Ajker Patrika

মানুষের প্রাণের সুরক্ষায় ইসলাম

ইজাজুল হক
মানুষের প্রাণের সুরক্ষায় ইসলাম

আল্লাহ তাআলা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবেই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। তাকে পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা দান করেছেন। এমনকি পবিত্র ফেরেশতাদের ওপরও তাকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। তাকে সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীর সব সৃষ্টির চেয়ে সুন্দরতম অবয়বে। তার জীবনকে করেছেন অমূল্য। এ কারণে ইসলামে মানুষকে বিক্রি করা দূরের কথা, তার কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, এমনকি রক্তের একটি বিন্দুও বিক্রি করা জায়েজ নেই। মানুষের জীবন সুরক্ষায় ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।

মানুষের দেহে সঞ্চারিত প্রাণ মহান আল্লাহর সবচেয়ে বড় আমানত। এই প্রাণ যেমন তিনি নিজ ইচ্ছায় তাদের দান করেছেন, এর সমাপ্তিদানের অধিকারও তাঁরই হাতে। জীবন-মৃত্যুর মালিক তিনিই। পৃথিবীতে কাউকে অন্যায়ভাবে কারও প্রাণ কেড়ে নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়নি। এমনকি ব্যক্তি নিজেও নিজের প্রাণনাশ করতে পারে না। এ কারণেই ইসলামে আত্মহত্যা করা মহাপাপ। এ ছাড়া ইসলামের সবচেয়ে কড়া আইন কিসাসও মানুষের জীবনের সুরক্ষায় প্রণয়ন করা হয়েছে।

পৃথিবীর সব অশান্তির মূলে রয়েছে মানুষ হত্যা। হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমেই শুরু হয়েছিল পৃথিবীর প্রথম অনাচার। ফেরেশতারাও মানুষ সৃষ্টির আগে মহান আল্লাহর কাছে এ কারণেই আপত্তি জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘তারা তো সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং খুনখারাবি করবে। আমরা তো আছিই, আপনার সপ্রশংস তাসবিহ পাঠে নিয়োজিত।’ (সুরা বাকারা: ৩০) তার পরও আল্লাহ তাআলা মহত্তম উদ্দেশ্যে পৃথিবীতে তাঁর বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ সৃষ্টি করলেন। একই সঙ্গে রক্তপাত-হানাহানি বন্ধের দায়িত্বও অর্পিত হয় মানুষেরই কাঁধে।

এ কারণেই পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে মানুষ হত্যার শাস্তি হিসেবে কঠোর আইন প্রয়োগের কথা এসেছে। হত্যাকারীর কাছ থেকে আইনানুগভাবে কিসাস নেওয়ার বিধান দেওয়া হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের বিচার কী হবে, তা-ও বিস্তারিত বলা হয়েছে কোরআনে। আইন প্রয়োগের মাধ্যমে কখন মানুষকে হত্যা করা যাবে, তা-ও বলা আছে ফিকহের কিতাবে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের জঘন্যতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করেছেন নবীজি। হাদিসে এসেছে, মানুষ হত্যা পৃথিবীর চারটি সবচেয়ে বড় গুনাহের একটি। আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে উপাস্য মানার গুনাহের পরেই মানুষ হত্যার গুনাহের স্থান। ইচ্ছাকৃত মানুষ খুনের শাস্তি পৃথিবীতে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি পরকালেও সোজা জাহান্নাম।

হত্যাকাণ্ডকে অনেকভাবে নিন্দা করা হয়েছে ইসলামে। একজন মানুষকে হত্যা করা পুরো মানবজাতিকে হত্যা করার শামিল বলা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। ইরশাদ হয়েছে, ‘নরহত্যা বা পৃথিবীতে  ফ্যাসাদ সৃষ্টির অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল।’ (সুরা মায়িদা: ৩২) একই কথা ভিন্ন শব্দে উচ্চারিত হয়েছে মহানবী (সা.)-এর কণ্ঠেও। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তাআলার কাছে একজন মুসলিম হত্যার চেয়ে পুরো বিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাওয়া সহজতর।’ (তিরমিজি: ১৩৯৫)

মহানবী (সা.) নরহত্যাকে আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাস তথা কুফরি বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া আল্লাহর অবাধ্যতা এবং তাকে হত্যা করা কুফরি।’ (বুখারি: ৪৮; মুসলিম: ৬৪) অন্য হাদিসে নরহত্যাকে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আশা করা যায়, সব গুনাহ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেবেন। তবে দুটি গুনাহ তিনি ক্ষমা করবেন না। তা হলো কোনো মানুষ কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা অথবা ইচ্ছাকৃত কেউ কোনো মুমিনকে হত্যা করা।’ (নাসায়ি: ৩৯৮৪)

পৃথিবীতে মানুষের হক সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে হত্যাকাণ্ড। তাই দুনিয়ার সব আইনে যেমন এর বিচারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, তেমনি পরকালে বিচার দিবসেও আল্লাহ তাআলা প্রথমে হত্যাকাণ্ডের বিচার করবেন। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন প্রথম যে বিষয়ে মানুষের ফয়সালা করা হবে, তা হলো রক্তপাতের বিচার।’ (মুসলিম: ১৬৭৮)

হত্যাকাণ্ডের পরকালীন শাস্তি প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোনো মুমিনের জন্য সমীচীন নয়, সে অন্য মুমিনকে হত্যা করবে। অবশ্য ভুলবশত করে ফেললে অন্য কথা।...আর কেউ স্বেচ্ছায় কোনো মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম, সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হন, তাকে অভিশপ্ত করেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রাখেন।’ (সুরা নিসা: ৯২-৯৩)

হত্যাকাণ্ডের বিচার কেমন হবে, তারও কিঞ্চিৎ ধারণা হাদিসে দিয়েছেন মহানবী (সা.)। তিনি বলেন, ‘হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীকে সঙ্গে নিয়ে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার সামনে উপস্থিত হবে। হত্যাকৃত ব্যক্তির মাথা তার হাতেই থাকবে। শিরাগুলো থেকে তখন রক্ত পড়বে। সে আল্লাহ তাআলাকে উদ্দেশ্য করে বলবে—হে আমার রব, এই ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। এমনকি সে হত্যাকারীকে আরশের খুব কাছে নিয়ে যাবে।’ শ্রোতারা এই হাদিসের বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)কে ওই হত্যাকারীর তওবা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ওপরে উল্লিখিত সুরা নিসার ৯৩ নম্বর আয়াতটি তিলাওয়াত করে বললেন, ‘এই আয়াত রহিত হয়নি। পরিবর্তনও হয়নি। অতএব তার তওবা কোনো কাজেই আসবে না।’ (তিরমিজি: ৩০২৯)

পৃথিবীর সব মানুষ যদি একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করতে একমতও হয়ে যায়, তবু আল্লাহ তাআলা হত্যাকারীদের ক্ষমা করবেন না। সবাইকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করবেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যদি আকাশ ও পৃথিবীর সবাই মিলেও কোনো মুমিন হত্যায় অংশ নেয়, তবু আল্লাহ তাআলা তাদের সবাইকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’ (তিরমিজি: ১৩৯৮)

লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানাজায় নারীদের অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলাম যা বলে

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)

আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।

জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।

এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য যে সুসংবাদ দিয়েছেন নবীজি (সা.)

আবরার নাঈম 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)

জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লাশ দেখে যে দোয়া পড়বেন

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)

কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’

এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)

পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।

হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)

হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রজব মাসে যে দোয়া পড়তেন নবীজি (সা.)

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাস শুরু হলে একটি বিশেষ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন (অর্থাৎ রমজান পাওয়ার তৌফিক দান করুন)।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)

এই মাসের আমল সম্পর্কে কিছু জরুরি দিক হলো: ১. ফরজ ইবাদতে যত্নবান হওয়া: যেকোনো ফজিলতপূর্ণ সময়ের প্রথম শর্ত হলো ফরজ ইবাদতগুলো নিখুঁতভাবে পালন করা। বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। ২. নফল ইবাদত বৃদ্ধি: এই মাসে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং জিকির-আজকারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ৩. গুনাহ বর্জন: যেহেতু এটি সম্মানিত মাস, তাই এই সময়ে পাপাচার থেকে দূরে থাকার গুরুত্ব অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ৪. বেশি বেশি নফল রোজা: যদিও রজব মাসের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রোজার বাধ্যবাধকতা নেই, তবে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং আইয়ামে বিজের (চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে রমজানের জন্য প্রস্তুত করা যায়।

রজব মাস আমাদের আত্মশুদ্ধি এবং রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে বরকত প্রার্থনা করি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত