Ajker Patrika

আমার পা কোথায়—৩ বছরের হানানের কণ্ঠে গাজার হাজারো শিশুর আর্তচিৎকার

আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ১৭
হাসপাতালের বিছানায় হানান। ছবি: আল জাজিরার সৌজন্যে
হাসপাতালের বিছানায় হানান। ছবি: আল জাজিরার সৌজন্যে

‘মা কোথায়, আমার পা কোথায় গেল?’—তিন বছর বয়সী ফিলিস্তিনি হানান আল-দাক্কি বারবার এই প্রশ্ন করছে তার বছরখানেক ছোট বোন মিসককে। হানান ও মিসক প্রায় চার মাস ধরে হাসপাতালে। ইসরায়েলি বোমা হামলায় আহত এবং রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের সেখানে আনা হয়েছিল। এরপর তাদের দুজনেরই পা কেটে ফেলা হয়।

তাদের ফুপু ২৮ বছর বয়সী শেফা আল-দাক্কি তখন থেকেই তাদের পাশে আছেন। কিন্তু তিনি জানেন না, তাঁর দুই শিশু ভাতিজির এই প্রশ্নের জবাব কীভাবে দেবেন।

গত ২ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। সেদিন সকালে শাইমা আল-দাক্কি ভোরে উঠে তাঁর দুই মেয়ে—হানান এবং ২২ মাস বয়সী মিসককে পোলিও টিকা দিতে নিয়ে যান। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যেও এই টিকা দেওয়া হচ্ছিল। পরদিন দুপুরে পরিবারের সবাই একসঙ্গে খাওয়ার পর ইসরায়েল দায়ের এল-বালাহে অবস্থিত তাঁদের বাড়ি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়।

ইসরায়েলি বোমা হামলায় ২৫ বছর বয়সী শাইমা নিহত হন এবং পরিবারের বাকি সদস্যরা আহত হন। আহতদের মধ্যে ছিলেন তাঁর স্বামী মোহাম্মদ আল-দাক্কি। বোমার আঘাতে দুই ছোট মেয়ের পা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।

হানান গুরুতর আহত হয় এবং একপর্যায়ে তার দুই পা-ই হারায়। একটি হাঁটুর ওপরে কেটে ফেলা হয় এবং অন্যটি হাঁটুর নিচে। শরীরজুড়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এমনকি মুখ ও খাদ্যনালিতেও। তার অন্ত্রের একটি অংশ অস্ত্রোপচার করে বাদ দিতে হয়। অন্যদিকে, মিসকের বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়।

তাদের বাবা মোহাম্মদ আল-দাক্কি (৩১) দুই সপ্তাহ আইসিইউতে ছিলেন। তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং বুকে আঘাত লেগেছিল। শেফা আল-দাক্কি বলেন, ‘চার মাস ধরে আমরা যেন একটি দুঃস্বপ্নে আটকা পড়েছি।’

ইসরায়েলি হামলায় ভাইয়ের পরিবার ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পর থেকেই হাসপাতালে আছেন শেফা। তিনি জানান, ইসরায়েলি হামলার পর থেকেই হানান অত্যন্ত ভঙ্গুর ও অস্থির হয়ে পড়েছে। তিনি হানানকে শান্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তিনি আরও জানান, এই দুই মেয়েই ভয় এবং আতঙ্কের মধ্যে আছে এবং সব সময়ই তাদের তাঁর গায়ের সঙ্গে লেপ্টে থাকে।

শেফা তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেটি করতে গিয়ে প্রায়ই নিজেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কখনো মেয়েদের জন্য দুঃখে, কখনো ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয়ে। তিনি বলেন, ‘আমি এখন শুধু এটুকুই বলতে পারি যে তাদের মা জান্নাতে আছেন। কিন্তু তাদের জন্য ভবিষ্যতে কী অপেক্ষা করছে? সেটি তো আমি বলতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বড় হয়ে তারা যখন দেখবে যে তাদের বয়সী অন্য শিশুদের থেকে তারা আলাদা তখন তারা কেমন অনুভব করবে? হানান কীভাবে তার পছন্দের পোশাক পরবে? সে যখন আমার কাছে তার পছন্দের জামা বা জুতো চাইবে তখন আমি তাকে কী জবাব দেব?’ দাক্কি পরিবারের এই সদস্য আরও বলেন, ‘হানানের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন। কারণ, সে তার বোনের চেয়ে অনেক বেশি বোঝে এবং তার আঘাতগুলোও ছিল অনেক গুরুতর।’

হাসপাতালটির কর্মীরা এতটাই ব্যস্ত এবং সেখানে এত বেশি হতাহত মানুষ আসছে যে সরঞ্জামবিহীন পরিবেশে কাজ করা চিকিৎসাকর্মীদের পক্ষে হানান বা মিসকের মতো অনেককেই তাঁরা মানসিক সমর্থনটুকুও দিতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে তিন সন্তানের জননী শেফা পালা করে তাঁর এই ভাতিজির দেখাশোনা করেন। তিনি শাইমার মা অর্থাৎ হানানের নানি, হানান-মিসকের দাদি এবং ২৯ বছর বয়সী চাচা আহমেদ ও বাবা মোহাম্মদ পালাক্রমে এই দুই শিশুর দেখভাল করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হানানের পরিবারের অন্য প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরা প্রায়ই তাদের জন্য হাসপাতালে বিভিন্ন ছোটখাটো উপহার আনেন। বাচ্চা দুটো প্রায়ই খেলনা চায়, কিন্তু চাইলেও তাদের সেই সাধ পূর্ণ হয় না। একে তো বাজার বলে কিছু নেই, তার ওপর আর্থিক টানাপোড়েন। ফলে পরিবার যা আনতে পারে, সেটাই নিয়ে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়।

নিজের মোবাইলে ছোট্ট হানানের স্বাভাবিক অবস্থার ছবি দেখাচ্ছেন শেফা। ছবি: আল-জাজিরার সৌজন্যে
নিজের মোবাইলে ছোট্ট হানানের স্বাভাবিক অবস্থার ছবি দেখাচ্ছেন শেফা। ছবি: আল-জাজিরার সৌজন্যে

শেফা জানান, চাচা আহমেদ হানান ও মিসকের কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় ব্যক্তি। কারণ, সে তাদের সঙ্গে খেলেন এবং হাসপাতালের বাকি অংশ ঘুরে দেখার জন্য তাদের ঘর থেকে বাইরে নিয়ে যায়। ঘুমের অভাবে লাল হয়ে থাকা অশ্রুসিক্ত চোখে শেফা বলেন, ‘আমাদের তো কেউই কোনো দিন তাদের মা-কে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না।’

শেফা বলেন, ‘আমি কখনোই একটি ঘটনা ভুলব না। আমি একবার আমারে মেয়ে হালাকে এনেছিলাম হাসপাতালে। হালা ও হানান সময় বয়সী। সে সময় হানান তাকিয়ে থাকত হালার পায়ের দিকে, তারপর নিজের কাটা পায়ের দিকে। যেন বিভ্রান্ত। এ ঘটনার আগে তারা সব সময় একসঙ্গে দৌড়াত ও খেলত। এখন তারা হাসপাতালের বিছানায় খেলে।’

যেহেতু হানান ও মিসক দ্রুত বেড়ে ওঠার পর্যায়ে আছে, তাই তাদের লম্বা হাড়গুলোর নিয়মিত পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে রাখা হয়েছে। হাসপাতালে যে সামান্য ফিজিওথেরাপি সম্ভব, তা তাদের খুব একটা সাহায্য করে না। হাসপাতালের সময়টুকু তাদের কাটে আঁকাআঁকি করে, দর্শনার্থীদের সঙ্গে খেলাধুলা করে বা সময় কাটানোর জন্য বড়দের মোবাইল ফোন নিয়ে খেলে।

শেফা জানান, যখন গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হয় তখন থেকেই শাইমা তাঁর মেয়েদের জন্য আতঙ্কে ছিলেন। তিনি খেতে পারতেন না, ঘুমাতে পারতেন না, মেয়েদের জন্য খাবার আর ফর্মুলা খুঁজে পাওয়ার চিন্তায় তাঁর অনেক ওজন কমে গিয়েছিল। তিনি সব সময় তার মেয়েদের প্রতি নিবেদিত ছিলেন, তাদের সঙ্গে সময় কাটাতেন এবং তারা যা চাইত—তা দেওয়ার চেষ্টা করতেন।

শেফা বলেন, ছোট্ট হানান সাজতে খুব পছন্দ করত, সে পোশাক আর জুতোর প্রতি খুবই যত্নবান ছিল। শাইমা তাদের ভীষণ ভালোবাসতেন। যখন গাজায় পোলিও টিকা দেওয়া শুরু হয় এবং ইসরায়েল এই ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়, তখন শাইমা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে তার মেয়েরা অন্তত সেই সুরক্ষা পাবে। শাইমা তাঁর বোন ও শ্বশুরবাড়ির লোকদেরও একই কাজ করার উৎসাহ দিয়েছেন।

হানান (মোবাইল ফোন হাতে) ও মিসকের সঙ্গে তাদের ফুপু শেফা। ছবি: আল-জাজিরার সৌজন্যে
হানান (মোবাইল ফোন হাতে) ও মিসকের সঙ্গে তাদের ফুপু শেফা। ছবি: আল-জাজিরার সৌজন্যে

হানানের ফুপু বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা সবাই আমাদের সন্তানদের ক্ষতির ব্যাপারে ভয় পেতাম। কিন্তু কী লাভ? পোলিও থেকে সুরক্ষা পাবে, তারপর একটি ইসরায়েলি বিমান হামলায় তাদের পা হারাবে? এর মানে কী?’

হানান ও মিসকের যে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন, তা গাজায় সম্ভব নয়। কারণ, ইসরায়েল গাজার স্বাস্থ্য খাত ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই তাদের নাম গাজা ছেড়ে চিকিৎসার জন্য যাদের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে তাদের অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই তালিকার জন্য নাম সংগ্রহ করে। কিন্তু ইসরায়েল অনুমোদন না দিলে কেউই গাজা বের হতে পারে না। এখনো এই দুই শিশুকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

শেফা বলেন, ‘আমরা তিন মাসের বেশি অপেক্ষা করছি। তারা তো ছোট মেয়ে, যাদের ভীষণভাবে কৃত্রিম অঙ্গের প্রয়োজন। তাদের মানসিক অবস্থাও খারাপ হচ্ছে।’

গাজাতে কেবল কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়া গেলেই হবে না। তাদের সম্পূর্ণ মূল্যায়ন এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, তারপর কৃত্রিম অঙ্গের কথা ভাবা যেতে পারে। হানান ও মিসক যেহেতু এখনো বড় হচ্ছে, তাদের বয়স অনুযায়ী হাড়ের বৃদ্ধি বেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করবে—যার ফলে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং সম্ভবত কয়েকটি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।

শেফা যা জানেন তা হলো, ‘এই ছোট মেয়েদের জীবন আর কখনো আগের মতো হবে না।’ তিনি বলেন, ‘হানান জুতা পরতে চায় এবং আমাকে জিজ্ঞেস করে কেন সে পরতে পারে না...কেন সে পার্কে গিয়ে খেলতে পারে না। আমার কাছে কোনো উত্তর নেই।’

আল জাজিরা থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।

প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’

ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।

বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে

গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।

৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্যান্য সদস্যদের সাথে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিস্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।

গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিস্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’

তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইজরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইজরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনও কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনও ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।

গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সাথে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’

৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’

গাজার খ্রিস্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।

গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যেই প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।

অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪২
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছে, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।

রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।

নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।

বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এবং বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।

এই বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই এলাকার কাছে, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা এবং এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।

দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন
বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।

এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।

তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।

ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন
শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত