কাউসার লাবীব

হজরত আইয়ুব (আ.)–এর নাম শুনলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে ধৈর্যশীল এক মহামানবের কথা। ধৈর্যের মাধ্যমে যে প্রকৃতভাবে জীবনের সাফল্য অর্জন কর যায়, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক নানা কষ্টের মুখোমুখি হয়ে তিনি মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন। তাঁর ধৈর্যের প্রশংসা পবিত্র কোরআনের সুরা নিসা, সুরা আনআম, সুরা সাদ ও সুরা আম্বিয়ায় এসেছে। ধৈর্যের মাধ্যমে তিনি কষ্টের দিনগুলো পার করে মহান প্রভুর পুরস্কার পেয়েছিলেন।
আল্লাহর নবী হজরত আইয়ুব (আ.) ছিলেন ইয়াকুব (আ.)-এর বংশধর। তিনি প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক ছিলেন। তাঁর কোনো অভাব ছিল না। আল্লাহর অনুগ্রহে ভরপুর ছিল তাঁর জীবন।
আল্লাহ তাআলা নানা সময়ে বিভিন্নভাবে বান্দার পরীক্ষা নেন। এটাই তাঁর কুদরতি ইচ্ছা। পবিত্র কোরআনে তিনি বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা: ১৫৫)।
একবার তিনি নবী আইয়ুব (আ.)–এর পরীক্ষা নিতে চাইলেন। তাঁকে দুরারোগ্য এক রোগ দিলেন। তাঁর ধন–সম্পদ কেড়ে নিলেন। হারিয়ে গেল সন্তান-সন্ততি ও বন্ধু-বান্ধব। সবাইকে হারিয়ে তিনি একা হয়ে গেলেন।
তাঁর পুণ্যবতী স্ত্রী ছিলেন অত্যন্ত স্বামীভক্ত। সারাক্ষণ তিনি স্বামীর সেবা করতেন। শেষে পরিবারের খরচ মেটাতে তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন। এদিকে ধীরে ধীরে আইয়ুব (আ.)-এর রোগ-ব্যাধি, দুঃখ-কষ্ট বাড়তে থাকে। এভাবে কেটে যায় ১৮ বছর।
কঠিন এই সময়ে তিনি সর্বদা আল্লাহকে ডাকতেন। তাঁর জিকির করতেন। তার কাছে প্রার্থনা করতেন। প্রার্থনায় তিনি কোনো অভিযোগ–অনুযোগ করতেন না। ধৈর্যশক্তি বাড়িয়ে দেওয়ার দোয়া করতেন। তাঁর দোয়ার ভাষ্য কোরআনে এভাবে এসেছে, ‘আর স্মরণ করো আইয়ুবকে, যখন সে তার রবকে ডেকেছিল, (বলেছিল) আমি তো দুঃখ-কষ্টে পড়েছি (দুঃখ-কষ্ট আমাকে স্পর্শ করেছে), আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু!’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৩)
তিনি হজরত আইয়ুব (আ.)–এর ধৈর্য দেখে খুশি হন। পবিত্র কোরআনে সে কথা এসেছে এভাবে, ‘আমি (আল্লাহ) তাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পেয়েছি।’ (সুরা সাদ: ৪৪)
দিন, সপ্তাহ, মাস যায়। সময়ের পরিবর্তন হয়। কিন্তু আইয়ুব (আ.)–এর ধৈর্যের বাধ ভাঙে না। রবের প্রতি তাঁর বিশ্বাসে চিড় ধরে না। এক সময় আল্লাহ তাআলার পরীক্ষা নেওয়া শেষ হয়। তাঁর দোয়া কবুল করেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম। আর তার যত দুঃখ-কষ্ট ছিল তা দূর করে দিলাম এবং তার পরিবার-পরিজন তাকে দিয়ে দিলাম। তাদের সঙ্গে তাদের মতো আরো দিলাম আমার পক্ষ থেকে রহমত এবং ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৪)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ (আমি তাকে বললাম,) তুমি তোমার পা দিয়ে (ভূমিতে) আঘাত করো। (ফলে পানি নির্গত হলো এবং দেখা গেল যে) এটি গোসলের জন্য ঠাণ্ডা পানি ও (পানের জন্য উত্তম) পানীয়।’ (সুরা সাদ: ৪২)
ওই বরকতের পানি দিয়ে আইয়ুব (আ.) গোসল করে সুস্থ হয়ে যান। একে একে সম্পদ ফিরে পান এবং সন্তান লাভ করেন।
হজরত আইয়ুব (আ.)–এর ঘটনায় আমাদের জন্য রয়েছে বিপদাপদে ধৈর্য ধরে অবিচল থাকার শিক্ষা।

হজরত আইয়ুব (আ.)–এর নাম শুনলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে ধৈর্যশীল এক মহামানবের কথা। ধৈর্যের মাধ্যমে যে প্রকৃতভাবে জীবনের সাফল্য অর্জন কর যায়, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক নানা কষ্টের মুখোমুখি হয়ে তিনি মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন। তাঁর ধৈর্যের প্রশংসা পবিত্র কোরআনের সুরা নিসা, সুরা আনআম, সুরা সাদ ও সুরা আম্বিয়ায় এসেছে। ধৈর্যের মাধ্যমে তিনি কষ্টের দিনগুলো পার করে মহান প্রভুর পুরস্কার পেয়েছিলেন।
আল্লাহর নবী হজরত আইয়ুব (আ.) ছিলেন ইয়াকুব (আ.)-এর বংশধর। তিনি প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক ছিলেন। তাঁর কোনো অভাব ছিল না। আল্লাহর অনুগ্রহে ভরপুর ছিল তাঁর জীবন।
আল্লাহ তাআলা নানা সময়ে বিভিন্নভাবে বান্দার পরীক্ষা নেন। এটাই তাঁর কুদরতি ইচ্ছা। পবিত্র কোরআনে তিনি বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা: ১৫৫)।
একবার তিনি নবী আইয়ুব (আ.)–এর পরীক্ষা নিতে চাইলেন। তাঁকে দুরারোগ্য এক রোগ দিলেন। তাঁর ধন–সম্পদ কেড়ে নিলেন। হারিয়ে গেল সন্তান-সন্ততি ও বন্ধু-বান্ধব। সবাইকে হারিয়ে তিনি একা হয়ে গেলেন।
তাঁর পুণ্যবতী স্ত্রী ছিলেন অত্যন্ত স্বামীভক্ত। সারাক্ষণ তিনি স্বামীর সেবা করতেন। শেষে পরিবারের খরচ মেটাতে তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন। এদিকে ধীরে ধীরে আইয়ুব (আ.)-এর রোগ-ব্যাধি, দুঃখ-কষ্ট বাড়তে থাকে। এভাবে কেটে যায় ১৮ বছর।
কঠিন এই সময়ে তিনি সর্বদা আল্লাহকে ডাকতেন। তাঁর জিকির করতেন। তার কাছে প্রার্থনা করতেন। প্রার্থনায় তিনি কোনো অভিযোগ–অনুযোগ করতেন না। ধৈর্যশক্তি বাড়িয়ে দেওয়ার দোয়া করতেন। তাঁর দোয়ার ভাষ্য কোরআনে এভাবে এসেছে, ‘আর স্মরণ করো আইয়ুবকে, যখন সে তার রবকে ডেকেছিল, (বলেছিল) আমি তো দুঃখ-কষ্টে পড়েছি (দুঃখ-কষ্ট আমাকে স্পর্শ করেছে), আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু!’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৩)
তিনি হজরত আইয়ুব (আ.)–এর ধৈর্য দেখে খুশি হন। পবিত্র কোরআনে সে কথা এসেছে এভাবে, ‘আমি (আল্লাহ) তাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পেয়েছি।’ (সুরা সাদ: ৪৪)
দিন, সপ্তাহ, মাস যায়। সময়ের পরিবর্তন হয়। কিন্তু আইয়ুব (আ.)–এর ধৈর্যের বাধ ভাঙে না। রবের প্রতি তাঁর বিশ্বাসে চিড় ধরে না। এক সময় আল্লাহ তাআলার পরীক্ষা নেওয়া শেষ হয়। তাঁর দোয়া কবুল করেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম। আর তার যত দুঃখ-কষ্ট ছিল তা দূর করে দিলাম এবং তার পরিবার-পরিজন তাকে দিয়ে দিলাম। তাদের সঙ্গে তাদের মতো আরো দিলাম আমার পক্ষ থেকে রহমত এবং ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৪)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ (আমি তাকে বললাম,) তুমি তোমার পা দিয়ে (ভূমিতে) আঘাত করো। (ফলে পানি নির্গত হলো এবং দেখা গেল যে) এটি গোসলের জন্য ঠাণ্ডা পানি ও (পানের জন্য উত্তম) পানীয়।’ (সুরা সাদ: ৪২)
ওই বরকতের পানি দিয়ে আইয়ুব (আ.) গোসল করে সুস্থ হয়ে যান। একে একে সম্পদ ফিরে পান এবং সন্তান লাভ করেন।
হজরত আইয়ুব (আ.)–এর ঘটনায় আমাদের জন্য রয়েছে বিপদাপদে ধৈর্য ধরে অবিচল থাকার শিক্ষা।
কাউসার লাবীব

হজরত আইয়ুব (আ.)–এর নাম শুনলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে ধৈর্যশীল এক মহামানবের কথা। ধৈর্যের মাধ্যমে যে প্রকৃতভাবে জীবনের সাফল্য অর্জন কর যায়, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক নানা কষ্টের মুখোমুখি হয়ে তিনি মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন। তাঁর ধৈর্যের প্রশংসা পবিত্র কোরআনের সুরা নিসা, সুরা আনআম, সুরা সাদ ও সুরা আম্বিয়ায় এসেছে। ধৈর্যের মাধ্যমে তিনি কষ্টের দিনগুলো পার করে মহান প্রভুর পুরস্কার পেয়েছিলেন।
আল্লাহর নবী হজরত আইয়ুব (আ.) ছিলেন ইয়াকুব (আ.)-এর বংশধর। তিনি প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক ছিলেন। তাঁর কোনো অভাব ছিল না। আল্লাহর অনুগ্রহে ভরপুর ছিল তাঁর জীবন।
আল্লাহ তাআলা নানা সময়ে বিভিন্নভাবে বান্দার পরীক্ষা নেন। এটাই তাঁর কুদরতি ইচ্ছা। পবিত্র কোরআনে তিনি বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা: ১৫৫)।
একবার তিনি নবী আইয়ুব (আ.)–এর পরীক্ষা নিতে চাইলেন। তাঁকে দুরারোগ্য এক রোগ দিলেন। তাঁর ধন–সম্পদ কেড়ে নিলেন। হারিয়ে গেল সন্তান-সন্ততি ও বন্ধু-বান্ধব। সবাইকে হারিয়ে তিনি একা হয়ে গেলেন।
তাঁর পুণ্যবতী স্ত্রী ছিলেন অত্যন্ত স্বামীভক্ত। সারাক্ষণ তিনি স্বামীর সেবা করতেন। শেষে পরিবারের খরচ মেটাতে তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন। এদিকে ধীরে ধীরে আইয়ুব (আ.)-এর রোগ-ব্যাধি, দুঃখ-কষ্ট বাড়তে থাকে। এভাবে কেটে যায় ১৮ বছর।
কঠিন এই সময়ে তিনি সর্বদা আল্লাহকে ডাকতেন। তাঁর জিকির করতেন। তার কাছে প্রার্থনা করতেন। প্রার্থনায় তিনি কোনো অভিযোগ–অনুযোগ করতেন না। ধৈর্যশক্তি বাড়িয়ে দেওয়ার দোয়া করতেন। তাঁর দোয়ার ভাষ্য কোরআনে এভাবে এসেছে, ‘আর স্মরণ করো আইয়ুবকে, যখন সে তার রবকে ডেকেছিল, (বলেছিল) আমি তো দুঃখ-কষ্টে পড়েছি (দুঃখ-কষ্ট আমাকে স্পর্শ করেছে), আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু!’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৩)
তিনি হজরত আইয়ুব (আ.)–এর ধৈর্য দেখে খুশি হন। পবিত্র কোরআনে সে কথা এসেছে এভাবে, ‘আমি (আল্লাহ) তাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পেয়েছি।’ (সুরা সাদ: ৪৪)
দিন, সপ্তাহ, মাস যায়। সময়ের পরিবর্তন হয়। কিন্তু আইয়ুব (আ.)–এর ধৈর্যের বাধ ভাঙে না। রবের প্রতি তাঁর বিশ্বাসে চিড় ধরে না। এক সময় আল্লাহ তাআলার পরীক্ষা নেওয়া শেষ হয়। তাঁর দোয়া কবুল করেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম। আর তার যত দুঃখ-কষ্ট ছিল তা দূর করে দিলাম এবং তার পরিবার-পরিজন তাকে দিয়ে দিলাম। তাদের সঙ্গে তাদের মতো আরো দিলাম আমার পক্ষ থেকে রহমত এবং ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৪)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ (আমি তাকে বললাম,) তুমি তোমার পা দিয়ে (ভূমিতে) আঘাত করো। (ফলে পানি নির্গত হলো এবং দেখা গেল যে) এটি গোসলের জন্য ঠাণ্ডা পানি ও (পানের জন্য উত্তম) পানীয়।’ (সুরা সাদ: ৪২)
ওই বরকতের পানি দিয়ে আইয়ুব (আ.) গোসল করে সুস্থ হয়ে যান। একে একে সম্পদ ফিরে পান এবং সন্তান লাভ করেন।
হজরত আইয়ুব (আ.)–এর ঘটনায় আমাদের জন্য রয়েছে বিপদাপদে ধৈর্য ধরে অবিচল থাকার শিক্ষা।

হজরত আইয়ুব (আ.)–এর নাম শুনলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে ধৈর্যশীল এক মহামানবের কথা। ধৈর্যের মাধ্যমে যে প্রকৃতভাবে জীবনের সাফল্য অর্জন কর যায়, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক নানা কষ্টের মুখোমুখি হয়ে তিনি মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন। তাঁর ধৈর্যের প্রশংসা পবিত্র কোরআনের সুরা নিসা, সুরা আনআম, সুরা সাদ ও সুরা আম্বিয়ায় এসেছে। ধৈর্যের মাধ্যমে তিনি কষ্টের দিনগুলো পার করে মহান প্রভুর পুরস্কার পেয়েছিলেন।
আল্লাহর নবী হজরত আইয়ুব (আ.) ছিলেন ইয়াকুব (আ.)-এর বংশধর। তিনি প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক ছিলেন। তাঁর কোনো অভাব ছিল না। আল্লাহর অনুগ্রহে ভরপুর ছিল তাঁর জীবন।
আল্লাহ তাআলা নানা সময়ে বিভিন্নভাবে বান্দার পরীক্ষা নেন। এটাই তাঁর কুদরতি ইচ্ছা। পবিত্র কোরআনে তিনি বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা: ১৫৫)।
একবার তিনি নবী আইয়ুব (আ.)–এর পরীক্ষা নিতে চাইলেন। তাঁকে দুরারোগ্য এক রোগ দিলেন। তাঁর ধন–সম্পদ কেড়ে নিলেন। হারিয়ে গেল সন্তান-সন্ততি ও বন্ধু-বান্ধব। সবাইকে হারিয়ে তিনি একা হয়ে গেলেন।
তাঁর পুণ্যবতী স্ত্রী ছিলেন অত্যন্ত স্বামীভক্ত। সারাক্ষণ তিনি স্বামীর সেবা করতেন। শেষে পরিবারের খরচ মেটাতে তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন। এদিকে ধীরে ধীরে আইয়ুব (আ.)-এর রোগ-ব্যাধি, দুঃখ-কষ্ট বাড়তে থাকে। এভাবে কেটে যায় ১৮ বছর।
কঠিন এই সময়ে তিনি সর্বদা আল্লাহকে ডাকতেন। তাঁর জিকির করতেন। তার কাছে প্রার্থনা করতেন। প্রার্থনায় তিনি কোনো অভিযোগ–অনুযোগ করতেন না। ধৈর্যশক্তি বাড়িয়ে দেওয়ার দোয়া করতেন। তাঁর দোয়ার ভাষ্য কোরআনে এভাবে এসেছে, ‘আর স্মরণ করো আইয়ুবকে, যখন সে তার রবকে ডেকেছিল, (বলেছিল) আমি তো দুঃখ-কষ্টে পড়েছি (দুঃখ-কষ্ট আমাকে স্পর্শ করেছে), আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু!’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৩)
তিনি হজরত আইয়ুব (আ.)–এর ধৈর্য দেখে খুশি হন। পবিত্র কোরআনে সে কথা এসেছে এভাবে, ‘আমি (আল্লাহ) তাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পেয়েছি।’ (সুরা সাদ: ৪৪)
দিন, সপ্তাহ, মাস যায়। সময়ের পরিবর্তন হয়। কিন্তু আইয়ুব (আ.)–এর ধৈর্যের বাধ ভাঙে না। রবের প্রতি তাঁর বিশ্বাসে চিড় ধরে না। এক সময় আল্লাহ তাআলার পরীক্ষা নেওয়া শেষ হয়। তাঁর দোয়া কবুল করেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম। আর তার যত দুঃখ-কষ্ট ছিল তা দূর করে দিলাম এবং তার পরিবার-পরিজন তাকে দিয়ে দিলাম। তাদের সঙ্গে তাদের মতো আরো দিলাম আমার পক্ষ থেকে রহমত এবং ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৪)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ (আমি তাকে বললাম,) তুমি তোমার পা দিয়ে (ভূমিতে) আঘাত করো। (ফলে পানি নির্গত হলো এবং দেখা গেল যে) এটি গোসলের জন্য ঠাণ্ডা পানি ও (পানের জন্য উত্তম) পানীয়।’ (সুরা সাদ: ৪২)
ওই বরকতের পানি দিয়ে আইয়ুব (আ.) গোসল করে সুস্থ হয়ে যান। একে একে সম্পদ ফিরে পান এবং সন্তান লাভ করেন।
হজরত আইয়ুব (আ.)–এর ঘটনায় আমাদের জন্য রয়েছে বিপদাপদে ধৈর্য ধরে অবিচল থাকার শিক্ষা।

মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে।
৪ ঘণ্টা আগেগোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ের দরগাবাড়ি প্রাঙ্গণে কালের সাক্ষী হয়ে আজও টিকে আছে কিছু জীর্ণ স্থাপনা। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা এসব স্মৃতিচিহ্ন আজ থেকে প্রায় সাড়ে সাত শ বছর আগে জ্ঞান ও সভ্যতার এক আলোকবর্তিকা ছিল। এখানে ছিল উপমহাদেশে ইলমে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়।
৪ ঘণ্টা আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন। নবীজির মুখনিঃসৃত মূল্যবান নসিহত থেকে নিজেদের জীবনের পাথেয় সংগ্রহ করতেন।
ইবাদত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি মসজিদ ছিল আলোকিত প্রজন্ম গঠনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণস্থল। নবী করিম (সা.)-এর যুগে শিশুরা মসজিদে আসত, ঘুরে বেড়াত, ইবাদত শিখত এবং সাহাবিদের পাশে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করত। মসজিদ ছিল কচিকাঁচাদের ভালোবাসার জায়গা। কোনো ভয় বা নিষেধাজ্ঞার প্রতিবন্ধকতা ছিল না তাদের।
কিন্তু আজকের বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। শিশুরা মসজিদে এলে অনেকেই তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন, সামান্য দুষ্টুমিতেই ধমক দেন, এমনকি কখনো তাড়িয়েও দেন। এতে করে অনেক অভিভাবকই নিজের সন্তানদের সহজে মসজিদে আনতে চান না। ফলে ধীরে ধীরে মসজিদের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের দূরত্ব তৈরি হয়। অথচ ভবিষ্যতে এই প্রজন্মই উম্মতের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তাই তাদের মসজিদমুখী করা এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
নবীজির যুগে শিশুদের মসজিদে গমন
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে মসজিদে শিশুদের স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল। নবীজি (সা.)-এর চারপাশে সাহাবিদের সঙ্গে ছোট বাচ্চাদেরও দেখা যেত। নবীজি (সা.) কখনো তাদের ধমক দিতেন না, তাড়িয়ে দিতেন না। তিনি শিশুদের উপস্থিতিকে স্বাগত জানাতেন। তাদের প্রতি অসীম মমতা দেখাতেন। নামাজ চলাকালেও নবীজি (সা.) শিশুদের প্রতি বিশেষ কোমলতা প্রদর্শন করতেন। তাঁর নাতি হাসান বা হুসাইন (রা.) কখনো তাঁর পিঠে চড়ে বসত। তিনি তাড়াহুড়ো না করে বরং তাদের ভালোবাসার খাতিরে সিজদা দীর্ঘ করতেন।
একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের সিজদায় গেলে হজরত হাসান কিংবা হোসাইন (রা.) তাঁর পিঠে চড়ে বসে। এ কারণে নবীজি (সা.) খুব দীর্ঘ সময় সিজদায় থাকেন। নামাজ শেষে সাহাবিরা এর কারণ জানতে চাইলে নবীজি (সা.) বলেন, ‘আমার এই নাতি আমাকে বাহন বানিয়ে নিয়েছিল, তাই তাকে নামিয়ে দিতে আমি তাড়াহুড়ো করতে চাইনি, যতক্ষণ না সে স্বাভাবিকভাবে নেমে আসে।’ (সুনানে নাসায়ি: ১১৪১)। মেয়েশিশুরাও নবীজির স্নেহ থেকে বঞ্চিত হতো না। তারাও মসজিদে আসত। হজরত কাতাদা (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) তাঁর কন্যা জাইনাবের মেয়ে উমামাকে কাঁধে নিয়ে নামাজ পড়তেন। সিজদায় গেলে তাকে নামিয়ে দিতেন এবং দাঁড়ালে আবার কাঁধে তুলে নিতেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৯১৭)
আমাদের দেশের বেদনাদায়ক বাস্তবতা
দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে ‘নামাজের প্রতি শ্রদ্ধা’ দেখানোর লেভেল লাগিয়ে অনেকেই শিশুদের প্রতি রূঢ় আচরণকে বৈধ মনে করেন। তাদের ধমক দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেন। কোনো কোনো মসজিদ কমিটি ‘বাচ্চাদের মসজিদে আনা নিষিদ্ধ’ লেখা সাইনবোর্ডও টাঙিয়ে রাখেন মসজিদের সামনে। এসব আচরণ শিশুদের কোমল হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে। পরিণতিতে সে মসজিদকে ভয় পেতে শুরু করে। যে রাসুল (সা.) শিশুদের মাথায় মমতার পরশ বুলিয়ে দিতেন, তাঁর উম্মতের কেউ কেউ আজ শিশুদের বকাঝকা করে মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে, এটা বড় লজ্জার বিষয়।
শিশুদের শিক্ষাদানের পদ্ধতি হোক নম্রতা
শিশুরা দেহ-মন উভয় দিক থেকে কোমল। তারা কঠোরতা সহ্য করতে পারে না। নবীজি (সা.) বাচ্চাদের প্রতি খুবই কোমল ছিলেন। আল্লাহ তাআলাও কোমলতা পছন্দ করেন। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কোমল আচরণকারী, তিনি সর্বক্ষেত্রে কোমলতা ভালোবাসেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬০২৪)। অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৯০)। আমাদেরও উচিত বাচ্চাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করা। তাদের কিছু শেখাতে হলেও আদুরে গলায় শিশুসুলভ ভঙ্গিতে শেখানো। বাচ্চাদের জন্য এটি কঠোরতা থেকেও বেশি ফলপ্রসূ।
শিশুরা হোক মসজিদমুখী
শিশুদের মসজিদমুখী করতে হলে নম্রতা, কোমলতা ও ভালোবাসা দিয়ে কাছে টানতে হবে। তাদের জন্য শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মসজিদের আঙিনায় শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার হতে পারে। সেখানে তাদের উপযোগী রঙিন বই, কোরআন শেখার বিভিন্ন মজাদার উপকরণ থাকতে পারে। এতে তারা ধীরে ধীরে মসজিদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। পাশাপাশি মসজিদ কমিটি ও ইমাম সাহেবগণ নানা ধরনের উৎসাহমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। হতে পারে শিশুদের জন্য সাপ্তাহিক বিশেষ ক্লাস। যেখানে শিশুসুলভ ভঙ্গিতে তাদের ইসলামের মৌলিক জ্ঞান শেখানো হবে। যারা এতে নিয়মিত উপস্থিত হবে, তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ কার্যক্রমও থাকতে পারে।
মসজিদে আসার পর শিশুদের একটু শব্দে কেউ যদি রেগে যায়, বিনয়ের সঙ্গে তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন ‘নবীজির মসজিদেও তো শিশুদের বিচরণ ছিল। আমরা তাদের প্রতি কোমল হই। কঠোর আচরণ পরিত্যাগ করি।’ এভাবে ধীরে ধীরে সমাজের পরিবেশ বদলে যাবে।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমরা যদি চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো, সচ্চরিত্রবান, নামাজি ও ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন হোক—তাহলে তাদের জন্য মসজিদ উন্মুক্ত করে দিতে হবে। উৎসাহ, অভয়, ভালোবাসা দিয়ে ও নানা পরিকল্পনা করে তাদের মসজিদমুখী করতে হবে। তাহলেই গড়ে উঠবে আলোকিত প্রজন্ম।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন। নবীজির মুখনিঃসৃত মূল্যবান নসিহত থেকে নিজেদের জীবনের পাথেয় সংগ্রহ করতেন।
ইবাদত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি মসজিদ ছিল আলোকিত প্রজন্ম গঠনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণস্থল। নবী করিম (সা.)-এর যুগে শিশুরা মসজিদে আসত, ঘুরে বেড়াত, ইবাদত শিখত এবং সাহাবিদের পাশে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করত। মসজিদ ছিল কচিকাঁচাদের ভালোবাসার জায়গা। কোনো ভয় বা নিষেধাজ্ঞার প্রতিবন্ধকতা ছিল না তাদের।
কিন্তু আজকের বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। শিশুরা মসজিদে এলে অনেকেই তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন, সামান্য দুষ্টুমিতেই ধমক দেন, এমনকি কখনো তাড়িয়েও দেন। এতে করে অনেক অভিভাবকই নিজের সন্তানদের সহজে মসজিদে আনতে চান না। ফলে ধীরে ধীরে মসজিদের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের দূরত্ব তৈরি হয়। অথচ ভবিষ্যতে এই প্রজন্মই উম্মতের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তাই তাদের মসজিদমুখী করা এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
নবীজির যুগে শিশুদের মসজিদে গমন
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে মসজিদে শিশুদের স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল। নবীজি (সা.)-এর চারপাশে সাহাবিদের সঙ্গে ছোট বাচ্চাদেরও দেখা যেত। নবীজি (সা.) কখনো তাদের ধমক দিতেন না, তাড়িয়ে দিতেন না। তিনি শিশুদের উপস্থিতিকে স্বাগত জানাতেন। তাদের প্রতি অসীম মমতা দেখাতেন। নামাজ চলাকালেও নবীজি (সা.) শিশুদের প্রতি বিশেষ কোমলতা প্রদর্শন করতেন। তাঁর নাতি হাসান বা হুসাইন (রা.) কখনো তাঁর পিঠে চড়ে বসত। তিনি তাড়াহুড়ো না করে বরং তাদের ভালোবাসার খাতিরে সিজদা দীর্ঘ করতেন।
একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের সিজদায় গেলে হজরত হাসান কিংবা হোসাইন (রা.) তাঁর পিঠে চড়ে বসে। এ কারণে নবীজি (সা.) খুব দীর্ঘ সময় সিজদায় থাকেন। নামাজ শেষে সাহাবিরা এর কারণ জানতে চাইলে নবীজি (সা.) বলেন, ‘আমার এই নাতি আমাকে বাহন বানিয়ে নিয়েছিল, তাই তাকে নামিয়ে দিতে আমি তাড়াহুড়ো করতে চাইনি, যতক্ষণ না সে স্বাভাবিকভাবে নেমে আসে।’ (সুনানে নাসায়ি: ১১৪১)। মেয়েশিশুরাও নবীজির স্নেহ থেকে বঞ্চিত হতো না। তারাও মসজিদে আসত। হজরত কাতাদা (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) তাঁর কন্যা জাইনাবের মেয়ে উমামাকে কাঁধে নিয়ে নামাজ পড়তেন। সিজদায় গেলে তাকে নামিয়ে দিতেন এবং দাঁড়ালে আবার কাঁধে তুলে নিতেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৯১৭)
আমাদের দেশের বেদনাদায়ক বাস্তবতা
দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে ‘নামাজের প্রতি শ্রদ্ধা’ দেখানোর লেভেল লাগিয়ে অনেকেই শিশুদের প্রতি রূঢ় আচরণকে বৈধ মনে করেন। তাদের ধমক দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেন। কোনো কোনো মসজিদ কমিটি ‘বাচ্চাদের মসজিদে আনা নিষিদ্ধ’ লেখা সাইনবোর্ডও টাঙিয়ে রাখেন মসজিদের সামনে। এসব আচরণ শিশুদের কোমল হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে। পরিণতিতে সে মসজিদকে ভয় পেতে শুরু করে। যে রাসুল (সা.) শিশুদের মাথায় মমতার পরশ বুলিয়ে দিতেন, তাঁর উম্মতের কেউ কেউ আজ শিশুদের বকাঝকা করে মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে, এটা বড় লজ্জার বিষয়।
শিশুদের শিক্ষাদানের পদ্ধতি হোক নম্রতা
শিশুরা দেহ-মন উভয় দিক থেকে কোমল। তারা কঠোরতা সহ্য করতে পারে না। নবীজি (সা.) বাচ্চাদের প্রতি খুবই কোমল ছিলেন। আল্লাহ তাআলাও কোমলতা পছন্দ করেন। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কোমল আচরণকারী, তিনি সর্বক্ষেত্রে কোমলতা ভালোবাসেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬০২৪)। অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৯০)। আমাদেরও উচিত বাচ্চাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করা। তাদের কিছু শেখাতে হলেও আদুরে গলায় শিশুসুলভ ভঙ্গিতে শেখানো। বাচ্চাদের জন্য এটি কঠোরতা থেকেও বেশি ফলপ্রসূ।
শিশুরা হোক মসজিদমুখী
শিশুদের মসজিদমুখী করতে হলে নম্রতা, কোমলতা ও ভালোবাসা দিয়ে কাছে টানতে হবে। তাদের জন্য শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মসজিদের আঙিনায় শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার হতে পারে। সেখানে তাদের উপযোগী রঙিন বই, কোরআন শেখার বিভিন্ন মজাদার উপকরণ থাকতে পারে। এতে তারা ধীরে ধীরে মসজিদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। পাশাপাশি মসজিদ কমিটি ও ইমাম সাহেবগণ নানা ধরনের উৎসাহমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। হতে পারে শিশুদের জন্য সাপ্তাহিক বিশেষ ক্লাস। যেখানে শিশুসুলভ ভঙ্গিতে তাদের ইসলামের মৌলিক জ্ঞান শেখানো হবে। যারা এতে নিয়মিত উপস্থিত হবে, তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ কার্যক্রমও থাকতে পারে।
মসজিদে আসার পর শিশুদের একটু শব্দে কেউ যদি রেগে যায়, বিনয়ের সঙ্গে তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন ‘নবীজির মসজিদেও তো শিশুদের বিচরণ ছিল। আমরা তাদের প্রতি কোমল হই। কঠোর আচরণ পরিত্যাগ করি।’ এভাবে ধীরে ধীরে সমাজের পরিবেশ বদলে যাবে।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমরা যদি চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো, সচ্চরিত্রবান, নামাজি ও ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন হোক—তাহলে তাদের জন্য মসজিদ উন্মুক্ত করে দিতে হবে। উৎসাহ, অভয়, ভালোবাসা দিয়ে ও নানা পরিকল্পনা করে তাদের মসজিদমুখী করতে হবে। তাহলেই গড়ে উঠবে আলোকিত প্রজন্ম।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

হজরত আইয়ুব (আ.)–এর নাম শুনলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে ধৈর্যশীল এক মহামানবের কথা। ধৈর্যের মাধ্যমে যে প্রকৃতভাবে জীবনের সাফল্য অর্জন কর যায়, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক নানা কষ্টের মুখোমুখি হয়ে তিনি মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন।
২৪ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে।
৪ ঘণ্টা আগেগোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ের দরগাবাড়ি প্রাঙ্গণে কালের সাক্ষী হয়ে আজও টিকে আছে কিছু জীর্ণ স্থাপনা। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা এসব স্মৃতিচিহ্ন আজ থেকে প্রায় সাড়ে সাত শ বছর আগে জ্ঞান ও সভ্যতার এক আলোকবর্তিকা ছিল। এখানে ছিল উপমহাদেশে ইলমে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়।
৪ ঘণ্টা আগেহাবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে। ছয় ঋতুর মধ্যে অন্যতম হলো শীতকাল, যা বছরে একবার হিমশীতল পরশ নিয়ে আসে। আমরা সর্বদা এর আগমনের অপেক্ষায় থাকি। ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে শীতের তীব্রতা কম হলেও উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে নেমে আসে অপ্রত্যাশিত শৈত্যপ্রবাহ।
১৮ কোটি মানুষের এই দেশে শীতকালকে ঘিরে জমে ওঠে নানা আয়োজন, প্রয়োজন ও আমোদ-প্রমোদ। প্রভাতে গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েসের বিচিত্র স্বাদে ভরে ওঠে সবার মন। শীতকে কেন্দ্র করে শহরেও চলে নানা আয়োজন। আবার লেপ-কম্বল, সোয়েটার, শাল, মাফলারসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্রের দোকানে লেগে থাকে প্রচণ্ড ভিড়। এগুলোর চাহিদাও ব্যাপক, কারণ তীব্র শীতে উষ্ণতার প্রয়োজন সবার।
এই শীতের আমেজে যখন সাধারণ মানুষ লেপের নিচে সোয়েটার জড়িয়ে উষ্ণতা খোঁজে, ঠিক তখনই একদল মানুষ শুয়ে থাকে রাস্তার ধারে—ফুটপাতে। অনেকে বিভিন্ন অলিগলিতে জায়গা খোঁজে, আবার পাথর হৃদয়ের মানুষের তাড়নায় তাদের জায়গা হয় না সেখানেও। তারা আশ্রয় নেয় ডাস্টবিনের পাশে—দুর্গন্ধময় স্থানে। এদের জন্য শীতকাল যেন অভিশাপের এক ঋতু। গৃহহীন ও ভবঘুরেদের কাছে এই সময়টা অগ্নিকুণ্ডের চেয়ে ভয়ংকর। ছেঁড়া পাটি বা বস্তাই তাদের কোমল বিছানা! পাতলা গেঞ্জিই হয় তাদের সোয়েটার। ভাপা পিঠা বা খেজুরের রসের কথা তারা তো ভাবতেও পারে না। এভাবেই মানবেতর জীবন যাপন করে এই বঞ্চিত মানুষেরা।
দেশে পথমানবের সংখ্যা কয়েক লাখ। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও বেকারত্বের জাঁতাকলে পড়ে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। শহরে দালানকোঠায় বড় হয়ে ওঠা আমরা কি কখনো এদের কথা ভেবেছি? অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানহীন এই শিশুরা কি আমাদের ভবিষ্যৎ নয়? আধুনিকতার এই যুগেও যদি তারা বৈষম্যের শিকার হয়, তবে তাদের বেঁচে থাকার সার্থকতা কোথায়?
এই যাযাবর শিশু-কিশোররা তীব্র শীতের মাঝে বস্ত্রহীন অবস্থায় ঘুরে বেড়ায়, কুড়ানো পলিথিন বিছিয়ে বালিশ ছাড়া ঘুমায়। এই পথশিশুরাও তো চায় সবার মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে। শীতের দিনে একটু উষ্ণতা তো তাদেরও প্রাপ্য। তাই প্রতিটি সচেতন নাগরিকের উচিত তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো এবং বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানো। এটি কেবল মানবিক দায়িত্বই নয়, সামাজিক ও নৈতিক কর্তব্যও বটে। এ ক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে:
আর এই বঞ্চিতদের জন্য এসবের পাশাপাশি যদি শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তবে একদিন এই সমাজেও ফিরে আসবে পূর্ণ মানবতা। পথশিশুদের আহ্লাদে আলোকিত হয়ে উঠবে এই দেশ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি এক নতুন ইতিহাস হয়ে থাকবে।

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে। ছয় ঋতুর মধ্যে অন্যতম হলো শীতকাল, যা বছরে একবার হিমশীতল পরশ নিয়ে আসে। আমরা সর্বদা এর আগমনের অপেক্ষায় থাকি। ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে শীতের তীব্রতা কম হলেও উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে নেমে আসে অপ্রত্যাশিত শৈত্যপ্রবাহ।
১৮ কোটি মানুষের এই দেশে শীতকালকে ঘিরে জমে ওঠে নানা আয়োজন, প্রয়োজন ও আমোদ-প্রমোদ। প্রভাতে গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েসের বিচিত্র স্বাদে ভরে ওঠে সবার মন। শীতকে কেন্দ্র করে শহরেও চলে নানা আয়োজন। আবার লেপ-কম্বল, সোয়েটার, শাল, মাফলারসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্রের দোকানে লেগে থাকে প্রচণ্ড ভিড়। এগুলোর চাহিদাও ব্যাপক, কারণ তীব্র শীতে উষ্ণতার প্রয়োজন সবার।
এই শীতের আমেজে যখন সাধারণ মানুষ লেপের নিচে সোয়েটার জড়িয়ে উষ্ণতা খোঁজে, ঠিক তখনই একদল মানুষ শুয়ে থাকে রাস্তার ধারে—ফুটপাতে। অনেকে বিভিন্ন অলিগলিতে জায়গা খোঁজে, আবার পাথর হৃদয়ের মানুষের তাড়নায় তাদের জায়গা হয় না সেখানেও। তারা আশ্রয় নেয় ডাস্টবিনের পাশে—দুর্গন্ধময় স্থানে। এদের জন্য শীতকাল যেন অভিশাপের এক ঋতু। গৃহহীন ও ভবঘুরেদের কাছে এই সময়টা অগ্নিকুণ্ডের চেয়ে ভয়ংকর। ছেঁড়া পাটি বা বস্তাই তাদের কোমল বিছানা! পাতলা গেঞ্জিই হয় তাদের সোয়েটার। ভাপা পিঠা বা খেজুরের রসের কথা তারা তো ভাবতেও পারে না। এভাবেই মানবেতর জীবন যাপন করে এই বঞ্চিত মানুষেরা।
দেশে পথমানবের সংখ্যা কয়েক লাখ। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও বেকারত্বের জাঁতাকলে পড়ে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। শহরে দালানকোঠায় বড় হয়ে ওঠা আমরা কি কখনো এদের কথা ভেবেছি? অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানহীন এই শিশুরা কি আমাদের ভবিষ্যৎ নয়? আধুনিকতার এই যুগেও যদি তারা বৈষম্যের শিকার হয়, তবে তাদের বেঁচে থাকার সার্থকতা কোথায়?
এই যাযাবর শিশু-কিশোররা তীব্র শীতের মাঝে বস্ত্রহীন অবস্থায় ঘুরে বেড়ায়, কুড়ানো পলিথিন বিছিয়ে বালিশ ছাড়া ঘুমায়। এই পথশিশুরাও তো চায় সবার মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে। শীতের দিনে একটু উষ্ণতা তো তাদেরও প্রাপ্য। তাই প্রতিটি সচেতন নাগরিকের উচিত তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো এবং বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানো। এটি কেবল মানবিক দায়িত্বই নয়, সামাজিক ও নৈতিক কর্তব্যও বটে। এ ক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে:
আর এই বঞ্চিতদের জন্য এসবের পাশাপাশি যদি শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তবে একদিন এই সমাজেও ফিরে আসবে পূর্ণ মানবতা। পথশিশুদের আহ্লাদে আলোকিত হয়ে উঠবে এই দেশ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি এক নতুন ইতিহাস হয়ে থাকবে।

হজরত আইয়ুব (আ.)–এর নাম শুনলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে ধৈর্যশীল এক মহামানবের কথা। ধৈর্যের মাধ্যমে যে প্রকৃতভাবে জীবনের সাফল্য অর্জন কর যায়, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক নানা কষ্টের মুখোমুখি হয়ে তিনি মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন।
২৪ মার্চ ২০২৫
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
৪ ঘণ্টা আগেগোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ের দরগাবাড়ি প্রাঙ্গণে কালের সাক্ষী হয়ে আজও টিকে আছে কিছু জীর্ণ স্থাপনা। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা এসব স্মৃতিচিহ্ন আজ থেকে প্রায় সাড়ে সাত শ বছর আগে জ্ঞান ও সভ্যতার এক আলোকবর্তিকা ছিল। এখানে ছিল উপমহাদেশে ইলমে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়।
৪ ঘণ্টা আগেআপনার জিজ্ঞাসা
মুফতি শাব্বির আহমদ
প্রশ্ন: ফরজ গোসলের সময় নারীদের খোঁপা খুলে সম্পূর্ণ চুল ধৌত করতে হবে নাকি খোঁপার ওপরে পানি ঢেলে দিলেই হবে? এ বিষয়ে ইসলামের বিধান জানালে উপকৃত হব।
সাদিয়া মৌ, উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা অনেক নারীরই মনে আসে। পবিত্রতা অর্জনের জন্য ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম জানা একান্ত জরুরি।
ফরজ গোসলের মৌলিক বিধান
গোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো। চুল, পশমের নিচে সামান্য যে অংশটুকু ঢাকা থাকে, তাতেও পানি পৌঁছানো জরুরি।
নারীদের চুল ধোয়ার ক্ষেত্রে মূল নির্দেশনা
নারীদের চুলের ক্ষেত্রে বিধানটি নির্ভর করে চুল খোলা আছে নাকি শক্ত বেণি বা খোঁপা বাঁধা আছে তার ওপর। যদি চুল খোলা থাকে বা এমনভাবে সামান্য খোঁপা করা থাকে, যা খুলতে কোনো কষ্ট হয় না, তাহলে চুলের গোড়াসহ সম্পূর্ণ চুল ধৌত করা ফরজ। চুলের কোনো অংশ শুকনো থেকে গেলে গোসল শুদ্ধ হবে না।
তবে যদি চুলে শক্ত বেণি বা খোঁপা বাঁধা থাকে এবং তা খুলে গোসল করা কষ্টসাধ্য বা সময়ের ব্যাপার হয় (যেমন, ঘন, লম্বা চুল), তাহলে খোঁপা বা বেণি খুলে সব চুল ধৌত করা জরুরি নয়। এ ক্ষেত্রে শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট হবে।
এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে সাহাবিয়া হজরত উম্মে সালামা (রা.)-এর একটি বর্ণনা থেকে। তিনি বলেন, ‘একদিন আমি আল্লাহর রাসুলকে (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি খুব শক্তভাবে আমার চুলে বেণি বাঁধি। ফরজ গোসলের সময় কি বেণি খুলতে হবে?’ আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ‘না। তোমার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট—মাথায় তিন আজলা পানি ঢেলে দেবে এবং পুরো শরীরে পানি প্রবাহিত করবে। তাহলেই তুমি পবিত্র হয়ে যাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩০)
এই হাদিস প্রমাণ করে যে কষ্ট লাঘবের জন্য নারীদের ক্ষেত্রে বেণি বা খোঁপা না খুলে শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট।
হানাফি ফিকহের সুপ্রসিদ্ধ ফতোয়াগ্রন্থ ‘আল-বাহরুর রায়িক’-এ এই বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে—‘নারীদের খোঁপা বা বেণি খুলে চুল ভেজানো কষ্টকর হলে খোঁপা থাকা অবস্থায় চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। তবে চুলে খোঁপা না থাকলে পুরো চুল ধোয়া সর্বসম্মতিক্রমে ফরজ।’ (আল-বাহরুর রায়িক: ১ / ৫৪)
সারসংক্ষেপ হলো, যদি খোঁপা বা বেণি খোলা কষ্টকর হয়, তবে শুধু চুলের গোড়ায় ভালোভাবে পানি পৌঁছানো ফরজ। যদি খোঁপা বা বেণি খুলতে খুব বেশি সমস্যা না হয় বা তা সামান্য আলগা করে বাঁধা থাকে, তবে চুল খুলে পুরো চুল ভিজিয়ে ভালোভাবে গোসল করাই উত্তম ও মুস্তাহাব। এতে পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না এবং ইসলামের পরিচ্ছন্নতার নির্দেশনার পূর্ণ অনুসরণ হয়। আর চুল যদি খোলা থাকে, তাহলে সম্পূর্ণ চুল ধোয়া আবশ্যক।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক
প্রশ্ন: ফরজ গোসলের সময় নারীদের খোঁপা খুলে সম্পূর্ণ চুল ধৌত করতে হবে নাকি খোঁপার ওপরে পানি ঢেলে দিলেই হবে? এ বিষয়ে ইসলামের বিধান জানালে উপকৃত হব।
সাদিয়া মৌ, উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা অনেক নারীরই মনে আসে। পবিত্রতা অর্জনের জন্য ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম জানা একান্ত জরুরি।
ফরজ গোসলের মৌলিক বিধান
গোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো। চুল, পশমের নিচে সামান্য যে অংশটুকু ঢাকা থাকে, তাতেও পানি পৌঁছানো জরুরি।
নারীদের চুল ধোয়ার ক্ষেত্রে মূল নির্দেশনা
নারীদের চুলের ক্ষেত্রে বিধানটি নির্ভর করে চুল খোলা আছে নাকি শক্ত বেণি বা খোঁপা বাঁধা আছে তার ওপর। যদি চুল খোলা থাকে বা এমনভাবে সামান্য খোঁপা করা থাকে, যা খুলতে কোনো কষ্ট হয় না, তাহলে চুলের গোড়াসহ সম্পূর্ণ চুল ধৌত করা ফরজ। চুলের কোনো অংশ শুকনো থেকে গেলে গোসল শুদ্ধ হবে না।
তবে যদি চুলে শক্ত বেণি বা খোঁপা বাঁধা থাকে এবং তা খুলে গোসল করা কষ্টসাধ্য বা সময়ের ব্যাপার হয় (যেমন, ঘন, লম্বা চুল), তাহলে খোঁপা বা বেণি খুলে সব চুল ধৌত করা জরুরি নয়। এ ক্ষেত্রে শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট হবে।
এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে সাহাবিয়া হজরত উম্মে সালামা (রা.)-এর একটি বর্ণনা থেকে। তিনি বলেন, ‘একদিন আমি আল্লাহর রাসুলকে (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি খুব শক্তভাবে আমার চুলে বেণি বাঁধি। ফরজ গোসলের সময় কি বেণি খুলতে হবে?’ আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ‘না। তোমার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট—মাথায় তিন আজলা পানি ঢেলে দেবে এবং পুরো শরীরে পানি প্রবাহিত করবে। তাহলেই তুমি পবিত্র হয়ে যাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩০)
এই হাদিস প্রমাণ করে যে কষ্ট লাঘবের জন্য নারীদের ক্ষেত্রে বেণি বা খোঁপা না খুলে শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট।
হানাফি ফিকহের সুপ্রসিদ্ধ ফতোয়াগ্রন্থ ‘আল-বাহরুর রায়িক’-এ এই বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে—‘নারীদের খোঁপা বা বেণি খুলে চুল ভেজানো কষ্টকর হলে খোঁপা থাকা অবস্থায় চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। তবে চুলে খোঁপা না থাকলে পুরো চুল ধোয়া সর্বসম্মতিক্রমে ফরজ।’ (আল-বাহরুর রায়িক: ১ / ৫৪)
সারসংক্ষেপ হলো, যদি খোঁপা বা বেণি খোলা কষ্টকর হয়, তবে শুধু চুলের গোড়ায় ভালোভাবে পানি পৌঁছানো ফরজ। যদি খোঁপা বা বেণি খুলতে খুব বেশি সমস্যা না হয় বা তা সামান্য আলগা করে বাঁধা থাকে, তবে চুল খুলে পুরো চুল ভিজিয়ে ভালোভাবে গোসল করাই উত্তম ও মুস্তাহাব। এতে পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না এবং ইসলামের পরিচ্ছন্নতার নির্দেশনার পূর্ণ অনুসরণ হয়। আর চুল যদি খোলা থাকে, তাহলে সম্পূর্ণ চুল ধোয়া আবশ্যক।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

হজরত আইয়ুব (আ.)–এর নাম শুনলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে ধৈর্যশীল এক মহামানবের কথা। ধৈর্যের মাধ্যমে যে প্রকৃতভাবে জীবনের সাফল্য অর্জন কর যায়, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক নানা কষ্টের মুখোমুখি হয়ে তিনি মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন।
২৪ মার্চ ২০২৫
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ের দরগাবাড়ি প্রাঙ্গণে কালের সাক্ষী হয়ে আজও টিকে আছে কিছু জীর্ণ স্থাপনা। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা এসব স্মৃতিচিহ্ন আজ থেকে প্রায় সাড়ে সাত শ বছর আগে জ্ঞান ও সভ্যতার এক আলোকবর্তিকা ছিল। এখানে ছিল উপমহাদেশে ইলমে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়।
৪ ঘণ্টা আগেতাসনিফ আবীদ

বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ের দরগাবাড়ি প্রাঙ্গণে কালের সাক্ষী হয়ে আজও টিকে আছে কিছু জীর্ণ স্থাপনা। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা এসব স্মৃতিচিহ্ন আজ থেকে প্রায় সাড়ে সাত শ বছর আগে জ্ঞান ও সভ্যতার এক আলোকবর্তিকা ছিল। এখানে ছিল উপমহাদেশে ইলমে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মহান মনীষী ও হাদিসবিশারদ শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা (রহ.)।
বুখারা থেকে দিল্লি হয়ে বাংলায়
শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের গোড়ার দিকে বর্তমান উজবেকিস্তানের ঐতিহাসিক বুখারা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চশিক্ষা লাভ করেন খোরাসানে। শুধু হাদিস ও ফিকাহশাস্ত্রেই নয়—রসায়ন, প্রকৃতিবিজ্ঞান, ভেষজশাস্ত্র, গণিত, ভূগোল ও আইন শাস্ত্রেও বিশেষ পারদর্শী ছিলেন তিনি। খুব কম বয়সেই তিনি তীব্র জ্ঞানাকাঙ্ক্ষী ও ধর্মপ্রাণ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। আনুমানিক ১২৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জ্ঞানগত অগ্রসূরি ইমাম ইসমাইল বুখারি (রহ.)-এর মতো বুখারার মানুষের অসহযোগিতার কারণে দিল্লিতে হিজরত করেন।
দিল্লিতে দুনিয়াবিমুখ শায়খ আবু তাওয়ামা একটি ছোট মসজিদের পাশে খুপরি ঘরে বাস করতেন। আর জ্ঞানপিপাসুদের মাঝে আধ্যাত্মিক জ্ঞান বিতরণ করতেন। তিনি ছিলেন নির্ভীক, কাউকে পরোয়া করতেন না। শাসকদের ভুল ধরিয়ে দিতেন এবং আমির-নবাবদের ইচ্ছাবিলাসের কঠোর সমালোচনা করে সুপথ দেখাতেন। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি উপমহাদেশের প্রভাবশালী আলেম হয়ে ওঠেন। তাঁর প্রভাব এতটাই শক্তিশালী ছিল, সুলতান গিয়াসুদ্দিন বলবন তাঁর এই সর্বব্যাপী আধ্যাত্মিক প্রতাপকে সাম্রাজ্যের জন্য ঝুঁকি মনে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
সুলতান বলবন কৌশলগত নির্দেশে শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামাকে দিল্লি ত্যাগের কথা বলেন। দুনিয়াবিমুখ এই বুজুর্গ তখন দিল্লি ত্যাগ করেন। জ্ঞানপিপাসু শিষ্য ও ভক্তদের নিয়ে শুরু করেন নিরুদ্দেশ যাত্রা।
উপমহাদেশে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়
১২৭০ থেকে ১২৭৭ খ্রিষ্টাব্দের কোনো একসময়ে শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা তদানীন্তন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁয়ে এসে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন। সোনারগাঁ আসার পথে বিহারের মানের শহরে তাঁর সঙ্গে ১৫ বছর বয়সী শরফুদ্দিন ইয়াহইয়া মানেরির পরিচয় হয়। তিনি তাঁর ইলমের প্রতি আগ্রহ ও মেধার প্রখরতা দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। এরপর প্রিয় শিষ্যকে দিয়েই তিনি ভারতভূমিতে ইলমে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিশ্বকোষ ও ইতিহাসবিদদের মতে, শায়খ আবু তাওয়ামার প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানে উপমহাদেশের প্রথম ইলমে হাদিসের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদান শুরু হয়। তিনি এখানে বিশেষভাবে সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম ও মুসনাদে আবু ইয়ালার পাঠ দান করতেন। এ ছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তাসাওফ, সমাজতত্ত্ব, ধর্মতত্ত্ব, আইনশাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র, ইতিহাস, জ্যোতির্বিজ্ঞান, নৌবিদ্যা, ভেষজশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, ভূগোলশাস্ত্র, রসায়নশাস্ত্র, পদার্থবিজ্ঞান, দর্শনশাস্ত্রসহ ইলমে দ্বীনের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি বিষয়ের ওপর শিক্ষা দেওয়া হতো।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ছিল সমৃদ্ধ কুতুবখানা বা পাঠাগার। জ্ঞান আহরণের জন্য সুদূর বুখারা, খোরাসান, সিরিয়া, ইরাক, ইরান, ইয়েমেন ও দাক্ষিণাত্য থেকে শিক্ষার্থীরা ছুটে আসত। ধারণা করা হয়, এই বিদ্যাপীঠের ছাত্রসংখ্যা একসময় ১০ হাজারে পৌঁছেছিল। সময়ের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটি হয়ে ওঠে বাংলার ধর্মজীবনের শুদ্ধি, সাংস্কৃতিক সচেতনতা, সমাজ-রাজনীতির শোধনাগারের প্রধান কেন্দ্র।
জ্ঞানের উজ্জ্বল নক্ষত্রের শেষ জীবন
শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা সোনারগাঁয়ে দীর্ঘ ২৩ বছর ইলমের খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। হাদিস চর্চার পাশাপাশি তিনি ছিলেন তাসাউফের নীরব সাধক। তিনি সোহরাওয়ার্দী তরিকার পীর ছিলেন। তাঁর ছিল আত্মশুদ্ধির জন্য একটি খানকা। তিনি যে আন্ধার কোঠায় (ভূগর্ভস্থ একটি ছোট কক্ষ) ধ্যান করতেন, তা এখনো বিদ্যমান। তিনি তাসাউফ নিয়ে ‘মানজিলে মাকামাত’ এবং আইনশাস্ত্র নিয়ে ফারসি ভাষায় ‘নামায়ে হক’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন।
১৩০০ খ্রিষ্টাব্দে শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা নির্জনে ইবাদতের জন্য লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা আন্ধার কোঠায় ধ্যানরত অবস্থায় ইহলোকের সফর শেষ করেন। রওনা হন অনন্ত পথের যাত্রায়। তাঁকে খানকার পাশেই সমাহিত করা হয়। শায়খ আবু তাওয়ামার ইন্তেকালের পর তাঁর সুযোগ্য শিষ্য ও জামাতা শায়খ শরফুদ্দিন ইয়াহইয়া মানেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যাপীঠ উপমহাদেশের ইসলামি শিক্ষার এক অমূল্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কিন্তু অযত্ন-অবহেলা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা এখন প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এই গৌরবময় ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত করতে স্থাপনাগুলোর প্রতি যত্নের হাত বাড়িয়ে দেওয়া সময়ের দাবি।

বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ের দরগাবাড়ি প্রাঙ্গণে কালের সাক্ষী হয়ে আজও টিকে আছে কিছু জীর্ণ স্থাপনা। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা এসব স্মৃতিচিহ্ন আজ থেকে প্রায় সাড়ে সাত শ বছর আগে জ্ঞান ও সভ্যতার এক আলোকবর্তিকা ছিল। এখানে ছিল উপমহাদেশে ইলমে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মহান মনীষী ও হাদিসবিশারদ শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা (রহ.)।
বুখারা থেকে দিল্লি হয়ে বাংলায়
শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের গোড়ার দিকে বর্তমান উজবেকিস্তানের ঐতিহাসিক বুখারা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চশিক্ষা লাভ করেন খোরাসানে। শুধু হাদিস ও ফিকাহশাস্ত্রেই নয়—রসায়ন, প্রকৃতিবিজ্ঞান, ভেষজশাস্ত্র, গণিত, ভূগোল ও আইন শাস্ত্রেও বিশেষ পারদর্শী ছিলেন তিনি। খুব কম বয়সেই তিনি তীব্র জ্ঞানাকাঙ্ক্ষী ও ধর্মপ্রাণ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। আনুমানিক ১২৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জ্ঞানগত অগ্রসূরি ইমাম ইসমাইল বুখারি (রহ.)-এর মতো বুখারার মানুষের অসহযোগিতার কারণে দিল্লিতে হিজরত করেন।
দিল্লিতে দুনিয়াবিমুখ শায়খ আবু তাওয়ামা একটি ছোট মসজিদের পাশে খুপরি ঘরে বাস করতেন। আর জ্ঞানপিপাসুদের মাঝে আধ্যাত্মিক জ্ঞান বিতরণ করতেন। তিনি ছিলেন নির্ভীক, কাউকে পরোয়া করতেন না। শাসকদের ভুল ধরিয়ে দিতেন এবং আমির-নবাবদের ইচ্ছাবিলাসের কঠোর সমালোচনা করে সুপথ দেখাতেন। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি উপমহাদেশের প্রভাবশালী আলেম হয়ে ওঠেন। তাঁর প্রভাব এতটাই শক্তিশালী ছিল, সুলতান গিয়াসুদ্দিন বলবন তাঁর এই সর্বব্যাপী আধ্যাত্মিক প্রতাপকে সাম্রাজ্যের জন্য ঝুঁকি মনে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
সুলতান বলবন কৌশলগত নির্দেশে শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামাকে দিল্লি ত্যাগের কথা বলেন। দুনিয়াবিমুখ এই বুজুর্গ তখন দিল্লি ত্যাগ করেন। জ্ঞানপিপাসু শিষ্য ও ভক্তদের নিয়ে শুরু করেন নিরুদ্দেশ যাত্রা।
উপমহাদেশে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়
১২৭০ থেকে ১২৭৭ খ্রিষ্টাব্দের কোনো একসময়ে শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা তদানীন্তন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁয়ে এসে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন। সোনারগাঁ আসার পথে বিহারের মানের শহরে তাঁর সঙ্গে ১৫ বছর বয়সী শরফুদ্দিন ইয়াহইয়া মানেরির পরিচয় হয়। তিনি তাঁর ইলমের প্রতি আগ্রহ ও মেধার প্রখরতা দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। এরপর প্রিয় শিষ্যকে দিয়েই তিনি ভারতভূমিতে ইলমে হাদিস চর্চার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিশ্বকোষ ও ইতিহাসবিদদের মতে, শায়খ আবু তাওয়ামার প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানে উপমহাদেশের প্রথম ইলমে হাদিসের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদান শুরু হয়। তিনি এখানে বিশেষভাবে সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম ও মুসনাদে আবু ইয়ালার পাঠ দান করতেন। এ ছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তাসাওফ, সমাজতত্ত্ব, ধর্মতত্ত্ব, আইনশাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র, ইতিহাস, জ্যোতির্বিজ্ঞান, নৌবিদ্যা, ভেষজশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, ভূগোলশাস্ত্র, রসায়নশাস্ত্র, পদার্থবিজ্ঞান, দর্শনশাস্ত্রসহ ইলমে দ্বীনের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি বিষয়ের ওপর শিক্ষা দেওয়া হতো।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ছিল সমৃদ্ধ কুতুবখানা বা পাঠাগার। জ্ঞান আহরণের জন্য সুদূর বুখারা, খোরাসান, সিরিয়া, ইরাক, ইরান, ইয়েমেন ও দাক্ষিণাত্য থেকে শিক্ষার্থীরা ছুটে আসত। ধারণা করা হয়, এই বিদ্যাপীঠের ছাত্রসংখ্যা একসময় ১০ হাজারে পৌঁছেছিল। সময়ের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটি হয়ে ওঠে বাংলার ধর্মজীবনের শুদ্ধি, সাংস্কৃতিক সচেতনতা, সমাজ-রাজনীতির শোধনাগারের প্রধান কেন্দ্র।
জ্ঞানের উজ্জ্বল নক্ষত্রের শেষ জীবন
শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা সোনারগাঁয়ে দীর্ঘ ২৩ বছর ইলমের খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। হাদিস চর্চার পাশাপাশি তিনি ছিলেন তাসাউফের নীরব সাধক। তিনি সোহরাওয়ার্দী তরিকার পীর ছিলেন। তাঁর ছিল আত্মশুদ্ধির জন্য একটি খানকা। তিনি যে আন্ধার কোঠায় (ভূগর্ভস্থ একটি ছোট কক্ষ) ধ্যান করতেন, তা এখনো বিদ্যমান। তিনি তাসাউফ নিয়ে ‘মানজিলে মাকামাত’ এবং আইনশাস্ত্র নিয়ে ফারসি ভাষায় ‘নামায়ে হক’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন।
১৩০০ খ্রিষ্টাব্দে শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা নির্জনে ইবাদতের জন্য লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা আন্ধার কোঠায় ধ্যানরত অবস্থায় ইহলোকের সফর শেষ করেন। রওনা হন অনন্ত পথের যাত্রায়। তাঁকে খানকার পাশেই সমাহিত করা হয়। শায়খ আবু তাওয়ামার ইন্তেকালের পর তাঁর সুযোগ্য শিষ্য ও জামাতা শায়খ শরফুদ্দিন ইয়াহইয়া মানেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যাপীঠ উপমহাদেশের ইসলামি শিক্ষার এক অমূল্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কিন্তু অযত্ন-অবহেলা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা এখন প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এই গৌরবময় ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত করতে স্থাপনাগুলোর প্রতি যত্নের হাত বাড়িয়ে দেওয়া সময়ের দাবি।

হজরত আইয়ুব (আ.)–এর নাম শুনলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে ধৈর্যশীল এক মহামানবের কথা। ধৈর্যের মাধ্যমে যে প্রকৃতভাবে জীবনের সাফল্য অর্জন কর যায়, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক নানা কষ্টের মুখোমুখি হয়ে তিনি মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন।
২৪ মার্চ ২০২৫
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে।
৪ ঘণ্টা আগেগোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো।
৪ ঘণ্টা আগে