Ajker Patrika

সালমান রুশদিকে অন্ধ করে দেওয়া আততায়ীর বিচার শুরু

অনলাইন ডেস্ক
সালমান রুশদি। ছবি: এএফপি
সালমান রুশদি। ছবি: এএফপি

২০২২ সালে বিশ্ববিখ্যাত ব্রিটিশ-ভারতীয় লেখক সালমান রুশদির ওপর হওয়া ছুরিকাঘাতের ঘটনায় অভিযুক্ত হাদি মাতারের বিচার আজ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের চৌতকোয়া শহরের কাছাকাছি মেভিল এলাকায় এই মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং এতে রুশদির সাক্ষ্যসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বক্তব্য শোনা হবে।

রুশদিকে হত্যাচেষ্টা ও হামলার অভিযোগে অভিযুক্ত নিউ জার্সির ২৭ বছর বয়সী হাদি মাতার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

সোমবার বিবিসি জানিয়েছে, ৭৭ বছর বয়সী সালমান রুশদির ওপর হামলার ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চৌতকোয়া ইনস্টিটিউটে ঘটেছিল। সেখানে মঞ্চে উঠে একটি বক্তৃতা দেওয়ার সময় হামলার শিকার হন তিনি।

প্রসিকিউটরদের অভিযোগ, হামলাকারী হাদি মঞ্চে উঠে রুশদি ও এক সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে আক্রমণ করেন। এ সময় রুশদির ঘাড় ও পেটে উপর্যুপরি ছুরির আঘাত করা হয় এবং তাঁর লিভারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

রুশদির সঙ্গে থাকা সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী হেনরি রিজ সামান্য আহত হন এবং স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। অন্যদিকে, মারাত্মক আহত অবস্থায় রুশদিকে পেনসিলভানিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।

রুশদি ১৯৮৮ সালে তাঁর উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের পর থেকেই হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন। বইটি মুসলিম ধর্মের নবীর জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা হলেও এটি অনেক মুসলমানের কাছে ধর্ম অবমাননাকর বলে মনে হয়েছে এবং বহু দেশে এটি নিষিদ্ধ করা হয়।

এই বিতর্কের কারণে ৯ বছর আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হন রুশদি এবং বহু বছর নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে চলাফেরা করতেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হুমকির মাত্রা কমে এসেছে বলে মনে করছিলেন তিনি।

ঘটনার পর পুলিশ হাদি মাতারকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে। নিউ জার্সির ফেয়ারভিউ শহরের বাসিন্দা হাদি লেবানন থেকে আসা একটি অভিবাসী পরিবারের সন্তান।

গ্রেপ্তারের পর একটি সাক্ষাৎকারে হাদি জানান, তিনি রুশদির সম্পর্কে সামান্যই জানতেন এবং টুইটারে চৌতকোয়া ইনস্টিটিউটে রুশদির বক্তৃতার ঘোষণা দেখেই সেখানে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, তিনি ভালো মানুষ। তিনি ইসলামকে আক্রমণ চালিয়েছেন।’

রুশদির ওপর হামলা ছাড়াও হাদির বিরুদ্ধে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালতেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জানা যায়, ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইটি প্রকাশের পরের বছরই ১৯৮৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেছিলেন। রুশদিকে কেউ হত্যা করলে তাঁর জন্য ৩০ লাখ ডলারের পুরস্কারও ঘোষণা করেন তিনি। এরপর থেকে রুশদি বহু বছর লুকিয়ে ছিলেন।

ইরান সরকার পরে এই ফতোয়া থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিলেও ২০১২ সালে একটি ইরানি ধর্মীয় সংস্থা পুরস্কারের পরিমাণ আরও ৫ লাখ ডলার বাড়িয়ে দেয়।

হামলার পর ছয় সপ্তাহ হাসপাতালে থাকার পর রুশদি বর্তমানে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তবে তাঁর এক চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে এবং এক হাত প্যারালাইজড হয়ে গেছে। সম্প্রতি তিনি ‘নাইফ’ নামে একটি স্মৃতিকথা প্রকাশ করেছেন, যেখানে হামলার ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।

বিচারে অংশগ্রহণের বিষয়ে রুশদি বলেন, ‘একদিকে আমি আদালতে গিয়ে তার মুখোমুখি হতে চাই। অন্যদিকে আমি এটিকে সময়ের অপচয় মনে করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চূড়ান্ত হচ্ছে সাত কলেজের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, শিগগির ঘোষণা

প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ধরা পড়া সেই নেতাকে বহিষ্কার করল ছাত্রশিবির

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ফ্রিতে নৌকা না পেয়ে ভূমি অফিস সহকারীকে মারধর এসপির

এশিয়ার ১০টিসহ ৪৩ দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত