Ajker Patrika

ইউরোপের ধনী দেশ লুক্সেমবার্গে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, আবেদনের প্রক্রিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ০৩
পেশাজীবীদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে লুক্সেমবার্গ। ছবি: সংগৃহীত
পেশাজীবীদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে লুক্সেমবার্গ। ছবি: সংগৃহীত

লুক্সেমবার্গ একটি সমৃদ্ধ এবং বহুভাষিক দেশ। পশ্চিম ইউরোপের এই ছোট্ট দেশ বেলজিয়াম, ফ্রান্স এবং জার্মানি দ্বারা পরিবেষ্টিত। এটি বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত। এর শক্তিশালী অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো ব্যাংকিং, আর্থিক পরিষেবা এবং ইস্পাতশিল্প। পেশাদার ব্যক্তি এবং পরিবার নিয়ে বসবাসের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে এই দেশ।

লুক্সেমবার্গে দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের পরিকল্পনা করলে স্থায়ী বসবাসের (পিআর) অনুমতি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। একটি অস্থায়ী বা স্বল্পমেয়াদি ভিসার বিপরীতে এই পিআর আপনাকে আইনিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশে থাকার এবং কাজ করার অধিকার দেয়। এটি পাওয়ার জন্য টানা ৫ বছর বৈধ অনুমতির ভিত্তিতে লুক্সেমবার্গে বসবাস করতে হবে।

যোগ্যতার মানদণ্ড

স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার জন্য একজন আবেদনকারীকে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলো পূরণ করতে হবে।

টানা ৫ বছরের বৈধ বসবাস: আপনাকে অবশ্যই লুক্সেমবার্গে বৈধ ওয়ার্ক পারমিট, ব্লু কার্ড বা অন্য কোনো ধরনের দীর্ঘমেয়াদি আবাসিক অনুমতির অধীনে একটানা পাঁচ বছর বসবাস করতে হবে।

পর্যাপ্ত এবং স্থিতিশীল আয়: আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে বসবাসের সময় আপনার জীবিকা নির্বাহের জন্য পর্যাপ্ত এবং নিয়মিত আয় ছিল। এর অর্থ হলো, আপনাকে অবশ্যই একটি স্থিতিশীল চাকরির চুক্তি বা স্ব-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আয় দেখাতে হবে, যা লুক্সেমবার্গের জীবনযাত্রার ব্যয়ভার বহন করার জন্য যথেষ্ট।

বৈধ স্বাস্থ্যবিমা: বসবাসের পুরো সময় আপনার একটি বৈধ এবং পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিমা কভারেজ থাকা আবশ্যক।

অপরাধের রেকর্ড না থাকা: আবেদনকারীর একটি পরিষ্কার ব্যাকগ্রাউন্ড এবং কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত না থাকার প্রমাণ দিতে হবে। আপনাকে অবশ্যই লুক্সেমবার্গে বসবাসের সময়কালের একটি ব্যাকগ্রাউন্ড চেক বা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।

সামাজিক সম্পর্ক: লুক্সেমবার্গের সমাজে আপনার একীভূত হওয়ার প্রমাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সাধারণত দুটি বিষয়ের মাধ্যমে দেখানো যেতে পারে: ফরাসি, জার্মান বা লুক্সেমবার্গিশ ভাষার একটি নির্দিষ্ট স্তরের জ্ঞান (সাধারণত A2 বা B1 স্তর) ; দেশটির সংস্কৃতি, আইন এবং মূল্যবোধ সম্পর্কে জ্ঞান, যা সামাজিক একীকরণ প্রোগ্রামের সার্টিফিকেট দ্বারা প্রমাণিত হতে পারে।

উপযুক্ত আবাসন: আপনাকে দেখাতে হবে যে আপনার জন্য উপযুক্ত এবং স্থিতিশীল আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে, যেমন একটি বৈধ ভাড়া চুক্তি বা নিজের কেনা সম্পত্তির দলিল।

বৈধ পাসপোর্ট এবং আবাসিক অনুমতি: আবেদনের সময় আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট এবং বসবাসের সময়কালের সমস্ত বৈধ আবাসিক অনুমতির প্রমাণপত্র থাকতে হবে।

অনুবাদ এবং নথিপত্র: ফ্রান্স, জার্মান বা ইংরেজি ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় লেখা নথিগুলোর জন্য একজন স্বীকৃত অনুবাদকের দ্বারা করা অফিশিয়াল অনুবাদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।

কীভাবে আবেদন করবেন

স্থায়ী বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন প্রক্রিয়াটি সাধারণত MyGuichet.lu পোর্টালে সম্পন্ন করা হয়। এই প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে অনুসরণ করা হয়।

ধাপ ১: যোগ্যতা যাচাই এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ

প্রথমেই আপনার যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্রের তালিকা যাচাই করুন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে:

একটি বৈধ এবং সাম্প্রতিক পাসপোর্ট।

আপনার আয়ের প্রমাণপত্র (যেমন—বেতন স্লিপ, চাকরির চুক্তি বা ব্যাংকের স্টেটমেন্ট)।

লুক্সেমবার্গে আপনার বসবাসের সময়কালের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

আপনার আবাসন প্রমাণের জন্য ভাড়া চুক্তি বা সম্পত্তির দলিল।

সামাজিক একীকরণের প্রমাণপত্র (ভাষা কোর্স বা সামাজিক একীকরণ প্রোগ্রামের সার্টিফিকেট)।

স্বাস্থ্যবিমার প্রমাণপত্র।

জয়েন্ট সোশ্যাল সিকিউরিটি সেন্টার (CCSS) থেকে একটি অ্যাফিলিয়েশন সার্টিফিকেট।

ধাপ ২: MyGuichet. lu পোর্টালে আবেদন জমা দেওয়া

MyGuichet. lu হলো লুক্সেমবার্গের সরকারি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। এই পোর্টালে আপনার সমস্ত নথিপত্র আপলোড করে আবেদন ফর্মটি পূরণ এবং জমা দিতে হবে। এই প্ল্যাটফর্ম আবেদন প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ করে তোলে।

ধাপ ৩: আবেদন ফি প্রদান

আবেদন ফরম জমা দেওয়ার সময়, ৮০ পাউন্ডের একটি বেসিক ফি দিতে হবে। নথিপত্র অনুবাদ এবং অন্যান্য প্রশাসনিক খরচের জন্য অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।

ধাপ ৪: অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা

আবেদন জমা দেওয়ার পর, ইমিগ্রেশন ডিরেক্টরেট (Immigration Directorate) আপনার আবেদন পর্যালোচনা করবে। এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত ৬ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এই সময়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আপনার কাছে অতিরিক্ত নথিপত্র বা তথ্যের জন্য অনুরোধ আসতে পারে।

ধাপ ৫: বায়োমেট্রিক ডেটা জমা দেওয়া

আবেদন অনুমোদিত হলে আপনাকে বায়োমেট্রিক ডেটা, যেমন আঙুলের ছাপ এবং একটি ছবি জমা দেওয়ার জন্য ইমিগ্রেশন ডিরেক্টরেটের সঙ্গে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে হবে।

ধাপ ৬: পারমানেন্ট রেসিডেন্সি (পিআর) পারমিট গ্রহণ

বায়োমেট্রিক ডেটা জমা দেওয়ার পর আপনার পারমানেন্ট রেসিডেন্সি কার্ড ডাকযোগে আপনার ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। এই কার্ড লুক্সেমবার্গে আপনার স্থায়ী বসবাসের এবং কাজ করার বৈধ প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজদরবার থেকে যেভাবে সাধারণের পাতে এল নান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নরম তুলতুলে নান দক্ষিণ এশিয়ার বেশ জনপ্রিয় ফ্ল্যাটব্রেড। মাখনে ভরপুর ঘন গ্রেভির বাটার চিকেনের সঙ্গে নানের জুটি এই অঞ্চলের অন্যতম সেরা খাবার। দক্ষিণ এশিয়ার বাইরেও ভারতীয় খাবারের তালিকায় এর সুনাম রয়েছে।

সাধারণত টক-ঝাল আর সুগন্ধি গ্রেভিকে খাবারের মূল আকর্ষণ মনে করা হলেও এর সঙ্গী নান ছাড়া পুরো খাবারের আবেদনই ফিকে হয়ে যায়। নানের চটচটে ভাব প্রতিটি কামড়ে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। এর সূক্ষ্ম স্বাদ গ্রেভির মসলা ও গন্ধের সঙ্গে দারুণভাবে মিশে যায়। প্রকৃতপক্ষে বহুমুখী এই নান তার সঙ্গের মূল পদটিকে উজ্জ্বল করে তুলতে সাহায্য করে।

সম্ভবত এ কারণে এই রুটি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রেডগুলোর একটি হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি চিরাচরিত নানের সুস্বাদু সংস্করণ বাটার গার্লিক নান টেস্ট অ্যাটলাসের সেরা রুটির তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছে।

গরম নানের ওপর মাখন ব্রাশ করে তার ওপর কুচানো রসুন ছিটিয়ে এটি তৈরি করা হয়। এই তালিকায় আরও রয়েছে আলু নান, যা মসলা ও ধনেপাতা মাখানো আলুর পুর দিয়ে তৈরি।

আজকাল ভারতীয় বা মধ্যপ্রাচ্যের খাবার পরিবেশন করা রেস্তোরাঁগুলোতে নান ও এর বিভিন্ন সংস্করণ পাওয়া গেলেও একসময় এটি কেবল মুসলমান রাজাদের দরবারেই পরিবেশন করা হতো। তাহলে রাজকীয় রান্নাঘর থেকে কীভাবে এই নান আমাদের সাধারণের পাতে এসে পৌঁছাল?

নানের উৎস নিয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা থাকলেও অনেক খাদ্য ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন, এই রুটির জন্ম প্রাচীন পারস্যে (বর্তমান ইরান)। কারণ, নান শব্দটি ফারসি শব্দ ব্রেড বা রুটি থেকে এসেছে। পারস্যবাসীরা জল ও ময়দা দিয়ে এই রুটি তৈরি করত এবং সম্ভবত উত্তপ্ত নুড়ি পাথরের ওপর এটি সেঁকা হতো।

১৩ থেকে ১৬ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে যে সুলতানরা ভারতীয় উপমহাদেশের বিশাল অংশ শাসন করেছিলেন, তাঁদের হাত ধরেই নান এই অঞ্চলে আসে। মুসলিম শাসকেরা তাঁদের সঙ্গে পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ার রন্ধনশৈলী নিয়ে এসেছিলেন; যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল তন্দুর বা মাটির উনুনে রান্না করা।

ইন্দো-পার্সিয়ান কবি আমির খসরু, যিনি আলাউদ্দিন খিলজি ও মুহাম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকালের রাজদরবারের জীবন লিপিবদ্ধ করেছিলেন, তাঁর লেখায় দুই ধরনের নানের কথা উল্লেখ করেছে—একটি নান-ই-তানুক, অন্যটি নান-ই-তানুরি।

এর মধ্যে প্রথমটি ছিল পাতলা ও সূক্ষ্ম আর দ্বিতীয়টি ছিল তন্দুরে সেঁকা মোটা ও ফোলা রুটি। সুলতানি আমলে নান সাধারণত বিভিন্ন মাংসের পদ, যেমন কাবাব বা কিমার সঙ্গে তৃপ্তিসহকারে খাওয়া হতো।

রাজকীয় রান্নাঘরের পাচক বা বাবুর্চিরা নান তৈরির কৌশলে আরও নতুনত্ব নিয়ে আসেন। তাঁরা মাখানোর বিশেষ ধরনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন এবং সেই সময়ে এক দুর্লভ উপকরণ ইস্ট ব্যবহার শুরু করেন, যাতে রুটিটি আরও নরম ও ফোলা হয়। অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল প্রস্তুতির কারণে সে সময় নান ছিল মূলত একটি বিলাসবহুল খাবার, যা কেবল অভিজাত শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

পরবর্তী তিন শতাব্দী ধরে মুঘল সম্রাটদের শাসনামলেও এই ধারা অব্যাহত ছিল।

দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসবিদ নেহা ভারমানি বলেন, বিশেষজ্ঞ পাচক, যাঁদের নানবাই বলা হতো, তাঁরা এই রুটি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন এবং তাঁদের উদ্ভাবনগুলো বোঝাতে বিভিন্ন বিশেষ্য ব্যবহার করতেন। উদাহরণস্বরূপ, নান-ই-ওয়ারকি ছিল পাতলা ও স্তরে স্তরে সাজানো একটি রুটি। অন্যদিকে নান-ই-তাঙ্গি ছিল তুলনামূলক ছোট, যা খুব সহজেই ঝোল বা গ্রেভি শুষে নিতে পারত।

নানের নামকরণ অনেক সময় সেইসব রাজকীয় রান্নাঘরের নামানুসারেও করা হতো, যেখানে এগুলো তৈরি হতো।

ভারমানি জানান, বাকরখানি বিস্কুটের মতো একটি রুটি। এর নামকরণ করা হয়েছিল বাকর নজম সাইনির রান্নাঘরের নাম অনুসারে, যিনি জাহাঙ্গীর ও শাহজাহানের দরবারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন।

ব্রিটিশ শাসনামলেও নান মূলত উচ্চবিত্তদের খাবার হিসেবে টিকে ছিল। তবে ইংরেজ পর্যটকদের মাধ্যমে এটি ধীরে ধীরে পশ্চিমা বিশ্বে পরিচিতি পেতে শুরু করে। এদিকে ভারতেও ঔপনিবেশিক আমলের খাদ্যাভ্যাসে নান নিজের জায়গা করে নেয়। তখন এটি প্রক্রিয়াজাত মাংস কিংবা স্থানীয় মসলাযুক্ত সসের সঙ্গে পরিবেশন করা হতো।

ইতিহাসবিদ নেহা ভারমানি বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানের সেই জটিল রন্ধনশৈলীর বদলে সহজ পদ্ধতি চলে আসে। ফলে সাধারণ মানুষের কাছেও এটি সহজলভ্য হয়ে ওঠে; ঠিক যেমনটা আমরা বর্তমানে স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে দেখে থাকি।’

বর্তমানে ময়দা, দই ও ইস্ট মিশিয়ে একটি নরম খামির তৈরির মাধ্যমে নান প্রস্তুত করা হয়। খামির ফুলে ওঠার জন্য কিছুক্ষণ রেখে দেওয়া হয়। এরপর ছোট ছোট গোল্লা করে হাত দিয়ে চ্যাপ্টা আকার দেওয়া হয়। এরপর এটি অত্যন্ত গরম তন্দুরে দেওয়া হয়, যতক্ষণ না এটি ফুলে ওঠে এবং গায়ে বাদামি দাগ পড়ে। পরিবেশনের আগে এর ওপর হালকা করে মাখন বা ঘি ব্রাশ করে দেওয়া হয়।

তবে নানের গল্প এখানেই শেষ নয়।

১৯৯০ ও ২০০০-এর দশকে নানের ক্ষেত্রে নতুন এক উদ্ভাবনের জোয়ার আসে। ভারত ও বিদেশের নামী রেস্তোরাঁগুলো এই রুটি নিয়ে নতুন সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে।

রাঁধুনী সুবীর শরণ স্মরণ করেন, নিউইয়র্কে তাঁর রেস্তোরাঁ কীভাবে পালং শাক, পনির ও মাশরুম দিয়ে নান তৈরি শুরু করেছিল।

শরণ বলেন, অভারতীয়দের কাছে নানকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য এটি ছিল একধরনের সাজসজ্জা। অন্যদিকে প্রবাসে থাকা ভারতীয়রা তাঁদের ঐতিহ্যবাহী খাবারটি খাওয়ার সময় কিছুটা আধুনিকতার স্বাদ পেয়ে আনন্দিত হতেন।

এই ধারা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে এবং আজ সারা বিশ্বের রেস্তোরাঁগুলো নানা ধরনের উপকরণে ঠাসা পরীক্ষামূলক নান পরিবেশন করছে।

শরণ বলেন, ‘আপনি গোয়ার কোনো রেস্তোরাঁয় পর্ক ভিন্দালু নান বা বাটার চিকেন নান পাবেন। আবার হংকংয়ের কোনো রেস্তোরাঁয় হয়তো পাবেন ট্রাফল চিজ নান। নান হলো বিশ্বের দরবারে ভারতের এক গৌরবময় রন্ধনশৈলীর উপহার।’

খাদ্য ঐতিহাসিকেরা হয়তো এতে পুরোপুরি একমত হবেন না, কারণ, নান অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর খাবারেরও অংশ। তবে ভারতের সঙ্গে এর সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও সুপ্রাচীন।

শরণ বলেন, ‘নান মূলত একাত্মতা ও ভারতীয় পরিচয়ের বার্তা বহন করে। নান আমাদের বহুত্ববাদের গল্প শোনায়। শোনায় কীভাবে বিভিন্ন সংস্কৃতি মিলেমিশে একত্রে থাকে। এটি আমাদের শেখায়, ভিন্নতা মানেই একে অপরকে বাতিল করে দেওয়া নয়; বরং সেই ভিন্নতাগুলোকে একসঙ্গে উদ্‌যাপন করা।’

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের দিনে ঘরে মায়াবী সুগন্ধ আর পরিচ্ছন্নতার সহজ পাঠ

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ০৭
প্রাচীন রোমান উৎসব ‘স্যাটারনালিয়া’র সময় কমলার খোসা ও দারুচিনি পোড়ানো হতো। ছবি: পেক্সেলস
প্রাচীন রোমান উৎসব ‘স্যাটারনালিয়া’র সময় কমলার খোসা ও দারুচিনি পোড়ানো হতো। ছবি: পেক্সেলস

ঘরকে পরিপাটি রাখার জন্য বেশ কিছু বিষয়ের ওপরে নজর থাকতে হয়। ধুলা মোছা থেকে শুরু করে জায়গা বুঝে আসবাব রাখা পর্যন্ত সবকিছু। এর সঙ্গে একটি বিশেষ দিকে খেয়াল রাখতে হয়, তা হলো ঘরের বাতাসে যেন কোনো দুর্গন্ধ না থাকে। আর সে জন্য অনেকে ব্যবহার করেন বিভিন্ন স্প্রে। আবার কেউ কেউ প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরের বাতাসে একটা সুবাতাস নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। এটি শুধু সেই ঘরে উপস্থিত মানুষকে আরাম দেয় এমন না। বিষয়টি সরাসরি রোগব্যাধি ও জীবাণুর থাকা না থাকার সঙ্গেও সম্পর্কিত। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসের একটি প্রাচীন ধারণা থেকে এই বিষয়ে একটা বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়। আর সেই ধারণাকে বলা হয় মিয়াজমা তত্ত্ব।

মিয়াজমা তত্ত্ব কী

মিয়াজমা তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্বাস করা হতো যে রোগব্যাধি কোনো জীবাণু থেকে নয়, বরং পচা বা দুর্গন্ধযুক্ত বাতাস থেকে ছড়ায়। এই তত্ত্ব ১৯০০ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রচলিত ছিল।’ মিয়াজমা’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ থেকে। যার অর্থ দূষণ বা কলুষতা। তখনকার মানুষ বিশ্বাস করত যে পচা জৈব পদার্থ, আবর্জনা বা মৃত প্রাণীর পচা গন্ধ থেকে এক ধরনের বিষাক্ত কুয়াশা বা বাতাস তৈরি হয়। এই খারাপ বাতাস বা দুর্গন্ধ যখন মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করে, তখন সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। যেহেতু বিশ্বাস করা হতো যে দুর্গন্ধই রোগ ছড়ায়, তাই মানুষ এর প্রতিকার হিসেবে কিছু ব্যবস্থা নিত। এর জন্য সুগন্ধির ব্যবহার, পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও ভেন্টিলেশনের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করা হয়।

উপাদান ও প্রাচীন বিশ্বাস

প্রাচীন রোমান উৎসব ‘স্যাটারনালিয়া’র সময় কমলার খোসা ও দারুচিনি পোড়ানো হতো। মূল্যবান ফল কমলা ছিল সমৃদ্ধির প্রতীক, আর এর সুগন্ধ ঘরের দুর্গন্ধ ঢেকে দিত দ্রুত। শীতের দিনে ঘরের পরিবেশ আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যকর করতে আপনিও এই প্রাচীন পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। এর জন্য একটি পাত্রে অর্ধেক পানি নিন। তাতে পাতলা করে কাটা কমলালেবু বা লেবু এবং দু-টুকরো দারুচিনি দিন। ২০ মিনিট মাঝারি আঁচে ফুটিয়ে শেষে কয়েক ফোঁটা ভ্যানিলা ওয়েল মিশিয়ে দিন। এই সুগন্ধ আপনার ঘরের পর্দা ও বিছানায় মিশে গিয়ে এক অদ্ভুত উষ্ণতা ছড়িয়ে দেবে। দারুচিনি এবং কমলার তেলের অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য বাতাসের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এটি হাজার বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে বর্তমানের এক সেতুবন্ধ তৈরি করবে। এ ছাড়া মিষ্টি ও মসলাযুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য ভ্যানিলা, ক্যারামেল এবং মধুর মিশ্রণে তৈরি করে নিতে পারেন সুগন্ধি যা শীতকালে অসম্ভব জনপ্রিয়। এটি কেবল উষ্ণতাই দেয় না, মনে এক ধরনের স্বস্তি আনে।

শীতে মানুষ ঘরের দরজা-জানালা বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখে। আর সেখান থেকেই ঘরের ভেতরে ছড়িয়ে পড়তে পারে অস্বস্তি। ছবি: পেক্সেলস
শীতে মানুষ ঘরের দরজা-জানালা বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখে। আর সেখান থেকেই ঘরের ভেতরে ছড়িয়ে পড়তে পারে অস্বস্তি। ছবি: পেক্সেলস

অস্বস্তিকর গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে

অতীতের ইউরোপে তীব্র শীত থেকে বাঁচতে ঘরের ভেতরে গবাদিপশু রাখা হতো। এতে পশুদের শরীরের তাপে ঘর গরম থাকত ঠিকই, কিন্তু বদ্ধ পরিবেশে তীব্র দুর্গন্ধ তৈরি হতো। তৎকালে চিকিৎসাবিদ্যা মিয়াজমা তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্বাস করা হতো যে এই দুর্গন্ধই হলো সব রোগের মূল কারণ। তাই বাতাসকে ‘শুদ্ধ’ করতে সুগন্ধি ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়। ইউরোপিয়ানদের মতো শীত না পড়লেও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বেশ শীতের প্রকোপ খেয়াল করা যায়। এই শীতে মানুষ ঘরের দরজা-জানালা বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখে। আর সেখান থেকেই ঘরের ভেতরে ছড়িয়ে পড়তে পারে অস্বস্তি। ঘরে মেহমান আসার আগে যদি বিস্কুট বা কেক তৈরি করেন, তবে সেই মিষ্টি সুগন্ধ পুরো বাড়িতে আভিজাত্যের ছোঁয়া দেবে। এমনই কিছু টিপস থেকে ২০২৬ সালে আপনার প্রিয় ঘরটিকে সব সময় ফ্রেশ রাখতে পারেন।

আর্দ্রতা বা ময়শ্চার নিয়ন্ত্রণ করুন

ঘরের দুর্গন্ধের প্রধান কারণ হলো আর্দ্রতা। ভেজা তোয়ালে ভালোমতো শুকিয়ে ভাঁজ করুন। ডিশ স্পঞ্জ প্রতি এক-দুই সপ্তাহে বদলে ফেলুন। বাথরুমে কার্পেট বা ম্যাট এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো আর্দ্রতা ধরে রাখে। কার্পেট, সোফার কুশন বা পর্দা দুর্গন্ধের ম্যাগনেট হিসেবে কাজ করে। কার্পেটে বেকিং পাউডার ছিটিয়ে কয়েক ঘণ্টা রেখে ভ্যাকিউম করুন। এটি গভীর থেকে দুর্গন্ধ শুষে নেবে। বছরে অন্তত একবার কার্পেট ও সোফা স্টিম ক্লিন করান।

ঘরকে সতেজ রাখতে জেসমিন, রোজ বা ল্যাভেন্ডার গাছ রাখতে পারেন। ছবি: পেক্সেলস
ঘরকে সতেজ রাখতে জেসমিন, রোজ বা ল্যাভেন্ডার গাছ রাখতে পারেন। ছবি: পেক্সেলস

ডাস্টবিন ও পোষা প্রাণীর দিকে খেয়াল রাখুন

বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকলে তাদের ডাস্টবিন বা লিটার বক্সের গন্ধে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। তাই নিয়মিত ডাস্টবিনের ভেতরটা ঢাকনাসহ পরিষ্কার করুন। গন্ধ শুষে নিতে বালতির নিচে কিছুটা ‘কিটি লিটার’ বা বেকিং সোডা ছিটিয়ে দিতে পারেন। বড় বিনের বদলে ছোট ডাস্টবিন ব্যবহার করুন যাতে প্রতিদিন ময়লা ফেলতে আপনি বাধ্য হন।

ফ্রিজ পরিষ্কারের ম্যাজিক

মাসে অন্তত একবার ফ্রিজের সবকিছু চেক করুন। মেয়াদোত্তীর্ণ সস বা পুরোনো বেঁচে যাওয়া খাবার ফেলে দিন। ফ্রিজের ভেতরটা পরিষ্কার করতে ভিনেগার ও গরম জলের মিশ্রণ ব্যবহার করুন। ফ্রিজের পেছনে একটি তুলার বলে ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট ভিজিয়ে রেখে দিন, এতে চমৎকার সুগন্ধ ছড়াবে।

বাতাস চলাচলের সুযোগ দিন

সবচেয়ে সহজ উপায় হলো জানালা খুলে দেওয়া। শীতের কারণে এখন অনেকেই ঘরের জানালা বন্ধ রাখেন। কিন্তু এতে ঘরের মধ্যে একধরনের অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়। রান্নার গন্ধ বা ঘরের ভ্যাপসা ভাব কাটাতে জানালা খুলে দিলে ক্রস-ব্রিজ তৈরি হয়, যা নিমেষেই মন ভালো করে দেয়।

গাছ ও ফুলের ব্যবহার

ঘরকে সতেজ রাখতে জেসমিন, রোজ বা ল্যাভেন্ডার গাছ রাখতে পারেন। জানালার পাশে পুদিনা বা রোজমেরি গাছ থাকলে ঘর এমনিতেই ফ্রেশ থাকে।

ড্রেন ও টয়লেট পরিষ্কার

সিঙ্ক বা শাওয়ারের ড্রেনে জমে থাকা চুল বা সাবানের ময়লা থেকে দুর্গন্ধ আসে। মাসে অন্তত দুবার ভিনেগার ও বেকিং সোডা দিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করুন। টয়লেটের শুধু প্যান নয়, ট্যাঙ্কের ভেতরের ময়লাও স্ক্রাব করে পরিষ্কার রাখুন।

সূত্র: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ, বিজনেস ইনসাইডার, রিয়্যাল সিম্পিল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১০ মিনিটের ধ্যানে কমাতে পারে মানসিক চাপ

ফিচার ডেস্ক
ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

বর্তমান জীবনে মানসিক চাপ প্রায় সবার নিত্যসঙ্গী। কাজের চাপ, দ্রুত যোগাযোগ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং সারাক্ষণ মোবাইল ও স্ক্রিনের সঙ্গে থাকা। সব মিলিয়ে আমরা অনেক সময় নিজের জন্য এক মুহূর্তও থামতে পারি না। এর ফল হিসেবে দেখা দেয় অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, মনোযোগের অভাব এবং ঘুমের সমস্যা। এই অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন অল্প সময় ধ্যান করলেই মানসিক চাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

ধ্যান কী এবং কেন এটি সহজ

অনেকেই মনে করেন ধ্যান মানে কঠিন কিছু। বিশেষ ভঙ্গিতে বসতে হয় বা জটিল নিয়ম মেনে চলতে হয়। আসলে বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। ধ্যান খুবই সহজ একটি মানসিক অনুশীলন। ধ্যান বলতে মূলত নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং বর্তমান মুহূর্তে নিজেকে স্থির রাখাকেই বোঝায়। এই সময় কোনো কিছু জোর করে ভাবার দরকার নেই, আবার সব চিন্তা বন্ধ করার চেষ্টাও করতে হয় না। শুধু শান্তভাবে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার দিকে মন দিলেই ধ্যান শুরু হয়ে যায়। ধ্যান করতে কোনো যন্ত্রপাতি লাগে না, বিশেষ পোশাকের প্রয়োজন হয় না এবং এর জন্য আলাদা কোনো খরচও নেই। বয়স, জায়গা বা সময়ের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও কয়েক মিনিট সময় বের করে নেওয়া সম্ভব বলেই ধ্যান আজকের দিনে মানসিক চাপ কমানোর একটি সহজ ও কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

কীভাবে উপকার পাওয়া যায়

অনেকে ভাবেন ধ্যান করতে হলে অনেক সময় দরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত অল্প সময়ই সবচেয়ে কাজে দেয়। ২০২৫ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করে। ধ্যান আমাদের জীবনের গতি একটু কমিয়ে দেয়। এতে আমরা শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাই, চিন্তাগুলো পরিষ্কার করতে পারি এবং মানসিকভাবে নতুন শক্তি ফিরে পাই। এই ছোট বিরতিই মস্তিষ্ককে চাপ সামলাতে সাহায্য করে।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

সকালে ধ্যান করলে কেন বেশি লাভ

দিনের শুরুটা যেমন হয়, অনেক সময় পুরো দিনটাই তেমন কাটে। সকালে মাত্র ১০ মিনিট ধ্যান করলে মন শান্ত থাকে এবং অকারণ দুশ্চিন্তা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধ্যানের সময় সচেতনভাবে শ্বাস নেওয়ার ফলে শরীরের স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে। এর প্রভাব সারা দিন থাকে। নিয়মিত সকালে ধ্যান করলে ধীরে ধীরে শান্ত থাকা মানুষের স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত হয়।

ধ্যান ও মনোযোগের সম্পর্ক

বর্তমানে অনেকে মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যায় ভোগেন। পড়াশোনা বা কাজে বসলে মন স্থির থাকে না, অল্প সময়ের মধ্যেই চিন্তা অন্যদিকে চলে যায়। নানা দুশ্চিন্তা আর কাজের চাপের কারণে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ধ্যান করলে মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখা, চিন্তাভাবনা করা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার অংশ সক্রিয় হয়। এর ফলে বিভ্রান্তি কমে, মাথার ভেতরের অগোছালো চিন্তাগুলো ধীরে ধীরে দূর হতে থাকে। ধ্যানের অভ্যাস গড়ে উঠলে কাজে মন বসানো সহজ হয়, দীর্ঘ সময় একাগ্রতা বজায় থাকে এবং কাজের মান ও দক্ষতা দুটোই বাড়ে।

ধ্যান শুরু করবেন কীভাবে

ধ্যান শুরু করতে কোনো বিশেষ জ্ঞান বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। আরাম করে বসে বা শুয়ে চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার দিকে মন দিলেই যথেষ্ট। মনে অন্য চিন্তা এলে বিরক্ত না হয়ে আবার শ্বাসের দিকে মন ফেরাতে হয়। প্রতিদিন নিয়ম করে মাত্র ১০ মিনিট সময় দিলেই ধীরে ধীরে এর সুফল বোঝা যায়।

ধ্যান কোনো জাদু নয়, আবার জটিল কিছুই নয়। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও প্রতিদিন নিজের জন্য ১০ মিনিট সময় বের করে নেওয়াই হতে পারে মানসিক চাপ কমানো, মন শান্ত রাখা এবং সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনে ফেরার একটি সহজ উপায়।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বর্ষবরণের পানীয় হোক স্ট্রবেরি লেমোনেড

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২০
ছবি: মরিয়ম হোসেন নূপুর।
ছবি: মরিয়ম হোসেন নূপুর।

নতুন বছর বরণ করার সময় চলে এসেছে। রাত ১২টার ঘণ্টা জানান দেবে ২০২৬-এর আগমন। বছরের প্রথম দিনে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া তো হবেই। এসব খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি লাল পানীয়। আপনাদের জন্য স্ট্রবেরি লেমোনেডের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর

উপকরণ

স্ট্রবেরি ২টি, পানি ১/৪ কাপ, লেবুর রস ২ চা চামচ, সোডা ওয়াটার ৩/৪ কাপ, সুগার সিরাপ ২ চা চামচ, পুদিনা পাতা ১ টেবিল চামচ।

প্রণালি

স্ট্রবেরি পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিতে হবে। একটি গ্লাসে পুদিনা পাতা দিয়ে একটু থেঁত করে নিয়ে এরপর এতে লেবুর রস, ছেঁকে রাখা স্ট্রবেরি জুস এবং সুগার সিরাপ মিশিয়ে নিতে হবে। পরিবেশনের আগে সোডা ওয়াটার মিশিয়ে নিতে হবে। সবশেষে লেবুর টুকরা এবং বরফ দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত