ইসলাম ডেস্ক

যদি বলা হয়, সমাজের কিছু ভয়ংকর চিত্র তুলে ধরতে, তাহলে ডিভোর্স হবে তার মধ্যে অন্যতম। খোঁজ নিলে দেখতে পাবেন, সুখ-সংসারের এ জগতে ডিভোর্স ঘটা পরিবারগুলো একেকটা জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড। বড় আফসোস ও দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, বিষয়টা যত গুরুতর ও গুরুত্বপূর্ণ, আমরা ততই হালকা চোখে দেখছি।
এমন না যে আমাদের সঙ্গে এর সংশ্লিষ্টতা নেই, বরং আমাদের প্রত্যেকের জীবনের সঙ্গে বিষয়টা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অথচ আমাদের সমাজে না আছে এর আলোচনা, না আছে সমালোচনা। না লেখকেরা এ বিষয়ে স্বতন্ত্র আকারে কলম ধরেন, না আলোচকেরা এ বিষয়ে কথা বলেন। আর না খতিবেরা মসজিদের মিম্বারে এ ধরনের শব্দ মুখে আনেন। যেন এ নিয়ে আলোচনা করা দোষের।
ডিভোর্সের পরিমাণ
অবক্ষয় ধরা আমাদের এ সমাজে প্রতিদিন কী পরিমাণ ডিভোর্স হচ্ছে শুনবেন? জানি না, আপনি শুনতে প্রস্তুত কি না, তবে অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্য যে, শুধু ঢাকায় প্রতি ৪০ ঘণ্টায় একটি করে ডিভোর্সের আবেদন পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশের অন্যান্য বিভাগের কথা বাদ দিলাম। পুরো বিশ্বের তো প্রশ্নই আসে না। প্রথম আলোর একটি জরিপ বলছে, ঢাকার দুই সিটির মেয়রের কার্যালয়ে ২০২২ সালে তালাকের আবেদন এসেছিল মোট ১৩ হাজার ২৮৮টি। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৭ হাজার ৬৯৮টি, উত্তর সিটিতে ৫ হাজার ৫৯০টি।
এ হিসাবে রাজধানীতে প্রতিদিন ভেঙে যাচ্ছে প্রায় ৩৭টি দাম্পত্যসম্পর্ক, অর্থাৎ তালাকের ঘটনা ঘটছে ৪০ মিনিটে একটি করে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে আবেদনের সংখ্যা ২ হাজার ৪৮৮টি। (প্রথম আলো, ১৩ জুন ২০২৩)। অথচ আবেদন কি সবাই করে? তাহলে আবেদন করার সংখ্যা যদি এ পরিমাণ হয়ে থাকে, তাহলে অন্যদের সংখ্যা কী পরিমাণ হতে পারে! তবুও কি এটাকে সমাজের অবক্ষয় মনে হচ্ছে না আপনার কাছে?
ডিভোর্সের ভয়াবহতা
ডিভোর্সের ভয়াবহতা বোঝানোর জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, এই একটি শব্দ নিজেদের অজ্ঞতার কারণে শত শত পরিবারকে নিমেষে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এই একটি শব্দ দীর্ঘ পরিশ্রমে সাজানো সুখের সংসারটা মুহূর্তে ভেঙে ছারখার করে দিচ্ছে।
তিন অক্ষরবিশিষ্ট শব্দটি চিরতরে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিচ্ছে দুই দম্পতির। অন্ধকার করে ফেলছে নিরপরাধ সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। যেসব দম্পতি এ অগ্নিকুণ্ডে জ্বলছে, তাঁদের অবস্থা দেখে আপনি ডিভোর্সের ভয়াবহতা কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারবেন। প্রায় প্রতিদিনই তো আমাদের কাছে ডিভোর্সের ঘটনা আসে।
একেক দম্পতির কী যে আর্তচিৎকার, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। একেকজন যে কতভাবে অনুনয়-বিনয় করে আমাদের কাছে আবেদন করেন, হুজুর কোনোভাবে যদি আমাদের সম্পর্কটা রক্ষা পায়! হুজুর, আমাদের এত বছরের সন্তান রয়েছে। আমরা আলাদা কীভাবে থাকব!
ডিভোর্স সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা
নিত্যনতুন ডিভোর্স ঘটছে আমাদের সমাজে। তারপরও কী পরিমাণ অজ্ঞ এ সম্পর্কে সমাজের মানুষগুলো, তার কিছু হাস্যকর ও দুঃখজনক চিত্র দেখুন। সেদিন এক ভাই বললেন, তালাক, এটা তো স্রেফ একটা গালি। যা রাগের মাথায় স্বামীর মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়।
আরও এক ভাই বললেন, তালাক এত ছোট একটা শব্দ। এটা দিয়ে বুঝি এত বছরের সংসার ছিন্ন হয়ে যায়! এমনও শুনতে হয়েছে, তালাক না দিলে নাকি ঝগড়া পূর্ণাঙ্গ হয় না। এটা ঝগড়ারই একটা অংশ। এক বোন বললেন, তালাক দিতে হলে তিন তালাকই দিতে হয়।
এক তালাক কোনো তালাকই না। এ হচ্ছে কোনো জরিপ ছাড়াই আমাদের সমাজের কিছু চিত্র। জরিপ চালালে আরও কত ভয়ংকর তথ্য বের হবে, বুঝতেই পারছেন। অথচ এ বিষয়ে জ্ঞান রাখা কি শুধু হুজুরদের ওপর ফরজ ছিল? নাকি প্রত্যেক বিবাহিত ব্যক্তির ওপর বিবাহের আগে এ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা ফরজ? আজ এসব না জানার কারণে সমাজে ডিভোর্সের এত ছড়াছড়ি।
হাতছাড়া হওয়ার আগে হাত সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করুন
আপনার হাত যেন সামনে ছাড়া না হয়ে যায়, সে জন্য এখনই পদক্ষেপ নিন। আপনার পাত্রের পানি যেন গড়িয়ে না যায়, সে লক্ষে এখনই নেমে পড়ুন। সে জন্য একমাত্র সমাধান হলো জ্ঞানার্জন। সামনে যেন আপনাকে হা-হুতাশ করতে না হয়, তাই এখনই ডিভোর্সের বিধানগুলো জানুন। বিবাহিতরা তো বটেই, এমনকি যাঁরা অবিবাহিত, তাঁরাও। আপনি হয়তো ভাববেন, আমাদের অনেক সুখের সংসার। সামান্য কোনো রেষারেষিও হয় না।
জি, এবার আপনাকে একটি সুখের সংসারের গল্প শোনাই। আমাদের কাছে তালাকসংক্রান্ত যেসব প্রশ্ন আসে, তার সাড়ে নিরানব্বই ভাগের ভাষ্য এমন, ‘হুজুর, আমরা কয়েক বছর অনেক সুখে-শান্তিতে ছিলাম। খুব সুন্দরভাবে চলছিল আমাদের সংসার। কিন্তু সেদিন আমাদের মাঝে ছোট একটা বিষয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাগের বশে আমি তিন তালাক দিয়ে দিই। হুজুর, আমার কোনো চিন্তাও ছিল না। কিন্তু কেমনে বের হয়ে গেছে, সেটাও জানি না।
অল্প সময়ের ভেতরে আমাদের মাঝে সমাধান হয়ে যায়। এখন আমরা আবার আগের মতো সংসার করতে চাচ্ছি; হুজুর...।’ এ হচ্ছে আমাদের তথাকথিত সুখের সংসার। তাই বলছি, নিজের সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অল্প সময়ের ব্যবধানেই উভয়ের সম্পর্ক আর দশজন সাধারণ মানুষের সম্পর্ক পরিবর্তিত হবে। তাই এখনো যাঁদের এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি, তাঁরা এখনই আলেমদের শরণাপন্ন হয়ে জেনে নিন।
মোটাদাগে কিছু বিষয়
এখানে তালাকসংক্রান্ত কিছু বিষয় মোটাদাগে উল্লেখ করছি, যার প্রতিটি বিষয় বিশদ আলোচনার দাবি রাখে। এ বিষয়গুলো প্রত্যেকের জানা ও মুখস্থ রাখা আবশ্যক।
১. ডিভোর্সের আগে চার ধাপ
ভালো করে বুঝুন, ডিভোর্স কোনো সস্তা বা সহজলভ্য জিনিস নয় যে, যখন-তখন চাইলেই পাওয়া যায়। ইচ্ছে হলেই খরচ করা যায়। এটি একটি স্রেফ সুযোগ। বের হওয়ার রাস্তা। কখনো যদি বৈবাহিক সম্পর্কে জটিলতা দেখা দেয়, তখন ইসলাম স্বামীকে প্রাথমিকভাবে চারটি পর্যায় অবলম্বন করতে বলেছে। প্রথমে স্বামীকে আলোচনার মাধ্যমে স্ত্রীকে বোঝাতে বলেছে। কাজ না হলে বিছানা পৃথক করতে বলেছে। তারপরও কাজ না হলে স্থান-কাল-পাত্র হিসেবে মৃদু প্রহার করতে বলেছে। এসবেও সমাধান না হলে উভয় পক্ষ থেকে সালিস ডাকতে বলেছে।
তারা যেন উভয়ের মাঝে মেলানোর চেষ্টা করে। এত কিছুর পরও যদি বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক না করা যায়, তখন ইসলাম ডিভোর্সের মাধ্যমে বৈবাহিক বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার একটি সুযোগ করে দিয়েছে এবং সে সুযোগটি তিন ধাপে করার সুযোগ দিয়েছে। যেন প্রথমবার সুযোগটির যথাযথ ব্যবহার না হলে আবার বৈবাহিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা যায়। তাহলে কি কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হবে, তিন ধাপে করার সুযোগটিকে এক ধাপে সংকুচিত করে দেওয়ার মাঝে? অতএব পানি যদি ফেলতেই হয়, তাহলে সামান্যই ফেলুন।
যেন আরও কিছু অবশিষ্ট থাকে। প্রয়োজন হলে আবার যেন ব্যবহার করতে পারেন। এ জন্য—‘তালাক দেওয়া ভালো নয়; তালাক যদি দিতেই হয়, এক তালাকের বেশি নয়।’ স্লোগানটি মুখস্থ করুন। এটাকে আন্দোলনের একটা স্লোগান হিসেবে নিন। সমাজকে যততত্র ডিভোর্স অবক্ষয়মুক্ত করার আন্দোলন। আচ্ছা বলুন তো, কেউ যদি এতগুলো ধাপ অবলম্বন করে, তারপর একবার করে তালাক দেয়, তাহলে কি এত দ্রুত বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়? এ জন্য শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়াই তালাক দেওয়া অনুচিত। নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে অপছন্দের বৈধ জিনিস হচ্ছে তালাক।’ (সুনানে আবু দাউদ)
২. তিন তালাক দিলেন তো পাত্রের পানি ঢেলে দিলেন
একসঙ্গে তিন তালাক দেওয়াকে ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না। ইসলাম বলে, তালাক যদি দিতেই হয়, তাহলে শুরুতে এক তালাক। এর বেশি দেওয়া সুন্নাহ সম্মত নয়। এতে মারাত্মক গুনাহ হয়ে থাকে। কিন্তু যখন আপনি তিন তালাক দিয়েই দিলেন, তখন বর্ডার ক্রস হয়ে গেছে। পাত্রের পানি পড়ে গেছে। শত চেষ্টাতেও আগের সম্পর্কে ফিরে আসার সুযোগ আর নেই। খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না? মেনে নিন। এটাই ইসলামের বিধান। আজকে একটু কষ্ট করুন। কালকে এর ফল ভোগ করতে পারবেন। হয়তো এতে আপনাদের কল্যাণ।
দোষ তো আপনাদেরই। ইসলাম তো আর আপনাকে বাধ্য করেনি তিন তালাক দিতে। বরং আরও নিষেধ করেছে। সে সঙ্গে আরও প্রাথমিক ধাপগুলো অনুসরণের কথা বলেছে। কিন্তু তবু আপনি সেদিকে কর্ণপাত করেননি। কিন্তু খুব আফসোস হয় সেসব তথাকথিত আলেমদের দেখে, যাঁরা সামান্য কিছু নর্দমা কামানোর জন্য তিন তালাককে এক তালাক বলে চালিয়ে দেন। নিজের জীবন তো বরবাদ করলেন, অন্যের জীবনকেও অবৈধ সম্পর্কে ফেললেন। সাফ জেনে রাখুন। তিন তালাক তিন তালাকই।
তিন কী করে এক হবে? দুনিয়ার কোনো হিসাবে এর নজির দেখেছেন? কোরআন-সুন্নাহ তো তিন তালাকই হয়ে যাওয়ার কথা বলে। সালাফের যুগ থেকে এ পর্যন্ত এ মতই চলে আসছে। কেউ ভিন্নমত পোষণ করেননি। চার মাজহাবের চারও ইমামের মত এটাই।
সেখানে ১ হাজার ৩০০ বছর পর গুটি কয়েকজন ভিন্নমত পোষণ করেন, তিন তালাক দিলে এক তালাকই হবে। এত সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমদের বিপরীতে যদি আপনার কাছে সে গুটি কয়েকজনের মতকে অগ্রাধিকার মনে হয়, তাহলে আপনার ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দিলাম। তবে তার আগে দুটি কথা শুনুন। দুনিয়ার আর কোথাও কিন্তু আপনি নিজেও তিনকে এক বলে চালিয়ে দেন না।
আপনার কাছ থেকে কেউ তিন লাখ টাকা নিলে এক লাখ টাকা পরিশোধ করলে মেনে নেবেন না। মাগরিবের নামাজ তিন রাকাতের পরিবর্তে এক রাকাত আদায় করেন না। ধরে নিলাম। তিন তালাক মানে এক তালাক। যদি এ মত সঠিক হয়, তাহলে আপনি অবৈধ সম্পর্ক থেকে বেঁচে গেলেন। কিন্তু যদি ঘটনাক্রমে তিন তালাক তিন তালাক হয়ে যাওয়ার মত (ইসলামি শরিয়তে) অগ্রাধিকার হয়ে থাকে, তাহলে কিন্তু আখিরাতের জালে আপনি আটকা পড়ে গেলেন। আপনাদের সম্পর্কটা শেষপর্যন্ত হারাম রিলেশনের মতো হলো।
এখন বিবেচনা আপনার হাতে। নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলবেন কি না, সেটার দায়ও আপনার। সুতরাং, বিবেকের আদালতে প্রশ্ন করুন। সে-ই আপনাকে সঠিক পথ দেখাবে। একান্তে নিজের সঙ্গে মতবিনিময় করুন। সঙ্গে আগের বলা কথাগুলোও মাথায় রাখুন। আর হ্যাঁ, যেসব হুজুর তিন তালককে তিন তালাকই বলেন, আপনাদের সম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে কিন্তু তাঁদের কোনো স্বার্থ নেই। আপনাদের বিবাহ ভাঙলে যে তাঁদের খুব ভালো লাগে, তা-ও না।
একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, শরিয়ত অনুযায়ী যেন আমাদের জীবন-কর্ম পরিচালনা হয়। স্রেফ এতটুকুই, আর কিছু নয়।
৩. পানি বালুতে গড়িয়ে যাওয়ার পর সে পানি ওঠাতে যাবেন না
তিন তালাক দিয়ে যখন পানি ফেলেই দিয়েছেন, তখন আর সে পানি ওঠাতে যাবেন না। তখন হাতে শুধু কাদাই স্পর্শ হবে। পানি পাওয়া তো দূরের কথা। প্রিয় ভাই, একটু কষ্ট করুন। অন্যত্র সন্ধান করুন। হয়তো এতেই কল্যাণ। কিন্তু তবু যদি আপনি আগের সম্পর্কে যুক্ত থাকেন, তাহলে জেনে রাখুন, এটা হারাম রিলেশনের চেয়ে ভিন্ন কিছু নয়।
আপনি যত দিন অবস্থান করবেন, হারাম অবস্থান করবেন। এমনকি আপনার থেকে যে সন্তান জন্ম নেবে, তাকেও হারাম হয়ে জন্ম নিতে হবে। অতএব, একটু ভাবুন হারাম সম্পর্কে জড়িত হওয়ার আগে। অন্তত আপনার সন্তানের কথা ভাবুন। শুধু আপনাদের ভোগের কারণেই এ নিষ্পাপ শিশুকে হারাম পরিচয় ধারণ করতে হচ্ছে। এর দায়ভার আপনারা এড়াতে পারবেন?
সারকথা, যে মেসেজটা দিতে চেয়েছি পাঠককে, তা হলো, ডিভোর্স সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ান। ডিভোর্সের কঠিন বিধান সম্পর্কে আগেই জেনে নিন। তিন তালাকের পর যেকোনোভাবেই পুনঃসম্পর্কের সুযোগ নেই, তা-ও ভালোভাবে জানুন। আর যদি দিতেই হয়, তাহলে এক তালাকের বেশি নয়। এটুকু কথা সুরা ফাতিহার মতো মুখস্থ করুন। নিজে করুন, অন্যকে উদ্বুদ্ধ করুন।
লেখক: জাহিদ বিন জোবায়ের, অনুবাদক, গবেষণাকর্মী

যদি বলা হয়, সমাজের কিছু ভয়ংকর চিত্র তুলে ধরতে, তাহলে ডিভোর্স হবে তার মধ্যে অন্যতম। খোঁজ নিলে দেখতে পাবেন, সুখ-সংসারের এ জগতে ডিভোর্স ঘটা পরিবারগুলো একেকটা জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড। বড় আফসোস ও দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, বিষয়টা যত গুরুতর ও গুরুত্বপূর্ণ, আমরা ততই হালকা চোখে দেখছি।
এমন না যে আমাদের সঙ্গে এর সংশ্লিষ্টতা নেই, বরং আমাদের প্রত্যেকের জীবনের সঙ্গে বিষয়টা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অথচ আমাদের সমাজে না আছে এর আলোচনা, না আছে সমালোচনা। না লেখকেরা এ বিষয়ে স্বতন্ত্র আকারে কলম ধরেন, না আলোচকেরা এ বিষয়ে কথা বলেন। আর না খতিবেরা মসজিদের মিম্বারে এ ধরনের শব্দ মুখে আনেন। যেন এ নিয়ে আলোচনা করা দোষের।
ডিভোর্সের পরিমাণ
অবক্ষয় ধরা আমাদের এ সমাজে প্রতিদিন কী পরিমাণ ডিভোর্স হচ্ছে শুনবেন? জানি না, আপনি শুনতে প্রস্তুত কি না, তবে অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্য যে, শুধু ঢাকায় প্রতি ৪০ ঘণ্টায় একটি করে ডিভোর্সের আবেদন পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশের অন্যান্য বিভাগের কথা বাদ দিলাম। পুরো বিশ্বের তো প্রশ্নই আসে না। প্রথম আলোর একটি জরিপ বলছে, ঢাকার দুই সিটির মেয়রের কার্যালয়ে ২০২২ সালে তালাকের আবেদন এসেছিল মোট ১৩ হাজার ২৮৮টি। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৭ হাজার ৬৯৮টি, উত্তর সিটিতে ৫ হাজার ৫৯০টি।
এ হিসাবে রাজধানীতে প্রতিদিন ভেঙে যাচ্ছে প্রায় ৩৭টি দাম্পত্যসম্পর্ক, অর্থাৎ তালাকের ঘটনা ঘটছে ৪০ মিনিটে একটি করে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে আবেদনের সংখ্যা ২ হাজার ৪৮৮টি। (প্রথম আলো, ১৩ জুন ২০২৩)। অথচ আবেদন কি সবাই করে? তাহলে আবেদন করার সংখ্যা যদি এ পরিমাণ হয়ে থাকে, তাহলে অন্যদের সংখ্যা কী পরিমাণ হতে পারে! তবুও কি এটাকে সমাজের অবক্ষয় মনে হচ্ছে না আপনার কাছে?
ডিভোর্সের ভয়াবহতা
ডিভোর্সের ভয়াবহতা বোঝানোর জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, এই একটি শব্দ নিজেদের অজ্ঞতার কারণে শত শত পরিবারকে নিমেষে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এই একটি শব্দ দীর্ঘ পরিশ্রমে সাজানো সুখের সংসারটা মুহূর্তে ভেঙে ছারখার করে দিচ্ছে।
তিন অক্ষরবিশিষ্ট শব্দটি চিরতরে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিচ্ছে দুই দম্পতির। অন্ধকার করে ফেলছে নিরপরাধ সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। যেসব দম্পতি এ অগ্নিকুণ্ডে জ্বলছে, তাঁদের অবস্থা দেখে আপনি ডিভোর্সের ভয়াবহতা কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারবেন। প্রায় প্রতিদিনই তো আমাদের কাছে ডিভোর্সের ঘটনা আসে।
একেক দম্পতির কী যে আর্তচিৎকার, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। একেকজন যে কতভাবে অনুনয়-বিনয় করে আমাদের কাছে আবেদন করেন, হুজুর কোনোভাবে যদি আমাদের সম্পর্কটা রক্ষা পায়! হুজুর, আমাদের এত বছরের সন্তান রয়েছে। আমরা আলাদা কীভাবে থাকব!
ডিভোর্স সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা
নিত্যনতুন ডিভোর্স ঘটছে আমাদের সমাজে। তারপরও কী পরিমাণ অজ্ঞ এ সম্পর্কে সমাজের মানুষগুলো, তার কিছু হাস্যকর ও দুঃখজনক চিত্র দেখুন। সেদিন এক ভাই বললেন, তালাক, এটা তো স্রেফ একটা গালি। যা রাগের মাথায় স্বামীর মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়।
আরও এক ভাই বললেন, তালাক এত ছোট একটা শব্দ। এটা দিয়ে বুঝি এত বছরের সংসার ছিন্ন হয়ে যায়! এমনও শুনতে হয়েছে, তালাক না দিলে নাকি ঝগড়া পূর্ণাঙ্গ হয় না। এটা ঝগড়ারই একটা অংশ। এক বোন বললেন, তালাক দিতে হলে তিন তালাকই দিতে হয়।
এক তালাক কোনো তালাকই না। এ হচ্ছে কোনো জরিপ ছাড়াই আমাদের সমাজের কিছু চিত্র। জরিপ চালালে আরও কত ভয়ংকর তথ্য বের হবে, বুঝতেই পারছেন। অথচ এ বিষয়ে জ্ঞান রাখা কি শুধু হুজুরদের ওপর ফরজ ছিল? নাকি প্রত্যেক বিবাহিত ব্যক্তির ওপর বিবাহের আগে এ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা ফরজ? আজ এসব না জানার কারণে সমাজে ডিভোর্সের এত ছড়াছড়ি।
হাতছাড়া হওয়ার আগে হাত সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করুন
আপনার হাত যেন সামনে ছাড়া না হয়ে যায়, সে জন্য এখনই পদক্ষেপ নিন। আপনার পাত্রের পানি যেন গড়িয়ে না যায়, সে লক্ষে এখনই নেমে পড়ুন। সে জন্য একমাত্র সমাধান হলো জ্ঞানার্জন। সামনে যেন আপনাকে হা-হুতাশ করতে না হয়, তাই এখনই ডিভোর্সের বিধানগুলো জানুন। বিবাহিতরা তো বটেই, এমনকি যাঁরা অবিবাহিত, তাঁরাও। আপনি হয়তো ভাববেন, আমাদের অনেক সুখের সংসার। সামান্য কোনো রেষারেষিও হয় না।
জি, এবার আপনাকে একটি সুখের সংসারের গল্প শোনাই। আমাদের কাছে তালাকসংক্রান্ত যেসব প্রশ্ন আসে, তার সাড়ে নিরানব্বই ভাগের ভাষ্য এমন, ‘হুজুর, আমরা কয়েক বছর অনেক সুখে-শান্তিতে ছিলাম। খুব সুন্দরভাবে চলছিল আমাদের সংসার। কিন্তু সেদিন আমাদের মাঝে ছোট একটা বিষয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাগের বশে আমি তিন তালাক দিয়ে দিই। হুজুর, আমার কোনো চিন্তাও ছিল না। কিন্তু কেমনে বের হয়ে গেছে, সেটাও জানি না।
অল্প সময়ের ভেতরে আমাদের মাঝে সমাধান হয়ে যায়। এখন আমরা আবার আগের মতো সংসার করতে চাচ্ছি; হুজুর...।’ এ হচ্ছে আমাদের তথাকথিত সুখের সংসার। তাই বলছি, নিজের সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অল্প সময়ের ব্যবধানেই উভয়ের সম্পর্ক আর দশজন সাধারণ মানুষের সম্পর্ক পরিবর্তিত হবে। তাই এখনো যাঁদের এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি, তাঁরা এখনই আলেমদের শরণাপন্ন হয়ে জেনে নিন।
মোটাদাগে কিছু বিষয়
এখানে তালাকসংক্রান্ত কিছু বিষয় মোটাদাগে উল্লেখ করছি, যার প্রতিটি বিষয় বিশদ আলোচনার দাবি রাখে। এ বিষয়গুলো প্রত্যেকের জানা ও মুখস্থ রাখা আবশ্যক।
১. ডিভোর্সের আগে চার ধাপ
ভালো করে বুঝুন, ডিভোর্স কোনো সস্তা বা সহজলভ্য জিনিস নয় যে, যখন-তখন চাইলেই পাওয়া যায়। ইচ্ছে হলেই খরচ করা যায়। এটি একটি স্রেফ সুযোগ। বের হওয়ার রাস্তা। কখনো যদি বৈবাহিক সম্পর্কে জটিলতা দেখা দেয়, তখন ইসলাম স্বামীকে প্রাথমিকভাবে চারটি পর্যায় অবলম্বন করতে বলেছে। প্রথমে স্বামীকে আলোচনার মাধ্যমে স্ত্রীকে বোঝাতে বলেছে। কাজ না হলে বিছানা পৃথক করতে বলেছে। তারপরও কাজ না হলে স্থান-কাল-পাত্র হিসেবে মৃদু প্রহার করতে বলেছে। এসবেও সমাধান না হলে উভয় পক্ষ থেকে সালিস ডাকতে বলেছে।
তারা যেন উভয়ের মাঝে মেলানোর চেষ্টা করে। এত কিছুর পরও যদি বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক না করা যায়, তখন ইসলাম ডিভোর্সের মাধ্যমে বৈবাহিক বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার একটি সুযোগ করে দিয়েছে এবং সে সুযোগটি তিন ধাপে করার সুযোগ দিয়েছে। যেন প্রথমবার সুযোগটির যথাযথ ব্যবহার না হলে আবার বৈবাহিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা যায়। তাহলে কি কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হবে, তিন ধাপে করার সুযোগটিকে এক ধাপে সংকুচিত করে দেওয়ার মাঝে? অতএব পানি যদি ফেলতেই হয়, তাহলে সামান্যই ফেলুন।
যেন আরও কিছু অবশিষ্ট থাকে। প্রয়োজন হলে আবার যেন ব্যবহার করতে পারেন। এ জন্য—‘তালাক দেওয়া ভালো নয়; তালাক যদি দিতেই হয়, এক তালাকের বেশি নয়।’ স্লোগানটি মুখস্থ করুন। এটাকে আন্দোলনের একটা স্লোগান হিসেবে নিন। সমাজকে যততত্র ডিভোর্স অবক্ষয়মুক্ত করার আন্দোলন। আচ্ছা বলুন তো, কেউ যদি এতগুলো ধাপ অবলম্বন করে, তারপর একবার করে তালাক দেয়, তাহলে কি এত দ্রুত বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়? এ জন্য শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়াই তালাক দেওয়া অনুচিত। নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে অপছন্দের বৈধ জিনিস হচ্ছে তালাক।’ (সুনানে আবু দাউদ)
২. তিন তালাক দিলেন তো পাত্রের পানি ঢেলে দিলেন
একসঙ্গে তিন তালাক দেওয়াকে ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না। ইসলাম বলে, তালাক যদি দিতেই হয়, তাহলে শুরুতে এক তালাক। এর বেশি দেওয়া সুন্নাহ সম্মত নয়। এতে মারাত্মক গুনাহ হয়ে থাকে। কিন্তু যখন আপনি তিন তালাক দিয়েই দিলেন, তখন বর্ডার ক্রস হয়ে গেছে। পাত্রের পানি পড়ে গেছে। শত চেষ্টাতেও আগের সম্পর্কে ফিরে আসার সুযোগ আর নেই। খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না? মেনে নিন। এটাই ইসলামের বিধান। আজকে একটু কষ্ট করুন। কালকে এর ফল ভোগ করতে পারবেন। হয়তো এতে আপনাদের কল্যাণ।
দোষ তো আপনাদেরই। ইসলাম তো আর আপনাকে বাধ্য করেনি তিন তালাক দিতে। বরং আরও নিষেধ করেছে। সে সঙ্গে আরও প্রাথমিক ধাপগুলো অনুসরণের কথা বলেছে। কিন্তু তবু আপনি সেদিকে কর্ণপাত করেননি। কিন্তু খুব আফসোস হয় সেসব তথাকথিত আলেমদের দেখে, যাঁরা সামান্য কিছু নর্দমা কামানোর জন্য তিন তালাককে এক তালাক বলে চালিয়ে দেন। নিজের জীবন তো বরবাদ করলেন, অন্যের জীবনকেও অবৈধ সম্পর্কে ফেললেন। সাফ জেনে রাখুন। তিন তালাক তিন তালাকই।
তিন কী করে এক হবে? দুনিয়ার কোনো হিসাবে এর নজির দেখেছেন? কোরআন-সুন্নাহ তো তিন তালাকই হয়ে যাওয়ার কথা বলে। সালাফের যুগ থেকে এ পর্যন্ত এ মতই চলে আসছে। কেউ ভিন্নমত পোষণ করেননি। চার মাজহাবের চারও ইমামের মত এটাই।
সেখানে ১ হাজার ৩০০ বছর পর গুটি কয়েকজন ভিন্নমত পোষণ করেন, তিন তালাক দিলে এক তালাকই হবে। এত সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমদের বিপরীতে যদি আপনার কাছে সে গুটি কয়েকজনের মতকে অগ্রাধিকার মনে হয়, তাহলে আপনার ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দিলাম। তবে তার আগে দুটি কথা শুনুন। দুনিয়ার আর কোথাও কিন্তু আপনি নিজেও তিনকে এক বলে চালিয়ে দেন না।
আপনার কাছ থেকে কেউ তিন লাখ টাকা নিলে এক লাখ টাকা পরিশোধ করলে মেনে নেবেন না। মাগরিবের নামাজ তিন রাকাতের পরিবর্তে এক রাকাত আদায় করেন না। ধরে নিলাম। তিন তালাক মানে এক তালাক। যদি এ মত সঠিক হয়, তাহলে আপনি অবৈধ সম্পর্ক থেকে বেঁচে গেলেন। কিন্তু যদি ঘটনাক্রমে তিন তালাক তিন তালাক হয়ে যাওয়ার মত (ইসলামি শরিয়তে) অগ্রাধিকার হয়ে থাকে, তাহলে কিন্তু আখিরাতের জালে আপনি আটকা পড়ে গেলেন। আপনাদের সম্পর্কটা শেষপর্যন্ত হারাম রিলেশনের মতো হলো।
এখন বিবেচনা আপনার হাতে। নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলবেন কি না, সেটার দায়ও আপনার। সুতরাং, বিবেকের আদালতে প্রশ্ন করুন। সে-ই আপনাকে সঠিক পথ দেখাবে। একান্তে নিজের সঙ্গে মতবিনিময় করুন। সঙ্গে আগের বলা কথাগুলোও মাথায় রাখুন। আর হ্যাঁ, যেসব হুজুর তিন তালককে তিন তালাকই বলেন, আপনাদের সম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে কিন্তু তাঁদের কোনো স্বার্থ নেই। আপনাদের বিবাহ ভাঙলে যে তাঁদের খুব ভালো লাগে, তা-ও না।
একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, শরিয়ত অনুযায়ী যেন আমাদের জীবন-কর্ম পরিচালনা হয়। স্রেফ এতটুকুই, আর কিছু নয়।
৩. পানি বালুতে গড়িয়ে যাওয়ার পর সে পানি ওঠাতে যাবেন না
তিন তালাক দিয়ে যখন পানি ফেলেই দিয়েছেন, তখন আর সে পানি ওঠাতে যাবেন না। তখন হাতে শুধু কাদাই স্পর্শ হবে। পানি পাওয়া তো দূরের কথা। প্রিয় ভাই, একটু কষ্ট করুন। অন্যত্র সন্ধান করুন। হয়তো এতেই কল্যাণ। কিন্তু তবু যদি আপনি আগের সম্পর্কে যুক্ত থাকেন, তাহলে জেনে রাখুন, এটা হারাম রিলেশনের চেয়ে ভিন্ন কিছু নয়।
আপনি যত দিন অবস্থান করবেন, হারাম অবস্থান করবেন। এমনকি আপনার থেকে যে সন্তান জন্ম নেবে, তাকেও হারাম হয়ে জন্ম নিতে হবে। অতএব, একটু ভাবুন হারাম সম্পর্কে জড়িত হওয়ার আগে। অন্তত আপনার সন্তানের কথা ভাবুন। শুধু আপনাদের ভোগের কারণেই এ নিষ্পাপ শিশুকে হারাম পরিচয় ধারণ করতে হচ্ছে। এর দায়ভার আপনারা এড়াতে পারবেন?
সারকথা, যে মেসেজটা দিতে চেয়েছি পাঠককে, তা হলো, ডিভোর্স সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ান। ডিভোর্সের কঠিন বিধান সম্পর্কে আগেই জেনে নিন। তিন তালাকের পর যেকোনোভাবেই পুনঃসম্পর্কের সুযোগ নেই, তা-ও ভালোভাবে জানুন। আর যদি দিতেই হয়, তাহলে এক তালাকের বেশি নয়। এটুকু কথা সুরা ফাতিহার মতো মুখস্থ করুন। নিজে করুন, অন্যকে উদ্বুদ্ধ করুন।
লেখক: জাহিদ বিন জোবায়ের, অনুবাদক, গবেষণাকর্মী

জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
১ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
৩ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
৫ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।
৭ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)
আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।
এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)
আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।
এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

নিত্যনতুন ডিভোর্স ঘটছে আমাদের সমাজে। তারপরও কী পরিমাণ অজ্ঞ এ সম্পর্কে সমাজের মানুষগুলো, তার কিছু হাস্যকর ও দুঃখজনক চিত্র দেখুন। সেদিন এক ভাই বললেন, তালাক, এটা তো স্রেফ একটা গালি। যা রাগের মাথায় স্বামীর মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
৩ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
৫ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।
৭ ঘণ্টা আগেআবরার নাঈম

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

নিত্যনতুন ডিভোর্স ঘটছে আমাদের সমাজে। তারপরও কী পরিমাণ অজ্ঞ এ সম্পর্কে সমাজের মানুষগুলো, তার কিছু হাস্যকর ও দুঃখজনক চিত্র দেখুন। সেদিন এক ভাই বললেন, তালাক, এটা তো স্রেফ একটা গালি। যা রাগের মাথায় স্বামীর মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
১ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
৫ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।
৭ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

নিত্যনতুন ডিভোর্স ঘটছে আমাদের সমাজে। তারপরও কী পরিমাণ অজ্ঞ এ সম্পর্কে সমাজের মানুষগুলো, তার কিছু হাস্যকর ও দুঃখজনক চিত্র দেখুন। সেদিন এক ভাই বললেন, তালাক, এটা তো স্রেফ একটা গালি। যা রাগের মাথায় স্বামীর মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
১ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
৩ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।
৭ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাস শুরু হলে একটি বিশেষ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন (অর্থাৎ রমজান পাওয়ার তৌফিক দান করুন)।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)
এই মাসের আমল সম্পর্কে কিছু জরুরি দিক হলো: ১. ফরজ ইবাদতে যত্নবান হওয়া: যেকোনো ফজিলতপূর্ণ সময়ের প্রথম শর্ত হলো ফরজ ইবাদতগুলো নিখুঁতভাবে পালন করা। বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। ২. নফল ইবাদত বৃদ্ধি: এই মাসে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং জিকির-আজকারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ৩. গুনাহ বর্জন: যেহেতু এটি সম্মানিত মাস, তাই এই সময়ে পাপাচার থেকে দূরে থাকার গুরুত্ব অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ৪. বেশি বেশি নফল রোজা: যদিও রজব মাসের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রোজার বাধ্যবাধকতা নেই, তবে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং আইয়ামে বিজের (চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে রমজানের জন্য প্রস্তুত করা যায়।
রজব মাস আমাদের আত্মশুদ্ধি এবং রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে বরকত প্রার্থনা করি।

ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাস শুরু হলে একটি বিশেষ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন (অর্থাৎ রমজান পাওয়ার তৌফিক দান করুন)।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)
এই মাসের আমল সম্পর্কে কিছু জরুরি দিক হলো: ১. ফরজ ইবাদতে যত্নবান হওয়া: যেকোনো ফজিলতপূর্ণ সময়ের প্রথম শর্ত হলো ফরজ ইবাদতগুলো নিখুঁতভাবে পালন করা। বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। ২. নফল ইবাদত বৃদ্ধি: এই মাসে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং জিকির-আজকারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ৩. গুনাহ বর্জন: যেহেতু এটি সম্মানিত মাস, তাই এই সময়ে পাপাচার থেকে দূরে থাকার গুরুত্ব অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ৪. বেশি বেশি নফল রোজা: যদিও রজব মাসের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রোজার বাধ্যবাধকতা নেই, তবে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং আইয়ামে বিজের (চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে রমজানের জন্য প্রস্তুত করা যায়।
রজব মাস আমাদের আত্মশুদ্ধি এবং রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে বরকত প্রার্থনা করি।

নিত্যনতুন ডিভোর্স ঘটছে আমাদের সমাজে। তারপরও কী পরিমাণ অজ্ঞ এ সম্পর্কে সমাজের মানুষগুলো, তার কিছু হাস্যকর ও দুঃখজনক চিত্র দেখুন। সেদিন এক ভাই বললেন, তালাক, এটা তো স্রেফ একটা গালি। যা রাগের মাথায় স্বামীর মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
১ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
৩ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
৫ ঘণ্টা আগে