Ajker Patrika

মানুষের প্রাণের সুরক্ষায় ইসলাম

ইজাজুল হক
মানুষের প্রাণের সুরক্ষায় ইসলাম

আল্লাহ তাআলা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবেই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। তাকে পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা দান করেছেন। এমনকি পবিত্র ফেরেশতাদের ওপরও তাকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। তাকে সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীর সব সৃষ্টির চেয়ে সুন্দরতম অবয়বে। তার জীবনকে করেছেন অমূল্য। এ কারণে ইসলামে মানুষকে বিক্রি করা দূরের কথা, তার কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, এমনকি রক্তের একটি বিন্দুও বিক্রি করা জায়েজ নেই। মানুষের জীবন সুরক্ষায় ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।

মানুষের দেহে সঞ্চারিত প্রাণ মহান আল্লাহর সবচেয়ে বড় আমানত। এই প্রাণ যেমন তিনি নিজ ইচ্ছায় তাদের দান করেছেন, এর সমাপ্তিদানের অধিকারও তাঁরই হাতে। জীবন-মৃত্যুর মালিক তিনিই। পৃথিবীতে কাউকে অন্যায়ভাবে কারও প্রাণ কেড়ে নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়নি। এমনকি ব্যক্তি নিজেও নিজের প্রাণনাশ করতে পারে না। এ কারণেই ইসলামে আত্মহত্যা করা মহাপাপ। এ ছাড়া ইসলামের সবচেয়ে কড়া আইন কিসাসও মানুষের জীবনের সুরক্ষায় প্রণয়ন করা হয়েছে।

পৃথিবীর সব অশান্তির মূলে রয়েছে মানুষ হত্যা। হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমেই শুরু হয়েছিল পৃথিবীর প্রথম অনাচার। ফেরেশতারাও মানুষ সৃষ্টির আগে মহান আল্লাহর কাছে এ কারণেই আপত্তি জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘তারা তো সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং খুনখারাবি করবে। আমরা তো আছিই, আপনার সপ্রশংস তাসবিহ পাঠে নিয়োজিত।’ (সুরা বাকারা: ৩০) তার পরও আল্লাহ তাআলা মহত্তম উদ্দেশ্যে পৃথিবীতে তাঁর বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ সৃষ্টি করলেন। একই সঙ্গে রক্তপাত-হানাহানি বন্ধের দায়িত্বও অর্পিত হয় মানুষেরই কাঁধে।

এ কারণেই পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে মানুষ হত্যার শাস্তি হিসেবে কঠোর আইন প্রয়োগের কথা এসেছে। হত্যাকারীর কাছ থেকে আইনানুগভাবে কিসাস নেওয়ার বিধান দেওয়া হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের বিচার কী হবে, তা-ও বিস্তারিত বলা হয়েছে কোরআনে। আইন প্রয়োগের মাধ্যমে কখন মানুষকে হত্যা করা যাবে, তা-ও বলা আছে ফিকহের কিতাবে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের জঘন্যতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করেছেন নবীজি। হাদিসে এসেছে, মানুষ হত্যা পৃথিবীর চারটি সবচেয়ে বড় গুনাহের একটি। আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে উপাস্য মানার গুনাহের পরেই মানুষ হত্যার গুনাহের স্থান। ইচ্ছাকৃত মানুষ খুনের শাস্তি পৃথিবীতে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি পরকালেও সোজা জাহান্নাম।

হত্যাকাণ্ডকে অনেকভাবে নিন্দা করা হয়েছে ইসলামে। একজন মানুষকে হত্যা করা পুরো মানবজাতিকে হত্যা করার শামিল বলা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। ইরশাদ হয়েছে, ‘নরহত্যা বা পৃথিবীতে  ফ্যাসাদ সৃষ্টির অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল।’ (সুরা মায়িদা: ৩২) একই কথা ভিন্ন শব্দে উচ্চারিত হয়েছে মহানবী (সা.)-এর কণ্ঠেও। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তাআলার কাছে একজন মুসলিম হত্যার চেয়ে পুরো বিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাওয়া সহজতর।’ (তিরমিজি: ১৩৯৫)

মহানবী (সা.) নরহত্যাকে আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাস তথা কুফরি বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া আল্লাহর অবাধ্যতা এবং তাকে হত্যা করা কুফরি।’ (বুখারি: ৪৮; মুসলিম: ৬৪) অন্য হাদিসে নরহত্যাকে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আশা করা যায়, সব গুনাহ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেবেন। তবে দুটি গুনাহ তিনি ক্ষমা করবেন না। তা হলো কোনো মানুষ কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা অথবা ইচ্ছাকৃত কেউ কোনো মুমিনকে হত্যা করা।’ (নাসায়ি: ৩৯৮৪)

পৃথিবীতে মানুষের হক সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে হত্যাকাণ্ড। তাই দুনিয়ার সব আইনে যেমন এর বিচারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, তেমনি পরকালে বিচার দিবসেও আল্লাহ তাআলা প্রথমে হত্যাকাণ্ডের বিচার করবেন। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন প্রথম যে বিষয়ে মানুষের ফয়সালা করা হবে, তা হলো রক্তপাতের বিচার।’ (মুসলিম: ১৬৭৮)

হত্যাকাণ্ডের পরকালীন শাস্তি প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোনো মুমিনের জন্য সমীচীন নয়, সে অন্য মুমিনকে হত্যা করবে। অবশ্য ভুলবশত করে ফেললে অন্য কথা।...আর কেউ স্বেচ্ছায় কোনো মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম, সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হন, তাকে অভিশপ্ত করেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রাখেন।’ (সুরা নিসা: ৯২-৯৩)

হত্যাকাণ্ডের বিচার কেমন হবে, তারও কিঞ্চিৎ ধারণা হাদিসে দিয়েছেন মহানবী (সা.)। তিনি বলেন, ‘হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীকে সঙ্গে নিয়ে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার সামনে উপস্থিত হবে। হত্যাকৃত ব্যক্তির মাথা তার হাতেই থাকবে। শিরাগুলো থেকে তখন রক্ত পড়বে। সে আল্লাহ তাআলাকে উদ্দেশ্য করে বলবে—হে আমার রব, এই ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। এমনকি সে হত্যাকারীকে আরশের খুব কাছে নিয়ে যাবে।’ শ্রোতারা এই হাদিসের বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)কে ওই হত্যাকারীর তওবা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ওপরে উল্লিখিত সুরা নিসার ৯৩ নম্বর আয়াতটি তিলাওয়াত করে বললেন, ‘এই আয়াত রহিত হয়নি। পরিবর্তনও হয়নি। অতএব তার তওবা কোনো কাজেই আসবে না।’ (তিরমিজি: ৩০২৯)

পৃথিবীর সব মানুষ যদি একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করতে একমতও হয়ে যায়, তবু আল্লাহ তাআলা হত্যাকারীদের ক্ষমা করবেন না। সবাইকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করবেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যদি আকাশ ও পৃথিবীর সবাই মিলেও কোনো মুমিন হত্যায় অংশ নেয়, তবু আল্লাহ তাআলা তাদের সবাইকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’ (তিরমিজি: ১৩৯৮)

লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতের টুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি?

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৮
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?

ইসলামের বিধান হলো, নামাজে মাথা ঢাকা পুরুষের জন্য ফরজ নয়, বরং এটি নামাজের আদব ও সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত মাথা ঢেকেই নামাজ আদায় করতেন। আবু দাউদ শরিফে এসেছে, নবীজি (সা.) পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন। ফিকহের দৃষ্টিতে কানটুপি, উলের টুপি বা সাধারণ টুপি—সবই মাথা ঢাকার পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ জায়েজ।

কানটুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—সেটি হলো সিজদা। সিজদার সময় কপাল সরাসরি মাটিতে বা জায়নামাজে লাগানো আবশ্যক। যদি টুপিটি এমনভাবে পরা হয়, যা কপালকে ঢেকে রাখে এবং মাটিতে কপাল ঠেকতে বাধা দেয়, তবে সিজদা অপূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই সিজদার সময় কপাল উন্মুক্ত রাখা উত্তম। তবে কপাল সামান্য আবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে।

শীত থেকে বাঁচতে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা অনুচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তাই কান ও গলা আবৃত থাকলেও নাক-মুখ খোলা রাখা উচিত।

তাই শৈত্যপ্রবাহের সময় নিশ্চিন্তে কানটুপি পরা যাবে যদি টুপিটি পবিত্র (পাক-সাফ) হয়, এটি অহংকার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কেবল শীত নিবারণের জন্য হয় এবং সিজদার সময় কপাল মাটিতে স্থাপনে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৭ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৮ মিনিট
ফজর০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
জোহর১২: ০১ মিনিট০৩: ৪৩ মিনিট
আসর০৩: ৪৪ মিনিট০৫: ১৯ মিনিট
মাগরিব০৫: ২১ মিনিট০৬: ৪০ মিনিট
এশা০৬: ৪১ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৬ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৭ মিনিট
ফজর০৫: ১৮ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
জোহর১২: ০০ মিনিট০৩: ৪৩ মিনিট
আসর০৩: ৪৪ মিনিট০৫: ১৯ মিনিট
মাগরিব০৫: ২১ মিনিট০৬: ৩৯ মিনিট
এশা০৬: ৪০ মিনিট০৫: ১৭ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতকালে অজুতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা

ইসলাম ডেস্ক 
অজু। ছবি: সংগৃহীত
অজু। ছবি: সংগৃহীত

শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেকে অজু করতে অলসতা করেন অথবা তাড়াহুড়ো করে অজুর অঙ্গগুলো ঠিকমতো না ভিজিয়েই ইবাদতে লিপ্ত হন। অথচ অজুর কোনো অংশ শুকনো থাকলে নামাজ ও ইবাদত কবুল হয় না। শীতের এ প্রতিকূল সময়ে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি:

শীতের কাপড়ের কারণে অনেকে হাতা ঠিকমতো না গুটিয়েই হাত ধুয়ে নেন, ফলে কনুই শুকনো থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মনে রাখতে হবে, কনুই বা পায়ের টাখনুর কোনো অংশ সামান্য শুকনো থাকলেও অজু হবে না। (সহিহ্ মুসলিম: ২৪৬)

তাড়াহুড়ো করে অজু করতে গিয়ে অনেকে পায়ের গোড়ালি ঠিকমতো ভেজান না। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আগুনের কঠিন শাস্তি সেই গোড়ালিগুলোর জন্য (যা অজুর সময় শুকনো থাকে)! তোমরা খুব ভালোভাবে অজু করো।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২৪১)

ঠান্ডার ভয়ে অনেকে প্রস্রাব-পায়খানার বেগ চেপে রেখে আগের অজু দিয়ে নামাজ পড়ার চেষ্টা করেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি ইসলামের দৃষ্টিতেও অপছন্দের। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘খাবারের উপস্থিতিতে এবং মল-মূত্রের বেগ চেপে রাখা অবস্থায় কোনো নামাজ নেই।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৫৬০)। অন্য এক হাদিসে এসেছে, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোনো মুমিনের জন্য মল-মূত্রের বেগ নিয়ে নামাজ পড়া বৈধ নয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৯১)

শীতের কষ্টকে উপেক্ষা করে যথাযথভাবে অজু সম্পন্ন করা মুমিনের ইমানি দৃঢ়তার পরিচয়। তাই আমাদের উচিত, তাড়াহুড়ো না করে অজুর প্রতিটি অঙ্গ ভালোভাবে ধৌত করা এবং পূর্ণ পবিত্রতা অর্জনের পর আল্লাহর দরবারে দণ্ডায়মান হওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত