আজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় তিন বছর পর সরাসরি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে লড়াইরত দুই প্রতিবেশী রাশিয়া ও ইউক্রেন। আজ বৃহস্পতিবার তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সবার নজর এখন ইস্তাম্বুলের দিকে। কারণ, এই বৈঠকই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।
গতকাল বুধবার গভীর রাতে রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন ঘোষণা দিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই আলোচনায় উপস্থিত থাকবেন না। অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি উপস্থিত থাকবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে আলোচনায় যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও তিনিও উপস্থিত থাকবেন না বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত রোববার পুতিন তুরস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যরা যেখানে এত দিন প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনার চেষ্টা চালিয়েছিল, সেখানে পুতিন সরাসরি বৈঠকের কথা বলেন। তিনি ২০২২ সালে তুরস্কে হওয়া সরাসরি আলোচনার কথা উল্লেখ করে তা আবার শুরু করার পক্ষে যুক্তি দেন।
পুতিন বলেন, ‘২০২২ সালে আলোচনা রাশিয়া ভেঙে দেয়নি। কিয়েভই সেটা করেছিল। তবু আমরা কিয়েভকে কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই সরাসরি আলোচনা আবার শুরু করার প্রস্তাব দিচ্ছি।’ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করে। এর অল্প সময় পরই তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেন আলোচনা করেছিল।
ভলোদিমির জেলেনস্কির মতে, রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে দনবাস অঞ্চলের দখল ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানানোয় সেই আলোচনা ভেঙে যায়। দনবাস অঞ্চল ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত, যার কিছু অংশ রাশিয়া দখল করে নিয়েছে।
জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়া চেয়েছিল ইউক্রেন দীর্ঘ পাল্লার অস্ত্র সমর্পণ করুক, নিরপেক্ষতা ঘোষণার জন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনুক এবং তাদের সশস্ত্র বাহিনীর আকার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে ফেলুক। জেলেনস্কি সে সময় বলেছিলেন, ‘কোনো আলোচনাই হয়নি, এটি ছিল এক খুনির চরমপত্র।’
জেলেনস্কি আগে বলেছিলেন, যেকোনো শান্তি চুক্তির জন্য রাশিয়াকে দখল করা ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে। তবে গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি বলেন, ন্যাটো যদি বর্তমানে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের অংশের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেয় তবে যুদ্ধের ‘উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়’ শেষ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া যে ভূমি দখল করেছে তা কূটনৈতিকভাবে আলোচনা করা যেতে পারে।
লন্ডনভিত্তিক থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউসের সিনিয়র কনসালটিং ফেলো কিয়ের জাইলস আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য আমেরিকা যে চাপ সৃষ্টি করেছে, তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে। মনে হচ্ছে এই পরিবর্তনের সাম্প্রতিক উপাদানগুলো, বিশেষ করে ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপীয় সংহতি, রাশিয়াকে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিতে বাধ্য করেছে।’
ইউক্রেনের চার প্রধান ইউরোপীয় মিত্র পুতিনকে নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বা নতুন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে বলে চরমপত্র দেওয়ার একদিন পর আলোচনায় পুতিনের আগ্রহ দেখা দেয়। এই ৪ ইউরোপীয় দেশ হলো—ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং পোল্যান্ড। তারা কিয়েভ সফরের পর এই চরমপত্র দেয়।
এই চার দেশ পুতিনকে ১২ মে পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়। ১১ মে পুতিন যুদ্ধবিরতি মানার প্রতিশ্রুতি না দিয়ে বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে কার্যকর আলোচনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর উদ্দেশ্য হলো—সংঘাতের মূল কারণ দূর করা, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে একটি দীর্ঘমেয়াদি, স্থায়ী শান্তি স্থাপন করা।’
আলোচনা আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনাটি ইস্তাম্বুলের দোলমাবাগ প্রাসাদে রুদ্ধদ্বার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। ইস্তাম্বুল শহর এশিয়া ও ইউরোপের সীমানা জুড়ে অবস্থিত। বসফোরাস প্রণালির ওপর অবস্থিত এই প্রাসাদটি ১৯ শতকের মাঝামাঝি থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল।
চার ইউরোপীয় নেতা—ব্রিটেনের কিয়ের স্টারমার, ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাখোঁ, জার্মানির ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎজ এবং পোল্যান্ডের দোনাল্দ তুস্ক—বলেছেন, তাঁরা পুতিনকে তাদের চরমপত্র সম্পর্কে ফোন কলের মাধ্যমে ট্রাম্পকে জানিয়েছেন এবং ইঙ্গিত দেন, ট্রাম্পও এর পক্ষে। কিন্তু পুতিন যখন কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানান, তখন ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনকে ‘অবিলম্বে’ রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন।
ট্রাম্প ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধ অবসান ঘটাবেন। ট্রাম্প প্রশাসন ফেব্রুয়ারি থেকেই সেই প্রচেষ্টা শুরু করে। সে সময় সৌদি আরবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের পৃথক বেশ কয়েক দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কোনো চুক্তি সে সময় হয়নি।
এ ছাড়া, গত এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার অবস্থান থেকে একধাপ পিছিয়ে আসার ইঙ্গিত দেয়। ট্রাম্প প্রশাসন বলেছিল, তারা চায় ইউরোপ ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় নেতৃত্ব দিক। দেশটি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অগ্রাধিকার রয়েছে, যার মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা অন্যতম। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহে ট্রাম্প এবং তাঁর দল আলোচনায় অর্থপূর্ণ অগ্রগতির অভাবে ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং শান্তি মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছেন।
আজ ইস্তাম্বুলে যে আলোচনা হবে, তাতে ইউক্রেনের যোগদানের ওপর জোর দেওয়ার ব্যাখ্যায় ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছিলেন, ‘অন্তত তারা নির্ধারণ করতে পারবে যে একটি চুক্তি সম্ভব কিনা এবং যদি সম্ভব না হয় তবে ইউরোপীয় নেতারা এবং যুক্তরাষ্ট্র জানতে পারবে পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়েছে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবে!’
এদিকে, পুতিনের আহ্বানের পর জেলেনস্কি সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (রুশ প্রেসিডেন্ট) পুতিনের সঙ্গে সরাসরি যে আলোচনার ধারণা দিয়েছেন, তা সমর্থন করেছি। আমি প্রকাশ্যে সাক্ষাতের জন্য আমার প্রস্তুতি তুলে ধরেছি। আমি তুরস্কে থাকব। আমি আশা করি, রাশিয়ানরা সাক্ষাৎ এড়িয়ে যাবে না।’
গত মঙ্গলবারও জেলেনস্কি ঘোষণা করেন, তিনি বৃহস্পতিবার আঙ্কারায় থাকবেন। এ সময় তিনি সেখানে তিনি তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে দেখা করবেন। তবে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা পরবর্তীতে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইউক্রেন ও রাশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলগকে ইস্তাম্বুলের আলোচনায় যোগ দিতে পাঠাবেন। বুধবার রাতে রাশিয়া আলোচনার জন্য তাদের দলের ঘোষণা দিয়েছে। এতে পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ভ্লাদিমির মেদিনস্কি নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর সঙ্গে থাকবেন উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্ডার ফোমিন এবং প্রধান গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পরিচালক ইগর কোস্তিউকভ।
জেলেনস্কি আগে বলেছিলেন, পুতিন উপস্থিত থাকলেই কেবল তিনি সরাসরি আলোচনায় থাকবেন। জেলেনস্কি মঙ্গলবার এক্স পোস্টে বলেন, ‘রাশিয়ায় সবকিছুর সিদ্ধান্ত পুতিন নেন, তাই তিনিই যুদ্ধের সমাধান করবেন। এটা তাঁর যুদ্ধ। সুতরাং, আলোচনা তারই সঙ্গে হওয়া উচিত।’ পুতিন যেহেতু এখন উপস্থিত থাকার জন্য প্রস্তুত নন, তাই জেলেনস্কি নিজে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনায় অংশ নেবেন কিনা বা তিনি তাঁর দলের ওপর ছেড়ে দেবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।
তবে, জেলেনস্কি অনেক দিক থেকে পুতিনের চেয়ে এগিয়ে গেছেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে এবং তাঁকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে। কিয়ের জাইলস বলেছেন, ‘জেলেনস্কি রাশিয়ার সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যাতে তারা দেখাতে পারে যে, তাদের সত্যিকারের আগ্রহ আছে; রাশিয়া এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে নাকি করবে না, সেটা তাদের ওপর নির্ভর করছে।’
এদিকে, তুরস্কের বৈঠকে ঠিক কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তা অনুমান করা কঠিন। জাইলস বলেছেন, ‘বৈঠকে কোনো অর্থপূর্ণ আলোচনা হবে কি না তা ভবিষ্যদ্বাণী করা হঠকারিতা হবে। কারণ, দুই পক্ষের গ্রহণযোগ্য ফল এখনো অনেক দূরে। রাশিয়া ইউক্রেনকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে নিষ্ক্রিয় করতে চায়, আর ইউক্রেন টিকে থাকতে চায়।’
বর্তমানে, ইউক্রেন ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়া জোর দিয়ে বলেছে—তারা এই ধরনের যুদ্ধবিরতিতে যোগ দেওয়ার আগে তাদের বেশ কয়েকটি দাবি মানতে হবে। মস্কো বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থার ব্যাপারে নিশ্চয়তা চায় এবং ইউক্রেন যেন এই সুযোগে পুনরায় অস্ত্র সংগ্রহ ও আরও সৈন্য সমাবেশ না করে। এর পরিবর্তে, পুতিন সম্প্রতি সংক্ষিপ্ত, একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। তবে ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া আসলে কখনো মেনে চলেনি।
পুতিন রোববার বলেন, ‘আমরা এটা উড়িয়ে দিচ্ছি না যে এই আলোচনা চলাকালে, কিছু নতুন যুদ্ধবিরতি, একটি নতুন যুদ্ধবিরতি এবং একটি বাস্তব যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে একমত হওয়া সম্ভব হবে, যা কেবল রাশিয়াই নয়, ইউক্রেনীয় পক্ষও মেনে চলবে। (এটি) হবে প্রথম পদক্ষেপ। আমি আবারও বলছি, এটি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল শান্তির দিকে এবং সশস্ত্র সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার কোনো পূর্বাভাস নয়।’
জাইলস বলেছেন, যদি আলোচনা হয়, ‘তবে তা-ই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শান্তি আলোচনা বলে যা উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনোটিই আসলে সেরকম ছিল না।’ তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে হওয়া দুটি সমান্তরাল আলোচনার কথা উল্লেখ করেন।

প্রায় তিন বছর পর সরাসরি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে লড়াইরত দুই প্রতিবেশী রাশিয়া ও ইউক্রেন। আজ বৃহস্পতিবার তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সবার নজর এখন ইস্তাম্বুলের দিকে। কারণ, এই বৈঠকই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।
গতকাল বুধবার গভীর রাতে রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন ঘোষণা দিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই আলোচনায় উপস্থিত থাকবেন না। অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি উপস্থিত থাকবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে আলোচনায় যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও তিনিও উপস্থিত থাকবেন না বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত রোববার পুতিন তুরস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যরা যেখানে এত দিন প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনার চেষ্টা চালিয়েছিল, সেখানে পুতিন সরাসরি বৈঠকের কথা বলেন। তিনি ২০২২ সালে তুরস্কে হওয়া সরাসরি আলোচনার কথা উল্লেখ করে তা আবার শুরু করার পক্ষে যুক্তি দেন।
পুতিন বলেন, ‘২০২২ সালে আলোচনা রাশিয়া ভেঙে দেয়নি। কিয়েভই সেটা করেছিল। তবু আমরা কিয়েভকে কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই সরাসরি আলোচনা আবার শুরু করার প্রস্তাব দিচ্ছি।’ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করে। এর অল্প সময় পরই তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেন আলোচনা করেছিল।
ভলোদিমির জেলেনস্কির মতে, রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে দনবাস অঞ্চলের দখল ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানানোয় সেই আলোচনা ভেঙে যায়। দনবাস অঞ্চল ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত, যার কিছু অংশ রাশিয়া দখল করে নিয়েছে।
জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়া চেয়েছিল ইউক্রেন দীর্ঘ পাল্লার অস্ত্র সমর্পণ করুক, নিরপেক্ষতা ঘোষণার জন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনুক এবং তাদের সশস্ত্র বাহিনীর আকার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে ফেলুক। জেলেনস্কি সে সময় বলেছিলেন, ‘কোনো আলোচনাই হয়নি, এটি ছিল এক খুনির চরমপত্র।’
জেলেনস্কি আগে বলেছিলেন, যেকোনো শান্তি চুক্তির জন্য রাশিয়াকে দখল করা ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে। তবে গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি বলেন, ন্যাটো যদি বর্তমানে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের অংশের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেয় তবে যুদ্ধের ‘উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়’ শেষ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া যে ভূমি দখল করেছে তা কূটনৈতিকভাবে আলোচনা করা যেতে পারে।
লন্ডনভিত্তিক থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউসের সিনিয়র কনসালটিং ফেলো কিয়ের জাইলস আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য আমেরিকা যে চাপ সৃষ্টি করেছে, তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে। মনে হচ্ছে এই পরিবর্তনের সাম্প্রতিক উপাদানগুলো, বিশেষ করে ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপীয় সংহতি, রাশিয়াকে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিতে বাধ্য করেছে।’
ইউক্রেনের চার প্রধান ইউরোপীয় মিত্র পুতিনকে নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বা নতুন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে বলে চরমপত্র দেওয়ার একদিন পর আলোচনায় পুতিনের আগ্রহ দেখা দেয়। এই ৪ ইউরোপীয় দেশ হলো—ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং পোল্যান্ড। তারা কিয়েভ সফরের পর এই চরমপত্র দেয়।
এই চার দেশ পুতিনকে ১২ মে পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়। ১১ মে পুতিন যুদ্ধবিরতি মানার প্রতিশ্রুতি না দিয়ে বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে কার্যকর আলোচনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর উদ্দেশ্য হলো—সংঘাতের মূল কারণ দূর করা, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে একটি দীর্ঘমেয়াদি, স্থায়ী শান্তি স্থাপন করা।’
আলোচনা আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনাটি ইস্তাম্বুলের দোলমাবাগ প্রাসাদে রুদ্ধদ্বার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। ইস্তাম্বুল শহর এশিয়া ও ইউরোপের সীমানা জুড়ে অবস্থিত। বসফোরাস প্রণালির ওপর অবস্থিত এই প্রাসাদটি ১৯ শতকের মাঝামাঝি থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল।
চার ইউরোপীয় নেতা—ব্রিটেনের কিয়ের স্টারমার, ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাখোঁ, জার্মানির ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎজ এবং পোল্যান্ডের দোনাল্দ তুস্ক—বলেছেন, তাঁরা পুতিনকে তাদের চরমপত্র সম্পর্কে ফোন কলের মাধ্যমে ট্রাম্পকে জানিয়েছেন এবং ইঙ্গিত দেন, ট্রাম্পও এর পক্ষে। কিন্তু পুতিন যখন কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানান, তখন ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনকে ‘অবিলম্বে’ রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন।
ট্রাম্প ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধ অবসান ঘটাবেন। ট্রাম্প প্রশাসন ফেব্রুয়ারি থেকেই সেই প্রচেষ্টা শুরু করে। সে সময় সৌদি আরবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের পৃথক বেশ কয়েক দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কোনো চুক্তি সে সময় হয়নি।
এ ছাড়া, গত এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার অবস্থান থেকে একধাপ পিছিয়ে আসার ইঙ্গিত দেয়। ট্রাম্প প্রশাসন বলেছিল, তারা চায় ইউরোপ ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় নেতৃত্ব দিক। দেশটি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অগ্রাধিকার রয়েছে, যার মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা অন্যতম। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহে ট্রাম্প এবং তাঁর দল আলোচনায় অর্থপূর্ণ অগ্রগতির অভাবে ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং শান্তি মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছেন।
আজ ইস্তাম্বুলে যে আলোচনা হবে, তাতে ইউক্রেনের যোগদানের ওপর জোর দেওয়ার ব্যাখ্যায় ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছিলেন, ‘অন্তত তারা নির্ধারণ করতে পারবে যে একটি চুক্তি সম্ভব কিনা এবং যদি সম্ভব না হয় তবে ইউরোপীয় নেতারা এবং যুক্তরাষ্ট্র জানতে পারবে পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়েছে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবে!’
এদিকে, পুতিনের আহ্বানের পর জেলেনস্কি সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (রুশ প্রেসিডেন্ট) পুতিনের সঙ্গে সরাসরি যে আলোচনার ধারণা দিয়েছেন, তা সমর্থন করেছি। আমি প্রকাশ্যে সাক্ষাতের জন্য আমার প্রস্তুতি তুলে ধরেছি। আমি তুরস্কে থাকব। আমি আশা করি, রাশিয়ানরা সাক্ষাৎ এড়িয়ে যাবে না।’
গত মঙ্গলবারও জেলেনস্কি ঘোষণা করেন, তিনি বৃহস্পতিবার আঙ্কারায় থাকবেন। এ সময় তিনি সেখানে তিনি তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে দেখা করবেন। তবে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা পরবর্তীতে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইউক্রেন ও রাশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলগকে ইস্তাম্বুলের আলোচনায় যোগ দিতে পাঠাবেন। বুধবার রাতে রাশিয়া আলোচনার জন্য তাদের দলের ঘোষণা দিয়েছে। এতে পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ভ্লাদিমির মেদিনস্কি নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর সঙ্গে থাকবেন উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্ডার ফোমিন এবং প্রধান গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পরিচালক ইগর কোস্তিউকভ।
জেলেনস্কি আগে বলেছিলেন, পুতিন উপস্থিত থাকলেই কেবল তিনি সরাসরি আলোচনায় থাকবেন। জেলেনস্কি মঙ্গলবার এক্স পোস্টে বলেন, ‘রাশিয়ায় সবকিছুর সিদ্ধান্ত পুতিন নেন, তাই তিনিই যুদ্ধের সমাধান করবেন। এটা তাঁর যুদ্ধ। সুতরাং, আলোচনা তারই সঙ্গে হওয়া উচিত।’ পুতিন যেহেতু এখন উপস্থিত থাকার জন্য প্রস্তুত নন, তাই জেলেনস্কি নিজে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনায় অংশ নেবেন কিনা বা তিনি তাঁর দলের ওপর ছেড়ে দেবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।
তবে, জেলেনস্কি অনেক দিক থেকে পুতিনের চেয়ে এগিয়ে গেছেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে এবং তাঁকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে। কিয়ের জাইলস বলেছেন, ‘জেলেনস্কি রাশিয়ার সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যাতে তারা দেখাতে পারে যে, তাদের সত্যিকারের আগ্রহ আছে; রাশিয়া এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে নাকি করবে না, সেটা তাদের ওপর নির্ভর করছে।’
এদিকে, তুরস্কের বৈঠকে ঠিক কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তা অনুমান করা কঠিন। জাইলস বলেছেন, ‘বৈঠকে কোনো অর্থপূর্ণ আলোচনা হবে কি না তা ভবিষ্যদ্বাণী করা হঠকারিতা হবে। কারণ, দুই পক্ষের গ্রহণযোগ্য ফল এখনো অনেক দূরে। রাশিয়া ইউক্রেনকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে নিষ্ক্রিয় করতে চায়, আর ইউক্রেন টিকে থাকতে চায়।’
বর্তমানে, ইউক্রেন ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়া জোর দিয়ে বলেছে—তারা এই ধরনের যুদ্ধবিরতিতে যোগ দেওয়ার আগে তাদের বেশ কয়েকটি দাবি মানতে হবে। মস্কো বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থার ব্যাপারে নিশ্চয়তা চায় এবং ইউক্রেন যেন এই সুযোগে পুনরায় অস্ত্র সংগ্রহ ও আরও সৈন্য সমাবেশ না করে। এর পরিবর্তে, পুতিন সম্প্রতি সংক্ষিপ্ত, একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। তবে ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া আসলে কখনো মেনে চলেনি।
পুতিন রোববার বলেন, ‘আমরা এটা উড়িয়ে দিচ্ছি না যে এই আলোচনা চলাকালে, কিছু নতুন যুদ্ধবিরতি, একটি নতুন যুদ্ধবিরতি এবং একটি বাস্তব যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে একমত হওয়া সম্ভব হবে, যা কেবল রাশিয়াই নয়, ইউক্রেনীয় পক্ষও মেনে চলবে। (এটি) হবে প্রথম পদক্ষেপ। আমি আবারও বলছি, এটি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল শান্তির দিকে এবং সশস্ত্র সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার কোনো পূর্বাভাস নয়।’
জাইলস বলেছেন, যদি আলোচনা হয়, ‘তবে তা-ই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শান্তি আলোচনা বলে যা উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনোটিই আসলে সেরকম ছিল না।’ তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে হওয়া দুটি সমান্তরাল আলোচনার কথা উল্লেখ করেন।

যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
১ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
৩ মিনিট আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
১ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পৃথিবী যখন খেলায় মত্ত, তখন তিনি বন্দী ছিলেন অন্ধকারে। ছয় বছর বয়সে ঘরবন্দী হওয়া লিসা ২০ বছর পর সেই দরজা পেরিয়ে বাইরে এলেও আলো দেখার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন।
কিছু গল্প ক্ষতের মতো করে উন্মোচিত হয়। কিছু শৈশব যেন কোনোদিনই শুরু হয় না। লিসার জীবন তেমনই এক গল্প। নিঃশব্দে হারিয়ে যাওয়া এক শৈশবের, পরিস্থিতিতে মুছে যাওয়া এক শিশুর এবং এক নারীর।
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও ছিল শুধু অন্ধকার।
ছায়াই ছিল তাঁর পরিচয়। কথোপকথন বলতে ছিল শুধু দরজার নিচ দিয়ে ঠেলে দেওয়া থালাবাটির শব্দ। দুই দশক ধরে বন্দিদশার পর এখন তিনি নিজের নামে সাড়া দিতেও হিমশিম খান।
লিসার বন্দিত্ব শুরু হয়েছিল না লোহার শিক দিয়ে, না শিকল দিয়ে—শুরু হয়েছিল আতঙ্ক দিয়ে।
২০০০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। সেই কথায় আতঙ্ক এত গভীর হয়, তিনি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন নীরবতায়। এরই মধ্যে মারা যান তাঁর মা। কৃষক বাবা হয়ে পড়েন দুর্বল ও আতঙ্কিত। কোনো সহায়তা নেই, নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, কারও কাছে ভরসা চাওয়ার নেই। তাই তিনি এমন এক সিদ্ধান্ত নেন, যা মেয়ের জীবনের পরবর্তী ২০ বছর নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি মেয়েকে মাটির ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। বলেন, অন্ধকারই তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করবে। জানালাবিহীন একটি ঘরই হয়ে ওঠে তাঁর পৃথিবী। না সূর্যের আলো। না কোনো কথা। না কোনো মানুষের স্পর্শ।
শুধু দরজায় রেখে যাওয়া এক প্লেট খাবার আর প্রতিদিন একটু একটু করে সংকুচিত হয়ে যাওয়া জীবনের প্রতিধ্বনি।
যে ব্যবস্থা তাঁকে রক্ষা করবে ভাবা হয়েছিল, তা-ই শেষমেশ তাঁকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে নেয়।
সমাজকল্যাণ দপ্তরের দল যখন কুঁড়েঘরে প্রবেশ করে, তারা দেখতে পায় এক নারীকে, যাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন প্রাকৃতিক আলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে লিসার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তাঁর মানসিক বিকাশও গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। আচরণ বয়সের তুলনায় অনেক কম বয়সী শিশুর মতো। প্রতিটি শব্দে ভয় পান। যেকোনো স্পর্শে চমকে ওঠেন।
উদ্ধারের পর লিসাকে নিয়ে যাওয়া হয় জগদলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, যেখানে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিস্তারিত পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, লিসার শৈশব থেমে যায় প্রবল ট্রমায় আর প্রাপ্তবয়স্ক জীবন গঠিত হয়েছে ইন্দ্রিয়ের বঞ্চনায়।
সমাজকল্যাণ দপ্তর পুরো ঘটনায় এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষ লিসার পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—কেন তিনি ২০ বছর ধরে বন্দী ছিলেন এবং এই বন্দিত্ব আইনবহির্ভূত আটক হিসেবে বিবেচিত হবে কি না।
জেলার প্রশাসন কর্মকর্তারা বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়লে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে, লিসার বাবা কি ভয়ে ও অজ্ঞতার কারণে স্কুল, পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাননি?
লিসা বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের এক আশ্রমে আছেন, যেখানে সেবাকর্মী ও কাউন্সেলররা তাঁকে নতুন করে জীবন খুঁজে পেতে সহায়তা করছেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

পৃথিবী যখন খেলায় মত্ত, তখন তিনি বন্দী ছিলেন অন্ধকারে। ছয় বছর বয়সে ঘরবন্দী হওয়া লিসা ২০ বছর পর সেই দরজা পেরিয়ে বাইরে এলেও আলো দেখার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন।
কিছু গল্প ক্ষতের মতো করে উন্মোচিত হয়। কিছু শৈশব যেন কোনোদিনই শুরু হয় না। লিসার জীবন তেমনই এক গল্প। নিঃশব্দে হারিয়ে যাওয়া এক শৈশবের, পরিস্থিতিতে মুছে যাওয়া এক শিশুর এবং এক নারীর।
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও ছিল শুধু অন্ধকার।
ছায়াই ছিল তাঁর পরিচয়। কথোপকথন বলতে ছিল শুধু দরজার নিচ দিয়ে ঠেলে দেওয়া থালাবাটির শব্দ। দুই দশক ধরে বন্দিদশার পর এখন তিনি নিজের নামে সাড়া দিতেও হিমশিম খান।
লিসার বন্দিত্ব শুরু হয়েছিল না লোহার শিক দিয়ে, না শিকল দিয়ে—শুরু হয়েছিল আতঙ্ক দিয়ে।
২০০০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। সেই কথায় আতঙ্ক এত গভীর হয়, তিনি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন নীরবতায়। এরই মধ্যে মারা যান তাঁর মা। কৃষক বাবা হয়ে পড়েন দুর্বল ও আতঙ্কিত। কোনো সহায়তা নেই, নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, কারও কাছে ভরসা চাওয়ার নেই। তাই তিনি এমন এক সিদ্ধান্ত নেন, যা মেয়ের জীবনের পরবর্তী ২০ বছর নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি মেয়েকে মাটির ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। বলেন, অন্ধকারই তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করবে। জানালাবিহীন একটি ঘরই হয়ে ওঠে তাঁর পৃথিবী। না সূর্যের আলো। না কোনো কথা। না কোনো মানুষের স্পর্শ।
শুধু দরজায় রেখে যাওয়া এক প্লেট খাবার আর প্রতিদিন একটু একটু করে সংকুচিত হয়ে যাওয়া জীবনের প্রতিধ্বনি।
যে ব্যবস্থা তাঁকে রক্ষা করবে ভাবা হয়েছিল, তা-ই শেষমেশ তাঁকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে নেয়।
সমাজকল্যাণ দপ্তরের দল যখন কুঁড়েঘরে প্রবেশ করে, তারা দেখতে পায় এক নারীকে, যাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন প্রাকৃতিক আলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে লিসার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তাঁর মানসিক বিকাশও গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। আচরণ বয়সের তুলনায় অনেক কম বয়সী শিশুর মতো। প্রতিটি শব্দে ভয় পান। যেকোনো স্পর্শে চমকে ওঠেন।
উদ্ধারের পর লিসাকে নিয়ে যাওয়া হয় জগদলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, যেখানে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিস্তারিত পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, লিসার শৈশব থেমে যায় প্রবল ট্রমায় আর প্রাপ্তবয়স্ক জীবন গঠিত হয়েছে ইন্দ্রিয়ের বঞ্চনায়।
সমাজকল্যাণ দপ্তর পুরো ঘটনায় এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষ লিসার পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—কেন তিনি ২০ বছর ধরে বন্দী ছিলেন এবং এই বন্দিত্ব আইনবহির্ভূত আটক হিসেবে বিবেচিত হবে কি না।
জেলার প্রশাসন কর্মকর্তারা বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়লে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে, লিসার বাবা কি ভয়ে ও অজ্ঞতার কারণে স্কুল, পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাননি?
লিসা বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের এক আশ্রমে আছেন, যেখানে সেবাকর্মী ও কাউন্সেলররা তাঁকে নতুন করে জীবন খুঁজে পেতে সহায়তা করছেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

প্রায় ৩ বছর পর সরাসরি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে লড়াইরত দুই প্রতিবেশী রাশিয়া ও ইউক্রেন। আজ বৃহস্পতিবার তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সবার নজর এখন ইস্তাম্বুলের দিকে। কারণ, এই বৈঠকই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।
১৫ মে ২০২৫
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
৩ মিনিট আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
১ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছে, দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনালে হাজার হাজার স্যুটকেস পড়ে আছে। বহু যাত্রী মেঝেতে ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর কেউ কেউ ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এক যাত্রী ইন্ডিগোর এই ব্যর্থতাকে ‘মানসিক অত্যাচার’ বলে অভিহিত করে এনডিটিভিকে জানান, বারো ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তিনি বিমান সংস্থাটির কাছ থেকে কোনো স্পষ্ট জবাব পাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এখানে। প্রতিবার তারা বলছেন এক ঘণ্টা দেরি, দু–ঘণ্টা দেরি। আমরা একটা বিয়েতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আমাদের মালপত্র পর্যন্ত হাতে নেই। ইন্ডিগোর কর্মীরা আমাদের কিছু বলছেন না। এই মুহূর্তে এটি সবচেয়ে খারাপ বিমান সংস্থা। আমি বুঝি না কেন তারা নতুন যাত্রী নিচ্ছে আর মালপত্র জমিয়ে রাখছেন।’
আরেক যাত্রী জানালেন যে তিনি গতকাল দুপুর থেকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, ‘তারা বারবার ফ্লাইট পিছিয়ে দিচ্ছে। ইন্ডিগোর তরফ থেকে আমরা কোনো স্পষ্ট খবর পাচ্ছি না।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘খুবই মানসিক চাপের বিষয় এটা। চৌদ্দ ঘণ্টা ধরে আমি বিমানবন্দরে বসে আছি। খাবার বা অন্য কিছুর জন্য কোনো কুপন নেই। আমার কানেকটিং ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। যাত্রীরা চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন, কিন্তু কর্মীরা কোনো স্পষ্ট জবাব দিচ্ছেন না। এমন জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর জন্য কর্মীদের বিন্দুমাত্র প্রশিক্ষণ নেই।’
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরসহ অন্যান্য বিমানবন্দরেও একই ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে। আটকা পড়া যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছিলেন। কারণ তাদের কোনো খাবার বা থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। একদল যাত্রী প্রতিবাদস্বরূপ একটি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট পর্যন্ত আটকে দিয়েছিলেন।
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরের এক যাত্রী বলেন, ‘আমার ফ্লাইট গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছাড়ার কথা ছিল। আমি আমার সহকর্মীকে নিয়ে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছাই। আমাদের বলা হয়েছিল যে ফ্লাইট সময়মতো চলবে। এখন আমরা এখানে বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আছি। ইন্ডিগো আমাদের কোনো স্পষ্ট ধারণা দেয়নি। তারা শুধু বলে চলেছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য দেরি হচ্ছে। আমাদের কোনো স্পষ্ট খবর, খাবার বা পানি দেওয়া হয়নি। ইন্ডিগোর সাড়া একেবারেই যাচ্ছেতাই। এখানে বয়স্ক মানুষ আছেন, যাদের বিশেষ দায়বদ্ধতা আছে, তাদের জন্য কোনো সমাধান নেই। এটা খুবই হাস্যকর।’
গোয়া বিমানবন্দরে একদল যাত্রী হতাশায় ভেঙে পড়েন। এক ভিডিওতে দেখা যায় তারা ইন্ডিগোর কর্মীদের লক্ষ্য করে চিৎকার করছেন। পরিস্থিতি সামলাতে বহু পুলিশ কর্মীকেও সেখানে দেখা যায়। চেন্নাই বিমানবন্দরে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন। সেখানে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) ইন্ডিগোর যাত্রীদের প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে। বিশাখাপত্তম বিমানবন্দরে কমপক্ষে ঊনপঞ্চাশটি বহির্গমন ও তেতাল্লিশটি ইনকামিং ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগোর এই পরিচালনগত ত্রুটি আজ চতুর্থ দিনের মতো চলছে। কুড়ি বছরের পুরোনো এই বিমান সংস্থাটি ক্রু-সংকট ও প্রযুক্তিগত সমস্যাসহ একাধিক কারণে পাঁচ শ পঞ্চাশটিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করার রেকর্ড তৈরি করেছে। এর মধ্যে মুম্বাই বিমানবন্দরে এক শ চারটি, দিল্লি বিমানবন্দরে দু শ পঁচিশটি, বেঙ্গালুরুতে এক শ দু'টি এবং হায়দরাবাদে বিরানব্বইটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ভূপাল বিমানবন্দরেও কমপক্ষে পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগো স্বীকার করেছে যে তারা নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রু-এর প্রয়োজনীয়তা ভুলভাবে আন্দাজ করেছিল এবং পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল, যার ফলস্বরূপ শীতকালীন আবহাওয়া ও যানজটের সময়ে পর্যাপ্ত ক্রু-এর অভাব দেখা দিয়েছে। বিমান সংস্থাটি সতর্ক করেছে, সময়সূচি স্বাভাবিক করার চেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত ফ্লাইট বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জানিয়েছে, আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে তারা আরও বিঘ্ন এড়াতে ফ্লাইট পরিচালন কমিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স কর্মীদের বলেছেন যে পরিচালন স্বাভাবিক করা এবং সময়ানুবর্তিতা ফিরিয়ে আনা ‘সহজ লক্ষ্য হবে না।’ বিমান সংস্থাটি গত রাতে তাদের গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের কাছে নতুন করে দুঃখ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘গত দুই দিন ধরে ইন্ডিগোর নেটওয়ার্ক এবং পরিচালন ব্যবস্থায় ব্যাপক বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের সব গ্রাহক এবং শিল্প স্টেকহোল্ডারদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’ তারা আরও যোগ করেছে, ‘ইন্ডিগো এই বিলম্বের প্রভাব কমাতে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে ও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছে, দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনালে হাজার হাজার স্যুটকেস পড়ে আছে। বহু যাত্রী মেঝেতে ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর কেউ কেউ ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এক যাত্রী ইন্ডিগোর এই ব্যর্থতাকে ‘মানসিক অত্যাচার’ বলে অভিহিত করে এনডিটিভিকে জানান, বারো ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তিনি বিমান সংস্থাটির কাছ থেকে কোনো স্পষ্ট জবাব পাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এখানে। প্রতিবার তারা বলছেন এক ঘণ্টা দেরি, দু–ঘণ্টা দেরি। আমরা একটা বিয়েতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আমাদের মালপত্র পর্যন্ত হাতে নেই। ইন্ডিগোর কর্মীরা আমাদের কিছু বলছেন না। এই মুহূর্তে এটি সবচেয়ে খারাপ বিমান সংস্থা। আমি বুঝি না কেন তারা নতুন যাত্রী নিচ্ছে আর মালপত্র জমিয়ে রাখছেন।’
আরেক যাত্রী জানালেন যে তিনি গতকাল দুপুর থেকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, ‘তারা বারবার ফ্লাইট পিছিয়ে দিচ্ছে। ইন্ডিগোর তরফ থেকে আমরা কোনো স্পষ্ট খবর পাচ্ছি না।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘খুবই মানসিক চাপের বিষয় এটা। চৌদ্দ ঘণ্টা ধরে আমি বিমানবন্দরে বসে আছি। খাবার বা অন্য কিছুর জন্য কোনো কুপন নেই। আমার কানেকটিং ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। যাত্রীরা চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন, কিন্তু কর্মীরা কোনো স্পষ্ট জবাব দিচ্ছেন না। এমন জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর জন্য কর্মীদের বিন্দুমাত্র প্রশিক্ষণ নেই।’
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরসহ অন্যান্য বিমানবন্দরেও একই ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে। আটকা পড়া যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছিলেন। কারণ তাদের কোনো খাবার বা থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। একদল যাত্রী প্রতিবাদস্বরূপ একটি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট পর্যন্ত আটকে দিয়েছিলেন।
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরের এক যাত্রী বলেন, ‘আমার ফ্লাইট গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছাড়ার কথা ছিল। আমি আমার সহকর্মীকে নিয়ে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছাই। আমাদের বলা হয়েছিল যে ফ্লাইট সময়মতো চলবে। এখন আমরা এখানে বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আছি। ইন্ডিগো আমাদের কোনো স্পষ্ট ধারণা দেয়নি। তারা শুধু বলে চলেছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য দেরি হচ্ছে। আমাদের কোনো স্পষ্ট খবর, খাবার বা পানি দেওয়া হয়নি। ইন্ডিগোর সাড়া একেবারেই যাচ্ছেতাই। এখানে বয়স্ক মানুষ আছেন, যাদের বিশেষ দায়বদ্ধতা আছে, তাদের জন্য কোনো সমাধান নেই। এটা খুবই হাস্যকর।’
গোয়া বিমানবন্দরে একদল যাত্রী হতাশায় ভেঙে পড়েন। এক ভিডিওতে দেখা যায় তারা ইন্ডিগোর কর্মীদের লক্ষ্য করে চিৎকার করছেন। পরিস্থিতি সামলাতে বহু পুলিশ কর্মীকেও সেখানে দেখা যায়। চেন্নাই বিমানবন্দরে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন। সেখানে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) ইন্ডিগোর যাত্রীদের প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে। বিশাখাপত্তম বিমানবন্দরে কমপক্ষে ঊনপঞ্চাশটি বহির্গমন ও তেতাল্লিশটি ইনকামিং ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগোর এই পরিচালনগত ত্রুটি আজ চতুর্থ দিনের মতো চলছে। কুড়ি বছরের পুরোনো এই বিমান সংস্থাটি ক্রু-সংকট ও প্রযুক্তিগত সমস্যাসহ একাধিক কারণে পাঁচ শ পঞ্চাশটিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করার রেকর্ড তৈরি করেছে। এর মধ্যে মুম্বাই বিমানবন্দরে এক শ চারটি, দিল্লি বিমানবন্দরে দু শ পঁচিশটি, বেঙ্গালুরুতে এক শ দু'টি এবং হায়দরাবাদে বিরানব্বইটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ভূপাল বিমানবন্দরেও কমপক্ষে পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগো স্বীকার করেছে যে তারা নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রু-এর প্রয়োজনীয়তা ভুলভাবে আন্দাজ করেছিল এবং পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল, যার ফলস্বরূপ শীতকালীন আবহাওয়া ও যানজটের সময়ে পর্যাপ্ত ক্রু-এর অভাব দেখা দিয়েছে। বিমান সংস্থাটি সতর্ক করেছে, সময়সূচি স্বাভাবিক করার চেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত ফ্লাইট বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জানিয়েছে, আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে তারা আরও বিঘ্ন এড়াতে ফ্লাইট পরিচালন কমিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স কর্মীদের বলেছেন যে পরিচালন স্বাভাবিক করা এবং সময়ানুবর্তিতা ফিরিয়ে আনা ‘সহজ লক্ষ্য হবে না।’ বিমান সংস্থাটি গত রাতে তাদের গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের কাছে নতুন করে দুঃখ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘গত দুই দিন ধরে ইন্ডিগোর নেটওয়ার্ক এবং পরিচালন ব্যবস্থায় ব্যাপক বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের সব গ্রাহক এবং শিল্প স্টেকহোল্ডারদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’ তারা আরও যোগ করেছে, ‘ইন্ডিগো এই বিলম্বের প্রভাব কমাতে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে ও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

প্রায় ৩ বছর পর সরাসরি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে লড়াইরত দুই প্রতিবেশী রাশিয়া ও ইউক্রেন। আজ বৃহস্পতিবার তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সবার নজর এখন ইস্তাম্বুলের দিকে। কারণ, এই বৈঠকই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।
১৫ মে ২০২৫
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
১ মিনিট আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
১ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

প্রায় ৩ বছর পর সরাসরি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে লড়াইরত দুই প্রতিবেশী রাশিয়া ও ইউক্রেন। আজ বৃহস্পতিবার তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সবার নজর এখন ইস্তাম্বুলের দিকে। কারণ, এই বৈঠকই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।
১৫ মে ২০২৫
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
১ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
৩ মিনিট আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

প্রায় ৩ বছর পর সরাসরি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে লড়াইরত দুই প্রতিবেশী রাশিয়া ও ইউক্রেন। আজ বৃহস্পতিবার তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সবার নজর এখন ইস্তাম্বুলের দিকে। কারণ, এই বৈঠকই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।
১৫ মে ২০২৫
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
১ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
৩ মিনিট আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
১ ঘণ্টা আগে