Ajker Patrika

ইরানে হামলা: বিভক্ত হয়ে পড়েছে ট্রাম্পের ‘ম্যাগা’ শিবির

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, ১২: ৩৮
আমেরিকাকে আবার মহান করার অঙ্গীকার নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
আমেরিকাকে আবার মহান করার অঙ্গীকার নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আকস্মিক সামরিক হামলার পর তার ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ (এমএজিএ) শিবিরের রক্ষণশীল গণমাধ্যম ও প্রভাবশালী মহলে বিভেদ দেখা দিয়েছে। অনেকেই পূর্বে এই ধরনের সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও, এখন কেউ কেউ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আবার কেউ কেউ তীব্র সমালোচনা করছেন এবং বিস্তারিত ব্যাখ্যার দাবি জানাচ্ছেন।

গত শনিবারের হামলার আগে থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা রিপাবলিকান পার্টির মধ্যে ফাটল তৈরি করেছিল। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী থাকাকালীন ট্রাম্প নিজেই মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়ার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। তাঁর ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সংগতি রেখে ‘ম্যাগাপন্থী’ আন্দোলনের অনেক সদস্যই ছিলেন আন্তর্জাতিক সংঘাত থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পক্ষে। তবে সম্প্রতি, রিপাবলিকান পার্টির কট্টরপন্থীরা যারা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বন্ধে ইসরায়েলকে জোরালো মার্কিন সমর্থন দেওয়ার পক্ষে ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে এই বিচ্ছিন্ন থাকার পক্ষের কণ্ঠস্বরগুলোর মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

অবশ্য, ট্রাম্পের গত শনিবার রাতের ঘোষণার পর, কিছু বিশিষ্ট ম্যাগাপন্থী প্রেসিডেন্টের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

এর মধ্যে ট্রাম্পপন্থী গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর প্রতিষ্ঠাতা চার্লি কার্ক এক্স-এ লিখেছেন, ‘ইরান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামনে কোনো বিকল্প রাখেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এক দশক ধরে তিনি দৃঢ় ছিলেন যে ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না। ইরান বোমা তৈরির জন্য কূটনীতি পরিহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি একটি সুনির্দিষ্ট আক্রমণ, নিখুঁতভাবে পরিচালিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিচক্ষণতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করেছেন।’

ফ্লোরিডার সাবেক কংগ্রেস সদস্য ম্যাট গেটজ, যিনি ট্রাম্পের প্রথম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত হয়েও পরে সরে দাঁড়িয়েছিলেন, এক্স-এ ইরানের ওপর হামলাকে তাঁর প্রথম মেয়াদে ইরানি সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেছেন। সোলেইমানি হত্যার পর অনেকেই আঞ্চলিক সংঘাতের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যা সত্যি হয়নি। গেটজ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মূলত এটিকে সোলেইমানি হামলার মতো “একবারই” করতে চেয়েছেন। (ইরানের) শাসন পরিবর্তনের কোনো যুদ্ধ এটি নয়। ট্রাম্পই শান্তির প্রতীক!’

তবে, গতকাল রোববার গেটজ ইরানের যেকোনো বৃহত্তর অভিযানের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘শুধু মনে রাখবেন: প্রতিটি শাসন পরিবর্তনের যুদ্ধ শুরুতেই অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু ঐতিহাসিক গতিপথ ভালো নয়।’ পরে তিনি যোগ করেন, ‘বোমা ফেলার জন্য নব্য রক্ষণশীলদের হাতে আরও একটি ইরানি পর্বত সব সময়ই থাকবে!’

জর্জিয়ার রিপাবলিকান প্রতিনিধি মার্জরি টেলর গ্রিন, যিনি ট্রাম্পের একজন কট্টর মিত্র, গত শনিবার রাতে এক্স-এ পোস্ট করেন: ‘যদি নেতানিয়াহু প্রথমে ইরানের জনগণের ওপর বোমা না ফেলতেন, তাহলে ইসরায়েলের জনগণের ওপর বোমা পড়ত না। ইসরায়েল একটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ। এটি আমাদের যুদ্ধ নয়। শান্তিই সমাধান।’

মার্কিন জনগণ এবং বিশেষ করে ট্রাম্পের ম্যাগাপন্থী আন্দোলনের কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রের ইরান হামলার প্রতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে তা এখনই বলা কঠিন।

গত বুধবার, হামলার আগে, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং এসএসআরএস-এর এক দিনের সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৪৫ শতাংশ আমেরিকান ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন বিমান হামলার বিরোধিতা করেছেন, ২৫ শতাংশ সমর্থন করেছেন এবং ৩০ শতাংশ অনিশ্চিত। ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে রিপাবলিকানরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখেন এবং বিমান হামলাকে সমর্থন করার সম্ভাবনা তাঁদের বেশি ছিল।

এদিকে ট্রাম্পের ম্যাগাপন্থী আন্দোলনের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রেসিডেন্টের কাছে তাঁর সিদ্ধান্তের আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, এটি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।

ট্রাম্পের সাবেক প্রধান কৌশলবিদ এবং বর্তমানে ট্রাম্পপন্থী পডকাস্টার স্টিভ ব্যানন গত শনিবার রাতে বলেছেন, তাঁর সমর্থকদের কাছে এই সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করার জন্য প্রেসিডেন্টের ‘কিছু কাজ আছে’। ট্রাম্প শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তিনি তাঁর পডকাস্টে বলেন, ‘আমি মনে করি প্রেসিডেন্টকে এই হামলার একটি গভীর ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত, বিশেষ করে কেন এটি ইসরায়েলের জন্য আমাদের একটা কঠিন কাজ বা বোঝা মনে হচ্ছে—সেটির ব্যাখ্যা দরকার।’

স্টিভ ব্যানন ‘ধাপে ধাপে বৃদ্ধি’ এবং ইরান যদি পাল্টা হামলা চালায় ও যুক্তরাষ্ট্র আরও পদক্ষেপ নেয় তবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অনন্ত যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ এজেন্ডা থেকে মনোযোগ সরে যেতে পারে। ব্যানন বলেন, ‘এভাবেই আপনি আপনার পক্ষের শহরগুলোর দিকে মনোযোগ দিতে পারবেন না। এভাবেই আপনি সেই বিশাল, সুন্দর বিল–আপনার যা কিছু করার দরকার, সেদিকে মনোযোগ দিতে পারবেন না।’

তিনি যোগ করেন, ‘এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া ভুল নয়। কখনো কখনো আপনাকে এই পদক্ষেপগুলো নিতেই হয়। আমি মনে করি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে তাঁকে এই পদক্ষেপগুলো নিতেই হবে।’

ট্রাম্পপন্থী ভাষ্যকার জ্যাক পসোবিয়েক ইরানে হামলাকে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিচালিত হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। তবে ইরানি নেতৃত্বকে ক্ষমতাচ্যুত করার দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টার প্রথম ধাপ নয় বলেই মনে করেন তিনি। পসোবিয়েক এক্স-এ লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, যেমনটি তিনি বরাবরই করেছেন, তিনি ইরানে শাসন পরিবর্তনের লক্ষ্যে কোনো যুদ্ধের বিরোধিতা করেন। এটি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কিত, যা তিনি প্রথম দিন থেকেই বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।’

ট্রাম্পপন্থী কর্মী লরা লুমার বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ইরানকে বোমা মেরে ‘আমাদের সবাইকে পারমাণবিক হলোকাস্ট থেকে বাঁচিয়েছেন’, তিনি ট্রাম্পের আন্দোলনের কিছু সদস্যের নীরবতার কথা উল্লেখ করেছেন যারা যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে জড়ানোর বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, ‘কেউ কি টাকার কার্লসন, ডেভ স্মিথ, ক্যান্ডেস ওয়েন্স এবং পুরো মাহা ক্রুদের (মেক আমেরিকা হেলথি অ্যাগেইন মুভমেন্ট) জন্য একটি সুস্থতার পরীক্ষা চালাতে পারবেন!’

ফক্স নিউজ সাবেক হোস্ট টাকার কার্লসন ইরানে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানোর বিরোধিতাকারী অন্যতম জোরালো কণ্ঠস্বর। গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত ট্রাম্পের বোমা হামলা সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো মন্তব্য করেননি।

রক্ষণশীল ভাষ্যকার ক্যান্ডেস ওয়েন্স গত সপ্তাহে তাঁর ইউটিউব শোতে বলেছিলেন, ম্যাগা হচ্ছে নব্য রক্ষণশীলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা। ট্রাম্পকে তাঁর সেই ভিত্তি ভেঙে দিয়েছেন। গত শনিবার হামলার সবচেয়ে সোচ্চার সমালোচক ছিলেন তিনি।

নিয়মিত ইসরায়েলবিরোধী মতামত প্রকাশ করেন ওয়েন্স। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় ইসরায়েলপন্থী দাতা মিরিয়াম অ্যাডেলসন ট্রাম্পপন্থী সুপার পিএসিকে যে ১০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিলেন। সেই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে ওয়েন্স এক্স-এ লিখেছেন, ‘যদি আমরা গো ফান্ড মি-তে অ্যাডেলসনের দেওয়া ১০০ মিলিয়ন ডলারের সমান সংগ্রহ করতে পারতাম, তাহলে হয়তো তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেন। অনুমান করি, আমরা তা কখনোই জানতে পারব না।’ ট্রুথ সোশ্যালে বোমা হামলার ঘোষণা দেওয়া ট্রাম্পের পোস্টটিকে ‘স্রেফ উন্মাদনা’ বলেও অভিহিত করেন ওয়েন্স।

ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, রিপাবলিকান পার্টি তাঁর পক্ষে আছে। তিনি তাঁর বিশাল ট্যাক্স ও ব্যয়ের প্যাকেজ পাসের আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রাম্প গতকাল রোববার ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘রিপাবলিকান পার্টিতে অসাধারণ ঐক্য, হয়তো এমন ঐক্য আমরা আগে কখনো দেখিনি। এখন চলুন, এই বিশাল, সুন্দর বিলটি শেষ করি। আমাদের দেশ অসাধারণ উন্নতি করছে। ম্যাগা!’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টান দিয়ে নারীর মুখের নেকাব সরিয়ে তোপের মুখে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ০৭
টান দিয়ে নারীর মুখের নেকাব সরিয়ে তোপের মুখে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার

সরকারি এক অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট নিতে আসা এক মুসলিম নারীর মুখ দেখতে তাঁর নেকাব টান দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গতকাল সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় তাঁর এ কাণ্ডে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ৭৪ বছর বয়সী জেডিইউর প্রধান নীতীশ কুমার এক সরকারি অনুষ্ঠানে এক আয়ুষ (আয়ুর্বেদ, যোগ ও ন্যাচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথি) চিকিৎসকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছিলেন।

সে সময় তিনি ওই নারী চিকিৎসককে ইশারায় নিকাব সরাতে বলেন। নারী চিকিৎসক নিকাব না সরালে নীতীশ নিজেই হাত বাড়িয়ে তাঁর নিকাব নিচের দিকে নামিয়ে দেন, যাতে তাঁর মুখ ও থুতনি দৃশ্যমান হয়।

ভিডিওতে পেছনে উপস্থিত কয়েকজনকে হাসতে দেখা যায়। একই সঙ্গে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীকেও নীতীশকে থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়।

সরকারি অনুষ্ঠানে নারী চিকিৎসকের মুখ থেকে নিকাব টেনে খোলার ঘটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করছে বিরোধী দলগুলো।

এ ঘটনাকে ‘জঘন্য’ হিসেবে অভিহিত করে কংগ্রেস তাঁর পদত্যাগের দাবি করেছে।

হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নীতীশের কড়া সমালোচনা করে বিরোধী দল আরজেডি এক বিবৃতিতে বলেছে, পর্দা করা মুসলিম নারীর নিকাব খুলে ফেলে জেডিও এবং বিজেপি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে কী রাজনীতি করছে, সেটি প্রকাশ করে দিয়েছে।

আরজেডি তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে হিন্দিতে লিখেছে, ‘নীতীশজির কী হয়েছে? তাঁর মানসিক অবস্থা এখন করুণ পর্যায়ে পৌঁছেছে।’

কংগ্রেসও মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণকে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘ঘৃণ্য’ বলে নিন্দা করেছে। দলের এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়, ‘একজন নারী চিকিৎসক নিয়োগপত্র নিতে এসেছিলেন আর নীতীশ কুমার তাঁর নিকাব টেনে নামালেন। বিহারের সর্বোচ্চ পদে থাকা একজন ব্যক্তি প্রকাশ্যে এমন ঘৃণ্য আচরণ করছেন। ভাবুন তো, রাজ্যে নারীরা কতটা নিরাপদ? এই জঘন্য আচরণের জন্য নীতীশ কুমারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’

এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন নীতীশ কুমার। গত নভেম্বরের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে এক জনসভায় এক নারীকে মালা পরানোর ভিডিও ভাইরাল হলে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। সে সময় এক জেডিইউ সংসদ সদস্য থামানোর চেষ্টা করলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ধমক দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বন্ডাই বিচে হামলাকারীকে থামাতে গিয়ে প্রাণ হারান এক বৃদ্ধ দম্পতিও!

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হামলাকারীর সঙ্গে বরিস ও সোফিয়ার লড়াইয়ের এই মুহূর্তটি একটি ড্যাশক্যাম ফুটেজ থেকে নেওয়া
হামলাকারীর সঙ্গে বরিস ও সোফিয়ার লড়াইয়ের এই মুহূর্তটি একটি ড্যাশক্যাম ফুটেজ থেকে নেওয়া

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে সন্ত্রাসী হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে গেছেন ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ আল-আহমেদ। এবার জানা গেল, এক বৃদ্ধ দম্পতিও হামলাকারীদের থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, হামলাকারীর সঙ্গে লড়াই করে নিহত হয়েছেন এমন এক দম্পতির পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে। একটি ড্যাশক্যাম ফুটেজে দেখা গেছে, বন্দুকধারীর সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে জড়িয়েছেন ৬৯ বছরের বরিস গুরম্যান এবং তাঁর স্ত্রী ৬১ বছরের সোফিয়া গুরম্যান। হামলার শুরুর দিকেই তাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে গিয়ে প্রাণ হারান।

গত ১৪ ডিসেম্বর বন্ডাই বিচের ওই হামলায় এক হামলাকারী সহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বরিস ও সোফিয়া গুরম্যানও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে তাঁদের পরিবার। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের প্রিয় বরিস ও সোফিয়াকে হঠাৎ এবং অর্থহীনভাবে হারিয়ে আমরা গভীর শোকাহত।’

বরিস গুরম্যান ও তাঁর স্ত্রী সোফিয়া গুরম্যান। ছবি: সংগৃহীত
বরিস গুরম্যান ও তাঁর স্ত্রী সোফিয়া গুরম্যান। ছবি: সংগৃহীত

জানা গেছে, বরিস ও সোফিয়া গুরম্যান ৩৪ বছর ধরে দাম্পত্য জীবনে ছিলেন এবং জানুয়ারিতেই তাঁরা ৩৫ তম বিবাহবার্ষিকী উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। একই সঙ্গে চলতি ডিসেম্বরেই সোফিয়ার ৬২ তম জন্মদিন পালনের কথা ছিল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ড্যাশক্যাম ফুটেজে দেখা গেছে, ক্যাম্পবেল প্যারেডে নিজের গাড়ি থেকে নেমে বন্দুকধারী সাজিদ আকরামের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন বরিস। বেগুনি রঙের শার্ট পরা বরিস বন্দুকধারীকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর সহযোগিতায় ধস্তাধস্তিতে এসে যোগ দেন স্ত্রী সোফিয়াও। ঘটনাটি অনিচ্ছাকৃতভাবে স্থানীয় এক বাসিন্দার গাড়ির ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘সাধারণ মানুষের এমন বীরত্ব কখনো ভুলে যাওয়া উচিত নয়।’

পরবর্তী সময়ে ড্রোনে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ফুটপাথে পাশাপাশি নিথর হয়ে পড়ে আছেন বরিস ও সোফিয়া। পরিবার জানিয়েছে, বরিস ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেকানিক। তিনি উদার, নীরব শক্তির প্রতীক এবং প্রয়োজনে সবার পাশে দাঁড়ানোর মতো মানুষ। সোফিয়া কাজ করতেন অস্ট্রেলিয়া পোস্টে—সহকর্মী ও স্থানীয় কমিউনিটিতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়।

পরিবার তাঁদের সাহসিকতার কথাও তুলে ধরে বলেছে, ‘আমরা ফুটেজে দেখেছি, সোফিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বরিস অন্যদের রক্ষা করতে হামলাকারীকে নিরস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এই আত্মত্যাগই তাঁদের প্রকৃত পরিচয়।’

এদিকে হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে যাওয়া আহমেদ আল-আহমেদের সাহসের প্রশংসা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার সময় হামলাকারী সাজিদ আকরামকে শেষ পর্যন্ত গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। অপর হামলাকারী তাঁরই ছেলে নাভিদ আকরাম। গুরুতর আহত অবস্থায় নাভিদ এখন পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৭
বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। ছবি: সংগৃহীত
বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। তাঁকে গ্রিন কার্ডের শেষ ধাপের সাক্ষাৎকারে আটক করেছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।

আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

বাবলি কৌড়ের মেয়ে জ্যোতি জানান, গ্রিন কার্ড আবেদন-সংক্রান্ত বায়োমেট্রিক স্ক্যানের জন্য ১ ডিসেম্বর বাবলি যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কার্যালয়ে গেলে সেখানে ফেডারেল এজেন্টরা তাঁকে আটক করেন।

লং বিচ ওয়াচডগ জানিয়েছে, কৌড়ের আরেক মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও তাঁর স্বামী গ্রিন কার্ডধারী। তাঁরা মায়ের পক্ষে গ্রিন কার্ড পিটিশন দাখিল করেছিলেন, যা এরই মধ্যে অনুমোদিত হয়েছে।

জ্যোতি জানান, আইসিই কার্যালয়ের ফ্রন্ট ডেস্কে অপেক্ষার সময় কয়েকজন ফেডারেল এজেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর কৌড়কে একটি কক্ষে ডাকা হয়, যেখানে তাঁকে জানানো হয় যে, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যদিও তাঁকে আইনজীবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তবু তাঁকে আটক রাখা হয়।

পরিবারের সদস্যদের কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত জানানো হয়নি কৌড়কে কোথায় নেওয়া হয়েছে। পরে জানা যায়, তাঁকে রাতারাতি অ্যাডেলান্টোয় স্থানান্তর করা হয়েছে, যা আগে একটি ফেডারেল কারাগার ছিল এবং বর্তমানে আইসিই ডিটেনশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

দীর্ঘদিনের বসবাস ও পারিবারিক পরিচয়

পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর কৌড় প্রথমে লাগুনা বিচে বসবাস শুরু করেন। পরে কাজের প্রয়োজনে তাঁরা লং বিচের বেলমন্ট শোর এলাকায় চলে যান। কৌড় ও তাঁর স্বামীর তিন সন্তান রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩৪ বছর বয়সী জ্যোতি যুক্তরাষ্ট্রের ডিফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডিএসিএ) কর্মসূচির আওতায় বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এবং বড় ছেলে ও মেয়ে দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কৌড় ও তাঁর স্বামী দুই দশকের বেশি সময় বেলমন্ট শোরের সেকেন্ড স্ট্রিটে ‘নাটরাজ কুইজিন অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড নেপাল’ নামে একটি রেস্তোরাঁ চালান। রেস্তোরাঁটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া তিনি প্রায় ২৫ বছর বেলমন্ট শোর রাইট এইড ফার্মেসিতে কাজ করেছেন। চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি আবার রেস্তোরাঁয় কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

মুক্তির দাবি

লং বিচের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রবার্ট গার্সিয়া বাবলি কৌড়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় জানায়, বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেডারেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। কৌড়ের পরিবার আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামিনে মুক্তির জন্য অতিরিক্ত আবেদন প্রস্তুত করছে।

পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, অ্যাডেলান্টো ডিটেনশন সেন্টারে কৌড়কে বড় ডরমিটরি ধরনের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে, যেখানে আরও বহু বন্দী রয়েছেন। সারা রাত আলো জ্বালানো থাকে এবং উচ্চশব্দের কারণে ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ে।

স্বজনেরা জানিয়েছেন, কৌড়ের সঙ্গে স্বল্প সময়ের সাক্ষাতের সুযোগ পেলেও এর জন্য পুরো দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের।

মেয়ে জ্যোতি বলেন, ‘এটা এক দুঃস্বপ্ন। আমরা তাঁকে বের করে আনার জন্য সবকিছু করার চেষ্টা করছি। তিনি এখানে থাকার মতো কেউ নন। এটা ভীষণ অমানবিক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৩
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলাকারী সাজিদ আকরাম (বাঁয়ে) ও তাঁর ছেলে নাভিদ। ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলাকারী সাজিদ আকরাম (বাঁয়ে) ও তাঁর ছেলে নাভিদ। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি হানুক্কা উৎসব চলাকালে ভয়াবহ গুলিবর্ষণে এক হামলাকারীসহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পিতা-পুত্র কোন দেশ থেকে অভিবাসী হয়েছিলেন, তা এখনো গোপন রেখেছে অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ। তবে নামের কারণে শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই সন্দেহ করেন—তাঁরা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। অবশেষে আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভারতের তেলেঙ্গানা পুলিশের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, হামলাকারী সাজিদ আকরাম ও তাঁর পুত্র নাভিদ আকরাম আসলে ভারতের হায়দরাবাদের বাসিন্দা!

হামলার সময় ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ৫০ বছর বয়সী সাজিদ আকরাম। আর তাঁর ২৪ বছর বয়সী ছেলে নাভিদ আকরাম গুরুতর আহত অবস্থায় এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তেলেঙ্গানার পুলিশ মহাপরিচালক জানিয়েছেন, সাজিদ আকরাম হায়দরাবাদের বাসিন্দা ছিলেন এবং ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে শিক্ষার্থী ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন। এরপর গত ২৭ বছর ধরে তিনি সেখানেই বসবাস করেছেন। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে তিনি ভারতে থাকা তাঁর পরিবারের সঙ্গে খুব কমই যোগাযোগ রাখতেন। পুলিশ দাবি করেছে, সাজিদের কথিত উগ্রবাদী হওয়ার সঙ্গে ভারতের কোনো আদর্শিক বা সাংগঠনিক সংযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পুলিশ আরও জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরে বহু বছর আগে হায়দরাবাদের আত্মীয়দের সঙ্গে সাজিদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি ২০১৭ সালে তাঁর বাবার মৃত্যুর সময়ও তিনি জানাজায় অংশ নেননি। সর্বশেষ তিনি ২০২২ সালে হায়দরাবাদে গিয়েছিলেন।

সাজিদ আকরাম অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত ভেনেরা গ্রোসোকে বিয়ে করেন। পরিবারটি স্থায়ীভাবে সেখানেই বসবাস করছিল। তবে সাজিদ ভারতীয় পাসপোর্টই বহাল রেখেছিলেন। আর তাঁর ছেলে-মেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়ায় তাঁরা অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট বহন করেন।

বন্ডাই বিচে হামলার ঘটনাটিকে ‘ইসলামিক স্টেট অনুপ্রাণিত সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ কমিশনার ক্রিসি ব্যারেট। তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বয়স বা শারীরিক সক্ষমতার তোয়াক্কা না করে শুধু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াতে আগ্রহী ছিলেন।

এদিকে হামলার এক মাস আগে সাজিদ ও তাঁর ছেলে নাভিদ ফিলিপাইনের আইএস-অধ্যুষিত একটি অঞ্চলে ভ্রমণ করেছিলেন বলে জানা গেছে। ফিলিপাইনের অভিবাসন দপ্তর জানিয়েছে, তাঁরা গত ১ নভেম্বর দেশটিতে প্রবেশ করে ২৮ নভেম্বর ফিরে যান। অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষ এই সফরের উদ্দেশ্য ও গন্তব্য নিয়ে এখন তদন্ত চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত