Ajker Patrika

১৫ মাস পর গাজাবাসীর ভয়হীন, আনন্দময় বিষাদের রাত

অনলাইন ডেস্ক
রেড ক্রসে বাসে করে পশ্চিম তীরে ফেরেন ৯০ ফিলিস্তিনি। ছবি: এএফপি
রেড ক্রসে বাসে করে পশ্চিম তীরে ফেরেন ৯০ ফিলিস্তিনি। ছবি: এএফপি

দীর্ঘ ১৫ মাস পর গাজায় বন্ধ হয়েছে ইসরায়েলি আগ্রাসন। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টা নাগাদ অঞ্চলটিতে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। এরপর অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলা হয়নি। বাস্তুচ্যুতরা নিজেদের বিধ্বস্ত আবাস ভূমে শুরু করেছেন। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ হলেও, নিজ আবাসে ফিরতে শুরু করা প্রায় প্রতিটি পরিবারই এক বা একাধিক স্বজন হারিয়েছে। ফলে যুদ্ধবিরতি আনন্দ আনলেও গাজাবাসীর মনে আনন্দের পাশাপাশি স্বজন হারানোর বিষাদও আছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আজ সোমবার সকালে বলেছেন, এখানকার মানুষ এক বছরেরও বেশি সময় পর তাদের প্রথম রাত কাটাল ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভয় ছাড়াই।

নতুন দিনে গাজাবাসীর আশা, এই ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি একসময় স্থায়ী শান্তিতে পরিণত হবে। তবে সেই দিনই সামনে হাজির হবে ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজা উপত্যকার অবকাঠামো পুনর্গঠন ও মানুষের জীবনের ক্ষত মুছে ফেলে নতুন করে বাঁচার আশা দেওয়ার ভারবাহী কাজ।

এদিকে, জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সমঝোতার অংশ হিসেবে ৬৩০ টির বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেন, গতকাল রোববার ৬৩০ টিরও বেশি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, যার মধ্যে কমপক্ষে ৩০০টি উত্তর গাজায় মানবিক সহায়তা নিয়ে গিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। ১৫ মাসের লাগাতার যুদ্ধের পরে মানবিক প্রয়োজনগুলো এখন চরম পর্যায়ে।’

অপর দিকে, রেড ক্রসের দুটি বাসে মুক্তি পাওয়া ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দী অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া শহরে পৌঁছালে শত শত ফিলিস্তিনি উল্লাসে মেতে ওঠেন। তারা স্লোগান দিয়ে, গাড়ির হর্ন বাজিয়ে এবং আতশবাজি ফুটিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন।

বাসগুলো ঘিরে রাস্তায় উল্লসিত মানুষের ভিড় জমে যায়। কেউ কেউ বাসের ওপর উঠে হামাসের পতাকা, ফিলিস্তিনি জাতীয় পতাকা এবং ফাতাহ, ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ ও অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীর পতাকা উড়িয়ে দেন। বাসের ভেতরেও মুক্তি পাওয়া কিছু নারী বন্দীকে হাসতে ও বিজয়ের চিহ্ন দেখাতে দেখা যায়।

এই ৯০ জন বন্দীর সবাই নারী ও শিশু। তারা আজ সোমবার ভোরে মুক্তি পেয়েছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে এই মুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, যার অধীনে ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দীকে গাজা থেকে ছাড়া হবে। চুক্তি অনুযায়ী মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীদের মধ্যে ২৩০ জনেরও বেশি বন্দীকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই ইসরায়েল নির্বাসনে পাঠাবে বলে এএফপি জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত