পনার পেছনে রয়েছে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা। কম্বসের বাবা-মা দুজনে ৯০ বছরের বেশি বয়স পর্যন্ত বেঁচেছিলেন। দীর্ঘদিন তাঁদের দেখভাল করতে গিয়ে তিনি মানসিক ও আর্থিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।

ওয়াশিংটন পোস্টকে তিনি বলেন, ‘এই অভিজ্ঞতা আমাকে একেবারে নিঃশেষ করে দিয়েছিল। তাই আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যেন আমার মেয়েকে কখনো এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে না হয়।’

প্রবীণদের নতুন বাস্তবতা

আর্থিক পরামর্শক ও আইনজীবীদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে বেবি বুমার (১৯৪৬-১৯৬৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া প্রজন্ম) এবং জেন এক্স (১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া প্রজন্ম) প্রজন্মের মধ্যে ভবিষ্যৎ নিয়ে এমন আগাম প্রস্তুতির প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। তাঁরা শুধু আর্থিক পরিকল্পনা নয়, ঘরবাড়ি গুছিয়ে রাখা, অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলা এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত সিদ্ধান্তও আগেভাগে নিয়ে রাখছেন। ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর ফ্যামিলি কেয়ার এবং এএআরপির চলতি বছরের এক জরিপে দেখা গেছে, বর্তমানে প্রায় ৪৭ শতাংশ পারিবারিক কেয়ারগিভার এই ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এক দশক আগে এই হার ছিল ৫ শতাংশ কম। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় অর্ধেক মানুষ জানিয়েছেন, বাবা-মায়ের দেখভাল করতে গিয়ে তাঁরা আয় হারিয়েছেন, সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে কিংবা বড় ধরনের আর্থিক সংকটে পড়েছেন।

ফ্যালকন ওয়েলথ প্ল্যানিংয়ের সিইও গ্যাব্রিয়েল শাহিন বলেন, ‘আগে বড় কোনো দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার পরই মানুষ এসব নিয়ে ভাবত। এখন অনেকে আগে থেকে উদ্যোগ নিচ্ছেন।’

বাড়ছে বয়স, বাড়ছে চাপ

যুক্তরাষ্ট্রে গড় আয়ু বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থার ওপর চাপও বাড়ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে দেশটিতে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ৩০ শতাংশের বেশি বাড়বে। তখন মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশই হবে প্রবীণ। অন্যদিকে, পেশাদার নার্স ও কেয়ারগিভারের সংকট দিন দিন তীব্র হচ্ছে। ব্যয়ও ভয়াবহ রকমের বেশি। বিমা কোম্পানি জেনওয়ার্থের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে একটি নার্সিং হোমে ব্যক্তিগত কক্ষের গড় খরচ ছিল মাসে ১০ হাজার ৬৫০ ডলার। তুলনামূলক সাধারণ সিনিয়র কেয়ার সেন্টারেও মাসে গড়ে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ ডলার খরচ হয়।

শুধু টাকা নয়, মানসিক চাপও

অর্থনৈতিক চাপের পাশাপাশি মানসিক চাপও এই প্রজন্মকে নাড়া দিচ্ছে। বাস্তবে দেখা যায়, পরিবারের প্রবীণ সদস্যের দেখভালের দায়িত্ব প্রায়ই একজনের ওপর পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কন্যা সন্তান বা যিনি কাছাকাছি থাকেন। এতে পারিবারিক দ্বন্দ্ব, অভিমান ও দূরত্ব তৈরি হয়। বোস্টনের বাসিন্দা জোয়ান স্যাভিট ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বোস্টন ও ক্লিভল্যান্ডের মধ্যে যাতায়াত করেছেন তাঁর ১০১ বছর বয়সী মায়ের বাড়ি গোছাতে। ৫৫ বছরের জমানো জিনিসপত্রে ভরা সেই বাড়ি পরিষ্কার করা, ব্যাংক ও ক্রেডিট কার্ড বাতিল, চিকিৎসকের কাছে নেওয়া—সবকিছু সামলাতে গিয়ে নিজের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে তাঁর। উচ্চ রক্তচাপ, চোখের ক্ষতি, এমনকি ভাই-বোনদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি—সবই এ কারণে হয়েছে। এই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, স্বামী মারা গেলে নিজের বাড়ি নিলামে তুলে ছোট বাসায় চলে যাবেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমি কাউকে বিব্রত করতে চাই না। শহীদের মতো আত্মত্যাগও করতে চাই না।’

পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সতর্কবার্তা

আমেরিকান একাডেমি অব এজিং লর সভাপতি এরিক আইনহার্ট এই প্রবণতাকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি ‘ওয়েক-আপ কল’ বলে উল্লেখ করেছেন। ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা কলিন গ্লিসন বাবা-মা মারা যাওয়ার পরপরই একজন আইনজীবীর সঙ্গে বসে নিজের লিভিং উইল তৈরি করেন। ছেলেকে জানিয়ে দেন, তিনি দাহ চান। সম্পত্তি ও নথিপত্রও এমনভাবে গুছিয়ে রাখেন, যেন ছেলেকে আইনি জটিলতায় পড়তে না হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রবণতা শুধু একটি দেশের গল্প নয়; এটি আধুনিক সমাজে বার্ধক্য, পরিবার ও দায়িত্ববোধের নতুন বাস্তবতার প্রতিফলন। প্রবীণেরা এখন আর শুধু নিজের ভবিষ্যৎ নয়, সন্তানদের ভবিষ্যৎ স্বস্তির কথাও ভাবছেন। জীবনের শেষ অধ্যায়কে গুছিয়ে নেওয়ার এই প্রচেষ্টা হয়তো আগামী দিনে আরও বিস্তৃত হবে শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়েই।

সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্টেইনলেস স্টিলের হাঁড়িপাতিল ঠিক রাখতে জেনে নিন এই পদ্ধতিগুলো

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ভুলভাবে ব্যবহারের কারণে স্টেইনলেস স্টিলের হাঁড়িপাতিলে হলদেটে হয়ে যেতে পারে, দাগ পড়ে এবং এগুলোর আয়ু কমে যায়। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
ভুলভাবে ব্যবহারের কারণে স্টেইনলেস স্টিলের হাঁড়িপাতিলে হলদেটে হয়ে যেতে পারে, দাগ পড়ে এবং এগুলোর আয়ু কমে যায়। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

স্টেইনলেস স্টিলের হাঁড়িপাতিল দ্রুত তাপ সরবরাহ করে এবং দীর্ঘদিন ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় রান্নাঘরে খুবই জনপ্রিয়। তবে ভুলভাবে ব্যবহার করলে এগুলো হলদেটে হয়ে যেতে পারে, দাগ পড়ে এবং এগুলোর আয়ু কমে যায়। তাই স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র ব্যবহারে কিছু ভুল এড়ানো জরুরি। এতে এসব তৈজসপত্র আরও টেকসই হয়।

অতিরিক্ত তাপে গরম করা

স্টেইনলেস স্টিল খুব দ্রুত এবং সমানভাবে গরম হয়। তাই শুরুতে বেশি আঁচে পাত্র বসালে তলার অংশ পুড়ে যেতে পারে বা কালচে দাগ পড়তে পারে। দীর্ঘদিন এভাবে ব্যবহার করলে ধাতুর গঠন দুর্বল হয়ে পাত্র বাঁকা হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। এতে চুলার ওপর পাত্র ঠিকভাবে বসে না এবং রান্নার সময় তাপ সমানভাবে ছড়ায় না।

সমাধান: রান্না শুরু করুন কম বা মাঝারি আঁচে। পাত্র হালকা গরম হওয়ার পর প্রয়োজন অনুযায়ী ধীরে ধীরে আঁচ বাড়ান। খালি পাত্র বেশি সময় চুলায় রাখবেন না।

গরম পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালা

রান্না শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম হাঁড়িতে ঠান্ডা পানি ঢাললে পাত্রে হঠাৎ তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটে। এতে স্টেইনলেস স্টিলের ধাতব গঠনে চাপ পড়ে এবং পাত্র বেঁকে যেতে পারে বা তলার অংশ বিকৃত হয়ে যায়। এর ফলে পরে পাত্রে তাপ সমানভাবে ছড়ায় না এবং রান্নার মানও ব্যাহত হয়।

সমাধান: রান্না শেষ হলে পাত্র কিছুক্ষণ স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা হতে দিন। সম্পূর্ণ ঠান্ডা হওয়ার পরেই ধোয়া শুরু করলে পাত্রের গঠন ও কার্যকারিতা দীর্ঘদিন ভালো থাকবে।

ডিশওয়াশারে নিয়মিত ধোয়া

স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র পরিষ্কারে সাধারণত ডিশওয়াশার নিরাপদ হলেও নিয়মিত এটি দিয়ে পাত্রগুলো ধোয়া ক্ষতিকর হতে পারে। ডিশওয়াশারে ব্যবহৃত শক্ত রাসায়নিক ডিটারজেন্ট এবং উচ্চ তাপমাত্রার পানির প্রভাবে পাত্রের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ধীরে ধীরে কমে যায়। এর ফলে পাত্রে দাগ পড়তে শুরু করে, যা দেখতে অস্বস্তিকর এবং পরিষ্কার করাও কঠিন হয়ে ওঠে।

সমাধান: মাঝে মাঝে এ ধরনের পাত্র শুধু পানি দিয়ে অথবা সাধারণ সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন।

ঠান্ডা পানিতে লবণ দেওয়া

অনেকে রান্নার শুরুতে ঠান্ডা পানিতে লবণ দিয়ে দেন। এটি স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রের জন্য ক্ষতিকর। ঠান্ডা পানিতে দেওয়া লবণের ক্লোরাইড, স্টিলের ক্রোমিয়াম এবং পানির অক্সিজেন একসঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়। এর ফলে পাত্রের গায়ে ছোট ছোট গর্তের মতো স্থায়ী দাগ তৈরি হয়, যাকে সহজে পরিষ্কার বা ঠিক করা যায় না এবং পাত্রের সৌন্দর্য ও স্থায়িত্ব—দুটোই কমে যায়।

সমাধান: সব সময় পানি ফুটে ওঠার পরেই তাতে লবণ যোগ করুন।

ধোয়ার পর পাত্র না শুকানো

ধোয়ার পর স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে পানি জমে থাকলে খুব দ্রুত চুনের দাগ বা সাদা আস্তরণ পড়ে। পানির সঙ্গে থাকা খনিজ উপাদান শুকানোর সময় পাত্রের গায়ে লেগে যায় এবং ধীরে ধীরে দাগ স্থায়ী হয়ে ওঠে, যা পরে পরিষ্কার করা কঠিন হয়ে পড়ে।

সমাধান: পাত্র ধোয়ার পর পরিষ্কার ও শুকনো কাপড় দিয়ে ভেতর ও বাইরে জমে থাকা পানি মুছে ফেলুন। এতে দাগ পড়া অনেক দেরি হবে এবং পাত্র দীর্ঘদিন ঝকঝকে থাকবে।

রোদে শুকাতে দেওয়া

অনেকে পাত্র ধুয়ে রোদে রেখে দেন, এটি ক্ষতিকর অভ্যাস। রোদে শুকানোর সময় পানির খনিজ উপাদান দ্রুত জমে গিয়ে স্টেইনলেস স্টিলের গায়ে দাগ তৈরি করতে পারে। এসব দাগ সহজে ওঠে না এবং পাত্রের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে।

সমাধান: পাত্র ধোয়ার পর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ভালোভাবে মুছে শুকিয়ে নিন এবং ঠান্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে রাখুন।

দাগ পড়লে করণীয়

বেকিং সোডা ও ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে হালকা করে ঘষে পরিষ্কার করুন। এতে দাগ উঠে যাবে এবং পাত্র আবার ঝকঝকে হবে।

সঠিক নিয়মে ব্যবহার ও নিয়মিত যত্ন নিলে স্টেইনলেস স্টিলের হাঁড়িপাতিল দীর্ঘদিন ঝকঝকে থাকে। এতে পাত্রের সৌন্দর্য যেমন বজায় থাকে, তেমনি তাপ পরিবহনের ক্ষমতাও নষ্ট হয় না। ফলে রান্না হয় সমান ও স্বাস্থ্যসম্মত এবং বারবার নতুন পাত্র কেনার প্রয়োজনও পড়ে না। একটু সচেতন ব্যবহারেই এই পাত্রগুলো বহু বছর ব্যবহার করা সম্ভব।

সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত