আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ছবিতে যে স্থানটি দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয়ভাবে এটি পরিচিত জাবালে মুসা নামে। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই নবী মুসা (আ.)-এর সঙ্গে কথা বলেছিলেন আল্লাহ। পবিত্র কোরআন আর বাইবেলে বর্ণনা এমনি। এ ছাড়া, ষষ্ঠ শতকের সেন্ট ক্যাথেরিন মঠও এখানে অবস্থিত। এটি পরিচালনা করে গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ।
বাংলাদেশে অনেকের কাছে তুর পাহাড় নামে পরিচিত হলেও এর প্রকৃত নাম সিনাই পর্বত। আরবিতে যেটিকে বলা হয় তুরে সিনাই। আরবিতে তুরের অর্থ পাহাড়। বিশেষ ধর্মীয় গুরুত্বের কারণে এই স্থানের আলাদা আবেদন রয়েছে মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদীদের কাছে। যে কারণে, সারা বছরই এখানে এই তিন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের আনাগোনা থাকে।
তবে, সম্প্রতি তিন ধর্মের অন্যতম এই তীর্থস্থানে একটি বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে মিসর। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থানটিতে এখন গড়ে উঠছে বিলাসবহুল হোটেল, ভিলা এবং মার্কেট।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্থানে জেবেলিয়া নামক এক বেদুইন সম্পদায়ের বসবাস। বিলাসবহুল হোটেল ও মার্কেট নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে তাদের অনেকের বাড়ি-ঘর। অভিযোগ রয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা বা কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। আরও গুরুতর অভিযোগ হলো—সমাধিস্থল থেকে স্বজনদের মরদেহও তুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।

সিনাইয়ের আদি বাসিন্দাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন ব্রিটিশ লেখক বেন হফলার। তাঁর মতে, এই প্রকল্পকে দেশের জন্য একটি প্রয়োজনীয় ও টেকসই উন্নয়ন হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তবে, এই প্রকল্পের জন্য উচ্ছেদ হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় জেবেলিয়া গোষ্ঠীর কাছে এটি উন্নয়ন নয়। তাঁরা কখোনো এটা চাননি। এটা তাঁদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিকল্পনায় স্থানীয়দের চেয়ে বহিরাগতদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এতে স্থানীয়দের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, সিনাইয়ে প্রায় ৪ হাজার জেবেলিয়া বেদুইনের বসবাস। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে যা হচ্ছে তা নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে সরাসরি মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা।
এখন পর্যন্ত মিসরের এই পরিকল্পনা নিয়ে সবচেয়ে সরব অবস্থান নিয়েছে গ্রিস। সেন্ট ক্যাথরিন মঠের সঙ্গে দেশটির ঐতিহাসিক সম্পর্কই এর মূল কারণ।
চলতি বছরের মে মাসে একটি মিসরীয় আদালত রায় দেয়, বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সক্রিয় খ্রিস্টান মঠ সেন্ট ক্যাথরিন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে অবস্থিত। কয়েক দশক ধরে চলা বিরোধের পর বিচারকেরা বলেন, মঠটির জমি ও আশপাশে ছড়িয়ে থাকা ধর্মীয়-পুরাতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও সেগুলোর মালিকানা মঠের নয়।
এ রায়ের পর থেকেই কায়রো ও এথেন্সের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। গ্রিসের চার্চ প্রধান আর্চবিশপ দ্বিতীয় ইয়েরোনিমোস এ রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘মঠের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও দখল করা হচ্ছে। অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্ম ও হেলেনিজমের (গ্রিক ধর্ম) এই আধ্যাত্মিক বাতিঘরের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে।’
এক বিরল সাক্ষাৎকারে সেন্ট ক্যাথরিনের দীর্ঘদিনের আর্চবিশপ দামিয়ানোস গ্রিক একটি সংবাদপত্রকে বলেন, এই রায় তাঁদের জন্য ‘ভয়াবহ আঘাত এবং লজ্জার বিষয়’। এই ইস্যুতে তাঁর অবস্থান মঠের সন্ন্যাসীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে। এ কারণে, সম্প্রতি তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
জেরুজালেমের গ্রিক অর্থোডক্স প্যাট্রিয়ার্কেট জানিয়েছে, পবিত্র এই স্থানের ধর্মীয় এখতিয়ার তাঁদের হাতে এবং এর জন্য নবী মুহাম্মদ (সা.) নিজেই একটি সুরক্ষা চিঠি দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, বাইজেন্টাইন আমলের এই মঠের মধ্যে ফাতেমি যুগে নির্মিত একটি ছোট মসজিদও রয়েছে। এটি খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতি ও শান্তির প্রতীক। এটি যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীর জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল।’
যদিও আদালতের বিতর্কিত রায় এখনো বহাল আছে। তবে, কূটনৈতিক তৎপরতার পর শেষ পর্যন্ত গ্রিস ও মিশর যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছে যে সেন্ট ক্যাথরিন মঠের গ্রিক অর্থোডক্স পরিচয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষিত রাখা হবে।

পর্যটন খাতকে ঘিরে বড় ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা হিসেবে মিশর ২০২১ সালে শুরু করে গ্রেট ট্রান্সফিগারেশন প্রকল্প। এ পরিকল্পনায় নতুন হোটেল, ইকো-লজ, একটি বড় ভিজিটর সেন্টার, নিকটবর্তী ছোট বিমানবন্দর সম্প্রসারণ এবং সিনাই পর্বতে উঠতে ক্যাবল কার নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।
সরকার এই প্রকল্পকে প্রচার করছে ‘পুরো বিশ্ব ও সব ধর্মের জন্য মিশরের উপহার’ হিসেবে।
তবে অর্থসংকটের কারণে কাজ আপাতত কিছুটা থেমে আছে বলে ধারণা করা হলেও সেন্ট ক্যাথরিন মঠের সামনে আল-রাহা সমভূমি ইতিমধ্যেই পাল্টে গেছে। সেখানে নতুন রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। বলা হয়ে থাকে, আল্লাহর ডাকে নবী মুসা (আ.) যখন সিনাই পর্বতে ৪০ দিন অবস্থান করেছিলেন, তখন ইসরায়েলিরা এই স্থানেই তাঁর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। সমালোচকদের মতে, এই নির্মাণকাজে এলাকার বিশেষ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যাচ্ছে।
ইউনেসকো বলেছে, দুর্গম পাহাড়ি প্রাকৃতিক দৃশ্যপট মঠের জন্য এক অনন্য পটভূমি তৈরি করেছে। এখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য ও নিঃসঙ্গতার সঙ্গে মানুষের আধ্যাত্মিকতার এক গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ২০২৩ সালেই ইউনেসকো মিশরকে উন্নয়নকাজ থামানোর, প্রকল্পের প্রভাব যাচাই করার এবং সংরক্ষণ পরিকল্পনা করার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু এখনো তা কার্যকর হয়নি।
গত জুলাইয়ে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ওয়াচ একটি খোলা চিঠি দিয়ে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটিকে অনুরোধ করে, সেন্ট ক্যাথেরিন এলাকাকে যেন বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ব্রিটেনের রাজা চার্লসের কাছেও আবেদন গেছে। তিনি সেন্ট ক্যাথেরিন ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষক।
মিশরে বিশাল উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা নতুন নয়। অনেক সময়ই অভিযোগ ওঠে—এসব পরিকল্পনায় দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীলতা দেখানো হয় না। তবে সরকারের দাবি, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে হলে এমন প্রকল্পই সবচেয়ে জরুরি।
কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে যখন মিশরের পর্যটন খাত ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছিল, তখন গাজার যুদ্ধ আর নতুন করে তৈরি হওয়া আঞ্চলিক অস্থিরতা আবারও বড় আঘাত হানে। তবুও সরকার ২০২৮ সালের মধ্যে ৩ কোটি পর্যটক টানার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে।
সিনাই উপদ্বীপে বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় বেদুইনদের মতামত না নিয়েই নানা উন্নয়ন কাজ চালানো হয়েছে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে অঞ্চলটি ইসরায়েলের দখলে গিয়েছিল। ১৯৭৯ সালে শান্তিচুক্তির পর তা ফের মিশরের হাতে এলেও বেদুইনদের অভিযোগ—তাদের এখনও দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বলে মনে করে সরকার।
১৯৮০-এর দশকেই স্থানীয়দের উচ্ছেদ করে লোহিত সাগরের তীরে শার্ম আল-শেখসহ নানা রিসোর্ট শহর গড়ে ওঠে।
হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে সেন্ট ক্যাথেরিন মঠ। শুরুর দিকে নির্জন স্থান থাকলেও লোহিত সাগরজুড়ে পর্যটন জমে উঠেছে। কেউ আসে মুসা (আ.) নবীর সঙ্গে আল্লাহর কথোপকথনের নিদর্শন সেই ‘জ্বলন্ত ঝোপ’-এর ধ্বংসাবশেষ দেখতে, কেউ দেখতে চায় কোডেক্স সিনাইটিকাস, যেটি নিউ টেস্টামেন্টের (খ্রিষ্টান বাইবেল) সর্বপ্রাচীন হাতে লেখা কপি।

ছবিতে যে স্থানটি দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয়ভাবে এটি পরিচিত জাবালে মুসা নামে। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই নবী মুসা (আ.)-এর সঙ্গে কথা বলেছিলেন আল্লাহ। পবিত্র কোরআন আর বাইবেলে বর্ণনা এমনি। এ ছাড়া, ষষ্ঠ শতকের সেন্ট ক্যাথেরিন মঠও এখানে অবস্থিত। এটি পরিচালনা করে গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ।
বাংলাদেশে অনেকের কাছে তুর পাহাড় নামে পরিচিত হলেও এর প্রকৃত নাম সিনাই পর্বত। আরবিতে যেটিকে বলা হয় তুরে সিনাই। আরবিতে তুরের অর্থ পাহাড়। বিশেষ ধর্মীয় গুরুত্বের কারণে এই স্থানের আলাদা আবেদন রয়েছে মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদীদের কাছে। যে কারণে, সারা বছরই এখানে এই তিন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের আনাগোনা থাকে।
তবে, সম্প্রতি তিন ধর্মের অন্যতম এই তীর্থস্থানে একটি বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে মিসর। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থানটিতে এখন গড়ে উঠছে বিলাসবহুল হোটেল, ভিলা এবং মার্কেট।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্থানে জেবেলিয়া নামক এক বেদুইন সম্পদায়ের বসবাস। বিলাসবহুল হোটেল ও মার্কেট নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে তাদের অনেকের বাড়ি-ঘর। অভিযোগ রয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা বা কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। আরও গুরুতর অভিযোগ হলো—সমাধিস্থল থেকে স্বজনদের মরদেহও তুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।

সিনাইয়ের আদি বাসিন্দাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন ব্রিটিশ লেখক বেন হফলার। তাঁর মতে, এই প্রকল্পকে দেশের জন্য একটি প্রয়োজনীয় ও টেকসই উন্নয়ন হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তবে, এই প্রকল্পের জন্য উচ্ছেদ হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় জেবেলিয়া গোষ্ঠীর কাছে এটি উন্নয়ন নয়। তাঁরা কখোনো এটা চাননি। এটা তাঁদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিকল্পনায় স্থানীয়দের চেয়ে বহিরাগতদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এতে স্থানীয়দের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, সিনাইয়ে প্রায় ৪ হাজার জেবেলিয়া বেদুইনের বসবাস। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে যা হচ্ছে তা নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে সরাসরি মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা।
এখন পর্যন্ত মিসরের এই পরিকল্পনা নিয়ে সবচেয়ে সরব অবস্থান নিয়েছে গ্রিস। সেন্ট ক্যাথরিন মঠের সঙ্গে দেশটির ঐতিহাসিক সম্পর্কই এর মূল কারণ।
চলতি বছরের মে মাসে একটি মিসরীয় আদালত রায় দেয়, বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সক্রিয় খ্রিস্টান মঠ সেন্ট ক্যাথরিন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে অবস্থিত। কয়েক দশক ধরে চলা বিরোধের পর বিচারকেরা বলেন, মঠটির জমি ও আশপাশে ছড়িয়ে থাকা ধর্মীয়-পুরাতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও সেগুলোর মালিকানা মঠের নয়।
এ রায়ের পর থেকেই কায়রো ও এথেন্সের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। গ্রিসের চার্চ প্রধান আর্চবিশপ দ্বিতীয় ইয়েরোনিমোস এ রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘মঠের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও দখল করা হচ্ছে। অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্ম ও হেলেনিজমের (গ্রিক ধর্ম) এই আধ্যাত্মিক বাতিঘরের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে।’
এক বিরল সাক্ষাৎকারে সেন্ট ক্যাথরিনের দীর্ঘদিনের আর্চবিশপ দামিয়ানোস গ্রিক একটি সংবাদপত্রকে বলেন, এই রায় তাঁদের জন্য ‘ভয়াবহ আঘাত এবং লজ্জার বিষয়’। এই ইস্যুতে তাঁর অবস্থান মঠের সন্ন্যাসীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে। এ কারণে, সম্প্রতি তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
জেরুজালেমের গ্রিক অর্থোডক্স প্যাট্রিয়ার্কেট জানিয়েছে, পবিত্র এই স্থানের ধর্মীয় এখতিয়ার তাঁদের হাতে এবং এর জন্য নবী মুহাম্মদ (সা.) নিজেই একটি সুরক্ষা চিঠি দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, বাইজেন্টাইন আমলের এই মঠের মধ্যে ফাতেমি যুগে নির্মিত একটি ছোট মসজিদও রয়েছে। এটি খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতি ও শান্তির প্রতীক। এটি যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীর জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল।’
যদিও আদালতের বিতর্কিত রায় এখনো বহাল আছে। তবে, কূটনৈতিক তৎপরতার পর শেষ পর্যন্ত গ্রিস ও মিশর যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছে যে সেন্ট ক্যাথরিন মঠের গ্রিক অর্থোডক্স পরিচয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষিত রাখা হবে।

পর্যটন খাতকে ঘিরে বড় ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা হিসেবে মিশর ২০২১ সালে শুরু করে গ্রেট ট্রান্সফিগারেশন প্রকল্প। এ পরিকল্পনায় নতুন হোটেল, ইকো-লজ, একটি বড় ভিজিটর সেন্টার, নিকটবর্তী ছোট বিমানবন্দর সম্প্রসারণ এবং সিনাই পর্বতে উঠতে ক্যাবল কার নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।
সরকার এই প্রকল্পকে প্রচার করছে ‘পুরো বিশ্ব ও সব ধর্মের জন্য মিশরের উপহার’ হিসেবে।
তবে অর্থসংকটের কারণে কাজ আপাতত কিছুটা থেমে আছে বলে ধারণা করা হলেও সেন্ট ক্যাথরিন মঠের সামনে আল-রাহা সমভূমি ইতিমধ্যেই পাল্টে গেছে। সেখানে নতুন রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। বলা হয়ে থাকে, আল্লাহর ডাকে নবী মুসা (আ.) যখন সিনাই পর্বতে ৪০ দিন অবস্থান করেছিলেন, তখন ইসরায়েলিরা এই স্থানেই তাঁর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। সমালোচকদের মতে, এই নির্মাণকাজে এলাকার বিশেষ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যাচ্ছে।
ইউনেসকো বলেছে, দুর্গম পাহাড়ি প্রাকৃতিক দৃশ্যপট মঠের জন্য এক অনন্য পটভূমি তৈরি করেছে। এখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য ও নিঃসঙ্গতার সঙ্গে মানুষের আধ্যাত্মিকতার এক গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ২০২৩ সালেই ইউনেসকো মিশরকে উন্নয়নকাজ থামানোর, প্রকল্পের প্রভাব যাচাই করার এবং সংরক্ষণ পরিকল্পনা করার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু এখনো তা কার্যকর হয়নি।
গত জুলাইয়ে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ওয়াচ একটি খোলা চিঠি দিয়ে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটিকে অনুরোধ করে, সেন্ট ক্যাথেরিন এলাকাকে যেন বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ব্রিটেনের রাজা চার্লসের কাছেও আবেদন গেছে। তিনি সেন্ট ক্যাথেরিন ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষক।
মিশরে বিশাল উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা নতুন নয়। অনেক সময়ই অভিযোগ ওঠে—এসব পরিকল্পনায় দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীলতা দেখানো হয় না। তবে সরকারের দাবি, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে হলে এমন প্রকল্পই সবচেয়ে জরুরি।
কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে যখন মিশরের পর্যটন খাত ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছিল, তখন গাজার যুদ্ধ আর নতুন করে তৈরি হওয়া আঞ্চলিক অস্থিরতা আবারও বড় আঘাত হানে। তবুও সরকার ২০২৮ সালের মধ্যে ৩ কোটি পর্যটক টানার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে।
সিনাই উপদ্বীপে বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় বেদুইনদের মতামত না নিয়েই নানা উন্নয়ন কাজ চালানো হয়েছে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে অঞ্চলটি ইসরায়েলের দখলে গিয়েছিল। ১৯৭৯ সালে শান্তিচুক্তির পর তা ফের মিশরের হাতে এলেও বেদুইনদের অভিযোগ—তাদের এখনও দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বলে মনে করে সরকার।
১৯৮০-এর দশকেই স্থানীয়দের উচ্ছেদ করে লোহিত সাগরের তীরে শার্ম আল-শেখসহ নানা রিসোর্ট শহর গড়ে ওঠে।
হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে সেন্ট ক্যাথেরিন মঠ। শুরুর দিকে নির্জন স্থান থাকলেও লোহিত সাগরজুড়ে পর্যটন জমে উঠেছে। কেউ আসে মুসা (আ.) নবীর সঙ্গে আল্লাহর কথোপকথনের নিদর্শন সেই ‘জ্বলন্ত ঝোপ’-এর ধ্বংসাবশেষ দেখতে, কেউ দেখতে চায় কোডেক্স সিনাইটিকাস, যেটি নিউ টেস্টামেন্টের (খ্রিষ্টান বাইবেল) সর্বপ্রাচীন হাতে লেখা কপি।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ছবিতে যে স্থানটি দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয়ভাবে এটি পরিচিত জাবালে মুসা নামে। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই নবী মুসা (আ.)-এর সঙ্গে কথা বলেছিলেন আল্লাহ। পবিত্র কোরআন আর বাইবেলে বর্ণনা এমনি। এ ছাড়া, ষষ্ঠ শতকের সেন্ট ক্যাথেরিন মঠও এখানে অবস্থিত। এটি পরিচালনা করে গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ।
বাংলাদেশে অনেকের কাছে তুর পাহাড় নামে পরিচিত হলেও এর প্রকৃত নাম সিনাই পর্বত। আরবিতে যেটিকে বলা হয় তুরে সিনাই। আরবিতে তুরের অর্থ পাহাড়। বিশেষ ধর্মীয় গুরুত্বের কারণে এই স্থানের আলাদা আবেদন রয়েছে মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদীদের কাছে। যে কারণে, সারা বছরই এখানে এই তিন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের আনাগোনা থাকে।
তবে, সম্প্রতি তিন ধর্মের অন্যতম এই তীর্থস্থানে একটি বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে মিসর। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থানটিতে এখন গড়ে উঠছে বিলাসবহুল হোটেল, ভিলা এবং মার্কেট।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্থানে জেবেলিয়া নামক এক বেদুইন সম্পদায়ের বসবাস। বিলাসবহুল হোটেল ও মার্কেট নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে তাদের অনেকের বাড়ি-ঘর। অভিযোগ রয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা বা কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। আরও গুরুতর অভিযোগ হলো—সমাধিস্থল থেকে স্বজনদের মরদেহও তুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।

সিনাইয়ের আদি বাসিন্দাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন ব্রিটিশ লেখক বেন হফলার। তাঁর মতে, এই প্রকল্পকে দেশের জন্য একটি প্রয়োজনীয় ও টেকসই উন্নয়ন হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তবে, এই প্রকল্পের জন্য উচ্ছেদ হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় জেবেলিয়া গোষ্ঠীর কাছে এটি উন্নয়ন নয়। তাঁরা কখোনো এটা চাননি। এটা তাঁদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিকল্পনায় স্থানীয়দের চেয়ে বহিরাগতদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এতে স্থানীয়দের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, সিনাইয়ে প্রায় ৪ হাজার জেবেলিয়া বেদুইনের বসবাস। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে যা হচ্ছে তা নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে সরাসরি মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা।
এখন পর্যন্ত মিসরের এই পরিকল্পনা নিয়ে সবচেয়ে সরব অবস্থান নিয়েছে গ্রিস। সেন্ট ক্যাথরিন মঠের সঙ্গে দেশটির ঐতিহাসিক সম্পর্কই এর মূল কারণ।
চলতি বছরের মে মাসে একটি মিসরীয় আদালত রায় দেয়, বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সক্রিয় খ্রিস্টান মঠ সেন্ট ক্যাথরিন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে অবস্থিত। কয়েক দশক ধরে চলা বিরোধের পর বিচারকেরা বলেন, মঠটির জমি ও আশপাশে ছড়িয়ে থাকা ধর্মীয়-পুরাতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও সেগুলোর মালিকানা মঠের নয়।
এ রায়ের পর থেকেই কায়রো ও এথেন্সের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। গ্রিসের চার্চ প্রধান আর্চবিশপ দ্বিতীয় ইয়েরোনিমোস এ রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘মঠের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও দখল করা হচ্ছে। অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্ম ও হেলেনিজমের (গ্রিক ধর্ম) এই আধ্যাত্মিক বাতিঘরের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে।’
এক বিরল সাক্ষাৎকারে সেন্ট ক্যাথরিনের দীর্ঘদিনের আর্চবিশপ দামিয়ানোস গ্রিক একটি সংবাদপত্রকে বলেন, এই রায় তাঁদের জন্য ‘ভয়াবহ আঘাত এবং লজ্জার বিষয়’। এই ইস্যুতে তাঁর অবস্থান মঠের সন্ন্যাসীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে। এ কারণে, সম্প্রতি তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
জেরুজালেমের গ্রিক অর্থোডক্স প্যাট্রিয়ার্কেট জানিয়েছে, পবিত্র এই স্থানের ধর্মীয় এখতিয়ার তাঁদের হাতে এবং এর জন্য নবী মুহাম্মদ (সা.) নিজেই একটি সুরক্ষা চিঠি দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, বাইজেন্টাইন আমলের এই মঠের মধ্যে ফাতেমি যুগে নির্মিত একটি ছোট মসজিদও রয়েছে। এটি খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতি ও শান্তির প্রতীক। এটি যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীর জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল।’
যদিও আদালতের বিতর্কিত রায় এখনো বহাল আছে। তবে, কূটনৈতিক তৎপরতার পর শেষ পর্যন্ত গ্রিস ও মিশর যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছে যে সেন্ট ক্যাথরিন মঠের গ্রিক অর্থোডক্স পরিচয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষিত রাখা হবে।

পর্যটন খাতকে ঘিরে বড় ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা হিসেবে মিশর ২০২১ সালে শুরু করে গ্রেট ট্রান্সফিগারেশন প্রকল্প। এ পরিকল্পনায় নতুন হোটেল, ইকো-লজ, একটি বড় ভিজিটর সেন্টার, নিকটবর্তী ছোট বিমানবন্দর সম্প্রসারণ এবং সিনাই পর্বতে উঠতে ক্যাবল কার নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।
সরকার এই প্রকল্পকে প্রচার করছে ‘পুরো বিশ্ব ও সব ধর্মের জন্য মিশরের উপহার’ হিসেবে।
তবে অর্থসংকটের কারণে কাজ আপাতত কিছুটা থেমে আছে বলে ধারণা করা হলেও সেন্ট ক্যাথরিন মঠের সামনে আল-রাহা সমভূমি ইতিমধ্যেই পাল্টে গেছে। সেখানে নতুন রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। বলা হয়ে থাকে, আল্লাহর ডাকে নবী মুসা (আ.) যখন সিনাই পর্বতে ৪০ দিন অবস্থান করেছিলেন, তখন ইসরায়েলিরা এই স্থানেই তাঁর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। সমালোচকদের মতে, এই নির্মাণকাজে এলাকার বিশেষ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যাচ্ছে।
ইউনেসকো বলেছে, দুর্গম পাহাড়ি প্রাকৃতিক দৃশ্যপট মঠের জন্য এক অনন্য পটভূমি তৈরি করেছে। এখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য ও নিঃসঙ্গতার সঙ্গে মানুষের আধ্যাত্মিকতার এক গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ২০২৩ সালেই ইউনেসকো মিশরকে উন্নয়নকাজ থামানোর, প্রকল্পের প্রভাব যাচাই করার এবং সংরক্ষণ পরিকল্পনা করার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু এখনো তা কার্যকর হয়নি।
গত জুলাইয়ে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ওয়াচ একটি খোলা চিঠি দিয়ে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটিকে অনুরোধ করে, সেন্ট ক্যাথেরিন এলাকাকে যেন বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ব্রিটেনের রাজা চার্লসের কাছেও আবেদন গেছে। তিনি সেন্ট ক্যাথেরিন ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষক।
মিশরে বিশাল উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা নতুন নয়। অনেক সময়ই অভিযোগ ওঠে—এসব পরিকল্পনায় দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীলতা দেখানো হয় না। তবে সরকারের দাবি, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে হলে এমন প্রকল্পই সবচেয়ে জরুরি।
কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে যখন মিশরের পর্যটন খাত ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছিল, তখন গাজার যুদ্ধ আর নতুন করে তৈরি হওয়া আঞ্চলিক অস্থিরতা আবারও বড় আঘাত হানে। তবুও সরকার ২০২৮ সালের মধ্যে ৩ কোটি পর্যটক টানার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে।
সিনাই উপদ্বীপে বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় বেদুইনদের মতামত না নিয়েই নানা উন্নয়ন কাজ চালানো হয়েছে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে অঞ্চলটি ইসরায়েলের দখলে গিয়েছিল। ১৯৭৯ সালে শান্তিচুক্তির পর তা ফের মিশরের হাতে এলেও বেদুইনদের অভিযোগ—তাদের এখনও দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বলে মনে করে সরকার।
১৯৮০-এর দশকেই স্থানীয়দের উচ্ছেদ করে লোহিত সাগরের তীরে শার্ম আল-শেখসহ নানা রিসোর্ট শহর গড়ে ওঠে।
হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে সেন্ট ক্যাথেরিন মঠ। শুরুর দিকে নির্জন স্থান থাকলেও লোহিত সাগরজুড়ে পর্যটন জমে উঠেছে। কেউ আসে মুসা (আ.) নবীর সঙ্গে আল্লাহর কথোপকথনের নিদর্শন সেই ‘জ্বলন্ত ঝোপ’-এর ধ্বংসাবশেষ দেখতে, কেউ দেখতে চায় কোডেক্স সিনাইটিকাস, যেটি নিউ টেস্টামেন্টের (খ্রিষ্টান বাইবেল) সর্বপ্রাচীন হাতে লেখা কপি।

ছবিতে যে স্থানটি দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয়ভাবে এটি পরিচিত জাবালে মুসা নামে। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই নবী মুসা (আ.)-এর সঙ্গে কথা বলেছিলেন আল্লাহ। পবিত্র কোরআন আর বাইবেলে বর্ণনা এমনি। এ ছাড়া, ষষ্ঠ শতকের সেন্ট ক্যাথেরিন মঠও এখানে অবস্থিত। এটি পরিচালনা করে গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ।
বাংলাদেশে অনেকের কাছে তুর পাহাড় নামে পরিচিত হলেও এর প্রকৃত নাম সিনাই পর্বত। আরবিতে যেটিকে বলা হয় তুরে সিনাই। আরবিতে তুরের অর্থ পাহাড়। বিশেষ ধর্মীয় গুরুত্বের কারণে এই স্থানের আলাদা আবেদন রয়েছে মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদীদের কাছে। যে কারণে, সারা বছরই এখানে এই তিন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের আনাগোনা থাকে।
তবে, সম্প্রতি তিন ধর্মের অন্যতম এই তীর্থস্থানে একটি বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে মিসর। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থানটিতে এখন গড়ে উঠছে বিলাসবহুল হোটেল, ভিলা এবং মার্কেট।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্থানে জেবেলিয়া নামক এক বেদুইন সম্পদায়ের বসবাস। বিলাসবহুল হোটেল ও মার্কেট নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে তাদের অনেকের বাড়ি-ঘর। অভিযোগ রয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা বা কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। আরও গুরুতর অভিযোগ হলো—সমাধিস্থল থেকে স্বজনদের মরদেহও তুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।

সিনাইয়ের আদি বাসিন্দাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন ব্রিটিশ লেখক বেন হফলার। তাঁর মতে, এই প্রকল্পকে দেশের জন্য একটি প্রয়োজনীয় ও টেকসই উন্নয়ন হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তবে, এই প্রকল্পের জন্য উচ্ছেদ হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় জেবেলিয়া গোষ্ঠীর কাছে এটি উন্নয়ন নয়। তাঁরা কখোনো এটা চাননি। এটা তাঁদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিকল্পনায় স্থানীয়দের চেয়ে বহিরাগতদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এতে স্থানীয়দের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, সিনাইয়ে প্রায় ৪ হাজার জেবেলিয়া বেদুইনের বসবাস। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে যা হচ্ছে তা নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে সরাসরি মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা।
এখন পর্যন্ত মিসরের এই পরিকল্পনা নিয়ে সবচেয়ে সরব অবস্থান নিয়েছে গ্রিস। সেন্ট ক্যাথরিন মঠের সঙ্গে দেশটির ঐতিহাসিক সম্পর্কই এর মূল কারণ।
চলতি বছরের মে মাসে একটি মিসরীয় আদালত রায় দেয়, বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সক্রিয় খ্রিস্টান মঠ সেন্ট ক্যাথরিন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে অবস্থিত। কয়েক দশক ধরে চলা বিরোধের পর বিচারকেরা বলেন, মঠটির জমি ও আশপাশে ছড়িয়ে থাকা ধর্মীয়-পুরাতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও সেগুলোর মালিকানা মঠের নয়।
এ রায়ের পর থেকেই কায়রো ও এথেন্সের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। গ্রিসের চার্চ প্রধান আর্চবিশপ দ্বিতীয় ইয়েরোনিমোস এ রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘মঠের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও দখল করা হচ্ছে। অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্ম ও হেলেনিজমের (গ্রিক ধর্ম) এই আধ্যাত্মিক বাতিঘরের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে।’
এক বিরল সাক্ষাৎকারে সেন্ট ক্যাথরিনের দীর্ঘদিনের আর্চবিশপ দামিয়ানোস গ্রিক একটি সংবাদপত্রকে বলেন, এই রায় তাঁদের জন্য ‘ভয়াবহ আঘাত এবং লজ্জার বিষয়’। এই ইস্যুতে তাঁর অবস্থান মঠের সন্ন্যাসীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে। এ কারণে, সম্প্রতি তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
জেরুজালেমের গ্রিক অর্থোডক্স প্যাট্রিয়ার্কেট জানিয়েছে, পবিত্র এই স্থানের ধর্মীয় এখতিয়ার তাঁদের হাতে এবং এর জন্য নবী মুহাম্মদ (সা.) নিজেই একটি সুরক্ষা চিঠি দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, বাইজেন্টাইন আমলের এই মঠের মধ্যে ফাতেমি যুগে নির্মিত একটি ছোট মসজিদও রয়েছে। এটি খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতি ও শান্তির প্রতীক। এটি যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীর জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল।’
যদিও আদালতের বিতর্কিত রায় এখনো বহাল আছে। তবে, কূটনৈতিক তৎপরতার পর শেষ পর্যন্ত গ্রিস ও মিশর যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছে যে সেন্ট ক্যাথরিন মঠের গ্রিক অর্থোডক্স পরিচয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষিত রাখা হবে।

পর্যটন খাতকে ঘিরে বড় ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা হিসেবে মিশর ২০২১ সালে শুরু করে গ্রেট ট্রান্সফিগারেশন প্রকল্প। এ পরিকল্পনায় নতুন হোটেল, ইকো-লজ, একটি বড় ভিজিটর সেন্টার, নিকটবর্তী ছোট বিমানবন্দর সম্প্রসারণ এবং সিনাই পর্বতে উঠতে ক্যাবল কার নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।
সরকার এই প্রকল্পকে প্রচার করছে ‘পুরো বিশ্ব ও সব ধর্মের জন্য মিশরের উপহার’ হিসেবে।
তবে অর্থসংকটের কারণে কাজ আপাতত কিছুটা থেমে আছে বলে ধারণা করা হলেও সেন্ট ক্যাথরিন মঠের সামনে আল-রাহা সমভূমি ইতিমধ্যেই পাল্টে গেছে। সেখানে নতুন রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। বলা হয়ে থাকে, আল্লাহর ডাকে নবী মুসা (আ.) যখন সিনাই পর্বতে ৪০ দিন অবস্থান করেছিলেন, তখন ইসরায়েলিরা এই স্থানেই তাঁর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। সমালোচকদের মতে, এই নির্মাণকাজে এলাকার বিশেষ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যাচ্ছে।
ইউনেসকো বলেছে, দুর্গম পাহাড়ি প্রাকৃতিক দৃশ্যপট মঠের জন্য এক অনন্য পটভূমি তৈরি করেছে। এখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য ও নিঃসঙ্গতার সঙ্গে মানুষের আধ্যাত্মিকতার এক গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ২০২৩ সালেই ইউনেসকো মিশরকে উন্নয়নকাজ থামানোর, প্রকল্পের প্রভাব যাচাই করার এবং সংরক্ষণ পরিকল্পনা করার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু এখনো তা কার্যকর হয়নি।
গত জুলাইয়ে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ওয়াচ একটি খোলা চিঠি দিয়ে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটিকে অনুরোধ করে, সেন্ট ক্যাথেরিন এলাকাকে যেন বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ব্রিটেনের রাজা চার্লসের কাছেও আবেদন গেছে। তিনি সেন্ট ক্যাথেরিন ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষক।
মিশরে বিশাল উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা নতুন নয়। অনেক সময়ই অভিযোগ ওঠে—এসব পরিকল্পনায় দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীলতা দেখানো হয় না। তবে সরকারের দাবি, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে হলে এমন প্রকল্পই সবচেয়ে জরুরি।
কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে যখন মিশরের পর্যটন খাত ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছিল, তখন গাজার যুদ্ধ আর নতুন করে তৈরি হওয়া আঞ্চলিক অস্থিরতা আবারও বড় আঘাত হানে। তবুও সরকার ২০২৮ সালের মধ্যে ৩ কোটি পর্যটক টানার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে।
সিনাই উপদ্বীপে বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় বেদুইনদের মতামত না নিয়েই নানা উন্নয়ন কাজ চালানো হয়েছে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে অঞ্চলটি ইসরায়েলের দখলে গিয়েছিল। ১৯৭৯ সালে শান্তিচুক্তির পর তা ফের মিশরের হাতে এলেও বেদুইনদের অভিযোগ—তাদের এখনও দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বলে মনে করে সরকার।
১৯৮০-এর দশকেই স্থানীয়দের উচ্ছেদ করে লোহিত সাগরের তীরে শার্ম আল-শেখসহ নানা রিসোর্ট শহর গড়ে ওঠে।
হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে সেন্ট ক্যাথেরিন মঠ। শুরুর দিকে নির্জন স্থান থাকলেও লোহিত সাগরজুড়ে পর্যটন জমে উঠেছে। কেউ আসে মুসা (আ.) নবীর সঙ্গে আল্লাহর কথোপকথনের নিদর্শন সেই ‘জ্বলন্ত ঝোপ’-এর ধ্বংসাবশেষ দেখতে, কেউ দেখতে চায় কোডেক্স সিনাইটিকাস, যেটি নিউ টেস্টামেন্টের (খ্রিষ্টান বাইবেল) সর্বপ্রাচীন হাতে লেখা কপি।

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৬ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২৬ মিনিট আগে
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
২ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই, পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

বিলাসবহুল হোটেল ও মার্কেট নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে স্থানীয় বেদুইনদের বাড়ি-ঘর। অভিযোগ রয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা বা কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। আরও গুরুতর অভিযোগ হলো—সমাধিস্থল থেকে স্বজনদের মরদেহও তুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২৬ মিনিট আগে
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
২ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই, পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় ভুলভাবে আটক হওয়া, আটক অবস্থায় নির্যাতন, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, স্থানীয় আইনের স্বেচ্ছাচারী প্রয়োগ, অপরাধ, নাগরিক অস্থিরতা এবং দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। তাই দেশটিতে ভ্রমণ না করতে এবং সেখানে অবস্থান না করতে মার্কিন নাগরিকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
ঘোষণায় আরও বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও আইনগত স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশ ছাড়তে জোরালো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই সতর্কবার্তা এল এমন এক সময়, যার কয়েক ঘণ্টা আগেই যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রাণঘাতী হামলায় অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নৌকা লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনী হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত হয়েছেন বলে ইউএস সাউদার্ন কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়।
সামরিক কর্মকর্তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলাচলকারী এই নৌযানটি একটি ‘সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত সংগঠনের’ সঙ্গে যুক্ত। গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, নৌকাটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর পথে অবৈধ মাদক পরিবহন করছিল। এক্সে দেওয়া পোস্টে সাউদার্ন কমান্ড জানায়, নৌকায় থাকা চার পুরুষ ‘মাদকসন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বহু ইঞ্জিনবিশিষ্ট দ্রুতগতির নৌকাটি আচমকা একটি প্রবল বিস্ফোরণে আঘাত পেয়ে আগুনে ঘিরে যায়।
ঘটনাটি অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত মাদকবিরোধী সামরিক অভিযানের অংশ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই অভিযান নিয়ে সমালোচনা বেড়েছে, কারণ এতে নিহতের সংখ্যা এখন ৮৫–এর বেশি ছাড়িয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনার জেরে একযোগে ছয়টি বড় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনের অবতরণ ও উড্ডয়নের অনুমতি বাতিল করেছে ভেনেজুয়েলা। এর আগে মার্কিন সতর্কবার্তার প্রেক্ষিতে ভেনেজুয়েলার কারাকাসগামী ফ্লাইটগুলো স্থগিত করেছিল এই এয়ারলাইনগুলো। পরে ভেনেজুয়েলা তাদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় ২৭ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ হওয়া এয়ারলাইনগুলো হলো—আইবেরিয়া, টিএপি পর্তুগাল, গোল, লাতাম, অ্যাভিয়াঙ্কা এবং টার্কিশ এয়ারলাইনস। ভেনেজুয়েলার এই সিদ্ধান্তে হাজারো যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। তবে কিছু ছোট ছোট এয়ারলাইন এখনো দেশটিতে যাতায়াত করছে।
সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ঘিরে এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলীয় এলাকায় ১৫ হাজার সেনা এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটন বলছে, এই অভিযান মাদকবিরোধী তৎপরতার অংশ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এত বড় সামরিক উপস্থিতি সাধারণত দেখা যায় না।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় ভুলভাবে আটক হওয়া, আটক অবস্থায় নির্যাতন, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, স্থানীয় আইনের স্বেচ্ছাচারী প্রয়োগ, অপরাধ, নাগরিক অস্থিরতা এবং দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। তাই দেশটিতে ভ্রমণ না করতে এবং সেখানে অবস্থান না করতে মার্কিন নাগরিকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
ঘোষণায় আরও বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও আইনগত স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশ ছাড়তে জোরালো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই সতর্কবার্তা এল এমন এক সময়, যার কয়েক ঘণ্টা আগেই যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রাণঘাতী হামলায় অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নৌকা লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনী হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত হয়েছেন বলে ইউএস সাউদার্ন কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়।
সামরিক কর্মকর্তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলাচলকারী এই নৌযানটি একটি ‘সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত সংগঠনের’ সঙ্গে যুক্ত। গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, নৌকাটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর পথে অবৈধ মাদক পরিবহন করছিল। এক্সে দেওয়া পোস্টে সাউদার্ন কমান্ড জানায়, নৌকায় থাকা চার পুরুষ ‘মাদকসন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বহু ইঞ্জিনবিশিষ্ট দ্রুতগতির নৌকাটি আচমকা একটি প্রবল বিস্ফোরণে আঘাত পেয়ে আগুনে ঘিরে যায়।
ঘটনাটি অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত মাদকবিরোধী সামরিক অভিযানের অংশ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই অভিযান নিয়ে সমালোচনা বেড়েছে, কারণ এতে নিহতের সংখ্যা এখন ৮৫–এর বেশি ছাড়িয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনার জেরে একযোগে ছয়টি বড় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনের অবতরণ ও উড্ডয়নের অনুমতি বাতিল করেছে ভেনেজুয়েলা। এর আগে মার্কিন সতর্কবার্তার প্রেক্ষিতে ভেনেজুয়েলার কারাকাসগামী ফ্লাইটগুলো স্থগিত করেছিল এই এয়ারলাইনগুলো। পরে ভেনেজুয়েলা তাদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় ২৭ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ হওয়া এয়ারলাইনগুলো হলো—আইবেরিয়া, টিএপি পর্তুগাল, গোল, লাতাম, অ্যাভিয়াঙ্কা এবং টার্কিশ এয়ারলাইনস। ভেনেজুয়েলার এই সিদ্ধান্তে হাজারো যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। তবে কিছু ছোট ছোট এয়ারলাইন এখনো দেশটিতে যাতায়াত করছে।
সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ঘিরে এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলীয় এলাকায় ১৫ হাজার সেনা এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটন বলছে, এই অভিযান মাদকবিরোধী তৎপরতার অংশ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এত বড় সামরিক উপস্থিতি সাধারণত দেখা যায় না।

বিলাসবহুল হোটেল ও মার্কেট নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে স্থানীয় বেদুইনদের বাড়ি-ঘর। অভিযোগ রয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা বা কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। আরও গুরুতর অভিযোগ হলো—সমাধিস্থল থেকে স্বজনদের মরদেহও তুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৬ মিনিট আগে
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
২ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই, পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসাবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত-দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনী প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭ তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে, একটি মাত্র অফিসের অধীনে সশস্ত্রবাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিনবাহিনী সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফ-এর হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭ তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএ-এর ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (১) এখন জানাচ্ছে যে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনী প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন […], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফ-এর বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফ-এরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭ তম সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসি-এর মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনঃ নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।
ফলস্বরূপ, ২৭ তম সংশোধনীর অধীনে এই পুনর্গঠনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে, পিএএ-এর সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে সিওএএসসহ-সিডিএফ-কে আরও পাঁচ বছরের জন্য পুনঃ নিয়োগ বা তাঁর মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে। এর ফলে তিনি ২০৩৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্তও পদে থাকতে পারেন।
এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা ব্যাপক জল্পনা বাড়িয়েছিল। বিশেষ করে, যখন ২৭ নভেম্বর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা অবসর নেওয়ার পর সিজেসিএসসি পদটি বিলুপ্ত হয়। ফিল্ড মার্শাল মুনির-এর আসল তিন বছরের সেনাপ্রধানের মেয়াদ (গত বছরের সংশোধনীর আগে) ২৯ নভেম্বরে শেষ হয়, কিন্তু সেদিনও কোনো বিজ্ঞপ্তি না আসায় আরও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, সরকার হয়তো আসন্ন চার-তারকা পদের নিয়োগ নিয়ে দর-কষাকষির জন্য এই নিয়োগ আটকে রেখেছিল।
রাজনৈতিক মহল থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের নতুন কমান্ডার (সিএনএসসি), ভাইস চিফ অব দ্য আর্মি স্টাফ (ভিসিওএএস) এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য আইএসআই প্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে দরদাম করতেই এই দেরি। সেনাবাহিনী আগেই স্পষ্ট করেছিল যে, কোনো ভিসিওএএস নিয়োগ করা হচ্ছে না। তবে সংশোধিত আইন অনুযায়ী, সিএনএসসি এবং যেকোনো ভিসিওএএস-এর নিয়োগ সিডিএফ-এর সুপারিশের সঙ্গে যুক্ত।
সরকারি কর্মকর্তারা বারবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো উত্তেজনার কথা অস্বীকার করেছেন, জানিয়েছেন যে প্রক্রিয়াগত প্রয়োজনীয়তা ও প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের সূচি সময়রেখা নির্ধারণ করেছে। তবুও, ২৭ তম সংশোধনী যেভাবে তাড়াহুড়ো করে সংসদে পাশ করানো হয়েছিল, তার পরে এমন নীরবতাকে অনেকে অস্বাভাবিক বলে মনে করেছেন। এই সংশোধনী কেন্দ্রীয় সরকারকে সিডিএফ-এর কার্যাবলি নির্ধারণের ক্ষমতাও দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বহু-ডোমেন ইন্টিগ্রেশন, পুনর্গঠন এবং সার্ভিসগুলোর মধ্যে যৌথতা বাড়ানো।
এদিকে, আইনসচিব আজম নাজির তারার জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সিডিএফ-এর জন্য একটি নতুন অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত করছে এবং এর খসড়া একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সিডিএফ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কোনো মতপার্থক্যের ধারণা তিনি নাকচ করে দেন, জোর দিয়ে বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর দেশের বাইরে থাকার কারণেই এই বিলম্ব। কর্মকর্তারা বলছেন, এই অর্গানোগ্রামেই সিডিএফ, সার্ভিস চিফ ও নতুন প্রতিষ্ঠিত কৌশলগত কমান্ডের মধ্যে কমান্ডের প্রবাহ কেমন হবে, তা উল্লেখ করা থাকবে।
সিডিএফ-এর নিয়োগ অনুমোদনের পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট জারদারি বিমানবাহিনীর নেতৃত্বের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শও অনুমোদন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ভবন জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমদ বাবর সিধুর জন্য ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ থেকে দুই বছরের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছেন।’
এই মেয়াদ বৃদ্ধিটি আগামী বছরের মার্চে তাঁর বর্তমান পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কার্যকর হবে, যা তাঁকে ২০২৮ সালের মার্চ পর্যন্ত পদে বহাল রাখবে।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসাবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত-দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনী প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭ তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে, একটি মাত্র অফিসের অধীনে সশস্ত্রবাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিনবাহিনী সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফ-এর হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭ তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএ-এর ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (১) এখন জানাচ্ছে যে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনী প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন […], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফ-এর বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফ-এরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭ তম সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসি-এর মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনঃ নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।
ফলস্বরূপ, ২৭ তম সংশোধনীর অধীনে এই পুনর্গঠনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে, পিএএ-এর সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে সিওএএসসহ-সিডিএফ-কে আরও পাঁচ বছরের জন্য পুনঃ নিয়োগ বা তাঁর মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে। এর ফলে তিনি ২০৩৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্তও পদে থাকতে পারেন।
এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা ব্যাপক জল্পনা বাড়িয়েছিল। বিশেষ করে, যখন ২৭ নভেম্বর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা অবসর নেওয়ার পর সিজেসিএসসি পদটি বিলুপ্ত হয়। ফিল্ড মার্শাল মুনির-এর আসল তিন বছরের সেনাপ্রধানের মেয়াদ (গত বছরের সংশোধনীর আগে) ২৯ নভেম্বরে শেষ হয়, কিন্তু সেদিনও কোনো বিজ্ঞপ্তি না আসায় আরও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, সরকার হয়তো আসন্ন চার-তারকা পদের নিয়োগ নিয়ে দর-কষাকষির জন্য এই নিয়োগ আটকে রেখেছিল।
রাজনৈতিক মহল থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের নতুন কমান্ডার (সিএনএসসি), ভাইস চিফ অব দ্য আর্মি স্টাফ (ভিসিওএএস) এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য আইএসআই প্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে দরদাম করতেই এই দেরি। সেনাবাহিনী আগেই স্পষ্ট করেছিল যে, কোনো ভিসিওএএস নিয়োগ করা হচ্ছে না। তবে সংশোধিত আইন অনুযায়ী, সিএনএসসি এবং যেকোনো ভিসিওএএস-এর নিয়োগ সিডিএফ-এর সুপারিশের সঙ্গে যুক্ত।
সরকারি কর্মকর্তারা বারবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো উত্তেজনার কথা অস্বীকার করেছেন, জানিয়েছেন যে প্রক্রিয়াগত প্রয়োজনীয়তা ও প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের সূচি সময়রেখা নির্ধারণ করেছে। তবুও, ২৭ তম সংশোধনী যেভাবে তাড়াহুড়ো করে সংসদে পাশ করানো হয়েছিল, তার পরে এমন নীরবতাকে অনেকে অস্বাভাবিক বলে মনে করেছেন। এই সংশোধনী কেন্দ্রীয় সরকারকে সিডিএফ-এর কার্যাবলি নির্ধারণের ক্ষমতাও দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বহু-ডোমেন ইন্টিগ্রেশন, পুনর্গঠন এবং সার্ভিসগুলোর মধ্যে যৌথতা বাড়ানো।
এদিকে, আইনসচিব আজম নাজির তারার জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সিডিএফ-এর জন্য একটি নতুন অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত করছে এবং এর খসড়া একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সিডিএফ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কোনো মতপার্থক্যের ধারণা তিনি নাকচ করে দেন, জোর দিয়ে বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর দেশের বাইরে থাকার কারণেই এই বিলম্ব। কর্মকর্তারা বলছেন, এই অর্গানোগ্রামেই সিডিএফ, সার্ভিস চিফ ও নতুন প্রতিষ্ঠিত কৌশলগত কমান্ডের মধ্যে কমান্ডের প্রবাহ কেমন হবে, তা উল্লেখ করা থাকবে।
সিডিএফ-এর নিয়োগ অনুমোদনের পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট জারদারি বিমানবাহিনীর নেতৃত্বের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শও অনুমোদন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ভবন জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমদ বাবর সিধুর জন্য ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ থেকে দুই বছরের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছেন।’
এই মেয়াদ বৃদ্ধিটি আগামী বছরের মার্চে তাঁর বর্তমান পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কার্যকর হবে, যা তাঁকে ২০২৮ সালের মার্চ পর্যন্ত পদে বহাল রাখবে।

বিলাসবহুল হোটেল ও মার্কেট নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে স্থানীয় বেদুইনদের বাড়ি-ঘর। অভিযোগ রয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা বা কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। আরও গুরুতর অভিযোগ হলো—সমাধিস্থল থেকে স্বজনদের মরদেহও তুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৬ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২৬ মিনিট আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই, পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লিতে অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পর পুতিন ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেতে এই মন্তব্য মন্তব্য করেন। এই সফরের সময় উভয় দেশ পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের কারণে যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতকে রাশিয়াকে এড়িয়ে চলতে চাপ দিচ্ছে, ঠিক তখন চার বছরে পুতিনের এই প্রথম ভারত সফরের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার তেল, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং যুদ্ধবিমানের বিক্রি বাড়ানো, এবং জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বাইরেও ব্যবসায়িক সম্পর্ক প্রসারিত করা।
নয়াদিল্লি এবং মস্কোর মধ্যে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং বহু দশক ধরে রাশিয়া ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহের উৎস। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারত সমুদ্রপথে আসা রাশিয়ার তেলের শীর্ষ ক্রেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যখন বলছে যে ভারতের সস্তায় রুশ তেল কেনা মস্কোর ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়নে সাহায্য করছে, তখন ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্ক এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর হওয়ার ফলে এই মাসে ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হতে চলেছে।
পুতিন ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এখনো তার নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে। সেটিও তো জ্বালানি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রের আমাদের জ্বালানি কেনার অধিকার থাকে, তবে ভারতের কেন একই সুযোগ থাকবে না? এই প্রশ্নটির পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা প্রয়োজন, এবং আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
ভারত বলেছে যে ট্রাম্পের শুল্ক অন্যায্য এবং অযৌক্তিক এবং মস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যের দিকে ইঙ্গিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে শুরু করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পর্যন্ত কোটি কোটি ডলারের রাশিয়ান জ্বালানি ও পণ্য আমদানি অব্যাহত রেখেছে।
পশ্চিমাদের চাপের কারণে ভারতীয় তেলের ক্রয় কমেছে কি না জানতে চাইলে পুতিন বলেন, ‘এই বছরের প্রথম ৯ মাসে সামগ্রিক বাণিজ্যের পরিমাণে কিছুটা হ্রাস দেখা গেছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘এটা কেবল একটি সামান্য সমন্বয়। সামগ্রিকভাবে, আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় আগের মতোই আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পেট্রোলিয়াম পণ্য এবং অপরিশোধিত তেল... রাশিয়ার তেলের বাণিজ্য ভারতে মসৃণভাবে চলছে।’
ভারত ও রাশিয়ার ট্রাম্প এবং তাঁর শুল্কের সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করা উচিত জানতে চাইলে পুতিন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন কিছু উপদেষ্টা আছেন, যাঁরা বিশ্বাস করেন যে এই ধরনের শুল্কনীতি বাস্তবায়ন চূড়ান্তভাবে মার্কিন অর্থনীতির জন্য উপকারী। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি যে শেষ পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সকল নিয়ম লঙ্ঘন সংশোধন করা হবে।’
এর কয়েক ঘণ্টা আগে নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে বিমানবন্দরে পুতিনকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরের রানওয়েতে লালগালিচার ওপর তাঁরা একে অপরকে আলিঙ্গন করেন এবং তারপর প্রধানমন্ত্রী মোদি আয়োজিত একটি ব্যক্তিগত নৈশভোজের জন্য একই গাড়িতে চলে যান।
পুতিনের এই সফরে রাশিয়ার ঊর্ধ্বতন মন্ত্রী এবং একটি বড় রাশিয়ান ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লিতে উপস্থিত ছিল। শুক্রবার দুই নেতা শীর্ষ বৈঠক করবেন, যেখানে একাধিক চুক্তি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লিতে অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পর পুতিন ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেতে এই মন্তব্য মন্তব্য করেন। এই সফরের সময় উভয় দেশ পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের কারণে যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতকে রাশিয়াকে এড়িয়ে চলতে চাপ দিচ্ছে, ঠিক তখন চার বছরে পুতিনের এই প্রথম ভারত সফরের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার তেল, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং যুদ্ধবিমানের বিক্রি বাড়ানো, এবং জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বাইরেও ব্যবসায়িক সম্পর্ক প্রসারিত করা।
নয়াদিল্লি এবং মস্কোর মধ্যে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং বহু দশক ধরে রাশিয়া ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহের উৎস। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারত সমুদ্রপথে আসা রাশিয়ার তেলের শীর্ষ ক্রেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যখন বলছে যে ভারতের সস্তায় রুশ তেল কেনা মস্কোর ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়নে সাহায্য করছে, তখন ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্ক এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর হওয়ার ফলে এই মাসে ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হতে চলেছে।
পুতিন ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এখনো তার নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে। সেটিও তো জ্বালানি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রের আমাদের জ্বালানি কেনার অধিকার থাকে, তবে ভারতের কেন একই সুযোগ থাকবে না? এই প্রশ্নটির পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা প্রয়োজন, এবং আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
ভারত বলেছে যে ট্রাম্পের শুল্ক অন্যায্য এবং অযৌক্তিক এবং মস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যের দিকে ইঙ্গিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে শুরু করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পর্যন্ত কোটি কোটি ডলারের রাশিয়ান জ্বালানি ও পণ্য আমদানি অব্যাহত রেখেছে।
পশ্চিমাদের চাপের কারণে ভারতীয় তেলের ক্রয় কমেছে কি না জানতে চাইলে পুতিন বলেন, ‘এই বছরের প্রথম ৯ মাসে সামগ্রিক বাণিজ্যের পরিমাণে কিছুটা হ্রাস দেখা গেছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘এটা কেবল একটি সামান্য সমন্বয়। সামগ্রিকভাবে, আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় আগের মতোই আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পেট্রোলিয়াম পণ্য এবং অপরিশোধিত তেল... রাশিয়ার তেলের বাণিজ্য ভারতে মসৃণভাবে চলছে।’
ভারত ও রাশিয়ার ট্রাম্প এবং তাঁর শুল্কের সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করা উচিত জানতে চাইলে পুতিন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন কিছু উপদেষ্টা আছেন, যাঁরা বিশ্বাস করেন যে এই ধরনের শুল্কনীতি বাস্তবায়ন চূড়ান্তভাবে মার্কিন অর্থনীতির জন্য উপকারী। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি যে শেষ পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সকল নিয়ম লঙ্ঘন সংশোধন করা হবে।’
এর কয়েক ঘণ্টা আগে নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে বিমানবন্দরে পুতিনকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরের রানওয়েতে লালগালিচার ওপর তাঁরা একে অপরকে আলিঙ্গন করেন এবং তারপর প্রধানমন্ত্রী মোদি আয়োজিত একটি ব্যক্তিগত নৈশভোজের জন্য একই গাড়িতে চলে যান।
পুতিনের এই সফরে রাশিয়ার ঊর্ধ্বতন মন্ত্রী এবং একটি বড় রাশিয়ান ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লিতে উপস্থিত ছিল। শুক্রবার দুই নেতা শীর্ষ বৈঠক করবেন, যেখানে একাধিক চুক্তি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

বিলাসবহুল হোটেল ও মার্কেট নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে স্থানীয় বেদুইনদের বাড়ি-ঘর। অভিযোগ রয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা বা কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। আরও গুরুতর অভিযোগ হলো—সমাধিস্থল থেকে স্বজনদের মরদেহও তুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৬ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২৬ মিনিট আগে
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
২ ঘণ্টা আগে