Ajker Patrika

আবু বকর আল-রাজি: ইসলামের সোনালি যুগের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী

মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ 
তৎকালীন পারস্যের রে শহরে জন্ম নেন আল রাজি। ছবি: সংগৃহীত
তৎকালীন পারস্যের রে শহরে জন্ম নেন আল রাজি। ছবি: সংগৃহীত

আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইসলামি স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং রসায়নবিদ। আল-রাজি ‘রহেসাস’ নামেও পরিচিত। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহ পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসাশাস্ত্রে বিপুল প্রভাব ফেলেছিল। চিকিৎসা, রসায়ন, দর্শন এবং যুক্তিবাদী চিন্তাধারায় তিনি অসাধারণ অবদান রেখেছেন।

জন্ম ও শিক্ষা

আল-রাজি ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পারস্যের রে শহরে (বর্তমান ইরানের তেহরানের নিকটবর্তী) জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি জ্ঞানার্জনের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাজীবনে গণিত, সংগীত এবং দর্শন অধ্যয়ন করেন। পরে চিকিৎসা ও রসায়নের প্রতি আকৃষ্ট হন। বাগদাদের বিখ্যাত জ্ঞানকেন্দ্র বায়তুল হিকমা বা হাউস অব উইজডমে অধ্যয়নের মাধ্যমে তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে পারদর্শী হয়ে ওঠেন।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান

আল-রাজি ছিলেন একাধারে গবেষক ও চিকিৎসক। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মধ্যে রয়েছে:

গুটিবসন্ত ও হাম রোগের পার্থক্য নির্ধারণ: আল-রাজিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি গুটিবসন্ত (Smallpox) এবং হাম (Measles) রোগের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করেন। তাঁর লেখা ‘কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা’ গ্রন্থে এই রোগগুলোর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এই আবিষ্কার পরবর্তী চিকিৎসাশাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

‘কিতাব আল-হাওয়ি’ (The Comprehensive Book on Medicine): আল-রাজির সবচেয়ে বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক গ্রন্থ ‘কিতাব আল-হাওয়ি’, যা চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি বিশাল বিশ্বকোষ হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি সংকলিত হয়েছে। পরবর্তীতে এটি লাতিন ভাষায় অনূদিত হয়ে ইউরোপে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা: আল-রাজি আধুনিক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা উন্নত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি রোগীদের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করেন এবং হাসপাতালের পরিবেশ ও সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন নতুন পদ্ধতি চালু করেন।

রসায়নে অবদান

আল-রাজি রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন। তিনি রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করেন এবং আধুনিক পরীক্ষাগারের ধারণা বিকাশ করেন। তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হলো—

অ্যাসিড ও ক্ষারের গবেষণা: সালফিউরিক অ্যাসিড ও অন্যান্য রাসায়নিক যৌগ নিয়ে গবেষণা করেন।

ল্যাবরেটরি পদ্ধতির উন্নয়ন: রাসায়নিক দ্রব্য বিশ্লেষণের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।

মেডিকেল রসায়ন: অষুধ প্রস্তুতে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।

সামাজিক ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি

আল-রাজি মানবসেবাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, চিকিৎসাশাস্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবকল্যাণ। তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি সমান মনোযোগী।

একটি বিখ্যাত ঘটনা অনুযায়ী, তিনি যখন একটি হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্ব পান, তখন তিনি বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মাংস ঝুলিয়ে রাখেন এবং পরীক্ষা করেন কোথায় মাংস সবচেয়ে ধীরে পচে। সেই স্থানকেই তিনি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নির্বাচিত করেন। এটি আধুনিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ধারণার একটি প্রাথমিক রূপ বলে বিবেচিত হয়।

উত্তরাধিকার

আল-রাজি ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর গবেষণা এবং দর্শন ইউরোপীয় রেনেসাঁ ও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছিল। তাঁর লেখা বহু গ্রন্থ লাতিন, গ্রিক এবং অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়ে পশ্চিমা চিকিৎসাবিদ্যার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাঁর অন্যতম বিখ্যাত গ্রন্থসমূহ:

কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব (The Comprehensive Book on Medicine)

কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা (On Smallpox and Measles)

ফি আল-নবুওয়াত (On Prophethood)

কিতাব আল-মানসুরি (The Mansuri Book of Medicine)

উপসংহার

আবু বকর আল-রাজি ছিলেন সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও দার্শনিক। তিনি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান, রসায়ন ও দর্শনের ক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছেন। তাঁর গবেষণা ও চিন্তাধারা পরবর্তী যুগের চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে আছে। তাঁর কর্ম ও চিন্তাভাবনা শুধু ইসলামি বিশ্বেই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে অনন্য ভূমিকা পালন করেছে।

তথ্যসূত্র:

ইবনে আবি উসাইবিয়া, উয়ুন আল-আনবা ফি তাবাকাত আল-আত্তিবা।

আল-রাজি, কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব।

আল-রাজি, কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা।

ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা।

Nasr, Seyyed Hossein. Science and Civilization in Islam.

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানাজায় নারীদের অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলাম যা বলে

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)

আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।

জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।

এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য যে সুসংবাদ দিয়েছেন নবীজি (সা.)

আবরার নাঈম 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)

জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লাশ দেখে যে দোয়া পড়বেন

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)

কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’

এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)

পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।

হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)

হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রজব মাসে যে দোয়া পড়তেন নবীজি (সা.)

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাস শুরু হলে একটি বিশেষ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন (অর্থাৎ রমজান পাওয়ার তৌফিক দান করুন)।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)

এই মাসের আমল সম্পর্কে কিছু জরুরি দিক হলো: ১. ফরজ ইবাদতে যত্নবান হওয়া: যেকোনো ফজিলতপূর্ণ সময়ের প্রথম শর্ত হলো ফরজ ইবাদতগুলো নিখুঁতভাবে পালন করা। বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। ২. নফল ইবাদত বৃদ্ধি: এই মাসে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং জিকির-আজকারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ৩. গুনাহ বর্জন: যেহেতু এটি সম্মানিত মাস, তাই এই সময়ে পাপাচার থেকে দূরে থাকার গুরুত্ব অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ৪. বেশি বেশি নফল রোজা: যদিও রজব মাসের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রোজার বাধ্যবাধকতা নেই, তবে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং আইয়ামে বিজের (চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে রমজানের জন্য প্রস্তুত করা যায়।

রজব মাস আমাদের আত্মশুদ্ধি এবং রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে বরকত প্রার্থনা করি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত