
দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে মাস্কের এই সমর্থন গত ২৩ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এএফডির দ্বিতীয় স্থান অর্জনে খুব সামান্য ভূমিকা রেখেছে। মাস্কের পোস্ট, জনমত জরিপের তথ্য এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করে রয়টার্স।
তবে টেসলার সিইও মাস্ককে এতে দমিয়ে রাখা যায়নি। তিনি ইউরোপজুড়ে এখনো ডানপন্থী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রভাব সম্ভবত টেসলার ক্ষতি। তবে এর পেছনে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকতে পারে। যেমন এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন করা, যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মাস্কের প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনের পথে বাধা হবে না।
এই প্রতিবেদন তৈরির সময় ইলন মাস্ক এবং টেসলার কাছে মন্তব্যের অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত জানুয়ারিতে মাস্ক ইউরোপের ‘নিয়মকানুন ও আমলাতন্ত্রের স্তূপ’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা তাঁকে নিষেধাজ্ঞা দিলে মাস্ক এক্সে একটি মিম পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। যেখানে ‘ট্রপিক থান্ডার’ সিনেমার একটি উদ্ধৃতি ছিল, ‘টেক আ বিগ স্টেপ ব্যাক অ্যান্ড লিটারেলি, ফাক ইউর ওউন ফেস!’
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে এএফডিকে একটি সন্দেহভাজন উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তা সত্ত্বেও দলটি গত মাসের নির্বাচনে জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে। জার্মানির নাৎসি অতীতের কারণে উগ্র ডানপন্থার ওপর ঐতিহাসিকভাবে যে কলঙ্ক লেগে আছে, তা সত্ত্বেও এই উত্থান তাৎপর্যপূর্ণ। দলটির একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ গত বছর একটি মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাৎসিদের প্রধান আধা সামরিক বাহিনী এসএস ‘পুরোপুরি অপরাধী ছিল না’।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সে এএফডি নেত্রী অ্যালিস ভাইডেলের সাক্ষাৎকার প্রচার করেন।
এএফডির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনার দৃষ্টান্ত। যা থেকে বোঝা যায়, জনতুষ্টিবাদী উগ্র ডানপন্থী দলগুলো ইউরোপে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য পাচ্ছে। একসময় রাজনৈতিক প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এই দলগুলো এখন ইতালি, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ায় সরকার চালাচ্ছে অথবা সরকার গঠনে অংশীদার হচ্ছে। সুইডেন, অস্ট্রিয়া ও জার্মানির পার্লামেন্টেও তারা বৃহত্তম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং ফ্রান্সেও জনমত সমীক্ষায় তাদের সমর্থন বাড়ছে। এ ছাড়া রোমানিয়া, বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালেও উগ্র ডানপন্থার সমর্থন বাড়ছে।
উচ্চ অভিবাসন, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বাক্স্বাধীনতার ওপর অনুভূত সীমাবদ্ধতা—তাদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছে। আর মাস্ক তাঁর ‘এক্সে’ এই বিষয়গুলোকেই বেশি করে তুলে ধরছেন।
রয়টার্স ২০ হাজারের বেশি পোস্ট ও রিপোস্ট পর্যালোচনায় দেখেছে, ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গত নভেম্বরে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার পর থেকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
মাস্ক ব্রিটেন, ইতালি ও রোমানিয়ার ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের ‘এক্সে’ প্রচার করেছেন এবং রাজনৈতিক নেতা ও ইইউর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মাস্ক যখন জার্মানিতে এএফডিকে প্রথম স্পষ্টভাবে সমর্থন করেন, তখন রয়টার্সের জনমত সমীক্ষা অনুসারে দলটির সমর্থন ছিল মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তারা নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ।
রয়টার্সের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, এই সংখ্যাগুলো থেকে বোঝা যায়, মাস্কের সমর্থনে নির্বাচনের ওপর খুব কম প্রভাব পড়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান থেকে আসা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা জার্মানিতে তিনটি সহিংস হামলার ঘটনাও এএফডিকে সাহায্য করতে পারে, যারা অভিবাসীদের গণবহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেষকদের মধ্যে দুজন মনে করেন, মাস্ক কিছু ভোটারের মধ্যে—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে দলটির আকর্ষণ বাড়িয়েছেন, যা আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে।
জার্মানির ডব্লিউএইচইউ—অটো বেইশিম স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের কৌশল ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ার মার্টিন ফাসনাখট বলেন, ‘তিনি (মাস্ক) এএফডিকে কিছুটা হলেও আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী দেখাতে সাহায্য করেছেন।’
তবে মাস্কের উগ্র ডানপন্থী দলের প্রতি উৎসাহ সম্ভবত টেসলার জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিইএ) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ইউরোপে টেসলার বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কমে গেছে। অথচ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিক্রি ৩৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইউরোপে বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, টেসলার এই পতন অব্যাহত রয়েছে। চারটি করপোরেট-কার ফ্লিট ম্যানেজার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শোরুমে টেসলার বিক্রি আগের মতোই আছে। কোথাও কমেছে। তবে এই অবস্থা কঠিন সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে এক্সে মাস্কের পোস্ট ও রিপোস্টগুলো পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, নভেম্বরে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে ২৫০ বিলিয়নের বেশি ডলার অনুদান দেওয়ার পর তিনি ইউরোপের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমালোচনা করেছেন। কারাবন্দী এক উগ্র ডানপন্থী কর্মীর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং ‘রিফর্ম’ নামক একটি ডানপন্থী দলের সমর্থন করেছেন। যাঁরা ট্রাম্পের মতোই অভিবাসন কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ব্যয় ত্যাগ করার অঙ্গীকার করেছে।
মাস্ক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তাঁরা উভয়েই অভিবাসন এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে কম জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি মেলোনি ইলন মাস্ককে ‘মূল্যবান জিনিয়াস’ বলে অভিহিত করেছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসির বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়ান টাম্বিনি বলেন, ইউরোপের জনমতকে প্রভাবিত করার ‘অসীম ক্ষমতা’ রয়েছে এক্সের মতো মার্কিন টেক প্ল্যাটফর্মগুলোর।
টাম্বিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব নয় যে তিনি (মাস্ক) যেকোনো দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করে দিতে পারেন। এর ফলে ইইউর অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভারসাম্যেরও সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
ফরাসি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসমা মহাল্লা বলেন, ইউরোপীয় সরকারগুলো মাস্কের ক্রমবর্ধমান খ্যাতি নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, ‘মাস্কের লক্ষ্য ইউরোপীয় নীতিকে দুর্বল করা এবং আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার করা।’
তবে আমেরিকার ইউরোপ নীতিতে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।
ইউরোপের সমালোচনায় মাস্ক প্রায়শই এক্সে যাচাই না করা তথ্য শেয়ার করেন। যার মধ্যে বেনামি অ্যাকাউন্টগুলোও থাকে। যেগুলো তাঁকে ট্যাগ করে এবং তিনি ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য পরিচিত কিছু অ্যাকাউন্ট থেকেও বিভিন্ন তথ্য প্রচার করেন।
রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাস্কের বেশির ভাগ পোস্ট গণ-অভিবাসন এবং তথাকথিত বাক্স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। তিনি ইউরোপের কম জন্মহার এবং ট্রান্সজেন্ডার নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের পাশ কাটিয়ে বরং কট্টর ডানপন্থী কিছু অ্যাকাউন্টের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।
এ ধরনের একটি অ্যাকাউন্ট হলো পিটার সুইডেন-৭। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার পিটার ইমানুয়েলসেন এই অ্যাকাউন্ট চালান। এই ইমানুয়েলসেন ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় আল-কায়েদার হামলাকে ‘ইনসাইড জব’ এবং চাঁদে অবতরণকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
মাস্ক অন্তত অর্ধডজন বিভ্রান্তিকর পোস্টে ইমানুয়েলসেনকে প্রচার করেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি ইমানুয়েলসেনের একটি পোস্ট রিপোস্ট করেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ফেসবুক পোস্টের জন্য এক ব্যক্তিকে ২০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে ওই ব্যক্তি তাঁর পোস্টে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া একটি হোটেলে হামলার জন্য লোকজনকে উসকানি দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু মাস্ক বিষয়টি যাচাই করেননি, এমনকি তাঁর পোস্টে উল্লেখও করেননি।
ইউরোপের বিষয়ে মাস্ক যে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সেটি হলো টমি রবিনসন নামের একজন ডানপন্থী আন্দোলনকারীর। যিনি প্রতারণা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁর আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। লন্ডনের একটি আদালতের আদেশ অমান্য করায় বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী।
মাস্ক এই রবিনসনের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি মিথ্যা পোস্ট রিপোস্ট করেছেন। যেখানে রবিনসনকে ‘রাজনৈতিক বন্দী’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে রবিনসনের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২০ জানুয়ারির একটি পোস্টে বলা হয়েছিল, বিলিয়নিয়ার মাস্ক তাঁর আইনি খরচের কিছু অংশ পরিশোধ করছেন।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে রয়টার্স রবিনসনের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মের্ট ক্যান বায়ার মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, মাস্কের কাছে এই অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা ডানপন্থীদের যুদ্ধের পদাতিক সৈনিক। যেখানে একদিকে আছে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী বামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং অন্যদিকে বাক্স্বাধীনতার পক্ষে থাকা ডানপন্থীরা।
ইউরোপীয় রাজনীতিতে মাস্কের প্রভাব এখনো অস্পষ্ট। তবে তাঁর সক্রিয়তা টেসলার ক্ষতি করছে বলেই মনে হচ্ছে। ২০২৪ সালে টেসলার বিক্রি কমেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে সামগ্রিকভাবে গাড়ির বাজার মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
জানুয়ারির শেষের দিকে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি পর্যালোচনা ওয়েবসাইটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ৫৯ শতাংশ মানুষ বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে ইচ্ছুক। তবে তারা মাস্কের কারণে টেসলা কিনবেন না। তারা ‘টেসলাটেকডাউন’ ও ‘স্বস্তিকার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও এক্সে টেসলাবিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন।
ব্রিটেনের একটি কমিউনিকেশনস ও মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম চালান বেন কিলবি। তিনি তিন বছর ধরে টেসলার ওয়াই মডেল চালাচ্ছেন। তবে মাস্কের কারণে এখন সেটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। কিলবি বলেন, ‘আমি আমার টেসলাকে ভালোবাসি, এর প্রযুক্তিকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি মাস্কের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না।’

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে মাস্কের এই সমর্থন গত ২৩ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এএফডির দ্বিতীয় স্থান অর্জনে খুব সামান্য ভূমিকা রেখেছে। মাস্কের পোস্ট, জনমত জরিপের তথ্য এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করে রয়টার্স।
তবে টেসলার সিইও মাস্ককে এতে দমিয়ে রাখা যায়নি। তিনি ইউরোপজুড়ে এখনো ডানপন্থী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রভাব সম্ভবত টেসলার ক্ষতি। তবে এর পেছনে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকতে পারে। যেমন এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন করা, যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মাস্কের প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনের পথে বাধা হবে না।
এই প্রতিবেদন তৈরির সময় ইলন মাস্ক এবং টেসলার কাছে মন্তব্যের অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত জানুয়ারিতে মাস্ক ইউরোপের ‘নিয়মকানুন ও আমলাতন্ত্রের স্তূপ’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা তাঁকে নিষেধাজ্ঞা দিলে মাস্ক এক্সে একটি মিম পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। যেখানে ‘ট্রপিক থান্ডার’ সিনেমার একটি উদ্ধৃতি ছিল, ‘টেক আ বিগ স্টেপ ব্যাক অ্যান্ড লিটারেলি, ফাক ইউর ওউন ফেস!’
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে এএফডিকে একটি সন্দেহভাজন উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তা সত্ত্বেও দলটি গত মাসের নির্বাচনে জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে। জার্মানির নাৎসি অতীতের কারণে উগ্র ডানপন্থার ওপর ঐতিহাসিকভাবে যে কলঙ্ক লেগে আছে, তা সত্ত্বেও এই উত্থান তাৎপর্যপূর্ণ। দলটির একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ গত বছর একটি মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাৎসিদের প্রধান আধা সামরিক বাহিনী এসএস ‘পুরোপুরি অপরাধী ছিল না’।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সে এএফডি নেত্রী অ্যালিস ভাইডেলের সাক্ষাৎকার প্রচার করেন।
এএফডির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনার দৃষ্টান্ত। যা থেকে বোঝা যায়, জনতুষ্টিবাদী উগ্র ডানপন্থী দলগুলো ইউরোপে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য পাচ্ছে। একসময় রাজনৈতিক প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এই দলগুলো এখন ইতালি, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ায় সরকার চালাচ্ছে অথবা সরকার গঠনে অংশীদার হচ্ছে। সুইডেন, অস্ট্রিয়া ও জার্মানির পার্লামেন্টেও তারা বৃহত্তম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং ফ্রান্সেও জনমত সমীক্ষায় তাদের সমর্থন বাড়ছে। এ ছাড়া রোমানিয়া, বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালেও উগ্র ডানপন্থার সমর্থন বাড়ছে।
উচ্চ অভিবাসন, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বাক্স্বাধীনতার ওপর অনুভূত সীমাবদ্ধতা—তাদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছে। আর মাস্ক তাঁর ‘এক্সে’ এই বিষয়গুলোকেই বেশি করে তুলে ধরছেন।
রয়টার্স ২০ হাজারের বেশি পোস্ট ও রিপোস্ট পর্যালোচনায় দেখেছে, ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গত নভেম্বরে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার পর থেকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
মাস্ক ব্রিটেন, ইতালি ও রোমানিয়ার ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের ‘এক্সে’ প্রচার করেছেন এবং রাজনৈতিক নেতা ও ইইউর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মাস্ক যখন জার্মানিতে এএফডিকে প্রথম স্পষ্টভাবে সমর্থন করেন, তখন রয়টার্সের জনমত সমীক্ষা অনুসারে দলটির সমর্থন ছিল মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তারা নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ।
রয়টার্সের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, এই সংখ্যাগুলো থেকে বোঝা যায়, মাস্কের সমর্থনে নির্বাচনের ওপর খুব কম প্রভাব পড়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান থেকে আসা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা জার্মানিতে তিনটি সহিংস হামলার ঘটনাও এএফডিকে সাহায্য করতে পারে, যারা অভিবাসীদের গণবহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেষকদের মধ্যে দুজন মনে করেন, মাস্ক কিছু ভোটারের মধ্যে—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে দলটির আকর্ষণ বাড়িয়েছেন, যা আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে।
জার্মানির ডব্লিউএইচইউ—অটো বেইশিম স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের কৌশল ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ার মার্টিন ফাসনাখট বলেন, ‘তিনি (মাস্ক) এএফডিকে কিছুটা হলেও আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী দেখাতে সাহায্য করেছেন।’
তবে মাস্কের উগ্র ডানপন্থী দলের প্রতি উৎসাহ সম্ভবত টেসলার জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিইএ) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ইউরোপে টেসলার বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কমে গেছে। অথচ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিক্রি ৩৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইউরোপে বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, টেসলার এই পতন অব্যাহত রয়েছে। চারটি করপোরেট-কার ফ্লিট ম্যানেজার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শোরুমে টেসলার বিক্রি আগের মতোই আছে। কোথাও কমেছে। তবে এই অবস্থা কঠিন সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে এক্সে মাস্কের পোস্ট ও রিপোস্টগুলো পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, নভেম্বরে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে ২৫০ বিলিয়নের বেশি ডলার অনুদান দেওয়ার পর তিনি ইউরোপের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমালোচনা করেছেন। কারাবন্দী এক উগ্র ডানপন্থী কর্মীর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং ‘রিফর্ম’ নামক একটি ডানপন্থী দলের সমর্থন করেছেন। যাঁরা ট্রাম্পের মতোই অভিবাসন কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ব্যয় ত্যাগ করার অঙ্গীকার করেছে।
মাস্ক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তাঁরা উভয়েই অভিবাসন এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে কম জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি মেলোনি ইলন মাস্ককে ‘মূল্যবান জিনিয়াস’ বলে অভিহিত করেছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসির বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়ান টাম্বিনি বলেন, ইউরোপের জনমতকে প্রভাবিত করার ‘অসীম ক্ষমতা’ রয়েছে এক্সের মতো মার্কিন টেক প্ল্যাটফর্মগুলোর।
টাম্বিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব নয় যে তিনি (মাস্ক) যেকোনো দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করে দিতে পারেন। এর ফলে ইইউর অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভারসাম্যেরও সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
ফরাসি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসমা মহাল্লা বলেন, ইউরোপীয় সরকারগুলো মাস্কের ক্রমবর্ধমান খ্যাতি নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, ‘মাস্কের লক্ষ্য ইউরোপীয় নীতিকে দুর্বল করা এবং আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার করা।’
তবে আমেরিকার ইউরোপ নীতিতে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।
ইউরোপের সমালোচনায় মাস্ক প্রায়শই এক্সে যাচাই না করা তথ্য শেয়ার করেন। যার মধ্যে বেনামি অ্যাকাউন্টগুলোও থাকে। যেগুলো তাঁকে ট্যাগ করে এবং তিনি ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য পরিচিত কিছু অ্যাকাউন্ট থেকেও বিভিন্ন তথ্য প্রচার করেন।
রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাস্কের বেশির ভাগ পোস্ট গণ-অভিবাসন এবং তথাকথিত বাক্স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। তিনি ইউরোপের কম জন্মহার এবং ট্রান্সজেন্ডার নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের পাশ কাটিয়ে বরং কট্টর ডানপন্থী কিছু অ্যাকাউন্টের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।
এ ধরনের একটি অ্যাকাউন্ট হলো পিটার সুইডেন-৭। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার পিটার ইমানুয়েলসেন এই অ্যাকাউন্ট চালান। এই ইমানুয়েলসেন ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় আল-কায়েদার হামলাকে ‘ইনসাইড জব’ এবং চাঁদে অবতরণকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
মাস্ক অন্তত অর্ধডজন বিভ্রান্তিকর পোস্টে ইমানুয়েলসেনকে প্রচার করেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি ইমানুয়েলসেনের একটি পোস্ট রিপোস্ট করেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ফেসবুক পোস্টের জন্য এক ব্যক্তিকে ২০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে ওই ব্যক্তি তাঁর পোস্টে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া একটি হোটেলে হামলার জন্য লোকজনকে উসকানি দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু মাস্ক বিষয়টি যাচাই করেননি, এমনকি তাঁর পোস্টে উল্লেখও করেননি।
ইউরোপের বিষয়ে মাস্ক যে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সেটি হলো টমি রবিনসন নামের একজন ডানপন্থী আন্দোলনকারীর। যিনি প্রতারণা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁর আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। লন্ডনের একটি আদালতের আদেশ অমান্য করায় বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী।
মাস্ক এই রবিনসনের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি মিথ্যা পোস্ট রিপোস্ট করেছেন। যেখানে রবিনসনকে ‘রাজনৈতিক বন্দী’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে রবিনসনের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২০ জানুয়ারির একটি পোস্টে বলা হয়েছিল, বিলিয়নিয়ার মাস্ক তাঁর আইনি খরচের কিছু অংশ পরিশোধ করছেন।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে রয়টার্স রবিনসনের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মের্ট ক্যান বায়ার মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, মাস্কের কাছে এই অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা ডানপন্থীদের যুদ্ধের পদাতিক সৈনিক। যেখানে একদিকে আছে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী বামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং অন্যদিকে বাক্স্বাধীনতার পক্ষে থাকা ডানপন্থীরা।
ইউরোপীয় রাজনীতিতে মাস্কের প্রভাব এখনো অস্পষ্ট। তবে তাঁর সক্রিয়তা টেসলার ক্ষতি করছে বলেই মনে হচ্ছে। ২০২৪ সালে টেসলার বিক্রি কমেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে সামগ্রিকভাবে গাড়ির বাজার মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
জানুয়ারির শেষের দিকে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি পর্যালোচনা ওয়েবসাইটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ৫৯ শতাংশ মানুষ বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে ইচ্ছুক। তবে তারা মাস্কের কারণে টেসলা কিনবেন না। তারা ‘টেসলাটেকডাউন’ ও ‘স্বস্তিকার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও এক্সে টেসলাবিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন।
ব্রিটেনের একটি কমিউনিকেশনস ও মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম চালান বেন কিলবি। তিনি তিন বছর ধরে টেসলার ওয়াই মডেল চালাচ্ছেন। তবে মাস্কের কারণে এখন সেটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। কিলবি বলেন, ‘আমি আমার টেসলাকে ভালোবাসি, এর প্রযুক্তিকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি মাস্কের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না।’

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
৩ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
৩ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)।
৫ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।
প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’
ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।
বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।
প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’
ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।
বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
৩ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)।
৫ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্যান্য সদস্যদের সাথে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিস্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।
গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিস্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’
তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইজরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইজরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনও কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনও ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।
গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সাথে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’
৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’
গাজার খ্রিস্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।
গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যেই প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।
অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্যান্য সদস্যদের সাথে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিস্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।
গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিস্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’
তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইজরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইজরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনও কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনও ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।
গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সাথে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’
৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’
গাজার খ্রিস্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।
গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যেই প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।
অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
৩ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)।
৫ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছে, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।
রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।
নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।
বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এবং বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।
এই বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই এলাকার কাছে, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা এবং এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছে, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।
রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।
নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।
বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এবং বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।
এই বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই এলাকার কাছে, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা এবং এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
৩ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
৩ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।
দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।
এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।
তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।
ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।
দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।
এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।
তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।
ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
৩ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
৩ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)।
৫ ঘণ্টা আগে