
দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে মাস্কের এই সমর্থন গত ২৩ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এএফডির দ্বিতীয় স্থান অর্জনে খুব সামান্য ভূমিকা রেখেছে। মাস্কের পোস্ট, জনমত জরিপের তথ্য এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করে রয়টার্স।
তবে টেসলার সিইও মাস্ককে এতে দমিয়ে রাখা যায়নি। তিনি ইউরোপজুড়ে এখনো ডানপন্থী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রভাব সম্ভবত টেসলার ক্ষতি। তবে এর পেছনে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকতে পারে। যেমন এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন করা, যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মাস্কের প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনের পথে বাধা হবে না।
এই প্রতিবেদন তৈরির সময় ইলন মাস্ক এবং টেসলার কাছে মন্তব্যের অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত জানুয়ারিতে মাস্ক ইউরোপের ‘নিয়মকানুন ও আমলাতন্ত্রের স্তূপ’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা তাঁকে নিষেধাজ্ঞা দিলে মাস্ক এক্সে একটি মিম পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। যেখানে ‘ট্রপিক থান্ডার’ সিনেমার একটি উদ্ধৃতি ছিল, ‘টেক আ বিগ স্টেপ ব্যাক অ্যান্ড লিটারেলি, ফাক ইউর ওউন ফেস!’
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে এএফডিকে একটি সন্দেহভাজন উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তা সত্ত্বেও দলটি গত মাসের নির্বাচনে জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে। জার্মানির নাৎসি অতীতের কারণে উগ্র ডানপন্থার ওপর ঐতিহাসিকভাবে যে কলঙ্ক লেগে আছে, তা সত্ত্বেও এই উত্থান তাৎপর্যপূর্ণ। দলটির একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ গত বছর একটি মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাৎসিদের প্রধান আধা সামরিক বাহিনী এসএস ‘পুরোপুরি অপরাধী ছিল না’।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সে এএফডি নেত্রী অ্যালিস ভাইডেলের সাক্ষাৎকার প্রচার করেন।
এএফডির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনার দৃষ্টান্ত। যা থেকে বোঝা যায়, জনতুষ্টিবাদী উগ্র ডানপন্থী দলগুলো ইউরোপে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য পাচ্ছে। একসময় রাজনৈতিক প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এই দলগুলো এখন ইতালি, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ায় সরকার চালাচ্ছে অথবা সরকার গঠনে অংশীদার হচ্ছে। সুইডেন, অস্ট্রিয়া ও জার্মানির পার্লামেন্টেও তারা বৃহত্তম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং ফ্রান্সেও জনমত সমীক্ষায় তাদের সমর্থন বাড়ছে। এ ছাড়া রোমানিয়া, বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালেও উগ্র ডানপন্থার সমর্থন বাড়ছে।
উচ্চ অভিবাসন, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বাক্স্বাধীনতার ওপর অনুভূত সীমাবদ্ধতা—তাদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছে। আর মাস্ক তাঁর ‘এক্সে’ এই বিষয়গুলোকেই বেশি করে তুলে ধরছেন।
রয়টার্স ২০ হাজারের বেশি পোস্ট ও রিপোস্ট পর্যালোচনায় দেখেছে, ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গত নভেম্বরে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার পর থেকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
মাস্ক ব্রিটেন, ইতালি ও রোমানিয়ার ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের ‘এক্সে’ প্রচার করেছেন এবং রাজনৈতিক নেতা ও ইইউর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মাস্ক যখন জার্মানিতে এএফডিকে প্রথম স্পষ্টভাবে সমর্থন করেন, তখন রয়টার্সের জনমত সমীক্ষা অনুসারে দলটির সমর্থন ছিল মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তারা নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ।
রয়টার্সের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, এই সংখ্যাগুলো থেকে বোঝা যায়, মাস্কের সমর্থনে নির্বাচনের ওপর খুব কম প্রভাব পড়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান থেকে আসা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা জার্মানিতে তিনটি সহিংস হামলার ঘটনাও এএফডিকে সাহায্য করতে পারে, যারা অভিবাসীদের গণবহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেষকদের মধ্যে দুজন মনে করেন, মাস্ক কিছু ভোটারের মধ্যে—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে দলটির আকর্ষণ বাড়িয়েছেন, যা আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে।
জার্মানির ডব্লিউএইচইউ—অটো বেইশিম স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের কৌশল ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ার মার্টিন ফাসনাখট বলেন, ‘তিনি (মাস্ক) এএফডিকে কিছুটা হলেও আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী দেখাতে সাহায্য করেছেন।’
তবে মাস্কের উগ্র ডানপন্থী দলের প্রতি উৎসাহ সম্ভবত টেসলার জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিইএ) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ইউরোপে টেসলার বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কমে গেছে। অথচ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিক্রি ৩৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইউরোপে বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, টেসলার এই পতন অব্যাহত রয়েছে। চারটি করপোরেট-কার ফ্লিট ম্যানেজার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শোরুমে টেসলার বিক্রি আগের মতোই আছে। কোথাও কমেছে। তবে এই অবস্থা কঠিন সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে এক্সে মাস্কের পোস্ট ও রিপোস্টগুলো পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, নভেম্বরে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে ২৫০ বিলিয়নের বেশি ডলার অনুদান দেওয়ার পর তিনি ইউরোপের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমালোচনা করেছেন। কারাবন্দী এক উগ্র ডানপন্থী কর্মীর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং ‘রিফর্ম’ নামক একটি ডানপন্থী দলের সমর্থন করেছেন। যাঁরা ট্রাম্পের মতোই অভিবাসন কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ব্যয় ত্যাগ করার অঙ্গীকার করেছে।
মাস্ক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তাঁরা উভয়েই অভিবাসন এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে কম জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি মেলোনি ইলন মাস্ককে ‘মূল্যবান জিনিয়াস’ বলে অভিহিত করেছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসির বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়ান টাম্বিনি বলেন, ইউরোপের জনমতকে প্রভাবিত করার ‘অসীম ক্ষমতা’ রয়েছে এক্সের মতো মার্কিন টেক প্ল্যাটফর্মগুলোর।
টাম্বিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব নয় যে তিনি (মাস্ক) যেকোনো দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করে দিতে পারেন। এর ফলে ইইউর অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভারসাম্যেরও সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
ফরাসি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসমা মহাল্লা বলেন, ইউরোপীয় সরকারগুলো মাস্কের ক্রমবর্ধমান খ্যাতি নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, ‘মাস্কের লক্ষ্য ইউরোপীয় নীতিকে দুর্বল করা এবং আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার করা।’
তবে আমেরিকার ইউরোপ নীতিতে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।
ইউরোপের সমালোচনায় মাস্ক প্রায়শই এক্সে যাচাই না করা তথ্য শেয়ার করেন। যার মধ্যে বেনামি অ্যাকাউন্টগুলোও থাকে। যেগুলো তাঁকে ট্যাগ করে এবং তিনি ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য পরিচিত কিছু অ্যাকাউন্ট থেকেও বিভিন্ন তথ্য প্রচার করেন।
রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাস্কের বেশির ভাগ পোস্ট গণ-অভিবাসন এবং তথাকথিত বাক্স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। তিনি ইউরোপের কম জন্মহার এবং ট্রান্সজেন্ডার নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের পাশ কাটিয়ে বরং কট্টর ডানপন্থী কিছু অ্যাকাউন্টের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।
এ ধরনের একটি অ্যাকাউন্ট হলো পিটার সুইডেন-৭। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার পিটার ইমানুয়েলসেন এই অ্যাকাউন্ট চালান। এই ইমানুয়েলসেন ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় আল-কায়েদার হামলাকে ‘ইনসাইড জব’ এবং চাঁদে অবতরণকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
মাস্ক অন্তত অর্ধডজন বিভ্রান্তিকর পোস্টে ইমানুয়েলসেনকে প্রচার করেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি ইমানুয়েলসেনের একটি পোস্ট রিপোস্ট করেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ফেসবুক পোস্টের জন্য এক ব্যক্তিকে ২০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে ওই ব্যক্তি তাঁর পোস্টে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া একটি হোটেলে হামলার জন্য লোকজনকে উসকানি দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু মাস্ক বিষয়টি যাচাই করেননি, এমনকি তাঁর পোস্টে উল্লেখও করেননি।
ইউরোপের বিষয়ে মাস্ক যে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সেটি হলো টমি রবিনসন নামের একজন ডানপন্থী আন্দোলনকারীর। যিনি প্রতারণা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁর আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। লন্ডনের একটি আদালতের আদেশ অমান্য করায় বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী।
মাস্ক এই রবিনসনের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি মিথ্যা পোস্ট রিপোস্ট করেছেন। যেখানে রবিনসনকে ‘রাজনৈতিক বন্দী’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে রবিনসনের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২০ জানুয়ারির একটি পোস্টে বলা হয়েছিল, বিলিয়নিয়ার মাস্ক তাঁর আইনি খরচের কিছু অংশ পরিশোধ করছেন।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে রয়টার্স রবিনসনের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মের্ট ক্যান বায়ার মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, মাস্কের কাছে এই অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা ডানপন্থীদের যুদ্ধের পদাতিক সৈনিক। যেখানে একদিকে আছে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী বামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং অন্যদিকে বাক্স্বাধীনতার পক্ষে থাকা ডানপন্থীরা।
ইউরোপীয় রাজনীতিতে মাস্কের প্রভাব এখনো অস্পষ্ট। তবে তাঁর সক্রিয়তা টেসলার ক্ষতি করছে বলেই মনে হচ্ছে। ২০২৪ সালে টেসলার বিক্রি কমেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে সামগ্রিকভাবে গাড়ির বাজার মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
জানুয়ারির শেষের দিকে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি পর্যালোচনা ওয়েবসাইটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ৫৯ শতাংশ মানুষ বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে ইচ্ছুক। তবে তারা মাস্কের কারণে টেসলা কিনবেন না। তারা ‘টেসলাটেকডাউন’ ও ‘স্বস্তিকার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও এক্সে টেসলাবিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন।
ব্রিটেনের একটি কমিউনিকেশনস ও মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম চালান বেন কিলবি। তিনি তিন বছর ধরে টেসলার ওয়াই মডেল চালাচ্ছেন। তবে মাস্কের কারণে এখন সেটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। কিলবি বলেন, ‘আমি আমার টেসলাকে ভালোবাসি, এর প্রযুক্তিকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি মাস্কের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না।’

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে মাস্কের এই সমর্থন গত ২৩ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এএফডির দ্বিতীয় স্থান অর্জনে খুব সামান্য ভূমিকা রেখেছে। মাস্কের পোস্ট, জনমত জরিপের তথ্য এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করে রয়টার্স।
তবে টেসলার সিইও মাস্ককে এতে দমিয়ে রাখা যায়নি। তিনি ইউরোপজুড়ে এখনো ডানপন্থী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রভাব সম্ভবত টেসলার ক্ষতি। তবে এর পেছনে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকতে পারে। যেমন এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন করা, যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মাস্কের প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনের পথে বাধা হবে না।
এই প্রতিবেদন তৈরির সময় ইলন মাস্ক এবং টেসলার কাছে মন্তব্যের অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত জানুয়ারিতে মাস্ক ইউরোপের ‘নিয়মকানুন ও আমলাতন্ত্রের স্তূপ’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা তাঁকে নিষেধাজ্ঞা দিলে মাস্ক এক্সে একটি মিম পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। যেখানে ‘ট্রপিক থান্ডার’ সিনেমার একটি উদ্ধৃতি ছিল, ‘টেক আ বিগ স্টেপ ব্যাক অ্যান্ড লিটারেলি, ফাক ইউর ওউন ফেস!’
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে এএফডিকে একটি সন্দেহভাজন উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তা সত্ত্বেও দলটি গত মাসের নির্বাচনে জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে। জার্মানির নাৎসি অতীতের কারণে উগ্র ডানপন্থার ওপর ঐতিহাসিকভাবে যে কলঙ্ক লেগে আছে, তা সত্ত্বেও এই উত্থান তাৎপর্যপূর্ণ। দলটির একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ গত বছর একটি মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাৎসিদের প্রধান আধা সামরিক বাহিনী এসএস ‘পুরোপুরি অপরাধী ছিল না’।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সে এএফডি নেত্রী অ্যালিস ভাইডেলের সাক্ষাৎকার প্রচার করেন।
এএফডির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনার দৃষ্টান্ত। যা থেকে বোঝা যায়, জনতুষ্টিবাদী উগ্র ডানপন্থী দলগুলো ইউরোপে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য পাচ্ছে। একসময় রাজনৈতিক প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এই দলগুলো এখন ইতালি, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ায় সরকার চালাচ্ছে অথবা সরকার গঠনে অংশীদার হচ্ছে। সুইডেন, অস্ট্রিয়া ও জার্মানির পার্লামেন্টেও তারা বৃহত্তম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং ফ্রান্সেও জনমত সমীক্ষায় তাদের সমর্থন বাড়ছে। এ ছাড়া রোমানিয়া, বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালেও উগ্র ডানপন্থার সমর্থন বাড়ছে।
উচ্চ অভিবাসন, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বাক্স্বাধীনতার ওপর অনুভূত সীমাবদ্ধতা—তাদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছে। আর মাস্ক তাঁর ‘এক্সে’ এই বিষয়গুলোকেই বেশি করে তুলে ধরছেন।
রয়টার্স ২০ হাজারের বেশি পোস্ট ও রিপোস্ট পর্যালোচনায় দেখেছে, ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গত নভেম্বরে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার পর থেকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
মাস্ক ব্রিটেন, ইতালি ও রোমানিয়ার ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের ‘এক্সে’ প্রচার করেছেন এবং রাজনৈতিক নেতা ও ইইউর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মাস্ক যখন জার্মানিতে এএফডিকে প্রথম স্পষ্টভাবে সমর্থন করেন, তখন রয়টার্সের জনমত সমীক্ষা অনুসারে দলটির সমর্থন ছিল মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তারা নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ।
রয়টার্সের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, এই সংখ্যাগুলো থেকে বোঝা যায়, মাস্কের সমর্থনে নির্বাচনের ওপর খুব কম প্রভাব পড়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান থেকে আসা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা জার্মানিতে তিনটি সহিংস হামলার ঘটনাও এএফডিকে সাহায্য করতে পারে, যারা অভিবাসীদের গণবহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেষকদের মধ্যে দুজন মনে করেন, মাস্ক কিছু ভোটারের মধ্যে—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে দলটির আকর্ষণ বাড়িয়েছেন, যা আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে।
জার্মানির ডব্লিউএইচইউ—অটো বেইশিম স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের কৌশল ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ার মার্টিন ফাসনাখট বলেন, ‘তিনি (মাস্ক) এএফডিকে কিছুটা হলেও আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী দেখাতে সাহায্য করেছেন।’
তবে মাস্কের উগ্র ডানপন্থী দলের প্রতি উৎসাহ সম্ভবত টেসলার জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিইএ) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ইউরোপে টেসলার বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কমে গেছে। অথচ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিক্রি ৩৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইউরোপে বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, টেসলার এই পতন অব্যাহত রয়েছে। চারটি করপোরেট-কার ফ্লিট ম্যানেজার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শোরুমে টেসলার বিক্রি আগের মতোই আছে। কোথাও কমেছে। তবে এই অবস্থা কঠিন সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে এক্সে মাস্কের পোস্ট ও রিপোস্টগুলো পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, নভেম্বরে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে ২৫০ বিলিয়নের বেশি ডলার অনুদান দেওয়ার পর তিনি ইউরোপের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমালোচনা করেছেন। কারাবন্দী এক উগ্র ডানপন্থী কর্মীর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং ‘রিফর্ম’ নামক একটি ডানপন্থী দলের সমর্থন করেছেন। যাঁরা ট্রাম্পের মতোই অভিবাসন কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ব্যয় ত্যাগ করার অঙ্গীকার করেছে।
মাস্ক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তাঁরা উভয়েই অভিবাসন এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে কম জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি মেলোনি ইলন মাস্ককে ‘মূল্যবান জিনিয়াস’ বলে অভিহিত করেছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসির বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়ান টাম্বিনি বলেন, ইউরোপের জনমতকে প্রভাবিত করার ‘অসীম ক্ষমতা’ রয়েছে এক্সের মতো মার্কিন টেক প্ল্যাটফর্মগুলোর।
টাম্বিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব নয় যে তিনি (মাস্ক) যেকোনো দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করে দিতে পারেন। এর ফলে ইইউর অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভারসাম্যেরও সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
ফরাসি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসমা মহাল্লা বলেন, ইউরোপীয় সরকারগুলো মাস্কের ক্রমবর্ধমান খ্যাতি নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, ‘মাস্কের লক্ষ্য ইউরোপীয় নীতিকে দুর্বল করা এবং আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার করা।’
তবে আমেরিকার ইউরোপ নীতিতে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।
ইউরোপের সমালোচনায় মাস্ক প্রায়শই এক্সে যাচাই না করা তথ্য শেয়ার করেন। যার মধ্যে বেনামি অ্যাকাউন্টগুলোও থাকে। যেগুলো তাঁকে ট্যাগ করে এবং তিনি ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য পরিচিত কিছু অ্যাকাউন্ট থেকেও বিভিন্ন তথ্য প্রচার করেন।
রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাস্কের বেশির ভাগ পোস্ট গণ-অভিবাসন এবং তথাকথিত বাক্স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। তিনি ইউরোপের কম জন্মহার এবং ট্রান্সজেন্ডার নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের পাশ কাটিয়ে বরং কট্টর ডানপন্থী কিছু অ্যাকাউন্টের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।
এ ধরনের একটি অ্যাকাউন্ট হলো পিটার সুইডেন-৭। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার পিটার ইমানুয়েলসেন এই অ্যাকাউন্ট চালান। এই ইমানুয়েলসেন ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় আল-কায়েদার হামলাকে ‘ইনসাইড জব’ এবং চাঁদে অবতরণকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
মাস্ক অন্তত অর্ধডজন বিভ্রান্তিকর পোস্টে ইমানুয়েলসেনকে প্রচার করেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি ইমানুয়েলসেনের একটি পোস্ট রিপোস্ট করেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ফেসবুক পোস্টের জন্য এক ব্যক্তিকে ২০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে ওই ব্যক্তি তাঁর পোস্টে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া একটি হোটেলে হামলার জন্য লোকজনকে উসকানি দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু মাস্ক বিষয়টি যাচাই করেননি, এমনকি তাঁর পোস্টে উল্লেখও করেননি।
ইউরোপের বিষয়ে মাস্ক যে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সেটি হলো টমি রবিনসন নামের একজন ডানপন্থী আন্দোলনকারীর। যিনি প্রতারণা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁর আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। লন্ডনের একটি আদালতের আদেশ অমান্য করায় বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী।
মাস্ক এই রবিনসনের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি মিথ্যা পোস্ট রিপোস্ট করেছেন। যেখানে রবিনসনকে ‘রাজনৈতিক বন্দী’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে রবিনসনের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২০ জানুয়ারির একটি পোস্টে বলা হয়েছিল, বিলিয়নিয়ার মাস্ক তাঁর আইনি খরচের কিছু অংশ পরিশোধ করছেন।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে রয়টার্স রবিনসনের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মের্ট ক্যান বায়ার মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, মাস্কের কাছে এই অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা ডানপন্থীদের যুদ্ধের পদাতিক সৈনিক। যেখানে একদিকে আছে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী বামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং অন্যদিকে বাক্স্বাধীনতার পক্ষে থাকা ডানপন্থীরা।
ইউরোপীয় রাজনীতিতে মাস্কের প্রভাব এখনো অস্পষ্ট। তবে তাঁর সক্রিয়তা টেসলার ক্ষতি করছে বলেই মনে হচ্ছে। ২০২৪ সালে টেসলার বিক্রি কমেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে সামগ্রিকভাবে গাড়ির বাজার মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
জানুয়ারির শেষের দিকে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি পর্যালোচনা ওয়েবসাইটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ৫৯ শতাংশ মানুষ বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে ইচ্ছুক। তবে তারা মাস্কের কারণে টেসলা কিনবেন না। তারা ‘টেসলাটেকডাউন’ ও ‘স্বস্তিকার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও এক্সে টেসলাবিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন।
ব্রিটেনের একটি কমিউনিকেশনস ও মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম চালান বেন কিলবি। তিনি তিন বছর ধরে টেসলার ওয়াই মডেল চালাচ্ছেন। তবে মাস্কের কারণে এখন সেটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। কিলবি বলেন, ‘আমি আমার টেসলাকে ভালোবাসি, এর প্রযুক্তিকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি মাস্কের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না।’

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
১৮ মিনিট আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
২ ঘণ্টা আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
৩ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
২ ঘণ্টা আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
৩ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
১৮ মিনিট আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
৩ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ এবং নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এসব দেশ ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি করেছিল। জেনেভায় এক বৈঠকে গোপন ভোটের দাবি তোলে স্পেনের সম্প্রচার সংস্থা আরটিভিই। তারা জানায়, আয়োজনকারীরা সেই দাবি মানেনি। এতে উৎসবের প্রতি তাদের অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।
আয়ারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম আরটিই জানায়, গাজার ভয়াবহ প্রাণহানি এবং চলমান মানবিক সংকটের সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্পেনের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠে। কারণ এসব দেশের সম্প্রচার সংস্থা ইবিইউকে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা—যার মধ্যে বিবিসিও আছে—ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতিবছর ১৫ কোটির বেশি দর্শক এই প্রতিযোগিতা দেখে, তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। ইসরায়েল তাদের অংশগ্রহণকারী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে ভোট বাড়াতে অন্যদের সাহায্য নিয়েছে, এমন অভিযোগের পর সরকার ও তৃতীয় পক্ষের প্রভাব ঠেকাতে নতুন নিয়মে সম্মতি চাইছিল ইবিইউ।
বিবিসি জানায়, এই নিয়ম মানার ভোটের সঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। সদস্যরা রাজি হলে ইসরায়েলকে নিয়ে আর কোনো ভোট হবে না। ইবিইউ জানায়, যারা নতুন নিয়ম মানতে সম্মত, তারা ইউরোভিশন ২০২৬-এ অংশ নিতে পারবে। ইউরোভিশন পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, সদস্যরা ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের সুযোগ পেয়েছে। ভোটে দেখা গেছে, অধিকাংশই চায় এই প্রতিযোগিতা রাজনৈতিক মঞ্চ না হোক, নিরপেক্ষতা বজায় থাকুক।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এটি সংহতি, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। ইসরায়েল বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার যোগ্য। ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা কান–এর প্রধান গলান ইয়োখপাজ বলেন, ইসরায়েলকে সরাতে চাওয়া সংস্কৃতিগত বয়কট ছাড়া কিছু নয়। আজ বয়কট শুরু হলে কাল অন্যদেরও ক্ষতি হতে পারে। ইউরোভিশনের ৭০ তম বছরে কি এমন স্মৃতি আমরা চাই?
যুক্তরাজ্যে ইউরোভিশন দেখায় বিবিসি। তারা জানায়, ইবিইউর নিয়ম কার্যকরে তারা সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন সম্প্রদায়ের ভেতর বড় বিভাজন তৈরি করেছে। ডাচ সম্প্রচার সংস্থা অ্যাভরোট্রস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
স্পেনের আরটিভিই জানায়, গত সেপ্টেম্বরেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল—ইসরায়েল থাকলে স্পেন ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়াবে। এই কারণে ২০২৬ সালের ফাইনাল ও সেমিফাইনাল তারা সম্প্রচারও করবে না। স্লোভেনিয়ার আরটিভিও জানায়, তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। নিয়ম বদলালেও মত বদলায়নি। ন্যায়নীতি রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। বেলজিয়ামের সম্প্রচার সংস্থা বলেছে, তারা কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবে।
অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলো নিয়ম সংশোধনকে সমর্থন করেছে। তবে আইসল্যান্ড এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। জার্মানি, যারা আগে বলেছিল ইসরায়েল বাদ গেলে তারাও সরে দাঁড়াবে, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের সংস্থা এআরডি জানায়, তারা পরের বছর অংশ নিতে আগ্রহী এবং বৈচিত্র্য ও সংহতির উৎসব হিসেবে এটিকে দেখে। তবে যারা সরে দাঁড়িয়েছে, তাদের সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান করে।

আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ এবং নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এসব দেশ ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি করেছিল। জেনেভায় এক বৈঠকে গোপন ভোটের দাবি তোলে স্পেনের সম্প্রচার সংস্থা আরটিভিই। তারা জানায়, আয়োজনকারীরা সেই দাবি মানেনি। এতে উৎসবের প্রতি তাদের অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।
আয়ারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম আরটিই জানায়, গাজার ভয়াবহ প্রাণহানি এবং চলমান মানবিক সংকটের সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্পেনের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠে। কারণ এসব দেশের সম্প্রচার সংস্থা ইবিইউকে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা—যার মধ্যে বিবিসিও আছে—ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতিবছর ১৫ কোটির বেশি দর্শক এই প্রতিযোগিতা দেখে, তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। ইসরায়েল তাদের অংশগ্রহণকারী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে ভোট বাড়াতে অন্যদের সাহায্য নিয়েছে, এমন অভিযোগের পর সরকার ও তৃতীয় পক্ষের প্রভাব ঠেকাতে নতুন নিয়মে সম্মতি চাইছিল ইবিইউ।
বিবিসি জানায়, এই নিয়ম মানার ভোটের সঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। সদস্যরা রাজি হলে ইসরায়েলকে নিয়ে আর কোনো ভোট হবে না। ইবিইউ জানায়, যারা নতুন নিয়ম মানতে সম্মত, তারা ইউরোভিশন ২০২৬-এ অংশ নিতে পারবে। ইউরোভিশন পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, সদস্যরা ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের সুযোগ পেয়েছে। ভোটে দেখা গেছে, অধিকাংশই চায় এই প্রতিযোগিতা রাজনৈতিক মঞ্চ না হোক, নিরপেক্ষতা বজায় থাকুক।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এটি সংহতি, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। ইসরায়েল বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার যোগ্য। ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা কান–এর প্রধান গলান ইয়োখপাজ বলেন, ইসরায়েলকে সরাতে চাওয়া সংস্কৃতিগত বয়কট ছাড়া কিছু নয়। আজ বয়কট শুরু হলে কাল অন্যদেরও ক্ষতি হতে পারে। ইউরোভিশনের ৭০ তম বছরে কি এমন স্মৃতি আমরা চাই?
যুক্তরাজ্যে ইউরোভিশন দেখায় বিবিসি। তারা জানায়, ইবিইউর নিয়ম কার্যকরে তারা সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন সম্প্রদায়ের ভেতর বড় বিভাজন তৈরি করেছে। ডাচ সম্প্রচার সংস্থা অ্যাভরোট্রস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
স্পেনের আরটিভিই জানায়, গত সেপ্টেম্বরেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল—ইসরায়েল থাকলে স্পেন ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়াবে। এই কারণে ২০২৬ সালের ফাইনাল ও সেমিফাইনাল তারা সম্প্রচারও করবে না। স্লোভেনিয়ার আরটিভিও জানায়, তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। নিয়ম বদলালেও মত বদলায়নি। ন্যায়নীতি রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। বেলজিয়ামের সম্প্রচার সংস্থা বলেছে, তারা কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবে।
অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলো নিয়ম সংশোধনকে সমর্থন করেছে। তবে আইসল্যান্ড এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। জার্মানি, যারা আগে বলেছিল ইসরায়েল বাদ গেলে তারাও সরে দাঁড়াবে, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের সংস্থা এআরডি জানায়, তারা পরের বছর অংশ নিতে আগ্রহী এবং বৈচিত্র্য ও সংহতির উৎসব হিসেবে এটিকে দেখে। তবে যারা সরে দাঁড়িয়েছে, তাদের সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান করে।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
১৮ মিনিট আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
২ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
১৮ মিনিট আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
২ ঘণ্টা আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
৩ ঘণ্টা আগে