Ajker Patrika

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার পক্ষে কী প্রমাণ দিল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বুধবার ভারতের জম্মু অঞ্চলের পুঞ্চ জেলার প্রধান শহরে একটি আর্টিলারি শেল আঘাত হানার পর ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। ছবি: এএফপি
বুধবার ভারতের জম্মু অঞ্চলের পুঞ্চ জেলার প্রধান শহরে একটি আর্টিলারি শেল আঘাত হানার পর ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। ছবি: এএফপি

কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে দেশটির বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। বুধবার (৭ মে) মধ্যরাত ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এই পাল্টা হামলা চালানো হয় পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু কাশ্মীর অঞ্চলে।

তবে পেহেলগামে জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার পেছনে কী প্রমাণ ছিল ভারতের কাছে? যেই প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে প্রতিশোধমূলক আক্রমণ চালাল দেশটি? চলুন, জানি পুরো বিষয়টির আদ্যোপান্ত।

গত ২২ এপ্রিল ট্যুরিস্ট মৌসুমের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এই হামলাকে বলা হচ্ছে কয়েক দশকের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, চার থেকে ছয়জন সশস্ত্র ব্যক্তি সামরিক পোশাকে একটি নিকটবর্তী জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে এবং কাছ থেকে নির্বিচার গুলি চালায়।

বুধবার ভারতের জম্মু অঞ্চলের পুঞ্চ জেলার প্রধান শহরে একটি আর্টিলারি শেল আঘাত হানার পর ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। ছবি: এএফপি
বুধবার ভারতের জম্মু অঞ্চলের পুঞ্চ জেলার প্রধান শহরে একটি আর্টিলারি শেল আঘাত হানার পর ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। ছবি: এএফপি

প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে ‘অপারেশন সিন্দুর’ পরিচালনা করেছে। এই অপারেশন কাশ্মীর সীমান্তবর্তী ভারতের আকাশসীমা থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত হেনেছে। আঘাত হানা স্থাপনাগুলো সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি ও অবকাঠামো ছিল। এসব এলাকা থেকে ভারতের ওপর আরও সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পনা ও পরিচালনা করা হচ্ছিল।

তারা আরও জানায়, ভারতীয় সেনাবাহিনী মোট নয়টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। বুধবার রাজধানী দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলায় লক্ষ্যবস্তু করা সন্ত্রাসী ক্যাম্পগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে এবং বিমান হামলার কিছু আকাশচিত্র প্রদর্শন করে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং বলেন, ‘অপারেশন সিন্দুরের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং এগুলোর সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনায় জড়িত থাকার প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে। যেসব স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, সেগুলো বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। এটা ছিল অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করা একটি কাজ। এখন যেসব ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলোর ছবি আমরা আপনাদের দেখাব।’

বুধবার জম্মুর উপকণ্ঠে আখনুরের কাছে একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর ধ্বংসাবশেষ থেকে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন দমকলকর্মীরা। ছবি: এএফপি
বুধবার জম্মুর উপকণ্ঠে আখনুরের কাছে একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর ধ্বংসাবশেষ থেকে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন দমকলকর্মীরা। ছবি: এএফপি

তিনি আরও জানান, ভারতের এই সীমান্তবর্তী অভিযানে ‘নির্ভুল প্রযুক্তি’ ব্যবহার করা হয়েছে। সুনিপণ যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে কোনো অতিরিক্ত ক্ষয়ক্ষতি না হয়। প্রতিটি লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে একটি নির্দিষ্ট ভবন বা ভবনগোছের ওপর। এতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারত্বের প্রমাণ মেলে। ভারত অনেক সহনশীলতা দেখিয়েছে এই প্রতিক্রিয়ায়। তবে এটা স্পষ্ট করে বলা দরকার, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের কোনো ‘দুঃসাহসিকতা’র জবাব দিতে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত, যদি তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়।

ভারতের পক্ষ থেকে যেসব জায়গায় হামলা চালানোর কথা বলা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান-অধিকৃত মুজাফফরাবাদ, কোটলি, রাওয়ালকোট, চাকস্বাড়ি, ভিম্বার, নীলম উপত্যকা, ঝেলম ও চকওয়াল এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরের বাহাওয়ালপুর।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতের এই বিমান হামলাকে ‘যুদ্ধের ঘোষণাস্বরূপ’ বলে আখ্যায়িত করে জানিয়েছেন, ইসলামাবাদের ‘উপযুক্ত ও কড়া জবাব’ দেওয়ার অধিকার রয়েছে।

দ্য ইনডিপেনডেন্ট প্রকাশিত মানচিত্রে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় সামরিক হামলার লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
দ্য ইনডিপেনডেন্ট প্রকাশিত মানচিত্রে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় সামরিক হামলার লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

পেহেলগাম হামলার পরদিন ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে। তখন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ভারতের শাস্তিমূলক পদক্ষেপকে ‘অপরিপক্ব’ ও ‘তড়িঘড়ি’ বলে অভিহিত করেন। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ভারত কোনো প্রমাণ দেয়নি। তারা প্রতিক্রিয়ায় কোনো পরিপক্বতা দেখায়নি। এটি একেবারে কাঁচা পদক্ষেপ। ঘটনাটির পরপরই তারা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।’

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান সৈয়দ আসিম মুনির জানিয়েছেন, ভারতের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতের বিমান হামলাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাঁরা শুধু পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত ভূখণ্ডে অবস্থিত সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করেছে। পাকিস্তানের সামরিক অবকাঠামোতে কোনো আঘাত হানা হয়নি।

ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমাদের পদক্ষেপ ছিল সুপরিকল্পিত, নিয়ন্ত্রিত এবং উত্তেজনা প্রশমিত করার উদ্দেশ্যে। কোনো পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। লক্ষ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে এবং হামলা পরিচালনায় ভারত যথেষ্ট সংযম দেখিয়েছে। পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই হামলায় জড়িতদের জবাবদিহি করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ভারতের ওয়াশিংটন দূতাবাস বিমান হামলার পর এক বিবৃতিতে জানায়, পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার দৃঢ় তথ্যপ্রমাণ রয়েছে ভারতের কাছে। এসবের মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তিগত ইনপুট, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাক্ষ্য এবং অন্যান্য প্রমাণ—যেগুলো এই হামলায় পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসীদের স্পষ্ট জড়িত থাকার বিষয়টি নির্দেশ করে।

বুধবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুরিদকে শহরে একটি সন্দেহজনক ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার স্থানে দাঁড়িয়ে আছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা ও উদ্ধারকর্মীরা। ছবি: এএফপি
বুধবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুরিদকে শহরে একটি সন্দেহজনক ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার স্থানে দাঁড়িয়ে আছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা ও উদ্ধারকর্মীরা। ছবি: এএফপি

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ডের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ভারতের বিরুদ্ধে আরও হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। তাই আমাদের পক্ষে প্রতিরোধ এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ছিল বাধ্যতামূলক। আজ সকালে, যেমনটি আপনারা জানেন, ভারত তার আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করেছে এবং সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধ ও প্রতিহত করেছে।

বিক্রম মিশ্রি আরও বলেন, এই বিমান হামলাগুলো মূলত সন্ত্রাসী অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এবং যেসব সন্ত্রাসী ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য প্রস্তুত ছিল, তাদের নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় নিহতদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক। এই হামলার পর থেকে ভারতের পাল্টা প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছিল।

এনডিটিভি ও দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সূত্রের বরাতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, হামলাটি সম্ভবত পাঁচজন জঙ্গি চালিয়েছে—তিনজন পাকিস্তানি এবং দুজন কাশ্মীরি। পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজনদের মধ্যে রয়েছে অনন্তনাগের আদিল হুসেইন ঠোকার এবং পাকিস্তানের হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান এবং আলি ভাই ওরফে তালহা ভাই।

পুলিশ দাবি করেছে, এই ব্যক্তিরা পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার সদস্য। যদিও সংগঠনটি দায় অস্বীকার করেছে। এখন পর্যন্ত এই হামলার ঘটনায় ভারত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

গত সপ্তাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, পেহেলগাম হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসী ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বুধবার ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রধান শহর শ্রীনগরের কাছে ওয়ুয়ানে বিমানবাহিনীর একটি অংশ দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: এএফপি
বুধবার ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রধান শহর শ্রীনগরের কাছে ওয়ুয়ানে বিমানবাহিনীর একটি অংশ দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: এএফপি

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি প্রকাশের পরপরই ভারতীয় সেনাবাহিনীর অফিশিয়াল সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেওয়া হয়, যেখানে লেখা ছিল—‘ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জয় হিন্দ।’ সঙ্গে #PahalgamTerrorAttack শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, পেহেলগাম হামলার দায় সংক্ষেপে স্বীকার করে পরে মুছে ফেলে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা টিআরএফ। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবা এবং জইশ-ই-মুহাম্মদ অতীতেও ভারতের বিরুদ্ধে বহু প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে। তারাই টিআরএফের মাধ্যমে কাজ করছিল।

মিশ্রি বলেন, পেহেলগাম হামলার তদন্তে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগাযোগের তথ্য উঠে এসেছে। রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের দায় স্বীকার এবং পরে লস্করের পরিচিত সামাজিক মাধ্যম হ্যান্ডেল থেকে সেটি পুনরায় পোস্ট করা—এসবই অনেক কিছু বলে দেয়।

তিনি আরও জানান, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে থাকা অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে হামলাকারীদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলেছে। এই হামলার ধরন পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদের ইতিহাসের সঙ্গে মিলে যায়, যা বিস্তৃতভাবে প্রমাণিত এবং প্রশ্নাতীত। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে সারা বিশ্বের সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসীরা সেখানে অবাধে ঘোরাফেরা করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু, আহত শতাধিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৯
মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ছবি: বিবিসি
মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ছবি: বিবিসি

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত ১৩ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন। দেশটির নৌবাহিনীর বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, মেক্সিকো উপসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী রুটে চলাচল করে ওই ট্রেন। ট্রেনটিতে ২৪১ জন যাত্রী ও ৯ জন ক্রু ছিলেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, নিজান্দা শহরের কাছে একটি বাঁক ঘোরার সময় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়।

ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেল।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি আরও জানান, নেভির সেক্রেটারিসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা লাইনচ্যুত ট্রেন থেকে যাত্রীদের নামতে সহায়তা করছেন। ট্রেনটি রেললাইন থেকে ছিটকে পড়ে আংশিকভাবে একটি খাদের পাশে কাত হয়ে যায়।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরের বন্দর সালিনা ক্রুজকে উপসাগরীয় উপকূলের কোয়াটজাকোয়ালকোসের সঙ্গে যুক্ত করা ‘ইন্টারওশেনিক’ (Interoceanic) ট্রেনটিতে দুটি লোকোমোটিভ ও চারটি যাত্রীবাহী বগি ছিল। মেক্সিকোর নৌবাহিনী দেশটির রেলওয়ে নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে।

ওয়াহাকা রাজ্যের গভর্নর সলোমোন জারা ক্রুজ এক বিবৃতিতে দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় রাজ্য সরকার ফেডারেল সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।

আঞ্চলিক অর্থনীতি চাঙা করতে সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের উদ্যোগে দুই বছর আগে ইন্টারওশেনিক রেলসংযোগটি উদ্বোধন করা হয়েছিল।

আটলান্টিক মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী দূরত্ব কমিয়ে আনতে তেহুয়ান্তেপেক ইস্থমাস এলাকাজুড়ে রেল যোগাযোগ আধুনিকায়নের লক্ষ্যে অঞ্চলটিকে একটি কৌশলগত বাণিজ্য করিডোরে রূপ দিতে চেয়েছে মেক্সিকো সরকার। এর অংশ হিসেবে বন্দর, রেলপথ ও শিল্প অবকাঠামো সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এই রেল পরিষেবাটি দক্ষিণ মেক্সিকোতে যাত্রী ও পণ্যবাহী রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইন্দোনেশিয়ায় নার্সিং হোমে আগুনে ১৬ জনের মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লেগে ১৬ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার এএফপির প্রতিবেদনে স্থানীয় এক কর্মকর্তার বরাতে জানানো হয়, উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী মানাদোর একটি নার্সিং হোমে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

শহরটির ফায়ার অ্যান্ড রেস্কিউ এজেন্সির প্রধান জিমি রোটিনসুলু জানান, নার্সিং হোমটিতে স্থানীয় সময় রোববার রাত ৮টা ৩১ মিনিটে আগুন লাগার খবর পান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৩ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।

জিমি জানান, ভুক্তভোগীদের অনেক দেহ তাঁদের ঘরের ভেতরেই পাওয়া গেছে। তিনি আরও যোগ করেন, সন্ধ্যায় যখন আগুন ছড়িয়ে পড়ে তখন বয়স্ক বাসিন্দাদের অনেকেই সম্ভবত তাদের নিজ নিজ ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।

কর্তৃপক্ষ ১২ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে এবং তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় সম্প্রচার মাধ্যম মেট্রো টিভি-তে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, আগুন নার্সিং হোমটিকে পুরোপুরি গ্রাস করে নিয়েছে এবং স্থানীয়রা এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করছেন।

১৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এই দ্বীপরাষ্ট্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খুব একটা বিরল নয়। চলতি মাসেই ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় একটি সাততলা অফিস ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২২ জন নিহত হন। ২০২৩ সালে দেশটির পূর্বাঞ্চলে একটি নিকেল প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাঁজা চাষে লাইসেন্স ফি কমাল পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে। ছবি: এএফপি
গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে। ছবি: এএফপি

গাঁজা চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের লাইসেন্স ফি কমানোর অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তানের সরকার। দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় গাঁজা চাষের এই ফি কমাচ্ছে ক্যানাবিস রেগুলেটরি অথরিটি (সিআরএ)।

এছাড়া, শিল্পজাত হেম্প ও হেম্প বীজের তেলের ওপর থেকে আবগারি শুল্ক তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ফুল-স্পেকট্রাম ক্যানাবিডিওল (CBD) ও টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (THC)-এর ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সরকারি নথি বরাতে দ্য ডন জানিয়েছে, সিআরএ গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করেছে এবং গাঁজা প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্স ফি ১৫ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ১০ লাখ রুপি নির্ধারণ করেছে।

এছাড়া হেম্প প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্স ফি ৭ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ফুল-স্পেকট্রাম ক্যানাবিডিওল ও টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনলের ওপর আবগারি শুল্ক প্রতি কেজিতে ৩ হাজার রুপি থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার রুপি করা হয়েছে।

নথিতে আরও বলা হয়েছে, ২২ ডিসেম্বর আবগারি, কর ও মাদকদ্রব্য বিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে আরও বলা হয়, ওই বৈঠকটি ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-কমিটির বৈঠকের ধারাবাহিকতা ছিল, যেখানে এসব পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছিল।

নথি অনুযায়ী, সিআরএ-এর বৈঠকে খাইবার পাখতুনখোয়ার জন্য প্রস্তাবিত হেম্প মডেল কমিটির সামনে উপস্থাপন করা হয়। এ সময় আবগারি, কর ও মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সচিব এবং স্বাস্থ্য সচিব জোর দিয়ে বলেন, ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করা এবং বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিতে প্রস্তাবিত মডেলটি আরও সরল করা প্রয়োজন।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, খাইবার পাখতুনখোয়ায় স্বনামধন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে হেম্প চাষের লাইসেন্স দেওয়া হবে এবং এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান কৃষকদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে।

হেম্প চাষ ও প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্সের আবেদন ফরম, টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (টিএইচসি) নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ ফরম, পর্যায়ক্রমিক পরিদর্শন ফরমসহ অন্যান্য বাধ্যতামূলক রেজিস্টার অনুমোদন করেছে সিআরএ।

শিল্প ও কৃষকদের যৌথ উদ্যোগে বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট (বিওআই) এবং শিল্প বিভাগ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কৃষকদের নিবন্ধন ব্যক্তিগত বা সমবায় কোম্পানি হিসেবে উভয় ক্ষেত্রেই ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে।

হেম্প বীজ আমদানি ও এর শংসাপত্রের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সপ্রাপ্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওপর রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত গাঁজা চাষ ও প্রক্রিয়াকরণ আপাতত স্থগিত রাখা হবে এবং ওষুধ শিল্পের প্রয়োজনীয় গাঁজা নিয়ন্ত্রণ ও এর পণ্য ব্যবস্থাপনা পাকিস্তানের ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটির (ডিআরএপি) চাহিদা ও মানদণ্ডের আলোকে বিবেচনা করা হবে।

নথিতে আরও বলা হয়, ক্যানাবিস মডেল প্রণয়ন এবং ক্যানাবিস সংক্রান্ত বিধিবিধান পুনর্বিবেচনার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে একটি উপকমিটি গঠন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উত্তেজনা: শিখ ও হিন্দু বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হাতাহাতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিক্ষোভকারী শিখদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ওসমান হাদির ছবিও দেখা যায়। ছবি: এক্স
বিক্ষোভকারী শিখদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ওসমান হাদির ছবিও দেখা যায়। ছবি: এক্স

লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে গত শনিবার একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বেশ উত্তেজনা তৈরি হয়। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত এই সমাবেশে স্বাধীন খালিস্তানপন্থী শিখ অধিকার কর্মী এবং একদল হিন্দু বিক্ষোভকারী মুখোমুখি হলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্রিটিশ পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আয়োজকদের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি দৈনিক ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আয়োজিত সমাবেশে খালিস্তান রেফারেন্ডাম অভিযানের সমন্বয়ক পরমজিৎ সিং পাম্মা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে হরদীপ সিং নিজ্জার এবং শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি দেখা গেছে। সমাবেশের একপর্যায়ে ভারতীয় এক হিন্দু বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পাম্মার কথা-কাটাকাটি এবং পরে হাতাহাতি শুরু হয়। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে সেখানে দায়িত্বরত মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেন এবং দুই পক্ষকে আলাদা করে দেন।

বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রবেশপথের কাছে একটি কর্ডন তৈরি করে তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যান। এ সময় তাঁরা ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দেন। বিশেষ করে হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যা এবং অন্যান্য শিখ নেতাদের খুনের পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত রয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য, ভারত সরকার পরমজিৎ সিং পাম্মাকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড টেররিস্ট’ বা অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করলেও পাম্মা ও তাঁর সমর্থকেরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।

গত বছরের জুনে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার খুন হওয়ার পর থেকে ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরম আকার ধারণ করেছে। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

লন্ডনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সেই বৈশ্বিক উত্তেজনার ছায়া দেখা গেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, কোনো বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি।

খালিস্তান আন্দোলনের শিকড় ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগ এবং পাঞ্জাব বিভাজনের সময় পর্যন্ত বিস্তৃত। স্বাধীন শিখ রাষ্ট্রের দাবিতে এই আন্দোলন দশকের পর দশক ধরে চলে আসছে। এই আন্দোলন বর্তমানে বৈশ্বিক রাজনীতিতে ভারত-কানাডা এবং ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি সংবেদনশীল ইস্যু হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত