Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

অস্ট্রেলিয়ায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে

ড. খলিলুর রহমান।

ড. খলিলুর রহমান, অস্ট্রেলিয়ার বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি মিউকফার্মে, ড্রাগ ডেভেলপমেন্ট সায়েন্টিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করছেন। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নাদিম মজিদ

নাদিম মজিদ
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৫, ১৪: ১৬

প্রশ্ন: মিউকফার্ম কি নিয়ে কাজ করে? সে প্রতিষ্ঠানে আপনি কোন সেকশনে কি নিয়ে কাজ করছেন?

উত্তর: মিউকফার্ম একটি ক্যানসার ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। তারা মূলত বিরল রোগ সিউডোম্যাক্সোমা পেরিটোনি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ‘ব্রোম‍্যাক’ নিয়ে কাজ করছে। এই ওষুধটি কেমোথেরাপির কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক। আমি মিউকফার্মের একজন আরএন্ডডি সায়েন্টিস্ট হিসেবে কর্মরত। আমার প্রধান কাজ হলো ক্যানসার কোষের ওপর ওষুধের প্রভাব এবং প্রাণীর শরীরের প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করা। এ ছাড়া ওষুধের নিরাপত্তা, কার্যকারিতা এবং গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো আমার দায়িত্বের মধ্যে পরে।

প্রশ্ন: আপনি কীভাবে এ সেক্টরে এলেন?

উত্তর: আমি দক্ষিণ কোরিয়ায় মাস্টার্স করাকালীন সেখানকার প্রসিদ্ধ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ডংয়ে এস টির অর্থায়নে একটি ডায়াবেটিস ড্রাগ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। একটি ডায়াবেটিক ওষুধের শুরু থেকে বাজারে আসা পর্যন্ত কাজ করেছিলাম। ওষুধটি বাজারে বেশ সাফল্য লাভ করে, যা আমার চিন্তাভাবনা বদলে দেয়। আমি দেখি, একটি ওষুধ মানুষের জীবনে কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ অনুপ্রেরণা থেকে ওষুধ শিল্পে কাজ করার আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পায়। পরে আমি ইউনিভার্সিটি অব সিডনি থেকে ক‍্যানসার ড্রাগ ডেভেলপমেন্টের ওপর পিএইচডি এবং পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করি। বর্তমানে আমি ক্যানসারের ড্রাগ ডেভেলপমেন্ট নিয়েই কাজ করছি।

প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়ার পিএইচডি প্রোগ্রামে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়?

উত্তর: অস্ট্রেলিয়ার পিএইচডি প্রোগ্রামগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে, যা তাদের শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে সহায়ক। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায়ই মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন বৃত্তি প্রদান করে থাকে। এই বৃত্তিগুলো টিউশন ফি, জীবনযাত্রার খরচ এবং গবেষণার খরচ বহন করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের তাদের গবেষণা প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, ল্যাবরেটরি এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করে। অভিজ্ঞ শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের গবেষণা কাজ তত্ত্বাবধান করেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন। শিক্ষার্থীদের গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করার জন্য কনফারেন্স এবং কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগও দেওয়া হয়।

প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী কী চেয়ে থাকে? কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন?

উত্তর: পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদনকারীকে ভালো একাডেমিক যোগ্যতা এবং গবেষণার সম্ভাবনা প্রদর্শন করতে হয়। আবেদনকারীর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট বা মাস্টার্স পর্যায়ের একাডেমিক রেকর্ড ভালো হতে হবে। ইন্টার্নশিপ এবং প্রকাশনা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আবেদনকারী যে টপিকে পিএইচডি করতে চায়, সে টপিকে যদি তার সুপারভাইজার আগ্রহী হন, তাহলে তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী আবেদনকারীর TOEFL বা IELTS স্কোরও থাকতে হবে। সর্বোপরি, ব্যক্তিগত মোটিভেশন, অভিজ্ঞতা এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতির বিষয়গুলোও গুরুত্ব পায়।

প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়া বাইরের দেশ থেকে মেধাবীদের নিয়ে আসার জন্য কী কী প্রোগ্রাম সুবিধা দিয়ে থাকে?

উত্তর: অস্ট্রেলিয়া বাইরের দেশ থেকে মেধাবীদের নিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন প্রোগ্রাম অফার করে থাকে, কারণ দেশটিতে দক্ষ জনশক্তির সংকট রয়েছে। এই প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে তারা সঙ্কট পূরণ করতে চায়। এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হলো জেনারেল স্কিলড মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম, যা দক্ষ জনশক্তিকে স্থায়ী আবাসন প্রদানের অনুমোদন দেয়। এতে আবেদনকারীর যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা এবং ইংরেজিতে দক্ষতা যাচাই করা হয়। এর বাইরেও নিয়োগকর্তারা টেম্পোরারি স্কিল শর্টেজ ভিসার মাধ্যমে বিদেশি কর্মজীবীদের স্বল্পমেয়াদি এবং মাঝারি মেয়াদি কাজের জন্য স্পনসর করে থাকেন। গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসার মাধ্যমে প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গবেষণা সেক্টরের ব্যক্তিদের জন্য স্থায়ী বসবাসের অনুমোদন দেওয়া হয়। এমপ্লয়ার নমিনেশন স্কিম এবং রিজিওনাল স্পন্সরড মাইগ্রেশন স্কিমের মাধ্যমে শ্রমিক সংকট পূরণের চেষ্টা করা হয়। এই প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে দেশটি প্রতিযোগিতামূলক জনশক্তি, উদ্ভাবন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে থাকে।

প্রশ্ন: বাইরের দেশে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কলাবুরেশন হয়। আপনি নিজেও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কাজের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করেন। বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের সংস্কৃতি কেন গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: বাইরের দেশে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কলাবুরেশন একটি সাধারণ বিষয়, যার মাধ্যমে তারা উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক দক্ষতার উন্নয়ন করে থাকে। উন্নত বিশ্বে বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের জ্ঞান বিনিময় এবং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করে থাকে। শিক্ষকেরা তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি শিল্পভিত্তিক প্রকল্পে যুক্ত হন, যা তাদের একাডেমিক জ্ঞান এবং ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা বাড়ায়। বাংলাদেশেও এ ধরনের সংস্কৃতি জরুরি। এটি দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, স্থানীয় শিল্প, উন্নত প্রযুক্তি এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যবহারিক জ্ঞান যুক্ত করলে শিক্ষার্থীরা শুধু একাডেমিক ক্ষেত্রে সফল হবে না, বরং দেশের উদ্ভাবন এবং উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকতা করতে চাইলে পূর্বের পিএইচডি বা পোস্ট ডক, এমনকি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা কাজ করে না। অস্ট্রেলিয়াতে এ বিষয়গুলো কীভাবে দেখা হয়?

উত্তর: অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকতা করতে চাইলে পূর্বের পিএইচডি বা পোস্ট ডক্টরাল অভিজ্ঞতা এবং ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পিএইচডি এবং পোস্ট ডক্টরাল অভিজ্ঞতা শিক্ষককের গবেষণা দক্ষতা, নতুন জ্ঞান তৈরির ক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ দেয়। এই অভিজ্ঞতাগুলো শিক্ষকদের তাদের বিষয় সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জনে এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সহায়তা করতে সাহায্য করে। আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করা শিক্ষককের গবেষণা দক্ষতা এবং জ্ঞানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রমাণ করে। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষক নিয়োগের সময় তাদের প্রকাশনার সংখ্যা ও মান যাচাই করে। এসব বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়।

প্রশ্ন: ভারত এবং চীন বাইরের দেশ থেকে কর্মরত তাদের ট্যালেন্টদের দেশে ফিরিয়ে নিতে প্রোগ্রাম রেখেছে। কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকলে প্রবাসী বাংলাদেশি মেধাবীরাও বাংলাদেশে এসে কাজ করতে আগ্রহ পাবে?

উত্তর: বিদেশে কর্মরত মেধাবীদের তাদের দেশে নিয়ে আসতে এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য ভারত ও চীন নানা প্রোগ্রাম চালু করেছে। তাদের উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে আর্থিক প্রণোদনা, কর ছাড়, গবেষণা অনুদানসহ নানা সুবিধা, যা প্রকৌশল, প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান সেক্টরে কাজ করা পেশাজীবীদের তাদের দেশে কাজ করতে উৎসাহিত করে। একই ধরনের সুবিধা বাংলাদেশও তাদের মেধাবীদের জন্য অফার করতে পারে, বিশেষ করে ক্যারিয়ার সুযোগ, প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা এবং অবকাঠামো সুবিধা প্রদান করতে পারে। উদ্ভাবন, উদ্যোক্তা এবং পেশাজীবীদের উন্নয়নে নানা সুযোগ-সুবিধা প্রদান করলে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও বাংলাদেশে এসে কাজ করতে আগ্রহী হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পরীক্ষা দেওয়ার ২০ বছর পর বিসিএস ক্যাডার হলেন ওয়াজকুরনী-আফরোজা দম্পতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোঃ ওয়াজকুরনী ও আফরোজা হক খান দম্পতি। ছবি: সংগৃহীত
মোঃ ওয়াজকুরনী ও আফরোজা হক খান দম্পতি। ছবি: সংগৃহীত

উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত ২৭তম বিসিএসের প্রথম পর্যায়ে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে ৬৭৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে পুলিশ ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন মো. ওয়াজকুরনী ও আফরোজা হক খান দম্পতি।

আজ বৃহস্পতিবার সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশ অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারি করে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এ দফায় ৭০ জন পুলিশ ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মো. ওয়াজকুরনী ও আফরোজা হক খানই একমাত্র দম্পতি। তাঁরা দুজনই বর্তমানে সরকারি চাকরিতে কর্মরত আছেন।

জানা যায়, মোহাম্মদ ওয়াজকুরনী ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। অপর দিকে আফরোজা হক খান ভারতেশ্বরী হোমস থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

প্রসঙ্গত, ২৭তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল হওয়ায় বাদ পড়া ১ হাজার ১৩৭ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ গত ২০ ফেব্রুয়ারি। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে পিএসসির সুপারিশ অনুসারে তখনকার প্রথম পর্যায়ের সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে ৬৭৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুই দশক পর ২৭তম বিসিএসে নিয়োগ পেলেন বঞ্চিত ৬৭৩ জন

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৩৭
দুই দশক পর ২৭তম বিসিএসে নিয়োগ পেলেন বঞ্চিত ৬৭৩ জন

দীর্ঘ দুই দশকের আইনি লড়াই ও প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নিয়োগ পেলেন ২৭তম বিসিএসের নিয়োগবঞ্চিত ৬৭৩ জন প্রার্থী। উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাঁদের বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নিয়োগপ্রাপ্তদের জ্যেষ্ঠতা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে তাঁদের ব্যাচের (২৭তম বিসিএস) প্রথম নিয়োগের তারিখ থেকে এই আদেশ ভূতাপেক্ষভাবে কার্যকর হবে। প্রথম নিয়োগ প্রজ্ঞাপনের যোগদানের তারিখ থেকে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের ধারণাগত জ্যেষ্ঠতা বজায় থাকবে। তবে জ্যেষ্ঠতা বহাল থাকলেও এই দীর্ঘ সময়ের জন্য তাঁরা কোনো বকেয়া আর্থিক সুবিধা পাবেন না। জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের বিষয়টি চূড়ান্তভাবে আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।

নিয়োগপ্রাপ্তদের আগামী ১ জানুয়ারির (২০২৬) মধ্যে সংশ্লিষ্ট ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগ নির্ধারিত কার্যালয়ে যোগ দিতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত তারিখে যোগদান না করলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী চাকরিতে যোগদানে সম্মত নন বলে গণ্য হবে এবং তাঁর নিয়োগপত্র বাতিল হয়ে যাবে।

২০০৭ সালে ২৭তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল হওয়ায় বাদ পড়া ১ হাজার ১৩৭ জনকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় আপিল বিভাগ। এরপর এ বিষয়ে পিএসসির সুপারিশের আলোকে আজ ৬৭৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া হলো।

২৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয় ২০০৫ সালে। লিখিত পরীক্ষার পর মৌখিক পরীক্ষায় ৩ হাজার ৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সেই মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে। এরপর ওই বছরের জুলাই মাসে দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩ হাজার ২২৯ জনকে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা রিট আবেদন করেন। কিন্তু ২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্ট প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে রিট আবেদনকারীদের ২৫ জন আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন। অন্যদিকে ২০৫ জন আবেদনকারীর আরেক রিট আবেদনে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে সরকার তিনটি লিভ টু আপিল করে।

২০১০ সালের ১১ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারকের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিল বৈধ ঘোষণার হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। একই সঙ্গে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা লিভ টু আপিল কিছু পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৫০ কর্মী নেবে মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক, এসএসসি পাসে আবেদন

চাকরি ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ন্যাশনাল ওয়াইড বিভাগের শূন্য পদে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে। গত ১৪ ডিসেম্বর এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।

পদের নাম: সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং অফিসার/সেলস অফিসার (ন্যাশনাল ওয়াইড)।

পদসংখ্যা: ৫০টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি অথবা এইচএসসি পাস হতে হবে।

অভিজ্ঞতা: প্রযোজ্য নয়।

চাকরির ধরন: পূর্ণকালীন।

প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়েই আবেদন করতে পারবেন।

বয়সসীমা: ২০-২৮ বছরের মধ্যে হতে হবে।

কর্মস্থল: দেশের যে কোনো স্থানে।

বেতন: ১০,০০০-১৫,০০০ টাকা।

সুযোগ-সুবিধা: প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী বেতন ছাড়াও আরও সুযোগ–সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে।

আবেদন পদ্ধতি: আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ তারিখ: আগামী ১৩ জানুয়ারি, ২০২৬।

সূত্র: বিজ্ঞপ্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিটিআরসির ব্যবহারিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১০৩

চাকরি ডেস্ক 
বিটিআরসির ব্যবহারিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১০৩

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) বিভিন্ন পদে অনুষ্ঠিত ব্যবহারিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে মোট ১০৩ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের রোল নম্বর প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসন বিভাগের পরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পদগুলো হলো ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, কম্পিউটার অপারেটর, হিসাবরক্ষক, ক্যাশিয়ার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ড্রাইভার ও ইলেকট্রিশিয়ান অ্যান্ড টেকনিশিয়ান।

৫ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের ৯ ক্যাটাগরির পদে জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের ১০ ও ১১ ডিসেম্বর ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে এবং বিটিআরসির ওয়েবসাইটে (www.btrc.gov.bd) প্রকাশ করা হবে। লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্রই মৌখিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র হিসেবে গণ্য হবে।

মৌখিক পরীক্ষার সময় সব শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সমর্থনে প্রয়োজনীয় সনদপত্র বা কাগজপত্রের মূল কপি বোর্ডের সামনে প্রদর্শন ও অতিরিক্ত একসেট সত্যায়িত ফটোকপি বোর্ডের কাছে জমা দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত