Ajker Patrika

হাদিসের গল্প: মৃত ব্যক্তির জীবিত হওয়ার বিস্ময়কর ঘটনা

আমজাদ ইউনুস
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৫, ২০: ৫৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন যুগে কয়েকজন মৃত লোকতে জীবিত করেছিলেন। নবী মুসা (আ.)-এর যুগে বনি ইসরাইলের নিহত ব্যক্তিকে জীবিত করেছিলেন। জীবিত হয়ে সে তার হত্যাকারীর পরিচয় প্রকাশ করে। কোরআনে সুরা বাকারায় ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে।

মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে, তারপর সে সম্পর্কে পরস্পরকে দোষারোপ করতে লাগলে, অথচ আল্লাহ তা গোপন করছিলেন যা তোমরা গোপন করছিলে। এরপর আমি বললাম, তোমরা এ (গরুর) অংশ দিয়ে তাকে আঘাত করো। এভাবে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদের তাঁর নিদর্শন দেখিয়ে থাকেন, যাতে তোমরা অনুধাবন করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৭২-৭৩)

উজাইর (আ.) ছিলেন এক পুণ্যবান ব্যক্তি। যিনি ধ্বংসপ্রাপ্ত জনপদে কিছু হাড় দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন যে কীভাবে আল্লাহ তা পুনরুজ্জীবিত করবেন। তখন আল্লাহ তাঁকে ও তাঁর গাধাকে একশ বছর মৃত্যুর ঘুমে রেখে দেন এবং পরে পুনরুজ্জীবিত করেন, যাতে তিনি দেখেন কীভাবে আল্লাহ মৃত হাড়গুলো পুনরায় গঠন করেন এবং মাংসে রূপ দেন।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে—অথবা সেই ব্যক্তির মতো, যে কোনো জনপদ অতিক্রম করছিল, যা তার ছাদের ওপর বিধ্বস্ত ছিল। সে বলল, আল্লাহ একে কীভাবে জীবিত করবেন মরে যাওয়ার পর? এরপর আল্লাহ তাকে একশ বছর মৃত রাখলেন। এরপর তাকে পুনরুজ্জীবিত করলেন। বললেন, ‘তুমি কতকাল অবস্থান করেছ? সে বলল, ‘আমি একদিন অথবা দিনের কিছু সময় অবস্থান করেছি’। তিনি বললেন, ‘বরং তুমি একশ বছর অবস্থান করেছ। সুতরাং তুমি তোমার খাবার ও পানীয়ের দিকে তাকাও, সেটি পরিবর্তিত হয়নি এবং তুমি তাকাও তোমরা গাধার দিকে, আর যাতে আমি তোমাকে মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত বানাতে পারি এবং তুমি তাকাও হাড়গুলোর দিকে, কীভাবে আমি তা সংযুক্ত করি, এরপর তাকে আবৃত করি গোশ্ত দ্বারা। পরে যখন তার কাছে স্পষ্ট হলো, তখন সে বলল, ‘আমি জানি, নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান’। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৬৯)

বনি ইসরাইলের যুগে এমন আরেকটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। বনি ইসরাইলের একটি দলের মৃত্যুর প্রকৃতি ও তার কঠোরতা সম্পর্কে জানার ইচ্ছে হয়েছিল। এ জন্য তারা আল্লাহর কাছে দোয়া করে, যাতে তিনি তাদের জন্য কোনো মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করেন। এতে তারা তার কাছ থেকে মৃত্যুর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পারে। আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করেন এবং এক ব্যক্তিকে জীবিত করেন। রাসুল (সা.) সাহাবিদের এ বিস্ময়কর ঘটনাটি শুনিয়েছিলেন। নিচে হাদিসের আলোকে ঘটনাটি বর্ণনা করা হলো—

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, বনি ইসরাইলের একটি দল তাদের একটি কবরস্থানে গিয়ে বলল, ‘চলো, আমরা দুই রাকাত নামাজ আদায় করি এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যেন তিনি আমাদের জন্য কোনো মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করেন, যাতে আমরা তার কাছে মৃত্যুর অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারি।’ তারা তাই করল। এরপর হঠাৎ এক ব্যক্তি তার মাথা কবর থেকে বের করল। সে ছিল গাঢ় বর্ণের, কপালে ছিল সিজদার চিহ্ন। সে বলল, ‘হে লোকসকল, তোমরা আমার কাছে কী চাও? আমি একশ বছর আগে মারা গিয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত মৃত্যুর তীব্রতা আমার থেকে দূর হয়নি। তোমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি আমাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেন।’ (মুসান্নাফে আবি শায়বা ৯ / ৬২)

হাদিসের শিক্ষা

মৃত পুনর্জীবিত করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর: এসব ঘটনায় দেখা যায়, আল্লাহ চাইলেই মৃতদের পুনরুজ্জীবিত করতে পারেন। শেষোক্ত ঘটনায় তিনি একজন ব্যক্তিকে জীবিত করেছিলেন, যাতে সে মৃত্যুর অবস্থা সম্পর্কে জানাতে পারে।

নেক বান্দাদের প্রতি আল্লাহর সম্মান: শেষোক্ত ঘটনায় একজন সৎ ব্যক্তি পুনরুজ্জীবিত হয়েছিলেন, যার কপালে সিজদার চিহ্ন ছিল। এটি প্রমাণ করে যে আল্লাহ তাঁর নেক বান্দাদের সম্মানিত করেন এবং তাদের মাধ্যমে মানুষকে উপদেশ দেন।

নেককার বান্দাদের দোয়ার গ্রহণযোগ্যতা: যদিও মৃতদের জীবিত করা মানুষের জন্য অস্বাভাবিক ঘটনা, তবু আল্লাহ নেককার মানুষের দোয়া কবুল করে এমন কিছু ঘটাতে পারেন, যা সাধারণ মানুষের বোধ-বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতার বাইরে।

ভালো কাজের আগে নামাজ আদায়: কোনো ভালো কাজ করার আগে নামাজ আদায় করা উত্তম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জানাজায় নারীদের অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলাম যা বলে

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)

আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।

জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।

এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য যে সুসংবাদ দিয়েছেন নবীজি (সা.)

আবরার নাঈম 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)

জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাশ দেখে যে দোয়া পড়বেন

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)

কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’

এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)

পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।

হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)

হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রজব মাসে যে দোয়া পড়তেন নবীজি (সা.)

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাস শুরু হলে একটি বিশেষ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন (অর্থাৎ রমজান পাওয়ার তৌফিক দান করুন)।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)

এই মাসের আমল সম্পর্কে কিছু জরুরি দিক হলো: ১. ফরজ ইবাদতে যত্নবান হওয়া: যেকোনো ফজিলতপূর্ণ সময়ের প্রথম শর্ত হলো ফরজ ইবাদতগুলো নিখুঁতভাবে পালন করা। বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। ২. নফল ইবাদত বৃদ্ধি: এই মাসে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং জিকির-আজকারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ৩. গুনাহ বর্জন: যেহেতু এটি সম্মানিত মাস, তাই এই সময়ে পাপাচার থেকে দূরে থাকার গুরুত্ব অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ৪. বেশি বেশি নফল রোজা: যদিও রজব মাসের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রোজার বাধ্যবাধকতা নেই, তবে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং আইয়ামে বিজের (চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে রমজানের জন্য প্রস্তুত করা যায়।

রজব মাস আমাদের আত্মশুদ্ধি এবং রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে বরকত প্রার্থনা করি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত