Ajker Patrika

অভাব-অনটনে মহানবী (সা.)-এর শেখানো ৭ আমল

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯: ৪৬
অভাব-অনটনে মহানবী (সা.)-এর শেখানো ৭ আমল

বিপদ-আপদ, ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ ও অভাব-অনটন মানুষের জন্য মহান আল্লাহর পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে ধৈর্য ধরার পাশাপাশি বিপদ কাটিয়ে ওঠার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফসলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা: ১৫৫) মহানবী (সা.)-এর যুগে অভাব-অনটন ও খাদ্যসংকটের সময়ে তিনি সাহাবিদের অনেক নির্দেশনা দিয়েছেন। এখানে কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো—

১. অপচয়-অপব্যয় রোধ
ইসলাম অপচয়-অপব্যয় নিষিদ্ধ করেছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বনের কথা বলেছে। আর অভাব-অনটনের সময় সংযত ব্যয়ের নির্দেশ দিয়েছেন মহানবী (সা.)। যেমন জাবালা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা মদিনায় কিছুসংখ্যক ইরাকি লোকের সঙ্গে ছিলাম। একবার আমরা দুর্ভিক্ষের কবলে পতিত হই, তখন ইবনে জুবাইর (রা.) আমাদের খেজুর খেতে দিতেন। ইবনে ওমর (রা.) আমাদের কাছ দিয়ে যেতেন এবং বলতেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কাউকে তার ভাইয়ের অনুমতি ছাড়া একসঙ্গে দুটো করে খেজুর খেতে নিষেধ করেছেন।’ (বুখারি: ২৪৫৫)

২. গুনাহ ছেড়ে দেওয়ার তাগিদ
হাদিসের ভাষ্যমতে, বিভিন্ন কারণে খাদ্যসংকট ও দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয়। সুদ, ব্যভিচার, ব্যবসায় প্রতারণা ইত্যাদি সেসব কারণের মধ্যে উল্লেখেযাগ্য। মোট কথা, পাপাচারের শাস্তি হিসেবে মহান আল্লাহ মানুষের ওপর বিপদ দেন। তাই অভাবের সময় মুসলমানদের অধিক সতর্ক হতে হবে এবং পাপাচার থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। কারণ মহানবী (সা.) বলেন, ‘সৎকর্ম ছাড়া অন্য কিছু আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারে না এবং দোয়া ছাড়া অন্য কিছুতে ভাগ্য পরিবর্তন হয় না। মানুষ তার পাপের কারণে প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।’ (ইবনে মাজাহ: ৪০২২) 

৩. অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো
অভাবের সময় সামর্থ্যবানদের উচিত অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো এবং সবাই মিলেমিশে উত্তমভাবে বেঁচে থাকা। কোনো অভাবী মানুষ যেন ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট না পায়, তাই ভাগাভাগি করে খাবার খাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন মহানবী (সা.)। যেমন হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াকিদ (রা.) বলেন, তিন দিনের বেশি কোরবানির গোশত খেতে রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আবু বকর (রহ.) বলেন, আমি বিষয়টি আমরাহ (রা.)-এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘ইবনে ওয়াকিদ সত্যই বলেছেন। আমি আয়েশা (রা.)কে বলতে শুনেছি যে রাসুল (সা.)-এর যুগে ঈদুল আজহার সময় বেদুইনদের কিছু পরিবার শহরে আসে, তখন তিনি বলেন, তোমরা তিন দিনের পরিমাণ জমা রেখে বাকি গোশতগুলো সদকা করে দাও। পরবর্তী সময়ে লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), মানুষ তো কোরবানির পশুর চামড়া দিয়ে পাত্র প্রস্তুত করছে এবং তার মধ্যে চর্বি গলাচ্ছে। রাসুল (সা.) বলেন, তাতে কী হয়েছে? তারা বলল, আপনিই তো তিন দিনের বেশি কোরবানির গোশত খাওয়া থেকে বারণ করেছেন। তিনি বলেন, আমি তো বেদুইনদের কারণে এ কথা বলেছিলাম। এরপর এখন তোমরা খেতে পারো, জমা করে রাখতে পারো এবং সদকা করতে পারো। (মুসলিম, হাদিস: ৪৯৯৭) 

৪. আল্লাহর ওপর ভরসা করা
আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস, তাঁর শাস্তির ভয় এবং বিপদে ধৈর্য ধরাই ইসলামের শিক্ষা। এসব মানুষের রিজিক প্রশস্ত করে দেয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ অবশ্যই তার উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেন। নিশ্চয়ই তিনি প্রত্যেক জিনিসের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।’ (সুরা তালাক: ২-৩)

হাদিসে এসেছে, মহান আল্লাহ এই উম্মতকে দুর্ভিক্ষ দিয়ে সমূলে ধ্বংস করবেন না। কারণ রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে তাঁর উম্মতের জন্য দোয়া করেছেন। (মুসলিম: ৭১৫০) তাই তাঁর প্রতি ভরসা করে, হতাশ না হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। 

৫. দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচার আকুতি
অভাব-অনটন ও দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম আমল হলো দোয়া। মহানবী (সা.) দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করেছিলেন। আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, নবীজি (সা.)-এর যুগে (অতিবৃষ্টির কারণে) মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হলে একদিন জুমার দিন তিনি মিম্বারে দাঁড়িয়ে লোকদের সামনে জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। এক বেদুইন দাঁড়িয়ে বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, ধন-সম্পদ বরবাদ হয়ে গেল, সন্তানসন্ততি ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ছে।...’ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, আমাদের চারপাশে, আমাদের ওপর নয়।’ বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাসুল (সা.) হাত দিয়ে যেদিকেই ইশারা করেছেন, সঙ্গে সঙ্গে সেদিকেই ফরসা হয়ে গেছে। এমনকি আমি মদিনাকে আয়নার মতো পরিষ্কার দেখতে পেলাম। এদিকে ‘কানাত’ নামক প্রান্তরে এক মাস ধরে পানির ধারা বয়ে গেল। যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউই এসেছে, সে-ই অতিবৃষ্টির সংবাদ দিয়েছে। (মুসলিম: ১৯৬৪) 

৬. ক্ষুধা ও দারিদ্র্য থেকে বাঁচার দোয়া
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, অভাব ও দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) এভাবে দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধা থেকে আশ্রয় চাই, কারণ তা নিকৃষ্ট শয্যাসঙ্গী। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই খিয়ানত করা থেকে। কেননা, তা খুবই নিকৃষ্ট বন্ধু।’ (আবু দাউদ: ১৫৪৭)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাইছি দারিদ্র্য থেকে, আপনার কম দয়া থেকে ও অসম্মান থেকে। আমি আপনার কাছে আরও আশ্রয় চাইছি জুলুম করা থেকে অথবা অত্যাচারিত হওয়া থেকে।’ আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সময় এই দোয়া করতেন। (বুখারি: ১৫৪৪) 
অন্য হাদিসে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়াকে অভাব দূর হওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে যাবতীয় বিপদাপদ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন এবং তাকে অকল্পনীয় স্থান থেকে রিজিক দান করবেন।’ (আবু দাউদ: ১৫১৮)

৭. কৃষিকাজে মনোনিবেশ করা
পাশাপাশি অভাব রোধে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করাও মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা। তিনি সাহাবিদের নিজের হাতে কামাই করে খেতে উৎসাহ দিয়েছেন। রোজগার করাকে তিনি মুমিনের জীবনের অন্যতম ফরজ কাজ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। জুমার নামাজের পর আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধানে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার শিক্ষা দিয়েছেন। এ কারণেই দেখা যায়, মহানবী (সা.)-এর যুগে তিনি সাহাবিদের কৃষিকাজে উৎসাহ জুগিয়েছেন। ফলে খলিফা ওমরের আমলে কঠিন দুর্ভিক্ষের সময়ও মুসলমানগণ তেমন ক্ষতির মুখে পড়েননি। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) সেই দুর্ভিক্ষের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘বছরটি ছিল ভীষণ দুর্বিপাক ও কষ্টের। ওমর (রা.) গ্রামাঞ্চল থেকে উট, খাদ্যশস্য, তেল ইত্যাদি সাহায্যসামগ্রী নিয়ে আসেন। গ্রামাঞ্চলের একখণ্ড জমিও অনাবাদি পড়ে থাকতে দেননি এবং তাঁর চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়। …’ (আদাবুল মুফরাদ: ৫৬৪)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যেসব দোয়ায় রয়েছে পরকালীন মুক্তি ও অসামান্য সওয়াব

ইসলাম ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পরকালীন সফলতার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা জরুরি। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল। দ্বীন নিয়ে যে কড়াকড়ি করে, দ্বীন তার ওপর বিজয়ী হয় (অর্থাৎ সে ক্লান্ত হয়ে আমল ছেড়ে দেয়)। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো এবং তার নিকটবর্তী থাকো। আশান্বিত থাকো এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের শেষাংশে (ইবাদতের মাধ্যমে) আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮)

রাসুলুল্লাহ (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় মহান রবের কাছে কল্যাণ কামনার বিশেষ কিছু দোয়া শিখিয়েছেন। এমন একটি জিকির আছে, যা নিয়মিত করলে কিয়ামতের দিন সওয়াবের দিক থেকে কেউ তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে জেগে উঠে ১০০ বার বলবে—‘সুবহানাল্লাহিল আজিম, ওয়া বিহামদিহি’ এবং সন্ধ্যায়ও অনুরূপ বলে, তাহলে সৃষ্টিজগতের কেউই (কিয়ামতের দিন) তার মতো মর্যাদা ও সওয়াব অর্জনে সক্ষম হবে না।’ (সুনান আবু দাউদ: ৫০৯১)

দৈন্য, অলসতা ও কবরের আজাব থেকে সুরক্ষা পেতে রাসুল (সা.) একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বুখলি, ওয়াল কাসালি, ওয়া-আরদালিল উমুরি, ওয়া-আজাবিল কাবরি, ওয়া-ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কৃপণতা, অলসতা, বয়সের নিকৃষ্টতম সময় (বার্ধক্যের দৈন্য), কবরের আজাব এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৬২৯)

প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে সকাল ও সন্ধ্যায় এই ছোট ছোট আমল আমাদের আত্মিক প্রশান্তি দেওয়ার পাশাপাশি পরকালে বিশাল সাফল্যের পথ সুগম করতে পারে। আল্লাহ আমাদের নবীজি (সা.)-এর শেখানো এই দোয়া ও জিকিরগুলোর ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৪ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৬ মিনিট
ফজর০৫: ১৭ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
জোহর১১: ৫৯ মিনিট০৩: ৪২ মিনিট
আসর০৩: ৪৩ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট
মাগরিব০৫: ২০ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যে তিন শ্রেণির নামাজির জন্য রয়েছে দুর্ভোগ

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নামাজ বা সালাত অন্যতম প্রধান ফরজ ইবাদত। পবিত্র কোরআনের ৮২টি স্থানে নামাজের কথা উল্লেখ করে এর অপরিসীম গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমরা সালাত (নামাজ) পূর্ণ করবে, তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে, তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’ (সুরা নিসা: ১০৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসেও বারবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ওয়াক্তমতো নামাজ আদায়ের ওপর। এমনকি আল্লাহর কাছেও এটি অত্যন্ত প্রিয় একটি আমল। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, ‘যথাসময়ে সালাত আদায় করা।’ আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার।’ আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘এরপর কোনটি?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর পথে লড়াই করা’। (সহিহ্ বুখারি: ৫০২)

নামাজ পড়া সত্ত্বেও তিন শ্রেণির নামাজির জন্য পরকালে রয়েছে ভয়াবহ শাস্তির হুঁশিয়ারি। এই তিন শ্রেণি হলো: ১. যারা লোক দেখানোর জন্য নামাজ আদায় করে। ২. যারা নামাজে চরম অমনোযোগী। ৩. যারা নামাজে চুরি করে, অর্থাৎ রুকু-সিজদা ঠিকমতো আদায় করে না।

পবিত্র কোরআনে প্রথম দুই শ্রেণির কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন, ‘অতএব সেই নামাজ আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা নিজেদের নামাজে অমনোযোগী এবং যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে।’ (সুরা মাউন: ৪-৬)

অন্যদিকে, তৃতীয় শ্রেণির নামাজি তথা নামাজ চোরদের সম্পর্কে আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘চোরদের মধ্যে সবচেয়ে বড় চোর হলো ওই ব্যক্তি, যে নামাজে চুরি করে।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, নামাজে চুরি কীভাবে হয়?’ জবাবে নবীজি (সা.) বললেন, ‘নামাজে চুরি হলো রুকু-সিজদা পূর্ণ না করা (ঠিকমতো আদায় না করা)।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ্: ৮৮৫)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৩ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৬ মিনিট
ফজর০৫: ১৭ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
জোহর১১: ৫৯ মিনিট০৩: ৪১ মিনিট
আসর০৩: ৪২ মিনিট০৫: ১৭ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত